#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ২৮
সবার সামনে দুজন বসে আছে, মিহি বড্ড ভয় পাচ্ছে। মিহি অভ্রর হাত চেপে ধরে নিচের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। রুমে বিস্তার নিরবতা। সবাই শুধু দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে, খুব গম্ভীর করে রেখেছে সবার মুখ। হঠাৎ দাদিমা অট্টহাসি দেয়। এতে মিহি চমকে উঠে উপরের দিকে তাকায়।
–এতো ভয় পেতে হবে না নাতবৌ। আমি তো চেয়েছিলাম তুই নিজের মুখে এসে আমাকে বল, এই বাসা ছেড়ে তুই কখনো বাহিরে পা বাড়াবি না। আমার নাতিকে ভালোবেসে আগলিয়ে রাখবি। তুই মুখে না বললে ও উওর গুলো আমরা পেয়ে গিয়েছি। এখন থেকে তুই আর অভ্র এক সাথে ই থাকবি।
এই রাতের বেলা আমরা সবাই জেগে আছি কেন জানিস, কারণ আজ আমার জন্মদিন। সবাই ঘুম থেকে উঠিয়ে কেক কাটালো। এর তোদের দুই চোরকে ধরতে পারলাম।
উফফ মিহি কী ভয়টা ই না পেয়েছিস, যা ই হক এসব লুকোচুরি থেকে মুক্তি পেলাম।
অভ্র মুখে হাসি রেখে বললো,
–আমার কিন্তু দাদিমা এভাবে লুকোচুরি করতে ভালো ই লাগছিলো, মিহি শুধু ভয় পেতো।
অভ্ররে এমন কথা শোনে মিহি অভ্ররে দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো,
এভাবে তাকাতে দেখে অভ্র মিহিকে বললো,
–চলো, রুমে যাই।
অভ্র রুমে যেতে ই মিহি দরজা লক করে দেয়।
–আরে এতো তাড়া কিসের বউ, আমি তো চলে যাচ্ছি না। সারা রাত ই পড়েছে আছে ভালোবাসার জন্য।
এটা বলার সাথে সাথে মিহি ধাক্কা দিয়ে অভ্রকে বেডের উপর ফেলে দেয়। অভ্রের উপরে বসে, অভ্রে মুখ চেপে ধরে বলে,
–এভাবে লুকোচুরি করতে তোর ভালো লাগতো। আর এতো ভেটকি (হাসি) দিয়েছিলি কেনো আমি যখন ভয় পাচ্ছিলাম।খুব ভালো লাগছিলো তোর।
–কী খাও, তুমি বলো তো এতো ওজন কিভাবে বানালে। মনে হচ্ছে আমার পেটের উপর দশ মন একটা আটার বস্তা পড়েছে। মিহিকে ইচ্ছে করে অভ্র রাগাচ্ছে।
মিহি রাগান্বিত হয়ে অভ্রের উপর কয়েকটা কিল বসিয়ে দিলো।
মিহিকে নিচে ফেলে দিয়ে অভ্র উপরে চড়ে বসলো,
–খুব রাগ হচ্ছে টিয়া পাখি। রাগলে কিন্তু অনেক সুন্দর লাগে এমনি তো চোখ সরাতে পারিনা।
বলে ই অভ্র ওষ্ঠদ্বয় আবদ্ধ করে নিলো।
দুইমিনিট পর
হঠাৎ অভ্রের ফোন বেজে উঠলো, ফোন হাতে নিতে ই দেখে মীরা কল দিয়েছে। মীরার কল দেখে অভ্র ফোন অফ করে রাখে।
–এতো রাতে কে কল দিয়েছে।
মিহি প্রশ্ন করতে ই অভ্র উওর দিলো,
–ফোন না এলার্ম বাজলো।
মিহি আর কিছু বললো না, ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়লো।
___________________________
সকালে ঘুম থেকে উঠে, কিচেনে গেলো মিহি। কিচেনে যেতে ই দেখলো মিনতি দাড়িয়ে দাড়িয়ে রেনু বেগমের সাথে গল্পজুড়ে দিয়েছে। মিহিকে দেখে ই বললো,
–শপিং এ নিয়ে যাবি কবে।
–কিসের শপিং।
–আমি যে ঐ দিন জেগে জেগে তোকে আর অভ্র ভাইকে পাহাড়া দিয়েছি।
–ওহ্ কিছু সময়ের জন্য তোকে দারোয়ানকে বানিয়ে দেখলাম, কেমন লাগে।
–ঐসব কিছু জানি না। আমাকে শপিং এ নিয়ে যাবি মিহি।
— লজ্জা শরম না থাকলে যা হয় মিনতি। আমি তোর ছোট।
বলে ই রুমে চলে যায়, মিহি। মিনতিকে এরকম ধোকা আরো অনেকবার দিয়েছে মিহি। মিনতি অনেক শপিং এর পাগল তাই যা বলা হয় তাই ই করে।
মিহি রুমে গিয়ে ই এক গ্লাস পানি নিয়ে অভ্রের উপরে ঢেলে দেয়।
মুখের উপর পানি পড়তে ই অভ্র দ্রুত উঠে বসে। মিহি অভ্রের দিকে তাকিয়ে জোরে হাসতেছে।
–কী করলে এটা??
–আমি জেগে আছি, আপনি ঘুমাবেন কেনো।
–তুমি জেগে থাকলে আমি ঘুমাতে পারবো না নাকি??
–নাহ্।
–এ কেমন অদ্ভুত নিয়ম।
–অদ্ভুত ই।
মিহির সাথে আর কোনো কথা না বলে অভ্র ওয়াশরুম চলে গেলো।
_________________
অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে অভ্র, মিহি ও রেডি হয়ে অভ্রের সামনে দাড়ালো,মিহি এভাবে রেডি হয়ে আসায় অভ্র অবাক হেয় জিজ্ঞেস করলো
–কোথায় যাবে তুমি?
–আপনার সাথে অফিসে যাবো।
–অফিসে কোনো কাজ নাই তোমার।
–আমি যাবো বলছি তো যাবো ই।
–বায়না করো না মিহি, আজকে অফিসে যেতে লেইট হবে। অফিসের বাহিরে একটা মিটিং আছে। মিটিংটা অনেক ইম্পরট্যান্ট।
–আমি যদি না যেতে পারি তাহলে আপনি ও যেতে পারবে না।
–আমার মিষ্টি বউকে বিকেলে ঘুরতে নিয়ে যাবো, এখন বাসায় থাকো।
এটা বলার সাথে সাথে মিহি বেলকনিতে চলে যায়। অভ্র টাইটা বেধে হাতে ওয়াচটা পড়ে নিলো।
মিহি রাগ করেছে, অভ্র বেলকনিতে গিয়ে দেখে মিহি দাড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে এখন ই দুচোখে বর্ষা নামবে।
অভ্র কোনো কথা না বলে মিহিকে কোলে তুলে নিলো। মিহি ও কোনো কথা বলছে না। রাগ করে ঠিক করেছে অভ্রের সাথে কথা বলবে না। অভ্র বিনাবাক্যে নিচের দিকে যাচ্ছে। নিচে সবাই বসা এভাবে অভ্রের কোলে দেখলে মানসম্মান নিয়ে আর রুমে যেতে পারবে না। তাই মিহি বললো,
–নামান আমাকে।
–রাগ না ভাঙ্গলে নামাবো না। মাফ করে দেও আমাকে
–আপনার মতো নির্লজ্জ আমি হতে পারবো না। নামন আমাকে।
–তুমি মাফ না করলে আমি তোমাকে এভাবে নিচে নিয়ে যাবো ই এখন তুমি যতই নির্লজ্জ বলো।
মিহি কোনো উপায় না পেয়ে বললো,
–হে মাফ করেছি এখন নামান।
অভ্র হাসি মুখে নামিয়ে দিলো, মিহি আঙুল এর ফাকে অভ্রের আঙ্গুলগুলো রেখে আলতো করে হাতে একটা চুমু খেলো।
দুজন হাটতে হাটতে গাড়িতে চলে গেলো। বারাবরের মতো এক হাতে ড্রাইভ করছে আর অন্য হাতে মিহির হাত ধরে আছে।
কিছুক্ষন পর একটা বিলাসবহুল রেস্টুরেন্টে এ গাড়ি থামালো অভ্র। মূলত আজকের মিটিংটা এখানে ই।
মিটিং শেষ করার সাথে সাথে একটা ছেলে এসে অভ্রকে বললো,
—আপনার সাথে কথা ছিলো।
অভ্র দেখে নিলো ছেলেটাকে চিনে নাকি।
কিন্তু দেখলো ভালো করে চিনতে পারলো না।তাও বললো,
–জ্বি বলুন।
–আমি সোজা কথা বলতে ভালোবাসি। আপনার পাশে যে মেয়েটা বসা উনাকে আমার খুব ভালো লেগেছে আপনি চাইলে আপনার বাসায় আমি বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারি।
কথাটা শোনের অভ্রের বেশ রাগ হচ্ছে। কত বার বলেছে বাহিরে বের হলে শাড়ি পড়ে বের হতে কিন্তু এই মেয়ে তো কথা শোনে না পড়েছে কী, লং গোল জামা। দেখতে তো বাচ্চাদের মতো লাগতেছে। তাও রাগ কন্ট্রোল করে বললো,
–পাশে বসা মেয়েটা আমার স্ত্রী।
ছেলেটা কথাটা শোনে কিছু একটা ভেবে স্যরি বলে চলে গেলো। অভ্র ও মিহিকে নিয়ে গাড়িতে বসলো উদ্দেশ্য অফিসে যাবে।
মীরার নম্বর থেকে কল আসছে তাই ফোন সাইলেন্ট করে রেখেছে। সিম বন্ধ ও করতে পারছে না কারন সব জায়গায় এই নম্বর দেওয়া। অভ্রের টেনশনে হচ্ছে খুব মিহি জানতে পারলে কী হবে। কেবিনে মাথা নিচু করে এসব ভাবছে অভ্র। মিহি ওয়াশরুম গিয়েছে।
–অভ্র
হঠাৎ ডাকটা শোনে সামনের দিকে তাকাতে ই দেখলো মীরা।
মীরাকে দেখে অভ্র কী বলবে বুঝতেছেনা। বাসা থেকে উঠে দাড়ায়। অভ্র উঠে দাড়াতে ই মীরা দ্রুত গিয়ে অভ্রকে জড়িয়ে ধরে।
ঠিক তখন ই মিহি কেবিনে প্রবেশ করে।
চলবে,
#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ২৯
মিহি অভ্রকে এমন অবস্থা দেখে সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে যায়। অভ্র মীরাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে দ্রুত এসে মিহিকে ধরে। মিহিকে এভাবে অজ্ঞান হারাতে দেখে অভ্র ভয় পেয়ে যায়।কোলে তিলে নেয়, ড্রাইভারকে ডাকে। অভ্র মিহিকে নিয়ে গাড়ির পেছনে বসে। বোতল থেকে পানি নিয়ে মুখে ছিটিয়ে দেয়।মিহিকে অনেক ডাকে। কিন্তু কোনো কিছুতে ই কোনো কাজ হয়নি।
অভ্রের গাড়ির পেছনে মীরা ও গাড়ি নিয়ে আসছে। অভ্রকে মেয়েটার সাথে দেখে জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে মীরা। মীরা এইটুকু বেশ ভালো ই বুঝেছে মেয়েটা অভ্রের বউ। বউ হক আর যা ই হক অভ্রকে মীরা ভালোবাসে। রাগের বশে যা ই বলুক দিন শেষে মীরার সব ভালোবাসা অভ্রের জন্য ই।
একটা হসপিটালের সামনে অভ্র গাড়ি থামাতে বললো, মিহিকে নিয়ে সোজা ইমারজেন্সি কক্ষে চলে গেলো। অভ্র এতোটা উত্তেজিত হয়ে ডাক্তারদের ডাকতে যায়, সব নার্সরা চলে আসে। সাথে ডাক্তার ও আসে।
মীরা পেছনে দাড়িয়ে আছে। মিহির জ্ঞান ফিরেছে। কিন্তু কোনো কথা বলছে না।হঠাৎ মেন্টালি শকড থেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলো।
— মিস্টার অভ্র আপনি একটু আমার কেবিনে আসুন।
অভ্র মিহির হাত ছেড়ে ডক্টরের সাথে যেতে লাগলো। কিন্তু মীরা যে এই কক্ষে ছিলো তা দেখেনি। অভ্রের চার পাশে কী হচ্ছে তা মাথায় ডুকছে না। শুধু একটা ই টেনশন মিহি কী ভুল বুঝলো।
অভ্র চলে যাওয়ার সাথে সাথে মীরা মিহির পাশে গিয়ে বসে। অভ্রের দিকে হাত বাড়ালে হাত ভেঙ্গে দিবো।অভ্র আমার ছিলো, আমার আছে আর আমার ই থাকবে। আর যদি অভ্রের সাথে বেশি মেলামেশা করার চেষ্টা করো তাহলে তোমাকে কিছু করবো না সোজা অভ্রকে মেরে ফেলবো। আমি অভ্রকে পাবো না তো কেউ পাবে না। তুমি বলতে পারোএটা কেমন ভালোবাসা। আমার ভালোবাসা এমন ই। তোমাদের বাড়িতে আমার লোক আছে যে তোমাকে সর্বক্ষণ চোখে চোখে রাখবে। তাই অভ্রর থেকে দূরে থাকবা। ফোন থেকে অভ্র আর মীরার কয়েকটা পিক দেখলো। যেগুলোতে পাশাপাশি বসা ছিলো অভ্র মীরা।
মিহি কোনো কথা বলছে না। শুধু চোখ থেকে অনবরত পানি গড়িয়ে পড়ছে। ভালোবাসার মানুষের সাথে অন্য মেয়েকে কথা বলতে দেখলে ই সহ্য হয় না। আর মিহি পাশাপাশি বাসা ছবি দেখেছে। তারউপর একটু আগে এভাবে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় দেখছে। খুব বিশ্বাস করতো অভ্রকে। সব বিশ্বাস ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে।৫৬
মীরা মিহির কাছ থেকে চলে আসার কিছুক্ষনের মধ্যে ই অভ্র ওষুধ নিয়ে প্রবেশ করলো, অভ্রকে দেখে মিহির চিৎকার করে কান্না করতে ইচ্ছে করছে। এখন যদি মরে যেতো পারতো তাহলে সব থেকে খুশি হতো মিহি। কষ্ট মাত্রাটা এতো ই বেশি যে নিজের মৃত্যু কামানা করতে ও দুবার ভাবছে না মিহি।
–টিয়াপাখি কষ্ট হচ্ছে খুব।
মিহি কান্না বন্ধ করে অন্য দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো, আমার সামনে এতো নাটক না করলে ও পারেন। আমি তো সব জেনে ই গিয়েছি।
মিহি অভ্রকে মুখফুটে কিছু বললো না। টিয়াপাখি অন্যদিন ডাকটা অন্যরকম অনুভূতি কাজ করতো। আর আজকে ঘৃনা হচ্ছে।
অভ্র মিহিকে এতো ভাবতে দেখে কোলে তোলে নিলো। কোলে নেওয়ার সাথে সাথে মিহি বললো,
–আমি হেটে যেতে পারবো।
–তুমি অসুস্থ
–আমি অসুস্থ তা আমি বুঝে নিবো। আপনাকে বুঝতে হবে না।
–ভুল বুঝো না টিয়াপাখি। বিশ্বাস রাখো আমার উপর।
–আমাকে নামান, আমি হেটে যাবো।
–একদম চুপ, আমার বউ আমি যা ইচ্ছে করবো।
মিহি আর কিছু বলো না জানে এখন হাজার বললে ও অভ্র কথা শোনবে না।
গাড়িতে বসে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে মিহি। চারদিকে এতো সুন্দর তাও মিহির অসহ্য লাগছে। এই সময়টা খুব ভালো কাটতো যদি ঐ মেয়েটার সাথে দেখা না হতো।
অভ্র কয়েকবার মিহিকে ডাকছে কিন্তু মিহি কোনো সাড়া দেয়নি। শুধু একবার বলেছে আমাকে একা থাকতে দেন। অভ্র ও চাচ্ছে মিহিকে মীরার ব্যাপারে সব বলতে , অনেক সময় লাগবে তাই বাসায় গিয়ে সব বুঝিয়ে বলবে। কিন্তু মিহি তো কোনো কথা ই বলতে চাচ্ছে না। মিহি যতটা অভ্রকে ভালোবাসে তার থেকে বেশি অভ্র মিহিকে ভালোবাসে। কখনো চায়নি কষ্ট দিতে, কিন্তু আজকে মীরার জন্য মিহি কষ্ট পেলো। মীরা অতীত কিন্তু মিহি বর্তমান। বর্তমানকে ই আকড়ে ধরে অভ্র ভবিষ্যত পাড়ি দিতে চায়।
__________________
বিছানায় শুয়ে আছে, বাসায় আসার পর অবশ্য সবাই এসে দেখে গেছে। কারো কোনো কথা ই মিহির কানে যাচ্ছে না। শুধু বার বার মেয়েটার কথা কানে বাজতেছে। অভ্রর সাথে মেলামেশা করলে অভ্রকে মেরে ফেলবে। অভ্রের সাথে মেয়েটার সম্পর্ক ছিলো যার প্রমাণ ঐ ছবিগুলো। তাহলে কী এই জন্য ই বিয়েটা ছয়মাসের জন্য। হে হতে পারে বিয়েটা ছয় মাসের। অভ্র তো বলে ই দিয়েছিলো ছয় মাস পর ডিভোর্স। এই কয়েকদিনে মিহি অভ্রের প্রতি যে অনুভূতিগুলো মনের কোনে উকি দিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিহি দোষ।
মিহি যেমন অভ্রকে ভালোবাসে হয়তো ঐ মেয়েটা ও অভ্রকে তার চেয়ে বেশি ভালোবাসে।
হঠাৎ অভ্র রুমে ডুকলো, এতোক্ষণ অভ্র বাহিরে ছিলো।
–টিয়াপাখি খাবারটা খেয়ে নেও।
–খাবো না।
–না খেলে আবার শরীর খারাপ করবে।
–আমাকে নিয়ে আপনার না ভাবলে ও চলবে।
— আমার বউ আমি ভাববো না তো কে ভাববে।
–ঐটা আপনার টেনশন করতে হবে না। আপনার ভাবনার মানুষ তো আছে ই তাকে নিয়ে আপনি ভাবনায় ব্যস্ত হয়ে পড়তে পারেন।
–প্লিজ টিয়াপাখি আমাকে ভুল বুঝো না। আমি তোমাকে সব বলতে চাই ঐ সুযোগটা আমাকে দেও।
–আর কী সুযোগ দিবো আমি সব বুঝে ফেলেছি।৩৬
এর মধ্যে ই দাদিমা রুমে ডুকে যায়। তাই দুজন ই কথা বলা অফ করে দিয়ে সামনে তাকায়,
–তোরা কী আবার ঝগড়া শুরু করেছিস। তাহলে কিন্তু তোদের আবার আলাদা করে দিবো।
–দাদিমা আমি আপনার সাথে ই ঘুমাবো। এতোদিন আপনি আলাদা করে দিয়েছিলেন এখন আমি নিজে আলাদা হতে চাচ্ছি।
দাদিমা হেসে উওর দিলল স্বামীর সাথে অভিমান করে বুঝি এই কথা। স্বামী স্ত্রী মধ্যে মান অভিমান, রাগারাগি যা ই বলিস তা রাতের ঘুমের আগে শেষ করে ফেলতে হয়। তাই তোদেরকে সময় দিচ্ছি তোরা দুজন ঠিক হয়ে নেয়।
দাদিমা রুম থেকে চলে যায়।
–অভ্র মিহির কাছে গিয়ে মুখ চেপে ধরে।
–এই কী বলিস তুই কান খুলে শোনে রাখ, আমি তোকে ভালোবাসি। আর আমাকে তুই ভুল বুঝবি না একদম।
মিহি অভ্রকে সরিয়ে বললো,
–নিজের চোখে দেখার পর ও বিশ্বাস করতে নিষেধ করছে।
–সব সময় নিজের চোখের দেখা ঠিক হয়না মিহি।
–প্রতিদিন অফিসে মনে হয় এগুলো ই করেন তাই তো।
এবার মিহিকে সজোড়ে একটা থাপ্পড় মারে অভ্র।
থাপ্পড় মেরে জড়িয়ে ধরে অভ্র। মিহির চোখের পানি মুছে দিয়ে। কপালে চুমু খায়।
–প্লিজ টিয়াপাখি ভুল বুঝো না। অনেক ভালোবাসি তোমাকো এটা বিশ্বাস করো। আমি চাইনা তুমি কষ্ট পাও।
মিহি সামনে তাকাতে ই দেখে দরজায় কারো ছায়া দেখে যাচ্ছে।
তাহলে কী সত্যি ই ঐ মেয়েটার লোক এই বাড়িতে আছে যে আমাকে চোখে চোখে রাখে। মিহি অভ্রকে ধাক্কা দিয়ে বেড থেকে নেমে দরজার দিকে যাচ্ছে, দেখতে হবে মানুষটা কে। কার ছায়া দেখতে পেলাম….
চলবে,
[ভুলগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, ধৈর্য সহকারে পড়ুন]