#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ৩০
মিহি রুম থেকে বের হয়ে কাউকে ই পায়নি। চারদিকে খুজলো কিন্তু কোনো কিছু ই খুজে পেলো না। মিহিকে এভাবে চলে আসতে দেখে অভ্র ও পিছনে পিছন আসতে থাকে।
–কী খুজতেছো।
–তা আপনার জানার প্রয়োজন না বলে ই আমি মনে করি।
–মিহি তোমার সাথে আমার কথা আছে প্লিজ একটু শোনো।
–না, আমি আপনার মুখ থেকে কোনো কথা ই শোনতে চাইনা।
বলে ই মিহি নিচে চলে গেলো। কিন্তু নিচে কাউকে ই পেলো না। সবাই সবার রুমে গিয়ে শুয়ে পড়েছে। শরীরটা বেশ খারাপ লাগছে তারউপর এতো টেনশন নিতে পারছে না মিহি। অভ্রের পাশে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো মিহি। কান্না করতে করতে মাথা প্রচন্ড ব্যাথা করছে দুচোখ যদি কথা বলতে পারতো তাহলে হয়তো চিৎকার করে বলতো এবার আমাদের একটু বিশ্রাম দেও।
বেলকনিতে গিয়ে বাহিরে তাকাতে ই দেখলো আকাশে অনেক মেঘ জমেছে। আজকে আর চাঁদ নাই। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। ঠিক মিহির মনের আকাশের মতো
মিহির মনের আকাশে ও বড্ড মেঘ জমেছে, সুযোগ পেলে ই বৃষ্টি নামে।
হঠাৎ ডাকার শব্দ পায় মিহি, বাহির থেকে অভ্র ডাকছে। অভ্রের ডাকে সাড়া না দিয়ে বাহিরের দিকে আবার দৃষ্টি দিলো। দুমিনিট পর দরজায় কেউ ভেঙ্গে ফেলছে এমন মনে হতে ই মিহি দৌড়ে গিয় দরজা খুলে দেয়।
–রুমে আসো।
–আমি আপনার সাথে থাকতে চাই না।
–মিহি আমার কথা শোনো। তারপর তুমি যে শাস্তি দিবা আমি মাথা পেতে নিবো।
–ঠিক তো। সব শাস্তি মাথা পেতে নিবেন
–হে,
–তাহলে বলেন।
–ঠান্ডা মাথায় শোনো।
অভ্র প্রথম থেকে মীরার সম্পর্কে সব বললো। সব কিছু শোনে মিহি অভ্রের দিকে শুধু তাকিয়ে আছে কিছু বলছে না। অভ্র আবার বললো,
–মিহি যা হয়েছে আমি ভুলে গিয়েছি। আমি তোমাতে এতোটা আসক্ত হবো তা ভাবতে পারিনি।তোমাকে ছেড়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না।আমি তোমাতে আসক্ত মিহি অন্য কারো কাছে নাহ্।
মিহি ও অভ্রকে অনেক ভালোবাসে। অতীত সম্পর্কে ছেড়ে যদি চলে যায় তাহলে মিহির ভালোবাসাটা টা ভালোবাসা ছিলো না ক্ষনিকের মোহ ছিলো। আর অতীত ভুলে যখন মিহিকে অভ্র মন থেকে মেনে নিয়েছে তাই মিহি ও অভ্রের অতীত ভুলে যেতে চায়।
মিহি কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো,
–মীরা আমাকে বলেছে, আপনার সাথে বেশি মেলামেশা করলে আপনাকে মেরে ফেলবে।
–মীরার এসব কথায় তুমি ভয় পাচ্ছো।
–এমন কথা বললে কী ভয় পাবো না নাকি।
—এসব নিয়ে ভয় পেতে হবে না, অনেক হয়েছে এখন ঘুমাবে চলো।
অভ্র মিহিকে বেডে বসিয়ে, খাবার খাইয়ে দিলো, ওষুধ খাওয়ানো শেষে হলে মিহির মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। মিহি ঘুৃমের রাজ্যে ডুবে যায়।
——————————
সকালে মিহির ঘুম ভাঙ্গতে ই চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে অভ্র মিহির দিকে একদৃষ্টি তাকিয়ে আছে। হালকা বাতাসে অবাধ্য চুলগুলো মুখে এসে পড়লে অভ্র চুলগুলো সরিয়ে আবার আগের মতো দৃষ্টি স্থাপন করে। অভ্রকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে মিহি কাথা টেনে মুখ ডেকে নেয়। অভ্র সাথে সাথে কাঁথা সরিয়ে নেয়। মিহি আবার কাঁথা টেনে মুখে দেয়। অভ্র এবার মিহির উপর থেকে কাঁথা নিচে ফেলে দেয়। হালকা শীত অনুভব হতে ই মিহি অভ্রকে জড়িয়ে ধরে।
–আবার ঘুমাবে নাকি।দশটা বাজে।
–কিহ্
মিহি বিছানা ছেড়ে দৌড়ে ওয়াশরুম চলে যায়। দ্রুত ফ্রেশ হয়ে এসে অভ্রকে বলে,
–আপনি আমাকে আগে ডাকেননি কেনো।
–আমি যে আমার ঘুমন্ত টিয়াপখিটাকে মন ভরে দেখছিলাম। ঐ মায়ায় পরিপূর্ণ মুখখানা দেখে আর ডাকতে ইচ্ছে করেনি।
–এখন নিচে গেলে সবাই কী ভাববে। আর আপনি অফিসে যাননি কেনো।
–সবাই জানে আমার টিয়াপাখি অসুস্থ তাই কেউ কিছু মনে করবে না। আর অফিসে যাবো তোমাকে নিয়ে।
–আমাকে কেনো নিয়ে যাবেন।
–কখনো যেনো কোনো সন্দেহ না করতে পারো তাই সাথে সাথে রাখবো। সন্দেহ জিনিসটা খুব খারাপ। যে সম্পর্কে সন্দেহ থাকে তা ক্ষনস্থায়ী হয়। সন্দেহ মনের অসুখ যা কোনো ওষুধ ধারা ই সুস্থ করা সম্ভব না।
মিহি মেকি হাসি দিয়ে নিচে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো তখন ই অভ্র পেছন থেকে ডাকলো,
–টিয়াপাখি
মিহি ঘুরে তাকাতে ই একটা শপিং ব্যাগ দিয়ে বললো,
–এইখানে শাড়ি জুয়েলারি আছে, দাদিমার কাছ থেকে পড়ে আসো।
মিহি ব্যাগটা দাদিমার রুমে নিয়ে রেখে দিয়ে নিচে চলে গেলো। নিচে যেতে ই অপু বললো,
–কী ভাবি এখন কেমন আছেন।
–জ্বি দুলাভাই আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
–আমি দেবর আপনার, দুলাভাই নাহ্।
–তাহলে আমি ও শালিকা আপনার ভাবি না।
–সে কী আমার ভাইয়ের বউকে ভাবি ডাকবো না নাকি।
–তাহলে আমার বোনের বিয়ে করা জামাইকে দুলাভাই ডাকবো না নাকি।
রেনু বেগম খাবার নিয়ে এসেছে, মিহির মুখে খাবার পুরে দিয়ে রেনু বেগম কথাটা বললো,
–তোরা কী বাচ্চা নাকি এভাবে ঝগড়া করছিস যে।
অভ্র নিচে নামতে নামতে বললো,
–আমাকে কবে খাইয়ে দিয়েছো তা ভুলে গিয়েছি, ছেলের বউকে তো দেখছি প্রতি বার ই মুখল তুলে খাইয়ে দিচ্ছো।
–অপু ওরা আমার ছেলের বউ না। মিহি, মিনতি আমার মেয়ে।আর মিহি এ বাসার সবার ছোট , মিহি আদর করবো না তো তোদের মতো দামড়া(ষাড়) গুলোকে আদর করবো নাকি।
মিহি হাসতে হাসতে শেষ। মিহির হাসি দেখে অপু রেগে বলে,
–ছোট বলে তো মিহিকে, বিয়ে তো হয়েছি ই সামনের বছর ই দেখবা কোলে বাচ্চা নিয়ে বসে আছে।
রেনু রাগান্বিত কন্ঠ বললো,
–থাপ্পড় খাবি অপু। মিহি এখন ও খুব ছোট যতই অভ্র বড় হতে পারে, মিহি এখন ও ছোট। আগে মিনতি আর তোর ঘর আলো করে আমার নাতিনাতনি আসবে তারপর মিহি, অভ্রের ঘরে।
মিহি বাচ্চার কথা শুনে লজ্জা পেয়ে দাদিমার রুমে শাড়ি পড়তে চলে গেলো।
দাদিমা শাড়ি পড়ানো শেষে বললো,
–মান অভিমান মিটেছে।
মিহি হেসে মাথা নাড়ালো।
–তোরা দুজন কী নিয়ে যে এতো অভিমান করিস তা ই বুঝতে পারি না।
–আমি করি নাকি আপনার নাতি করে।
–হে এখন করলে ও আমার দোষ হবে, না করলে ও আমার দোষ হবে। নারির ক্ষমতায়ন তো।
অভ্রকে দেখে মিহি রাগ দেখিয়ে বললো,
–আমি যেখানে যাই সেখানে ই আপনার যেতে হবে।
–তোমাকে ছাড়া একমুহূর্ত ও আমার চলে না টিয়াপাখি।
–কী হচ্ছে কী। গুরুজনদের সম্মান দিতে শিখেন।
অভ্র হাসি দিয়ে বললো,
–দাদিমা তুমি কিছু শুনেছো।
–নাহ্ তো।
–হে যেমন নাতি, তেমন দাদিমা।
–হে এখন চলো অনেক আর সময় নষ্ট না করা ই শ্রেয়।
মিহি অভ্র দুজনে ই রেডি হয়ে নিচে নেমে বের হয়ে দরজার সামনে যেতে ই দেখলো মীরা।
মীরাকে দেখে মিহি চমকে যায়। আবার কী অশান্তিময় বার্তা নিয়ে এসেছো…..
চলবে,
#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ৩১
মীরাকে দেখেও অভ্র না দেখার ভাব করে অভ্র মিহিকে নিয়ে চলে গেলো। মীরা অভ্রের এমন কান্ড দেখে অবাক হচ্ছে। যে অভ্র মীরাকে এতো ভালোবাসতো সে কিনা বউ পেয়ে মীরাকে ভুলে গিয়েছে। ভুলে যাওয়াটা ও স্বাভাবিক কারণ মীরা যে ব্যবহারটা অভ্রের সাথে করেছে এতো মীরার উপর ঘৃণ্য দৃষ্টি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মীরা তো এভাবে হার মেনে নেবে না। অভ্রের পিছন পিছন দৌড়ে গেলো মীরা কিন্তু এর আগে ই মিহিকে নিয়ে গাড়িতে উঠে পড়ে অভ্র। মীরার ডাকে অনেকবার কিন্তু এই ডাকে সারা দেয়নি অভ্র।
মীরা গাড়ি নিয়ে অভ্রের গাড়িকে ফলো করে।
অভ্র মিহির এক হাত ধরে আছে অন্য হাতে ড্রাইভ করছে। মিহি অভ্রের দিকে তাকিয়ে আছে।
–এভাবে তাকিয়ে থেকো না টিয়াপাখি, গাড়ি এক্সিডেন্ট করবে।
–এমন কথা কখনো বলতে হয় না। আমি আপনার দিকে তাকাবো না আর কখনো। আমি যখন মরে যাবো তখন বুঝবেন আমি না থাকলে কতোটা কষ্ট হয়।
–মিহি…
জোড়ে চিৎকার করে ডাকটা দিয়ে গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করে দেয়। অভ্র মিহির হাত ধরে কাছে টেনে আনে। কপালে চুমু খেয়ে মাথাটা বুকে জড়িয়ে ধরে।
–আমি দুষ্টুমি করছিলাম টিয়াপাখি। তুমি এটা কী বললে, তোমার কিছু হলে কী আমি বাচবো নাকি। আল্লাহ এর কাছে একটা ই চাওয়া মৃত্যু আসলে যেনো দুজনের একসাথে হয়।
–ছাড়ুন, লেইট হয়ে যাচ্ছে। রাস্তার মাঝখানে এভাবে গাড়ি থামিয়ে রেখেছে অন্য গাড়ি যেতে ও প্রবলেম হচ্ছে।
অভ্র মিহিকে ছেড়ে আবার ড্রাইভ করতে শুরু করে। পাশ থেকে গাড়ির গ্লাস দিয়ে সব দেখে মীরা। ভেতরের রাগটা আরো বেড়ে উঠে।সহ্য হচ্ছে না মিহিকে অভ্রের পাশে দেখে। হয়তো অভ্রকে কষ্ট দিয়ে মীরা ভুল করেছে তাই বলে সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত এতোটা কষ্ট পেয়ে করতে হয়ে তা জানা ছিলো না।
অভ্র মিহি মধ্যে পুরোপুরি ডুবে আছে হাজার চাইলে মীরা এখন অভ্রকে নিজের দিকে ফিরাতে পারবে না। তাই মিহিকে ই নিজের বশে আনতে হবে।
মীরা অভ্রের অফিসে ডুকলো।
অভ্র মিহিকে কেবিনে বসিয়ে একটা মিটিংয়ে এ চলে যায়। মিহি কেবিনে বসে বসে ফোনে ভিডিও দেখছে হঠাৎ মীরা প্রবেশ করে,
–কারো কেবিনে ডুকতে হলে অনুমতি নিয়ে ডুকতে হয় সামান্য ভদ্রতাটুকু ও দেখি আপনার মধ্যে নাই।
–এই মেয়ে তুই কী আমাকে ভদ্রতা শিখাবি, তোর মতো অনেক মেয়ে আমি শায়েস্তা করেছি আর এই পুচকি মেয়ে আমাকে ভদ্রতার কথা বলছে।
–জানেন তো শিক্ষা নিতে বা দিতে বড় ছোট নাই।
–তোর কাছ থেকে শিক্ষা নিতে আসেনি তুই আর কী দেখলে অভ্রের জীবন থেকে সরে যাবি বল।
— এটা অভ্রকে ই জিজ্ঞেস করুন।
–অভ্রকে কী জিজ্ঞেস করবো, তোর মতো মেয়েরা এগুলো ই করে বড়লোক ছেলেদের বিয়ে করে টাকার লোভে। লোভি চরিত্রহীন মেয়ে তুই।
কথাটা বলার সাথে সাথে মিহি মীরা গালে থাপ্পড় মারে।
–অনেক বলেছিস এখন যা। আমি বা আমার হাসবেন্ড এর আশেপাশে তোকে দেখলে খুন করবো।
থাপ্পড় এর ধাক্কা সামলাতে বা পেরে মীরা নিচে পড়ে যায়। এর মধ্যে অভ্র ভিতরে ডুকে, সাথে একজন মধ্যে বয়স্ক পুরুষ এবং মহিলা।অভ্র মিহির কাছে যায়। হাতটা ধরে বলে,
–স্যরি মিহি আমার জন্য তোমার আজকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। উনারা মীরার মা বাবা । আমি কল দিয়ে আসতে বলেছি। আশা করবো আপনারা আমার কথা এবং আপনার মেয়ের কাজ কর্ম দেখে সব বুঝতে পেড়েছেন। মেয়েকে নিয়ে যান, আর যেনো আমাকে বা আমার স্ত্রীকে বিরক্ত না করে তা একটু খেয়াল রাখবেন।
–আমাদের মেয়ের হয়ে আমি ক্ষমা চাচ্ছি বাবা, আমরা বুঝতে পারিনি মীরা এমন কান্ড করবে।
–ঠিক আছে আপনারা এখন আসতে পারেন।
যাওয়ার আগে বলে যাই এই মীরাকে থাপ্পড় মারা আর মা বাবা ডেকে অপমান করা সব কিছু জন্য তোমার বউকে কষ্ট পেতে হবে। আমি এখন যতটুকু কষ্ট পেলাম তার ডাবল আমি তোমাদেরকে ফিরিয়ে দিবো, প্রতিজ্ঞা করে এখান থেকে বের হলাম।
কথাটা বলে ই মীরা বের হয়ে গেলো। ওরা বের হতে ই অভ্র মিহিকে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।
–ভয় পেয়ো না টিয়াপাখি সব ঠিক হয়ে যাবে।সব কিছুর পর এটা ই বলবো আই লাভ ইউ টিয়াপাখি। ভালোবাসি অনেক বেশি ভালোবাসি। যতটা ভালোবাসলে তোমাতে আসক্ত হওয়া যায় ঠিক ততটাই ভালোবাসি।
__________________
মিহি অভ্র বাসায় ডুকার পরপর ই মিনতি আর অনি এসে মিহিকে নিয়ে যায়। অপু এসে অভ্রকে নিয়ে যায়।
–কী হয়েছি বলবি তো।
–তোরা দুইজন কী অপরাধ করেছিস কে জানে। দাদিমা আবার বলেছে তোদের আলাদা করতে।
কথাটা শুনে মিহি গিয়ে বেডে বসে পরে। এই বুড়ি কী শান্তিতে থাকতে দিবে না নাকি।আবার কী ভুল করলাম তা ই তো বুঝলাম না।
–বিরবির করে কী বলছিস। যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে।
–যাবো না। ভালো লাগছে না।
–যে হবে ভাবি এটা দাদিমার আদেশ।
বলে ই অনি টেনে ওয়াশেরুমে দিয়ে আসে। মিহি ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে। দেখে বেডের উপর সাজিয়ে রাখা অনেকগুলো শাড়ি আর জুয়েলারি। মিহি মিনতির দিকে তাকিয়ে বলে
–কীরে আমার কী আবার বিয়ে নাকি।
–হলে হতে ও পারে এতো কথা কেনো বলিস।
–কী পড়বো।
–শাড়ি।
–আমি শাড়ি পড়তে পারি না।
কথাটা বলার সাথে সাথে মিনতি বললো, শাড়ির বাকি জিনিসগুলো পড়েনে। আমি পড়ে দিচ্ছে।
মিনতি আমাকে রেড কালারের শাড়ি পড়িয়ে দিলো,শাড়িটা অবশ্যই বাঙ্গালী স্টাইলে পড়িয়েছে। হাতে কাঁচের চুড়ি। মাথা খোপা করা, খোপায় সাদা রঙের ফুল। পায়ে আলতা, হাতে ও আলতা দিয়ে রাঙ্গিয়ে দিয়েছে।
কেমন যেনো একটা ফিল হচ্ছে। এমন করে কেনো সাজিয়ে দিচ্ছে বুঝলাম না।
–আচ্ছা অনি কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান আছে নাকি।
–ভাবি তুমি কী অন্য কারো বিয়েতে এভাবে শাড়ি পড়ে যাবে।
–তাহলে কী আমার বিয়ে।
–তা জানি না।
–নিশ্চয় জানো কিন্তু আমাকে বলবা না।
–আমাদের দাদিমা বলেছে তোমাকে সাজিয়ে দিতে তাই দিচ্ছি, আর বাকি টুকু জানি না।
মিহি হাতে ফোন নিলো, অভ্রকে কল দিবে। এমন টাইমে মিনতি টান দিয়ে ফোন নিয়ে নিলো,
–আরে সমস্যা কী কল দিতে দিবি তো।
–দাদিমার নিষেধ আছে, কারো সাথে কথা বলা যাবে না।
হইছে বোন আর একটু শান্তিতে কাজ করতে দে তারপর তুই যেখানে ইচ্ছে যা। যাকে খুশি কল দে তা জানি।
রাত প্রায় দশটার মতো বাজে হঠাৎ মিনতি আর অনি আমাকে একটা রুমে নিয়ে যায়। রুমটা দেখে আমার চোখ বের হয়ে যাওয়ার অবস্থা। এতো সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজানো। আমি চারদিকে তাকিয়ে দেখছি খুব সুন্দর একটা সারপ্রাইজ দিলো।
–পনেরো হাজার টাকা না দিলে রুমে ডুকতে পারবেন না অভ্র ভাইয়া।
হঠাৎ এমন কথায় পিছনে ঘুরে তাকাতে ই দেখি মিনতি অপু অনি সবাই রুমে ডুকে দরজা লক করে দিয়ে। অভ্রকে এই কথা বলছে।
–এই আপনি একদম টাকা দিবেন না। মনে হয় শপিং এর টাকা কম পড়ছি ওদের তাই এমন করছে।
–মিহি চুপ কর। টাকা না দিলে আজকে অভ্র ভাইয়া রুমে ডুকতে পারবে না।
অভ্র দরজার ঐপাশ থেকে বললো,
–দরজা না খুললে টাকা দিবো কিভাবে।
ওরা দরজা খুলে অভ্র কয়েকটা টাকাট দূরে ফেলে দেয়। সবাই যখন টাকা নিতে যায় অভ্র রুমে ডুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। অভ্রের এমন কান্ড দেখে আমি হাসতেছি।
–ভাইয়া চিটিং করেছেন এইখানে মাত্র পাঁচহাজার।
–তোরা এই টাকা না নিলে দরজার নিচে দিয়ে আমাকে দিয়ে চলে যা।
এটা বলার সাথে সাথে সবাই চলে যায় টাকা নিয়ে। আমি দাড়িয়ে হাসতেছি, অভ্র পাঞ্জাবি পায়জামা পড়া।
–এভাবে তাকিয়ো না টিয়াপাখি হার্টবিট বেড়ে যায়।
বলে ই আমার দিকে এগোতে থাকে…..
চলবে,
[ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ]