তোমার নেশায় আসক্ত ২ পর্ব-৩২ | বাংলা ধারাবাহিক গল্প

0
1688

#তোমার_নেশায়_আসক্ত
#সিজন:2
#পর্ব:32
#Suraiya_Aayat

প্রফেসারের রুমে বসে আছে আরিশ আর ওকে ঘিরে বসে আছে সবাই, এর আগে কেউ এতোবড়ো সুযোগ পাইনি,যদিওবা সবাই আরিশের মতো মেধাবী নয়, এত বড়ো একটা সুযোগ পেয়েও এর আগে কেউ সুযোগটা হাতছাড়া করেছে তা কেউ দেখেনি ৷ আজ সবাই আরিশকে নিয়ে গর্বিত যে এমন একটা প্রতিভাবান ছাত্র ওদের ভার্সিটি তে প্রফেসার হিসাবে যোগ দেবেন, এর আগে NSU তে এতো অল্প বয়সী তরুন প্রফেসার হিসাবে কেউ যোগ দেইনি ৷

__” এবার সিগনেচার করে আমাদের ভার্সিটির একজন হিসাবে যোগদান করো মাই সন ৷”

আরিশ একটা টেডি smile দিয়ে সিগনেচারটা করে দিলো ৷

প্লিন্সিপাল sir উনি আরিশকে বুকে জড়িয়ে নিলেন ৷
__” তুমি যে আমার কথাটা রেখেছো তাতে আমি glad আরিশ ৷ আই হোপ ইউ উইল গিভ ইউর বেস্ট ৷”

__” সিওর sir ৷”

আরিশ রূম থেকে বেরিয়ে এসে গাড়ির চাবিটা আঙলের ফাকে ঘোরাতে লাগলো,,,,,,
__” তুম মীলে দিল খিলে ওর জি নে কো কেয়া চাহিয়ে ৷”(হালকা কন্ঠে গাইতে গাইতে গাড়ির দিকে যেতেই পিছন থেকে একটা মেয়েলি কন্ঠ আরিশের কানে ভেসে আসতেই আরিশ একটা মিচকি হাসি দিল )

__” congrats ভাইয়া,,,,,ওপস এখন তো আপনি আবার কলেজের প্রফেসর কিনা ৷”

আরিশ সামনে ঘুরে বলল,,,,
__” ইয়াহ,আপাতত এটাতেই নিজেকে অভ্যস্ত করতে শিখুন মিস জেরিন ৷”

জেরিন খানিকটা আরিশের এগিয়ে গিয়ে বললো
__” অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে আজ এই পরিনতিতে, মাইট প্লেজার টু মাইসেলফ ফর বিং হেয়ার ৷”

__” মনে হয় যে কখনো এই অপেক্ষার প্রহর শেষ হবে?”

_,” না হওয়ার কি আছে, ছলাকলা করেও তো এমন অনেক কিছুই পাওয়া যাই যেগুলো কখনো পাওয়ার কথায় ছিলো না , তাইনা আরিশ ভাইয়া ৷”(খানিকটা হেসে)

__” এত ফালতু বকে ক্লান্ত হওনা ? আইমিন এখনো আশাটা রাখো যে আরিশ খান তোমার হবে!”

__” ছিনিয়ে নিতে আমি জানি কিন্ত কখনো তার প্রয়োজন পড়বে কি জানি না, বাট দরকার পড়লে অবশ্যই ছিনিয়ে নেবো ৷”

__” Carry on Sweetheart😚 .”(কথাটা বলে আরিশ শিস দিতে দিতে গাড়ি নিয়ে চলে গেলো ৷)

আরিশ চলে যেতেই জেরিন আর নিজেকে আটকে রাখতে পারতে না, ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো জেরিন ৷
বিগত তিন বছর ধরে আরিশকে একই কথা বলে আসছে যে ও আরিশকে ভালোবাসে কিন্ত আরিশ কখনো ওর কথা কানে নেইনি ৷ কারন ওর যে কেবলমাত্র ওর সানসাইনকেই দরকার আর কাউকে না ৷

💓

কক্সবাজার থেকে ফিরে এসে একটু ফ্রেশ হয়েই আরু ঘুমিয়ে পড়েছে ৷ আরিশ ওকে বাড়িতে নিমিয়ে দিয়েই ভার্সিটি তৈ চলে গেছে ৷

বাইরে মৃদু শীতল হাওয়াটা জানলার পর্দা গুলোকে বারবার অগোছালো করে দীচ্ছে ভীষন ৷ পেট থেকে শাড়িটা অলতো করে সরে গেছে আর আরুর সেদিকে কোন খেয়ালই নেই, মেয়েটা বারাবরই খুব ঘুম কাতুরে স্বভাবের ৷ ক্ষনে ক্ষনে হাওয়াটা আরুর সমগ্র শরীর জুড়ে বয়ে যেতেই আরু কম্বলটা শরীরে টেনে নিয়ে শরীরকে ঢেকে ফেলল ৷

আরুর মুখের ওপর পড়ে থাকা চুলটা কে আরো অগোছালো করতে কেউ একজন আঙুল দিয়ে তা আরো মুখের ওপর ছড়িয়ে দিতেই তা সমগ্র মুখজুড়েই বিক্ষিপ্ত ভাবে ছেয়ে গেল ৷ আরূ বিরক্তি ধিয়ে কিছুটা নড়ে উঠতেই সামনে থাকা ব্যাক্তিটার মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো , যেনো আরূকে বিরক্ত করায় সে নিজের অনন্দ খুজে পাই ৷

কিছুখন থেকে এবার তার ঠান্ডা হাতজোঢ়া দিয়ে আরুর মুখে আলতো করে ঠেকাতেই আরূ কেঁপে উঠলো, আচমকাই ওর ঘুমটা ভেঙে গেল ৷

হঠাৎই এমন কিছু হওয়াতে আরু শিউরে উঠলো,হুড়মুড় করে উঠে বসে সামনে তাকাতেই দেখল আরিশ হাতে হাত রেখে দাড়িয়ে আছে ৷
আরিশ কে দেখে যেনো আরু প্রান ফিরে পেলো, তাড়াতাড়ি খরে বিছানা থেকে নেমে আরিশকে শক্ত করে জড়িয়ে করে বড়ো বড়ো নিশ্বাস নিতে লাগলো ৷

আরিশ আরুর মাথায় আলতো করে হাত ছোঁয়াতেই আরু বলে উঠলো
__” আমি অন্য একজনের হাতের ছোঁয়া পেলাম কিন্তু তাকিয়ে দেখলাম যে আপনি , এটা কি করে সম্ভব?”

আরিশ হালকা হেসে বলল
__” আমার ছোঁয়া গুলোও আজকাল তোমার বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে আরুপাখি !”

আরু আরিশের কাছ থেকে সরে আরিসের দিকে তাকিয়ে বলল
__” এমনটা নয় তবে , কেমন এটা অদ্ভুত সেই ছোঁয়া,তা আপনার ভালোবেসে ছুঁয়ে দেবার মত নয় , একেবারে অন্যরকম ৷”

আরিশ আরুর দিকে চোখ টিপ মেরে বলল
__” আমার থেকেও বুঝি আরো বেশি ভালোবাসা আছে সেই ছোয়াই ?”

আরু রাগী চোখে তাকিয়ে বলল
__” একদম মজা করবেন না ঠিক আছে! আমি কী কখনো না বলেছি তা , আর আপনিই তো আমার সব ৷”
(বলে আরু আরিশ কে জরিয়ে ধরল)

আরিশও মুচকি হেসে আরুকে জড়িয়ে ধরলো ৷

💓

সন্ধ্যা 6.30,,,,,

আরিশ laptop নিয়ে কাজ করছে একমনে, রূমে আরু নেই, মেয়েটা সেই কখন রুম থেকে বেরিয়েছে এখনো আসার নাম নেই ৷ আরিস একবার দরজার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে নিলো, তাকিয়ে দেখল আরু এখনো আসছেনা আর তা দেখে আরিশ আবার ল্যাপটপ দেখায় মন দিলো ৷

হঠাৎ কারোর সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা শব্দ পেয়ে আরিশ বুঝতে পারল যে আরু আসছে ৷ মেয়েটা আজকে রুমে আসলে আরিশ বকা দিবে ৷ আরূ পড়াশোনাটা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছে, পড়াশোনায় আর মন নেই , কতদিন আগে বইটা শেষ হাত দিয়ে স্পর্শ করেছে তা ওকে জিজ্ঞাসা করলে তাও বলতে পারবে না আরূ ৷

আরু রুমে ঢুকে হাসিমুখে হাতে থাকা পকোড়ার প্লেটটা আরিশের সামনে ধরলো ৷

আরীসের সামনে ধরতেই আরিশ ভ্রূ কুঁচকে বলে উঠলো
__” কি এটা?”

__” আপনার জন্য গরম গরম পকোড়া বানিয়ে নিয়ে এলাম ৷”

আরিশ এবার ল্যাপটপ বন্ধ করে আরূর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলল
__” তা আপনার পড়াশোনার খবর কি আমাকে একটু জানাবেন? সামনের মাসে তোমার সেমিস্টার,আর তুমি সেখানে পড়াশুনা বাদে কিচেনে রান্না করছো !এগুলো কিন্তু আমি একদম টলারেট করবো না আরুপাখি ৷”

আরূ আরিশের দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচি দিয়ে বলল __” আপনি কি করলেন আর না করলেন তাতে আমার বয়েই গেল, এসব কথা বাদ দিন ৷ পকোড়া গরম গরম আছে এখন খেয়ে নিন না হলে ঠাণ্ডা হয়ে গেলে একদম ভালো লাগবে না ৷”

আরিশ খানিকটা রাগী গলায় বলল
,,” এসব ফাজলামো বাদ দিয়ে 5 মিনিটের মধ্যেই যেন তোমাকে বই নিয়ে পড়তে দেখি আরুপাখি , নাহলে তোমার একদিন কি আমার একদিন ৷”

আরু আরিশের দিকে তাকিয়ে জোরে জোরে বলল,,,
__” আমার দ্বারা এসব হবে না তাই আমার থেকে নেক্সট টাইম আর এসব কিছু আশা করবেন না এটাই বেটার হবে ৷”

আরিশ আগের থেকে আরও দৃঢ় কণ্ঠে বলে উঠলো __” আর মাত্র তিন মিনিট তার মধ্যে যদি তুমি নিজে থেকে পড়তে না বসো তাহলে আমাকে অন্য ব্যবস্থা নিতে হবে ৷”

__” তাহলে কি করবে তুমি ?”(রেগে গিয়ে)

__” সংসার করবো !”

আরিশ এবার রেগে গিয়ে আরূকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানার ওপর ফেলে দিলো,,,,,আরিশের এমন কাজ দেখে আরু অবাক, হঠাৎ এমন কি বলে ফেললল ও যাতে আরিশ রাগ করছে !

__” সংসার করতে গেলে তো আগে একটা বাচ্চার দরকার হয়, চলো একটা বেবি নিই তারপর তুমি জমিয়ে সংসার করো ৷”

কথাটা বলে আরুর দিকে এগোতেই আরূ ফুপিয়ে কেদে উঠলো ৷

__” আপনি এরকম বলছেন কেন হ্যাঁ, আমি কি তা বলেছি ৷”

__” আর ফাজলামো করবে ! ”

__” নাহ ৷” (কাদতে কাদতে)

__” পড়াশোনা করবে?”

__” হ্যাঁ ৷”

কথাটা বলতেই আরিশ মুচকি হেসে আরুর কপালে ভালোবাসার পরশ একে বলল…
__” ভালো করে পড়াশোনা করো, তারপর বেবি হবে সংসার হবে সবই হবে ৷”

__” মিঃঅভদ্র ৷”(চোখ মুছে)

#চলবে,,,,,
.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে