ধর্ষক_থেকে_বর_পর্ব__৩য়

0
7719

ধর্ষক_থেকে_বর_পর্ব__৩য়
.
মেয়েটা রুমে চলে গেল।রুমে গিয়ে দরজা আটকে দিয়ে চিৎকার
করে কাদতে শুরু করলো।রুমটা সাইন্ড প্রুভ ছিল তাই।ভেতরের কান্না
বাহিরে যাচ্ছে না।এমন সময় কারো দরজায় আঘাত করার আওয়াজ
শোনা গেল।দরজায় আঘাত করার শব্দ শুনে মেয়েটা চমকে উঠলো।
দ্বিতীয়বার দয়জায় আঘাত করতেই মেয়েটা নিজের দুচোখের অশ্রু
মুছে নিয়ে দরজাটা খুলে দিল।দরজাটা খুলতেই সামনে তাকিয়ে দেখে
তার মা দাড়িয়ে আছে।মেয়েটা আবার তার মাকে জরিয়ে ধরে চিৎকার
করে কাঁদতে শুরু করলো:
— কিরে লামিয়া কাদছিস কেন?
— কি হয়েছে বল আমাকে?
— আব্বু বকা দিয়েছে দেখে
কাদছিস তাই না।
— কাদিস না তোর আব্বু তোকে
অনেক ভালবাসে তোর ভালই
জন্যই এ সব কথা বলেছে।
— আর শোন এরপর থেকে আর
এতো রাত করবি না।
— ঘরের মেয়ে এতো রাত করে বাহিরে
থাকলে লোকে কি বলবে।
— আর কাদিস না।তুই খুব ক্লান্ত আমি
চলে যাচ্ছি তুই রুমের দরজা আটকে
ঘুমিয়ে পড় কেমন।
.
কথাটা বলেই লামিয়ার মা রুম থেকে বেড়িয়ে গেল।লামিয়া রুমের
দরজা আটকে শাওয়ার নিতে চলে গেল।শাওয়ার নিয়ে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লো।চোখটা বন্ধ করতেই চোখের সামনে সেই ধর্ষনের দৃশ্য
গুলো ভেসে উঠছে।কিছুতেই ঘুমাতে পারছে না লামিয়া।অন্যদিকে
শাকিল বাসার ছাদের এক কোনে বসে সিগারেটের ধোয়া বাষ্প করে
উঠাচ্ছে আর ওই দূর আকাশের চাঁদটার দিকে তাকিয়ে আছে।ছেলেটা
মনে মনে ভাবতেছে।আজ আমার নেশার জন্য একটা নিরহ মেয়ের
জীবন এইভাবে নষ্ট হয়ে গেল।অন্য একটা মেয়ের জন্য একটা নিষ্পাপ মেয়ের জীবন নষ্ট করা কি ঠিক হলো।একদম নয়।জানি না মেয়েটা আমাকে কখনো কোন অবস্থায় ক্ষমা করবে কি না।তবুও মেয়েটার
জীবন এভাবে শেষ হতে দেব না।মেয়েটা ধর্ষিতা জেনে কোন ছেলেই
তাকে বিবাহ করতে রাজি হবে না।তার জীবনটা শেষ হয়ে যাবে।এইটা আমি কিছুতেই হতে দেব না।আমি নিজে মেয়েটাকে বিয়ে করে
নতুন করে ঘর বাদবো মেয়েটার সাথে।আমি সম্পর্ণ ভাল হয়ে যাবো
আর কখনো কোন নেশা করবো না।এই সব কথা ভাবতে ভাবতে
কখন যে ছাদের উপরই ঘুমিয়ে পড়েছি বুঝতেই পারি নি।আজ কলেজে
আসতে ইচ্ছা করছিল না।নিজের অনিচ্ছা সত্যেও কলেজে চলে আসলাম।কলেজে এসে দেখলাম আমার বেষ্ট ফেন্ড রাফি এখনো কলেজে আসেনি।রাফি আমার বেষ্ট ফেন্ড।রাফির সব কথা আমার
সাথে আর আমার সব কথায় রাফির সাথে শেয়ার করি।কলেজে এসে রাফিকে একটা ফোন করলাম।
— হ্যালো।(রাফি)
— কিরে কই তুই।
— বাসায়।
— আজ কলেজে আসবি না।
— না রে দোস্ত।
— কলেজ আয় প্লিজ তোর সাথে
একটা জরুরি কথা আছে।
— কি কথা ফোনে বল।
— ফোনে বলা যাবে না।তুই
আসলে বলবো।
— আচ্ছা।তুই দাড়া আমি আসতেছি।
.
কলেজ ক্যাম্পাসে বসে কিছু সময় অপেক্ষা করার পর রাফি কলেজে
চলে আসলো।রাফি কলেজে আসতেই আমি রাফিকে ডাক দিলাম।
— রাফি এদিকে আয়।
— কি যেন জরুরি কথা বলবি
বলছিলি।
— হু বলছি বস এখানে।
— রাফি আমার পাশে বসলো।
— দোস্ত কাল রাতে অনেক বড়
একটা অপরাধ করে ফেলেছি।
— কি অপরাধ।
— কাল রাতে(………..)আমি
রাফিকে সব কথা খুলে বললাম।
— কথাগুলো শুনোর পর রাফি সম্পর্ন
নিস্তদ্ধ হয়ে গেল।কিছু সময় দুজন
নিরব থাকার পর রাফি বললো:
— ছি তুই আমার বন্ধু হয়ে এই
সব করতে পারলি।
— সরি দোস্ত কাল রাতে নেশাটা
এতো বেশী হয়ে গিয়েছিলো যে
কি করতে কি করে ফেলেছি
বুঝতেই পারি না।
— মেয়েটাকে চিনিস তুই।
— না রে।শুধু মাত্র ওর বাসার
ঠিকানা যানি।
— মেয়েটা ধর্ষিতা জেনে ওকে তো আর
কেউ বিয়া করবে না।তোর জন্য একটা
নিস্পাপ মেয়ের জীবন শেষ হয়ে যাবে।
— না এইটা আমি কিছুতেই হতে দেব না।
আমি নিজে বিয়ে করবো মেয়েটাকে।
— তাহলে তো অনেক ভাল হবে।
— আচ্ছা চল বাসায় যায়।আজ আর ক্লাস
করবো না।
.
তারপর আমি আর রাফি কলেজ থেকে বেরিয়ে একটা রিক্সা নিয়ে
রাফি রাফিদের বাসার সামনে নেমে গেল।আর আমি আমার বাসায়
চলে আসলাম।বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে আমার রুমে এসে বসে আছি।
এমন সময় আম্মু আমার রুমে আসলো।আম্মু আমার
রুমে এসে বললো:
— টেবিলে খাবার দিয়েছি খেতে আয়।
— আম্মু শোন।
— কি কিছু বলবি?
— হু।
— কি বলবি বল?
— আম্মু তোমরা না আমার বিয়ের
কথা বলেছিলে না।
— হু তো।
— আমি বিয়ে করতে রাজি তবে আমার
একটা শর্ত আছে।
— কি শর্ত।
— আমার একটা মেয়েকে খুব পছন্দ
হয়েছে। আমি তাকেই বিয়ে
করতে চাই।
— তাই নাকি।কে সে নাম কি
কোথায় থাকে।
— নাম তো জানি না তবে বাসার
ঠিকানা জানি।
— আচ্ছা তুই খেতে আয়।আমি
তোর আব্বু কে বলে দেখি।
.
তারপর আম্মু আমার রুম থেকে চলে গেল।কিছু সময় পর আমিও খেতে চলে আসলাম।এসে দেখি সবাই খেতে বসে গিয়েছে।আমি টেবিলে গিয়ে
বসতেই।আম্মু আমার জন্য প্লেটে খাবার বেড়ে দিল।খাওয়ার সময় আম্মু
কে চোখ দিয়ে ইসারা দিলাম কথাটা আব্বুকে বলার জন্য।কিছু সময় পর
আম্মু বললো:
— যদি রাগ না করো তবে তোমাকে
একটা কথা বলবো।(আম্মু)
— কি কথা বলো।(আব্বু)
— তোমার ছেলের একটা মেয়েকে
খুব পছন্দ হয়েছে।ও তাকেই বিয়ে
করতে চায়।
— তাই নাকি ভাইয়া।নাম কি
তার।কোথায় থাকে।(সাদিয়া)
— চুপ করো।ওর জন্য আমি আমার বন্ধুর
মেয়েকে পছন্দ করে রেখেছি।আমার পছন্দ
করা পাত্রীকেই ওকে বিয়া করতে হবে।
— কিন্তুু আব্বু।
— কোন কিন্তুু নয়।আমি আমার বন্ধুকে কথা
দিয়েছি।আমি আমার কথা ফিরিয়ে নিতে
পারবো না।আমার পছন্দ করা পাত্রীকেই
তোমাকে বিয়ে করতে হবে ব্যাস।
.
আমার জন্য মেয়েটার জীবন কি এভাবেই শেষ হয়ে যাবে।আমার এই পাপটা কি সারা জীবন এভাবে আমাকে কুরে কুরে খাবে।সারা জীবন কি মেয়েটার কাছে অপরাধী হয়ে থাকবো।আজ যদি মেয়েটাকে আমি বিয়ে না করতে পারি তাহলে তো আমি কখনোই নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না।রাগের বসে প্লেটটা নিচে ছুড়ে ফেলে দিয়ে সেখান থেকে রুমে চলে
আসলাম।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
#________চলবে________

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে