#তোমার_নেশায়_আসক্ত
#সিজন:2
#পর্ব:40
#Suraiya_Aayat
পায়ের ব্যাথাটা যেন প্রচন্ড দগদগ করে উঠছে , তা আবার থেমে থেমে পায়ের যন্ত্রণাটাকেও ক্রমশ বাড়িয়ে দিয়েছে ৷ একটা পেইনকিলার নিয়েছে তবে তাতেও যেন ব্যথাটা কিছুতেই কমছে না ৷ এতক্ষণ সানার সাথে গল্প করছিল আরূ, সানাকে বুঝতে দেয়নি যে ওর পায়ে ঠিক কতটা ব্যথা কিন্তু ব্যাথাটা যে মাঝে মাঝে কেমন দবদবিয়ে উঠছে তা একমাত্র আরু নিজেই বুঝতে পারছে ৷ কালকে দিব্যি সুস্থ ছিল আর একদিনের মধ্যে শরীরটা একেবারে যেন ঝিমিয়ে পড়েছে ৷ সকাল থেকে বেশ ভালোই ছিলো তবে কষ্টটা সময়ের সাথে সাথে যেন বেশি হচ্ছে ৷ ইনজেকশন নিলে ভালো হতো ৷
কালকে রাত্রে আরিশ আরূ কে ইনজেকশন দেওয়ার অনেক চেষ্টা করেছিল কিন্তু আরূ কোনমতেই কিছু শোনেনি ৷ ওকে যতবার আরিস ইনজেকশন দেওয়ার কথা বলেছে ততবারই ওর মুখে কেবল একটাই কথা __” আপনি আমাকে ভালোবাসেন না , যদি ভালোবাসতেন তাহলে আমার গায়ে ওভাবে ছূচ ফোটাতে পারেন না ৷”
এভাবে নানান রকম ছলে-বলে-কৌশলে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে নিজেকে ইনজেকশন এর হাত থেকে বাচিয়েঁছে আরু , তবে ইনজেকশনটা নেওয়াটা যে কতটা দরকারি ছিল সেটা এখন বুঝতে পারছে ৷
বালিশে মাথা রেখে চোখ দুটো বন্ধ করলে যদি ঘুম আসে তাহলে ব্যাথার থেকে কিছুটা সময় হলেও রেহায় পাবে , এই ভেবে চোখ বন্ধ করলো ৷ কিন্তু থেমে থেমে কতটা ক্ষতটা দগদগ করে উঠছে , আর প্রচণ্ড ব্যথা পাচ্ছে , ভালো লাগছে না কিছুই ৷ সময়টা যেন একেবারেই কাটতে চাইছে না ভেবে আরু ভাবল যে এখন যদি আরিস এর সাথে দেখা করতে পারে তাহলে হাজারো কষ্টের মধ্যে আরিশ কে দেখে ব্যাথাটা কমবে ৷
কথাটা ভেবেই আরু বিছানা থেকে নামল তারপর গুটি গুটি পায়ে সামনের দিকে এগোতেই পায়ে ব্যথা আহ করে শব্দ করে উঠলো ৷
ব্যাথাটাকে উপেক্ষা করে আরু যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামলো ৷
অনিকা খান ওকে দেখে জিজ্ঞাসা করে উঠলেন
__” কিরে কোথায় যাচ্ছিস তুই এই অবস্হায়?”
__” মামনি আমি একটু ওনার কাছে যাচ্ছি ৷”
__” কেন রে, এই অসময় হঠাৎ আরিশের অফিসে যাচ্ছিস, দরকার কিছু ? সেরকম দরকার থাকলে আরিশকে বাড়ি আসতে বল, ও ঠিক চলে আসবে, তবে তো যাওয়ার দরকার নেই ৷”
__” প্লিজ মা মণি না করো না, দেখো বাড়িতে একা একা বসে আমার খুব বোর লাগছে , উনার সাথে একটু দেখা করে চলে আসবো , প্লিজ না করো না ৷”
আরুর অনেক কাকুতি-মিনতি তে উনি রাজি হলো ৷
__” তবে তোকে আমি একা যেতে দেবো না , সানাকেও নিয়ে যা তোর সঙ্গে ৷”
__”মামনি সানা ঘুমাচ্ছে দেখলাম ওকে একা ছাড়া ঠিক হবে না , তাছাড়া গাড়ি নিয়ে যাব কোন অসুবিধা হবে না ৷ তুমি চিন্তা করোনা আমি পৌঁছে তোমাকে ফোন করে দেব ৷”
__” তবুও আমার কেমন জানি একটা লাগছে , তোকে একা এভাবে যেতে দিতে আমার মনটা কোনভাবেই সাই দিচ্ছে না রে, এমনিতেই তো শরীরটা ভাল না, ঠিকভাবে হাঁটতেও পারচ্ছিস না ৷ আচ্ছা মামনি তোর যাওয়াটা কি খুব দরকার ?”
আরু মুচকি হেসে অনিকা খানের গলাটা জড়িয়ে ধরে উনাকে বললেন
__” সব সময় এতো ভাবো কেন বলতো? আমি একদম ঠিক আছি ,ওনার সাথে দেখা করে বাড়ি ফিরলে দেখবে আমি একদম সুস্থ ৷”
অনিকা খান আরুর কপালে চুমু দিয়ে বললেন
__” সাবধানে যাস ৷”
আরু মুচকি হেসে বলল
__” চিন্তা করো না মামনি বলে ৷”
কথাটা বলে আস্তে আস্তে বেরিয়ে গেল আরু কোন রকমে ৷
ওই সময় জেরিন সিঁড়ি দিয়ে নামছিল , হঠাৎ চোখে পড়ল আরু কোথাও একটা যাচ্ছে ৷ আরূকে দেখে ওর মনের মধ্যে থাকা রাগটা জ্ঝলে উঠলো ৷একমাত্র আরুর জন্যই ও আরিশকে পায়নি, সেই কথাটা যেন এখনও ওকে ভীষণ ভাবে আঘাত করেছে ৷ মাথায় এখন শয়তানি বুদ্ধি ছাড়া আর কোন কিছুই আসছে না ৷ এই মুহূর্তে কিভাবে আরূকে আরিশের জীবন থেকে সরানো যায় সেই কথাটাই ভাবছে জেরিন ৷
তবে এই মুহূর্তে ওর যাওয়াটা কি ঠিক হবে কি সেই কথাগুলোও ভাবছি, আবার এদিকে আরূর ক্ষতি করার কথাটা মাথায় ঘুরছে বারবার ৷ তাই কোন কিছু না ভেবে ও আরূর পিছন পিছন বেরিয়ে গেল তবে বাসার গাড়ি নিলোনা , সিএনজি নিল একটা , যাতে ওর উপরে কোনো সন্দেহের আঙুল না ওঠে ৷ তবে জেরিষ যে আরুর ক্ষতি করার কথা ভাবছে তা যদি আরিশ কখনো জানতে পারে তাহলে আরিশকে পাওয়া তো দূরের কথা, আরিশ কখনো ওর দিকে ঘুরেও তাকাবে না ৷ কথাগুলো ভেবে সিএনজিতে উঠেছে জেরিন ৷
গাড়ির সিটের সাথে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে আরূ, শরীরটা আর মন দুটোই কেমন আনচান আনচান করছে আরিশকে দেখার জন্য ৷ এই মুহূর্তে আরিশকে চোখের সামনে দেখলে যদি অশান্ত মনটা একটু শান্ত হয় তাহলে হয়তো সমস্ত ব্যথা নির্মূল হয়ে যাবে ওর ৷
আরু কেমন একটা ছটফট ছটফট করছে , সকাল থেকেই মনটা ভালো নেই , ঠিক করল যে আরিশের কাছে গিয়ে সেখানে দুপুরে লাঞ্চ করে তারপর ও আর আরিশ একসঙ্গে ওখান থেকে আইসক্রিম পার্লারে যাবে গিয়ে আইস্ক্রিম খাবে ৷ আর ইনজেকশান ও নেবে, আরু এখন বুঝতে পারছে যে রোগ নিয়ে ঢিলেমি দিলে সেটা নেহাতই বোকামির কাজ, একটু কষ্ট সহ্য করে হলেও ইনজেকশানটা তাকে নিতেই হবে ৷ কথাগুলো ভাবতে ভাবতে গাড়ির ড্রাইভারকে বললো
__” মামা একটু জোরে চালাও গাড়িটা ৷”
__” তোমার তো শরীর খারাপ আরূ মা, তোমার এই মুহূর্তে এই অবস্থায় বাড়ি থেকে বেরোনো টা ঠিক হয়নি ৷”
আরু মুচকি হেসে বলল
__” আমি একদম ঠিক আছি মামা , উনার সাথে দেখা করলে সুস্থতাটা দ্বিগুন হয়ে যাবে ৷”
আরূর এমন কথা শুনে উনিও হাসলেন ৷
গাড়ি এসে আরিস এর অফিসের সামনে থামলো ৷ আরূ গাড়ি থেকে নেমে ড্রাইভারকে বাড়ি চলে যেতে,ওনাকে চলে যেতে বললেই উনি চলে গেলেন গাড়ি নিয়ে ৷ আরূ অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে, আজ খুব মন চাইছে আরিশকে একটা গোলাপ দেবে ৷ আরিশ সবসময় বলে ও নাকি নিজের ভালবাসাটাকে প্রকাশ করতে পারে না আর করলেও তা নাকি আরিশের কাছে পৌঁছায় না, তাহলে আজকে ওর ভালবাসাটাকে ব্যাক্ত করার একটা ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা করা যেতেই পারে ৷ কথাগুলো ভেবে আরূ আস্তে আস্তে কোন রকম হেটে সামনে থাকা গোলাপ দোকানটার সামনে গেল, গিয়ে দোকানের ভাইয়াকে বললো,,,
__” ভাইয়া গোলাপ দেন তো ৷”
__” কেমন গোলাপ লাগবে আপা?”
আরু একগাল হেসে বলল,,,,
__” আপনার দোকানের সব থেকে লাল টকটকে গোলাপটা দিন,যেটা হবে আমার উনির মুখে হাসি ফোটানোর একমাত্র কারন ৷ ওটা দেখেই যেন ওনার মনটা ভালো হয়ে যাই আর কখনো যেন বলতে না পারে আমি তাকে ভালোবাসি না, আমার ভালোবাসাটা তার কাছে পৌছায় না ৷ আমি যে তাকে অনেক ভালোবাসি ৷”
ছেলেটা মুচকি হেসে বললো,,,
__” আপা আপনার কতা এহন শুনে মনে হইতেছে আপনে ভাইয়ারে অনেক ভালোবাসেন !”
আরু মুচকি হেসে বলল,,,
__” দেখেছেন ভাইয়া আমার এই সহজ ভাষার কথাটা আপনি বললেন কিন্তু উনি বোঝেন না !”
__” ভাইয়া আপনার লগে মশকরা করে, আপা !”
__” তা জানি ভাইয়া, বাট আজকে গোলাপগুলো দেখলে উনি নিশ্চই খুব খুশি হবে ৷”
ছেলেটা একগুচ্ছ গোলাপ আরুর হাতে দিয়ে বললো,,,
__” আপু এই নেন আপনার গোলাপ, আর এই একটা কার্ড আমার তরফ থেকে, এটা খালি আপনার জন্যে, আপনার কথাগুলো যেন ছুয়ে গেল আপা !”
আরু মুচকি হেসে গোলাপটা নিয়ে আর ছেলেটার কাছ থেকে পেনটা দিয়ে সেই কার্ড টাতে লিখলো ওর. মনের কথা যা ও আরিশকে বলতে চাই ৷”
আরু টাকা টা দিয়ে মুচকি হেসে বলল,,,
__” ভাইয়া আসি, আবার দেখা হবে অন্য কোন দিন !”
__” জ্বি আপু ৷”
গোলাপের তোড়াটা নিয়ে আর মুখে একরাশ হাসি নিয়ে আরিশের অফিসের দিকে ধীরে ধীরে যাচ্ছে কারন দৌড়ে ছুটে যাওয়ার মতো শক্তিটুকু ওর মাঝে নেই, পারলে হয়তো ছুটে যেতো ৷
জেরিন সিএনজি থেকে নেমেছে, মনে মনে ঠিক করে নিয়েছে আজকে আরুকে শেষ করে তারপরে ও বাড়িতে ফিরবে , হয় আরূকে আরিশের জীবন থেকে সরাবে না হলে নিজেই আরিশের জীবন থেকে সরে যাবে , আর যাই হোক নিজেকে আরিশের জীবন থেকে সরাতে পারবে না ভেবে এগিয়ে গেল সামনের দিকে ৷
জেরিন আরুর কাছে যাচ্ছে তার আগে আরূ রাস্তা পার হওয়ার জন্য অনেকটা এগিয়ে গেছে তা দেখে জেরিন ও দ্রুত পায়ে হাঁটতে লাগলো , এতো দ্রুত হাটছে যে আশেপাশের চলমান গাড়িগুলো যেন আজ ওর চোখে পড়ছে না, চোখে আছে হিংস্রতা ৷ তাড়াতাড়ি হাটতে হাটতে আরূর অনেকটাই কাছে চলে এসেছে জেরিন ৷
আরূ রাস্তা পার হতে যাবে হঠাৎ রাস্তার গাড়িগুলোকে ঠিকঠাক দেখে পার হবে তখনই ডানদিকে দেখতেই ওর চোখ গেলো জেরিনের দিকে, জেরিন ওর দিকে দ্রুত পায়ে এগিয়ে আসছে তা আরু দেখতে পাচ্ছে তবে তার থেকেও দ্রুত গতিতে একটা কার জেরিনের দিকে এগিয়ে আসছে তা আরু দেখতে পাচ্ছে ৷ সেই মুহূর্তে জেরিনকে বিপদের হাত থেকে বাঁচাতে আরূ ব্যাথা পায়ে যতটা সম্ভব দৌড়ে গিয়ে জেরিনকে ফুটপাতে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিলো ৷ জেরিনের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবনটা থাকবে কি তার কথা আরূ একটিবারের জন্যও ভাবেনি ৷ জেরিনের জায়গায় আরু অবস্থান করায় গাড়িটা এসে আরুকে ধাক্কা মারতেই মূহুর্তের মধ্যে আরুর শরীরটা ফুটপাথে গিয়ে নেতিয়ে পড়লো ৷ আরূর নিথর দেহটা মাটিতে ধুলোর সাথে মিশে গেছে, মাথা ফেটে রক্ত টুপিয়ে টুপিয়ে চোখের কোনা বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে, সারা শরীর কেটে রক্ত ঝরছে ৷ চারিদিকে মানুষের হইচই এ ফেটে পড়ছে, সবাই ছুটে আসছে আরুর দিকে ৷ লাল গোলাপের ফুলের তোড়াটা ছিটকে পড়ে রয়েছে গাছের নিচে, রক্তের ছিটছিট ফোঁটার ছাপ ও গোলাপে লেগে আছে ৷
আরুর চোখজোড়া বন্ধ হয়ে আসার আগে গোলাপটাকে হাতদিয়ে ছোঁয়ার প্রবল চেষ্টা করলো তবে আজ যেন ওর চেষ্টাটা সম্পূর্ণ ব্যার্থ , ছোঁয়া হলো না সেই গোলাপ,দেওয়া হলো না তা তার প্রিয় মানুষটাকে ৷
________
চারিদিকে পুলিশের ভিড় , পুলিশের গাড়ির এলার্ট মেশিনের আওয়াজটা বাজছে , মানুষজনকে আটকে রাখার ব্যার্থ চেষ্টা করছে পুলিশ, আরুকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে,,,,,,চারিদিক থেকে কিছু কিছু কথা আরিশের কানে আসছে,,,
__”মেয়েটা হয়তো আর বাঁচবে না ৷” ,,,,,,__” আঘাত পাইসে অনেক ৷”
পাশ থেকে কেউ কেউ বলছে,,,
__” আরে দেখলানা মাথা থেকে কেমন গলগল করে রক্ত বের হইতাছিলো !”
আবার কেউ বলে উঠলো,,,
__” কতো অল্প বয়স মেয়েটার ,স্বামীটাও দেখো কীভাবে রাস্তায় বসে আছে পাগলের মতো !”
আবার অন্য একজন বলে উঠলো,,,
__” এটা এই অফিসের মালিক না, মাইয়্য৷ডা এনার বউ, আহারে দেখো কি থেকে কি হয়ে গেলো ৷
সব কথা চারিদিক থেকে আরিশের কানে ভেসে আসছে , তবে কথাগুলোর মানে আজ সব ওর কাছে অজানা ৷
রক্তমাখা গোলাপটা বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে আছে আরিশ, চোখের জলও আজ শুকিয়ে গেছে ৷
দূরে সেই গোলাপের দোকানের ছেলেটা তার পাশে থাকা লোকটাকে বলতে লাগলো,,,,
__” আপাটা এইতো কিছু আগে আমার কাছ থেকে গোলাপ নিয়ে গেল ভাইয়াডারে দিবে তাই,আপাটা কইতাছিল যে সে ভাইয়াডারে অনেক ভালোবাসে কিন্ত ভাইয়া নাকি তার ভালোবাসা বুঝতে পারে না, আমি একটা কার্ড ও দিসিলুম আপুডারে কিছু লেখার জন্য, আপাডা তাতে কিসব লিখলো, আল্লাহ জানে আপাডা তার স্বামীকে আর কহনো কিছু কইতে পারবে কি ! কি থেকে কি হইয়া গেল ৷”
কথাগুলো আরিশের কানে পৌছালো, কথাগুলো শুনে আরিশ উঠে দাঁড়ালো,,,, ছেলেটার দিকে পিছন ঘুরে মুচকি একটা হেসে ফুলের তোড়াটা একহাত দিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে টলমল পায়ে হাটতে লাগলো,,,,,আর গুনগুন করে গাইতে লাগলো,,,
__” ওহে কি করিলে বলো
পাইগো তোমারে
রাখিবো আখিতে আখিতে
ওহে এতো প্রেম আমি
কোথা পাবো না ,
ওহে এতো প্রেম আমি কোথা পাবো নাহ
তোমারে হৃদয়ে রাখিতে !”
#চলবে,,,,,