তোমার জন্য সাইকো
লেখক: নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_১৫
মুন রোদের ডাকে তাড়াতাড়ি আসে ।
রোদ মুনকে দেখে মুনের কাছে গিয়ে ওর চুলের মুঠি ধরে বলে।
রোদ: কোথায় গিয়েছিলে জান আবার কি অন্য কাউকে বিয়ে করতে গিয়েছিলে?
রোদের চুল ধরাতে মুনের খুব লাগছে
মুন: রোদ আমার খুব লাগছে প্লিজ ছাড়ুন ( নিজেকে ছাড়াতে)
রোদ মুনকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে
রোদ: খুব লাগছে তাইনা খুব কষ্ট হচ্ছে এর থেকে বেশী কষ্ট আমি পেঁয়েছি তার বেলায়।
মুন কিছু বললো না মুন জানে এখন রোদকে হাজার বললে ও রোদ শুনবে না তার থেকে রাগ কুমলে বলবে।
রোদ: এখন চুপ করে আছো কেনো কিছু বলো
আরও জোড়ে চেপে ধরে।
মুন: রোদ আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন
রোদ: একদম দরদ দেখাতে আসবে না তোমার মত মেয়েদের আমার খুব ভালো করে চিনা আছে তোমরা শুধু ছেলেদের ব্যাবহার করতে পারো।
বলে ধাক্কা দিল।
রোদ: যাও আমার জন্য কফি নিয়ে এসো।
মুন কিছু না বলে কফি আনতে যায়।
রোদ: এটা তো সবে শুরু
মুন কিচেনে গিয়ে দেখে মামনি কাজ করছে মুন পিছন থেকে ডাক দেয়
মুন: মামনি
রাইমা চৌধুরী কিছু না বলে নিজের কাজ করছিলেন
তখনই মুন রাইমা চৌধুরী কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে
মুন: মামনি তুমি তো আমার উপর রাগ করো না আম্মু কে হারিয়ে আরেক আম্মু পাইছি এই আম্মু কে আমি হারাতে চাইনা
রাইমা:….
মুন: মামনি কিছু তো বলো এভাবে কথা না বলে থাকলে আমি তো মরে যাবো
রাইমা চৌধুরী এবার মুনের দিকে ফিরে বলে
রাইমা: আম্মু ভাবটিস তাই তো এত বরো ধোঁকা দিলি
মুন: মামনি বিশ্বাস করো আমি কিছু ইচ্ছা করে করিনি তুমি তো আমায় বিশ্বাস করো সব ওই
তখনই রোদের ডাক পড়ে
রাইমা: থাক আমাকে কিছু বলতে হবে না আগে রোদ কে মানা
মুন: হুম
মুন কফি নিয়ে রোদের কাছে যায়।
রোদ তো রেগে আগুন
রোদ: এতো দেরি লাগে
মুন তাকিয়ে দেখে রোদ রেডী হয়ে আছে।
মুন কিছু না বলে কফি টা দিতে গেলো রোদ কফিটা নিয়ে মুনের হাতে মারে।
মুন ব্যাথায় কুকড়ে উঠে
মুন: আআআআহহহহ
রোদ মুনের মুখ চেপে ধরলো
রোদ : একদম নাটক করবি না তোর নাটক দেখার টাইম আমার নেই । এবার থেকে দেরি করলে এর থেকে ও বেশি শাস্তি পেতে হবে ।
বলে রোদ চলে যায় ।
মুন ওখানে বসে কাদতে থাকে ।
মুন: আর কত কষ্ট দিতে পারো আমি ও দেখবি যতো খুশি কষ্ট দাও সব সহ্য করবো কিন্ত তোমার রাগ ভাঙিয়ে ছাড়বো।
মুন হাত টা ভালো করে উড়না দিয়ে দেখে নিচে যায় ।
রোদ বসে খাচ্ছে মুন যেই চেয়ার নিয়ে বসলো
রোদ উঠে গেলো
নিহাল চৌধুরী: কি রে উঠলো কেনো?
রোদ: যার তার সাথে বসে আমি খাইনা
রাইমা চৌধুরী: কিছু তো খেয়ে যা
রোদ: খাওয়া শেষ
নিহাল : আজ কিন্ত তোমাদের বিয়ের অনুষ্ঠান একটু পর লোক আসবে বাড়ি সাজাতে আজ কোনো ঝামেলা করো না সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান
রোদ: হুম
বলে চলে গেলো।
রাইমা চৌধুরী ও কিছু না বলে উঠে গেলো।
নিহাল চৌধুরী কিছুক্ষণ বসে থেকে মুনকে বললো
নিহাল: পাপাই বলটিস সেই পাপাই কে এতো ছোটো করলি
মুন: পাপাই
নিহাল চৌধুরী উঠে গেলেন
মুন সেখান থেকে নিজের রুমে গিয়ে বাবা মার ছবি নিয়ে কাদতে লাগলেন
মুন: আব্বু আম্মু আজ যে আমার পাপাই ও আমাকে ভুল বুজলো আমি যে এটা মেনে নিতে পারছি। তোমরা থাকলে কত ভালো হতে তোমরা তো আমাকে কখনো ভুল বুঝতে না কেনো আমায় একা ফেলে চলে গেলো কেনো আজ নিজেকে খুব একা মনে হচ্ছে পারছি না আর এভাবে থাকতে ।
কিছুক্ষণ বাদে
বাড়ি সাজাতে লোক চলে আসলো।
খুব সুন্দর করে বাড়িটা সাজাচ্ছে ।
মুন নিজের ঘরে এখন ও আছে।
রাইমা চৌধুরী মুনের ঘরে এসে দেখে মুন ওর আম্মু আব্বুর ছবি নিয়ে শুয়ে আছে।
রাইমা চৌধুরী মুনের পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন
মুন জেগে উঠলো
মুন: মামনি তুমি
রাইমা: কেনো এমন টা করতে গিলি বলতো ওমন না করলে তো কেউ তোকে এভাবে কষ্ট দিত না
মুন এবার কেদে দিলো।
মুন: মামনি বিশ্বাস করো আমি ওকে বিয়ে করতে চাইনি ও আমাকে ভয় দেখিয়েছিল যে তোমাদের মেরে ফেলবে ( কেদে কেদে)
আমি চাইনি আব্বু আম্মু মতো তোমাদের ও হারাতে খুব ভালোবাসি তোমাদের ।
রাইমা চৌধুরী মুনকে বুকে জড়িয়ে নিলেন
রাইমা: আমার মুন বলছিল যে তুই আমাদের ধোঁকা দিতে পারিস না । আমাকে মাপ করে দে আমি তোকে ভুল বুঝছি
মুন: ছি মামনি তুমি কি বলবো তুমি তো আমার আম্মু আর মেয়ের কাছে কি মা মাপ চায়
রাইমা চৌধুরী মুনের কপালে চুমু খেল
তখনই নিহাল বলে উঠলো
নিহাল: আমাকে কি আমার মামনি ক্ষমা করবে
মুন: পাপাই ।
নিহাল: মারে তোকে তো আমি ও ভুল বুঝছি আমি কি করে ভুল বুঝলাম আমার মামনি কে ।
মুন: পাপাই বাদ দাও তো সব আমার কপালের দোষ
রাইমা: নারে দোষ আমাদের
বলে মুনের হাত ধরতে গেলে মুন ব্যাথায় আহহ করে উঠে
নিহল: কি হলো মামনি
নিহাল ভালো করে দেখে যে মুনের হাত কালো হয়ে আছে ।
রাইমা: কি রে মুন এটা কিভাবে হলো
মুন কিছু বললো না।
রাইমা: আমি বুঝতে পারছি এটা কে করছে আজকে রোদ বাড়ি আসুক
মুন: না মামনি তুমি ওকে কিছু বলবা না ও যে আমার স্বামী। আমর উপর ওর সম্পুর্ন অধিকার আছে ।
নিহাল: কিন্ত মামনি।
মুন: কোনো কিন্ত না রোদ এখন খুব রেগে আছে তাই এমন করছে কিন্ত ওর রাগ কুমে গেলে ঠিক ও অনুতপ্ত হবে।
রাইমা: তুই ওকে বলে দে ।
মুন: আমার কথা তো ও শুনতে চাচ্ছে না
নিহাল: আচ্ছা আমি ওকে বলবানে
মুন: না আমি বলবো আমার স্বামীর রাগ আমি ভাঙ্গবো
নিহাল: যা ভালো বুঝিস কর ( মুনের মাথায় হাত রেখে)
রাইমা: এখন কিছু খেয়ে নে আয় আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
রাইমা চৌধুরী মুনকে খাইয়ে দিচ্ছে আর নিহাল মুনের হাতে ওষুধ লাগিয়ে দিচ্ছে।
বিকালে রোদ বাড়ি এসে দেখে মুন নেই
রোদ মুনের ঘরে গিয়ে দেখে মুন জানার কাছে দাড়িয়ে আছে।
রোদ মুনকে টেনে নিজের ঘরে নিয়ে আসলো
রোদ: আমার ঘরে থাকতে ইচ্ছা করে না । না করলে ও এই ঘরে তোমাকে থাকতে হবে ।
রোদ বাড়ির কাজের লোক কে ডাক দিয়ে বলে
রোদ: মুনের সব জিনিস আজ থেকে এই ঘরে থাকবে এখন গিয়ে সব কিছু নিয়ে আয়
চম্পা: জী ( কাজের লোকের নাম)
মুন: রোদ আমি নিজের ঘরে
আর কিছু বলতে পারলো না রোদ মুনকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে মুনের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।
কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিয়ে।
রোদ: আমাকে উল্টা পাল্টা কিছু করতে বাধ্য করো না ।
রোদ ওয়াশরুমে গেলো ।
মুন কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে বাইরে চলে যায় সব সাজানো শেষ একটু পর লোক আসবে ।
রাইমা: কি রে তুই রেডী হতে যা একটু পর সব চলে আসবে।
মুন: যাচ্ছি
মুন উপরে গিয়ে দেখে রোদ রেডী হচ্ছে।
মুন: রোদ আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে ।
রোদ: বাড়ি লোক আসবে আমি কোনো স্ক্রিক্রেট চাইনা
বলে রোদ নিচে গেলো মুন আর কিছু না ভেবে রেডী হতে গেলো।
কিছুক্ষণ পর সব লোক চলে আসলো।
রোদ সবার সাথে খুব ভালো ভাবে কথা বলছে রোদের কিছু বন্ধুরা আসছে।
একটু পর মুন নামলো।
পিংক কালারের বেনারসি একটা সারী পরে কানে হাত ম্যাচিং সব কিছু ।মুনকে আজকে সেই অপ্সরার থেকে কম কিছু লাগছে না ।
রোদ ও ম্যাচিং করে পিংক সেরিয়ানী পড়েছে চুল গুলো জেল দিয়ে সেট করা।
হাতে ঘড়ি। পুরাই হিরো ( কেউ নজর নিবেন না তাহলে মুন সবাইকে মুন পাঠাবে)
রোদ তো মুনের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে ।
একটু পর মুন রোদের আসে এসে দাড়ালো।
রোদ মুনকে নিয়ে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল।
সবাই ওদের কে দোয়া দিয়ে খাওয়া দাওয়া করে চলে গেলো ।
রাতে মুনকে ফুলের খাটের উপর বসিয়ে রাখা হয়েছে ঘর তাকে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।
চারিদিকে মোমবাতি দিয়ে সাজানো খুব সুন্দর লাগছে।
মুন সেই কখন থেকে রোদের জন্য অপেক্ষা করছে রোদ কে সব বলবে কিন্ত রোদের আসার নাম নেই।
এদিকে মুনের ও খুব ঘুম পাচ্ছে সারাদিন এর খাটনিতে।
মুন ঘুমিয়ে পরলো।
মুনের ঘুম ভেংগে যায় কারোর হাতের ছোয়ায়।
মুনের চোখ মেলতে নারাজ খুব কষ্টে চোখ মেলে দেখে রোদ ওর হাতে মলম লাগিয়ে দিচ্ছে।
মুন: রোদ আপনি
রোদ: হুশ একদম কথা না
মুন বুঝতে পারলো রোদ নেশা করেছে।
মুন: রোদ আপনি নেশা করেছেন
রোদ: হাম করেছি বেশ করেছি তোমার তাতে কি আমি যা খুশি করবো।
মুন: রোদ আপনি বসুন আমি আপনার জন্য তেতুল গুলা নিয়ে আসছি।
মুন উঠে যেতে গেলে রোদ মুনের হাত ধরে টান দেয়।
মুন: কি হলো ছাড়ুন।
রোদ: কেনো এতো দরদ আমার জন্য যা কেনো এত দরদ।
মুন: আমি আপনার স্ত্রী
রোদ: হা হা হা স্ত্রী তাই তো সেটা তো জোর করে তুমি তো অন্য কাউকে গিয়েছিলে বিয়ে করতে।
মুন: রোদ আমার কথা একটু শুনুন আরুশ।
অারুশ এর নাম শুনে রোদের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।
রোদ উঠে সব কিছু ভাঙ্গতে লাগে।
রোদ: আরুশ আরুশ আর আরুশ কি আছে ওর মধ্যে যা আমার মধ্যে নেই কেনো ওকে বিয়ে করতে গেলে আমার এতো দিনের ভালোবাসা তোমার কাছে কিছু না তোমাকে টাইম দিয়েছিলাম কিন্ত তুমি সেই টাইম এর কি করলে
হ্যা কি করলে আমায় ধোঁকা দিলে dame it
( চিৎকার করে)
মুন: রোদ একবার আমার কথা টা তো শুনুন।
রোদ: কি বলবে তুমি হা কি বলবে তুমি ওকে বিয়ে করে সংসার করবা ওর বাচ্চার মা হবা আর আমি দেবদাস হবো impossibe
তোমার উপর শুধু আমার অধিকার আর কারোর না বুঝছো ।
আজ আমি তোমাকে দেখাবো মানুষকে ধোঁকা দিলে কি হয়
বলে রোদ মুনকে টেনে বিছানায় নিয়ে গিয়ে অমানুষের মতো আচরণ করে।
সকালে
মুনের ঘুম ভেংগে গেল মুন ওয়াসরুমে চলে যায় ফ্রেশ হয়ে নিচে যায় রোদ এখন ও ঘুমিয়ে আছে
নিচে এসে মামনির কাছে যায়।
চলবে,