দর্পহরন পর্ব-৫১+৫২+৫৩

0
410

#দর্পহরন
#পর্ব-৫১

“রাগীব, সালিম সাহেব যে কোন মুল্যে মেয়র পদে মনোনয়ন চায়। ওকে অনেক ভাবে দমাতে চেয়েছি কিন্তু কিছুতেই মানছে না। কি করি বলো তো?”
নেত্রীর এমন প্রশ্নে রণ কিছুটা বিচলিত হলো-“উনি তো কোনভাবেই মনোনয়ন এর যোগ্য হয় না ফুপু। ওখানকার পরিবেশ কেবলই কিছুটা সুস্থির হতে শুরু করেছে। এখন যদি আবার উনি ফিরে আসে তাহলে আবার আগের মতো ত্রাশ সৃষ্টির চেষ্টা করবে। কাজ সব নিজের আয়ত্তে নেওয়ার চেষ্টা করবে। এলাকার মানুষের শান্তি বিনষ্ট হবে।”
নেত্রীর মুখে বিরক্তির রেখা ফুটে উঠলো-“সেসব তো আমি জানি রাগীব। কথা হলো তাকে ঠেকাবো কি করে? সালিম বেশ মরিয়া হয়ে গেছে। মনোনয়ন না পেলে ও কি করবে আমি জানি না।”
চুপ করে থেকে কিছু একটা ভাবলো রণ। নেত্রী বললো-“আর ওকে মনোনয়ন দিলে যে কোন মুল্যে হোক ও জিতবে। যত ভালো প্রার্থীই দাও না কেন।”
“আপনি ওনাকে মনোনয়ন দিন ফুপু।”
রণর কথায় চমকে উঠলো নেত্রী-“মানে? কি বলছো বুঝতে পারছো? ওকে মনোনয়ন দেওয়া ওকে ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ দিয়ে দেওয়া।”
রণ গম্ভীর হয়ে জবাব দিলো-“উনি মনোনয়ন পাবে কিন্তু জিতবে না এই শিওরিটি আমার। যতদূর জানি আজ পর্যন্ত উনি বা ওনার পরিবার নির্বাচনে হারেনি কখনো, তাই তো? এবার হারবে এবং ওনার দর্ম্ভ চূর্ন হবে।”
“যদি না হয়? সালিমকে মাত দেওয়া এতো সহজ না রাগীব। আমার এতোদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থাকার পরও ওকে নিয়ে খেলতে ভয় পাই। বুঝতে পারছো তো তুমি?”
রণ এবার ঠোঁট টিপে জবাব দিলো-“আমার উপর ভরসা করুন ফুপু। আপনি পুরো ব্যাপারটা আমার উপর ছেড়ে দিন। দল থেকে ওনাকে মনোনয়ন দিন। তবে সতন্ত্র একজন কিন্তু থাকবে। তার প্রতি প্রছন্নভাবে সাপোর্ট করতে হবে আপনাকে।”
নেত্রীর সন্দিহান নজরে রণকে দেখলো-“কাকে দেবে সতন্ত্রতে?”
রণ এবার সামান্য ঠোঁট ফাঁক করলো-“দেখি কাকে দিলে সুবিধা হয়। আপনি প্লিজ দলের মধ্যকার আলোচনা সামলে নেবেন ফুপু।”
নেত্রী মাথা নাড়ে-“ঠিক আছে। তোমার মা কেমন আছে?”
হুট করে মায়ের প্রসঙ্গ আসায় একটু হকচকিয়ে গেল রণ-“ভালো আছে।”
তোমার মাকে একদিন নিয়ে এসো এখানে। অনেক দিন দেখা হয় না। আমি তো সময় করতে পারি না তাই বলাও হয়ে ওঠে না।”
“জ্বি আনবো। আজ তাহলে আসছি ফুপু।”
নেত্রী মাথা দুলালেন। রণ চলে এলো। নেত্রীর মাথায় অন্য চিন্তা। সালিম এবার খুব খারাপ কাজ করেছে৷ তার অত্যন্ত স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে ফেলেছে। এবার সালিমকে ছাড়া যাবে না কিছুতেই। ঘটনা দু’চার কান হলে বাকী সদস্যরা যে কোনদিন বেয়াদবি করবে না তার কি গ্যারান্টি? সমস্যা বিষফোড়া হওয়ার আগেই তাকে গোড়া থেকে উৎপাটন করা জরুরি। সেটাই করতে হবে তাড়াতাড়ি।

*****

তন্ময়ের মাথায় খুশির ভুত চেপেছে। কিছুতেই খুশিকে মাথা থেকে বের করতে পারছে না। তন্ময় বুঝতে পারছে না খুশিকে বিয়ে করতে চাইলে সমস্যা কোথায়? সে তো ছেলে হিসেবে খুব খারাপ না৷ তাহলে? গাড়ির জানালা দিয়ে উঁকি দিলো তন্ময়। খুশি কি আজ ভার্সিটিতে আসবে না? ভাবনার মাঝেই খুশিদের গাড়িটা দেখলো। ভার্সিটির গেটে খুশিকে একা নামতে দেখে তন্ময় মনে মনে পুলকিত হয়ে উঠলো। আরেহ! আজ হাসি আসেনি দেখা যাচ্ছে। তন্ময়ের চেহারায় একটা পৈশাচিক খুশি ফুটে উঠে মিলিয়ে গেলো। সে ঘড়ি দেখলো। সকাল দশটা বাজে। কিছুক্ষণ বসে ভাবলো কি করবে। আজকের সু্যোগটা কাজে লাগাতে হবে। কিছুতেই ছাড়া যাবে না। তন্ময় চুপচাপ বসে রইলো।

ঘন্টা দেড়েক বাদে ফোনটা হাতে নিলো সে। কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে ডায়াল করলো খুশির নাম্বারে-“হ্যালো, খুশি বলছো?”
“জ্বি। আপনি কে?”
ওপাশে খুশির গলা পেয়ে ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটলো তন্ময়ের-“আমি তন্ময়।”
“তন্ময়, আপনি কেন ফোন করেছেন? সরি, আপনার সাথে কথা বলতে পারবো না।”
খুশি ফোন কেটে দিলো। তন্ময় আবার ফোন দিলো। কয়েকবার দেওয়ার পরেও খুশি ফোন না ধরলে তন্ময় ম্যাসেজ দিলো-“জরুরি না হলে কি ফোন দিতাম? তোমাদের বাসায় এসেছিলাম। তোমার ভাবি বাসায় একা, দেখি সে অসুস্থ হয়ে গেছে। তুমি কি আসতে পারবে? ও তোমাকে নিতে পাঠিয়েছে আমাকে। আমি ইউনিভার্সিটির গেটে তোমার অপেক্ষা করছি।”
শুভ্রার অসুস্থতার কথা শুনে খুশি ঘাবড়ে গেল-“কককি বলছেন এসব? সকালে তো ভাবি ঠিকই ছিলো। কি হলো হঠাৎ?”
“জানি না। তুমি কি আসবে নাকি আমি চলে যাব?”
“না না আমি আসছি।”
খুশি তড়িৎ উত্তর দিলো। তন্ময় ফোন নামিয়ে রেখে হাসছে। পাঁচ মিনিট পরেই খুশিকে হন্তদন্ত হয়ে গেটের দিকে ছুটে আসতে দেখলো। গম্ভীর হয়ে তন্ময় খুশির দিকে তাকিয়ে হাত নাড়লো-“খুশি, এই যে এখানে।”
খুশি প্রায় ছুটে এলো-“চলুন যাওয়া যাক। ভাবি কি এখনো একা আছে? আমি তাহলে মাকে ফোন করে জানিয়ে দিচ্ছি।”
তন্ময় বাঁধা দিলো-“না দরকার নেই। কাজের মেয়েটাকে বসিয়ে দিয়ে এসেছি। আপনার মাকে জানাতে মানা করলো শুভ্রা। কি নাকি জরুরি কাজে গেছে। আপনি বরং গাড়িতে বসুন তাড়াতাড়ি।”
খুশি মাথা নেড়ে গাড়িতে বসলো। তন্ময়ের গাড়ি চলতে শুরু করলো। পরিচিত রাস্তা ছেড়ে অপরিচিত রাস্তায় গাড়ি ঢুকতেই খুশি চমকে গেলো-“এদিকে কেন ঢুকলেন? এদিক দিয়ে তো দেরি হবে বাসায় যেতে।”
তন্ময় খুশির দিকে তাকিয়ে হাসলো-“ভয় পেয় না। তোমাকে বাসায় পৌঁছে দেব তার আগে কিছু কথা বলতে চাই তোমার সাথে।”
খুশির বুক ধরাস ধরাস করছে। সে বুঝে গেলো তন্ময় তাকে মিথ্যে বলেছে। সে চেচিয়ে উঠলো-“আপনি মিথ্যে বলেছেন তাই না? ভাবি অসুর না।”
তন্ময় মুচকি হেসে মাথা নাড়ে-“ভাবিকে এতে ভালোবাসো জানা ছিলো না।”
“আপনি গাড়ি থামান প্লিজ। আমাকে নামিয়ে দিন। আপনার সাথে কোন কথা নেই আমার।”
তন্ময়ের চোয়াল শক্ত হলো-“খুব ভালো মতো বলছি খুশি। শুধু কিছু কথা বলবো তোমার সাথে। তারপর ছেড়ে দেব তোমাকে।”
খুশি অস্থির হয়ে হাতপা ছুড়লো। গাড়ির দরজা খোলার চেষ্টা করলো কিন্তু তন্ময় দরজা লক করে দিয়েছে। খুশি চেঁচালো-“প্লিজ আমাকে নামিয়ে দিন। বললাম তো আপনার সাথে কোন কথা নেই।”
তন্ময়ের চেহারায় কাঠিন্যে ফুটে উঠলো। সে গাড়ি থামিয়ে খুশির দিকে তাকালো-“এখনই এসব বন্ধ না করলে আপনাকে কিডন্যাপ করবো খুশি। কেউ বাঁচাতে পারবে না আপনাকে।”
খুশি চমকে উঠে নিশ্চুপ হয়ে গেলো। তন্ময় ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসলো-“এই তো লক্ষী মেয়ে। এবার বলুন তো আমার মধ্যে কি সমস্যা? মানে পাত্র হিসেবে আমি কি যোগ্য না?”
খুশি জবাব না দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইলো। তন্ময় তাড়া দিলো-“বলুন। কথা বলছেন না কেন? আমি বিয়ে করতে চাই আপনাকে। আপনি কি রাজি না?”
খুশি ঝট করে ফিরে তাকালো-“শুনুন, বিয়ে নিয়ে ভাববার জন্য মা আর ভাইয়া আছে। আমি এসব নিয়ে এখনও ভাবছি না পরেও ভাববো না। কাজেই আমার কাছে মতামত জানতে চেয়ে খুব একটা লাভ নেই। আপনার যদি কিছু বলার থাকে তাহলে তাদের বলুন কিংবা ভাবিকে বলুন। সে তো আপনার বোন তাই না?”
“বলেছিলাম কিন্তু শুভ্রা মানছে না। সে বলেছে সম্ভব না।”
খুশি হেসে দিলো-“তাহলে তো হয়েই গেলো। উত্তর তো পেয়েই গেছেন।”
তন্ময় গম্ভীর হয়ে উত্তর দিলো-“কিন্তু উত্তরে আমি খুশি না। খুশি হওয়ার জন্য যা করতে হবে তাই করতে চাই আমি।”
খুশি ভীত কন্ঠে জানতে চাইলো-“মানে? কি করতে চাইছেন আপনি?”
“আপনাকে বিয়ে। আপনার নিশ্চয়ই আপত্তি নেই?”
খুশি ভীত চোখে চেয়ে আছে। কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। ঠিক ওই সময় তন্ময়ের জানালায় নক হলো। একজন ঝুকে পড়লো সেদিকে। তন্ময়ের মেজাজ খিঁচে গেলো। জরুরি আলাপে কে বিরক্ত করে? ধমক দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে দ্রুত হাতে জানালা খুলতেই চমকে গেলো সে। এভাবে ধরা পড়ে যাবে জানা ছিলো না। তন্ময় পুনরায় মাথা ঢুকিয়ে জানালা বন্ধ করতে চাইলে বাঁধা পেলো। উল্টো ওর দিকের দরজাটা খুলে গেলো সহসাই। তন্ময় ভয় পেয়ে ঢোক গিললো।

চলবে—
©Farhana_য়েস্মিন

#দর্পহরন
#পর্ব-৫২

“আমি বলেছিলাম খুশির দিকে না তাকাতে। শুনলে না কেন তন্ময় ভাই?”
তন্ময় কাচুমাচু দৃষ্টিতে শুভ্রাকে দেখলো। শুভ্রা কঠিন চেহারা নিয়ে তন্ময়কে দেখছে-“আজ তুমি কি করতে যাচ্ছিলে ভাইয়া? তোমার কোন আইডিয়া আছে ওর কানে গেলে কি হবে?”
শুভ্রার হুঙ্কারে কেঁপে উঠলো তন্ময়-“আমার অন্য কোন মতলব ছিলো না শুভ্রা। আমি কেবল খুশির সাথে কথা বলে আমার ব্যাপারে ওর মতামত জানতে চেয়েছি। আর কিছু না।”
“সিরিয়াসলি! ওকে মিথ্যে বলে ডেকে নিয়ে তুমি ওর মতামত জানতে চাইছো? আর ইউ ম্যাড? ও কি কখনো তোমাকে বলেছে বা ইঙ্গিত দিয়েছে যে ও তোমাকে পছন্দ করে?”
“আর খুশি, বোকা মেয়ে! তুই কি মনে করে তন্ময় ভাইয়ের ডাকে সারা দিলি? তোকে কি বলেছিলাম? আমি ফোন না দিলে বেরুবি না।”
খুশি কেঁদে দিলো-“তোমার অসুস্থতার কথা শুনে ভয় পেয়েছিলাম ভাবি। মাথা কাজ করছিল না।”
শুভ্রা খুশিকে জড়িয়ে ধরে-“আর কখনো এমন করবি না খুশি। যা গাড়িতে গিয়ে বয়।”
খুশি মাথা নেড়ে চুপচাপ গাড়িতে বসলো। তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে শুভ্রা বললো-“তোমাকে অনেকদিন বলেছি কিন্তু তুমি শোননি আমার কথা। এখন ও জানলে তোমার কি হাল করবে আমি জানি না। আমি তোমার সাহস দেখে অবাক হচ্ছি। কোন সাহসে তুমি ওকে মিথ্যে বলে ক্লাস থেকে বের করে আনলে?”
তন্ময় হঠাৎ করে শুভ্রার হাত চেপে ধরে-“শুভ্রা, আমি ওকে বিয়ে করতে চাই। প্লিজ শুভ্রা, তুই না আমার বোন। তুই একটু কথা বলে দেখ না রণর সাথে।”
শুভ্রা হাত ছাড়িয়ে নিলো-“আমার মাথা খারাপ হয়নি ভাইয়া যে তোমার জন্য প্রস্তাব দেব। যাদের মেয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবে কি করবে। আর তুমি কি কথা বলার মতো অবস্থা রেখেছ? তুমি আজ যা করলে তাতে তুমি নিজেকেই বিপদে ফেলে দিলে৷ আমি এখন বাবাকে জানাবো তোমার ঘটনা। তা না হলে উনি কিছু একটা করবেন আর বাবা ওনাকে ভুল বুঝবে।”
শুভ্রা মোবাইল বের করতেই তন্ময় শুভ্রার হাত চেপে ধরে-“প্লিজ বোন, চাচ্চুকে জানাস না। খুব রাগ হবে চাচ্চু।”
শুভ্রা হাত ছাড়িয়ে নিলো-“আর কোন কথা নেই তোমার সাথে। আশাকরি আজকের পরে খুশির আশেপাশে তোমাকে দেখবো না। নেহাৎ তুমি আমার ভাই তাই নিজের উপর রিস্ক নিয়ে তোমাকে ছেড়ে দিচ্ছি। ভালো থেক।”
শুভ্রা গাড়িতে উঠে বসলো। খুশি কৌতূহলে জানতে চাইলো-“তুমি কি করে আমাদের ধরতে পারলে ভাবি?”
শুভ্রা অন্যমনস্ক হয়ে ছিলো। বারবার ভাবছে তন্ময় আজ কি করতো খুশির সাথে। তাতে ওর আর রণর সম্পর্ক কোথায় দাঁড়াতো? ভয়ে গায়ে কাটা দিলো শুভ্রার। খুশি আবার ডাকলো-“ভাবি কি ভাবছো?”
“কিছু না। তুই কি যেন বলছিলি?”
“”তুমি কিভাবে জানলে ওনার ব্যাপারে? আমাকে কেন ফোন করে বললে ওনার কথা মেনে নিয়ে নাটক করতে? ওনার তালে তাল দিতে।”
শুভ্রা হাসলো-“তোকে নামিয়ে ফিরে যেতে ভাইয়াকে দেখে ফেলেছিলাম। তারপর বুঝলাম তোকে আজ একা নামতে দেখেছে। কি মনে করে আমি ভাইয়ার আড়ালে গাড়ি নিয়ে থেকে গেছিলাম। ভাগ্যিস থেকে গেছিছিলাম।”
“কিন্তু তোমার ইন্টারভিউ মিস হলো যে?”
খুশি মন খারাপ গলায় জবাব দিতেই শুভ্রা হেসে দিয়ে খুশির চিবুক ছুঁয়ে দিলো আলতো করে-“তোর চেয়ে কি চাকরি বড়? চাকরি আসবে যাবে তোর কিছু হলে তোর ভাইয়াকে কি জবাব দিতাম?”
খুশির চেহারায় ভয়ের ছাপ স্পষ্ট হলো-“ভাইয়াকে বলো না ভাবি। অযথাই ভুল বুঝবেো তোমাকে।”
শুভ্রার চেহারা মলিন হলো-“না বললেও সে খবর পাবে খুশি। তোমার ভাইয়াকে বোকা ভেব না। সে হয়তো লোক লাগিয়ে রেখেছে তোমাদের পেছনে।”
খুশি ভয় পেয়ে ঢোক গিললে শুভ্রা অভয় দিলো-“তোমাকে কিছু বলবে না। ভেব না।”

সারাদিন নিজের মেজাজ কোনরকমে ধরে রেখেছিল রণ।বাসায় ফিরে শুভ্রার উপর সেই মেজাজের তাপ ঢাললো-“তুমি জানতে তন্ময় এমন কিছু করতে পারে, তাই না?”
শুভ্রা অবিচল হয়ে মাথা নাড়ে-“না, জানতাম না।”
“অনেক সহ্য করেছি শুভ্রা আর না। এবার ওর কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করছি দাঁড়াও। ওর এতো সাহস আমার বোনকে কিডন্যাপ করতে চায়।”
শুভ্রা রণর দিকে তাকিয়ে থেকে মৃদু হাসলো-“আপনিও সাহস করেছিলেন। ইব্রাহিম সালিমের মেয়েকে কিডন্যাপ করেছিলেন। কেন? নির্বাচনে ওনাকে পরাস্ত করতে। তাই না? আপনি জানতেন সালিম সাহেব মেয়ের প্রতি দূর্বল, তাকে দূর্বল করতে চাইলে মেয়েকে ব্যবহার করতে হবে। তা না হলে সালিম সাহেবকে পথ থেকে সরানো যাবে না।”
রণর মুখে কথা জুটলো না। শুভ্রা কিছুক্ষন থেমে বললো-“আপনার বুদ্ধি সত্যিই কাজে লেগেছিল। বাবাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে আমাকে আঁটকে রাখার বুদ্ধিটা সফল হয়েছিল। অথচ দেখুন আপনাদের রাজনীতির খেলায় মাঝখানে আমি ফুটবল বনে গেলাম। সবাই আমাকে নিয়েই তাদের খেলা চালিয়ে যাচ্ছে।”
রণর চেহারা টকবগ করে ফুটছে। সে ছটফটিয়ে উঠে বললো-“সেসব কথা এখন আসছে কেন? আজকের ঘটনার সাথে সেসব ঘটনার সম্পর্ক কি?”
“সম্পর্ক নেই? না থাকলে ভালো। শুনুন, মাত্রই সোহেল ভাইয়ার ঘটনা ঘটেছে। এমনিতেই সবাই মুড়ষে আছে। আমি চাই না আর কিছু হোক আমাদের পরিবারে। তাই এবারকার মতো তন্ময় ভাইকে একটা সু্যোগ দেবেন আপনি। আপনার নিজের দোষ যদি মাফ হওয়ার মতো হয় তাহলে এটাও মাফ করতে হবে আপনাকে।”
“শুভ্রা!”
রণ ফুঁসে উঠলো। শুভ্রা হাসলো-“নিজের দোষ মানতে শিখুন মিস্টার মন্ত্রী মশায়।”
“কাজটা মোটেও ভালো করছো না শুভ্রা। ভবিষ্যতে কিছু হলে তার দায়ভার সম্পূর্ণ তোমার হবে।”
শুভ্রা জবাব দিলো না। বুকে ভয় থাকলেও বুঝতে দিলো না সে।

*****

“ভাইজান, একটা জরুরি কথা আছে।”
খেতে খেতে থেমে গেলো মোর্শেদ। ছোট ভাইয়ের কন্ঠ ভালো ঠেকলো না মোর্শেদের কানে। চিন্তিত হয়ে শুধায়-“কি কথা সালিম? কি হইছে?”
“তন্ময় কি পাগলামি শুরু করছে ভাইজান?”
“তন্ময় আবার কি করছে?”
“শুভ্রার ননদের পিছনে পইড়া আছে তন্ময়। বিরক্ত করতাছে। আইজকা তো বাড়াবাড়ি কইরা ফালাইছে। জামাই জানলে কি হইবো বুঝছেন?”
মোর্শেদ বিরক্ত হয়ে তন্ময়কে দেখলো-“কিরে তন্ময়, সমস্যা কি তোর? এইসব করতেছোস কেন?”
তন্ময়ের খাওয়া বন্ধ হয়েছে আগেই। সে মুখ শক্ত করে বললো-“আমি বিয়ে করতে চাই আব্বা। শুভ্রার ননদকে আমার ভালো লাগছে। বিয়ে করলে ওকেই বিয়ে করবো আর কাউকে না।”
সালিম সাহেব মেজাজ হারিয়ে চেচিয়ে উঠলো-“ফাজলামি করস নাকি তমাল? জামাই স্পষ্ট মানা করছে তার বোনের ব্যাপারে। তারপর কি আর কথা থাকে?”
তন্ময় হাত ঝাড়লো-“তোমাদের সামনে ফাজলামি করবো এমন সাহস আমার নাই। যেমন ভালোলাগার উপর কারো হাত নাই। আমি আমার কথা ক্লিয়ার বলে দিলাম, বিয়ে করলে খুশিকে করবো। এখন তোমরা কেমনে ম্যানেজ করবা করো।”
সালিম সাহেব হুঙ্কার দিলেন-“মাইয়ার শশুরবাড়ি ভাইজান। কোন ভ্যাজাল করতে চাই না। তারউপর ওয় এখন ক্ষমতায় আছে। আর কারো সোহেলের মতো পরিনতি হোক এইটদ আমি কিছুতেই চাই না। ওরে বুঝান ভাইজান।”
তন্ময় গোয়ারের মাথা নাড়ে-“বুঝাইলেও আমি বুঝবো না। যা বলছি তা বলছি। কথা শেষ।”
খাবার থেকে হাত ঝাড়লো তন্ময়। হনহন করে চলে গেলো নিজের কামরায়। মোর্শেদ ডাকলো কয়েকবার, সারা দিলো না। সালিম সাহেব মোর্শেদের দিকে তাকিয়ে রাগত স্বরে বললো-“দেখছেন ভাইজান, দেখছেন? পোলাগুলা সব এইরকম হইছে কেন? কথা শুনতে চায় না? আমরা কি ওদের খারাপ চাই? পরিস্থিতি বোঝা লাগবে না? যা মন চায় তাই করার দিন কি এখন আছে? এমনিতেই সবাই কোপানলে আছি। একটু উঁচুনিচু কিছু হইলে সব শেষ। এদের এইসব কেমনে বুঝাই? এতোসব কাদের জন্য করি আমরা? ওদের ভবিষ্যত ভাইবাই তো করি নাকি?”
মোর্শেদ চিন্তিত হয়ে ছেলের চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে ছিলো। ছোট ভাইয়ের কথায় কপালে চিন্তার ভাজ বাড়লো। তন্ময় ভীষণ গোয়ার। একবার বলে ফেলেছে মানে ও সিরিয়াস। এদিকে সালিম তো মানবেই না কারণ মেয়ে আছে সেখানে। এ কি জ্বালায় পরা গেলো?
“ভাইজান, আপনে চুপ কইরা আছেন কেন? কিছু কন?”
“তুই কিছু ভাবিস না সালিম। আমি তন্ময়ের লগে কথা কমু।”
মুখে বললেও মনে মনে শঙ্কিত হয়ে ভাবছেন, মহা মুছিবতে পড়া গেলো তো! তন্ময়কে কিভাবে বোঝাবেন তিনি?

চলবে—
©Farhana_য়েস্মিন

#দর্পহরন
#পর্ব-৫৩

মেয়র নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে বেশ ভালো ভাবেই। তফসিল ঘোষণার সময় ঘনিয়ে আসছে। সালিম সাহেব নিজ থেকে বেশ তোরজোর শুরু করেছেন। কিছু সামাজিক কাজ শুরু করেছেন। মসজিদ মাদ্রাসায় ডোনেশন দেওয়া, স্কুলে ফান্ডিং করা ছাড়াও এলাকার পার্টি কর্মীদের সাথে সক্ষ্যতা বাড়াতে ছোট ছোট করে পার্টি দিচ্ছেন। আগে এসব কাজ সোহেলই করতো এখন সালিম সাহেব নিজে দেখছেন সাথে আছে তুহিন। সালিম সাহেব বুঝতে পারছেন পার্টির সবাই দ্বিধান্বিত। তার মুখের উপর কেউ মানা না করলেও পেছনে বোশ আলাপ হচ্ছে তাকে নিয়ে। সালিম
সাহেব পাত্তা দিচ্ছেন না। তিনি নিজের মতো করে প্রচারনা করে যাচ্ছেন। নিজের মধ্যে ভীষণ জেদ চেপে যাচ্ছে। এই ক্ষমতার দ্বন্দে নিজের ছেলেকে হারিয়েছেন, হারিয়েছেন সন্মান। সন্তান ফিরে পাবেন না কিন্তু পুরনো গৌরবটা ফিরিয়ে আনতে হবে। আর এইজন্য ক্ষমতা ফিরে পাওয়া ভীষণ জরুরি। হোক তা এলাকার মেয়র পদ। জানে মেয়র হলে সংসদে যাওয়া হবে না কিন্তু তবুও দীর্ঘ দিন ক্ষমতা থেকে দূরে থাকার চাইতে ভালো।
“স্যার, আসবো?”
চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে চোখ বুঁজে ছিলো সালিম সাহেব। তুহিনের গলা পেয়ে উঠে বসলো-“আয়।”
তুহিন কাচুমাচু হয়ে বললো-“স্যার, একটা কথা বলতাম।”
“কি কথা?”
“বউমার ভাইটা নাকি দল করে। তলেতলে আপনের অপজিটে কাজ করে।”
সালিম সাহেবের ভ্রু কুঁচকে গেলো-“সত্যি জানোস নাকি কেউ ভাঙানি দিছে?”
তুহিন মাথা দুলায়-“না সত্য খবর। আমি অনেকদিন ধরে খোঁজ নিতেছিলাম। আজই শিওর হইলাম।”
“জামাইয়ের জন্য কাজ করে?”
তুহিন মাথা দুলায়। চিন্তায় ভ্রু কিঞ্চিৎ কুঁচকে গেলো সালিম সাহেবের। তুহিন দ্বিধা নিয়ে বলে-“ওকে কি অফিসে ডাকবো?”
“ওরে নিয়ে চিন্তার কিছু আছে? দুইদিনের পোলা রাজনীতির কি বোঝে?”
তুহিন চুপ করে রইলো। মনেহচ্ছে কিছু বলতে চান কিন্তু সাহসে কুলাচ্ছে না। সালিম সাহেব বললো-“কি বলতে চাস বল।”
“ও ভালো কাজ করে। অল্প বয়স কিন্তু কথা দিয়া মানুষরে বশ করতে পারে। এইজন্যই জামাই ওরে হাতে রাখছে।”
“তো? আর এমনেও ওয় আমাগো পছন্দ করে না এই তো জানোস।”
“জানি। তয় ওরে কাজ করাইতে রাজি করতে পারলে আপনের অনেক সুবিধা হইতো।”
আবারও চেয়ারে হেলান দিয়েন সালিম সাহেব। কিছুক্ষণ ভাবলেন বসে বসে তারপর বললেন-“আচ্ছা, ডাক ওরে। আলাপ কইরা দেখি কি কয়।”
তুহিনের মুখে হাসি ফুটলো। সে রুম থেকে বেরুবে এমন মুহূর্তে সালিম সাহেব ডাকে-“তুহিন।”
অবাক হয়ে পিছু ফেরে তুহিন-“জ্বি স্যার।”
সালিম সাহেব মৃদু হাসেন-“তুই আমাকে স্যার ডাকিস না। চাচা কবি আইজ থিকা। ঠিক আছে?”
তুহিন বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থেকে হেসে দিলো। খুশিতে কান্না এলেও নিজেকে সামলে নিলো সে। মাথা নেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তার চোখের কোলে জলের আভাস বেশ টের পেলো সালিম সাহেব।

*****

কয়দিন ধরে শুভ্রার সাথে কথা বলে না রণ। গভীর রাতে বাসায় ফিরে সরাসরি বিছানায়। শুভ্রা খাবার আনলে খায় না কথাও বলে না। আজ জেগে বসে ছিল শুভ্রা। ঠিক করে রেখেছে রণ আজ কথা না বললে সে ঝগড়া শুরু করবে। সেজেগুজে ঝগড়ার প্রস্তুতি নিয়ে বসে রইলো সে। রণ রুমে ঢুকেই থতমত খেলো। শুভ্রা সোফায় বসে আছে টুকটুকে লাল শাড়ি পরে। ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া রণ না দেখার ভান করে নিজের কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়। ফিরে এসে দেখলো টি টেবিলের উপর খাবার রাখা। বরাবরের মতো না দেখার ভান করে রণ শুয়ে পড়তে চাইছিল কিন্তু শুভ্রা ডাকলো-“শুনুন। এখানে আসুন।”
রণ সে ডাক অগ্রায্য করে বিছানায় বসলো। শুভ্রা শান্ত হয়ে দেখছে তার কান্ড। সে শান্ত গলায় বললো-“মন্ত্রী মশায়, আজ যদি না আসেন খাবার না খান তাহলে আমি চেচামেচি শুরু করবো। আন্টি শুনে দৌড়ে আসবে। সে অবশ্য এসব দেখলে খুশি হবে। এমনিতেই সে চায় আমি আপনার জীবন থেকে বিদায় নেই। এখন আপনি কি চান আপনি বলুন।”
রণ ভ্রু কুঁচকে শুভ্রার দিকে তাকিয়ে আছে। চেহারায় গাম্ভীর্যের আড়ালে খানিকটা বিরক্তি। শুভ্রার হুমকি আমলে নিয়েছে বলে মনেহয় না। শুভ্রা হাসলো-“আপনি মনেহয় ভাবছেন আমি দুষ্টামি করছি। আমি যে ফান করছি না এটা কি প্রমান করতে হবে?”
রণ এবার চুপচাপ উঠে এলো। বসলো শুভ্রার সামনে। খাবারের প্লেটটা দেখলো একনজর। শুভ্রার চেহারায় চোরা হাসি ফুটে উঠে মিলিয়ে গেলো। রণ ওর দিকে তাকিয়ে চোখ নাচায়-“তুমি ভেবোনা তোমার হুমকিতে ভয় পেয়েছি। শুধু জানতে চাইছি এসব কি?”
শুভ্রা অবাক হওয়ার ভান করলো-“খাবার। প্রতিদিন না খেয়ে শুয়ে পড়েন সেটা ঠিক আছে। কিন্তু তারপর যা করেন তাতে আমার ঘুমের খুব সমস্যা হচ্ছে।”
“মানে?”
“মানে খুব সিম্পল। আপনি খিদের জ্বালায় সারারাত ছটফট করেন আমার ঘুম হয় না। তাছাড়া আপনি খান না বলে আমারও খাওয়া হয় না। রাতে আপনার হাতে খাওয়ার অভ্যেস হয়ে গেছে তো।”
রন খুকখুক করে কেশে মৃদুস্বরে বলে-“এবার কিন্তু অতিরিক্ত হচ্ছে। কে বলেছে তোমাকে না খেয়ে থাকতে?”
শুভ্রা চোখ পিটপিট করে-“ওমা! কে বলবে আবার? এটাই তো নিয়ম। বর না খেলে বুঝি বউ খেতে পারে?”
“মরলুম একেবারে।”
রণর ঢিমে গলায় বলা কথাটা শুভ্রা শুনলো-“কিছু বললেন?”
“না কিছু না।”
“নিন শুরু করুন। নিজে খান আমাকেও খাইয়ে দিন।”
“এহহহ, ঠেকা পড়েছে আমার। প্রেমে একেবারে গদগদ।”
“হ্যা, আপনারই ঠেকা মশাই। বউ যেহেতু আপনার তাই ঠেকাটাও আপনার। নিন তাড়াতাড়ি শুরু করুন। তিন রাত হলো ঘুম নেই। আজ যদি না ঘুমাতে দেন তবে সত্যি সত্যি খবর আছে আপনার। আপনার নামে অভিযোগ চলে যাবে নেত্রীর কাছে।”
রণ কৌতুহলে উত্তর জানতে চাইলো-“তা অভিযোগটা কি হবে?”
শুভ্রা ঝটপটো উত্তর দিলো-“রাতে ঘুমাতে দেন না একদমই- এটাই অভিযোগ। আপনার নেত্রী খুব বুঝবে আমার দুঃখ। দেখে নেবেন।”
এবার হেসে দিলো রণ-“এই অভিযোগ তুলতে লজ্জা লাগবে না আপনার?”
“লজ্জা কেন লাগবে? আপনি না খেয়ে ঘুমিয়ে যাচ্ছেন তারপর মাঝরাতে খিদের জ্বালায় জ্বলছেন। এতে লজ্জার কি আছে? অবশ্য আমিও জেগে যাচ্ছি। আসলে না খেয়ে থাকার অভ্যেস নেই তো।”
বলতে বলতে লাজুক হয় শুভ্রা। বউকে আরেকটু খোঁচানের সুযোগ মিস করে না রণ-“নেত্রী যদি অন্য কোন কিছু বোঝে। না মানে খিদের ব্যাপার তার উপর সারারাত তো তাই বলছিলাম। কিন্তু তুমি যখন বলবে তখন হয়তো ভুল বলবে না।”
এবার যেন শুভ্রার টনক নড়ে। রণ কথার ডাবল মিনিং অনুধাবন করে ভীষণ লজ্জা পেলো। কিন্তু এও বুঝলো লজ্জা পেলেই শেষ। রণ জ্বালানোর একটা সু্যোগও মিস করবে না। সে জোর দেখিয়ে বললো-“আপনি খুব খারাপ লোক। কোথাকার কথা কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে ভাত ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে, খিদেয় পেটে ছুঁচো দৌড়াচ্ছে ওনার কোন খবর নেই। নিষ্ঠুর মানব।”
রণ মুচকি হেসে ভাত মাখিয়ে প্রথম লোকমা শুভ্রার দিকে বাড়িয়ে দিলো-“নিন ম্যাডাম, খেয়ে আমাকে ধন্য করুক। আর হ্যা, দয়া করে উল্টো পাল্টা অভিযোগ দেবেন না আমার নামে। আমি নিরিহ জনগণ, আমাকে ভাতে মারবেন না। ক’দিন সত্যি খুব কষ্ট হয়েছে রাতে।”
ভাত চাবাতে চাবাতে শুভ্রা হেসে দেয়-“এরপর তাহলে সত্যি সত্যি ভাতের কষ্ট দেব।”
“দিয়ে দেখো। আমিও তাহলে…”
শুভ্রা রণর মুখ চেপে ধরে-“খাওয়ার সময় এতো কথা বলতে নেই। আগে খেয়ে নিন।”
এরপর কিছুক্ষণ চুপচাপ খাওয়া দাওয়া। খাওয়া শেষে শুভ্রা হুট করে বললো-“একটা প্রশ্ন করি রণ? ঠিক ঠিক জবাব দেবেন তো?”
“হুমম বলে কি জানতে চাও।”
পাতের ভাতটুকু শেষ করে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে রণ। শুভ্রা তাকিয়ে আছে রণর দিকে-“আপনি কি আমায় ভালোবাসেন?”
রণর হাত থামে, চোখ দুটো স্থির হয়ে থাকে শুভ্রাতে।

চলবে—
©Farhana_Yesmin

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে