#নয়নে_বাঁধিব_তোমায়
#আফসানা_মিমি
পর্ব: ছয়
এই পৃথিবীতে বাবা নামক ছায়া মাথার উপর থেকে উঠে গেলে চেনা মানুষও অচেনা হয়ে যায়। জীবনযুদ্ধ সেদিন থেকেই থেকেই শুরু হয়। ধীরে ধীরে মানুষ চিনতে শিখে। বিশাল পৃথিবীতে টিকে থাকতে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে। নয়নার জীবনের মোড় কোনদিকে ঘুরে গেছে সে নিজেও জানে না। বাবা চলে গেছে বেশি সময় হয়নি। অথচ পুরো পৃথিবী এখন তার কাছে অচেনা মনে হচ্ছে। সহানুভূতি দেখানোর মতো কেউ নেই তার জীবনে। পিতৃহারা নয়নার পৃথিবীতে নতুনকরে জন্ম হয়। অভিভাবকহীন নয়নার আপন ঠিকানা একমাত্র ফুফুর বাড়ি। সেখানেই এসেছে সে। অটোরিকশা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে প্রধান ফটকে পা মাড়ায় নয়না। কান্না তার দলা পাকিয়ে আসছে। বাবা জীবিত থাকাকালীনই তার উপর অন্যায় করে আসছিল, আজ তার বাবা পৃথিবীতে নেই; কী হবে তার সাথে? কেমন ব্যবহার পাবে ফুফুর কাছ থেকে! নানান ভাবনার মাঝে নয়না বাড়িতে প্রবেশ করে। সারাবাড়ি নীরবতায় ঘেরা, নয়নার ফুফুকেও কোথাও দেখা যাচ্ছে না। খাবারের টেবিলের উপর পানির পাত্র থেকে একগ্লাস পানি করে পান করে তৃষ্ণা মেটাচ্ছে নয়না তন্মধ্যে বাশারের বাড়িতে আগমন ঘটে। ব্যাগপত্র নিয়ে ফিরে এসেছে সে, একলা বাড়িতে কাউকে দেখতে না পেয়ে নয়নার তলপেটে হাত ছুঁয়ে দেয় বাসার। নয়না ‘আল্লাহ’ বলে দূরে সরে দাঁড়িয়ে বাশারের উদ্দেশে বলল,” চুপচাপ থাকি, তোমাকে ভয় পাই বলে ভেবো না আমি দুর্বল। তোমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করব, বাশার ভাই। নয়তো নিজের হাতে তোমাকে খুন করে জেলে পঁচে মরব।”
” তোর এতো সাহস আছে? আর স্বাক্ষী পাবি কোথায়? আমার এইরূপ তুই ছাড়া কেউ জানে না, নয়না!”
” কেউ না জানলেও আল্লাহ জানেন, তুমি কতোটা নিকৃষ্ট। দুনিয়াতে তোমার শাস্তি না হলেও পরকালে তো হবে? ”
” অযথা কথা না বলে একবার আমার হয়ে যা, নয়না! ভালো খেতে পারবি, পরতে পারবি! তাছাড়া মায়ের হাত থেকেও তোকে সারাজীবন রক্ষা করব।”
” মরে যাবে কিন্তু সম্মান খোয়াবে না, এই নয়না।”
বাশার বিশ্রী হাসে। তার হাসিটা গা জ্বালানো হাসি। মাথার চুল এলোমেলো করে সে বলল,” কি যেন বলছিলি! আমাকে পুলিশে দিবি?”
নয়না মাথা নেড়ে বলল,” হ্যাঁ দিব, তোমাকে চৌদ্দ শিকলের ভেতরে আজীবনের জন্য থাকার ব্যবস্থা করব।”
নয়নাকে রাগাতে মূলত বাশার শেষোক্ত প্রশ্ন করে। মানুষ রাগের সময় হিতাহিতজ্ঞান লোপ পায়। বড়ো ছোট কাউকে মান্য করে না। মুখে যা আসে তাই বলে বেড়ায়। নয়নার শেষ কথা আকলিমা শুনতে পায়। সে এতোক্ষণ নিজের ঘরেই ছিল। হাঁটুর ব্যথার ঔষধ সেবন করে ঘুমিয়েছিল। বিনা কারণে ছেলের এতো বড়ো সাজার কথা শুনে রেগে যায় সে। নয়নার কাছে এসে চুলের মুষ্টি ধরে দুইগালে থাপ্পড় বসিয়ে দেয় আকলিমা। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে ভুলে না সে। রাগান্বিত স্বরে আকলিমা বলল, ” যার ঘরে খাচ্ছিস তাকেই চৌদ্দ শিকলে ঢুকাতে চাইছিস? এই তোর এতো কীসের দেমাক? সামান্য রূপেরই তো? এই রূপ দিয়েই আমার ছেলেকে ফাঁসাতে চাচ্ছিস, তাই না! শুনে রাখ, নয়ন! আমি আমার ছেলের জন্য রাজকন্যা নিয়ে আসবো যার কোটি কোটি টাকা থাকবে। তোর মতো এতিমকে এই আকলিমা কখনো বউ করবে না।”
” ছাড়ো ফুফু, আমি বাশার ভাইয়ের থেকে মুক্তি চাইছি। দরকার পড়লে তোমার বাড়ির ঝিঁয়ের কাজ করব কিন্তু তোমার ছেলেকে বিয়ে করব না।”
নয়নাকে বিয়ে করবে এমন মনস্থির বাশার কখনও করেনি। ভবিষ্যতে করবেও না। নয়না বাশারের নিকট ভোগের বস্তু মাত্র। নয়নার দুঃখেও তার কিছুই না সুখেও না। সে মনে মনে হিসাব কষে বলল,” আরে মা, ছাড়ো তো! ওর ক্ষমতা কথা পর্যন্তই, বেশি বললে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিব তখন ওর বাপও কবর থেকে উঠে বাঁচাতে আসবে না।”
মানুষের মৃত নির্ধারিত। কেউ চিরকাল এই পৃথিবীতে বসবাস করতে পারে না। কেউ মারা গেলে তার প্রশংসা করায় রয়েছে বিশেষ উপকার। আবার কেউ যদি মৃত ব্যক্তির খারাপ গুণ বর্ণনা করে তবে এর পরিণামও খুবই খারাপ। এজন্য কেউ মারা গেলে তার খারাপ গুণ বলে বেড়ানো থেকে বিরত থাকা জরুরি। ব্যক্তির ভালো গুণ প্রকাশ করায় রয়েছে কল্যাণ। এই জ্ঞানটুকু যদি শিক্ষিত নামক মূর্খদের থাকতো তবে মৃত ব্যক্তির দোষ গুন নিয়ে আলোচনা করতো না। নয়নার মনে বাশারের প্রতি ঘৃণার মাত্রা বেড়েই চলেছে। সে মুখ ফিরিয়ে নেয় আকলিমা ও বাশারের থেকে।
নয়নাকে ধাক্কা দিয়ে আকলিমা ছেলেকে বলল, ” সমাজের লোকদের কথা শুনতে হবে নয়তো এই মেয়েকে আজই বাড়ি ছাড়া করতাম।”
মা ছেলের কথা নয়নার আর শুনতে ইচ্ছে করছে না। সে ঘরে গিয়ে দরজা আটকে দেয়। নয়নার আড়ালে বাশারের মুখে ক্রুর হাসি ভেসে উঠল। নয়নাকে আজ সে আকলিমার হাতে ইচ্ছে করেই মার খাইয়েছে। বাশারের ভাষ্যমতে, সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকা করতেই হবে। নয়নাকে এতদিন সে মানসিক চাপ প্রয়োগ করেছে আজ থেকে তাক শারীরিকভাবে আঘাত করবে। এতে করে একসময় না একসময় নয়না তার কাছে আসবেই আসবে।
——————————————
সপ্তাহের শুক্রবার নয়নার জন্য কখনও সুখকর হয় না। এইদিনে কাজের চাপ বেশি থাকে। সপ্তাহে চারদিন পড়াশোনা করার অজুহাতে বাড়ি থেকে বের হতে পারলেও শুক্রবারে আকলিমা তাকে বাড়ি থেকে বের হতে দেয় না। দিনের সময়টায় আকলিমার সব কাজ তাকে দিয়ে করায়। আজ নুরুজ্জামানের মৃত্যুর চল্লিশদিন পূরণ হয়েছে। আকলিমার থেকে লুকিয়ে একমাসে তিনটা টিউশনি করিয়েছে সে। হাজার পাঁচেক টাকার মিষ্টি কিনে গরীব অসহায়দের বিলিয়ে দিবে ভেবেছিল কিন্তু আকলিমা আজ তাকে বাড়ি থেকেই বের হতে দিচ্ছে না।
বাশারের জন্য আকলিমা মেয়ে দেখেছেন। নয়নার মতো রূপসী না হলেও অর্থ প্রাচুর্যের দিক থেকে কম নয় মেয়েটি। ঢাকায় বড়ো বড়ো দুইটা বাড়ি আছে মেয়ের নামে, আর কী চাই আকলিমার! ছেলের বদৌলতে নিজেরও উপকার হবে।
সকাল থেকে নয়না রান্নাঘরে রান্না করছে। হাতে, মুখে কালি মেখে একাকার নয়না। এবার সে কোনোভাবেই মেহমানদের সামনে যাবে না। নয়নার মনে পড়ে যায় গতবারের মেহমানদের নিয়ে কিছু ঘটনা, সেবার বাশারের বিয়ের কথাবার্তা প্রায় পাকাপাকি হয়েছিল। খাবারের সময় নয়না মেহমানদের খুশিমনে আপ্যায়ন করতে ব্যস্ত তখনই একজন বলেছিল, ” আপনাদের ঘরেই তো সুন্দরী মেয়ে আছে, তবে আমাদের মেয়েকে কেন পছন্দ করলেন? পাত্রী হিসাবে আপনার ভাইজি কিন্তু দারুণ, আমার ছেলে থাকলে বউ বানিয়ে নিয়ে যেতাম।”
আকলিমা সেদিন ইতস্ততভাবে বলেছিল,” আপনারা যেমনটা ভাবছেন তেমন কিছু না। ও আসলে আমার দূর সম্পর্কের ভাইয়ের মেয়ে। আমার এখানে কাজ করে, বাশারকে তো ভাই ভাই ডেকে মুখে ফেনা তুলে ফেলে। আমাদের ছেলে মেয়ের মাঝে তেমন কোনো সম্পর্ক নেই।”
লোকটি সেদিন উত্তরে বলেছিল, ” সম্পর্ক নেই তা বুঝলাম কিন্তু ছেলেমেয়েদের মন! কখন কি হয়ে যায় বলা মুশকিল। আমরা এই বাড়িতে মেয়ে দিব না।”
মেহমানরা চলে গেল। বাশারের বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় আকলিমা সেদিন নয়নাকে বেত দিয়ে পিটিয়েছিল। নয়নার এরপর সাতদিন বিছানা থেকে উঠতে পারেনি। নয়না অতীতের লোমহর্ষক দিনগুলোর কথা ভেবে লম্বা নিশ্বাস ত্যাগ করে। আকলিমা কাজ দেখার জন্য তখন রান্নাঘরে আসলো। নয়নার ক্লান্তমাখা মুখখানা দেখে বলল, ” এবার কোনো অঘটন ঘটাবি না, নয়না। আজ যদি একবারের জন্য ঘর থেকে বের হয়েছিস তো সাতদিন খাবার বন্ধ থাকবে।”
আকলিমার কথার প্রত্ত্যুত্তরে নয়না কিছুক্ষণ ভেবে বলল,” বাড়িতে থাকলে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতেই হবে তারচেয়ে আমি বাহিরে চলে যাই। সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে সন্ধ্যায় ফিরে আসব, ফুফু।”
নয়না মরে গেলেই কী আর বেঁচে থাকলেই কী। আকলিমার যায় আসে না। সে তো চায়, নয়না ইচ্ছে করেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাক। পরমুহূর্তে কাজের কথা ভেবে আকলিমা নিজেই চুপসে থাকে। নয়নার কথায় আকলিমা সায় দিয়ে বলল, ” যা, তবে এখন খাবার পাবি না। মেহমানদের খাওয়া শেষ হলে তবেই খাবার পাবি।”
” খাওয়া নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না,ফুফু। না খেয়ে থাকা আজ প্রথম নয়। তোমার বাড়িতে এসে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।”
আকলিমা মুখ বাঁকিয়ে বলল,” বেশি মুখ চালাবি না, নয়ন! যা এখান থেকে, মেহমানরা আসলো বলে!”
এক কাপড়ে হাসিমুখে নয়না টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। মিষ্টির দোকান থেকে জিলাপি কিনে গাজীপুরের রেলগেটের দিকে চলে আসে। পথশিশুদের মাঝে মিষ্টি বিলিয়ে নিজেও বসে খেয়ে নেয়।
শুক্রবার তূর্যের ছুটির দিন। সাধারণত শুক্রবারে ডাক্তাররা নিজস্ব চেম্বারে বসে কিন্তু তূর্যের বিষয় আলাদা। হাসপাতালের কাজকর্ম ছাড়া বাকী সময় নিজের।
গাজীপুরের বেলাই বিল একটি মনোরম জায়গা। চেলাই নদীর সাথে বেলাই বিল। এখানে ইঞ্জিন চালিত আর ডিঙ্গি নৌকা দুটোই পাওয়া যায়। বিকালে এই বিলের চারপাশে অপূর্ব দৃশ্য তৈরি হয় সাথে শাপলার ছড়াছড়ি। কিছুক্ষণ পরপর বাতাসে গায়ে ঝাপটা লাগে। তূর্য এখানে প্রায়ই একাকী আসে। নদীর সাথে তার আত্মার সম্পর্ক, সময় নিয়ে বসে উপভোগ করে। পছন্দের স্থানে পছন্দের গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে সে। রেললাইন পাড় হতেই নয়নাকে পথশিশুদের সাথে বসে থাকতে দেখতে পায় তূর্য। যথারীতি ভ্রু যুগল কুঁচকে নেয় সে। গাড়ি থামিয়ে এগিয়ে যায় সেদিকে। নয়না তখন মনখুলে গল্প করতে ব্যস্ত। পুরুষের পা জোড়া তার সামনেই থামতে দেখে মাথা তুলে তাকায় সে। তূর্যকে দেখে নয়নারও ভ্রু যুগল কুঁচকে আসে। বিড়বিড় করে বলে,” এই বিপদ আসলো কেন?”
চারপাশে পর্যবেক্ষণ করে তূর্য নয়নাকে বলল,” আমার সাথে এসো।”
নয়না হতভম্ব হয়ে বসে থাকে। সে কী ভুল শুনছে? পরমুহূর্তে তার মনে প্রশ্ন জাগে, তূর্য তাকে কেন যেতে বলছে? নয়নার কোনো ক্ষতি করবে না তো! এমনও তো হতে পারে, নয়নাকে একা পেয়ে সুযোগ খুঁজবে? আজ আবার আপনি থেকে তুমি তে নেমে এসেছে। সাতপাঁচ ভেবে নয়না বলল,” আমি আপনার সাথে কোথাও যাব না। ”
তূর্য দাঁতে দাঁত চেপে এবার বলল,” আমার সাথে রঙ্গ লীলা করতে আসতে বলিনি। সারামুখে কালি নিয়ে বত্রিশ দাঁত বের করে হাসছো, মানুষ পাগল বলছে, দেখো চারপাশে তাকিয়ে, সবাই হাসছে।”
তূর্যের কথা সঠিক। অনেক স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী তাকে দেখে হাসছে। অগত্যা কাচুমাচু হয়ে নয়না তূর্যকে অনুসরণ করে।
গাড়িতে বসে তূর্য নয়নাকে ইশারা দিয়ে বসতে বলে। নয়না শুঁকনো ঢোক গিলে পিছনের সিটে গিয়ে বসে। তূর্য কথা বাড়ায় না গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দেয়। রেলপথের পাশদিয়ে গাড়ি চলছে, নয়না মুগ্ধ দৃষ্টিতে চারপাশ দেখছে। গাজীপুরের পথে ঘাটে চলাচল করলেও দূরে কোথাও যায়নি সে। গাজীপুরের যে সবুজের সমারোহের ছোঁয়া আছে জানতোও না। তূর্য ফ্রন্ট মিররে সবকিছুই দেখছে। কিছুপথ এগোতেই একটি পানির বোতল ও টিস্যু এগিয়ে দিয়ে বলল,” মুখ মুছে নাও।”
নয়না বোকার মতো গাড়ির মধ্যেই মুখে পানি দিতে শুরু করে। তূর্য তা দেখে চিৎকার করে বলে, ” পাগল হলে নাকি? সরাসরি মুখে পানি না ঢেলে পরিষ্কার করার কোনো উপায় নেই নাকি?”
তূর্য গাড়ি থামিয়ে দিলো। পিছনে ফিরে টিস্যু বের করে অল্প পানি দিয়ে ভিজিয়ে বলল,” কাছে আসো!”
নয়না কাছে আসার পরিবর্তে দূরে সরে বসে। তূর্যকে সে কখনোই শরীর স্পর্শ করতে দিবে না। নয়নার ভীতিকর অবস্থা দেখে তূর্য দুই হাত উপরে উঠিয়ে বলে, ” আ’ম সরি।ভুল বুঝো না, আমি মূলত হেল্প করার জন্য বলছিলাম। আমার মাঝে খারাপ কোনো চিন্তাভাবনা ছিল না।”
নয়নার দিকে টিস্যু এগিয়ে দেয় তূর্য সাথে নিজের ফোনটাও। সেলফি ক্যামেরা বের করে দিয়ে বলল, ” ক্লিন ইট।”
নাকে মুখে বেশ কয়েক জায়গায় কালি লেগে আছে।৷ নয়না লজ্জায় মাথা নত করে পরিষ্কার করে নেয়। ফোন এগিয়ে দেয়ার সময় ভুলবশত হাতের ছোঁয়ার ছবি তুলে ফেলে নয়না। আকস্মিক শব্দে ভয়ে নয়নার হাত থেকে ফোন পড়ে গেলো। নয়না ফোন তুলে তূর্যের হাতে দিয়ে বলল, ” আমি ইচ্ছে করে ফেলিনি।”
তূর্যয় হেসে বলল,” এতে হাইপার হচ্ছো কেন? কিছু হয়নি তো!”
এরপর কিছু একটা ভেবে বলল,” তোমাকে কোথায় নামিয়ে দিব?”
” যে কোনো রাস্তার পাশে নামিয়ে দিলেই চলবে।”
নয়নার প্রত্ত্যুত্তরে তূর্য অবাক হয়ে বলল,” মানে? তুমি কী সারাদিন রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে?”
” হ্যাঁ, সন্ধ্যায় বাসায় যাব।”
তূর্য কিছুক্ষণ ভেবে নয়নার উদ্দেশে বলল,” আমার সাথে এক জায়গায় যাবে?”
নয়না হ্যাঁ, না কিছুই বলল না। নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে রইলো তূর্যের দিকে।
চলবে…………….