ধূসর রাঙা মেঘ পর্ব-০৫

0
1059

#ধূসর_রাঙা_মেঘ
#পর্ব_০৫
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি

আয়মান চৌধুরী ফজরের নামাজ পড়ে মেয়ের জন্য নুডুলস রান্না করে অপেক্ষা করছেন কিন্তু মেয়ের নামার নাম নেই। এদিকে মেঘ বাবার রুমের দরজার দিকে তাকিয়ে আছে ডাকবে কি ডাকবে না ঠিক বুঝতে পারছে না। তার আব্বা যে জেগে আছে সেটা সে ভালো করেই জানে সাথে তার মাও কারন তার বাবা মা দুজনেই নামাজ পড়ে। শেষমেষ ডেকেই ফেলল,,

“আব্বা আপনি কি জেগে আছেন?”

তখন ওপাশ থেকে মায়মুনা চৌধুরীর গলা পাওয়া গেল তিনি দরজা না খুলেই বলল,,

“তোমার আব্বা নামাজ পড়েই ঘর থেকে বেরিয়ে গেছেন হয়তো নিচে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।”

“আচ্ছা ঠিক আছে মা আমি আসছি আল্লাহ হাফেজ!”

ওপাশ থেকে আর কোন আওয়াজ এলো না মেঘ দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিচে এলো নিচে আসতেই খুশিতে চোখ ভরে উঠলো। কারন তার বাবা নুডুলসের বাটি হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে। মেঘ বলল,,

“আব্বা আবার নুডুলস রান্না করার কি দরকার ছিল?”

“আমার আম্মা না খেয়ে বেরোবে নাকি!”

“আমি তো রাস্তায় নাস্তা করে নিতাম। তাছাড়া আমার জামাই কি আমাকে না খায়িয়ে ছাড়তো হুম হুম!”

“থাক এখন বাজে সবে ৫ টা পাঁচটা নাস্তা তো আপনি হয়তো নয়টা নাগাদ করতেন ততক্ষনে আপনার পেটে গুরুমগুরুম করতে শুরু করতো। নিন খেয়ে নিন ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো।”

মেঘ ব্যাগটা নামিয়ে সোফায় বসলো তারপর বলল,,

“আপনার বাটি কই আব্বা?”

“আছে তো আমি জানি তো আমার আম্মা আমায় রেখে খাবে না।”

“হুম!”

দুই বাবা মেয়ে একসাথে নুডুলস খেল খাওয়া শেষ করে আয়মান চৌধুরী বললেন,,

“কি দিয়ে যাবে গাড়িতে নাকি ট্রেনে নাকি প্লেনে?”

“ধূসর বলল গাড়িতে যাবে সকাল সকাল গাড়িতে গেলে মন্দ লাগবে না। তাই মানা করি নি তবে ট্রেনে যেতে চেয়েছিলাম আমি।”

“ব্যাপার না তা ধূসর কি আপনাকে এখান থেকেই পিক করবে।”

“হুম কিন্তু এখনো তো এলো না।”

“এসে পরবে তা সব নিয়েছেন?”

“হুম!”

“ওকে।”

তখন মেঘের ফোনে একটা মেসেজ এলো ও দেখে বলল,

“উনি এসে গেছে!”

“আচ্ছা চলো এগিয়ে দিয়ে আসি!”

মেঘ ব্যাগটা নিল তারপর একসাথে বাইরে বের হলো। গাড়িটা ওদের গেটের সামনে ধূসর গাড়ি থেকে বের হয় নি। আয়মান চৌধুরী কে দেখে ও নেমে কুশল বিনিময় করলো এখনো পুরোপুরি আলো ফোটেনি উনি দুজনকেই সাবধানে থাকার জন্য বলল আর বিদায় দিল। ওরা চলে গেলে আয়মান চৌধুরী বাড়ির ভেতরে ঢুকল। কিন্তু বাড়ির ভেতর থেকে কয়েক জোড়া চোখ ঠিকই দেখলো ওদের। মায়মুনা চৌধুরী মেয়েকে একটা ছেলের সাথে দেখে অবাক হলেন ।

_______________

“ম্যাডাম আমার মা আপনার আর আমার জন্য সকালের নাস্তা পাঠিয়েছেন রাস্তায় খেয়ে নিতে বলেছেন।”

“মা কেন কষ্ট করতে গেল আপনি মানা করতে পারেন নি।”

“আমি জানতাম নাকি কাল রাতে যাবার কথা শুনলো তখন কিছুই বলেনি না রাতে রুমে এসে জিজ্ঞেস করলো কখন বের হবো সকালের কথা বলতেই সকালে নামাজ পড়ে এসে দেখি মা সব নিয়ে রেডি টিফিনের বাটি আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন। খিদে লাগলে বলবেন?

“মনে হয় না খুব তাড়াতাড়ি খিদে লাগবে কারন আব্বা নুডুলস খায়িয়ে পাঠিয়েছেন।আপনি কিছু খেয়েছেন।”

“আমি এত সকালে খেতে পারি না। সমস্যা নেই আমার খিদে পেলে আমি খেয়ে নেব। তুমি চেয়ে চেয়ে দেখো।”

“ওকে! রিম ঝিম ওরা কেমন আছে কাল ওদের কথা একদম মনে ছিল না।”

“আপাতত মামার বাড়ি আছে আজ আসবে।আর ভালোই আছে।”

‘ওহ আচ্ছা।”

মেঘ চুপ করে রইল তা দেখে ধূসর ও চুপ করে রইল। কিছুক্ষণ পর ধূসর Tawel al shawq নাশিদ ছাড়লো সে জানে তার প্রিয়তমা গান শুনে না। নাশিদের আওয়াজ শুনে মেঘ ধূসরের দিকে তাকালো তা দেখে ধূসর মুচকি হেসে বলল,,

“সারাটা রাস্তা কি এভাবে চুপ থাকবে নাকি তাহলে তো পুরো জার্নিটাই নিরামিষ লাগবে তাই ।”

“এই নাশিদটা আমার ভিশন প্রিয় আর এর বাংলা অনুবাদ যে কারো মন ছুঁয়ে যাবে। রবের প্রতি প্রেম।

“হুম এখন মন দিয়ে শুনো আর ফিল করো।”

শোনা শেষ করে মেঘ মুচকি হেসে বলল,,

“আপনি তো আমার মনটাই ফুরফুরে করে দিলেন। তবে কি জানেন তো যদি এটার বাংলা অনুবাদ টা আমি না জানতাম তাহলে হয়তো আমি এত প্রশান্তি পেতাম না। এই জন্যই তো সবকিছু বাংলা অনুবাদ জানা ভালো। এই যে যদি নামাজের জন্য যে সূরা দোয়া গুলো আছে এগুলো সবকিছুর যদি অর্থ জেনে পড়েন তাহলে আপনার নামাজে বেশি মনোযোগ আসবে সাথে প্রশান্তিও কারন তখন আপনি আপনার মনের ভাষা দিয়ে রবের সাথে কথা বলবেন।”

“হুম বুঝলাম ম্যাডাম।”

_________________

কয়েক ঘন্টা পর ওরা সিলেট পৌঁছে গেল রাস্তায় ওরা নাস্তা করে নিয়েছে দুজনে মিলে ভাগাভাগি করে ড্রাইভ করেছে প্রথমে ধূসর করতে না দিতে চাইলেও মেঘের কাছে হার মেনে ওর কথা শুনেছে। দু’জনেই বেশ টায়ার্ড কাল রাতেই ধূসর হোটেল বুকিং করেছিল তাই এসেই ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়েছে যেহেতু ওরা হাজবেন্ড ওয়াইফ তাই এক রুমই নিয়েছে। বিকেলের দিকে ওরা বের হলো । চা বাগানে গেল মেঘ সবথেকে উঁচু জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালো বুকের উপর হাত ভাঁজ করে দাঁড়ালো চোখ বুজে নিঃশ্বাস নিল। দূর থেকে সবকিছুই লক্ষ্য করলো ধূসর ও মেঘের পাশে এসে দাঁড়ালো মেঘের দৃষ্টি সামনের দিকে বহুদূর হুট করেই মেঘ বলল,,,

“ধূসর আমি যদি এখান থেকে হাড়িয়ে যাই আপনি আমায় খুঁজবেন তো।”

“না তো!”

এ কথা শুনে মেঘ ধূসরের দিকে তাকালো কিন্তু কিছু বললো না। তখন ধূসর বলল,,

“আমি তো তোমাকে হারাতেই দেব না তাহলে খুঁজব কেন? আর রইল আমার অগোচরে আমি যদি তোমায় হাড়িয়ে ফেলি তাহলে আমিও হাড়িয়ে যাবো।”

এ কথা শুনে মেঘ ধূসরের হাত ধরে ধূসরের চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,,

“ধূসর প্লিজ আমাকে কখনো হারাতে দেবেন না। এই যে আমাকে নিষ্ঠুর মেয়ে বলেন সত্যিই আপনার জীবনে আমাকে নিষ্ঠুর বানাবেন না। আমি আপনার জীবনে দীর্ঘশ্বাস হতে চাই না। আমি আপনার জীবনে এক আকাশ ভালোবাসা হতে চাই। কখনো আমার ওপর আপনার সংশয় তৈরি হয় তাহলে প্লিজ আমাকে বলবেন তবুও না জেনে কোন সিদ্ধান্ত গ্ৰহন করবেন না। আর যদি কোন কারনে আপনার মাঝে আর অন্য কিছুর মাঝে একটা বেছে নেওয়ার পালা আসে আর আমি যদি আপনাকে না বেছে অন্য একটিকে বেছে নিই তাহলে বুঝবেন আমার কাছে তখন ঐ সময়টায় সে বেশি ইম্পোর্টেন্ট। কারন আপনি আর কিছু মানুষ আমার জীবনে সবসময়কার জন্য ইম্পোর্টেন্ট ক্ষনিকের জন্য নয়।”

“মেঘ কি হয়েছে তোমার এসব বলছো কেন?” আমি দেখেছি রুম থেকে তোমার ফোনকল পাওয়ার পর থেকে তুমি কেমন যেন করছো।”

“আমি ঠিক আছি আপনি টেনশন করবেন না আমার কিছুই হয় নি। শুধু সবসময় আমার এই কথাগুলো মনে রাখবেন।”

“সাধে কি তোমায় #ধূসর_রাঙা_মেঘ বলি তুমি যে কি কখন করো বা বলো কিছুই বোঝা যায় না। সবদিকে দিকে কুয়াশা আর ধোঁয়াশা। আর আমি
সে তো তোমার সবকথাই মনে রাখি। এগুলো যখন মনে রাখতে বলছো তাহলে এগুলো স্পেশাল ভাবে মনে রাখবো। এখন বলো চা খাবে অবশ্য তুমি না বললেও এখন তোমায় নিয়ে আমি চা খাবো সিলেট এসেছো অথচ চা খাবে না তাই কখনো হয়।”

ধূসর দেখেছে মেঘ ডিসটার্ভ তাই বেশি ঘাটালো না এ বিষয় নিয়ে পরে আবার কথা হবে। ও ওকে নিয়ে একটা চায়ের দোকানে গেল সেখানে চা খেল প্রকৃতি দেখতে দেখতে প্রকৃতির মাঝে হাড়িয়ে গেল। মেঘ একজন প্রকৃতিপ্রেমী আর প্রকৃতিপ্রেমী দের কখনো প্রকৃতির মাঝে থেকে মন খারাপ হয়ে থাকতে পারে না। ধূসর মেঘের চেহারা দেখেই বুঝতে পারল সব স্বাভাবিক এখন । হুট করে ধূসর বলল,,

“তা ম্যাডাম মে কাজটা করতে এসেছেন সেই কাজটা করবেন কখন একদিন তো এভাবেই গেল।”

“আরে যাবো তো এত তাড়া কিসের ওনি তো রাতে পৌঁছাবেন আমরাও রাতে যাব!”

“তুমি যখন বললে ডক্টর জামান কে পেয়ে গেছো আমার তো বিশ্বাস -ই হচ্ছিল না।”

“আপনার বিষয়টা না থাকলে আমি কখনোই আপনাকে এখানে আনতাম না।’

“তা আর বলতে তুমি যে লোক হয়তো আমার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বলতে মিস্টার ধূসর এহসান শুভ্র আমার না মানে না আপনাকে বোঝাতে হবে একদম গুলি করে দেব বলে রাখলাম।”

এ কথা শুনে মেঘ হেসে ফেলল তার সাথে ধূসর ও হাসলো এমন ভাবে মেঘ অনেক কমই হাসে তাই ধূসর সবসময় চেষ্টা করে ওকে হাসিখুশি রাখার। ধূসর বলল,

“”এখন চলেন রুমে ফিরি কিছু কাজ রয়ে গেছে সেগুলো গোছাতে হবে তো।”

“হুম!”
__________________

“তোমার কি মনে হয় ডক্টর জামান এখানে কেন আসবে?”

“কারন সিলেটে বেশি ওষুধ উৎপাদন করা হয় সিলেটেই ওষুধ ফ্যাক্টরি বেশি। আর এখানে ডক্টর জামান এরও ফ্যাক্টরি আছে তবে অবৈধ ওষুধ উৎপাদন সে সিক্রেট ভাবে করে।”

“ওহ আচ্ছা! সব গুছিয়ে নিয়েছো ক্যামেরা?

“হুম সব কিছু ঠিকভাবে নিয়েছি আপনি নিয়েছেন।”

“হুম!”

“ওকে চলুন এবার যাওয়া যাক।”

রাত দশটার দিকে ওরা দুজন বের হলো ধূসর কালো শার্ট, কালো প্যান্ট মুখে মাস্ক আর ক্যাপ পড়েছে। মেঘ কালো বোরকা কালো হিজাব নিকাব আর কালো ক্যাপ পড়েছে দুজনকেই অনেক সুন্দর রহস্যময় যুগল লাগছে।

__________________

এদিকে,,

ডক্টর জামান আর একজন এসেছেন তার চোখ মুখ মাস্ক আর চশমা দিয়ে ঢাকা। ডক্টর জামান বললেন,,

“আমি যে এখানে আজ আসবো কেউ জানে না তো?”

“না আমি কাউকে বলি নি এখন তুমি শুধু তোমার ফর্মুলা টা দাও!”

“এবারের ফর্মুলাটা কিন্তু বেশ রিস্কি এখন কার এই ফর্মুলার ওষুধ সেবন করলে কেউ সুস্থ তো হবেই না। উল্টো একটানা কয়েকদিন সেবন করলে তার জীবন শেষ। এটা না করলে কি হতো না।”

“না হতো না কারন এর বেশ চাহিদা অনেক লোক এটার ব্যবহার করবে তবে তোমাকে বলছি একটা কথা সেটা হলো পৃথিবীতে ধীরে ধীরে ভালো মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। কারন খারাপ মানুষ গুলো যে ভালো মানুষদের বাঁচতে দিচ্ছে না।”

“যেমন খারাপ লোক থেকে ভালো মানুষ হতে দিচ্ছে না তেমন।”

“তুমি কি আমাকে কথাটা মিন করলে।”

“আর কতো এ ধ্বংসের খেলা আমি একটু ভালো থাকতে চাই আমার পরিবার নিয়ে কিন্তু তোমার জন্য পারছি না। হ্যা যদিও প্রথমে টাকার লোভে পড়ে এগুলো করেছি কিন্তু আমিতো সময়মতো ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুমি আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে এই খারাপ কাজ গুলো করাচ্ছো। কতো মানুষের খারাপ করেছি কতো মানুষকে ভুলভাল ওষুধ দিয়ে অসুস্থ রেখেছি দিনের পর দিন। অবৈধ ওষুধ উৎপাদন করেছি যা লোকেদের জন্য ক্ষতিকারক। কতোজন আমার দারা মৃত্যু গ্ৰহন করেছে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি আমি আর চাই না এগুলো করতে।”

“করতে তো তোমায় হবেই কারন খারাপ রাস্তাটা হলো একটাই রাস্তা সেখান থেকে ঘুরে আসার কোন পথ নেই। নয় তোমাকে এগিয়ে যেতে হবে নয় মরতে হবে। তুমি যদি রাজি না হও তাহলে তোমাকে সহ তোমার পরিবার কে শেষ হতে হবে। এখন বলো রাজি।”

‘হুম রাজি!”

“গুড!”

তখনি কারো আসার আওয়াজ হলো তখনি ডক্টর জামান আর আর মাস্ক পড়া লোকটা চমকে উঠলো আর দরজার ওপাশ থেকে কেউ বলে উঠলো,,

“কে ওখানে! কে আছো স্যার কেউ জানালা দিয়ে আপনাদের কথা শুনছে।

এদিকে ধূসর আর মেঘ এতক্ষন সব রেকর্ড করছিল দুই তিন জন গার্ডকে ওরা অজ্ঞান করে ভেতরে ঢুকেছিল। কিন্তু কেউ আসার শব্দে ওরা লুকাতে গেলে সামনে কেউ কথাটা বলে উঠে । বিপদ আসন্ন দেখে ওরা দৌড়াতে থাকে ততক্ষণে তারাও বুঝে গেছে যে লুকিয়ে কেউ তাদের কথা শুনছিল তারা অন্য গার্ডদের তাদের পেছনে যেতে বলে ওখান থেকে তারা চলে যায় এখানে থাকা ঠিক নয় যদি ধরা পরে যায়। এদিকে ধূসর আর মেঘ পানপনে দৌড়াচ্ছে দৌড়াতে দৌড়াতে ওরা একটা জায়গায় লুকিয়ে পড়ে। লোকগুলো ওদের না পেয়ে চলে যায় মেঘ আর ধূসর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে হোটেলে ফিরে যায়। হোটেলে ফিরে ধূসর দেখতে পেল মেঘের হাতের তালু দিয়ে প্রচুর রক্ত পরছে কিন্তু ও কিছুই বলে নি। ও গিয়ে ওর হাত ধরে বলল,,

“তোমার হাত কেটে গেছে আমায় বলো নি কেন?”

“আরে এ তেমন কিছুই না একটুই তো সেরে যাবে।”

“তোমার কাছে এটা একটু মনে হচ্ছে কতো রক্ত পড়েছে দেখো এখনো পরছে কখন হলো এটা।”

ততক্ষনে ধূসর ফাস্ট এইড বক্স এনে মেঘ কে বসিয়ে হাত পরিস্কার করতে লেগে গেছে। হাত পরিস্কার করছে আর বলছে,,

“তুমি এতো কেয়ার লেস কেন মেঘ তুমি কি জানো না তোমার আঘাত সহ্য হয় না। কি হলো বলো কখন হলো।”

“দৌড়ে দেয়াল টপকিয়ে আসার সময় ওখানে কাঁচ ছিল আমি দেখতে পাইনি ওখানে হাত রাখতেই বুঝতে পারলাম। তখন এতো খেয়াল করি নি কারন মাথায় চিন্তা ছিল আবার ধরা পরে না যাই। পরে রিল্যাক্স হতেই দেখলাম হাতটা ভিশন ব্যাথা করছে আর হাত দিয়ে রক্ত পরছে তখন অন্য হাত দিয়ে একটা কাপড় দিয়ে চেপে রেখেছিলাম। এসে হাতে ওষুধ লাগাতাম তো আমি আপনি চিন্তা করবেন বলে বলি নি।”

“বোকা তুমি ডক্টর আমি না তুমি হুম! কতোখানি কেটে গেছে ব্যান্ডেজ করতে হবে। কাঁচ ও ঢুকে গেছে একটু দাঁড়াও বের করি।”

“করেন!”

“ভয় করছে না এখন তো অনেক ব্যাথা পাবে আর আমার বুকে রক্তক্ষরণ হবে।”

“একটুও ভয় করছে না এমন ভান করছেন যেন আপনার হাতে কাচ ঢুকে গিয়েছে।’

“তা বুঝলে তো হয়েই যেত নিষ্ঠুর মেয়ে।”

কথাটা বলেই ও টান দিয়ে কাচটা বের করে ফেলল মেঘ ব্যাথায় চোখ মুখ শক্ত করে ফেলল কিন্তু একটা টু শব্দ ও করে নি। ধূসর তো অবাক চোখে মেঘকে দেখতে লাগলো। মেঘ চোখ খুললো ধূসর তারপর খুব যত্ন করে মেঘের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিল। হাতে একটা চুমুও খেল। তা দেখে মেঘ মুচকি হাসলো। সব শেষে বলল,,

“আমাদের এখানে আসা স্বার্থক প্রমান পেয়ে গেছি এবার আমি প্রমান করতে পারবো সেই দোষী। কিন্তু আরেকজনের চেহারা দেখা গেল না। নাহলে ওনাকেও ধরতে পারতাম। ধূসর আপনি ফ্যাক্টরি থেকে অবৈধ ক্ষতিকারক কেমিক্যালের স্যাম্পেল কালেক্ট করেছেন তো। ”

“হুম যাক বউয়ের সাহায্য করতে পেরে ধন্য ম্যাডাম ডক্টর না হলে কাজটা আরও কঠিন হতো।”

“হুম যাই হোক এখন শুধু ঢাকায় ফেরার পালা এরপরেই”

“তা তুমি বুঝলে কিভাবে যে রুকনুজ্জামানই ডক্টর জামান। ”

“কারন উনি সব জায়গায় ডক্টর জামান হিসেবে পরিচিত। ওনার এপ্রোনে ডক্টর জামান লেখা থাকে। সত্যি বলতে তিনি আমার বাবার বন্ধু আপনার কথা শুনে আমার তার কথাই প্রথমে মাথায় এসেছে কারন সেও ওষুধ তৈরি করতে পারে। আব্বার কাছে জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন আপনি যে কলেজে পড়তেন তিনি ঐ কলেজেই ছিলেন আগে । কাল রাতে আপনাকে ছবিটা দেখাতেই পুরো সিওর হয়ে গেলাম।তিনি ঐ কলেজ ছেড়েছে আরো চার বছর আগে। আর তিনি যে অবৈধ ওষুধ কারবারের সাথে যুক্ত তা আমি আগেই জানতাম।একটা কেস এসেছে ওনার নামে ওনার বিরুদ্ধে প্রমান খোঁজার জন্য একদিন রাতে বেরিয়েছিলাম আর সৌভাগ্যক্রমে তার গাড়িতেই ধাক্কা লাগে যদিও এটা তার প্ল্যান তবে আমাকে বেশ সাহায্য করে। তবে এই বিষয়ে আমাকে সাহায্য করে ওনার ছেলে রুপ পুরো নাম অভিরুপ বাড়ির সবাই রুপ ডাকে। সেদিন রুপ না থাকলে এতদিন হয়তো আপনি আমার জন্য ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইলাইহি রজিউন পড়তেন।

এ কথা শুনে ধূসরের আত্মা কেঁপে উঠলো কি শুনছে সে তার প্রিয়তমা মারা যেত ও মেঘকে জরিয়ে ধরলো কারন তাকে সে ভিশন ভালোবাসে তার জন্য সে সবার সাথে লড়াই করতে পারে। এমনকি নিজের জীবন ও দিতে পারে। মেঘ ধূসরের অবস্থা দেখে হাসলো আর মনে মনে বলল,,

“ধূসর এইটুকুতেই আপনার এত ভয় আমার সম্পর্কে তো আপনার তেমন ধারনাই নেই। এই আমি সত্তা যে কয়টা। প্রতিনিয়ত কারো না কারো সাথে আমার নিরব যুদ্ধ হয় আপনি কি জানেন এই আমি কতবার কতভাবে আঘাত পেয়েছি ।আমি আপনাকে জানাতে চাই না কারন আপনি যে আমার আঘাত সহ্য করতে পারেন না। আপনি যে আমায় খুব ভালোবাসেন। সরি ধূসর এই নিষ্ঠুর মেয়েটা আপনাকে কখনো ভালোবাসি বলে না। কিন্তু সে আপনাকে খুব ভালোবাসে ধূসর।

কিন্তু মুখে বলল,,

“রিল্যাক্স ধূসর আমার কিছুই হয় নি এই দেখুন আমি আপনার সাথে রয়েছি‌।”

ধূসর মেঘকে ছেড়ে বলল,,

“আমাকে জানাও নি কেন এখন সবটুকু বলবে এর সাথে পুরোনো হিসেব তো আছেই তার থেকে বড় কথা তোমায় আঘাত করেছে একে তো আমি নিজ হাতে প্রথমে শাস্তি দেব।”

“ওকে ওকে রিল্যাক্স তার পরের টুকু শুনুন রুকনুজ্জামান তার তৈরি ওষুধ দেয় যার জন্য আমি বেশি অসুস্থবোধ করি তখনি বুঝতে পারি আমি ঠিক নেই। আমার শরীরে এমন কিছু দেওয়া হয়েছে যাতে আমি আরো দুর্বল হয়ে পরছি কারন এর আগেও এমন আহত হয়েছি কিন্তু কোনদিন এত দুর্বল হই নি। তাছাড়া আমি ওনার ব্যাপারে জানতাম। সকালে নাস্তার টেবিলে আমার খাবারের ভেতর উনি কিছু একটা মিশিয়ে দেয় সেটা ওপর থেকে রুপ দেখতে পায় আর রুকনুজ্জামান কে কারো সাথে কথা বলতে শুনে যে ঐ খাবার টা খাওয়ার আধা ঘন্টা পরেই আমার শরীর আসাড় হয়ে যাবে তখন বাহানায় উনি হসপিটালে নিয়ে যাবে আর ওখান থেকে ভ্যানিস করে দেবে। এই যে রুপ, আমি যাতে খাবার টা না খাই তাই বিভিন্ন ভাবে আমাকে অপমান করে। রুপ নাকি আমায় চিনতো তাই ফোন লাউড স্পিকারে দিতে বলে যাতে ওর বাবা বুঝতে পারে আমি কার মেয়ে আর আমার যাতে ক্ষতি করার চেষ্টা না করে। আফটার অল আমি তার বন্ধুর মেয়ে আমার কিছু করলে আমার এত ক্ষমতাশালী আব্বা তো ছেড়ে দেবে না। তবে ঐ বাড়ির রুকনুজ্জামান ছাড়া বাকি সবাই ভালো। আর রুকনুজ্জামান আমার সামনে এত নিখুঁত আর ভালো ব্যবহার করে যাতে তার বিরুদ্ধে আমি কোন স্টেপ না নেই। আমি যেন বুঝি কেউ তাকে ফাসিয়েছে সে খুব ভালো মানুষ এই হলো কাহিনী। তবে আমি সেদিন এসবের কিছুই জানতাম না।

“বাহ বেশ ইন্টারেস্টিং তো কাহিনী তো তবে এই কাহিনীর মেইন হিরো হলো রুপ। কিন্তু সবাই তাকে ভিলেন ভেবেছে আর হ্যা যাকে সব থেকে অবলা ভেবেছে সেই হচ্ছে বুদ্ধিমতী। আচ্ছা তুমি এগুলো জানলে কিভাবে পরে।

“রুপের সাথে তার তিনদিন পর রাস্তায় দেখা হয় সেদিন আমার কাছে মাফ চায় আর এগুলো বলে তবে সেই কিন্তু এই পর্যন্ত আমাকে সাহায্য করছে আজ যে এখানে ডক্টর জামান আসবে সেটাও রুপ জানিয়েছে।তাই তো আজ এসেছি। তার বাবা বলে সে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় নি। সে চায় তার বাবা শাস্তি পাক এতগুলো মানুষের ক্ষতি করে সে কিভাবে শান্তিতে থাকতে পারে। এগুলোই রুপ সেদিন আমায় বলেছিল সেদিন আমি সেই ১৬ বছর বয়সী ছেলের মাঝে ম্যাচুরিটি দেখেছি। তার চোখগুলো ছলছল ঠিকই করছিল কিন্তু মুখটা ছিল শক্ত যে তার মায়ের বোনের ভবিষ্যত নিয়ে ভেবে ফেলেছে তার বাবাকে ছাড়া কিভাবে কাটাবে অন্যের কথা কিভাবে হজম করবে সব।”

“রুপের জন্য খারাপ লাগছে কিন্তু কিছুই করার নেই। তা এসেছিলে তো দুদিনের জন্য একদিনেই কাজ হয়ে গেল। তাহলে কি কালকেই যাবে।

“না আমার একটা কাজ আছে এখানে একটা পুরোনো সম্পর্ক কাল ওখানে যাবো। আর আপনি না বলছিলেন কোথাও যাবেন তাহলে।”

“হুম যাবো আমাদের পুরোনো বাড়িতে দেখতে এখন বাড়িটার কি অবস্থা। আমরা আগে সিলেটেই থাকতাম। প্রায় দশ বছর হলো আমরা এখান থেকে চলে গেছি।”

“দশ বছর আগে কিন্তু কেন?”

একথা শুনে ধূসর একটু থমকালো কিন্তু মুচকি হেসে বলল,,

“এমনিই বাবার এখানে বিজনেস ভালো চলছিল না তাই আমরা ঢাকায় চলে যাই।”

“ওহ আচ্ছা”

” হুম তুমি কোথায় যাবে আমাকে নিয়ে যাবে না একাই।”

“একাই যাবো সরি আপনাকে নিতে পারবো না ওখানে। ততক্ষনে আপনি আপনাদের বাড়িটা দেখে আইসেন। তবে আমার ইচ্ছা আছে আপনাদের বাড়ি দেখতে আপনার ছোটবেলা তো সেখানেই কেটেছে তাই না।”

“হুম আচ্ছা তাহলে তুমি ফিরে আসলে তোমায় নিয়ে যাবো ততক্ষনে আমি আশেপাশে ঘুরে দেখবো।”

“আচ্ছা! আমার বেশি সময় লাগবে না দুই ঘন্টা এর মধ্যেই এসে পড়বো আর সকালে নাস্তা খেয়েই বের হবো।”

“ওকে!”

“এখন বলুন তো ম্যাডাম খিদে পেয়েছে নাকি!”

“না পায় নি আর কতো রাত হয়েছে জানেন রাত তিনটা বাজে এখন!”

“তো এই সময় খিদে লাগতে পারে না বুঝি?”

“তা পারে তো এতরাতে রিসিভশনে ফোন দেবেন নাকি?”

“আরে না এত রাতে তাদের ডিসটার্ভ কেন করবো। আমার কাছে তো খাবার আছে ব্যাগে!”

“আপনার খিদে পেয়েছে আপনি খান আমি এখন ঘুমাবো!”

“ফ্রেশ না হয়েই এখনো তো বোরকা খুললে না নাকি খুলতে পারছো না আমি সাহায্য করবো।”

“না দরকার নেই আমি পারবো।”

“ওকে!”

মেঘ বোরকা খুলে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়ল ধূসর ও তারপর ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়লো মেঘের পাশে।

__________________

সকালে চোখ খুলেই মেঘ ধূসরকে দেখতে পেল ওকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে । ফর্সা চেহারায় চাপ দাড়ি ঘুমন্ত চেহারায় ধূসরকে অনেক মায়াবী লাগছে । আবার মেঘ ভাবলো ছেলেদের মায়াবী লাগে নাকি কথাটা ভাবতে ভাবতে ধূসরের দাড়ি ধরে দেখতে লাগল তখন ধূসর ঘুম ঘুম কন্ঠে বলল,,,

“দাড়ি ধরে টানাটানি করছো কেন?”

“আরে টানাটানি কখন করলাম আমি তো ছুঁয়ে দেখছিলাম। আর মশাই কতো ঘুমাবেন সকাল হয়ে গেছে ফজরের নামাজ ছুটে কাজা হয়ে গেছে।”

তখন ধূসর চোখ খুলে বলল,,

“আসলে কাল অনেক রাতে ঘুমালাম না তাই দেখো কেউই উঠতে পারি নি।”

“হুম এখন আমাকে ছাড়ুন?”

“ওহ সরি নাও ছেড়ে দিলাম। হাত এখন কেমন?”

“দেখে তো ভালোই লাগছে আলহামদুলিল্লাহ ব্যাথা অনেকটাই কম।”

“ট্রিটমেন্ট কে করেছে দেখতে হবে না।”

“কে করেছে?”

“তোমার জামাই এখন যাও ফ্রেশ হয়ে আসো তারপর আমি যাবো তারপর একসাথে নামাজ পড়বো।”

“ওকে!”

ওরা ফ্রেস হয়ে নামাজ আদায় করে নিল। তারপর ব্রেকফাস্ট রুমেই আনিয়ে নিল কারন মেঘ সবার সামনে খেতে পারবে না। মেঘের ডান হাত কেটে গিয়েছে তাই ধূসর ওকে বলল,,

“নিজের হাত দিয়ে খাবার খাওয়ার চেষ্টাও করবে না। তোমার জামাই তোমাকে খায়িয়ে দেবে।”

“হুম!”

ধূসর মেঘকে খায়িয়ে দিল। কিছুক্ষণ পর মেঘ ধূসরের থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পরলো ওর গন্তব্যে। গন্তব্যে পৌঁছে ওর চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে গেল আর বলল,,

“কেন হলো এমন তুই কেন এভাবে আমার হাত ছেড়ে দিলি আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি সে ফিরে এসেছে আবার আরেকটা যুদ্ধের ঘন্টা বাজিয়ে। আকাশ মাহমুদ ফিরে এসেছে আমি যে আর পারছি না। তুই থাকলে আমরা আর তুই ঠিক সামলে নিতে পারতাম। ওকে হারানোর ভয় থাকতো না। ওকে হারালে আমি মরে যাব ওকে যে খুব ভালোবেসে ফেলেছি। আমি ওর মায়াবী মুখের হাসি দেখে আমার দুঃখ ভুলে যাই।ওকে ছাড়া থাকতে আমার ভিশন কষ্ট হয় তবুও থাকি যখন না পারি তখন দৌড়ে ওর কাছে চলে যাই। ওকে নিয়ে ভয় হয় এই বোধহয় সে এসে ওকে নিয়ে গেল নাহলে ওর ক্ষতি করে দিল আর আমি ওকে তোর মতো হাড়িয়ে ফেললাম। ওর জন্য সব করতে পারি আমি শুধু আমি না আমরাও হবে।”

তখন বোধহয় ওর কানে কানে কেউ বলল,,

“তোরা আছিস বলেই তো আমি নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছি। কিছুই হবে না আল্লাহর ওপর আর নিজের ওপর ভরসা রাখ আকাশ মাহমুদ তোদের কিছুই করতে পারবে না। এবার তুই একা নস তোর সাথে আরো তিনজন আছে। সবথেকে বড় কথা সে তোদের ছাড়া কিছু বোঝেনা। তবে তোদের দায়িত্ব ও ওকে দেখে রাখার সব তোদের হাতে বিশেষ করে তোর হাতে। শুধু তার দায়িত্ব না তার দায়িত্ব পালন করার জন্য থাকা ওদের সুরক্ষাও তোর হাতে। ওদের কাউকে হারাতে দিস না নাহলে তারাও আমার মতো হাড়িয়ে যাবে তোর থেকে।”

তখন মেঘ চিৎকার করে বলল,,,

“না না আমি কাউকে হারাতে চাই না। ওরা আমার জীবনের অংশ আমি ওদের হারাতে দেব না। না আমি ওদের হারাতে দেব আর না আমি হারাবো। তুই শুধু আমার কাছে একবার ফিরে আয় আমি তোকে ও হারাতে দেব না।”

মেঘ কান্নায় ভেঙে পড়লো। এই মেঘ সবার কাছে অপরিচিত। এখান থেকেই যে তাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল পুরোনো কথা মনে পরতেই সেই ভয়ঙ্কর রাতের কথা মনে পরলো আর ওর মাটিতে বসে কাঁদতে লাগলো। এই মেয়েটা কখনো কারো সামনে কাঁদে না।অথচ এখানে বসে পাগলের মতো কাঁদছে। কিছুক্ষণ পর নিজেকে সামলিয়ে মেঘ উঠে পরলো আশেপাশে কেউই নেই। চোখ মুখ মুছে ফেলল সামনে গিয়ে একটা দোকান থেকে পানি কিনে নিকাব উঠিয়ে মুখ ধুয়ে আবার নিকাব নামিয়ে নিল। তারপর আবার হোটেলের দিকে রওনা হলো। হোটেলে গিয়ে যা দেখলো তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না,,,,

~চলবে,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে