তোমার নেশায় আসক্ত ২ পর্ব-২৭

0
1779

#তোমার_নেশায়_আসক্ত
#সিজন:2
#পর্ব:27
#Suraiya_Aayat

ঘড়িতে সকাল সাড়ে আটটা ,,,,,,
কালকে রাত্রে ঠিকঠাক ঘুম হয়নি ওদের দুজনের কারোরি তাই উঠতে অনেকটা দেরি হয়েছে ৷ শীতের সকাল আর ঠাণ্ডা পরিবেশে বেলা করে ঘুম থেকে উঠার মজাটাই আলাদা ৷

হঠাৎ ঘেউ ঘেউ করে শব্দ হতেই আরুর ভয়ে ঘুমটা ভেঙে গেল ৷
তাড়াতাড়ি হকচকিয়ে ঘুম থেকে উঠে চারিপাশে একবার তাকিয়ে দেখল তবে কিছু দেখতে পেল না তবে বুঝতে পেরেছে যে রুমের মধ্যে কোথাও জোরো রয়েছে ৷
জোরোকে সামনে দেখতে না পেলেও ওর ঘেউ ঘেউ টা শুনে আরু কেপে উঠলো ৷

আরু আরিসকে ডাকতে লাগল,,,,

__” এই যে শুনছেন, দেখুননা কোথায় আপনার এই কুকুরটার রয়েছে আর ঘেউ ঘেউ করে ডাকছে , আমার খুব ভয় লাগছে ৷ কি হলো উঠুন ৷(ভয়ে ভয়ে)

__” কিছু হবে না আরুপাখি , জোরো তোমাকে কিছু বলবেনা, তুমি ঘুমাও ৷ ”
কথাটা বলে আরূর হাতটা টেনে আরূকে নিজের সাথে জড়িয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল আরিশ ৷
আরিশের সংস্পরশে থাকায় ভয়টা কিছুটা কমলেও সম্পূর্ণ যায়নি , ওর কেবলই মনে হচ্ছে এই বুঝি জোরো ওর পায়ে জোরে কামড়ে দিল ৷ কথাটা ভাবতেই পা দুটোকে গুটিয়ে নিল আরূ ৷ সম্পূর্ণ আরিশের মাঝে মিশে আছে ও ৷

হঠাৎ করে আবার জোরোর ঘেউ ঘেউ আওয়াজ শুনতেই আরূ আবার শক্ত করে আরিসকে জড়িয়ে ধরলো ৷

আরূ ভয়ে আরিশের পিঠের অনেক জায়গায় খামছে নিয়েছে ৷ আচড় পেয়ে আরিশ আহ করে উঠলো ৷
__” আরূপাখি ঘুমাচ্ছো না কেন , বললাম তো জোরো কিছুই করবে না ৷”

আরূ দেখল যে আরিশ সম্পূর্ণ ঘুমের ঘোরে আছে আর ব্যাপারটাকে ক্যাজুয়ালি নিচ্ছে , আর ওর কথার কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না তাই আরূ রাগে আর অভিমানে এবার ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো,,,,,

আরুর কান্নার আওয়াজ শুনে আরিশ হকচকিয়ে উঠে বলতে লাগলো,,,,
__” কি হলো আরুপাখি তুমি কাঁদছো কেন?”

আরু কাঁদতে কাঁদতে বলল,,,,,
__” আপনাকে আমি সেই থেকে বলছি যে জোরো আছে , কতবার বললাম , আপনি আমার কথা কানেই নিচ্ছেন না ৷ আপনি তো জানেন যে আমার ওকে খুব ভয় লাগে তাও আপনি আমার কথার কোন গুরুত্ব দিচ্ছেন না ৷”(কাদতে কাদতে)

আরিশ এবার হো হো করে হেসে উঠলো,,,,
__” আরে পাগলি এর জন্য আবার কেউ কাঁদে বল ! আচ্ছা ওয়েট ৷”
বলে আরুর হাতের আঙুলগুলো নিজের হাতের আঙুল দিয়ে মুঠি বদ্ধ করে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল,,,,,,
__” এবার একটা ডিপ ব্রেথ নাও আর চোখ দুটো বন্ধ করো ৷”

আরু পিট পিট করে তাকাতে তাকাতে চোখজোড়া বন্ধ করলো, হঠাৎই কানের কাছে কোন কিছুর ফোসফোস করে আওয়াজ পেতেই আরূ পিছন দিকে তাকিয়ে দেখল ওর গায়ের সাথে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রয়েছে জোরো , লাফিয়ে উঠে শক্ত করে আরিশকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কেঁদে উঠলো ৷

__” আপনি খুব খারাপ , খুব পচা , আপনাকে আমি বললাম যে আমি ভয় পাই তাও আপনিও আমার কাছে এনেছেন ওকে..”

আরিশ আরুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলতে লাগলো,,,,,
__” জোরো আমাদের ফ্যামিলি মেম্বার এর মতোই আরূপাখি , ওকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, ও তোমার কোন ক্ষতি করবে না ৷ ”

আরু একবার লুকিয়ে জোরোর দিকে তাকিয়ে ভয়ে আরু আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো আরিশকে ৷

__” প্লিজ আপনি ওকে যেতে বলুন, আমার খুব ভয় লাগছে ৷প্লিজ ৷”

__” আরে কিছু হবে না বললাম তো ৷”

__” না না আপনি ওকে যেতে বলুন ৷”( কাঁদতে কাঁদতে)

আরিশ একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ইশারা করতেই জোরো বেরিয়ে গেল রুম থেকে…..

__” চোখ খোল জোরো চলে গেছে ৷”

__” নাহ , আমার ভয় লাগছে ৷”

আরিশ আরুর ঘাড় থেকে চুলগুলো সরিয়ে গলায় আলতো করে ঠোঁট ছুইয়ে বলল,,,,,

__” তুমি ওকে খামোখা ভয় পাও ,ওরা পশু ওদেরকে তুমি যতটা ভালবাসবে তার থেকেও বেশি ভালোবাসা ওরা তোমাকে দেবে , আর তুমি ওদেরকে যদি আঘাত করো তাহলে ওরাও তোমাকে আঘাত করবে, তাই তোমাকেও জোরোর সাথে স্বাভাবিক ভাবে মিসতে হবে ৷”

__” I will try….”

__” তা আমি কি এখন কিছু ট্রাই করবো ?”(চোখ মেরে)

__” ধ্যাত ৷” বলে আরিশকে ছাড়িয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো ৷

💓

এয়ারপোর্টে দুজনে বসে আছে গন্তব্য কক্সবাজার ৷ ফ্লাইট এখনো এক ঘন্টা লেট , খুবই বিরক্ত বোধ করছে ওরা, দুজনই বসে বোর হচ্ছে , সারা দিনের ক্লান্তিতে আরু ক্লান্ত, আরিশের কাধে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো…..

এয়ারপোর্টে আসার আগে আরিশ নিজের বাসায় গিয়েছিল সকলের সাথে দেখা করার জন্য ,
সেখানে গিয়ে আরূ এক প্রকার লজ্জার সম্মুখীন হয়েছে সকলের সামনে, সানার জন্য ৷

__” আম্মু কিছু খেতে দাও ক্ষুধা লাগছে ৷”(আরিশ বাড়িতে ঢুকে)

আরিশের মা বেরিয়ে এসে দেখল আরিশ আর আরু দাঁড়িয়ে রয়েছে , আর আরূর মুখে লজ্জার ছাপ স্পষ্ট, তবে আরিশ চিরকালের মতো চিল ৷

ফট করে সানা এসে বলল,,,,
__” কাল রাতের পর তুই এত টায়ার্ড হয়ে গেলি যে সকাল হতে না হতেই ক্ষুধা লাগছে , কই আমিতো তোকে এত সকালে কখনো খেতে দেখি নি আগে ৷”

কথাটা শুনে যেন আরুর চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল, কোথায় কি বলতে হয় সেটা যে মেয়েটা কবে শিখবে সেটা এখন আরূ মনে মনে ভাবছে, তবে সানা মজা করেই বলেছে ৷

__”সানা কি হচ্ছে কি ৷ আরু মা নতুন বউ ও কেন রান্না করবে ! যতদিন আমি বেঁচে আছি তোরা দুজন কিচেনেই যাবি না , আমি করে দেবো সব ৷”

__” আরে আম্মু আমি তো মজা করে বললাম, আর ও তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড , এটুকু মজা তো করতেই পারি ,তার ওপর এখন আমার ভাবি সে ৷”

__” আম্মু 11.30টাই আমাদের ফ্লাইট, লাগেজ গাড়িতে আছে, তুমি তাড়াতাড়ি ব্রেকফাসট টা দাও , আমি ততখন আব্বুর সাথে দেখা করে আসি ৷”

__” আচ্ছা যা আমি ততখন আমার মেয়েটার সাথে কথা বলি ৷”

আরিশ আরুর দিকে চোখ মেরে মুচকি হেসে চলে গেল ৷

অনিকা খান আরুর কাছে যেতেই আরু ওনাকে সালাম করতে গেলেই উনি আরুকে থামিয়ে দিয়ে বললো ,,,,,
__” এসব কি করছিস, আর আমি কি বলেছি আমাকে সালাম করতে, সন্তানদের স্থান সবসময় মায়ের বুকে হয় ৷ ” কথটা বলে উনি ওকে জড়িয়ে ধরলেন ৷

__” জানিস আরু মা যখন তুই বিয়ের জন্য না করে দিয়েছিলিস তখন আমরা সবাই খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম, আর বারবার এটা মনে হচ্ছিল যেন আমাদের দুঃস্বপ্নটা যেন সত্যি না হয়ে যাই, তবে আল্লাহ চেয়েছেন যে তোরা দুজন দুজনের তাই আজ একে অপরের সঙ্গে ৷”

আরু মুচকি হেসে বলল,,,,
__” আর সেই জন্যই তো তুমি আমার মা ৷”

অনিকা খান চোখের জল মুছে আরূর কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিল ৷

__”তুই আর সানা ততখন কথা বল আমি এক্ষুনি তাদের ব্রেকফাস্ট দিচ্ছি ৷ আর কক্সবাজারে পৗছে গিয়ে তোর আম্মুকে একটা কল করিস ও বেচারি কালকে থেকে কেদে কেদে একাকার ৷”

ওর মা এর কতটা শুনে আরূর বুকের ভিতর হাহাকার শুরু হয়ে গেল ৷ এই প্রথম এমন কিছু হচ্ছে যে ওকে নিজের ফ্যামিলি ছেড়ে এতটা দূরে আসতে হয়েছে, এর আগে আরু কখনও ওর আম্মুকে ছাড়া সময় কাটায় নি, এমনকি একমুহুর্তও ভাবেনি ৷ আগে যখন ওনারা আরূর বিয়ের কথা বলতো তখন আরূ খুর রেগে যেত বিয়ের কথা শুনে আর চেঁচামেচি করে সারা বাড়ি মাথায় করতো, তারপর ওর আম্মু ওকে শান্ত করতে না পেরে কেঁদে দিতেন আর বলতেন,,,,,

__” আমরা কি আর সাধে বিয়ের কথা বলি ! এটাই যে মেয়েদের জীবনের নিয়তি ৷”

কথায় বলে মেয়েদের নিজের ঘর বলে কিছু হয়না কথাটা যেন আজকে বড্ড বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করছে আরূ , কারণ কুড়িটা বছর যেটা নিজের বাড়ি বলে ভেবে এসেছে আর আজ এখন সেটাকে পর করে চলে এসেছে অন্য একটা বাসায় ৷ অন্য একজনের সঙ্গে, অন্যের বাড়িতে নিজের জীবনটাকে পার করতে হবে , ঐগুলোই ভাবছে ৷ যদিওবা আর অন্য সকলের মত আরিশের ফ্যামিলি নয় ৷আরুকে আরিশের মা নিজের মেয়ের মতোই ভালোবাসেন , তবুও কোথাও যেন একটা মাতৃস্নেহের হাহাকার থেকেই যায় ৷

আর দেরি না করে আরু ওর আম্মুর কাছে যেই ফোন করতে যাবে তখনই সানা ওর হাতটা ধরে টেনে এনে সোফায় বসালো ৷

আরূ সানার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,
__” কিরে হঠাৎ করে এভাবে টেনে আনলি কেন?”

__” বস , তোর সাথে অনেক কথা আছে ৷”

আরু অবাক হয়ে বলল,,,,
___” কি কথা ?”

সানা চোখের চশমাটা চোখ থেকে নাকের ডগায় নামিয়ে নিয়ে আরুর দিকে দুষ্টু হেসে বলল,,,
__” কাল রাতে ঠিক কি কি বললি,,, আই মিন আমার ভাইয়া যা রোমান্টিক, তা কোন পর্যায় থেকে শুরু করলি?”

আরূ সানার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে বলল,,, __” __”এসমস্ত কি কথা সানা ! আর তুই যথেষ্ট শান্তশিষ্ট ছিলি হঠাৎ করে এত চেঞ্জ কি ব্যাপার বলতো?”

__” কোন ব্যাপার নেই রে এমনি romantic সিন তো তাই জানতে ইচ্ছা করছে খুব ৷”

__” একটা থাবড় দিবো বলেদিলাম ৷”

__” আচ্ছা বেশ , বাসরের কথা বলতে না হয় লজ্জা পাচ্ছিস বাট এটা তো বলবি যে ভাইয়া তোকে হঠাৎ এমন কি বলল যে তুই পাঁচ মিনিটের মধ্যে বিয়ের জন্য রাজি হয়ে গেলি ?”

আরু একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলল,,,,
__” উনি যা বলেছেন তাতে আমার আর সাহস হয়নি উনাকে প্রত্যাখ্যান করার ৷”

সানা এবারের উত্তেজনার সাথে আরূর দিকে তাকিয়ে বলল,,,,
__” কি হয়েছে বল বল….”

সেদিন….

কাজী সাহেব সহ সবাইকে রুম থেকে বাইরে বার করে দিয়ে আরিশ রুমের দরজাটা দিতেই আরু আরিশের দিকে রাগী চোখে তাকালো ৷

আরূ রেগে গিয়ে বললো,,,,,
__” সব কিছুকে কেন মজার ছলে নেন?আর সব সময় আপনার মজা কি না করলেই না ৷ বিয়ের আসরে আমাকে মজার পাত্র না করলে কি আপনার শান্তি নাই ?”

আরিশ আরুর কোন কথা শুনলোনা , কেবল আরুর দিকে এগোচ্ছে , মুখে কোন কথা নেই ওর ৷ চোখে ওর আরুর প্রতি এক ধরনের অদ্ভুত নেশা রয়েছে আরূকে সারা জীবনের মতো নিজের করে পাওয়ার নেশা, আর আগে এমনটা কখনও দেখেনি আরূ ৷ আরূ খানিকটা ভয় পেয়ে গেল , ও নিজেও ভয়ে পিছাতে পিছাতে বিছানার উপর পড়ে গেল ৷

আরিস আরূর দুই পাশে আর হাত দিয়ে আটকে রেখে আরূর দিকে ঝুঁকে গিয়ে বলল,,,,

__” বলো ভালোবাসো কি না?”

__” কক্ষনো না ৷ আপনাকে আমি ভালোবাসিনা আর আমি কখনো বিয়ে করবো আপনাকে ৷ ভালোবাসা জিনিসটা আপনার জন্য নয়, আপনি ভালোবাসার মর্যাদা দিতে জানেন না ৷ মন বলে আপনার কিছু নেই ৷”

__” কবুল কবুল কবুল , আমি তিনবার বলেছি তুমি তিনবার বলো ৷ হাতে বেশি সময় নেই, দু মিনিট অলরেডি নষ্ট হয়ে গেছে , আর তিন মিনিট আছে ৷”

আরু এবার আরিশ কে ধাক্কা দিয়ে ঠাস করে একটা চড় মারলো,, ,
__” কি মনে করেছেন কি আপনি নিজেকে, আপনি যা বলবেন তাই হবে , আমার অনুভূতির কোনো মূল্য নেই ? আপনি যখন বলবেন তখনই আমাকে তাই করতে হবে নাকি , আপনাকে বিয়ে তো দূর আপনাকে এই মুহূর্তে আমি সহ্য করতে পারছিনা , আমার জীবন থেকে চলে যান আপনি আর কখনো যেন না দেখতে হয় আপনাকে ৷”
কথাটা বলতে বলতে আরূর চোখে জল চলে এলো , না বলতে চাইলেও বলে ফেলল ৷

আরিশ এবার মুচকি হেসে বলল,,,,
__” আমি তোমার জীবন থেকে চলে গেলে তুমি খুশি তো !”

__” বললাম তো খুশি, এক কথা কতবার বলতে হয় আপনাকে ? আপনার মুখটা যেন আমাকে কখনো না দেখতে হয় ৷ বূঝেছেন?”

আরিশ আরূর কাছে গিয়ে আরূর গালে আলতো করে হাত রেখে বলল ,,,,
__” ইনশাআল্লাহ তুমি আর আমাকে কখনো দেখতে পাবে না ৷ তোমার চোখের সামনে থেকে কেন সকলের চোখের সামনে থেকে দূরে চলে যাবো আমি ৷”

কথাটি শুনতেই আরূর বুকের ভিতর মোচর দিয়ে উঠল , হঠাৎ এরকম কথা বলছো কেন আরিশ ?

কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,,,,
__” কি করবেন আপনি?”

আরিশ মুচকি হেসে বলল,,,,
__” তুমি ছিলে আমার জীবনের শেষ চাওয়া যেটা আমি আল্লার কাছে সবসময় চাইতাম , তোমাকে যখন পেলাম না তখন আর,,,,!”

কথাটা বলেই আরিশ থেমে গেল,,,,
__” কি আর !”

__” এমন কিছুই করবো যাতে সারা পৃথিবীর কেউ আর আমাকে না দেখতে পাই , ভালো থেকো আরুপাখি ৷”

কথাটা বলে আরিশ পিছন ঘুরে নিজের মনে মনে একটা ডেভিল smile দিল ৷

আরূ আরিশের হাতটা ধরে বলল ,,,,,
__” ইমোশোনাল ব্ল্যাকমেইল করছেন?”

__” যেটা ভাববে সেটাই ৷”

__” দেখুন আপনি প্লিজ এমন কিছু করবে না ৷”

__” আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি আরূপাখি ৷”

__” দেখুন আমি যা বলেছি রাগের মাথায় বলেছি ৷”

__” সরি এই কথাটা রাখতে পারলাম না ৷”

__”আমি আপনাকে বিয়ে করবো !”

আরিশ একটা টেডি smile দিয়ে বলল,,,,,
__” তুমি আমার fillings নিয়ে মজা করছো এখন?”

__” আমি আপনার মতো ছলনা জানি না ৷”

__” তাহলে আমাকে ছুয়ে বলো যে আমাকে বিয়ে করবে !”

__” আপনাকে ছুয়ে বললাম ৷”

আরিশ এবার হো হো করে হেসে উঠে বলল,,,,
__” কথা দিয়েছো বিয়ে তো করতেই হবে ৷ আর আমি এতখন মজা করছিলাম ৷ সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল বাঁকাতে হয় সেটাই করলাম আরকি ৷ আর তুমি যদি বিয়ে না করতে তাহলে সবার সামনে দিয়ে তোমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করতাম , সেটুকু সাহস আবরার আরিস খানের আছে ৷ তোমাকে যখন ভালোবেসেছি তখন শেষ অব্দি নিজের করেই ছাড়বো এটাই জানি শুধু, ৷”

আরিসের কথা শুনে আরূ তো অবাক , তার মানে এতক্ষণ ধরে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে ওকে রাজি করিয়েছে আরিশ ৷ ইচ্ছা করছে এখন আরিশ নামক মানুষ থেকে সম্পূর্ণ লন্ডভন্ড করে দিতে ৷

আরিশ আরুর নাকটা টেনে দিয়ে বলল ,,,,
__” 5 মিনিট আর 15 সেকেন্ড বাকি আরূপাখি, আশা করি কথার খেলাপ হলে কাজটা ভাল হবেনা, তখন আমাকে ইউনিক স্টাইলেই বিয়েটা করতে হবে , তাই তাড়াতাড়ি কবুল বলে বিয়েটা করে ফেলো ৷ আর তুমি না গুড গার্ল !”

কথাটা বলে আরিশ রূম থেকে বেরিয়ে গেলো ৷

আরুর মুখ থেকে সমস্ত কথা শুনে সানা তো অবাক এর চরম সীমায় ৷

__” আমার ভাইয়া কতো বুদ্ধি মাথায় নিয়ে ঘোরে তা আজ জানতে পারলাম ৷ ”

আরূ একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলল,,,,
__” ওনাকে আমি কবে যে ঠিকভাবে বুঝতে পারবো আমি জানি না ৷ উনি হলেন মিঃ অভদ্র ৷”

সানা মুখ টিপে হেসে বলল,,,, সে তুই যাই বলিস না কেন, ভাইয়া খুব রোমান্টিক বল !”

__” রোমান্টিক না ছাই , নিরামিষ উনি , সব কিছু জোর খাটিয়ে না হয় কোন না কোন কথার ছলে আমাকে ঠিক মানিয়ে নেন ,আর আমিও বাধ্য মেয়ের মতো রাজি হয়ে যাই ৷”

আরিশ নীচে নামতে নামতে আরু নিরামিষ কথাটা বলতেই আরিশের কানে গেলো তা ৷ একটা ডেভিল smile দিয়ে বলল,,,,,,

__” এখন দেখছি একটু আমিষ হতেই হই😉৷”

💓

এক ঘন্টা ধরে ফ্ল্যাইটের লেট হওয়ার কারনে ওরা বসে ছিল বোর হয়ে ৷ অবশেষে বারোটার সময় প্লেনে উঠে কক্সবাজার গেল ৷

উদ্দেশ্য: মধুচন্দ্রিমা ৷😉

চলবে,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে