#ধূসর_রাঙা_মেঘ
#পর্ব_৯
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি
বাড়ির ভেতরে ঢুকে মেঘ দেখলো জায়মা এসেছে । সে খুশি হয়ে গেল বাড়ির মধ্যে সেও একজন যে মেঘকে ভালোবাসে। জায়মা মেঘকে দেখে এগিয়ে এসে বলল,,
“কিরে মেঘ সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি তোর জন্য এই তোর আসার সময় হলো। কেমন আছিস তুই?
“এই তো আপু আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুমি কেমন আছো? আর তোমার তো কাল আসার কথা ছিল।”
“কাল আসা হয় নি তাই তো আজ সকাল সকাল চলে এসেছি।”
“ভালো করেছো তা ভাইয়া আসেনি?”
“না ও একেবারে বিয়ের সময় আসবে!”
“আচ্ছা! তুমি বসো আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।”
ওপরে যাওয়ার আগে ও ওর মায়ের কাছে গেল তা দেখে মায়মুনা চৌধুরী বললেন,,
“কিছু দরকার?”
“জ্বি বাড়িতে বিড়িয়ানির মশলা আছে?”
“হ্যা কেন?”
“আমি রান্না করবো তাই আসছি!”
কথাটা বলেই মেঘ ওপরে চলে গেল সবাই একটু অবাক হলো। শুধু শায়লা বলল,,
“মেঘ বিড়িয়ানি রান্না করবে কি ব্যাপার কাহিনী কিছু আছে নাকি আমরাই বেশি ভাবছি!”
তখন জায়মা বলল,,
“ওসব পড়ে দেখা যাবে। এখন আয় একটু লিস্ট করি আমাদের কি কি কিনতে হবে। শপিং এ যেতে হবে না।”
“হুম চল!”
মেয়েরা সবাই মিলে লিস্ট তৈরি করতে বসে পরলো কে কি রকম জামা পড়বে। এদিকে মেঘ ফ্রেশ হয়ে নিচে নামলো সবাই একসাথে বসে কিছু প্ল্যান করছে দেখে মেঘ ওদিকে গেল না। সোজা কিচেনে গেল । তা দেখে মায়মুনা চৌধুরী বলল,,
“তোমার করতে হবে না আমি রান্না করছি!’
“না মা রান্না তো আমিই করবো কারন তারা আমার রান্না করা বিরিয়ানি খেতে চেয়েছে আপনার না। আর রান্না টা আমি ভালোই পারি সেটা আব্বা জানে সমস্যা নেই আমি সবার জন্যই আজ রান্না করবো।”
“কারা তোমার কাছে তোমার রান্না বিড়িয়ানি খেতে চেয়েছে?”
“আমার জীবনের দু’জন ইম্পোর্টেন্ট মানুষ। যাই হোক আপনি যান আমি করে নিচ্ছি এমনিতেও তো এখন কিচেনে আপনার কোন কাজ নেই।”
“কিন্তু দুপুরের সব রান্না তো হয়ে গেছে।’
“সেগুলো রাতে গরম করে দিয়েন নাহলে বিড়িয়ানি রাতে খেতে দিয়েন তাহলেই তো হলো। এখন যান!”
এ কথা শুনে তিনি বাইরে চলে এলেন। মেঘের বড় ফুপি মেঘকে রান্না ঘরে দেখে মায়মুনা চৌধুরী কে জিজ্ঞেস করলে তিনি মেঘের কথা জানালেন। মেঘ রান্না শুরু করলো তার কিছুক্ষণ পর আয়মান চৌধুরী ফিরলেন তা দেখে মেঘ চুলার আঁচ কমিয়ে আয়মান চৌধুরী কে বলল,,
“আব্বা আই ওন !”
“এটা আমি জানি আম্মা কিন্তু এই খুশিতে একটু বিরিয়ানি রান্না করতেন তাহলে বেশ তৃপ্ত হতাম। আপনার হাতের বিড়িয়ানি খেতে ইচ্ছে করছে আম্মা।”
“আজ কি বিড়িয়ানি দিবস নাকি আজ সবার বিড়িয়ানি নিয়ে কি হয়েছে। আর আব্বা আমি বিড়িয়ানি রান্না করছি।”
“কেন?”
মেঘ একটু এগিয়ে ফিসফিস করে বলল,,
“আপনার মেয়ের জামাই আর তার ইচ্ছে হয়েছে বিড়িয়ানি খাবে তাই তো রান্না করছি।
তার পরের টুকু পিছিয়ে জোরেই বলল,,
“আর এখন আপনিও?”
“কারন আমরা তিনজনই আপনাকে খুব ভালোবাসি আম্মা তাই আপনার হাতের বিড়িয়ানি খেয়েই আমরা সেলিব্রেট করতে চাইছি মুহুর্তটাকে।”
“একসাথে সেলিব্রেট করতে পারলে ভালো হতো কিন্তু একসাথে করা আজ সম্ভব নয়। এখন আমি আসি নাহলে নিচে আবার লেগে যাবে।”
মেঘ চলে গেল আয়মান চৌধুরী খুশি মনে ওপরে গেলেন সবাই যেহেতু শপিং এর লিস্ট নিয়ে ব্যস্ত তাই ওদের ধ্যান মেঘে ছিল না। তবে আয়মান চৌধুরীর কথা সবাই কম বেশি শুনেছে। আয়মান চৌধুরীর বাড়িটা আজ বেশ ভরা তিনি বেশ খুশি। তিনি সোফায় বসলো বাকিরা তাকেও দেখালো। মেঘের রান্না প্রায় শেষ তখন আয়মান চৌধুরী বললেন,,
“তা তোমরা কোন শপিংমলে শপিং করতে যাবে?
তখন শায়লা বলল,,
“আমার এক বান্ধবী বলেছে **** এই জায়গায় নীল নামের একটা লেডিস শোরুম আছে সেখানে মেয়েদের যাবতীয় সব জিনিস পাওয়া যায় জুতো, পিন থেকে শুরু করে বিয়ের ব্রাইডাল লেহেঙ্গা গ্ৰাউন সব। সেখানে এক্সুলিভ ডিজাইনেরও সব কিছু পাওয়া যায়। ওর বোনের বিয়েতে সব ওখান থেকেই শপিং করেছে। বিয়ের সবকিছুই আমি দেখেছি সত্যি অনেক সুন্দর ছিল এমনকি অন্যান্য জায়গার থেকে সেখানে দাম ও কম তাই ওখানেই যাওয়া ভালো। সবথেকে বড় কথা সেটা শুধু লেডিস শোরুম আমরা যেহেতু শুধু মেয়েদের জন্য শপিং করতে যাবো তাহলে সেটাই বেটার মামা। যদিও আমি একবার গিয়েছিলাম কিন্তু তাড়াহুড়ো করে চলে এসেছি সত্যি সেখানের সব ভালো। এখন তোমরা বাকিরা কি বলো কোথায় যাবে আমি আমার মতামত দিলাম।
এদিকে মেঘ সেই নীল নামক শোরুমের কথা শুনে একটু চমকে উঠলো । আয়মান চৌধুরী মেঘের দিকে তাকালো দুই বাপ মেয়ে একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো। তখন মুন বলল,,
“তুমিই তো বড় তুমি যা ভালো বুঝো তাই করো তাছাড়া শোরুমে গেলেই যে কিনতে হবে তেমন কোন কথা নেই। ভালো না লাগলে অন্য কোথাও যাবো তাই না।”
তখন আয়মান চৌধুরী বললেন,,
“ঠিক তাই তবে আমি শুনেছি সত্যি সেখানের সব ভালো। তোমরা যেতে পারো আর টাকার চিন্তা করতে হবে না। তোমাদের যা ইচ্ছা তাই কিনবে। তা মেঘ আম্মা আপনি যাবেন তো।”
হুট করে মেঘের নাম নিতে মেঘের বোধহয় খালি গলায় কাশি উঠলো। মেঘ কিছু বলবে তার আগে জায়মা বলল,,
“ও যাবে না মানে ওর ঘাড় যাবে। আমরা সবাই যাবো সাথে ও ও যাবে ওর বোনের বিয়ে ওর পছন্দ আছে না। তাছাড়া মেঘের চয়েজ বেস্ট।”
তখন মেঘ বলল,,
“ঠিক আছে যাবো কিন্তু তোমরা কবে যাবে?”
“এই তো তিন চারদিন পর যদিও কাল যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু । বিয়ের তো এখনো ১৭ দিন বাকি এতো আগে যেয়ে কি করবো।”
তখন আয়মান চৌধুরী বললেন,,
“আগে করে রাখাই ভালো পরে আবার কিছু সমস্যা হলে বা ভুলে গেলে সময় করে সেগুলো ফিলাপ করা যাবে। তবে তোমাদের সুবিধা মতো তোমরা যাও সমস্যা নেই।”
“আচ্ছা ঠিক আছে দেখি কবে যাওয়া যায়।”
তখন মেঘ বলল,,
“ঠিক আছে আমাকে আগেই বলে রেখো আবার কখন কোন কাজ পরে যায়।”
মেঘের রান্না শেষ মেঘ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এলো ততক্ষনে মায়মুনা চৌধুরী সবাইকে খেতে ডাকলেন দুপুরের খাবার সময় হয়ে গেছে। আয়মান চৌধুরী তো দুপুরে খাওয়ার জন্যই এসেছিলেন অবশ্য আজ শাফিয়ান চৌধুরী ও জিয়ান ও এসেছে। সকলে বসতেই মায়মুনা চৌধুরী তাদের ব্যাপারটা জানালেন কে কি খাবে। সবাই বলল বিড়িয়ানিই খাবে নিচে এসে মেঘ দুই টা টিফিন বক্স এ বিড়িয়ানি বেরে রাখলো। তারপর বসল তার বাবার পাশের চেয়ারে। মেঘ এক লুকমা দেবে ঠিক তখনি মেঘের কাকাই শাফিয়ান চৌধুরী বললেন,,
“ভাইয়া শুনেছি তোমার বন্ধু রুকনুজ্জামান আছে না তাকে নাকি কাল পুলিশে ধরে নিয়ে গেছিল আজ কোর্টে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।”
এ কথা মেঘ আর মেঘের বাবা একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো তারপর খেতে শুরু করলো আয়মান চৌধুরী বললেন,,
“হুম শুনেছি!”
“প্রথমে সবকিছু নাকি রুকন ভাই নিজের ওপর নিয়েছিল। পরে লয়ার আরেকজন কে বের করেছে। তবে সবকিছুর ক্রেডিট কিন্তু ঐ লয়ারের যে নাকি শুধু তাকে না তার সাথে থাকা আরো একজনের খোঁজ দিয়েছে। এতদিন ধরে রুকন ভাই সকলের ক্ষতি করে গেল দেখলে বোঝাই যায় না তাই না। সত্যি লয়ারটা প্রশংসার পাত্র। কি নাম যেন আজ খবরে দেখাচ্ছে তো তুমি দেখো নি।”
“দেখেছি খবর আর K.A.Megh. লয়ারের নাম। আজ পর্যন্ত কোন কেস হারে নি সততার সহিত সবগুলো কেস জিতেছে।”
বলেই আয়মান চৌধুরী মেঘের দিকে তাকালো। তা দেখে মেঘ মুচকি হাসলো। তখন জিয়ান বলল,,
“হ্যা কাকাই এর আগে আমি এর নাম শুনেছিলাম।”
“সেই খুশিতেই তো বিড়িয়ানি খাচ্ছি আজ।”
“মানে?”
এ কথা শুনে মেঘের কাশি উঠে গেল। সব পর্দা এখানেই ফাঁস করে দেবে নাকি। তা দেখে আয়মান চৌধুরী বললেন,,
“আহ হা আম্মা আস্তে খান । নিন পানি খান?”
“আব্বা খাওয়ার সময় কথা বলতে হয় না। আর আপনারা ননস্টপ বলেই যাচ্ছেন খাবার তো গলায় আটকাবেই সবাই খাবারের থেকে আপনাদের কথা গিলছে বেশি। এখন চুপচাপ খান তো?”
তখন আয়না চৌধুরী খেকিয়ে বলল,,
“এই মেঘ তোর তো সাহস কম না তুই আমার ভাইকে ধমক দিস! তোকে একটু মাথায় করে রাখে বলে তুই যা ইচ্ছে তাই করবি তোর কাছ থেকে জানতে হবে কথা বলবে কি বলবে না।”
“আরে আমি কখন ধমক দিলাম তাছাড়া আমার আব্বা কে আমি বলেছি আপনার তাতে কি। এখন চুপ থাকুন আপনাদের কথায় আর খাওয়া যাচ্ছে না।”
উনি কিছু বলবে তার আগে শায়লা বলল,,
“আহ হা মা মেঘ তো ঠিকই বলেছে খাওয়ার মাঝে কথা বলতে হয় না। এখন চুপ করে খাও তো। ”
মেয়ের কথা শুনে আয়না চৌধুরী চুপ করে গেলেন এতো কথার মাঝে আয়মান চৌধুরীর কথা নিচে পরে গেল। বিড়িয়ানি খেয়ে সবাই কমবেশি মেঘের প্রশংসা করলো।সবার খাওয়া শেষ মেঘ ওপরে গিয়ে নিজের প্রতিদিনের মতো বোরকা পরে নিচে এলো। রান্না ঘর টিফিন বক্স দুটো ব্যাগে ভরে নিল। আয়মান চৌধুরী কে বলে এসেছে আয়মান চৌধুরী গাড়ি নিয়ে যেতে বলেছিল কিন্তু সে রিক্সায় যাবে। বের হবে তখন জায়মা বলল,,
“এই মেঘ আবার কোথায় যাচ্ছিস এই না এলি।”
“আসলে একটু কাজ আছে?”
তখন শায়লা বলল,,
“বিড়িয়ানি নিয়ে কাজে যাচ্ছিস তা কাজ কি হাসপাতালে পিচ্চি।”
এ কথা শুনে মেঘ মাথা চুলকালো তা দেখে শায়লা যা বোঝার বুঝে গেল সে মুচকি হেসে বলল,,
“আমাদের পিচ্চি ও জামাইয়ের জন্য বিড়িয়ানি রান্না করে নিয়ে যাচ্ছে ভাবা যায়।”
এ কথা শুনে মেঘ লজ্জা পেল। কিন্তু লজ্জা কে প্রশ্রয় না দিয়ে বলল,,
“হ্যা যাচ্ছি তো তুমি যাবে নাকি চলো। হাসপাতাল ঘুরিয়ে নিয়ে আসবো না হয়!”
“না না আমি তোদের মাঝে গিয়ে কাবাব মে হাড্ডি কেন হবো। এখন তো আমাদের বুঝতে হবে আমাদের পিচ্চি বড় হয়ে গেছে তার জামাই আছে জামাইয়ের জন্য বিড়িয়ানি রান্না করে নিয়ে যাচ্ছে।”
“তোমাদের কথা শেষ হলে যাই আমার জামাইটা এখনো না খেয়ে আছে আমার জন্য।”
“এই মেঘ মুখে লাগাম দে বড়দের সামনে কি বলছিস।”
“কেন শায়লা আপু তুমি কি লজ্জা পাচ্ছো আমার কথা শুনে। না না একদম পাবে না।”
“যা বইন তুই যা।”
মেঘ চলে গেল । তখন জায়মা হাসতে লাগলো আর বলল,,
“ওকে লজ্জা দিচ্ছিলি এখন ও তোকে লজ্জা দিয়ে গেল। যাক আমাদের মেঘ আগের মতো অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে নাহলে মেঘ আমাদের সাথে এভাবে কথা বলল ভাবা যায়। মেয়েটা সুখে থাকুক এই দোয়াই করি।”
“ঠিক বলেছিস আর ওর শুশুরবাড়ির লোকজন এতো ভালো কি বলবো ওর হাজবেন্ড ও অনেক ভালো।”
“হুম শুনলাম তো।”
___________________
হাসপাতালে গিয়ে মেঘ থামলো এর আগে কখনো আসা হয় নি আজকেই এই হাসপাতালে প্রথম এলো কেমন যেন লাগছে। ও রিসিভশনে গিয়ে বলল,,
“এখানে ডক্টর D.A শুভ্র এর কেবিন টা কোন দিকে?”
“আপনি কে?”
“জি আমি ওনার পরিচিত!”
“ওনার সাথে আপনার কোন এপোয়েনমেন্ট আছে?”
এ কথা শুনে মেঘ ভাবলো কি বলবে তখন ও বলল,,
“না আপনি ওনাকে ফোন দিয়ে বলুন মেঘ এসেছে!”
“স্যার এখন ভিশন ব্যস্ত ফোন দেওয়া যাবে না। যেহেতু আপনার এপোয়েনমেন্ট নেই আপনি তাহলে পরে আসুন।”
“আচ্ছা তাহলে ওনার কেবিন কোন দিকে বলুন আমি চলে যাচ্ছি।
“বললাম না স্যার ব্যস্ত আপনি ডিসটার্ভ কেন করছেন। স্যার রাগ করবেন আমার ওপর বলবেন আমি কেন আপনাকে আটকাইনি।এমনিতেও স্যার তিন দিন হাসপাতালে আসেন নি।”
“সে টা আপনাকে বুঝতে হবে না আপনি আপনার কাজ করুন। যা হবে সেটা আমি বুঝে নেব। আপনার বলতে হবে না আমিই ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করছি।
মেঘ ধূসরকে ফোন দিল ধূসর বোধহয় ফোনের জন্য অপেক্ষা করছিল তাই তাড়াতাড়ি ফোন তুলল। মেঘ আগেই বলল,,
“আপনি কি এখন ব্যস্ত?”
“না আর তেমন কোন পেশেন্ট নেই। আবার ত্রিশ মিনিট পর থেকে শুরু হবে তুমি কোথায় তোমার জন্য অপেক্ষা করছি তো?’
“আমি তো রিসিভশনে কিন্তু আপনার রিসিভসনিস্ট তো বলছেই না আপনার কেবিন কোন দিকে। আপনি নাকি ভিশন ব্যস্ত ডিসটার্ভ করা যাবে না।”
“ওকে আমি আসছি তুমি ওখানেই দাঁড়াও।”
“ঠিক আছে!”
“স্যার কি বলল নিশ্চয়ই বলেছে পরে আসতে দেখলেন বললাম না স্যার এখন ব্যস্ত!”
সে তো আর জানে না মেয়েটা কে নাহলে নিশ্চয়ই বলতো না মেঘ মুচকি হাসলো কিছু বললো না। এক মিনিট পরেই ধূসর কে দেখা গেল। মেঘের কাছে এসে বলল,,
“সরি আমার আগেই এখানে বলে রাখা উচিৎ ছিল তোমার কথা নাহলে এতো ঝামেলা হতো না।”
“হয়েছে বাদ দিন ব্যাগটা ধরুন খেয়ে নিন অনেক বেলা হয়ে গেছে।”
“বারে তুমিও আমার সাথে চলো আমি খাবো তুমি দেখবে।”
সে মেঘের এক হাত ধরলো আরেক হাত দিয়ে মেঘের হাতে থাকা ব্যাগ ধরলো। আর রিসিভসনিস্ট এর দিকে তাকিয়ে বলল,,
“এর পর থেকে এই ম্যাডাম কে দেখলে তাকে আটকাবেন না সোজা পাঠিয়ে দেবেন আমার কেবিনে।”
“ঠিক আছে স্যার!”
ধূসর মেঘকে নিয়ে চলে গেল যারা ধূসরকে চেনে সকলেই অবাক এই মেয়ে কারো হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সবাই বুঝতে পারল স্পেশাল কেউ ধূসরের। ধূসর কেবিনে নিয়ে গেল। ওখানে গিয়ে মেঘকে বসিয়ে বলল,,
“এই ধূসর এহসান শুভ্র যদি তার সামনে থাকা নিষ্ঠুর মেয়েটার কাছে কিছু আবদার করে তাহলে কি সে রাখবে?”
“কি আবদার শুনি?”
“আমাকেও কি কারো জীবনের আরেকজন ইম্পোর্টেন্ট মানুষ টার মতো নিজ হাতে খায়িয়ে দেবে।”
এ কথা শুনে মেঘ স্থির হয়ে ধূসরের দিকে তাকালো। সে যে গাড়ির ভেতরে থাকা সব কথাই মনোযোগ দিয়ে শুনেছে আর মনেও রেখেছে । সে মুচকি হেসে বলল,,
“কাউকে খায়িয়ে দেব দেখে কি আপনার আমার হাতে খেতে ইচ্ছে করলো এটা কিন্তু ঠিক না। এই ব্যাপারটা হলো অন্যের খাওয়া দেখে খিদে পাওয়া।”
“তুমি যা ভাবো তাই কিন্তু এখন আমার নিজ হাতে খায়িয়ে দেবে কি না বলো।”
“যদি না দিই?’
“এই আমি কি নিষ্ঠুর মেয়েটার কাছে খুব বেশি কিছু চেয়েছি?”
“হইছে আর মুখ গোমড়া করতে হবে না। এমন ভাব ধরছেন যেন কোনদিন আমি আপনাকে খায়িয়ে দেইনি। হাত ধুয়ে নিই খায়িয়ে দিচ্ছি।”
“যাক নিষ্ঠুর মেয়েটার একটু মন নরম হয়েছে।”
“হুম নিন হা করুন!”
ধূসর হা করলো মেঘ ওকে খায়িয়ে দিতে লাগলো। খাওয়া শেষ করে বলল,,
“মাশাআল্লাহ দারুন হয়েছে!”
“শুকরিয়া!”
“এই জন্য তো আমার কাছে আমার বউ একটা গিফট পায়। দাঁড়াও !”
ধূসর একটা ব্রেসলেট বের করলো ব্রেসলেট টা অনেক সুন্দর ডায়মন্ড এর আর ওখানে লাভ শেফের মাঝে ওদের নামের D আর M লেখা। ও দেরি না মেঘের হাতে পরিয়ে দিল। তা দেখে মেঘ বলল,,
“এটা আবার কেন?”
“এটা আমি আমার বউয়ের জন্য কিনেছি তোমার তাতে কি। আর হ্যা ভুলেও এটা কখনো খুলবে না। নাহলে কিন্তু খবর আছে।
“কিন্তু এটা তো?”
“কোন কথা না আমার বউয়ের আজ বিশাল সাকসেস এর দিন তারসাথে আমাকে নিজ হাতে রান্না করে খায়িয়ে দিল। তাছাড়া আমার অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল এটা তোমাকে গিফট করার আমি নিজে অর্ডার দিয়ে এটা বানিয়েছি।
“হুম বুঝেছি। অনেক হয়েছে এবার চলি আমাকে আরেকটা জায়গায় যেতে হবে।”
“আরেকটু থাকো বিকেল হয় নি তো! আচ্ছা সে ও আমার মতোই ইম্পোর্টেন্ট তোমার জন্য।”
“শুনুন কেউ কারো জীবনে কারো মতো ইম্পোর্টেন্ট হয় না। সবাই সবার জীবনে আলাদা আলাদা ভাবে ইম্পোর্টেন্ট হয়। আপনি আপনার মতো আর সে তার মতো। এখন দেখুন আমাদের মা বাবার পর কিন্তু আমরা বন্ধুকেই আমাদের জীবনে ইম্পোর্টেন্স দিয়ে থাকি তবুও কিন্তু তারা আমাদের কাছে আলাদা আলাদাভাবে ইম্পোর্টেন্ট। কেউ কারো মতো হয় না সবার আলাদা বিশেষত্ব আছে।”
ধূসর ছোট করে বলল,,
“হুম বুঝতে পেরেছি ম্যাডাম কিন্তু সে কে?”
“একদিন আপনার সাথে দেখা করিয়ে দেব ইনশাআল্লাহ! তবে তাকে আপনার ভয়ের কিছু নেই। আপনি যেমন ভাবছেন তেমন কিছুই না।
“আমি ওরকম কিছু বলেছি নাকি?”
“বলেন নি ধরনে বোঝা যাচ্ছে।”
“যাই হোক বাদ দাও। চলো ছাদ থেকে ঘুরে আসি।”
“একটু পরেই আপনার পেশেন্ট রা আসবে!”
“হুম!সময় দেখি শেষ। এই ভালো সময় ও না তাড়াতাড়ি চলে যায়। চলো তোমাকে এগিয়ে দিই!
“হুম!”
ধূসর মেঘকে নিয়ে কেবিন থেকে বের হলো। ওরা কিছু কথা বলতে বলতে আসছে। সবার দৃষ্টি যেন ওদের দিকেই । ধূসর মেঘকে রিক্সায় উঠিয়ে দিল ধূসর ঘুরবে তখন মেঘ বলল,,
“প্রেয়সীর মুখে অন্য কারো কথা শুনে প্রেমিকের যদি জেলাসি না হয় তাহলে সে কি করে একজন যোগ্য প্রেমিক হয়। আমার জীবনে আপনার প্রবেশটা ঠিক বসন্তের মতো। যার রেশ এতো গুলো বছরেও কাটে নি। অন্যকে নিয়ে ভয় পাওয়ার কারন নেই। এই মেঘ ধূসরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল ,আছে আর ভবিষ্যতেও থাকবে তার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত।”
কথাটা শুনে ধূসর সামনে ঘুরলো ততক্ষনে মেঘের রিক্সা ছেড়ে দিয়েছে দৌড়ে গিয়ে রিক্সা থামিয়ে বলল,,
“শুনো মেঘ বালিকা আমার জীবনে তোমার প্রবেশ আর প্রত্যেকটা সাক্ষাৎ সেই বর্ষার প্রথম বৃষ্টির মতো যে সবসময় মনপ্রান দুটোই ভালোলাগার বৃষ্টিতে ভিজিয়ে দেয়। একরাশ ভালোলাগা একরাশ মুগ্ধতা যা মিলে মিশে আমাকে করে সতেজতা। যার রেশ এতগুলো বছরেও কাটে নি আর কাটবেও না। এই ধূসর এহসান শুভ্র তার মেঘবালিকা কে কখনো সে চাইলেও হারাতে দেবে না। তাই ভয় পাওয়ার কোন কারনই নেই।”
বলেই ধূসর চলে এলো মেঘ মুচকি হাসলো। রিক্সা আবার চলতে শুরু করলো। মেঘের ইচ্ছে করছে পাখির মতো ডানা মেলে উরতে। সে তার গন্তব্যে চলে গেল।
______________
দেখতে দেখতে কয়েকটা দিন কেটে গেল মুনের বিয়ের মাত্র সাত দিন বাকি এতদিন যাবো যাবো করেও শপিং এ যাওয়া হয় নি। তাই আজকেই যাবে। সবাই রেডি হয়ে নিচে নামলো মেঘ ও নেমেছে মেঘ আজ কালো বোরকা হিজাব নিকাবের সাথে কালো ক্যাপ ও পরেছে কেন পরছে সেটা সে ছাড়া আর কেউ জানে না। মেয়েরা সবাই যাবে শায়লা,জায়মা,মুন,শিফা,মেঘ এই পাঁচজন ওপাশ থেকে নাকি মুজাহিদ আর ওর বোন আসবে সাথে আরো দুজন মেয়ে। সবাই বের হবে তখন আজান সবার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,,
“হেই লেডিসগন বাড়িতে একজন ছেলে থাকা সত্বেও এতগুলো মেয়ে একসাথে কোন জায়গায় যাবে। অথচ ছেলেটাকে না নিয়ে এটা কিন্তু উচিৎ নয়। তাই আমিও তোমাদের সাথে যাচ্ছি ওকে।”
তখন মুন বলল,,
” তুই মেয়েদের সাথে গিয়ে কি করবি আমরা যেখানে যাবো ওখানে কিন্তু ছেলেদের কিছু নেই তাই হুদাই তুই কেন যাবি?”
“আমি দেখতে যাবো মেয়েদের জিনিস। ভবিষ্যতে তো বউকে কিনে দিতে হবে। বয়স একুশ হলেই বিয়ে করে ফেলবো তাই আগে থেকেই দেখে রাখছি।”
মুন আজানের কান ধরে বলল,,
“বাঁদরামি করছিস আমাদের সাথে তোকে নেব না।”
“আহ আপু ছাড়ো আমি মেঘ আপুর সাথে যাবো তোমাদের সাথে যাবো না যাও। মেঘ আপু আমায় নাও না প্লিজ।”
আজান মেঘের কাছে গেল। মেঘ বলল,,
“ঠিক আছে চল।”
“মেঘ ও গিয়ে কি করবে তুই?”
“আহ হা বড় আপু আজান ছোট আর বাড়িতে তেমন কেউ নেই ও একা থেকে কি করবে। তার থেকে আমাদের সাথে যাক ঘুরে আসুক তবে এরপর থেকে আর যেতে চাইবে না। কারন মেয়েরা যেভাবে শপিং করে কোন ছেলেই তাদের সাথে যেতে চাইবে না।”
“সবাই কি তোর মতো এলিয়েন নাকি যে পাচ মিনিটেই শপিং শেষ।”
“হুম এখন চলো তোমাদের দেরি হচ্ছে।”
সবাই রওনা হলো মেঘ গাড়ি চালাবে বলেছে বাকিরা যেহেতু গাড়ি চালাতে এক্সপার্ট না তাই ও চালাবে। আজান মেঘের পাশে বসলো। বাকিরা পেছনে হুট করে মুন বলল,,
“মেঘ তোর হাতের ব্রেসলেট টা খুব সুন্দর কবে নিলি। এর আগে তো দেখলাম না।”
“এটা উনি গিফট করেছে সেদিন! তুমি হয়তো এর আগে খেয়াল করো নি।”
তখন শায়লা বলল,,
“দেখে তো ডায়মন্ড এর মনে হচ্ছে। বাহ তোদের নামের অক্ষর ও দেখি আছে।”
“হুম এটা নাকি উনি অর্ডার দিয়ে বানিয়েছে।”
“ওহ আচ্ছা ধূসর তো দেখি তোকে খুব ভালোবাসে। তোকে ডায়মন্ডের ব্রেসলেট দিয়েছে।
মুনের কথায় মেঘ বলল,,
“জিনিস দিয়ে কখনো ভালোবাসার পরিমাপ করা যায় না। ভালোবাসা মন থেকে আসে। ভালোবাসলে ফুলের আংটি ও অনেক সুন্দর লাগে। তবে হ্যা এটা সত্যি সে আমায় ভালোবাসে সে এটা প্রকাশ করতেও ভালোবাসে।”
তখন শায়লা বলল,,
“আর তুই! তুই ভালোবাসিস না।”
তখনি মেঘ ব্রেক মারলো আর বলল,,
“তোমাদের গন্তব্য এসে পরেছে। এখন নেমে পরো। আর হ্যা ভেতরে চলে যাও আমি গাড়ি পার্ক করে আসছি।”
সবাই নেমে গেল কিন্তু শায়লার প্রশ্ন মুখেই রয়ে গেল। ওরা নেমেই মুজাহিদদের দেখতে পেল ওরা কুশল বিনিময় করলো আর ভেতরে চলে গেল। মেঘ গাড়ি পার্ক করে মাথায় ক্যাপটা পরে ভেতরে ঢুকলো। মেঘ ঢুকার পর দুজন মেয়ে এগিয়ে এসে বলল,,
“আসসালামু আলাইকুম আপু কেমন আছো?”
“ওয়ালাইকুমুস সালাম। আলহামদুলিল্লাহ ভালো তোমরা কেমন আছো?”
“আমরা ভালোই আছি।’
“শুনো আমার পরিবার এসেছে দেখো তাদের যেন কোন অসুবিধা না হয় । আর তাদের সব বেস্ট টাই দেখাবে।”
“জি আপু কোন টেনশন করো না। তোমার বোনের বিয়ে বলে কথা সবকিছু তো বেস্ট হতেই হবে।’
তখনি মেঘ কে জায়মা ডাক দিল মেঘ ওখানে চলে গেল। ওরা বিয়ের জন্য শাড়ি দেখছে মেঘ এগুতেই মেয়েটা সালাম দিল সবাই কিছুটা অবাক হলো। ও সালামের উত্তর নিয়ে বলল,,
“আপনাদের এখানে লেটেস্ট মডেলের বিয়ের জন্য লেহেঙ্গা দেখান।”
এ কথা শুনে মেয়েটা বোধহয় ভ্যাবাচ্যাকা গেল আর বলল,,
“জি ম্যাম!”
মেয়েটা কতগুলো লেহেঙ্গা বের করলো তখন আরেকটা মেয়ে এসে তাকে সাহায্য করলো। তখন মুন বলল,,
“এখানের তো সব লেহেঙ্গাই সুন্দর কোনটা ছেড়ে কোনটা নেব মাথায় তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। শায়লা আপু ঠিক বলেছিল।”
তখন সেলসম্যান মেয়েটা মুচকি হেসে বলল,,
“আমাদের শোরুমের মালিক আই মিন আমাদের ম্যাম নিজ হাতে পছন্দ করে এখানের জিনিস আনেন আর আমাদের ম্যামের চয়েজ বেস্ট।
“হুম তবে এখানে একজন আছে তার চয়েজ ও বেস্ট মেঘ তুই একটা পছন্দ করে দে না মুনকে।”
জায়মার কথায় মেঘ বলল,,
“আমাকে কেন? মুজাহিদ ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করো উনি কোনটাতে ওনার বউকে দেখতে চান। উনার বউ উনি চয়েজ করুক তোমরা শপিং করো আমি অন্য কিছু দেখি।”
বলেই মেঘ চলে গেল। বাকি সবাই মেঘের কথায় হা করে রইল মুজাহিদ একটু লজ্জা পেল। অতঃপর ওরা শপিং করতে লাগলো। এদিকে মেঘ পুরো শপিং মল দেখছে ঘুরে ঘুরে সেলসম্যান দের সাথে কথাও বলছে। এখানে সব মেয়ে সেলসম্যান ম্যান সবাই বোরকা হিজাব আর মাথায় নীল ক্যাপ পড়া। মেয়েদের ক্যাপটাই এদের ড্রেসকোড বোধহয়।সকলকে দেখতে সুন্দর লাগছে এখানে অনেকেই কাজ করে সবার ব্যবহার মাশাআল্লাহ। মেঘ একটা সাদা গ্ৰাউন দেখে দাড়িয়ে পড়লো তখন একজন ওর পাশে এসে বলল,,
“ম্যাম আপনি চাইলে এই গ্ৰাউনটা ফ্রিতে আপনাকে দিতে পারি?”
মেঘ পাশে ফিরে নীল বোরকা, নীল হিজাব আর কালো নিকাব মাথায় নীল রঙের ক্যাপ পরিহিতা রমনীকে দেখতে পেল সে মুচকি হেসে বলল,,
“এই গ্ৰাউনটার দাম দেখেছেন এতো দামি গ্ৰাউন ফ্রিতে দিলে আপনার চাকরি থাকবে না আর যদি চাকরি থাকেও তাহলে মাইনে থেকে কাটা যাবে।”
“এ আমি দিতে চাইলে কার বাপের কি কেউ কিছু করতে পারবে না বুঝছেন!”
“এ এমন ভাব ধরছেন যেন আপনি এই শোরুমের মালিক?”
“আমি প্রথম মালিক না হলে কি হবে এই শোরুমের তার অবর্তমানে মালিক আমিই বুঝতে পেরেছেন। আর সে কিছু বললে আমি বুঝে নেব।”
“ওহ আচ্ছা আপনি এই শোরুমের মালিক চলেন প্রুফ দেখান। পরে গ্ৰাউন টা ফ্রিতে নিলে বলবেন তো আবার চুরি করেছে কেস ঠুকে দেবেন তো আবার। আপনাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে দুই নম্বরি কাজ কারবারের যুক্ত। এগুলো দিয়ে টাকা কামানোর ধান্ধা।”
“কি এত বড় কথা !”
“সত্যি কথাই তো বললাম!”
‘এই আপনাকে এখানে ঢুকতে দিয়েছে কে? আপনার সাহস তো কম না আমি এই শোরুমের দুই নাম্বার মালিক, আর আমাকেই কিনা অপমান করছে ।”
“তার মানে নিজে স্বীকার করছেন আপনি দুই নম্বার।”
“এই কে আছো বের করে দাও ওনাকে?”
ওখানে তেমন কেউ নেই আর মেয়েটা বলেছে আস্তে, কেউ শোনেনি ওর কথা। মেঘ তা দেখে বলল,,
“এতো হম্বিতম্বি করেন কেন দেখেন কোন কাজ হয় না। এই জন্যই আপনি শোরুমের দুই নাম্বার মালিক।”
“ইউ !!!আপনাকে তো আমি?”
“আরে চলেন দু’জনে কফি খাই খেতে খেতে ঝগড়া করা যাবে। আর আপনি আপনার কাজ ছেড়ে এখানে কেন? আপনি এখানের মালিক হলেও প্রফেশনালি এখানের ম্যানেজার। তাই এখানে সময় নষ্ট না করে চলেন। তা আপনার বেতন কতো সবকিছুর হিসাব তো প্রথম মালিকের কাছে দিতে হয় আপনার এই গ্ৰাউনটা আমায় ফ্রিতে দিলে গ্ৰাউনটার জন্য নিশ্চয়ই আপনার এক মাসের মাইনে কাটা যাবে পাক্কা সিওর।
“আপনি এতো নিষ্ঠুর কেন ম্যাম?”
~ চলবে,,