#তোর_ছায়ার_সঙ্গী_হব
লেখক-এ রহমান
পর্ব ২০
৪৬
ইরা খুব কষ্টে ঠেসে নাস্তা মুখে পুরছে। সকাল সকাল তার খেতেই ইচ্ছা হয়না। কিন্তু কি আর করার ভার্সিটি যেতে হবে। মা না খেয়ে যেতে দিবেনা। এমন সময় কলিং বেল বেজে উঠলো। ইরার মা দরজা খুলে দিয়েই সহাস্যে বললেন
–আরে তুই। এই বাসায় তো আসাই বাদ দিয়ে দিয়েছিস। ঈশা যাওয়ার পর থেকে তোর ছায়াও দেখা যায়না এখন।
–এভাবেই বকতে থাকবে নাকি ভিতরেও যেতে বলবে।
ইভান অসহায়ের মতো বলল। একটু হেসে তিনি সাইড দিলেন ভিতরে ঢুকতে। ইভান ভিতরে ঢুকে টেবিলে বসে পড়লো ইরার সামনে। ইরাকে দেখে বলল
–তোর ক্লাস কখন?
ইরা অবাক হয়ে তাকাল। তারপর ধির গলায় জিজ্ঞেস করলো
–তুমি কিভাবে জানলে আমার এখন ক্লাস আছে?
ইভান সামনে থাকা গ্লাসে পানি ঢেলে একটু খেয়ে সেটার দিকে তাকিয়ে কঠিন গলায় বলল
–কোন কিছুই আমার চোখ এড়ায় না।
ইভানের কথা গুলো ইরার শরীরে রীতিমতো ভয়ের আভাষ তৈরি করে দিলো। ইভান পানিটা শেষ করে বলল
–তুই রেডি?
ইরা মাথা নাড়াল। ইভান তার দিকে কঠিন ভাবে তাকিয়ে বলল
–চল।
ইরার বুঝতে বাকি থাকলো না যে ইভান তাকে আজ ভার্সিটি নিয়ে যেতেই এসেছে। কিন্তু কারণটা সে বুঝতে পারছেনা। তবুও কোন কথা না বলেই ব্যাগ গুছিয়ে উঠে দাঁড়ালো। তার দাঁড়ান দেখে ইভানও উঠে গেলো। একটু হেসে বলল
–আসি বড় মা। ইরাকে নামিয়ে দিয়ে আমি অফিসে যাব।
ইরার মা বলল
–কিছু খেয়েছিস সকালে? খেয়ে যা।
–তোমার মেয়ে কি আমাকে না খেয়ে বের হতে দিবে? এখন আর কিছু খাবনা। আসলাম।
ইভান হেসে ইরার পিছনে পিছনে নামতে শুরু করলো। ইরা নেমে গাড়ির পাশে দাড়িয়ে থাকলো। ইভান গাড়ির দরজা খুলে ইরাকে বলল
–ওঠ।
ইরা উঠে পড়লো। ইভানও গাড়িতে উঠে স্টার্ট দিলো। ইরা কোন কথা বলছে না। চুপচাপ সামনে তাকিয়ে আছে। ইভান নিরবতা ভেঙ্গে বলল
–তোর ক্লাস কখন শেষ হবে?
–১.৩০ এ ভাইয়া।
–আমি নিতে আসবো।
ইভানের দিকে একটু অবাক হয়ে তাকাল ইরা। ইভানের এমন আচরণ ইরার খুব একটা ভালো মনে হচ্ছেনা। এরকম করার কারন কি? তাহলে কি রিহাব কিছু বলেছে ইভান কে? তাই হবে। নাহলে ইভান এমন আচরণ কখনই করত না। ইরার রিহাবের উপরে খুব রাগ হল। গাড়ি থেমে যেতেই ইরার ঘোর কাটে। ইরা চমকে উঠে চার পাশে তাকায় ভার্সিটিতে চলে এসেছে। দরজা খুলে নেমে যায়। ইভান তার দিকে তাকিয়ে খুব স্বাভাবিক ভাবে বলে
–এখন থেকে আমি তোকে নিয়ে আসবো আর আমিই নিয়ে যাব। অন্য কারও সাথে যাওয়ার কোন দরকার নেই।
ইভানের কথা শুনে ইরা স্বাভাবিক ভাবেই মাথা নাড়াল। ইভান চলে গেলো। রাগে ইরার চোখ মুখ সব লাল হয়ে গেলো। সে ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে সে যে শোভনের সাথে আসে আর তার সাথেই যায় এসব ইভান জেনে গেছে। আর সেই জন্যই এরকম আচরণ করছে তার সাথে। আর এটা রিহাব ছাড়া কেউ বলেনি। কারন এতদিন তো ইভান কিছুই জানতে পারেনি। তাহলে এখন কিভাবে জানলো।
ইভান একটু দূরে গাড়ি দাড়িয়ে পকেট থেকে ফোন বের করে একটা নাম্বারে ফোন দিলো। খুব শান্ত ভাবে বলল
–ইরা আর রিহাবের বিয়ের ডেট ঠিক হয়ে গেছে। আজ থেকে ৪ দিন পর। এখন কি করতে হবে তা কি নতুন করে বলতে হবে?
ওপাশে ফোনটা ধরে রাশিক একটু হেসে বলল
–তার দরকার হবে না। আমি বুঝে গেছি।
ইভান সশব্দে হেসে ফোনটা কেটে দিলো। ফোনটা হাতে ধরেই সামনে তাকিয়ে বলল
–আমি তোর উপরে কখনও জোর করে কিছুই চাপিয়ে দিতাম না ইরা। কিন্তু তুই যা করছিস তা তোর জন্য বিপদ ছাড়া আর কিছুই ডেকে আনবে না। আমি বেঁচে থাকতে তোর বিপদ কিভাবে হতে দেই। কিন্তু এই মুহূর্তে শোভনের সম্পর্কে তোকে কিছু বলেও লাভ হতোনা। তুই যে ওর জালে ফেসে গিয়েছিস। এখন তোর চোখে ওর খারাপ কিছুই পড়বে না। কিন্তু আজ তুই ওর আসল চেহারা দেখতে পাবি। তারপর তুই নিজে থেকেই এই সম্পর্ক ভেঙ্গে দিবি। আমি তো শুধু প্রতিনিধি হয়ে কাজ করবো। বিয়েটা তোর রিহাবের সাথেই হবে। এতেই তোর ভালো ইরা।
কথা শেষ করেই মুচকি হেসে রিহাবের নাম্বারে ফোন করলো ইভান। রিহাব ফোন ধরেই বলল
–তুই এই সময়? সব ঠিক আছে তো।
ইভান একটু হেসে বলল
–সব ঠিক আছে। তোকে একটা কাজ দিলে করতে পারবি?
–কি কাজ বল?
–ইরা ভার্সিটিতে অপেক্ষা করছে। আমার একটা কাজ আছে আনতে যেতে পারবোনা। তুই একটু যাবি?
ইভানের কথা শুনে রিহাব আকাশ থেকে পড়লো। কথাটা তার মাথায় ঢুকল না। ইভান আবার ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলল
–আর কারও উপরে ভরসা করতে পারছিলাম না। তোর কথা মনে হতেই ফোন দিলাম।
রিহাব আর প্রশ্ন না করে চিন্তিত ভঙ্গিতে “হুম” বলল। ইভান তার সম্মতি পেয়েই ফোনটা কেটে দিলো। কারন বেশিক্ষন কথা বললেই রিহাব প্রশ্ন করবে যার উত্তর সে এখন দিতে পারবে না। তাই ফোন রেখেই বলল
–যা নিজের হবু বউকে গুণ্ডার হাত থেকে বাচিয়ে নিয়ে আয়।
তারপর আবার রাশিকের নাম্বারে ফোন করে বলল
–রিহাব আসছে। যা করার তাড়াতাড়ি কর। কিন্তু খেয়াল রাখিস ইরার যেন কোন ক্ষতি না হয়।
বলেই সে সোজা অফিসে চলে গেলো। রিহাব ভাবছে ইভানের হঠাৎ এমন কথার মানে কি? সব তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কি আর করার দায়িত্ব যখন নিয়েছে পালন তো করতে হবেই। তাই মোবাইল আর গাড়ির চাবিটা নিয়ে বের হয়ে গেলো।
৪৭
ইরা ধির পায়ে ভার্সিটির ভিতরে ঢুকছে। এমন সময় শোভন তার সামনে এসে দাঁড়ায়। সে শোভনের দিকে তাকায়। রাগে চোখ লাল হয়ে আছে। ইরা তার রাগের কারন বুঝতে না পেরে বলল
–কি হয়েছে? এমন রাগ করে আছো কেন?
শোভন চোখ মুখ শক্ত করে বলল
–তোমার সাথে কথা আছে।
–বল।
–এখানে না। আমার সাথে এসো।
ইরা বিরক্তি নিয়ে বলল
–আমার ক্লাস আছে শোভন। দেরি হয়ে যাচ্ছে। পরে কথা বলি?
শোভন দাতে দাঁত চেপে বলল
–আগে কথা শুনবে। পরে ক্লাস করবে।
কথা শেষ করে ইরাকে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে সে ইরার হাত ধরে টানতে টানতে একটা ফাকা রুমে নিয়ে গেলো। তারপর ইরাকে ছেড়ে দিয়ে তার সামনে দাড়িয়ে বলল
–বিয়ে করছ তাহলে? এখন আমার প্রয়োজন শেষ তাই না।
ইরা ভ্রু কুচকে রেগে বলল
–কি সব বলছ? তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে?
শোভন ইরার এক হাত শক্ত করে ধরে বলল
–ও ড্রামা কুইন এইসব আমার কাছে চলবে না। এতদিন ধরে আমার সাথে প্রেম করেছো আর এখন অন্য কাউকে বিয়ে করছ? আমাকে তো হাতও ধরতে দাওনি। আর ওই ডাক্তার কে সব দিয়ে দিবে।
শোভনের মুখে এমন নোংরা কথা শুনে ইরা নিজেকে ঠিক রাখতে পারল না। কারন শোভন কে তার ভালো লাগতো ঠিকই কিন্তু তার সাথে এখনো গভীর প্রেমের সেরকম কোন সম্পর্কই তৈরি হয়নি। আর শোভন এরকম নোংরা কথা কিভাবে বলতে পারল? নিজের রাগটাকে দমন করতে না পেরে ইরা সজোরে শোভনের গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো। তারপর কঠিন গলায় বলল
–মুখ সামলে কথা বল। তোমার সাথে আমার কোন প্রেমের সম্পর্ক নেই। আমরা শুধুই বন্ধু ছিলাম। কিন্তু তোমার এই নোংরা কথা শোনার পর থেকে আর এই বন্ধুত্ব আমি রাখবো কিনা সেটা নিয়ে আমাকে ভাবতে হচ্ছে এখন।
–ও তাই নাকি। তো কত গভীর বন্ধুত্ব ছিল তোমার সাথে আমার তাই না? তাই তো সারাক্ষন আমার সাথে চ্যাটিং করতে। আমার জন্য অপেক্ষা করতে রাস্তায় দাড়িয়ে। আমার সাথে ভার্সিটি আসতে আমার সাথে যেতে। আমার দেয়া সমস্ত গিফট যত্ন করে রাখতে। আরও তো বন্ধু আছে। তাদের সাথেও কি এরকম সম্পর্ক ছিল?
ইরা কোন জবাব দিতে পারল না। কারন সত্যিই সে শোভন কে বন্ধুর চেয়ে একটু বেশিই ভাবতো। এই কারনেই তার প্রতি একটু দুর্বলতা প্রকাশ করেছে। কিন্তু আজ এই অবস্থায় তার সমস্ত দুর্বলতা রাগে পরিণত হয়েছে। ইরা রেগে বলল
–শোভন তুমি কিন্তু বেশি বেশি করছ। তোমার সাথে কথা বলে নষ্ট করার মত সময় আমার নেই। আর তোমাকে বিয়ের কথা কে বলেছে? আমি কোন বিয়ে করছিনা।
শোভন ইরার অনেকটা কাছে চলে এলো। ইরা অপ্রস্তুত হয়ে দূরে সরে যেতেই তার ফোন বেজে উঠলো। হাতে থাকা ফোন উঠে নাম্বার টা চোখে পড়তেই একটু স্বস্তি পেলো সে। ফোনটা ধরেই বলল
–রিহাব ভাইয়া।
ইরা রীতিমতো হাপাচ্ছে। রিহাব একটু চিন্তিত হয়ে বলল
–তুমি কোথায় ইরা? আমি তোমার ভার্সিটির সামনে দাড়িয়ে আছি।
ইরা এবার আরও সাহস পেয়ে গেলো। একটা ঢোক গিলে বলল
–আমি ১০২ নাম্বার রুমে। এখনি আসছি।
ইরা ফোন কেটে দিয়ে তাড়াতাড়ি বের হতে যাবে তার আগেই শোভন তার হাত ধরে টেনে বলল
–তোমার নায়ক এসেছে বুঝি? তার কাছে যাবে? তাহলে আমার কি হবে? আমি তোমার জন্য এতদিন অপেক্ষা করলাম তার প্রতিদান কি শুধুই একটা থাপ্পড়?
ইরা এবার ভয় পেয়ে গেলো। শোভন একটু হেসে ইরাকে নিতেই পিছন থেকে বজ্র কণ্ঠের হুঙ্কারে থেমে যায়।
–হাউ ডেয়ার ইউ টু টাচ হার?
রিহাবের দিকে ঘুরে তাকায় দুজনি। ইরা শোভনের কাছ থেকে নিজের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সে তাকে শক্ত করে ধরে রেখেছে। ইরা শত নড়াচড়া করেও পারছে না নিজেকে ছাড়াতে। রিহাব খুব শান্ত ভাবে বলে
–তোমার সাথে আমার কোন শত্রুতা নেই আর আমি তৈরিও করতে চাইনা। ওকে ছেড়ে দাও।
শোভন স্বাভাবিক ভাবে বলল
–এক্সাকলি! আমিও সেটাই বলছি। আপনি কি জানেন ওর সাথে আমার কত দিনের প্রেমের সম্পর্ক। এতো কিছু জানার পরেও কিভাবে ওকে বিয়ে করবেন। আর জানতে চাইবেন না সম্পর্ক কতটা গভীর।
ইরা চিৎকার করে বলল
–তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। রিহাব ভাইয়া ঠিক ছিল। আমিই তোমাকে চিনতে পারিনি। পারলে কোন দিন তোমার সাথে বন্ধুত্ব করতাম না।
কথা শেষ করে ইরা এক ঝটকায় নিজের হাত ছেড়ে নিলো। এক দৌড়ে এসে রিহাবকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। রিহাব এক হাতে ইরাকে ধরে আরেক হাতের আঙ্গুল শোভনের দিকে তাক করে বলল
–এতদিনে যা করেছো সেই পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু আজ বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গেলো। এটার জন্য তুমি মাফ পাবে না। মনে রেখো।
শোভন খুব শান্ত ভাবে বলল
–কেন শুধু শুধু আমার গার্ল ফ্রেন্ডকে নিজের বউ বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ছেড়ে দিন না আমার হাতে।
রিহাব একটু হেসে বলল
–গার্ল ফ্রেন্ড তোমার কিন্তু তোমার থেকে আমার বুকেই নিজেকে বেশি সেফ মনে করে। দেখতে পাচ্ছ তো কত নিশ্চিন্তে আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে।
রিহাবের কথা শুনে ছলছল চোখে ইরা তার দিকে তাকাল। একটু অপ্রস্তুত হয়ে রিহাব কে ছেড়ে দিতেই সে আরও শক্ত করে ইরাকে জড়িয়ে ধরল নিজের সাথে। ইরা তার এরকম কাণ্ডে অবাক হয়ে দেখছে তার দিকে। রিহাব তার দিকে না তাকিয়েই ইরাকে জড়িয়ে ধরেই নিয়ে চলে গেলো। গাড়ির কাছে এসে দরজা খুলে ইরাকে বসিয়ে দিলো। তারপর নিজে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো। ইরা কেদেই যাচ্ছে। সে মেনেই নিতে পারছে না তার সাথে এতো বড় একটা ঘটনা ঘটে যাবে। রিহাব একটু দূরে ফাকা জায়গায় গাড়িটা দাড় করাল। পানির বোতলটা ইরার কাছে এগিয়ে দিলো। ইরা মাথা নিচু করেই বোতলটা হাতে নিয়ে একটু পানি খেলো। তারপর রিহাবের হাতে বোতলটা দিয়ে বলল
–রিহাব ভাইয়া আ…।
ইরার কথা শেষ হওয়ার আগেই রিহাব ধমক দিয়ে বলল
–শাট আপ! এই সব কিছু তোমার নিজেকে বেশি বুদ্ধিমতি ভাবার ফল। কেমন সব ছেলের সাথে তোমার বন্ধুত্ব এখন বুঝতে পারছ তো? নাকি এখনো আমিই খারাপ আর সেই সব বন্ধুই ভালো। অদ্ভুত একটা মেয়ে তুমি। চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর পরেও তোমার মাথায় কিছুই ঢুকে না। অবশ্য তুমি তো ভাবো আমি তোমাকে বিয়ে করার জন্য ব্যস্ত হয়ে আছি। তাই এই সব নাটক করছি। ভুল ভাবছ ইরা। আমি তোমার বন্ধুর মত না যে জোর করে তোমাকে বিয়ে করবো।
ইরা কোন কথা বলল না। মাথা নিচু করে চোখের পানি ফেলছে। রিহাব ইরার অবস্থা বুঝতে পেরে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে বলল
–বি স্ট্রং! এতো ভেঙ্গে পড়ার কিছুই নেই। অনেক কিছুই হতে পারতো আমি সময় মত না পৌঁছালে। কিন্তু হয়নি। ভুলে যাও সবটা। নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা কর।
তার কথা শুনে ইরা চোখ মুছে কাপা কাপা গলায় বলল
–আপনি এই সময় আমার ভার্সিটিতে কি করছিলেন? আর আমাকেই বা কেন ফোন দিয়েছিলেন?
তার কথায় রিহাবও একটু অপ্রস্তুত হয়ে যায়। কোন উত্তর না দিয়েই সামনে তাকিয়ে ড্রাইভ করতে থাকে। বিষয়টা তার কাছেও একটু অন্য রকম লাগছে। এতো সূক্ষ্ম ভাবে সবটা কোন কো-ইন্সিডেন্স হতে পারেনা। সে গভীর চিন্তায় ডুবে গেলো। আর ইরা তাকে মনোযোগ দিয়ে দেখছে। এই মানুষটা আজ ফেরেস্তার মত তাকে বাঁচাতে এসেছে। না থাকলে অনেক কিছুই হতে পারতো। এই মানুষটাকে সে কত অপমান করেছে ওই শোভনের কথায়। ভাবতেই তার মধ্যে অপরাধবধ তৈরি হল। সে খুব শান্ত গলায় বলল
–রিহাব ভাইয়া সরি!
রিহাব ইরার দিকে একবার তাকিয়ে আবার সামনে তাকাল। তারপর গম্ভীর গলায় বলল
–তোমার জায়গায় অন্য কোন মেয়ে থাকলেও আমি একি কাজ করতাম। তুমি এমন স্পেশাল কেউ না।
ইরা চোখ ঘুরিয়ে নিলো। বুঝতে পারল রিহাব তার উপরে রাগ করেছে। করবেই না বা কেন সব দোষ তো তার। সে রিহাব কে অপমান করেছে। রিহাব কি তাকে মাফ করবে?
চলবে………।