#তোমার_নেশায়_আসক্ত
#part:16
#Suraiya_Aayat
আরিশ আর আরূ দুজনেই একসঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে ওখানে সময় কাটালো ৷ আরুশি নোনা জল আর বালিতে মাখামাখি হয়েগেছে , কিন্তু আজ যেন ও সেখান থেকে হোটেলে ফিরে যাবে না বলে প্ল্যান করেছে , আরিশের এখন ঠিক তেমনটাই মনে হচ্ছে ৷
আরিশ: আরুপাখি অনেক হয়েছে,এখন আর ভিজতে হবে না চলো আমরা ফিরে যাই ৷
আরু: প্লিজ আরেকটু থাকি না !আমার খুব ভালো লাগছে , আপনিও থাকুন, কত ইনজয় হচ্ছে বলুন তো৷
আরিশ: আর এক মিনিটও নয় , আমরা এক্ষুনি হোটেলে ফিরে যাব ৷
আরু জলের মধ্যে বসে আছে আর উঠবে না বলেই ঠিক করেছে ৷
আরিশ: আরূপাখি ওঠো ৷
আরুশি গাল ফুলিয়ে: আমি উঠবো না ৷
আরিশ : তুমি শিওর উঠবে না!
আরোশী: হ্যাঁ উঠব না, আমি আরো কিছুক্ষণ থাকবো ভললাম না আমার খুব ভালো লাগছে এখানে ৷
আরোশীর কোনরকম উঠার প্ল্যান না দেখে আরিশ আরুকে এইবার কোলে তুলে নিল, নিয়ে হাটা দিল হোটেলের দিকে ৷
আরুশি আরিসের কোল থেকে নামার জন্য ছটফট করছে , আরু জোরে জোরে চেঁচাচ্ছে৷
আরু:আমাকে প্লিজ ছাড়ুন আমি ওখানে যাব, দেখুন সবাই কত মজা করছে ৷
আরিশ: একদম না আরুপাখি , এরকম পাগলামো করছো কেন ?আমরা আবার বিকালে আসবো তো!
আরিশ আর আরুর কান্ড দেখে সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে আছে আর মাঝে মাঝে কেউ কেউ আবার ওদের দেখে মুচকি মুচকি হাসছে ৷
আরূশি :দেখুন সবাই আমাদের দিকে কেমনভাবে তাকিয়ে আছে আর দেখে কিভাবে হাসছে ৷প্লিজ আমাকে নামান ৷
আরিস :কে কি ভাববে আই ডোন্ট কেয়ার…..
|
|❤
|
এদিকে,,,,,
আরাভ: দেখুন আঙ্কেল আন্টি আমি জানিনা আমি এখন যে কথাটা বলব আপনারা তাতে সম্মতি প্রকাশ করবেন কিনা, তবুও এটা আপনাদেরকে জানানো আমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে ,বাকিটুকু আপনাদের ওপর ,আপনারা কি করবেন ৷ আপনাদের মতের অমতে আমি কোন কিছুই করবো না ৷
আফজাল সাহেব :কি বলবে আরাভ বাবা ?আমরাও তো শোনার জন্য অপেক্ষা করে আছি আর তাছাড়া তুমি যথেষ্ট বুদ্ধিমান একটা ছেলে,আর অ্যাডাল্ট একজন , আশা করি ঠিক ভুল বিবেচনা করার ক্ষমতা তোমার আছে তাই আমি মনে করি তুমি যা সিদ্ধান্ত নেবে ভুল কিছু নেবেনা ৷
আরিশের মা: বলো কি বলছিলে তুমি বাবা ৷
আরাভ: দেখুন আমি বেশি ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা বলতে একদমই পছন্দ করিনা তাই সোজাসাপ্টা এই কথাটা বলতে চাই যে আমি সানা কে বিয়ে করতে চাই৷
আরাভের মুখ থেকে কথাটা শুনে আফজাল সাহেব আর কনিকা খান দুজন পরস্পরের দিকে তাকালেন তারপরে হেসে ফেললেন দুজনেই ৷ ওনাদের হাসতে দেখে আরাভ একটু চমকে গেল , মনে মনে ভাবতে লাগল তাহলে তারা কি ওকে ভুল বুঝল ?
আফজাল সাহেব উঠে আরাভ কে জরিয়ে ধরল তারপর বললেন : আমি জানতাম তুমি এরকম একটা কিছু বলবে , আর তোমার হাতে আমার মেয়েটাকে দিয়ে আমি নিশ্চিন্ত থাকব সেটা আর বলতে বাকি রাখেনা ৷
আরিসের মা :তোমার আংকেলকে আমি এর আগে কথাটা একবার বলেছিলাম কিন্তু উনি তখন বলেছিলেন তুমি হয়তো রাজি হবে না সেই কারণে আর বলে উঠেনি ৷ কিন্তু এখন তুমি যখন বলেছ কথাটা দুই পরিবারের সম্মতি নিয়ে এগোতেই পারি৷
আফজাল সাহেব: আমাদের তরফ থেকে কোন অমত নেই আর আশাকরি আরিস বা আরু মামনির ও থাকবে না ৷তাহলে আর দেরি করে লাভ কি পাঠিয়ে দাও তোমার বাবা-মাকে আমাদের বাড়িতে ৷
আরাভ: আচ্ছা আঙ্কেল, তবে যতদিন না আরিশ আর ভাবী ফিরছে ততদিন কোন কাজই হবে না, আমি ওদের ছাড়া কিছু করতে চাই না ৷
আফজাল সাহেব : সে তো অবশ্যই , তবে সানার এই বিয়েতে মত আছে কি তাও তো আমাদেরকে জানতে হবে তাইনা, না হলে মেয়েটার সাথে খারাপ হবে ৷
আরাভ: আমি ওকে মানিয়ে নেব আন্কেল ,আপনি চিন্তা করবেন না বলে আরও টুকটাক কিছু কথা বলে বেরিয়ে গেল আরাভ ৷
আফজাল সাহেব আর আরিশের মা দুজনেই এখন বেশ নিশ্চিন্ত ৷
আফজাল সাহেব : আরূ মামনি আসতেই আরিশের জীবনটা কেমন উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে, আর আমার ছেলেটার মধ্যে ও অনেক পরিবর্তন এসেছে, এবার মেয়েটার দায়িত্ব আরাভ নিলে তাহলে তো আমি চিন্তা মুক্ত….
|
|❤
|
লাঞ্চ করে এসে আরূ আর একমূহূর্তও দেরী করেনি ঘুমাতে কারণ আরিশ আরুকে বলেছে ও যদি না ঘুমায় তো বিকালে ঘুরতে নিয়ে যাবে না , সেই ভয়ে ভয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছে আরুশি ৷
ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে আরিশ আর উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ দেখতে ব্যাস্ত ৷ হাতের জ্বলন্ত সিগারেটটা মাঝে মাঝে টেনে ধোঁয়া উড়িয়ে দিচ্ছে বাতাসে আর চারিদিকে কর্কশ একটা গন্ধ ছড়িয়ে যাচ্ছে৷
সিগারেটের ধোঁয়া আরুর নাকে পৌঁছতেই আরূ ঘুমের মধ্যে থেকেই কাঁশতে শুরু করল,,,, আরিশ পিছন ফিরে একবার বাঁকা একটা হাসি দিল তারপর আবার আগের মতোই তাকালো সমুদ্রের দিকে ৷
টেবিলের উপরে থাকা মোবাইল ফোনটা বেজে উঠতেই রুমে গেল, গিয়ে আরুশির থুতনিতে থাকা তিলটার দিকে প্রথমে নজর যেতেই আলতো করে তিলটা স্পর্শ করে ফোনটা নিয়ে ব্যালকনিতে গেল ৷
অচেনা : স্যার আপনি যা যা করতে বলেছিলেন তাই তাই করেছি ৷
আরিশ: ওনাকে পেয়েছো?
অচেনা : উনি যেখানে থাকেন সেখানকার এড্রেসটা আমরা জানতে পেরেছি তবে এখন উনি আগের জায়গায় থাকেন না , সেখান থেকে অন্য জায়গায় চলে এসেছিলেন এটা জানতে পারলাম ৷
আরিশ: ইমিডিয়েট কাজটা করো, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হয় ৷ ওনার ঠিকানাটা কোথায়?
অচেনা : স্যার ওনার বাসা হল সিলেটে , কিন্তু বহু বছর আগে উনি ধানমন্ডিতে থাকতেন তারপর ওখান থেকেই সিলেটে চলে আসেন ৷
আরিশ: ওকে , পুরোটা খোঁজখবর নিয়ে আমাকে জানাবে….
সিগারেটটা আরেকবার টান দিয়ে বাইরে ফেলে দিল আরিস ৷ এতদিন শুধু শুনেছে যে সিগারেট নাকি একটা পুরুষের ব্যথা নির্মূল করতে অনেকটা কার্যকরী একটা উপাদান কিন্তু তা আজকে কতটা কার্যকর সেটা ও বুঝতে পারছে ৷ এক প্রকার ব্যথা আছে ওর বুকে,ভালোবাসার মানুষটাকে না পাওয়ার কষ্ট, আরুশির ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় কষ্ট ৷ আরিশ এগুলো ভেবেই কষ্ট পাচ্ছিল যে কবে সেই দিন আসবে যেদিন আরূশি ভালোবেসে ওকে গ্রহণ করে নেবে, আর সেদিনের অপেক্ষায়ই আছে আরিশ ৷
|
|❤
|
বিচের ধার দিয়ে হেঁটে চলেছে আরূ আর আরিশ ৷ আর কিছুক্ষণ পরেই সূর্য অস্ত যাবে ৷ বিচের ধারে মানুষজনের কোলাহলে পূর্ণ, সকলেই তাদের ভালোবাসার মানুষ এবং পরিবারের সঙ্গে একান্তে ভালো সময় কাটানোর জন্য এখানে এসেছেন….
দুজনে পাশাপাশি হেঁটে চলেছে তবে আজকে আরিশ নিস্তব্ধ , আর তার সঙ্গে আরূ ও ৷ আরশিকে আজকে দেখে খুবই অবাক লাগছে আরুর ৷ কারন ও যেই আরিশকে চেনে সেই আরিশ আর এখনকার আরিশের মধ্যে হাজারো তফাৎ ৷ এই আরিশকে দেখলে কেউ কখনোই বলবে না যে ইনি হলেন সেই মানুষ যিনি আরূশির উপর রাগ ,অভিমান ,ভালোবাসা সমস্ত কিছুই দেখায় ৷ এই সমস্ত কথাগুলো আরুশি ভাবছে আর ভাবার চেষ্টা করছে যে এমন কি হলো যার জন্য আরিশের এমন নিস্তব্ধতা৷ সকালে তো বেশ ভালই ছিল তাহলে কি দুপুরে কিছু হয়েছে তার জন্য আরিশের মুডটা অফ ৷
আরোশী না পেরে বলে উঠলো : আপনার কি কোন কারনে মুড অফ ?
আরিশ সামনের দিকে শান্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল: নাহহহ ৷
আরুশি: ওহহ ৷
তারপর দুজনের মধ্যে আবার নীরবতা ৷ অন্যদিনের আরিশ আর এখনকার আরিশ এর মধ্যে কোন মিল খুজে পাচ্ছে না আরুশি , ও একটু না হলেও অনেকটাঔই পুরানো আরিশটাকে বড্ড মিস করছে, যে বারবার ওর উপর অধিকার ফলাত আরুশির না চাইতেও ৷ আরূশির এখন কেন জানিনা খুব ইচ্ছা হচ্ছে আরিশের উপর অধিকার ফলানোর ৷
আরোশী হঠাৎ জোরে চেঁচিয়ে : ওই দেখুন না ওখানে কত সুন্দর সুন্দর জুয়েলারি বিক্রি হচ্ছে আমিও কিনবো৷
আরিশ : আমি কি বারণ করেছি তোমাকে ৷
আরুশি: না তা করেননি তবে আপনি চয়েজ করে দেবেন বলে আরূ আরিশকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ওর হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেল….
সেখানে গিয়ে আরুশি ইচ্ছা করেই নিজে কিছু পছন্দ করছে না বারবার আরিসের সামনে এটা-ওটা ধরছে, আর যেটাই ধরেছে আরিশ সেটাতেই মাথা নাড়াচ্ছে,ওর মনোযোগ যে কেন অন্যকিছুতে সেটাই বুঝতে পারছি না আরূ….
শেষমেষ আরিশের এরকম ব্যবহার দেখে আরূশির রাগ হলো আর তার সাথে একটু খারাপও লাগলো , রাগ করে জুয়েলারি গুলো আর কিনল না আরূ….
কিছুক্ষণ বিচের ধারে কাটিয়ে সন্ধ্যা হতেই ওরা হোটেলে ফিরে গেল ৷
|
|❤
|
রাত 10:30 ,,,,,,
ডিনার করে এসে ওরা অনেকক্ষণ আগেই হোটেলে ফিরে এসেছে, আরুশি ঘরের মধ্যে থাকলেও আরিশ ব্যালকনিতেই ছিল এতোক্ষণ ধরে…..
আরুশি না পেরে আরিশের কাছে গিয়ে আরিসের পাশে দাঁড়ালো তারপর নির্লিপ্ত ভাবে আরিশের কাছে আবদার করল…..
আরূ: চলুন না এখন একটু বিচের ধারে যাই ,আমার এখন যেতে ইচ্ছা করছে ৷
আরিশ অবাক চোখে আরুশির দিকে তাকিয়ে, তারপরে শান্ত দৃষ্টিতেই বলল : অনেক রাত হয়েছে আরুপাখি, ঘুমিয়ে পড়ো ৷
আরু: আমি যখন একবার বলেছি যাবো তখন যাব, আপনি না যেতে চাইলে বলেন আমি একা একাই যাচ্ছি ৷(ইচ্ছা করে কথাটা বলল যেন আরিশ ওকে নিয়ে যেতে বাধ্য হয় ৷)
আরিশ : পাগলামো করো না আরুপাখি, ঘুমিয়ে পড়ো৷
আরূ: ও বুঝতে পেরেছি আপনি নিয়ে যাবেন না তাই তো ! আচ্ছা আমি একাই যাচ্ছি , বলে বেরিয়ে যেতে গেলেই আরিশ আরুশির হাত ধরে ফেলল ৷
আরিশ : এ হাত যখন একবার ধরেছি তখন কখনো একা ছাড়বো না বলেও আরিশ ও আরুর সাথে সি বিচের ধারে গেল ৷
জোছনা রাত ৷ চারিদিকে জনমানব শূন্য ৷ আকাশের উজ্জ্বল চাঁদও যেন দীর্ঘ বছর ধরে প্রতীক্ষারত৷
জলের মাঝখানে দুজন দুজনের হাতেটা ধরে রেখে দাঁড়িয়ে আছে, চাঁদের উজ্জলতা সারা শরীরে মাখামাখি….
নীরবতা কাটিয়ে আরিশ বলে উঠলো: একটা কবিতা শুনবে আরূপাখি?
আরুশি সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে : বলুন ৷
আরুশি (মনে মনে): আমি তো আপনার কথা শোনার জন্যই , অপেক্ষায় রত৷
আরিশ:
একবার ডাক দিয়ে দেখো আমি কতোটা কাঙাল,
কতো হুলুস্থূল অনটন আজম্ন ভেতরে আমার ৷
তুমি ডাক দিলে
নষ্ঠ কষ্ঠ সব নিমেষেই ঝেড়ে মুছে
শব্দের অধিক দ্রুত গতিতে পৌঁছাব
পরিণত প্রণয়ের উৎসমূল ছোঁব
পথে এতটুকুও দেরী করবোনা ৷
তুমি ডাক দিলে
সীমাহীন খাঁ খাঁ নিয়ে মরুদ্দ্যান হব,
তুমি রাজি হলে
যুগল আহলাদে এক মনোরম আশ্রম বানাবো৷
একবার আমন্ত্রণ পেলে
সব কিছু ফেলে
তোমার উদ্দেশে দেবো উজাড় উড়াল,
অভয়ারণ্য হবে কথা দিলে
লোকালয়ে থাকবো না আর
আমরন পাখি হয়ে যাব,– খাবো মৌনতা তোমার ৷
কবিতাটা শেষ হতেই আরিশ এর চোখের কোনে জল জমে এল ৷
এরপর আরুশি আরিশের দিকে ফিরে আরিসের কাধের উপর নিজের হাত দুটোকে রেখে পা দুটোকে সামান্য উঁচু করে আরিশের ঠোঁট দুটোকে স্পর্শ করল৷ আরিশ হয়ত এই মুহূর্তে আরুশির থেকে এতটাও ভালোবাসা আশা করেনি, পরম আবেশে আরুশিকে নিজের সঙ্গে আরও জড়িয়ে ধরল আরিশ ৷
আরোশী আরিশের থেকে অনেকটাই বেটে ৷নিজের মাথাটাকে আরিশের বুকে ঠেকাতে পারলেও আরিশ এর ঠোটদুটোকে স্পর্শ করা ওর পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব নয় তাই একটু ভালোবাসা দেওয়ার জন্য এতোটুকু করেছে আরুশি ৷ সমুদ্রের জল গুলোও পরম আবেশে ভালবাসার দুটি মানুষকে ক্রমাগত ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে ৷
আরোশী আরিশকে ছেড়ে বলল: আপনার কবিতার কাতরোক্তি আমার হৃদয় স্পর্শী….
আমি যদি আপনাকে আহবান জানাই এ রাতে আমাকে একান্তই নিজের করে পাওয়ার আপনি কি আমাকে ফিরিয়ে দেবেন ? একটু ভালবাসবেন আমায় ? মুড়িয়ে নেবেন কি আমাকে আপনার ভালোবাসার চাদরে ৷
আরিশ যেন এবার অবাক এর চূড়ান্ত পর্যায়ে , আরুশির থেকে এত কিছু এত তাড়াতাড়ি আশা করে নি ও ৷ তাহলে কি ওর ভালোবাসা আরূর হৃদয়কে স্পর্শ করতে পেরেছে!
আরিশ : দেখো আরুপাখি তুমি হয়তো আবেগের বশে সমস্তটা বলছ ৷ যেদিন ভালোবেসে একান্তে আমাকে গ্রহণ করবে সেদিন তোমাকে আমি ফিরিয়ে দেব না৷
আরু: এটা আবেগ নাকি ভালোবাসা সেটা আমি জানি না তবে আমি খুব অদ্ভুত এক অনুভূতিতে জর্জরিত ৷
আরুশি: বলুন ভালোবাসবেন না আমায়!
আরিশ: ভালোবেসেই নিজের সাথে জড়িয়ে রাখতে চেয়েছি তোমায় , তো কি করে আমি তোমাকে ফিরিয়ে দেব তা আমার জানা নেই ৷
আরিশ এবার আরুশিকে কোলে তুলে নিয়ে হোটেলের দিকে এগিয় গেল ৷
চলবে,,,,,,
#তোমার_নেশায়_আসক্ত
#part:17
#Suraiya_Aayat
বিচ থেকে আরিশ আরূকে কোলে করে হোটেলে নিয়ে আসলো…..
রুমের ভিতর এসে আরূকে কোলে করে বিছানায় শুইয়ে দিল আরিশ ৷ ঘরের আলোটা নিভিয়ে দিয়ে ব্যালকনির দিকে থাকা পর্দা গুলো সরিয়ে দিল, চাঁদের আলোটা ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে সারা ঘরকে আলোকিত করে দিচ্ছে, যেখানে পূর্ণতা পাবে একটা নতুন ভালোবাসার আর সৃষ্টি হবে একটা ভালোবাসার রাত সেখানে কৃত্তিম জিনিস কে উপেক্ষা করে আসল আর প্রকৃত জিনিসটার মধ্যে দিয়েই ভালোবাসাটা শুরু করছে ওরা দুজনে ৷
সাদা পরদা সরাতেই এক ঝাক আলো এসে আরূর মুখে পড়ল ৷ আরূকে এখন দেখতে অনেক আকর্ষণীয় লাগছে , আরিশ ক্রমাগত আরূর নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে, এই মুহূর্তে হয়তো নিজেকে আর আটকে রাখা সম্ভব নয় কোনভাবেই ৷
আরিশ ধীরপায়ে আরূর দিকে এগোচ্ছে আর ওর বুকের হার্ট বিট যেন ততই বেড়ে চলেছে ক্রমশ৷
আরিশ আরুর কাছে এসে আরুর গালে আলতো করে স্পর্শ করে কপালে একটা ভালোবাসার পরশ একে দিল….
আরিশের ঠোটের প্রথম স্পর্শে আরূ একটু কেঁপে উঠল ৷ এক অদ্ভুত অনুভূতি বয়ে যাচ্ছে সারা শরীর জুড়ে , ক্রমশ শিহরিত হচ্ছে ও ….
আরিশ নেশা ভরা কন্ঠে বলল : অনেক ভালোবাসি আরুপাখি তোমাকে , নিজের থেকেও বেশি ৷ সারা জীবন তোমার সাথে তোমাকে ভালোবেসে কাটাতে চাই, বার্ধক্যও যেন কখনো আমাদের ভালবাসাকে স্পর্শ না করতে পারে….
আরুর মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না, এক অদ্ভুত অনুভূতি যা হয়তো ডায়েরির পাতাতেও লিখলে তা ব্যক্ত করা সম্ভব নয়…
আরিশ এবার আরূর ঠোঁট দুটোকে দখল করে নিল আর আরুও পরম আবেশে আরিশের শার্টের কলারটা খামচে ধরল, গলার কাছে নখ দিয়ে অনেক আচড় ও দিয়েছে….
আরিশ আস্তে আস্তে নিজের শরীরের সমস্ত ভার আরুর উপর ছেড়ে দিতে লাগল ৷ ওদের ভালোবাসায় মায়াবী রাত টাও যেন সঙ্গ দিচ্ছে বেশ ৷
রাত যতো গভীর হচ্ছে দুজনের ভালোবাসাও যেন আরও বেশী গভীর হচ্ছে ৷ দুজন দুজনকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছে ক্রমাগত….
(Just ইমাজিন করেন ৷ বেশী কিছু ভাবতে যাবেন না😑)
❤
সকালবেলা সূর্যের আলো ফুটতেই তা আরুশির মুখে পড়তেই আরুর ঘুম ভেঙে গেল ৷ আজকে আর ওর সূর্যোদয় দেখা হলো না….
ঘুম ভাঙতেই আরিশ এর দিকে চোখ গেল আরুর৷ কপালে চুল গুলো ছড়িয়ে পড়ছে , মুখের খোঁচা খোঁচা দাড়ি গুলো অদ্ভুত সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছে আর তার মাঝে আকর্ষণীয় হল আরিশের ঠোঁট দুটো যাতে যে কেউ আসক্ত হতে বাধ্য….
নিজের দিকে তাকিয়ে দেখতেই খানিকটা লজ্জা পেলো আরূ, হঠাৎই কিছু মনে হলো তারপর নিজে থেকেই আরিশ এর কপালের চুলগুলো সরিয়ে ভালবাসার একটা পরশে একে দিল , তারপর উঠতে গেলেই আরিশ ওর হাত ধরে আবার ওকে বিছানায় ফেলে দিলে….
আরিশ আরুর ওপর উঠে : তুমি কি ভেবেছো তুমি আমাকে একা আদর করে চলে যাবে , আমি তোমাকে তোমার আদর ফেরত দেবো না?
আরোশী থতমত খেয়ে গেল , ও ভেবেছিলো আরিশ হয়তো ঘুমাচ্ছে কিন্তু আরিশ যে জেগে আছে সেটা বুঝতে পারলে কখনই এমন করত না ও ৷ এখন নিজের বোকামির জন্যই নিজেকে দুটো চড় থাপ্পড় দিতে ইচ্ছা করছে আরুর ৷
আরু: আপনি এসব কি বলছেন! আমি এসব কিছুই করিনি ৷ আর আপনি হয়তো ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছিলেন ৷
আরিশ: ওহহ আচ্ছা তাই নাকি, তাহলে তো ঘুমের ঘোরে তুমি আমার ভার্জিনিটিটাও নষ্ট করে দিয়েছে আরুপাখি ৷ ই বাবা , এবার আমার কি হবে!
আরূ আরিশ কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়ল আর ভাবছে এ ছেলে বলে কি!
আরোশী: আমি কখন কি করলাম আপনিই তো ! বলে চুপ হয়ে গেল ৷
আরিশ : হে আমিই তো ,,,,,, কি বল, বাকিটুকু তারপরে ৷
আরু: কিছু না , আমাকে উঠতে দিন, আমি এখন ফ্রেশ হব ৷
আরিস :: তার আগে আমার পেনডিং কিসটা তো আমাকে ঠিকঠাকভাবে পেমেন্ট করতে হবে তাই না! তুমি একাই দেবে আমি তা ফিরিয়ে দেব না এটা কেমন খারাপ হয় না বলো ৷ বলে আরুর দিকে এগিয়ে যেতেই হঠাৎ ফোন বেজে উঠল আরিশের ৷
আরিশ : সত্যিই সবাই আমাকে প্রচন্ড হিংসে করে, কেউ চায় না আমার ভালো ৷ সবাই রোমান্স এ বাধা দেবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে , এত সকালে আবার কে?
আরুশি : এত সকাল নয় এখন প্রায় সাড়ে নটা বাজে, আপনি তাড়াতাড়ি ফোনটা ধরুন অনেকক্ষণ ধরে বেজেই চলেছে ৷
আরিশ এবার ফোনটা ধরতে গেলেই আরূ তাড়াতাড়ি করে ওয়াশ রুমের দিকে ছুটল আরিশের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে ৷
আরিশ : এটা কিন্তু ঠিক না আরুপাখি , পালিয়ে যাবে কোথায় ? ফিরে তো আমার কাছেই আসতে হবে সারাজীবন ৷ ফোনটা হাতে নিতেই দেখল সানা ফোন করেছে…..
আরিস : এই মিষ্টির দোকানের ছানা সকাল সকাল আমার রোমান্সের বারোটা তুমি বাজালে কেন?
সানা : ভাইয়া কতবার বলেছি না তুই এই নামে আমাকে ডাকবি না ৷
আরিস : তুই যা তোকে তাই বলেছি ৷
সানা মুখ ভ্যাংচিয়ে বললো:: তা কেমন চলছে তোদের হানিমুন মানে প্রথম রাত ভাইয়া!
আরিশ :: কানের নিচে একটা দেব, ছোটবোন হয়ৈ ভাইয়াকে একথা জিজ্ঞাসা করিস লজ্জা করে না৷
সানা :: মান সম্মান ,লজ্জা-শরম অনেক আগেই বিসর্জন দিয়েছে তাই আর এ সমস্ত বলতে কোনো দ্বিধা নেই ৷ আচ্ছা সেসব কথা ছাড় , তোকে একটা কথা বলার জন্য ফোনটা করলাম ৷
আরিস: বল কি বলবি ৷
সানা : আম্মু বলল যে আরুর খেয়াল রাখার জন্য৷
আরিস : তুই এই জন্য আমার রোমান্সের ডিস্টার্ব করলি?
সানা উচ্চস্বরে হেসে : সরি ভাইয়া আমি ভাবলাম তুই হয়তো রুমেন্স করছিস আর আমি কি করে তা সহ্য করি বল ওই জন্য ডিস্টার্ব করার জন্য ফোনটা করলাম ৷আচ্ছা আমার ডিস্টার্ব করা শেষ এখন রাখি৷
আরিশ সানাকে আরো কিছু বলতে যাবে তার আগে সানা ফোন কেটে দিল…..
,❤
শাওয়ার এ নিচে দাঁড়িয়ে আছে আর আরুশি , ক্রমশ শরীরটা কাঁপছে ৷ এত বড় একটা কাজ করে ফেলল সেটা ও ভাবতে পারছেনা ৷ অনবরত চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে, আজ ওর বাবার কারণেই ওর এই অবস্থা ৷ আরিশ কে ও ঠকাচ্ছে ৷
আরোশী মনে মনে : যে মানুষটা আমাকে এতো ভালোবাসে , আমার জন্য এতো ভাবে আজ আমি তাকেই ঠকাচ্ছি ৷ আল্লাহ হয়তো এ পাপের কোন ক্ষমা করবেন না আমাকে , বল হাউ হাউ করে কাঁদতে লাগল ৷
❤
2 দিন আগের কথা,,,,,,,
আরিশের উপর রাগ করে আরূ যখন কলেজের ওখানে দাঁড়িয়ে ছিল তখন ওর মা র থেকে ফোন আসতেই ছুটে গেল ওর বাবার কাছে ৷
আরুশি ছুটে ওর বাবার সামনে গিয়ে ওর বাবাকে বলতে লাগলো: বাবা তোমার এই অবস্থা কেমন করে হল ? কি হয়েছে তোমার?
আরমান সাহেব কাতর স্বরে : তুই তো জানিস মা আমার শরীরটা সব সময় খুব একটা ভালো থাকে না, আর তারপরে তুই যে আমাদের সবাইকে এত বড় একটা ধোকা দিবি তা আমি মেনে নিতে পারিনি৷ এই টেনশনে টেনশনে শরীরটাও খারাপ হয়ে পড়েছে৷
আরুশি যেন নিজেকে ক্ষমা করতে পারছে না, আর আজকে ওর বাবার এ অবস্থার জন্য নিজেকেই দায়ী করছে ও ৷
বিরাট এক অনুশোচনা কাজ করছে ওর , তার উপরে আরিশের উপরে রাগ রয়েছে যা যা হলো সেই কারণে৷
হঠাৎ একটা সময় আরমান সাহেব সবাইকে রুম থেকে বের করে দিলেন তার নাকি আরূর সঙ্গে একান্তে কোন কথা আছে সেই কারণে৷ এটা শুনে আরুও বেশ অবাক হয়েছিল তবে ওর বাবা কি বলবে তারই অপেক্ষায় ছিল ও ৷
আরমান সাহেব: মা রে আমার এই বিপদের সময় তুই আমাকে সাহায্য কর না হলে ওরা যে আমাকে ছাড়বেনা , আমাকে জেলে পাঠাবে আর তোর ভাইয়ের ক্যারিয়ার নষ্ট করে দেবে ৷
আরুশি : বাপি তুমি হঠাৎ এই সমস্ত কথা কেনো বলছ?
আরমান সাহেব : বলছি তার কারণ হলো অভ্রের বাবা-মা বাড়ি এসে বলে গেছেন যে অভ্রের সঙ্গে তোর বিয়েটা না হয় যদি তাহলে উনারা আমাকে জেলে দেবেন ৷ অভ্রর তো প্রায় পাগল পাগল অবস্থা৷ ছেলেটার অবস্থা নাকি দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে, এটা ওর বাবা-মা কি করে সহ্য করবে তুই বল৷ছেলেটা বড্ড ভালোবাসে তোকে ৷
কথাটা শুনতেই আরূশির বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠলো….
আরুশি কাঁপা কাঁপা স্বরে বলল :: আমাকে তাহলে এখন কি করতে হবে বাপি?
আরমান সাহেব:: আরিসের থেকে মুক্তি পেতে হবে তোকে ৷ এটাই একমাত্র পথ ৷
কথাটা শুনতেই আরুর চোখের কোনে জল চলে এলো, বেশিদিন আরিশ-এর সঙ্গে আলাপ পরিচয় না হলেও এই কদিনে বেশ অদ্ভুত এক অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছিল আরূর আরিশের জন্য ৷
আরমান সাহেব আবার বলতে শুরু করলেন: তুই আরিশের সঙ্গে এমন ব্যবহার করবি যাতে আরিশ ভাবে যে তুই ওকে ভালোবাসিস, তারপরে তুই ওকে জানাবি যে তুই এতদিন ওর সঙ্গে ভালোবাসার নাটক করেছিস কিন্তু ওকে কখনো ভালবাসিসনি তাহলে দেখবি আরিশ নিজেই তোকে ছেড়ে দেবে ৷ এত বড় বেইমানি ও কখনোই সহ্য করবে না ৷
আরু খুব অবাক হয়েছিল ওর বাবার সেদিনের কথা শুনে , ওর বাবার ব্যবহার ছিল সম্পূর্ণ অন্য রকম যেটা উনি আরুশির সঙ্গে সচরাচর করেন না , তবুও বাবা বলে বড্ড বেশি মায়ায় পড়ে গিয়েছিল আরূ ৷ ওনার কথাগুলো বিশ্বাস করে ছিল এবং রাজি হয়ে যায়৷
আরুর বাবা: দেখ মা তুই আমার অবস্থাটা বোঝার চেষ্টা কর ৷
সেদিন না চাইতেও মনের বিরুদ্ধে গিয়ে আরুশিকে ওর বাবার কথা মেনে নিতে হয়েছিল , আর এতক্ষণ যা করছে সব ওর বাবার কথা অনুযায়ী করেছে ৷ও
ভাবেনি আরিশের মায়ায় পড়ে আবেগমিশ্রিত হয়ে ভালোবাসায় মেতে উঠবে ৷ তবে আরিশের প্রতি ওর ভালবাসাটা যেন আরো বেড়েই চলেছে দিন দিন ৷ কি করে ও অভ্রকে বিয়ে করবে এটা ও জানেনা৷
আরু ওইসব কথা ভাবছিল হঠাৎই আরিশ এর কন্ঠ শুনতে পেল ৷
আরিশ: আরূপাখি আর কতক্ষণ !খিদে পেয়েছে তো,ব্রেকফাস্ট করতে যাব ৷
আরুশি : আসছি ৷
ওরা এইখানে আর একদিন থাকবে, তারপর কলকাতা টা সম্পূর্ণ ঘুরে ঘুরে দেখবে এরকমই একটা প্ল্যান করল ৷ এই মুহূর্তে বেশিদিন থাকাটা ঠিক হবে না তাহলে আরিশ এর এক্সাম এর ক্ষতি হবে….
|
|❤
|
দুপুরবেলা সমুদ্রে স্নান করতে এসেছে দুজন ৷ চারিদিকের লোকজন ৷ দু’জনে খুব মজা করছে, এই ওর দিকে জল ছুড়ে মারছে , এ ওকে জলে ফেলে দিচ্ছে এরকমই চলছে ৷
ক্যামেরাম্যান: এই যে দাদা ছবি তুলবেন নাকি?
আরিশ : তুলুন ভাইয়া ৷
এই বলে দুজনে নানা ধরনের পোজ দিয়ে ছবি তুলতে লাগল ৷ সবকটা ছবিতেই ওদের ভালোবাসাটাই ফুটে উঠেছে ৷ কোনটাই আরিশ আরুর দিকে জল ছুঁড়ে দিচ্ছে , কোনটাই আরু আরিশের দিকে রাগি ফেস নিয়ে তাকিয়ে আছে , আবার কোনটাই আরিশ পিছন থেকে জড়িয়ে আছে আরুকে , এই ধরনের নানান পোজ দিয়ে ছবি তুলল ….
প্রচুর ছবি তুলে স্নান করে ওরা আবার হোটেলে ফিরে গেল , বিকেলে আবার ঘুরতে আসবে….
|
|❤
|
বিকালে ঘুরতে এসে দুজনে সমুদ্রের জলে পা ভিজিয়েছে, চটপটি খেয়েছে, টুকটাক কিছু জিনিস কিনেছে সকলের জন্য , আর একসঙ্গে সূর্যাস্তটা উপভোগ করেছে….
❤
সন্ধ্যাবেলা দুজনে বিচের ধারে বসে আছে, প্রচণ্ড হাওয়া বইছে, এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ ৷
আরোশী: আচ্ছা এখানে কলকাতায় ঘোরার আর দেখার মত কি কি জায়গা আছে ৷
আরিশ হেসে বলল: এখানে প্রচুর জায়গায় আছে যা তুমি দু’তিনদিন ও ঘুরে শেষ করতে পারবো না ৷ এটাকে বলা হয় ❤” দা সিটি অফ জয় “❤ ৷এখানে চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল , ওয়াটার পার্ক, নিকো পার্ক,ইকো পার্ক , সাইন্স সিটি , বিরলা তারামন্ডল সহ আরো প্রচুর জায়গা আছে ৷
(ফ্রীতে কলকাতার একটা ছোটখাটো প্রমোট করে দিলাম 😋😜৷)
আরু: তবে আমার এখান থেকে যেতে ইচ্ছে করছে না , বড্ড বেশি ভালো লেগেছে জায়গাটাকে ৷
আরুপাখি: পরে আবার আসব আরুপাখি যখন আমাদের বেবি হবে ৷
ওরা বসে আছে হঠাৎ আরুশির ফোনে ফোন এল৷
আরুশি : সানা ফোন করেছে ৷
আরিশ : আমাকেও সকালে ফোন করে রোমান্সের বারোটা বাজিয়েছে ৷
আরুশি ফোনটা ধরতেই সানা কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলো : তোরা ওখানে মজা করছিস আর এখানে জানিস আমার কি অবস্থা?
আরোশী উত্তেজিত হয়ে: তোর আবার কি হলো?
সানা : জানিস বাবা আমাকে না বলে আরাভ ভাইয়ার সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক করেছে , আমি ওনার সাথে বিয়ে করব না ৷ তোরা তাড়াতাড়ি বাড়ি আয় , আবার পরে না হয় ঘুরতে যাস , আগে আমার বিয়েটা ভেঙে দে ৷
আরুশি: কিন্তু আরাভ ভাইয়াতো যথেষ্ট ভাল একজন ছেলে , কেন তুই ওনাকে পছন্দ করিস না ৷
সানা : আমি সেসব কিছু এখন বলতে পারছিনা, তোরা বাড়ি আয় এসে তাড়াতাড়ি বিয়েটায় ভাঙচি দে না হলে আমি কিন্তু বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবো বলে দিলাম ৷ এমনিতেই উনি কালকে আমাকে ওনার বাড়িতে যেতে বলেছেন, ওনার আম্মূ নাকি আসতে বলেছেন ৷ আমি যাব না ৷ তোরা তাড়াতাড়ি আই ৷
বলে ফোনটা রেখে দিল ৷
আরিশ: কি হয়েছে?
আরু: সানা ইমিডিয়েট বাড়ি যেতে বলল ৷ এরপর আরূ আরিশকে সবটা বলল ৷
আরিশ: তাহলে আমাদের কালকেই ফিরতে হবে আরুপাখি ৷
কথাটা শুনতেই আরুশির মন খারাপ হয়ে গেল ৷
আরু: আগে সানার ব্যাপারটা দেখা উচিত , ঘুরতে তো পরেও আসা যাবে ৷
❤
সমস্ত জামাকাপড় প্যাকিং করে আরিশ আর আরুশি ব্যালকনিতে বসে আছে আর বাইরে সমুদ্রের ঢেউ দেখছে ৷
কথার মাঝখানে হঠাৎ আরিশ বলে উঠলো,,,,
আরিস: তোমার কখনো ইচ্ছা হয় না আরুপাখি এটা জানতে যে তোমার বাবা কেন তোমাকে পছন্দ করেন না , কেন সবসময় খারাপ ব্যবহার করেন তোমার সাথে?
কথাটা শুনতেই আরুর বুকের ভিতর ধক করে উঠল, তাহলে কি আরিশ সব জেনে গেছে?
আরুশি কাঁপা কাঁপা গলায় : আপনি হঠাৎ এই সমস্ত কথা বলছেন! না মানে আপনি তো আর এসব বলেন না কখনোই তাই জিজ্ঞাসা করলাম আরকি ৷
আরিশ :আসলে তা না , আমি এটাই ভাবি যে কেন উনি তোমার সাথে এমন করেন ৷
এটা আমার কাছে অনেক বড় একটা প্রশ্ন আমিও উত্তরটা জানতে চাই আরু মনে মনে বলল ৷আপনার সঙ্গে আমিও জানতে চাই , তবে আমি আপনার সঙ্গে যা যা করছি তার জন্য আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন ৷
আরিশ: তবে যা খুশি হয়ে যাক আরুপাখি এটা মনে রেখো যে কখনো আমার থেকে তোমাকে আলাদা হতে দেবো না সে যা কিছূই হয়ে যাক ৷সবসময় নিজের সাথেই আগলে রাখব ৷
চলব,,,,,
কলকাতা তে আরো অনেক জায়গা আছে,সব কটার নাম নেই,আমি সাহায্য করতে পারি,আমি কলকাতাতেই থাকি।😃😃