ত্রিভুজ প্রেম
জান্নাতুল ফেরদৌস সূচনা
পর্বঃ১
রাস্তা দিয়ে ভয়ে ভয়ে পা এগুছে পাপড়ি। বাসায় ফিরতে আজ তার সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে।যে রাস্তা দিয়ে বাসায় যাচ্ছে সে রাস্তাটা খুব একটা ভালো বলাও চলে না। দিনের বেলায় যখন বাসায় ফিরে তখনি তাকে এই রাস্তায় ছেলেরা ইভটিজং করে আর আজ তো সন্ধ্যা হয়ে গেছে। মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে ডাকতে পা এগুচ্ছে পাপড়ি। এখনো কিছুটা দূরে আছে তার বাড়ি।
একটা চায়ের দোকানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ একটা সিটির শব্দ পাপড়ির কানে বেজে ওঠে। পাপড়ি শব্দটা শুনেও না শুনার ভান করে এগুতে লাগলো। আবার পেছন থেকে কেউ একজন বলে ওঠলো
– কোথায় যাচ্ছো সুন্দরী?
কথাটা শুনে পাপড়ি কেঁপে ওঠে। মনে মনে আল্লাহকে ডাকছে। মনে মনে ভাবছে এখন আর হাটা যাবে না। একটা দৌড় তাকে দিতেই হবে। দৌড় দিতেই যাবে সে এমন সময় একটা ছেলে তাকে ঘিরে ফেলে সামনে থেকে।
চেহেরাটা অপরিচিত নয় পাপড়ির। এই ছেলেটাই রোজ তাকে এ পথে যাওয়ার সময় ইভটিজিং করে। পথে আর কেনো লোকজন দেখতে পারছে না সে। জায়গাটা নিরব হয়ে আছে একদম। পাপড়ির মুখে ভয়ের ছাপ। সে ভয়ে ভয়ে তাদের জিজ্ঞেস করলো
– কি হলো, এভাবে আমার পথ আটকে দাড়িয়ে আছেন কেনো?
একজন বলে ওঠলো,
– সুন্দরী, কয়েকদিন ধরে তোমাকে দেখছি। মনে ধরেছে তোমায়। এভাবে একা একা চলাফেরা না করে আমাদের সঙ্গী করে নিয়ে নিলেও তে পারো কি বলো?
কথাটা শুনে পাপড়ি ধমকে যায়। মনে ভিতর ভয়টা আরো ঝাপটে ধরে। পাপড়ি খুব করে চাইছে কেউ একজন তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসুক। কিন্তু কাউকেই সে দেখতে পাচ্ছে না। তার চোখে পানি চলে এসেছে। সে ভয়ে ভয়ে বললো
– দেখুন, আমাকে যেতে দিন। আমি আপনাকে চিনি না। কেনো পথ আটকে আছেন। প্লিজ, আমি আপনার ছোট বোনের মতো।
তার কথা শুনে ছেলেটা হেসে ওঠলো।
– এতো সহজেই কি ছাড়া যায় পাখি। এতো সুন্দর সুযোগ কি হাত ছাড়া যায়।
বলেই পাপড়ির হাত টা চেপে ধরলো। হাত ধরায় পাপড়ি চিৎকার করা শুরু করলো।
-প্লিজ, ছেড়ে দিন আমায়। প্লিজ, আপনার পায়ে পড়ি।
ছেলেটা পাপড়িকে ঘিরে দাড়ালো।ছেলেটা যেই না পাপড়ির শরীরে হাতে দিতে যাবে অমনি পেছন থেকে কেউ একজন থাক্কা মারলো ছেলেটিকে। ছেলেটা ঘুরে দাড়ালেই বেদম পিটানো শুরু। চড়, লাথি, ঘুষি সব খাওয়ার পর ছেলেটা কোনো এক রকমে বেঁচে পালালো।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
পাপড়ি এতোক্ষণ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলো এসব দৃশ্য। পরিচিত মুখ ও তার খুব আপন একজন তাকে এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচিয়েছে যা সে অবাক হয়ে দেখছে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর পরিচিত মানুষটি বলে ওঠে
– কিরে, এখনো হা করে কি দেখছিছ?
পাপড়ি কাপা কাপা কন্ঠে বললো
– তুই কি করে করলি এসব পুষ্প আপু?
একটু মুচকি হেসে পুষ্প বললো
– তোর মতো ভিতু নাকি আমি যে এই সামান্য পুছকে ছেলেদের ভয় পাবো। একটু সাহসী হও এবার আমার মতো। দেখলি না আমার ২টা চড় থাপ্পড় খেয়েই কিভাবে লেজ গুটিয়ে পালালো। তোর মতো ভিতু মেয়েদের জন্য আজ আমাদের সমাজের মেয়েদের এই অবস্থা। আমার থেকে ফাইটিং এর ট্রেনিং টা নিয়ে নিস। পরের বার কাজে আসবে।
বলেই হেসে দিলো পুষ্প।
– আপু তুই কোথায় থেকে এলি? আর তোর এমন চন্ডীরূপও আছে আজ না দেখলে জানতেই পারতাম না।
– তোর আসতে দেরি হওয়াতে তোকে খুজতে খুজতে এদিক দিয়ে আসছিলাম তখনি তোর চিৎকার শুনে ছুটে আসি এইখানে। এখন আর কথা বাড়াস না চল বাসায়, মা তোর জন্য চিন্তা করছে। আর শোন এসবের কথা বাসায় গিয়ে মাকে বলিস না। বুজসিস?
– ওকে। চল এখন।
চলবে…