#তোমায়_প্রয়োজন
#মেঘাদ্রিতা_মেঘা
#শেষ_পর্ব
আমরা তিন জনই চুপচাপ গাড়ীতে বসে আছি।কারো মুখে কোন কথা নেই।
আমি মনে মনে ভাবছি,এখন কি হবে।
আর হঠাৎ করেই কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাদের গাড়ীটা একটা খাদে পড়ে যায়।
আর সেই এক্সিডেন্টে আমার হাত পায়ে আঘাত পাবার সাথে সাথে মাথায় ও আঘাত পাই।
এক্সিডেন্টের তিন দিন পর আমার যখন জ্ঞান ফিরে,তখন আমি নিজেকে হসপিটালে দেখতে পাই।
জ্ঞান ফেরার সাথে সাথে আমি আমার পাশে থাকা নার্সকে জিজ্ঞেস করি,
আমার সাথে যে আর দুজন ছিলো তারা কেমন আছে?
তারা কোথায়?
নার্স আমাকে বলে,
আপনি উত্তেজিত হবেন না।কথা বলিয়েন না কোন।
সবাই ঠিক আছে।
আপনার আত্মীয় স্বজন বাহিরে আছেন।
আমি তাদের ডেকে নিয়ে আসছি।
নার্স বাইরে গিয়ে আমার আম্মু আব্বু এবং ডাক্তারকে ডেকে আনেন আমার কাছে।
আমার আম্মু আব্বু আমাকে দেখে কান্না করতে থাকেন।
নার্স আম্মু আব্বুকে কান্না করতে না করেন।
ডাক্তার আমাকে দেখে নার্সকে বলেন,আপনি থাকুন আমি ডাক্তার রাহমান কে ডেকে নিয়ে আসছি।
এই বলে তিনি চলে যান ডাক্তার রাহমানকে ডাকতে।
আর বলেন আমি যেন বেশি কথাবার্তা না বলি।
আম্মু আমাকে বলেন,
কোন কথা বলিস না।
আর চিন্তা করিস না,প্রত্যয় আর অর্পন দুজনই ভালো আছে।
প্রত্যয় সারারাত ই হসপিটাল ছিলো।তোর জ্ঞান ফিরে নাকি সেই অপেক্ষায়।
আমিই একটু আগে বাসায় পাঠিয়েছি।
বলেছি বাসায় গিয়ে রেস্ট নিয়ে দুপুরে আসতে।
আমি ফোন দিচ্ছি একটু পর,ও চলে আসবেনে।
একটু পরে দুজন ডাক্তার এসে আমাকে আবার দেখেন।
আম্মু আব্বুকে বলেন আপনারা বাইরে চলে যান এখন।
পরে আসবেন।
পেসেন্টের সামনে কান্নাকাটি করবেন না।
বেশি কথা বলবেন না।
পেসেন্ট এখন আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।
আমি আম্মুকে বলি,
রাফাকে আসতে বলো।
এরপর দুপুরে আমার শাশুড়ী মা আর বাবা আসেন আমাকে দেখতে।
তারা এসে দেখে চলে গেলে বিকেলে রাফা আর অর্পন আসে আমাকে দেখতে।
আমি মনে মনে ভাবতে থাকি,
প্রত্যয় কেন এখনো আমাকে দেখতে আসলোনা।
আমি রাফা আর অর্পনকে দেখে জিজ্ঞেস করি,
_প্রত্যয় এলোনা যে?
অর্পন উত্তর দেয়,
_ওকে এখনো জানানো হয়নি তোমার যে জ্ঞান ফিরেছে।
_ও বাসায় গিয়েছে,ঘুমিয়েছে একটু।
তিন দিন এখানেই ছিলো।
তোমার অপেক্ষায় ছিলো,কখন তোমার জ্ঞান ফিরবে।
নিজের গায়ে যে ক্ষত,সেদিকে ওর খেয়ালও ছিলোনা।পাগলের মত কান্না করছিলো তোমার জন্য।যা দেখে আমি সত্যি অবাক হয়েছি।
আজ তোমার আম্মু আব্বু বলে বলে বাসায় পাঠিয়েছেন।
আমি নিজেও অর্পনের কথা শুনে অবাক হচ্ছিলাম।
যেই মানুষ টার মনে আমার জন্য কোন জায়গাই নেই।
সেই মানুষ টা তিন টা দিন আমার জন্য হসপিটালে ছিলো।
এমন কি কান্নাও করেছে আমার জন্য।
এসব ভাবতে না ভাবতেই প্রত্যয় এসে হাজির।
আমার বেডের কাছে এসেই দৌড়ে আমার হাত টা ধরে কান্না করে দেয়।
আর বলতে থাকে,
মন টা খুব টানছিলো জানো?
তাইতো চলে এলাম।
কেউ একটু জানায়নি আমায়।
ঠিক আছো তো তুমি?
অনেক কষ্ট হচ্ছে তোমার না?
খুব দ্রুত তুমি সুস্থ হয়ে যাবে দেখে নিও।
কিচ্ছু হবেনা তোমার।
আমি প্রত্যয়কে মুচকি হাসি দিয়ে বললাম,
কিছু হয়নি আমার।আমি ঠিক আছি।
এইতো মাথায় একটু আঘাত পেয়েছি তো?সেরে যাবে।
_জারা আই লাভ ইউ।
আই লাভ ইউ সো মাচ।
আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি জারা। অনেক ভালবাসি তোমাকে আমি।
_আর তমাকে?
_ওহ তমা?
আজ তোমাকে আমি সব বলবো জারা,তমা আমার ফ্রেন্ড।ও আমার প্রেমিকা না।
ওইদিন ও যা করেছে আমার কথায় ই করেছে।
_ঠিক বুঝলাম না।
_আজ তোমায় আমি সব কিছু বলে দিতে চাই জারা।
তোমাকে হারানোর কষ্ট আমি আজ বুঝে গেছি।
আমি তোমাকে কোন ভাবেই হারাতে পারবোনা।
এমন কি অর্পনের জন্যও না।
প্রত্যয়ের কথা শুনে আর কান্না দেখে আমি,অর্পন রাফা তিন জনই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি প্রত্যয়ের দিকে।
আজ তাহলে শুনে নাও আমার বুকের ভেতর লুকিয়ে থাকা কথা গুলো।
যা আমি এত গুলো দিন যাবত বুকের মধ্যে পুষে রেখে অভিনয় করে যাচ্ছি।
জারা তুমি জানোনা,
আমি তোমাকে কতটা পছন্দ করি।
তোমাদের এলাকায় ঘুরতে গিয়ে একদিন তোমাকে দেখে আমার ভালো লেগে যায়।
মনে মনে তোমাকে আমি পছন্দ করে ফেলি।
কিন্তু না জানি তোমার নাম,আর না জানি তোমার সম্পর্কে কিছু।
সিদ্ধান্ত নেই পরে আবার গিয়ে তোমাকে খুঁজে বের করবো।
কিন্তু হঠাৎ একদিন বাবা বাসায় এসে মাকে ডেকে বলেন আমার জন্য তিনি তার এক বন্ধুর মেয়েকে পছন্দ করেছেন।
এবং তিনি চান তার বন্ধুর মেয়ের সাথেই আমার বিয়ে হোক।
তাই আমি আর মা যেন পরের দিন রেডি থাকি।
বাবা আমাদের তার বন্ধুর বাসায় নিয়ে যাবেন মেয়ে দেখতে।
যদি আমাদের পছন্দ হয় মেয়েকে তাহলে সেইদিনই বিয়ের কথা বলে আসবেন তিনি।
আর তুমি তো জানোই বাবা রাগী মানুষ, তার কথার উপর মা আর আমি কোন কথা বলতে পারিনা।
মাকে আমি তোমার কথা বললাম,মা বললেন মেয়েকে চিনিস না জানিস না কিভাবে কি হবে।
তাছাড়া তুইতো জানিস তোর বাবা কেমন।
তার সাথে কাল না গেলে উপায় নেই।
আর মেয়ে দেখতে গেলেই যে বিয়ে হয়ে যাবে এমন তো না।
চল যাই,গিয়ে পছন্দ না হলে দুজন মিলে বলবো পছন্দ হয়নি।
তাহলেই তো হলো।
মায়ের কথায় রাজি হয়ে গেলাম।
চলে গেলাম তোমাদের বাসায়।
আর যখন তোমাকে নিয়ে আসলো আমাদের সামনে,আমি তো তখন যেন আকাশের চাঁদ পেয়ে গেলাম।
আমার খুশি আর দেখে কে
মাকে বললাম,মেয়ে পছন্দ হয়ে গেছে আমার।
এই মেয়েই সেই মেয়ে।
মাও খুশিতে বাবাকে বললেন,বিয়ের তারিখ পাকা করে ফেলতে।
যদি মেয়ের বাড়ীর কারো আপত্তি না থাকে।
তোমার বাড়ীর সবাই বিয়েতে রাজি হয়ে গেলেন।আমাদের বিয়েও ঠিক হয়ে গেলো।
জারা জানো,আমার বিয়ে নিয়ে আমার কত স্বপ্ন ছিলো কত প্ল্যান ছিলো।
ভেবেছিলাম বিয়ের দুদিন পরই তোমাকে নিয়ে হানিমুনে চলে যাবো।
কতই না খুশি ছিলাম আমি আমার বিয়ে নিয়ে।
দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে বিয়ের দিন আসলাম তোমাদের বাসায়।
কবুলও পড়লাম।হয়ে গেলো আমাদের বিয়ে।
কিন্তু তখনই আমার সব স্বপ্ন আকাঙ্ক্ষা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো যখন আফ্রিদি,আমার মামাতো ভাই তোমাকে দেখে বল্লো, প্রত্যয় রে এটা কি করলি।
আমি ওকে বললাম,কি আবার করলাম,বিয়ে করলাম।
আরে ভাই বিয়ে তো করলি,কিন্তু তোর বউ কে জানিস?
জানবোনা কেন?
আমার বউর নাম জারা।
আরে তোর বউ তো অর্পনের গার্লফ্রেন্ড রে।
_কি বলিস?
পাগল হয়েছিস নাকি তুই?
অর্পনের গার্লফ্রেন্ড এর নাম মণি।
জারা না।
আমাকে ও বলেছে ওর গার্লফ্রেন্ডের কথা।
কিন্তু কখনো দেখিনি।
_আরে ভাই,ও কাউকে ওর প্রেমিকাকে দেখাতোনা।
বলতো বিয়ের সময় একবারে দেখাবো।কিন্তু একদিন ওরা আমাদের এলাকায় ঘুরতে যায়। ঘুরার সময় আমি ওদের দেখে ফেলি।
সেদিনই আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো।
_তুই কি সিওর জারাই মণি?
_হ্যাঁ আমি সিওর,.
কারণ ও জারাকে ভালবেসে মণি বলে ডাকতো।
সেদিনই পরিচয়ের সময় আমাকে বলেছে।
তুমি জানো,ওর কথা শোনার পর আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে।
আমি কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।
তুমি তো জানোই আমাদের বিয়েটা কত তাড়াতাড়ি হয়।
তোমাকে দেখে আসার তিন দিনের মাথায় আমাদের বিয়ে হয়।
খুব তাড়াতাড়ি বিয়ের আয়োজন করা হয় বলে অর্পন বিয়েতে আসতে পারেনি।
তাছাড়া বিয়েতে অনেক কাজের চাপ থাকায় ওর সাথে তখন তেমন কথাও হয়নি।
ও জানতো বাবার বন্ধুর মেয়ের সাথে আমার বিয়ে হচ্ছে।
কিন্তু নাম টাও ও জিজ্ঞেস করেনি,আর আমি নিজে থেকে বলিওনি।
আমাদের বিয়ে হয়ে যাবার পর আমরা যখন আমাদের বাসায় চলে আসি তোমাকে নিয়ে।
তখনই ভাবি তোমাকে জিজ্ঞেস করবো অর্পনের কথা।
কিন্তু সবাই তোমাকে এমন ভাবে ঘিরে বসে ছিলো যে আমি সুযোগ টাই পাইনি।
আর ওই দিকে তো আমার বুকের ভেতর তুফান হচ্ছিলো।এ আমি কি করলাম।
এরপর হঠাৎ মনে হলো,অর্পনের ডায়েরির কথা।
আমি দ্রুত আমার আলমারি খুলে অর্পনের ডায়েরি বের করলাম।
যেই ডায়েরিতে অর্পন ওর জীবন কাহিনী লিখে রাখতো।
ও সব কিছুই লিখে রাখতো ওর সেই ডায়েরিতে।
আর আমাকে বলতো,কখনো কিন্তু এই ডায়েরি পড়বিনা।
কারো পারসোনাল ডায়েরি বিনা অনুমতিতে পড়তে নেই।
ও যেদিন দেশের বাইরে যাবে সেদিন ভুল করে ওর ডায়েরিটা এয়ারপোর্টে ফেলে রেখে যায়।
কিছু লিখার পর ব্যাগে রাখতে হয়তোবা খেয়াল ছিলোনা ওর।
ভাগ্যের কি খেলা।
সেই ডায়েরি পেয়ে আমিই আবার বাসায় নিয়ে আসি।
ডায়েরির উপরে বিরাট আকারে সুন্দর করে লিখা,অর্পন।
ওর ডায়েরি আমি বাসায় নিয়ে আসি ঠিকই কিন্তু কখনো খুলে দেখা হয়নি ভেতরের জীবন কাহিনী।
কারণ আমি যখনই ওর ডায়েরি দেখতে চাইতাম,ও বলতো কারো অনুমতি ছাড়া তার ডায়েরি পড়া অপরাধ।
তবে হ্যাঁ আমাদের বিয়ের দিন আমি ওর অনুমতি ছাড়াই ওর ডায়েরি খুলি,এছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিলোনা।
আর ডায়েরি খোলার আগে মনে মনে বলতে থাকি,
এখানে এমন কিছু যেন না পাই যাতে আমার মন ভেঙে যায়।
কিন্তু বিশ্বাস করো আমি এক মুহূর্তের মধ্যে যেন একটা পাথরের মুর্তি হয়ে যাই।
যখন ডায়েরি খুলে কিছু পৃষ্ঠা উল্টাতেই দেখতে পাই স্টিকার দিয়ে লাগানো তোমার একটা ছবি।
আর তার নিচেই লিখা।
জারামণি ভালবাসি।
সেদিন আমার পায়ের নিচ থেকে যেন মাটি সরে যায়।
কি করবো আমি এখন,
কিভাবে আমি আমার ভাইয়ের ভালবাসার মানুষ টাকে বিয়ে করে ফেললাম।
আমি তখনই অর্পন কে ফোন দেই।
আর ফোন দিয়ে বলি,
_আমি তো বউ নিয়ে বাসায় ফিরলাম রে।
এবার তোর পালা।
তখন ও বল্লো,
_আরে বাদ দে এখন আমার কথা।
আজ তোদের দিন তোরা ইনজয় কর।
_আরে সবাই আমার বউকে ঘিরে বসে আছে।
_আমি ফ্রি আছি তুই বল।
আচ্ছা তোর মণির কি খবর?
_আর বলিস না আমি ওকে অনেক কষ্ট দিয়েছিরে।
তুই তো জানিস আমি মণিকে ভালবাসতাম।
কিন্তু পরে আমি কিভাবে যেন
ঝর্ণার সৌন্দর্যের মোহে পড়ে যাই।ঝর্ণার সাথে রিলেশনে চলে যাই।
_ঝর্ণা।ওইযে তোদের পাশের বাড়ীর মেয়েটা?
_হ্যাঁ,
আর ঝর্ণা আর মণি একই সাথে পড়াশোনা করতো।একদিন মণি সব জেনে যায়।
তাই মণির সাথে আমার ব্রেকাপ হয়ে যায়।
বেচারিকে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি।
ও আমাকে পাগলের মত ভালবাসতো।
কিন্তু পরে বুঝলাম,
আমি শুধু মাত্র ঝর্ণার রুপে পাগল হয়েছিলাম।
আমার সত্যিকারের ভালবাসা ঝর্ণা না।
মণিই ছিলো।যা আমি পরে বুঝতে পারি।
অনুভব করি।
আমি মণিকেই ভালবাসিরে।
আমি ওকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারিনা রে ভাই।
আমি দেশে এসেই ওকে বিয়ে করবো।
ওর বাসায় প্রস্তাব দিবো।
আমি ওর জন্যই দেশের বাইরে এসেছি জানিস।
যাতে ওর পরিবার রাজি হয়।
ও আমার সাথে অভিমান করে আছে জানি।
কিন্তু ওর পরিবার কে মানিয়ে ওকেও রাজি করিয়ে ফেলবো দেখিস।ও আমাকে ঠিকই ক্ষমা করে দিবে।
আমি ওকে ছাড়া ভালো থাকবোনারে ভাই।ভালো থাকবোনা।
আমি ওকে চাই।
ওকে বিয়ে করতে না পারলে,একবারে বিদেশের মাটিতে চলে আসবো।
দেশেই যাবোনা আর।
_আর দেশে এসে যদি দেখিস ওর বিয়ে হয়ে গেছে?
_হলেও ওকে নিয়ে আসবো।
_ওর বর তোকে আনতে দিবে?
_দরকার হলে ওর বরকে খু*ন করে নিয়ে আসবো।আর যদি না আসতে চায় তাহলে ওর সামনে নিজেই ম রে যাবো।
ও শুধু আমার।
আর কারোনা ভাই আর কারোনা।
এ কথা বলে অর্পন কান্নায় ভেঙে পড়ে।
আমি আর ওকে কিছুই বলতে পারিনা।
তাই আমি তখনই মনে মনে সিদ্ধান্ত নেই,তোমার সাথে খারাপ আচরণ করবো।
আর তোমাকে বোঝাবো আমি অন্য কাউকে ভালবাসি।
বাবার চাপে তোমাকে আমার বিয়ে করতে হয়েছে।
আর আমি সফলও হয়ে ছিলাম আমার পরিকল্পনায়।
তুমি সব কিছু বিশ্বাস ও করে নিয়েছিলে।
আর এক্সিডেন্টের দিন তো আমার প্ল্যান মত সব হয়েই যাচ্ছিলো।
আমি তোমাদের সব কথা শুনে ফেলার ভান করে,রাগ দেখিয়ে
ভেবেছিলাম তোমাদের এই সুযোগে মিলিয়ে দিবো।
আর তুমি জানবে,আমি তমার জন্য তোমাকে ছাড়লাম।
আমি সব সময় চেয়েছি তুমি আমাকে ভুল বুঝো।
আর অর্পনকে মেনে নাও।
তোমরা এক হয়ে যাও।
_তাহলে বিয়ের পরের দিন রাতে আমাদের বাসায় থাকাকালীন কে ফোন করেছিলো আপনাকে?
আর ফোন পাওয়া মাত্রই যে আপনি চলে গেলেন?
_সেদিন তমা ফোন দিয়েছিলো আমাকে।
আমিই শিখিয়ে রেখেছিলাম ও যেন আমাকে ফোন দেয়।
আমি সেদিন কোথাও যাইনি।
তোমাদের বাসার বাইরে কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে আবার ভেতরে চলে আসি।
_খুব ভালো অভিনয় জানেন আপনি।
খুব ভালো অভিনয় জানেন।
খেলার পুতুল মনে করেছেন আপনারা দুই ভাই আমাকে না?
কি চান এখন আপনি?
ডিভোর্স চান?
ডিভোর্স দিয়ে দিবো?
_জারা আমার আর কিছু চাইনা।
আমার শুধু #তোমায়_প্রয়োজন
আমার তোমায় প্রয়োজন।
প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দিয়ে তোমার করে নাও।
অর্পন এসে প্রত্যয়কে টেনে নিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে বলে,
_তোর মন টা অনেক বড় রে ভাই।
অনেক বড়।
আর আমি এই তিন দিনে বুঝে গেছি তুই জারাকে কতটা ভালবাসিস।
তোর মত ভালো ওকে কেউ বাসতে পারবেনা।
ওকে কখনো কষ্ট দিস না।
আজ থেকে জারা শুধু তোর,শুধুই তোর।
জারা,
আমাকে মাফ করে দিও।সুখী হও তোমরা।
আসছি।
এই কথা বলে অর্পন বেরিয়ে যায়।
রাফাও চলে যায়।
_জারা,
কিছু বলবেনা?
চুপ করেই থাকবে?
কিছুতো বলো।
_যাও দিলাম এবারের মত ক্ষমা করে।আমার সারাজীবনের জন্য #তোমায়_প্রয়োজন।
থাকবে আমার হয়ে সারাজীবন?
প্রত্যয় আমার দু হাত ধরে বলে,
_থাকবো।
_কোন দিন ছেড়ে যাবেনাতো?
_উঁহু কোন দিন না।
আমি আমার বউকে ছেড়ে কোথাও যাবোনা।কোত্থাও না।
(সমাপ্ত)