#গল্পঃ দুষ্টু মেয়ের মিষ্টি সংসার
#লেখকঃ Md: Aslam Hossain Shovo (শুভ)
#পর্বঃ ৩…
√- মায়েরও পছন্দ হয়েছে এই পাগলী মেয়েকে, কি দেখে যে মায়ের এই পাগলী পছন্দ হলো বুঝতে পারছি না। শুধুমাত্র মায়ের পছন্দের কারনে কিছু একটা করতেই হবে আজ… এই ভেবে রাস্তা ধরে সামনের দিকে হাটা দিলাম।
কিছুদূর যেতে দেখি আমার বন্ধু ফয়সাল দাঁড়িয়ে আছে ~
আমিঃ কিরে দোস্ত কি করিস এই সকাল বেলা রাস্তায় দাড়িয়ে..
ফয়সালঃ আর বলিস না, ছাগলের ঘাস কাটি।
আমিঃ মানে…
ফয়সালঃ ছোট খালার আসার কথা আছে তাই দাঁড়িয়ে আছি। তাও দেখ এখনো আসার নাম নাই..
আমিঃ তোর খালা বুঝি তোদের বাড়ি চিনে না যে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে…
ফয়সালঃ সত্যি বলতে ছোট খালার একটা মেয়ে আছে হেব্বি দেখতে। নাম স্বর্না। চুল গুলো কুঁকড়ানো ছোট ছোট, সাথে মায়াবী দেখতে…
আমিঃ তাই নাকি? তাহলে আমার সাথে প্রেম করিয়ে দে..(হাসি দিয়ে)
ফয়সালঃ বললেই হলো, ওটা শুধু আমার বউ। কেনো রে দোস্ত, তোর তো রিতু আছে।
আমিঃ রিতু মানে..?
ফয়সালঃ এমন ভাব নিচ্ছিস যেনো কিছু জানিস না। পুরো গ্রাম জানাজানি হয়ে গিয়েছে তোর সাথে রিতুর বিয়ে।
আমিঃ আর বিয়ে! যে শর্ত দিয়েছে বাবা যে বিয়ের নাম ভুলেও মুখে নেওয়া পাপ…
ফয়সালঃ মানে…
আমিঃ এতো বুঝতে হবে না। চল আমার সাথে…
ফয়সালঃ কোথায়?
আমিঃ ছাগলের ঘাস কাটতে…
ফয়সালঃ কোন ছাগলের জন্য?
আমিঃ সেটা পরে দেখবি। এখন চল..
~ এই বলে ফয়সাল কে নিয়ে বের হয়ে গেলাম পুরো গ্রাম ঘুরতে। ফয়সাল তো ওর খালাতো বোন স্বর্নাকে না দেখে যাবেই না। এক প্রকার জোর করে ফয়সালকে নিয়ে গেলাম ওখান থেকে।
তারপর গ্রামে যত গুলো বাড়ি ছাগল পালন করে সব বাড়ি ঘুরে ঘুরে ছাগল দেখতে লাগলাম ~
ফয়সালঃ কিরে দোস্ত, তুই বললি ছাগলের ঘাস কাটবি, কিন্তু এখন সব বাড়ি ছাগল দেখছিস কেনো..
আমিঃ তুই না বললি রিতুর সাথে আমার বিয়ে। তাহলে তো একটা ছাগল লাগবেই তাই না বিয়ের জন্য..?
ফয়সালঃ ওহহ আবার বুঝতে পারছি। বিয়েতে ছাগলের মাংস খাওয়াবি। তাহলে তো হেব্বি হবে..(হাসি দিয়ে)
~ ফয়সাল তো খুব খুশি। ও নিজেই আরো ওর পরিচিত সব বাড়ি বাড়ি নিয়ে আরো ভালো মোটাতাজা ছাগল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাতে লাগলো। শেষে এক বাড়ি একটা খাশি (ছাগল) পছন্দ হলো আমার। দামাদামি করে ৭৫০০ টাকা টাকা দিয়ে ক্রয় করলাম ~
ফয়সালঃ দোস্ত খাশি কিন্তু সেই হয়েছে কম দামের মধ্যে। আমি কিন্তু পাঁজরের মাংস খাবো…
আমিঃ আচ্ছা দেখা যাক..(হাসি দিয়ে)
~ তারপর আমি আর ফয়সাল ছাগল নিয়ে ফরিদপুর শহরে ছাগল হাটে চলে গেলাম। পথে ফয়সালকে সব খুলে বললাম। শহরের হাটে এসে দেখি ছাগলের দাম অনেক যাচ্ছে। আমার আন্দাজ ছিলো ১০ হাজার হয়তো যাবে। কিন্তু দাম বেশি যাওয়াতে ওই ছাগল ১২,৫০০ টাকা বিক্রি করলাম। সাথে সাথে ৫ হাজার টাকা লাভ।
সব টাকা নিয়ে বাসায় চলে এলাম। এসে সরাসরি লাভের ৫ হাজার টাকা বাবার হাতে দিলাম ~
বাবাঃ এতো টাকা পেলি কোথায়?
আমিঃ তুমি না বলছিলে এমন কিছু করতে যে তোমার মনে হয় আমি বিপদের সময়ও সংসারের দায়িত্ব নিতে পারবো কিনা দেখবে। এই নেও এক দিনের আয় আমার…
~ বাবা ও মা তো অবাক হয়ে গিয়েছে এতো টাকা দেখে ~
বাবাঃ কিন্তু কিভাবে আয় করলি সেটা তো বল…
~ তারপর আমি ছাগল ক্রয় করে আবার বিক্রয় করার সব কাহিনি বললাম। বাবাও অনেক খুশি হয়েছে এমন বুদ্ধি করে কিছু একটা করছি তাই । মাও অনেক খুশি হয়েছে। বাবা খুশি হয়ে ওই টাকা আমায় দিয়ে দিলো। সাথে কাকা-কাকির সাথে কথা বলে রিতুর সাথে আমার বিয়ে পাকা করে ফেললো পরবর্তী শুক্রবারে।
পরবর্তী ৭ দিন খুব আনন্দের সাথে কাটলো আমার। খুব লজ্জায় ও লাগছিলো সবার সামনে যেতে। রিতুর সাথে আর দেখাও হলো না এই কয়েকদিন।
বিয়ের দিন সকালে আমি পুকুর পাড়ে বসি আছি, এমন সময় রিতু এসে পিছনে থেকে দিলো এক ধাক্কা। আমি সরাসরি পুকুরের মধ্যে গিয়ে পড়লাম ~
আমিঃ ওই পাগলী, তুই আমায় ধাক্কা দিলি কেনো?
রিতুঃ তাতে কি হয়েছে রে, আমার ছাগল বেপারি ভাই?.. (হাসি দিয়ে)
আমিঃ কি বললি তুই, আমি ছাগলের বেপারি..?.. (রাগী ভাবে)
রিতুঃ তুই তো শুধু ছাগলের বেপারি না, সাথে বিয়ে পাগল পোলা। বিয়ে করার জন্য ছাগলের বেপারি হয়েছে বেচারা, হি হি…বিয়ে পাগল…
আমিঃ ওই পেত্নী, তোর ভালোর জন্য এতোকিছু করছি আমি। আর তুই আমায় বললি ছাগলের বেপারি..
রিতুঃ হুম বুঝি তো বুঝি, এতো সুন্দরী মেয়ে দেখলে আর কয়টা ছেলের হুশ থাকে বল। তুই তো আমার চেহারা দেখে বেহুশ হয়ে গিয়ে বিয়ে পাগল হয়ে গিয়েছিস, হি হি…
আমিঃ এইছে আমার সুন্দরী। পেত্নী সাকচুন্নি কোথার…
~ রিতুকে পেত্নী সাকচুন্নি বললে প্রচুর রাগ হই। আমার দিকে মুখ কালো করে তাকিয়ে কি যেনো আস্তে আস্তে বলতে লাগলো ~
আমিঃ ওই কি বলিস, জোরে জোরে বল..
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
রিতুঃ তাহলে শোন, সয়তান, বানর, হনুমান কোথাকার… সাথে হারামী..
আমিঃ দাঁড়ে রে তুই.. (ধমক দিয়ে)
~ রিতু হাসি দিয়ে দিলো এক দৌড়। এই মেয়ে নিয়ে কি যে হবে বিয়ের পর চিন্তা করতে লাগলাম। পরে গোসল করে বাসায় চলে এলাম। দুপুরে আমাদের বাসা থেকে আমাদের পরিবারের সবাই, সাথে কিছু বন্ধু ও আমার মামা-মামী ও সাথে মামাতো ভাই ও তার বউ নিয়ে রিতুদের বাড়ি বরযাত্রী হিসাবে যাওয়া হলো। কাজি এসে বিয়ের সব কাজ শেষ করলো।
রাতে রিতুকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসলো। আমার রুমেই বাসর ঘর সাজিয়েছে। আমি আমাদের বড় ঘরে বসে আছি। মামাতো ভাইয়ের বউ আমার লিজা ভাবি এসে আমার হাত ধরে নিয়ে গেলেন আমার রুমে। যেখানে বউয়ের সাজে বসে আছে রিতু। বলতে গেলে বিয়েটা খুবই সাদাসিধা ভাবে হয়েছে। আয়োজন নেই বললেই চলে এমন।
রুমে গিয়ে দেখলাম রুমটা খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়েছে। রিতুকে খাটের মাঝে বসিয়ে রাখছে। লাল বেনারসি পড়ে ঘোমটা দিয়ে আছে। ভাবি গ্লাস ভরতি দুধ ও পান টেবিলের উপর রাখলো ~
লিজা ভাবিঃ এই যে দেবরজী, এগুলো খেয়ে নিও কেমন তোমরা…
আমিঃ কে কোনটা খাবো?
লিজা ভাবিঃ হা হা, তোমাদের যার যেটা ইচ্ছা হয় খাবে…(হাসি দিয়ে)
আমিঃ আচ্ছা…
লিজা ভাবিঃ তাই কোনো সমস্যা হলে আমায় ডাক দিবে ওকে। আমি আর তোমার ভাই পাশের রুমে আজ রাতে থাকবো…
আমিঃ ওহহ আচ্ছা ভাবি..(লজ্জা পেয়ে)
~ ভাবি আমার হাত ধরে নিয়ে রিতুর হাত শাড়ির আঁচলের মধ্যে থেকে বের করে ধরিয়ে দিলো আমায়। এমনিতে আগে অনেক রিতুর হাত ধরেছি, কিন্তু আজ কেমন যেনো অন্য রকম অনুভূতি হচ্ছে নিজের মধ্যে বুঝানো মুসকিল। আমি সামান্য সময় ধরে রেখে আবার ছেড়ে দিলাম রিতু হাত ~
লিজা ভাবিঃ কি হলো ছাড়লে যে হাত..?
আমিঃ এমনি ভাবি…
লিজা ভাবিঃ বুঝতে পারছি। আচ্ছা তোমরা বাসর করো, আমি তাহলে আসি এখন..
~ ভাবি রুম থেকে বের হয়ে গেলো। আমি দরজা লাগিয়ে দিলাম। রিতু চুপ করে বসে আছে। কিছুটা অবাকও লাগছে এতো দুষ্টু রিতু আজ হঠাৎ এতো শান্ত হয়ে বসে আছে। হয়তো বিয়ে হয়েছে বলেই এমন পাল্টে দিয়েছে ভেবে খুশিই লাগলো। কেনো জানি রিতুর সামনে যেতে খুব লজ্জা লাগছে। তাও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে আস্তে আস্তে এক পা দুই পা করে এগিয়ে গিয়ে রিতুর সামনে গিয়ে বসলাম। রিতু নড়াচড়া দিয়ে বসলো।
আস্তে আস্তে ঘুমটা তুলে দিলাম আমি। রিতুর লজ্জায় মুখ গোলাপি হয়ে গিয়েছে। মাথা একটু নিচু করে আছে ~
আমিঃ তোকে না মানে, তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে তো রিতু…
~ রিতু মাথা নিচু করে মুচকি হাসি দিচ্ছে। এতোদিন আমি সব সময় রিতুকে তুই তুই করে বলতাম, কিন্তু এখন তো আমার বউ, তাই তুমি করে বললাম। কিন্তু এরপরে যে কি বলবো আর বুঝতে পারছি না। কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার বললাম ~
আমিঃ তাই তোমার কি নার্ভাস লাগছে?
~ রিতু মাথা নেড়ে বললো, হুমম ~
আমিঃ নার্ভাস হওয়ার কিছু নেই । এতোদিন যেমন আমার সাথে ফ্রী ভাবে কথা বলতে সেই ভাবে কথা বলো কেমন। ভয় বা লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই …
~ রিতু মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো ~
আমিঃ তাই আমি তো অনেক বক বক করলাম। এখন তুমি কিছু বলো..
~ রিতু কিছুক্ষণ চুপ করে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে বললো ~
রিতুঃ দেখ ভাই, দুধ কিন্তু আমি খাবো…
আমিঃ মানে?
রিতুঃ আরে ভাই, তুই তো একটা গাধা। ওই যে টেবিলের উপর দুধের গ্লাস রাখা, ওই দুধ কিন্তু আমি খাবো বলে দিলাম। তুই খাবি পান…
~ হায় আল্লাহ, ইজ্জত আর রইলো না। নতুন বউ তুই তুই করে আমার সাথে কথা বলছে, তাও সাথে গাধাও বললো তাও আবার বাসর ঘরে বসে ~
আমিঃ কি হচ্ছে রিতু এটা? এই নাকি মুখের ভাষা তোমার.(ধমক দিয়ে)
রিতুঃ ওই তোর সাথে আমি আবার কি করলাম রে..? (চোখ গরম করে)
আমিঃ এটা কোন ধরনের বেয়াদবি ব্যবহার। তুমি আমাকে তুই করে বলছো কেনো? আপনি করে কথা বলো…
রিতুঃ তুই কে রে, তোকে আপনি করে বলবো?
আমিঃ আমি তোমার স্বামী।
রিতুঃ এইছে আমার স্বামী হতে…
আমিঃ তাহলে আমি তোমার কি হয়?
রিতুঃ কচু…
আমিঃ কচু আবার কি?
রিতুঃ কচু মানে কচু কচু কচু..
~ রিতুর চোখের দিকে চোখ গরম করে তাকালাম ~
আমিঃ এই চুপ থাকবি?
রিতুঃ এই চুপ থাকবি.. (হাসি দিয়ে)
আমিঃ আবার মুখে মুখে কথা..
রিতুঃ আবার মুখে মুখে কথা…হি হি
আমিঃ মেজাজ গরম করবি না বলে দিলাম…
রিতুঃ মেজাজ গরম করবি না বলে দিলাম..হি হি
আমিঃ তুই আমায় সাথে মজা করছিস…
রিতুঃ তুই আমার সাথে মজা করছিস..হি হি
আমিঃ রিতু..(ধমক দিয়ে)
রিতুঃ রিতু..(হাসি দিয়ে)
~ রিতুর উপর আমার খুব মেজাজ গরম হয়ে গেলো ~
আমিঃ এই বার যদি ভেংগাস আমায়, তাহলে তোর খবর আছে বলে দিলাম.(রেগে)
রিতুঃ এই বার যদি ভেংগাস আমায়, তাহলে তোর খবর আছে বলে দিলাম.(হাসি দিয়ে)
আমিঃ দাঁড়ারে তুই…
রিতুঃ দাঁড়ারে তুই..
~ আমি খাটের পাশ থেকে ছোট একটা লাঠি বের করলাম, যেই লাঠি নিয়ে টিউশনে যায় ছাত্র পড়াতে। রিতু তো লাঠি দেখেই চোখ মুখ বুঝে দিলো এক চিৎকার “ওমা গো, ওমা গো” বলে। আমি তাড়াতাড়ি রিতুর মুখ চেপে ধরলাম।
রিতু আমার থেকে মুখ ছাড়াতে গিয়ে খাটের উপর একদম শুয়ে পড়লো। আমিও রিতুর উপরে শুয়েই রিতুর মুখ চেপে ধরে আছি। রিতু বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে ভয় দেখাচ্ছে ।
আমি রিতুর দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিয়ে রিতুর কপালে ও চোখে চুমু দিলাম। রিতুর মুখ চেপে ধরাতে রিতু চুপ হয়ে আছে, কোনো শব্দ করতে পারছে না।
কিছুক্ষন আগে দেওয়া রিতুর চিৎকারের শব্দে শোনে ভাবি দৌড়ে এসে রুমের দরজায় ঠকঠক শব্দ করতে লাগলো। আমি রিতুর মুখ ছেড়ে দিয়ে দরজা খুলে দিলাম। রিতু বিছানা থেকে উঠে শাড়ি ঠিক করে দাঁড়িয়ে হাঁপাচ্ছে ~
লিজা ভাবিঃ কি হয়েছে রিতু, এই ভাবে চিৎকার করলি…?
রিতুঃ ওই সয়তান, আমায় মারতে গিয়েছিল জানেন ভাবি…
আমিঃ তাহলে কি করবো বলেন, আমায় রাগিয়ে দিয়েছিলো। মুখে মুখে কথা বলে ভেংগায়, সাথে তুই তুই করে কথা বলে, তাও আপনি করে বলে না…
রিতুঃ আমি কেনো ওকে আপনি করে বলতে যাবো হুম..
লিজা ভাবিঃ এটা কেমন কথা রিতু, শুভ তো তোমার স্বামী। তাই স্বামীকে আপনি করে বা তুমি করে বলতে হয়।
রিতুঃ কচুর স্বামী। আমায় জোর করে বিয়ে করছে ওই সয়তান।
~ রিতুর কথা শোনে আমিতো অবাক। শেষমেশ এই অপবাদ আমার উপর দিলো রিতু। আমি নাকি জোর করে বিয়ে করছি ~
আমিঃ রিতু পাগলামি করার একটা মাত্রা থাকে, আমি তোকে জোর করে বিয়ে করছি তুই এটা বলতে পারলি.?
লিজা ভাবিঃ এই তোমাদের না প্রেমের বিয়ে? (অবাক হয়ে)
রিতুঃ কচু প্রেমের বিয়ে। আমায় সুন্দরী মেয়ে পেয়ে এটা ওটা দিয়ে বুঝিয়ে বিয়ে করছে আমায়..
~ এই জন্য কারো উপকার করতে নেই। সব দোষ এখন আমার উপর দিচ্ছে দেখি ~
আমিঃ আমার আর কিছু বলার নেই। আমি কান ধরলাম, আর জীবনে কারো উপকার করবো না…
~ রিতু হি হি করে হেসে দিলো ~
আমিঃ ওই হাসবি না বলে দিলাম.. (ধমক দিয়ে)
~ রিতু চুপ হয়ে গেলো ~
লিজা ভাবিঃ এই তোমরা কি সারারাত ঝগড়া করবে নাকি?
আমিঃ তাহলে কি করবো এই পাগলী নিয়ে…?
লিজা ভাবিঃ কেনো, বিড়াল মারো…(হাসি দিয়ে)
আমিঃ ভাবি যে কি বলেন…(লজ্জা পেয়ে)
রিতুঃ ওলে বাবালে, কত ঢং ছেলের…(ভেংচি কেটে)
আমিঃ ভাবি এই পাগলীকে চুপ থাকতে বলুন তো, আমার কিন্তু মাথা গরম হচ্ছে…
লিজা ভাবিঃ রিতু এবার কিন্তু একদম চুপ। স্বামীকে সম্মান দিতে শিখো…
~ রিতু চুপ করে রইলো। আমি খাটের উপর গিয়ে বসলাম। ভাবি রিতুর কানের কাছে কি কি যেনো আস্তে আস্তে বললো। আর আমায় বললো আর ঝামেলা যেনো না করি, বলে রুম থেকে চলে গেলো। আমি খাটের উপর শুয়ে পড়লাম। রিতু দরজা বন্ধ করে এসে আমার থেকে অনেক দূরে সরে শুয়ে পড়লো ~
আমিঃ এতো দূরে শোয়ার কারন কি? এখন কি খুব গরম নাকি এতো দূরে থাকতে হচ্ছে.?
রিতুঃ চুপ করে থাকতো ভাই।
আমিঃ আমি আবার তোর কবেকার ভাই?
রিতুঃ সেই ছোট বেলা থেকে।
আমিঃ এখন আমি তোর স্বামী। স্বামীকে সম্মান দিতে শিখ…
রিতুঃ আচ্ছা দিলাম সম্মান।
আমিঃ আর শোন, আমায় এখন থেকে আপনি আপনি করে কথা বলবি ওকে..
রিতুঃ পারবো না।
আমিঃ কেনো?
রিতুঃ অভ্যাস পাল্টানো আমার পক্ষে সম্ভব না।
~ খুব রাগ হচ্ছে রিতুর উপর। তাও রাগ কন্ট্রোল করে নিলাম। ভাবি ঝামেলা করতে মানা করছে বলে এই কথা আর বাড়ালাম না ~
আমিঃ আচ্ছা সময় দিচ্ছি তোকে, তারাতাড়ি অভ্যাস পাল্টিয়ে নিস কেমন। আর আমিও এখন থেকে তোকে তুই না বলে তুমি করে বলবো কেমন…
রিতুঃ আচ্ছা।
আমিঃ ওরে আমার সুন্দরী বউরে…
~ রিতুর দিকে তাকিয়ে দেখি রিতুর মুখ লজ্জায় গোলাপি হয়ে হয়েছে ~
আমিঃ আমি এখন থেকে যেটা বলবো, তুমি সেটাই করবে ওকে..?
রিতুঃ হুম আচ্ছা..
~ আমি রিতুর কাছে কাছে গিয়ে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলাম ~
রিতুঃ ওই সয়তান ছাড় আমায় বলছি..(রেগে)
আমিঃ রিতু, আবার তুমি এমন বাজে ব্যবহার শুরু করলে। একটু ধরে থাকি না এমন করে…(চুমু দিলাম চুলে)
~ রিতু আমার দিকে ঘুরে চোখ গরম করে তাকালো ~
রিতুঃ ওই রিতু কে রে?
আমিঃ রিতু কে মানে, তুমি..?
~ রিতু জোরে জোরে হা হা করে হাসতে রইলো ~
আমিঃ এই হাসির মানে কি রিতু?
রিতুঃ আরে পাগল, আমি রিতু নারে…
আমিঃ হা হা, পাগলি…
রিতুঃ মাথা টা মনে হয় তোর পুরাই গিয়েছে..
~ বলে জোরে জোরে হাসতে রইলো ~
আমিঃ রিতু দুষ্টুমি করার কিন্তু একটা মাত্রা থাকে, এখন এই রাতের বেলায় কি শুরু করলে..(রেগে)
রিতুঃ আমি কি তোর বিয়ান নাকি তোর সাথে মজা করবো..(রেগে)
আমিঃ রিতু বেয়াদবির কিন্তু একটা লিমিট থাকে। তুমি কিন্তু লিমিট পেরিয়ে যাচ্ছো…
রিতুঃ ওই তোকে না বললাম আমি রিতু না..(রেগে)
আমিঃ রিতু না তাহলে কে তুমি?
~ রিতু জোর জোর হাসতে রইলো ~
আমিঃ হাসছো কেনো?
রিতুঃ রিতুদের বাড়ির রান্নাঘরের পাশে তাল গাছ আছে একটা তাই না?
আমিঃ রিতুদের বাড়ি মানে? তোমাদের বাড়িই তো সেটা। হ্যা আছে তো তাল গাছ…
রিতুঃ আমি ওই গাছের সাকচুন্নি পেত্নী। আমার নাম মালেকা, হা হা..
আমিঃ মানে কি এগুলো বলার..?
রিতুঃ আরে পুরোটা আগে শুনবি তো। আমি ওই গাছে অনেক বছর আগে থেকে বাস করি। তিন বছর আগে একদিন রিতু দুপুর বেলা চুল ছেড়ে বসে ছিলো, তখন আমি গিয়ে ওর ঘারে ভর করছি। তখন থেকে আমি ওর ঘারে ভর করে আছি…
~ রিতুর আমার দিকে ভয়ানক ভাবে তাকানো দেখে আমার একটু একটু ভয় লাগতে লাগলো ~
আমিঃ তুমি কিন্তু অনেক দুষ্টু হয়েছো রিতু। এখন সব বানিয়ে বলছো তাই না?
রিতুঃ বানিয়ে বলবো কেনো রে? গত তিন বছর আগে কি রিতু কখনো তোকে কখনো তুই করে বলতো বল?
~ তাই তো। আগে রিতু তো কখনো তুই করে বলতো না ~
আমিঃ না তো..
রিতুঃ তখন থেকে রিতু তো আর তোর সাথে কথা বলে না। কথা বলি আমি মালেকা। রিতু কি আগে এমন দুষ্টু ছিলো…?
আমিঃ না তো। আগে তুমি তো কত লাজুক ছিলে…
রিতুঃ আবার হারামজাদা বলে আমি রিতু…(রেগে)
আমিঃ আমি এই ভুত পেত্নী বিশ্বাস করি না…
রিতুঃ তাহলে প্রমাণ দেখবি তুই?
আমিঃ হুমম দেখবো।
রিতুঃ তাহলে দেখ..
~ বলেই রিতু একটা ঝাপটা দিয়ে আমার বুকের উপর উঠে বসে আমার মুখে………………. (..#চলবে..)