দমকা হাওয়া পর্ব-১১

0
780

#দমকা_হাওয়া
#ঝিনুক_চৌধুরী
# পর্ব-১১

কদিন কেটে গেল।
মিজান সাহেব আজ রাত এগারোটায় দেশের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। দুদিন পর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরিচিত একজন গাড়ি নিয়ে যাচ্ছে বলে তিনিও সাথে রওনা হচ্ছেন। সম্পত্তি বিষয়ক কাজ।
জেসমিন আরা তড়িঘড়ি ব্যাগ গুছিয়ে দিচ্ছেন। পিউ আশেপাশেই ঘুরঘুর করছে।
-আব্বু আজই কেন যাচ্ছেন? কবে আসবেন? বাসা খালি হয়ে যাবে না? মা তো একা হয়ে যাবে।
মিজান সাহেব হেসে ফেলেন।
-মামনি আমি বাসায় থাকিই কতক্ষণ? শুধু রাতটুকু। এতেই তোমার মনে হচ্ছে বাসা খালি হয়ে যাবে? আগামীকাল তো তোমার মাও গ্রামে চলে যাবে।
পিউ অবাক চোখে তাকায়। মা, আপনিও গ্রামে যাবেন?
-হ্যা, একটু দরকার আছে। মিজান একা পারবে না। সমস্যা নেই আমি সব গুছিয়ে দিয়ে যাবো। তিন চার দিনেই চলে আসবো।
-আমাকেও নিয়ে যান তাহলে। একা একা কি করবো এখানে?
জেসমিন আরা মিজান সাহেব দুজনেই হেসে ওঠেন।
মিজান সাহেব বলেন, মা রে মাত্র কদিনে তুমি একেবারে আপন হয়ে গেছো। এমন ভাবে বলছো যেন আমাদের আর দেখা হবে না। আমরা তো চারদিন পরই চলে আসবো।
পিউ মুখ ভার করে বসে থাকে। কেন জানি কান্না পাচ্ছে। ওর আব্বু যতবার দেশের বাইরে যায় তখনো এমন কান্না পায়। অথচ এমন হওয়ার কথা নয়। সবাই তো আর সারাজীবন গলা ধরে বসে থাকবে না। সবারই নিজেস্ব কাজ আছে। তবু পিউর মনে হয় সবাই কেন একসাথে এক জায়গায় ভালোবেসে থাকে না?
জীবন তো একটাই। কখন কি হয়ে যায়!

_________
জেসমিন আরা সকাল থেকেই গোছগাছ শুরু করছেন। বিকালে বেরিয়ে যাবেন। তিনদিন সংসারে থাকবেন না। বলা যায় না, চার পাঁচ দিনও লাগতে পারে। স্বচ্ছর উপর যেন চাপ না পড়ে ওভাবে সব গোছাচ্ছেন। স্বচ্ছর পছন্দের খাবার রান্না করে বক্সে ভরে রাখছেন। পিউ ভারি মুখে জেসমিন আরার সাথেই আছে। জেসমিন আরা মনে মনে পিউর জন্য সারপ্রাইজ ঠিক করে রেখেছেন। দুপুরে খাওয়ার পর বলবেন।
স্বচ্ছ পড়ার টেবিলে মনযোগ দিয়ে আছে। বিকালের পর বাসায় পিউ ও স্বচ্ছ ছাড়া কেউ থাকবে না। এরচেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে। বোকা মেয়েটা বুঝছে না। পরিবার থাকা ভালো তবে হানিমুন বলেও একটা কথা আছে। সে সময়টা শুধু দুজনের হয়। স্বচ্ছ পিউর হানিমুন না হয় খালি বাসাতেই হবে।
দুপুরের খাওয়া শেষে জেসমিন আরা পিউকে বললেন, তোমার জন্য সুখবর আছে।
পিউ মুখ উজ্জ্বল করে তাকায়। স্বচ্ছও আগ্রহী চোখে তাকায়।
-যাওয়ার পথে তোমাকে বাবার বাসায় নামিয়ে দেবো। আমি যেহেতু থাকছি না তুমি এ ক’দিন বাবার বাড়ি বেড়িয়ে এসো। তোমার আব্বু খুশি হবেন।
পিউ বুঝল না ওর কি বলা উচিত। জেসমিন আরা এতো খুশি মনে পিউকে সুসংবাদ দিল যে মুখের উপর কিছুই বলতে পারলো না।
স্বচ্ছর দিকে তাকিয়ে দেখে স্বচ্ছ নত মুখে ভাত খাওয়ায় ব্যস্ত। যেন এ ব্যাপারে কোনো আলাপ করতে আগ্রহী নয়।
রুমে ঢুকে পিউ জিজ্ঞেস করল, আমি যাবো বাবার বাসা?
স্বচ্ছ ল্যাপটপে মুখ রেখেই গম্ভীর সুরে বলল, বাসা খালি হয়ে যাচ্ছে, একা বাসায় কি করবে এসব বলে বলে সবার মাথা খেয়েছ। পরিবারের সবার জন্য তোমার এতো মন খারাপ হচ্ছে যখন আমার সাথে একা থেকে কি করবে? তোমার যাওয়াই উচিত।
পিউ মুখ কালো করে ব্যাগ গোছাতে শুরু করল। ফাঁকে ফাঁকে টুকটাক প্রশ্ন করে স্বচ্ছকে কিন্তু উত্তর আসে না ওপর দিক থেকে।
বিদায় বেলা জেসমিন আরা খুশিমনে বিদায় নিলেন। মেয়েটা একা একা বাসায় কষ্ট করতো ভেবে শান্তি পেলেন নিজের সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য।
পিউ কয়েকবার চোরাচোখে স্বচ্ছর দিকে তাকালো। কিন্তু অভিমানী স্বচ্ছ একবারও পিউকে দেখলো না।
দুজনকে বিদায় দিয়ে নিজ রুমে এসে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে স্বচ্ছ। পুরো ঘর শূন্য।
ডাইনিং টেবিলে এসে দুটো গ্লাস পরপর তুলে জোড়ে আছাড় মারে। রাগটা ঠিক কার উপর বুঝে না। মা, পিউ নাকি নিজের উপর?
_____________
পিউ একটিবারও কল দেয়নি। স্বচ্ছও দেয় নি। রাতে ঘুমোনার সময় মন ছটফট করতে থাকে স্বচ্ছর। মোবাইল হাতে নিয়ে ভাবে এখনি কল দেই কিন্তু অভিমানী মন প্রশ্ন করে কই পিউ তো একবারও কল দিলো না।
ভোরের দিকে সকল অভিমান ঝেরে পিউকে ভিডিও কল দেয়। ভালোবাসার মানুষটার মুখখানা না দেখলে বেঁচে থাকা দায়।
কল ধরে ঘুম জড়ানো চোখে পিটপিট করে তাকানোর বৃথা চেষ্টা চালায় পিউ।
মুহূর্তে ফুরফুরে বাতাস উড়ে এসে স্বচ্ছর মন প্রফুল্লো করে তুলে।
-কেমন আছো পিউ?
-হুম।
-আরো ঘুমাবে?
-হুম।
– একটু কথা বলো!
– হুম
-ঠিক আছে ঘুমাও। শুধু মোবাইলটা এমন জায়গায় রাখো যেন আমি তোমায় দেখতে পাই।
পিউ হাতড়ে মোবাইল স্ট্যাণ্ডে মোবাইল রেখে ঘুমিয়ে পড়ে।
স্বচ্ছ গভীর চোখে চেয়ে দেখে ঘুমন্ত মুখটিকে। খুব ইচ্ছে করে ঠোঁটে চুমু খেতে। ভালোলাগায় দম বন্ধ হয়ে আসে। মোবাইল স্ক্রীনে ঠোঁট ছুঁয়ে বলে, আমার ভালোবাসা …..

সারাদিনে দুতিনবার কল করেছে স্বচ্ছ। পিউ হু হা বলে রেখে দিয়েছে। স্বচ্ছ স্বাভাবিক ভাবেই ধরে নিয়েছে পিউ হয়তো পরিবার কে সময় দিচ্ছে। কিন্তু পিউর মনের অভিমান বেড়ে চলছে ক্রমেই স্বচ্ছ তা টের পায় নি ।
যেন-তেন ভাবে স্বচ্ছ দুইদিন পার করে দিলেও পিউর সময় যেন থমকে গেছে। সবার সাথে থেকেও একা সে, সবার সাথে হেসেও বিষন্ন মন।
————
মিজান সাহেব ঘুমোতে এলে দেখেন জেসমিন আরা পিউর সাথে কথা বলছে। তিনি ডিসটার্ব করলেন না।কল রেখে জেসমিন আরা এবার স্বচ্ছকে কল দিয়ে খবরাখবর নেন।
মিজান সাহেব অবাক হলেন। ফোন রাখলে জিজ্ঞেস করেন তুমি ওদের সাথে আলাদা আলাদা কথা বলছো কেন?
জেসমিন আরা বিছানায় গা এলিয়ে বলেন দুজন আলাদা জায়গায় তাই আলাদা কল দিয়েছি।
মিজান সাহেব আকাশ থেকে পড়েন। আলাদা মানে?
জেসমিন আরা স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বলেন, আমি আসার সময় পিউকে ওর বাবার বাসায় দিয়ে এসেছি। আমি যেহেতু থাকবো না মেয়েটা একা একা কি করবে খালি বাসায়?
-স্বচ্ছকে জিজ্ঞেস করে পিউকে ওর বাসায় পাঠিয়েছো?
মিজান সাহেবের কণ্ঠের রূঢ়তা শুনে জেসমিন আরা অবাক চোখে তাকান। বলেন, জিজ্ঞেস করিনি। স্বচ্ছ মানাও করে নি। পিউও মানা করে নি। ওরা তো এখনো ছোট, নিজেরা কি আর….
মিজান সাহেব চেঁচিয়ে ওঠেন। কোথায় ছোট? কেন বার বার তুমি ছোট ছোট বল? কতবার তোমাকে একই কথা বোঝাবো?
জেসমিন, এ বয়সে আমরা প্রেম করেছি । আমি তার একবছর পর তোমায় বিয়ে করেছি। সংসার সামলেছি। তুমি আমার পরিবার সামলেছো। তুমি বার বার একই ভুল করছো কেন? ওদেরকে ওদের মতো সিদ্ধান্ত নিতে দিচ্ছো না কেন?
জেসমিন আরা আমতা আমতা করে বলেন, আমি তো ওদের ভালোর জন্য এমনটা করেছি। পিউ একা ঘরে কি করতো? ও তো কিছু বুঝেই না। সোজা সরল মেয়ে…
— ওহো্ জেসমিন বোঝার চেষ্টা কর। পিউর জন্য স্বচ্ছ আছে। ওরা একে অপরকে সামলে নিবে। কেবল বিয়ে হয়েছে দুজনের। ওদের ঠিকমতো কাছে আসার সুযোগ তো দিবে। তুমি তো দেখছি নিজের ছড়ি ঘুরাতেই ব্যস্ত।

জেসমিন আরা বিস্ফারিত চোখে তাকায়।
-এভাবে বলতে পারলে তুমি? আমি ছড়ি ঘুরাচ্ছি? আমি ওদের ভালোবাসি না, ওদের ভালো চাই না?
– ভালো চাইলে দুজনের কথা ভাবতে। নিজের মতামত ওদের উপরে চাপিয়ে দিতে না।
– আমি কিছু চাপিয়ে দেই নি মিজান। শুধু পিউ কিভাবে কোথায় ভালো থাকবে সেটা আগে ভেবেছি। মেয়েটা….
— আর স্বচ্ছ? ওর কথা ভাবনি কেন? তুমি আসলে পিউকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছো টিপিক্যাল শাশুড়ীদের মতো।
– মিজান চুপ করো। একদম চুপ। থরথর করে কাঁপতে থাকে জেসমিন আরা। দৃষ্টি ঘোলা হয়ে ওঠে। চিৎকার করে বলেন, আমি পিউর শাশুড়ি নই। আমি মা! আমি মা! পিউকে আমি কতটা পছন্দ করি তুমি বুঝছো না, আমি বোঝাতে পারবো না। ওকে ছাড়া এখানে কিভাবে দিন কাটাচ্ছি তুমি জানো না। আমার মেয়ে নাতাশা, আমার জানপাখি , ওর ভালো চাইবো না আমি? আমি ওর মা না? অস্থির চোখে কেঁদে ওঠেন জেসমিন আরা।
মিজান সাহেব তড়িঘড়ি বুকে জড়িয়ে ধরেন জেসমিন আরাকে।
-জেসমিন শান্ত হও, শান্ত হও! আমরা পিউর কথা বলছি জেসমিন, আমাদের নাতাশার কথা নয়।
জেসমিন আরা অপরাধী চোখে তাকান। কখন মুখ ফসকে এমন ভুল করলেন?
মিজান সাহেব নমনীয় কণ্ঠে বললেন, নাতাশা আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে জেসমিন। বহু বছর আগে। সেই ক্ষত আমরা মুখে না বললেও বয়ে বেড়াচ্ছি দুজনই। আল্লাহ হয়তো নতুনরূপে নাতাশাকে পিউ রূপে আমাদের কাছে পাঠিয়েছে। তুমি পিউর মাঝে নিজের মেয়েকে খুঁজে পেয়েছ ভালো কথা কিন্তু এটা ভুলে গেলে হবে না পিউ স্বচ্ছর স্ত্রী। তোমার চেয়ে পিউর উপর স্বচ্ছর অধিকার বেশি। স্বচ্ছকে নিজের স্ত্রীর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দেয়া উচিত।

জেসমিন আরা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদেন।
–আমি ভালো মা হতে পারলাম না মিজান। আমি মা নামের কলংক।
–না জেসমিন, কেন নিজেকে বার বার তুমি গালি দাও? যা হয়েছে তা ভুলে যাও প্লিজ। ওটা একটা এক্সিডেন্ট ছিল। পুরোনো ক্ষত কেন তুলে আনছো?
–কারন আমি আজো নিজেকে ক্ষমা করতে পারি নি। আমি অপরাধী, আমার নাতাশা, আমার জান পাখীটার অপরাধী আমি। আমি তোমার অপরাধী মিজান। আমি ক্ষমার অযোগ্য।
-জেসমিন চুপ করো তো। ওটা একটা এক্সিডেন্ট ছিল।
–আমার বেলাতেই কেন এমন হলো বলতে পারো? আমি একটা দায়িত্বহীন মা বলে।
-না জেসমিন, তুমি অনেক ভালো মা!
— ভরা বর্ষায় আমি আমার গ্রামে ঘুরতে যাবার জেদ কেন ধরেছিলাম? চারিদিকে থৈথৈ পানি। আমার চঞ্চল পরীটা এদিক ওদিক ছুটে বেড়ায়। তুমি এতো করে মানা করলে অথচ আমি? তোমার অবাধ্য হয়ে জীবনের সবচেয়ে বড় সর্বনাশ করলাম। এতো কিসের ঘুম ছিল আমার চোখে? নির্জন দূপুরে আমার মেয়েটার নিথর শরীর ডুবে ছিল ছোট্ট ডোবায় অথচ আমি জানলামই না। কেউ জানলো না। মৃত্যুর আগে নিশ্চয়ই মেয়েটা আধোবুলিতে মা মা ডেকেছে। আমি কেন শুনতে পেলাম না? আমি কেমন মা? আমার নাতাশা, আমার কোল ছেড়ে চিরতরে হারিয়ে গেল….আমি.. আমি কি করে পারলাম মিজান? কি করে আমার জান পাখিটা হারিয়ে গেল? মুহূর্তে আমার….সব শেষ হয়ে গেল…
শূন্য দৃষ্টিতে চেয়ে তীব্র আর্তনাদে কেঁদে চলেন জেসমিন আরা।
মিজান সাহেব শক্ত করে বুকে চেপে রাখেন নিজ স্ত্রীকে। যেমন করে এতোটা বছর ভালোবেসে আগলে রেখেছেন। বহু কষ্টে সন্তান হারানো পাগলপ্রায় জেসমিনকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনেছিল তিনি। সেই দুঃসময়, সেই দুঃস্মৃতি আর মনে করতে চান না।
নাতাশা হারানোর তিন বছর পর স্বচ্ছর অস্তিত্ব জানান দিলেও জেসমিন আরা স্বাভাবিক হতে পারে নি। তখনও নির্ঘুম রাত কাটতো, ক্ষণে ক্ষণেই চিৎকার করে উঠতো, নাতাশার বয়সী কোনো মেয়ে দেখলেই কান্না শুরু করতো।
কি একটা দুঃসময় পার হয়েছে দুজনের!
স্বচ্ছ পেটে থাকা অবস্থায় মিজান সাহেব ছিলেন চরম উৎকন্ঠায়। জেসমিন আরা আদৌ কি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে?
স্বচ্ছ জন্মের পর মাতৃত্বের স্বাদ আবার ফিরে পাওয়ার সাথে সাথে স্বাভাবিক হতে শুরু করেন জেসমিন আরা। স্বচ্ছকে এতো বেশি আগলে রাখতেন যেন চোখের পলকেই উধাও হয়ে যাবে ছেলেটি ।

মিজান সাহেব বেশ সময় ধরে জেসমিন আরার মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পারানোর চেষ্টা করছেন। বাঁধ ভাঙা কান্না শেষে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত জেসমিন আরা।
পরিবেশ হালকা করতে মিজান সাহেব বলেন, পিউ একটা দজ্জাল শাশুড়ী না পেয়ে তোমার মতো মমতাময়ী মা পেয়েছে। মেয়েটার ভাগ্য কত ভালো, দেখেছো! পিউও হয়তো ওদিকে অস্থির হয়ে আছে তার মায়ের জন্যে, তাই না জেসমিন? তোমাদের বউ শাশুড়ীর অতিরিক্ত মহব্বতে আমাদের বাপ-ছেলের টিকে থাকা মুশকিল হবে তা খুব ভালো করেই বুঝছি।

জেমমিন আরা মলিন হাসেন।
এই মানুষটার প্রতি চির কৃতজ্ঞ তিনি। তার ছোট ছোট মায়ায় জড়ানো কথামালা বুকের ভেতরের ক্ষতকে হালকা প্রলেপ দিয়ে সংসারে ছন্দ এনেছে প্রতিবার।

_____________
স্বচ্ছ ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল এমন সময় ফোন বেজে উঠলো। পিউ কল দিল কি? খুশি মনে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে পিউ নয়, একটা ছেলের প্রোফাইল থেকে কল বাজছে। নাম নয়ন শিকদার।
ঘড়িতে তখন রাত দেড়টা ।
আমেরিকায় এখন দিন কিন্তু এখানে তো মাঝরাত। এমন অসময়ে কল দেয়া কেমন ভদ্রতা? হতে পারে নয়ন পিউর বন্ধু কিন্তু স্বচ্ছর তো বন্ধু নয়। একজন অপরিচিত মানুষকে কেউ এতো রাতে কল দেয়?
বিরক্তি নিয়ে কল ধরে হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে নয়ন বলে, কি রে ভাই, এমন অনুভূতিহীন নির্বিকার, নিষ্ঠুর মানুষ আমি জন্মেও দেখি নাই। তুমি কি মানুষ নাকি এলিয়েন ?
অপমানে মুখ লাল হয়ে ওঠে স্বচ্ছর।

চলবে।।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে