ধর্ষক_থেকে_বর_পর্ব__১৪
.
বাসায় এসে রুমে ঢুকতেই দেখি লামিয়া আমার দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে।লামিয়াকে দেখে মনে হচ্ছে আমার সামনে কোন মানুষ না আস্ত একটা ডাইনি দাড়িয়ে আছে।আমি একটু সামনে পা বাড়াতেই লামিয়া বললো:
.
— দাড়াও।আর এক পা ও সামনে
আসবে না।
— আমি দাড়িয়ে পড়লাম।
— কোথায় গিয়েছিলে?
— রাফির সাথে দেখা করতে।
— রাফির সাথে দেখা করতে গিয়েছিলে
নাকি বৃষ্টির সাথে কোনটা?
— বৃষ্টির সাথে আমার রাস্তায় দেখা হয়েছে।
— আমাকে আর বানিয়ে মিথ্যা কথা বলার
কোন প্রয়োজন নেই।
— বৃষ্টির সাথে কোন আবাসিক হোটেলে
গিয়েছিলে?
.
কথাটা শুনেই আমার মাথা গরম হয়ে গেল।রাগের বসে কসে একটা
থাপ্পর মারলাম লামিয়ার গালে।জানি না কিভাবে অচমকাই লামিয়ার
উপর হাত উঠে গেল।
.
— মারো আরো মারো।
— থেমে গেলে কেন?
— মারতে মারতে একদম
শেষ করে ফেলো।
— তোমার মতো একজন ধর্ষকের
স্রী হয়ে বেঁচে থাকার থেকে মরে
যাওয়া অনেক ভালো।
— আমি মনে করে ছিলাম।পুরোনো
সব কিছু ভুলে জীবনটাকে আবার
নতুন করে শুধু করবো।
— কিন্তুু সেটা আর হয়ে উঠলো না।
.
কথাটা বলেই লামিয়া কাঁদতে কাদতে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।কিছু সময়ের জন্য আমার সব কিছু থমকে দাড়ালো।আমি সেখান থেকে ছাদে চলে আসলাম।ছাদে এসে অতীতে ছাদের কোনে লুকিয়ে রাখা সিগারেটের প্যাকেটটা বের করলাম।সিগারেটের প্যাকেট থেকে টানা চারটা সিগারেট
একসাথে ধরিয়ে টানতে শুরু করলাম।সিগারেটের ধোয়া উড়াচ্ছি আর
নিজের কষ্ট গুলোকে বাষ্প করে উঠিয়ে দিচ্ছি।এরকম করতে করতে টানা
এক প্যাকেট সিগারেট শেষ করে ফেললাম।সন্ধায় ছাদ থেকে নেমে রুমে চলে আসলাম।রুমে এসে সোজা বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম।তার কিছু সময়
পর লামিয়া রুমে চলে আসলো।লামিয়া রুমে এসে আমাদের দুজনের মাঝে একটা বালিশ রেখে শুয়ে পড়লো।আমি বললাম:
.
— এইটা কি করছো।
— আমি তোমার সাথে এভাবে ঘুমাতে
পারবো না।
— তোমার সমস্যা হলে আমি নিচে
ঘুমাইতেছি।
— থাক এই শীতের রাতে তোমাকে
আর কষ্ট করে নিচে ঘুমাতে হবে না।
— তুমি আমার সাথে বিছানায়ই
ঘুমাতে পারো।
.
কথাটা বলেই লামিয়া অন্য দিকে ঘুরে ঘুমিয়ে পড়লো।তার কিছু সময় পর আমিও ঘুমিয়ে পড়লাম।মাঝ রাতে কারো বিকোট শব্দে ঘুমটা ভেঙে গেল।
পাশে তাকিয়ে দেখি লামিয়া কেমন যেন করছে।ওর কপালে হাত রাখতেই
আমার হাত জ্বলে যাচ্ছিল।আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না লামিয়ার শরীরে জ্বর আসছে।জ্বরের কারণে ওর শরীর একদম পুড়ে যাচ্ছে।আমি বাটিতে পানি নিয়ে লামিয়ার কপালে জল পট্টি দিলাম।কিছু সময় পর পরই জল পট্টি শুকে যাচ্ছিল।লামিয়াকে জল পট্টি দিতে দিতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি বুঝতেই পারি নি।সকালে সূর্যের রশ্নি চোখে পড়ায় ঘুমটা ভেঙে গেল।ঘুম থেকে উঠে লামিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি লামিয়া এখনো ঘুমিয়ে আছে।আমি জ্বর দেখার জন্য লামিয়ার কপালে হাত রাখবো।এমন সময় লামিয়ার কথায় দাড়িয়ে পড়লাম:
.
— তুমি আমাকে একদম স্পর্শ
করার চেষ্টা করবে না।
— কেন?
— আমি চায় না তুমি তোমার ওই
অপবিত্র হাত দিয়ে আমাকে
স্পর্শ করো।
— আমি তো এখন তোমার স্বামী।
— ধর্ষক কখনো কারো স্বামী হতে
পারে না।
.
হ্যা লামিয়া তো ঠিকিই বলেছে।আমি তো একজন ধর্ষক আর ধর্ষকের
কখনো কারো স্বামী হওয়ার কোন অধিকার নেই।আমি সেখান থেকে
ওয়াস রুমে চলে গেলাম।ওয়াস রুম থেকে ফ্রেস হয়ে রুমে চলে আসলাম।
রুমে এসেই দেখি আম্মু রুমে এসে লামিয়ার পাশে বসে আছে।
আমি বললাম:
.
— আম্মু এতো সকালে তুমি এখানে।
— তোর কি একটুও জ্ঞান বুদ্ধি নেই।
— কেন আম্মু?
— কেন মানে?লামিয়া জ্বরে বিছানা
থেকে উঠতে পারছে না।
— আর তুই একবারও ডাক্তারকে
ফোন করিস নি।
— আম্মু আমার ডাক্তার লাগবে না।
একাই ঠিক হয়ে যাবে।(লামিয়া)
— বাউমা তুমি চুপ করে শুয়ে থাকো।
— কিরে তুই দাড়িয়ে আসিস কেন?
ডাক্তারকে ফোন কর।
— হু করতেছি আম্মু।
.
তারপর আমি টেবিল থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে ডাক্তারকে ফোন করলাম।
এইটা আমাদের পারিবারিক ডাক্তার।আমাদের পরিবারের কারো কোন
সমস্যা হলে এনিই চিকিৎসা করেন।২/৩ বার রিং হওয়ার পর ফোনটা
রিসিভ করলো:
.
— আসসালামু ওয়ালাইকুম।
— ওয়ালাইকুম আসসালাম।
— ডাক্তার সাহেব আমি শাকিল
বলছিলাম।
— ওহ আপনি বলুন কি জন্য ফোন
করেছেন।
— আসলে ডাক্তার সাহেব আমার স্রীর খুব
জ্বর।আপনি যদি এসে একটু দেখতেন
তাহলে অনেক ভাল হতো।
— আচ্ছা।আমি কিছু সময় পর আসতেছি।
.
তারপর আমি ফোনটা কেটে দিলাম।সকাল প্রায় ৯ টার দিকে ডাক্তার সাহেব
আসলো।লামিয়াকে দেখে ওর জন্য কিছু ঔষুধ দিয়ে গেল।আমি ডাক্তারকে
বিদায় করে দিয়ে রুমে আসলাম।রুমে এসে কিছু সময় কাটানোর পর খাবার রুমে চলে গেলাম।সেখান থেকে লামিয়ার জন্য কিছু খাবার নিয়ে রুমে প্রবেশ করলাম।রুমে এসে খাবারের প্লেটটা নিয়ে লামিয়ার সামনে আসলাম।
.
— নাও খেয়ে নাও।
— আমি খাবো না।
— খেয়ে নাও বলছি।এগুলো খেয়ে
আবার ঔষুধ খেতে হবে।
— হা কারো আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
— আমি বলছি তো খাবো না।
.
আমি লক্ষ করলাম।কথাগুলো বলতে বলতে লামিয়ার দু চোখের কোনে পানি চলে আসছে।কথাটা বলেই লামিয়া রাগের বসে খাবারের প্লেটটা ছুড়ে মাটিতে ফেলে দিল।
.
.
.
.
.
.
.
.
#______চলবে______