#ধোঁকা
#Tanjina_Akter_Misti
#part 15(last)
– তুই কাজটা ঠিক করিস নি আমি তোকে বলেছিলাম ওই ঘরে না যেতে তুই শুনিস নি। তোকে বলেছিলাম যেদিন সব জানবি সেদিন এই বাড়িতে তোর জায়গা হবে না,, এখন তুই তো সব জেনেই গেলি আজই তোকে বাড়ি থেকে চলে যেতে হবে।( আদি)
– আদি কি বলছো এসব দেখো তুমি সবটা জানো না আমার কথা শুনো প্লিজ?( মেঘনা)
– আমি কিছু জানতে বা শুনতে চাইনা তুই যে এখন আমাকে মিথ্যা বুঝিয়ে বলবি তোর ভাইয়ের কোন দোষ নেই আমি সেটা কিছুতেই বিশ্বাস করবো না।( রেগে আদি)
– আমি কোন বানানি কথা বলবো পা আদি আমি তোমার ভুল টা ভাঙাবো আমার কথাটা তো শুনো( উঠতে গিয়ে )
– ( আদি মেঘনাকে টেনে উঠায়) কোন মিথ্যে কথা শুনতে চাই না তোর ভাইয়ের জন্য আজ আমার আদরে বোনটা নেই। তোর ভাই আমার বোনকে ঠকিয়েছে মিথ্যে আসসাস দিয়ে নষ্ট করে দিয়েছে যার জন্য সুসাইড করতে হয়েছে। যার গায়ে কোন দিন ফুলে টোকা ও লাগতে দেয় নাই তাকে কষ্ট দিয়েছে কোন দিন আমি তোদের ক্ষমা করবো না। আমার পুরো পরিবার শেষ হয়ে গেছে তোদের জন্য আমার মা ও চলে গেছে মেয়ের শোকে। এজন্যই তো তোকে পালিয়ে নিয়ে এসে বিয়ে করেছি। তোর পরিবারের সবাই আমাকে মেপে নেবে বলেছিল আমি তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করি যার জন্য মেনে নেয় না। আমার পরিবারের সব শেষ এখন তোর পরিবারের কেউ ভালো নেই কেউ না সবাই চিন্তা ত তোর বাবা হসপিটালে ভর্তি আছে।
আমি আর শুনতে পারছি না এতো কিছু করেছে আদি আর আমি কিছু বুঝতে পারলাম না। যেখানে আমার ভাইয়ের কোন দোষ ই নেই তার জন্য এতো কিছু মানছি অনুর সাথে খারাপ হয়েছে তাই বলে না জেনে আমাদের সাথে।
– আদি তুমি অনেক বড় ভুল করেছো যে দোষ আমার ভাই করেই নি তার জন্য তুমি এতো কিছু করলে তোমার সব কিছু জানা দরকার।
– তোর মিথ্যে কথায় ভুলবো না আমি কোন ভুল করিনি ডাইরি পরেই সব জানতে পেরেছি।
– তুমি
– তোর আর কোন কথা শুনতে চাই না। ডিবোস পেপার আর এক সপ্তাহ পর আসবো ভেবেছিলাম সেইদিন ই তোকে কিন্তু না আজই তোর চলে যেতে হবে।
– আদি আমার কথা শুনো তুমি ভুল করছো।
– আমি কোন ভুল করছি না চল।
বলেই আমাকে টেনে নিয়ে যেতে লাগল আমি বারবার আমার কথা শুনতে বলছি কিন্তু আদি কোন কর্থ শুনছে না আমাকে ভুল ভাঙানোর কোন সুযোগ ই দিচ্ছে না। নিজেকে এতো অসহায় লাগছে বলে বুঝাতে পারবো না। আমাদের চেচামেচি শব্দ বাবার কানে ও চলে গেছে ওই খান থেকেই ডেকে যাচ্ছে আমি বাবাকে ডাকছি সে আসলে হয়তো আদি ছারবে কিন্তু আদি আর কিছু না দরজার কাছে এনে আমার বের করে দিলো।
– আদি প্লিজ এমন করো না সন্ধ্যা হয়ে গেছে আমি এখন কোথায় যাবো বলো প্লিজ আমার কথা ভালো ভাবে শুনো তারপর ও যদি তোমার বিশ্বাস পা হয় কাল আমি নিজেই চলে র্যব কিন্তু আজকে না প্লিজ ( কান্না করতে করতে)
– নাহ কিছু শুনবো না চলে যা তুই যেখানে খুশি।
বলেই আদি দরজা আটকে দিলো।
কোথায় যাবো কি করবো কিছু বুঝে উঠছি না। ওইখানে ই বসে পরলাম চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে কেন আদি কেন তুমি আমার কথা শুনলেনা কেন যে দোষ আমরা করিই নি সেই জন্য শাস্তি পাচ্ছি একবার যদি আদি আমার কথা গুলো শুনতো ও ওর ভুল ভাঙতে পারতো।
কিছুক্ষণ বসে রইলাম এই ভেবে আদি হয়তো আসবে এই রাতে আমি কোথায় যাবো কি করবো ভেবে দশ মিনিটের মতো হয়ে গেলো তার কোন খবর নাই।
এদিকে আদির ও মেঘনা তারিয়ে ভালো লাগছে না সামনে যতই বলুক মন থেকে তো সেও ভালোবাসে কিন্তু বোনের জন্য তা মানে না। এখন মেঘনা কে নিয়ে টেনশন হচ্ছে আবার বোনের কথা ভেবে নিজেকে শক্ত করছে। রুমে বসে ভাবছি লো কথা গুলো।
বাবা এলো হঠাৎ আমাকে জিগ্গেস করলো কি হয়েছে প্রথম থেকে সব বললাম বাবাকে।
বাবা: ছি ছি তুই এমন একটা কাজ করবি আমি ভাবতে ও পারিনি। হুম যদি ও সেই ছেলেটার দোষ কিন্তু তাই বলে মেয়েটাকে কষ্ট দিয়ে তোর কি লাভ হলো। মেঘনার খি দোষ সেখানে একজনের জন্য অন্য জনের সাথে তুই এগুলো কি ভাবে করলি। তাহলে তোর আর ওর মধ্যে পার্থক্য কি রইল।
বাবাকে অনেক বকে চলে গেল। কথা গুলো আমার কানে বাজছে সত্যি কি আমি ভুল করেছি নাহ। আমি কেন ভুল করবো ওদের জন্য আজ আমার আদরে বোন নেই কিন্তু যতই বলি মেঘনা কে তো আমি ভালো বাসি এই সময় ও কোথায় যাবে।
মাথা নিচু করে কথা গুলো ভাবছিল আদি হঠাৎ ডাইরিটা চোখে পরলো। ডাইরিটা হাতে নিলাম এখানে থেকেই তো জেনেছিলাম। হঠাৎ কয়েকটা পেজ হাতে এসে পরল,, এগুলো তো পরা হয় নি আদি পেজ গুলো পরতে লাগল আর চমকে উঠল। ও কতো বড় ভুল করেছে এখন বুঝতে পারছে।
পাচঁ বছর পর
– মাম্মা মাম্মা আববু কোথায়( আরশি )
– আববু তো অফিসে?
– আজ তো আমার জম্মদিন দিন আববুকে অফিসে যেতে মানা করেছিলাম না। ( রেগে)
– জরুরি কাজে গেছে আম্মু তুমি যাও রুমে একটু পরই এসে যাবে।
আরশি রেগে চলে গেল। এতো ক্ষণ কথা বলছিল আরশি আর মেঘনা। আরশির চারবছর আদি আর মেঘনার মেয়ে আরশি।
আপনারা হয়তো ভাবছেন ওদের মিল হলো কিভাবে।
সেদিন আদি অনেক খুজে ও আর মেঘনা কে পায় না। নিজের ভুল বুজতে পারে আদি ভালো করে না জেনে সে কতো বড় অপরাধ করেছে। পরদিন মেঘনাদের বাড়ি যায় আর সেখানেই পায়। সবার কাছে ক্ষমা চায় নিজের ভুলের জন্য সবাই ক্ষমা করলে ও মেঘনা ফিরে ও তাকায় না। সবাই অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে ও মেঘনাকে রাজী করাতে পারে না এক মাস মেঘনা আর আদি কাছে আসে না আদি অনেক ক্ষমা চায় নিজের এমন ভুল আর কখনো করবে না বলে।
অবশেষে মেঘনা মেনে নেয় আদিকে সে জানতো আদি ফিরে আসবে মেঘনা তার করা ভুলে জন্য নিজের ভালোবাসর মানুষকে বেশি দিন ফিরিয়ে দিতে পারে না কারণে সে সত্যি ভালোবেসেছিলো আর এখন ও বাসে তাই ফিরে এসেছিল। কিন্তু এমনি না সবাই মিলে আবার বিয়ে দেওয়া হয়।
আদি ভয়ে ভয়ে রুমে ঢুকছে কারণে সে জানে তার মেয়ে এখন রেগে ফায়ার হয়ে আছে। দরজা কাছে গিয়ে উকিঁ দিয়ে দেখে রেগে বসে আছে আদি মেয়ের সামনে গিয়ে ই কানে হাত দিয়ে।
– সরি এই কানে ধরছি!
আদি কানে হাত দিয়ে আরশি একবার তাকিয়ে রাগী ভাবে অন্য দিকে ঘুরে গেল।
– কি হলো আমার আম্মুটা কি আমার সাথে কথা বলবে না।
– না
– সরি বললাম তো অনেক দরকার ছিলো নয়কি আমি যেতাম।
– তোমার কোন কথা শুনবো না আমি।
– আচ্ছা তাহলে আমি এই গিফট টা নিয়ে চলে যায়। কেউ তো আমাকে ভালোই বাসে না গিফট টা আর কাকে দেবো।
আদি চলে যেতে নিলে। আরশি দৌড়ে এসে গিফট চাইতে লাগে। আমি জানতাম গিফটের কথা বললেই এনার রাগ ভাঙবে।
আমাদের বাড়ি থেকে সবাই আসে। ভালো করেই কেটে যায় অনুষ্ঠানটা।
রাতে আরশি ঘুমিয়ে পরেছে। আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি হঠাৎ পেছনে কেউ জরিয়ে ধরলো। আমি জানি এটা কে আমি ওই ভাবেই রইলাম।
আদি: তুমি কি আমকে এখন ও মন থেকে ক্ষমা করতে পারো নাই মেঘনা।
মেঘনা: হঠাৎ এই কথা
আদি: জানিনা কেন জানি মনে হলো কথাটা সত্যি করে বলবে।
মেঘনা: ভালোবাসি তোমায় সেই আগের মতোই কিন্তু ওই মুহূর্তের কথা মনে পরলেই।
আদি: প্লিজ মনে করো না ওই সব।
আদি আমাকে ওর দিকে ঘুরিয়ে কপালে একটা চুমু দিলো।
সমাপ্ত❤❤
[ পুরো গল্প টা কেমন লাগল জানাবেন]