#তোমার_নেশায়_আসক্ত
#সিজন:2
#পর্ব:39
#Suraiya_Aayat
আরিশ আরূকে জাপটে ধরে ঘুমিয়ে আছে,,,,সূর্যটা মাঝেমাঝে উকি দিচ্ছে , আরু আরিশের হাতটা নিজের থেকে সরিয়ে নিয়ে নামতে গেলেই আরু পায়ে ব্যাথা পেয়ে আহহহ করে শব্দ করে উঠলো ৷ আরিশের ঘুমটা ভেঙে গেল আরুর গলার আওয়াজ শুনে ৷
পায়ে ব্যাথাটা খুব জোরেই পেয়েছে,
আরিশ বিছানা থেকে নেমে আরুর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে ওর পা টা ধরে বলল,,,,
__” আমাকে ডাকা যেতোনা?”
__” আপনি ঘুমাচ্ছিলেন তাই আপনাকে ডাকিনি ৷ চোখের জলটা মুছে বলল ৷
আরিশ ধমক দিয়ে বলল
এত বুঝতে কে বলে তোমাকে ৷ আমি কি বলেছিলাম আমার ঘুমের ডিসটার্ব হবে ৷
আরিশের গলার আওয়াজ শুনে আরু এবার গলা ছেড়ে কান্না করতে শুরূ করে দিলো ৷ আরিশ তো আহাম্মকের মতো তাকিয়ে আছে আরুর দিকে ৷ মেয়েটাকে একটু শান্তি করে বকাও যাইনা, কান্না করে খালি ৷
আরিশ আরুর পাশে বসে আরূকে বুকে জড়িয়ে বলল,,,
তুমি তো যানো যে এখন হাটাচলা করলে পয়ে ব্যাথা হবে ৷ তারপরও কেন এমন পাগলামো করো বলোতো ? এভাবে বেখেয়ালি হলে পয়ের ব্যাথা কি ঠিক হবে উল্টে তো আরো দগদগে ঘা হবে ৷
আরু এবার আরিশের দিকে রাগী চোখে তকিয়ে বলল,,,
কেন আমি ভালো হলে আপনার তো আর আমাকে সেবা করতে হবে না তাইনা, তখন তো আমার থেকে দূরে দূরে থাকবেন ৷ আপনার তো এখন জেরিন এসেছে আমাকে কি আর দরকার আছে নাকি ৷
তা কেন হতে যাবে , আমি তো তোমার সাথেই সবসময় থাকতে চাই ৷ আর রোমান্স সেটা না হয়,,,,
কথাটা বলে আরুর দিকে এগিয়ে আসতে গেলেই আরু ওর হাতটা আরিশের ঠোঁটের ওপর চেপে ধরে বলল,,,
উহু একদম না, বলেছিলাম না আমি যতদিন না সুস্থ হতো তার আগে কিছু না ৷
তুমি বললেই বুঝি আমাকে শুনতে হবে?
অবশ্যই তাই !
আচ্ছা আমিও দেখে নেব 😎
আমি না চাইলে কিছুই হবে না এটা মনে রাখবেন ৷
কথাটা বলে আরু বিছানা ছেড়ে উঠতে গেলেই আরিশ আরুকে হুট করে কোলে তুলে নিয়ে বলল,,,
__” আবরার আরিশ খান চাইলে অনেক কিছুই হয় ৷”
আরু আরিশের নাকটা টেনে বলল,,,
ওয়াশরুম যাবো ৷
আরিশ মুচকি হেসে আরুকে ওয়াশরুমে নিয়ে গেল,
কি হলো আমাকে নামান ৷
উহূ ৷
আরে মহা মুশকিল ৷
আরুর বলার পর আরিশ আরুকে নামালো ৷
আপনি ওয়াশরুম থেকে যান ৷
নাহ ৷
আরু এবার পাশে বালতিতে থাকা একমগ জল নিয়ে আরিশকে ঈশারা করে বলল
যাবেন নাকি এই ঠান্ডা শীতের সকালে বউ এর হাতে কাক ভেজা হবেন কোনটা !
আরিশ এবার মুচকি হেসে বলল
আরে তুমি এতো সিরিয়াসলি নিচ্ছ কেন সানশাইন আমি তো মজা করছীলাম মাত্র ,তুমি এখানে থাকো আমি মাই ৷
কথাটা বলে আরিশ মুখে একটা মিথ্যা হাসি নিয়ে বেরিয়ে গেল ৷ আর যাই হোক এই শীতের দিনে সকাল সকাল কাক ভেজা হতে চাইনা ৷
সকাল9.30,,,,,
আরিশ আরূকে খাইয়ে দিচ্ছে আর নিজেও খাচ্ছে ৷ খেয়ে ও অফিসে যাবে , অফিসে যাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ তৌরি ও ৷
হঠাৎ দরজায় নক পড়তেই আরিশ বলে উঠলো ,,,
কে?
আমি জেরিন ৷
জেরিন নাম শুনে আরিশ কোন পাত্তা দিল না, আবার আরুকে খাওয়াই মনোযোগ দিল ৷ আরু আরিশের মুখের রিয়েকশান দেখে মুচকি িমুচকি হাসছে, ব্যাপারটা নিয়ে ও মজা পাচ্ছে ৷
বেশ কয়েক মিনিট হলো তাও রুম থেকে আরিশের কোন আওয়াজ আসছে না দেখে জেরিন আবার বলল,,,
আমি কি আসবো ভিতরে , একটু কথা ছিলো ৷
আরিশের মধ্যে তাও কোন পরিবর্তন নেই, আরিশ আরূকে বলল
আরুপাখি হা করো, ঔষুধটা খাবে ৷
উনি রূমে আসতে চাইছে আপনি কোন রেসপন্স করছেন না যে ৷
আমি চাইনা ও আমাদের বেডরুমে আসুক,তুমি তো জানো আমার এটা একদম পছন্দ না ৷ আম্মুও মনে হয় এতবার আমার রূমে আসে না যতটা না ও আসার জন্য ব্যাস্ত হয়ে পড়ে ৷তাই ও ওখানেই দাড়িয়ে থাকুক একসময় উত্তর না পেয়ে ঠিক চলে যাবে ৷
আরু বুঝতে পারলো যে এখন যদি জেরিন রুমে আসে তাহলে আরিশ খুব বিরক্ত হবে, আর আরুর এখন যা মুড আরিশকে বিরক্ত করলে খুব একটা মন্দ হয়না , আর ও নিজেও সকাল সকাল একটু বিনোদন পাবে , কথাটা ভেবে আরু একটা দুষ্টু হাসি দিল ৷ তারপর গলা ছেড়ে বলল,,
জেরিন আপূ তুমি রুমে এসো ৷
আরূর কথা শুনে আরিশ দাতে দাত চেপে বললো,,,,
ওকে ডাকার কি দরকার ছিলো, আমি কি বললাম শোনোনাই ?
আরু মুচকি হেসে আরিশের দিকে চোখ টিপ মেরে জেরিনকে বলল,,,
আপু বসো ৷
জেরিন এবার ওদের বেডে বসতে গেলেই আরিশ কড়া গলায় বলে উঠলো
এখানে না সোফাতে বস ৷
জেরিন আরিশের কথা শুনে রেগে গেল বাট রাগটা প্রকাশ করলো না, দাড়িয়ে থেকে বলল,,,
তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে ,তা কি একটু আলাদা বলা যেতে পারে ৷
একা একা কথাটা যেন আরুর মোটেঈ ভালো লাগলো না তাও ও চুপ করে রইলো, ও জানে আরিশ ঠিক ওকে আচ্ছামতো ধোলাই দেবে ৷
একা একা কথা শোনার সময় আমার নেই, বলতে হলে এখানে বল না হলে বলতে হবে না থাক ৷
জেরিন আরিশের কথা শুনে আরিশকে বলল
আরুশি তুমি কি একটু রুম থেকে বাইরে যেতে পরবে? আমি ততক্ষনে আরিশের সাথে কিছু কথা বলতাম ৷
কথাটা শুনে আরুর মেজাজটাই গরম হয়ে গেল, এখন মনে হচ্ছে যেন নিজে খাল কেটে কুমির এনেছে ৷
আরিশ রেগে গিয়ে বলল,,,,
দরকার নাই তোমার কিছু বলার, আমি শুনতে চাইনা ৷
কিন্ত !
আরিশ জেরিনকে আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই আরিশের ফোনে ফোন আসলো তূর্যর থেকে ৷
আরিশ কলটা ধরে বলল,,,,
আমি অফিসে তোর সাথে মিট করছি তুই আর সাহেল চলে আই ৷
ফোনটা কেটে আরুর কপালে একটা চুমু দিয়ে বলল,,,
সাবধানে থেকো আর অযাচিত ভাবে উটকো ঝামেলাগুলো টেনে এনো না, যদি শুনি যে নতুন করে কিছু হয়েছে তাহলে রাতে এসে কিন্ত ultra max pro পানিশমেন্ট হবে বলে দিলাম ৷
আচ্ছা ৷ (মুচকি হেযসে )
আরিশ জেরিনকে সাইড দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো ৷
আরিশ বেরিয়ে যেতেই আরু বলল
আপু উনি চলে গেছেন এবার বেডে বসতে পারো ৷
আরু যে কাটা ঘা এ নুনের ছিটা দিচ্ছে সেটা জেরীন বুঝতে পারছে, রেগে গিয়ে বলল,,,,
ভালো করলে না কাজটা ৷ কি মদুলি করসো আরিশ কে যে তোমার থেকে নড়ে না ও ৷
ভালোবাসা বোঝো? ভালোবাসায় আটকে রেখেছি ওনাকে ৷ আপনি পারেননি তাই আপনি ওনাকে পাননি ৷ সবকিছুকে রাগ, ক্রোধ আর জেদের দৃষ্টিতে না দেখে একটু ভালোবাসর দৃষ্টিতে দেখো, দেখবা জীবনটা অনেক সুন্দর হবে ৷
জেরিন আর দাড়ালোনা রূম থেকে বেরীয়ে গেলো ৷
জেরিন চলে যেতেই আরু একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বেশ কিছুখন বাইরের দিকে তাকিয়ে রইলো ৷ দুরের গাছটার দিকে ওর নজর, সেখানে কতো পাখি বসে আছে, তা দেখৈ আজ ওর ইনুর কথা মনে পড়ে যাচ্ছে, বড্ড মিস করছে ইনুকে , আজ যদি ইনুকে রাখতে পারতো এখানে তাহলে বড্ড ভালো হতো ৷
হাতে ফোনটা তুলে নিয়ে আরিশের ফোনে ফোন দিলো ৷.প্রাস 15 মিনিট হলো আরিশ বেরিয়ে গেছে, ৷ আরুর মনটা যেন বড্ড চকলেট আর ice cream করছে, তাই আরিশকে আনতে বলবে৷
দুইবার রিঙ হতেই আরিশ ফোনটা ধরলো ৷
আমার বউটা বুঝি আমাকে বড্ড চোখে হারাচ্ছে ৷
আজ্ঞে না আমি তো আপনাকে দরকারে ফোন করৈছি ৷
তা কি দরকার শুনি ৷
আগে বলুন আপনি কি ড্রাইভ করছেন? যদি ড্রাইভ করেন তাহলে রাখছি ৷
আরে নাহ বলো , রাস্তায় সালের আর তূর্য র সাথে দেখা , সাহেল ড্রাইভ করছে , তুমি বলো ৷
বলছিলাম কি আপনি বাসায় ফেরার সময় আমার জন্য কি একটু চকলেট আর আইসক্রিম আনতে পারবেন? পিলিজ😁, না করবেন না ৷
আরুর কথা শুনে আরিশ হেসে ফেলল,,,,হো হো করে হেসে বলল,,,,,
আচ্ছা বউ আনবো ৷ আমার আরূপাখি বলেছে তার কথার খেলাফ কিভাবে করি বলো !”.
উম্মাহ৷ মি অভদ্রটা আপনাকে এতো গুলো ঊম্মাহ ৷
কই বাসায় থাকতে তো দিলা না ৷
আরে ভারচুয়াল চুম্মাহ ব্রো, আমি সুস্থ না হওয়া অবদি এভাবেই চলবে😎 ৷
ভালো কপাল করে এসেছে আরিশ খান ৷
কার জামাই দেখতে হবে তো ৷😎
কথাটা শুনে আরিশ আর আরু দুজনেই হেসে ফেলল ৷
চলবে,,,,