#তোমাতে_বিলীন_হবো
#Tahsina_Arini
#পর্ব_২৬
(অনুমতি ব্যতীত কপি নিষিদ্ধ)
পরদিন বিকেলে নাহিদ তননকে নিয়ে বাইক এর শো রুমে গেল। নিজের প্ল্যান মতো নাহিদ সব করে দোকানের বাইরে এসে তননের হাতে বাইকের চাবি দিয়ে সে তৎক্ষণাৎ রিকশা ডেকে উঠে বসলো। তননের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে নাহিদ বললো,
-“গিফট ফ্রম তাহসী। আল্লাহ হাফেজ। সাবধানে যেও।”
তনন হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। দুই ভাইবোন তাকে বোকা বানানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে কি! অবশ্য সেদিন শার্ট- প্যান্ট কেনার সময় তার প্যান্টের মাপ নেওয়া আর তাহসীর কাজ দেখে একবার মনে হয়েছিল এসব তার জন্যই। আবার পরক্ষণেই সেই ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে ছিল। কিন্তু আজ! আজ তো ঘূণাক্ষরেও তনন ভাবেনি এটা তার নিজের। নাহিদের রিকশা খোঁজা দেখে সে ভেবেছে তার জন্যই খুঁজছে। তাকে রিকশা তে উঠিয়ে দিয়ে নাহিদ ভাই বাইক নিয়ে চলে যাবে। ওহ, আচ্ছা এইজন্যই বুঝি ইনিয়ে বিনিয়ে তার পছন্দ জিজ্ঞেস করা হচ্ছিল। এইগুলোই একমনে ভেবে চলছে তনন।
তননের কাছে বাইক নিজের সাথে নিয়ে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই এখন। ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য হলেও বাইক নিয়ে যেতে হবে, এখানে তো আর ফেলে রেখে যেতে পারে না। তনন বাইকের গায়ে হাত ছোঁয়ালো আস্তে করে। এমন একটা বাইক তার ও ছিল। মনে পরে গেল তার বাইকের কথা। তননের বাবা তখন সদ্য মারা গিয়েছে। তনন তখন হৈ হুল্লোড় করে বেড়ানো আর পড়াশোনা নিয়ে মেতে থাকা স্টুডেন্ট। জীবনে কখনো টিউশনি করাইনি ভালো স্টুডেন্ট হওয়া সত্ত্বেও। যখন টিউশনি শুরু করলো প্রথমে তেমন টিউশনি পেত না,আবার পেলেও ভালো করে পড়াতে পারতো না। কেউ কেউ তিনদিনের দিন বাদ দিয়ে দিত। তখন সেমিস্টার ফিস দিতে বাইক বিক্রি করে দিয়েছিল। মায়ের থেকে আর নিতে চাইছিল না সে।
তনন দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাইকের সাথে হেলান দিয়ে তাহসীর নাম্বারে কল দিল।
নাহিদ রিকশায় উঠে তাহসী কে জানিয়ে দিয়েছিল তার কাজ শেষ। যার ফলে এখন তননের কল দেখে তাহসী সহজেই বুঝে গেল তনন কি কারণে কল দিয়েছে। প্রথমবার কল রিসিভ করলো না তাহসী। তনন জিজ্ঞেস করলে কি কারণ দেখাবে বুঝতে পারছে না। কিন্তু দ্বিতীয় বার তনন কল করায় কল টা রিসিভ করতেই হলো।
কুশল বিনিময় করে তনন বললো,
-“ফ্রি আছো?”
-“হুম।”
মৃদু স্বরে উত্তর দিল তাহসী।
-“নিচে নামো। স্কার্ফ পরে আসবে। আসছি।”
তাহসী কিছু বলার আগেই তনন কল কেটে দিল। তাহসী কিছু জিজ্ঞেস করার সুযোগ পেল না। আজ কোনো দ্বিরুক্তি না করেই তননের কথা মতো নিচে নামলো। মেইন গেটের কাছে রাস্তার সামনে দাঁড়িয়ে ফোন স্ক্রল করতে থাকলো।
কিছুক্ষণ বাদেই নিজের পাশে বাইকের আওয়াজ পেয়ে মাথা তুলে তাকালো তাহসী। মাথা থেকে হেলমেট নামিয়ে তনন বললো,
-“উঠে এসো।”
তাহসী বিনা বাক্য ব্যয়ে উঠে বসলো বাইকে। তনন কিছুক্ষণ বাইক চালানোর পর বললো,
-“ধরে বসা যায় না? নাকি নিজে থেকে আমাকে ছুঁলে হাত পঁচে যাবে?”
তাহসী ঘনিষ্ঠ হয়ে তননের সাথে চেপে বসলো। তনন রাস্তার সাইড এ যেয়ে ব্রেক কসলো। তনন পিছনে ঘুরে বললো,
-“প্রায় এক বছর বাইক চালায় না! একে তো অভ্যেস নেই। তার উপর এমন করার কারণ কি?”
তাহসী মুখ বাকালো।
-“নিজেই বলছে!”
-“আমি তো ধরেই বসতে বলছি নাকি? আর তুমি!”
পুনরায় বাইক স্টার্ট দিয়ে তনন বললো,
-“খুব কাছে আসার ইচ্ছা না-আআ?”
-“অ’সভ্য!”
-“হ্যা তো। আমি অস’ভ্য আর উনি! মানে বাইক এ উঠেও দুষ্টুমি করা লাগবে? একটা কিছু বললেই শুরু হয়ে যায়। একটা কথা শোনা যায় না?”
-“না।”
-“বাচ্চা একটা।”
-“শি’শু নি’র্যা’তনের মা’ম’লা ঠু’কে দিবো।”
-“আচ্ছা তাই?”
কথা বলতে বলতে তনন টিএসসির সামনে বাইক থামালো। পাশে বাইক রেখে তাহসীর হাত ধরে ফুসকা স্টলের সামনে যেয়ে দাঁড়ালো।
তাহসী তননের কাজ দেখে অবাক হচ্ছে। সে ভেবেছিল চিল্লাচিল্লি করবে তনন। অথচ দেখো আরো ভালো ব্যবহার। তাহসী আস্তে করে জিজ্ঞেস করলো,
-“এখানে কি?”
-“ফুসকা।”
তাহসী ভ্রু কুঁচকে তাকালো।তনন প্রশ্নের মানে বুঝেও হেঁয়ালি করছে।
-“একদম হেঁয়ালি করবে না। হেয়ালি করা একটুও ভালো লাগে না।”
-“আমারও কারো থেকে কোনো জিনিস নিতেও ভালো লাগে না।”
তাহসীর রাগ হয়ে গেল। হেয়ালি করা আর বাইক দেওয়া এক হলো!
-“বেশ! চাবি দাও। আমার থেকে কিচ্ছু নিতে হবে না। গায়ের শার্ট খুলে দাও। সব ফেলে দিই। বাইক ভাইয়া কে বলি ফেরত দিয়ে আসতে।”
তাহসী নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য এক পা বাড়ালো। তনন পুনরায় হাত চেপে ধরে বললো,
-“সিনক্রিয়েট করবে না। অর্ডার দিয়ে ফেলছি।”
তাহসী রাগে দুঃখে কিছু বললো না। বলতে মন চাইলেও মুখ খুললো না। ফুসকা দিলে তিন চারটা মুখে দিয়ে চুপ করে বসে থাকলো। তনন খেয়াল করে কিছু বললো না। তার তেমন ভালো লাগেনা ফুসকা, এইজন্য এক বাটি চটপটি নিয়েছে। তাহসী কে না সেঁধে ফুসকা গুলো ভেঙ্গে নিজের চটপটি তো মিশিয়ে নিয়ে পুরোটা শেষ করলো। তনন টাকা দিয়ে বাইকের কাছে যেয়ে দাঁড়ালো। তাহসী তননের হাত থেকে চাবি নিয়ে বললো,
-“চলে যেতে পারো। ভাইয়া কে বলবো….”
তাহসী কে কিছু না বলতে দিয়ে তনন তাহসীর ঠোঁট চেপে ধরলো। কিছুক্ষণ পর তনন তাহসীকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়ে বললো,
-“আমি কি এমন বলেছি এত রাগ দেখাতে হবে? কে বলেছে বাইক কিনতে?”
পার্কিং লট হওয়ায় এদিকে কেউ নেই। অবশ্য তনন এমন ভাবে দাঁড়িয়েছে ওইদিক থেকে কিছু দেখা যাবে না। তাহসী তননের কাছ থেকে সরে এসে আজ বলেই দিল,
-“পাব্লিক প্লেসে কখনো আমাকে ছুঁবে না।”
-“কেন? আমরা ম্যারিড। মানুষ বিয়ে না করেই কতকিছু করছে! আর আমি তো জাস্ট…”
-“তবুও প্লিজ। এদিকে তেমন কারো চোখ পড়ে না। তবে পড়তে কতক্ষণ ?”
-“ওকে।”
-“আর বাইক কেনার কথা হঠাৎ করেই মাথায় আসলো। ভাবলাম দেনমোহর এর টাকা তো পরেই আছে। তাই”
-“তুমি দেনমোহর এর টাকা দিয়ে এমন করেছো? সিরিয়াসলি তাহসী?”
অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো তনন।
তাহসী কিছু বললো না। তনন বাইক সরাতে সরাতে বললো,
-“এদিকে দেনমোহর এর টাকা আমি একটু একটু করে আম্মু কে শোধ দিচ্ছি। আমি তো আর চাকরি করি না যে একবারে দিতে পারতাম। আর উনি এই টাকা দিয়ে আমাকেই বাইক কিনে দিচ্ছে! টাকা আমাকে শোধ দিলি তুই?”
-“না।”
-“এখন মন মতো উড়িয়ে ফেল টাকা। কাজের সময় দেখবি এক পয়সাও নেই।”
তাহসী কিছু বললো না। তনন বাইকে উঠতে বলে তারপর বললো,
-“এখানে আনলাম মন ভালো করতে, যেন ঝামেলা না হয়। সেইটাই হলো। তো চল আমার মেসে যেয়ে শার্ট চেঞ্জ করে শার্ট তোকে দিচ্ছি। আর আমি তো চিনি বাইক এর শপ। ওখানে বাইক ফেরত দিয়ে আসবো। ডান?”
তাহসী হতভম্ব হয়ে গেল। তখন রাগের মাথায় কি বলে ফেলেছে সে! শার্ট খোলার কথা বলা মোটেও উচিত হয়নি। তাহসী যদি এখন তার বউ না হতো নিশ্চয় এখানেই শার্ট খুলে মুখের উপর ছুড়ে দিয়ে চলে যেত। তনন একবারও তার মুখের উপর রাগ দেখায়নি। তার উচিত হয়নি অতিরিক্ত রাগ দেখানো। এখন কি করবে সে? কাউকে তেলানো তার একদম পছন্দ নয়। কিন্তু কি বলবে তাও বুঝতে পারছে না। অবশেষে কথা অন্য দিকে ঘোরানোর উদ্দেশ্যে গলা ঝেড়ে বললো,
-“আমার দিয়েছি বলে ফেলে দিতে হবে। আমার কিছু নেওয়া যায় না।”
জ্যামে আটকে গেল তনন। তাহসীর উদ্দেশ্যে বললো,
-”
চলবে ইনশাআল্লাহ;
#তোমাতে_বিলীন_হবো
#Tahsina_Arini
#পর্ব_২৭
(অনুমতি ব্যতীত কপি নিষিদ্ধ)
তনন তাহসীর উদ্দেশ্যে বললো,
-“যায় না।”
এই কথার পিঠে তাহসী কি বলবে ভেবে পেল না। তার কথার ঝুলিতে কথা শেষ। বাইকের আয়নায় তাহসীর শুকনো হয়ে যাওয়া মুখ দেখে তনন থমকে গেল। ভাবলো একে আর কষ্ট দেওয়া ঠিক হবে না। তাই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে নিল। জ্যাম ছাড়তেই ওরা পুনরায় চলতে শুরু করল। তাহসী তাকিয়ে দেখে তনন একটা মসজিদের সামনে বাইক থামিয়েছে। ততক্ষণে মাগরিবের আজান শুরু হয়েছে। তাহসীকে নামতে বলে তননও বাইক থেকে নামলো।
-“এখানে কেন থামানো হলো? তুই না হয় এখানে নামাজ পড়ে নিতে পারবি আর আমি! তোর মেস কত দূর?”
-“উপরে ভালো করে তাকিয়ে দেখ মেয়েদের নামাজ পড়ার জায়গা আছে,এইটা লেখাই আছে। নামাজ শেষে যাবো।”
নামাজ শেষে তাহসী তননের জন্য অপেক্ষা করলো বাইকের কাছে দাঁড়িয়ে। দোতলায় মেয়েদের জন্য নামাজের জায়গা, আর ছেলেদের জন্য নিচ তালায়।
তনন একটা ক্যাফের সামনে বাইক থামালো। তাহসী নেমে বললো,
-“এখানে কেন?”
তনন বাইকের চাবি ঘুরাতে ঘুরাতে ক্যাফের ভিতরে যেতে যেতে উত্তর দিল,
-“ভাবলাম একজন আমার বার্থডে উপলক্ষে এত বড় একটা গিফট দিল, তাকেও কিছু দেওয়া দরকার। তার মন খারাপ দেখা যাচ্ছে না আর, বরং আমি তাকে কিছু সুন্দর মূহুর্ত উপহার দিই।”
তাহসী মনে মনে হাসলো। তাহলে তাকে খেয়াল করেছে তনন। এটা ভাবতেই মনটা ভালো লাগায় ছেয়ে গেল।
তনন যেয়ে একটা প্রাই*ভেট টেবিলে বসলো। তাহসীর জন্য কোল্ড কফি আর নিজের জন্য ব্ল্যাক কফি অর্ডার করলো।
তাহসী বলে উঠলো,
-“তখন ওভাবে বলার জন্য স্যরি।”
-“ইট’স ওকে।”
-“হ্যাপি বার্থডে।”
-“থ্যাঙ্কস! বাট এত বড় গিফটের কোনো দরকার ছিল না।”
তাহসী কিছু বললো না। এভাবে সামনাসামনি বসে নিরিবিলি পরিবেশে কখনো তননের সাথে সময় কাটানো হয়নি। ওয়েটার কফি দিয়ে গেলে তনন কফি তে চুমুক দিয়ে হেসে বললো,
-“আমাকে এতো বড় গিফট দেওয়ার জন্য থ্যাঙ্কস। তুমি যে আমাকে এতো বুঝতে শিখেছো কবে কবে বলোতো?”
তাহসী লাজুক হাসলো। লাল লাল হালকা আভা গালে ছড়িয়ে পড়েছে। তনন পুনরায় বললো,
-“এতো লজ্জা পাওয়ার মতো কিছু বলিনি।”
কিছু মনে হতেই তনন না থেমেই বললো,
-“আচ্ছা একটা কথা তুমিই দিয়েছো তো? মানে তোমার বাবা বা ভাই না তো? উনারা দিলে নিতে পারবো না। কিন্তু তুমি দিলে নিতে পারি।”
তাহসী ভ্রু কুঁচকে তাকালো তননের দিকে।
-“মিথ্যা বলি না।”
-“সেইটা তো জানি। দেখা গেল নাহিদ ভাইয়া কিনে তোমার নাম করেছে। আমি নিতে চাই না কিছু এটা তুমি বলতেই পারো।”
-“আমার দেনমোহর এর টাকা ছিল। দেড় লক্ষ। লেগেছে কত?”
-“সবমিলিয়ে এক লাখ ছাপ্পান্ন হাজার। দুইটা হেলমেট দিয়ে।”
-“ভাইয়া কে দিয়ে দিবো বাকিটা। কিন্তু হেলমেট দুইটা কেন?”
-“আমি তো সিঙ্গেল তাই!”
-“ত্যা*ড়া!”
বিড়বিড় করে বললো তাহসী।
-“আমি কখনো তোমার কাছে ভালো ছিলাম আদেও?”
তাহসী কিছু বললো না। তনন রেগেমেগে বললো,
-“আজ তুমি বলবে,আমি শুনবো। শুরু করো।”
-“মানে কি?”
থতমত খেয়ে বললো তাহসী।
-“মানে হচ্ছে এত চুপ থাকো। আমি কথা বলি। আমার মনে হয় জোর করে কথা বলাচ্ছি। হ্যা তুমি কম কথা বলো,শুনতে বেশি ভালো লাগে তোমার। কিন্তু আমার কথা ফুরিয়ে গেলে আমি কি বলতাম? তাকিয়ে তাকিয়ে শুধু দেখবো?”
-“আসার পর থেকে এটা না ওটা। এবার চুপ থাকো একটু।”
চুমুক দিয়ে বললো তাহসী।
-“হুম,যেই বলেছি কথা বলার কথা। ওহ,ওয়েট! কি বোঝাচ্ছো আমি বেশি কথা বলি?”
তনন,তাহসী কথা বলাতে পাশের জন দের সম্ভবত সমস্যা হচ্ছিল। এই টেবিল গুলো আলাদা আলাদা করা মানে একপাশে দেয়াল, দুই পাশে বোর্ড দেওয়া আর সামনের দিকটা কাপড় দিয়ে ঘিরে দেওয়া। মোট কথায় কেউ ভিতরে থাকা মানুষ কে দেখতে পাবে না। পাশের টেবিল থেকে কেউ একজন বলে উঠলো,
-“আপনারা ঝগড়া করবেন তো বাইরে যেয়ে করেন না! ঝগড়া করার জন্য প্রাই*ভেট বুক করে কেউ?”
তনন, তাহসী আস্তে করেই কথা বলছিল। কিন্তু এমন কথাতে আরো চুপ হয়ে গেল। তনন তাহসীর দিকে ঝুঁকে এসে ফিসফিস করে বললো,
-“প্রাই*ভেট টেবিল যেহেতু বুক করেছি, তাহলে আমাদের প্রাই*ভেট কাজ ই করা উচিত তাই না?”
তাহসী মাথা নিচু করে কফির দিকে মনোযোগ দেওয়ার মতো করে বলল,
-“মাথায় সব সময় এসবই ঘোরে না?”
-“উহু। তাহসী ম্যাডাম সামনে থাকলে ঘোরে!”
তনন উঠে এসে তাহসীর পাশে বসলো।
-“কি?”
-“বেশি কিছুই নয়। অনলি একটা কি’স!”
-“সরো তো।”
-“তা হবে না। এত বড় গিফট চাই না। কি’স না দিলে বাইক নিচ্ছি না।”
-“স্ট্রেঞ্জ! কিসের সাথে কি মেলাচ্ছো?”
-“আস্তে কথা বলো,বেবি। একটা কি’স ই তো।”
তাহসী মনে মনে ভাবছে,এতো জিজ্ঞেস করার কি আছে বুঝালাম না। পাবলিক প্লেসে চেপে ধারে আর এখন অনুমতি চাচ্ছে! ওরে ভদ্র ছেলে।
তাহসী মনে চেপে না রেখে বলেই দিল ইনিয়ে বিনিয়ে। তনন ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বললো,
-“একা অনুমতি না তো। তোমাকে কি’স করতে বলেছি। তুমি নিজ থেকে করবে।”
-“অবশ্যই না। আমাকে সুন্দর মুহূর্ত উপহার দিবে। আহা আহা কি সুন্দর! আসার পর থেকে তর্ক করে যাচ্ছে!”
-“আচ্ছা তাই? আমি তর্ক করছি?”
তাহসী উত্তর না দিয়ে বসে থাকলো। তনন নিজেই তাহসীর ঠোঁট চেপে ধরলো ঠোঁট দিয়ে। হঠাৎ আক্রমণে তাহসী নিজের কোমড়ে রাখা তননের হাত আঁকড়ে ধরলো। এক হাত চলে গেল তননের চুলে। কয়েক মিনিট পর তনন তাহসীকে ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। বিল পেমেন্ট করে তাহসী কে নিয়ে বের হলো ক্যাফে থেকে।
বাসার রাস্তায় না যেতে দেখে তাহসী বললো,
-“স্যরি তো বলছিই। এখন কি মেসে যেয়ে শার্ট ফিরিয়ে দিবি?”
-“মেসে যাচ্ছি না,ম্যাডাম। এইদিকে একটা রেস্টুরেন্ট আছে ভালো।”
-“তো? এখন ওখানে যাবো নাকি? রাতে বাইরে থাকবো?”
-“বেশি রাত না। ডিনার করেই চলে যাবো। আজ না হয় একটু তাড়াতাড়ি ডিনার করা হবে!”
-“এতকিছুর কোনো দরকার পড়ছে না। বাসায় চল।”
-“নো, দরকার আছে।”
ততক্ষণে তনন কাঙ্ক্ষিত রেস্টুরেন্টে পৌঁছে গেছে। তাহসীর পছন্দের বিরিয়ানী অর্ডার দিয়ে দুজনে আবার কথা শুরু করলো। তবে এখন পড়াশোনা নিয়ে কথা হলো।
ডিনার শেষে তনন বাইকে উঠতে যেয়ে বললো,
-“ফ্রি আছো দুইদিন?”
-“কেন? কাল তো বৃহস্পতিবার। তারপরে শুক্রবার। এসাইনমেন্ট এর কাজ আছে। তাছাড়া ফ্রি।”
-” আমার সাথে বাড়ি যাবে? আমার প্ল্যান ছিল না কিন্তু বার্থ ডে থাকাতে আম্মু বলছে যেতে।”
তাহসী এক মুহুর্ত ভাবলো।
-“আচ্ছা।”
-“ডিস্টার্ব করলাম?”
-“না, এসাইনমেন্ট এর সব নিয়ে যাবো। কালকে যাবে?”
-“হুম। নাইটে! সমস্যা আছে?”
-“ভয় লাগে !”
-“আমি আছি।”
-“গলায় একটা ছু’রি ধরতেই আমি তুমি বেরিয়ে যাবে!”
তনন ফিক করে হেসে দিল।
-“এত হাসাতে পারো! ওকে ক্লাস মিস দিবো। কাল তিনটার বাস এ যাবো।”
-“আচ্ছা।”
-“টিকিট কিন্তু আমিই কাটবো।”
-“বাইক কিনে দিছি বলে এতকিছু!”
তনন, তাহসী ওরা কথা বলার মাঝেই হঠাৎ ওদের উপর কিছু পড়তে থাকলো। দুজনে খেয়াল করে দেখলো পার্টি স্প্রে।
চলবে ইনশাআল্লাহ;