তোমাতে আসক্ত পর্ব-২২+২৩

0
3213

#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ২২

মিহির পেছনে দাদিমাকে দেখে থমকে যায়। এখন কী বলে ব্যাপার টা সামলাবে তা ভাবছে। মিহি পুরোপুরি নিষেধ অভ্রের সাথে কথা বলা, অভ্রের সামনে যাওয়া।

–আমার অনুমতি ছাড়া বের হয়েছিস কেনো নাতবৌ।

–দাদিমা উনার সাথে একটু কথা ছিলো।

উনি আমার হাতটা ছাড়িয়ে গাড়িতে উঠে চলে গেলেন। আমি দাদিমা কী বলছে তারদিকে কান না দিয়ে অভ্ররে গাড়ির দিকে তাকিয়ে আছি। আমি অভ্রকে থাপ্পড় মেরেছি বলে কী আমার এতো কষ্ট হচ্ছে নাকি আমি অভ্রকে ভালোবেসে ফেলেছি তাই দূর থাকতে কষ্ট হচ্ছে।

–এই তোর কথা কানে যায় না।

দাদিমার দমকানো কন্ঠ শোনে ভাবনা বাদ দিলাম,

–হে দাদিমা বলেন।

–চল বাসার ভিতরে চল।

বাসার সবাই আমার এমন কান্ড দেখে হাসতেছে। দাদিমা উপরে যাওয়ার পর মিনতি আর অপু এসে আমার পাশে সোফায় বসে।

–কেমন লাগে এখন অভ্রের থেকে দূরে থাকতে ভাবি??

মিনতি প্রশ্ন রাগি লুক দিয়ে মিনতির দিকে তাকিয়ে বলি,

–আমার কোনো কষ্ট লাগছে না, শুধু সরি বলতে গিয়েছিলাম।

–তাই নাকি ভাবি, গতকাল এমন পাকামি না করলে ই হতো। অভ্র ভাইয়া তোকে কী এমন জ্বালিয়েছে যে তুই বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিস। আগে ও বাবার বাড়ি চলে গিয়েছিস। এবার বুঝো মজা দাদিমা এবার বেশ রাগ করেছে। অভ্র ভাইয়া চাইলে ও দাদিমা তোকে আর অভ্র ভাইয়াকে এক সাথে থাকতে দিচ্ছে না।

–এই শোন, তুই আমাকে এতো ভাবি ভাবি করবি না। আমার এতো শখ নাই উনার সাথে থাকার জন্য। আমি একটা ভুল করেছি শুধু তার ক্ষমা চাইতে গিয়েছিলাম।

এবার অপু বললো,

–বাহ্ ভাবি, আপনি ভাঙ্গবেন কিন্তু মচকাবেন নাহ্।শোনেন আমার ভাই ও কিন্তু কম না দেখবেন আপনার কী অবস্থা করে।

—তাই নাকি দেবর সাহেব, দেখা যাবে।

ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে মিহি উপরে চলে গেলো। এতো ভাব নিয়ে যে চলে আসলো, আসলে তো মিহি সত্যি ই চায় অভ্রের কাছে ক্ষমা চেয়ে সব জামেলা মিটে যাক।

_________________

ফোনে মিহির ঘুমন্ত মুখটা দেখছে আর হাসতেছে। খুব মায়া হয় এই মুখটা দেখলে।মিহির মধ্যে অনেক বাচ্চা সভাব আছে যা অভ্রকে আরো বেশি কাছে টানে। ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসা বুঝাতে চেয়েছিলো কিন্তু পারেনি। আজকে সকালে যখন মিহি অভ্র দিকে তাকিয়ে ছিলো ইচ্ছে করছিলো নিজের কাছে এনে খাবার টা মুখে তোলে খাইয়ে দিতে। কারণ মিহি শুধু অভ্রের দিকে ই তাকিয়ে ছিলো খাবার খাচ্ছিলো না।
সকলের দৃষ্টি এড়িয়ে অভ্র আর চোখে মিহিকে ঠিক ই দেখছিলো।

তারপর যখন বাসা থেকে বের হয়ে আসে অভ্র মনে মনে চাচ্ছিলো মিহি যেনো অভ্রের সামনে আসে, তাহলে বুঝবে সত্যি ই মিহি অভ্রকে মিস করছে।
ঠিক তাই হলো যখন মিহি এসে পিছন থেকে হাতটা ধরলো ঠিক তখন ই ইচ্ছে করছিলো, মিহিকে কাছে টেনে এনে ভালোবাসার একটা পরশ কপালে দিয়ে চলি আসি। কিন্তু নিজেকে অনেক কষ্টে গম্ভীর করে রেখেছিলাম। আর ঠিক সময়ে দাদিমা ও চলে এসেছে। আর একটু কষ্ট পেয়ে আমার শূন্যতাটা মিহি ঠিকভাবে অনুভব করুক যেনো আর কোনো দিন নিজ থেকে অভ্রকে ছেড়ে যাওয়ার সাহস না করে।

কিন্তু আমার যে অতীত আছে তা শোনার পর কি মিহি আমার জীবনে থাকবে।

মীরা যাকে আমি ভালোবাসতাম। মন থেকে চাইতাম মিরা যেনো আমার বউ হয়। মিরি আমার ফ্রেন্ড এর বোন। আমার থেকে তিন বছরের ছোট খুব অহংকারি একটা মেয়ে। মীরা নিজ থেকে এসেই কথা বলছিলো, ভালোবাসি কথাটা মীরা ই আমাকে আগে বলেছিলো। আমার ও মীরাকে খারাপ লাগতো না তাই আমি ও মীরার প্রস্তাবে রাজি হয়ে গিয়েছিলাম।

আমার অনার্স শেষ যখন ছিলো তখন ই আমাদের সম্পর্কটা শুরু হয়। আজ দুইবছর, সম্পর্কের প্রথম ভালো ই ছিল, আমার মধ্যে এতো আবেগ ছিলো না কিন্তু মীরা মধ্যে অনেক আবেগ ছিলো। সম্পর্কে প্রথমে আমি বেশি একটা পাত্তা দিতাম না। কিন্তু যখন ই সম্পর্কে বয়স এগারো মাস তখন থেকে ই মীরা কেমন পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিলো, কথা বলতে চাইতো না। দেখা ও করতো না। ফোন দিলে প্রায় সময় ই ব্যস্ত পাই।

মীরার এমন পরিবর্তন দেখে আমার খুব খারাপ লাগতো প্রথমে আমি পাত্তা দিতাম না, এগারো মাস পর মীরা আমাকে অবহেলা করতে শুরু করে আর আমি পাগলের মতো মীরার পিছনে ঘুরতে থাকি।

তারপর সম্পর্ক চলতে থাকে এক তরফা মীরা শুধু মাঝে মাঝে কথা বলতো। এতে ই আমি খুশি থাকতাম। সম্পর্ক যখন চৌদ্দ মাসে পা দেয় তখন একদিন শোনলাম মীরা তার বাবা মায়ের সাথে কানাডা চলে যাবে।

ঐদিন আমি অনেক কেদে ছিলাম,ছেলেদের নাকি কাঁদতে হয় না। তাও বড্ড বেশি কষ্ট হচ্ছিল মীরা চলে যাওয়ার কথা শোনে।

মীরা লাস্ট আমার সাথে দেখা করতে আসে, যেদিন কানাডা চলে যাবে ঐ দিন সকালে।
খুব কেঁদে ছিলাম আমি, শুধু আমি না মীরা ও ঐদিন কেদে ছিলো।

মীরা কেনো কেঁদে ছিলো জানে, কারণ আমাদের সম্পর্ক পর পর ই মীরা রিফাত নামের একটা ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ছেলেটার সাথে যখন সম্পর্কটা গভীর হচ্ছিল তখন ই আমাকে অবহেলা করা শুরু করে। আমার কান্না দেখে হয়তো নিজের মধ্যে
অপরাধবোধ কাজ করছিলো, যে আমাকে ঠকাচ্ছে। তাই মীরা ঐদিন রিফাত সম্পর্কে সব বলে। আমার কাছে ক্ষমা ও চায়। একটু বেশি ই ভালোবাসতাম তাই তো ভুলগুলো না চাইতে ও ক্ষমা করে দিয়েছিলাম।

মীরা কানাডা চলে যায়।মীরা চলে যাওয়ার পর একদিন ভালোভাবে কথা হলে তো দশ দিন হতো না, তাও কিছু বলতাম না। চাইতাম আমাদের সম্পর্কটা থাকুক।

মিরা কানাডা যাওয়ার এক বছর পর বাসা থেকে বিয়ের জন্য বলে, আমাকে বিয়ের জন্য রাজি হওয়ার জন্য মা দাদিমা অনেক কৌশল অবলম্বন করে তাও রাজি হইনি তাই বাধ্য হয়ে অপুর বিয়ে ঠিক করে।

অপুর বিয়ের দিন,
হঠাৎ মীরা কল দেয়। এক বছরের ভিতর কখনো আমাকে কল দেয়নি, নিজে থেকে সব সময় আমি ই কল দিয়েছি। বেশ অবাক হয়ে রিসিভ করতে ই ঝাঁঝালো কণ্ঠে ভেসে আসে। খুব বাজে ব্যবহার করে আমার সাথে। এতো মানুষ এর সামনে আমি কিছু বলতে পারছিলামা। কিন্তু লাস্ট কথাটায় আমাকে খুব বাজে বাজে হিট করে। কথাটা ছিলো,

“অভ্র তুমি আমার জন্য পারফেক্ট না। আমার মতো মেয়ের সাথে কথা বলতে পারো এটা তোমার ভাগ্য পাড়লে আমার থেকে সুন্দর মেয়ে বিয়ে করে দেখাও, যদি তোমার ঐ কলিজা থাকে। বামুন হয়ে চাঁদে হাত দেও। রিফাত এর মতো হয়ে দেখাও পারলে তারপর আমার সাথে কথা বলতে আসবা”

মিহিকে প্রথাম দেখাতে ই ভালো লেগেছিলো, মিহি মীরার থেকে অনেক সুন্দর। তাই আর দেরি করলাম না। পরের টুকু আপনারা জানেন।

অবশ্য মিহির সাথে আমি অন্যায় করেছি।ফার্স্ট এ মিহিকে আমি এতো একটা দেখতে পারতাম না, মিহি সামনে আসলে ই মীরার বলা কথা গুলো মনে পড়তো। আস্তে আস্তে মিহির আচরণ কথা বলার স্টাইল আমাকে মুগ্ধ করে। আমি এখন মিহিকে আঁকড়ে বাচতে চাই। মীরার দেওয়া প্রত্যেকটা কষ্ট ভুলে যেতে চাই।

মীরাকে চেয়ে ছিলাম মিহি আর আমার ছবি পাঠিয়ে দেখিয়ে দিতে ওর থেকে ভালো মেয়ে বিয়ে করেছি কিন্তু ঐ দিনের পর থেকে ফেসবুক আসেনি।

ডায়রির পাতায় লিখাগুলো লিখে সামনে তাকতে ই দেখে মিহি দাড়িয়ে আছে রাগি লুক দিয়ে। তাহলে আমার সব লিখা পড়ে ফেলেছে মিহি।

চলবে।

#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইলাম
#পর্ব ২৩

এই মুহুর্তে মিহি আমার হাতের ডাইরিতে লেখাগুলো পড়লে আমাকে অবশ্য ই ভুল বুঝবে। মিহি যেভাবে তাকিয়ে আছে আল্লাহ জানে কী ভাবছে।

আচমকা ই আমাকে জড়িয়ে ধরে বললল,

–আমি না হয় ভুল করেছি তাই কী আমাকে এভাবে শাস্তি দিবেন। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে অভ্র আই এম সরি। প্লিজ ক্ষমা করে দিন আর কখনো আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করবো নাহ।

মিহির এতো আদর মিশ্রিত কথা শোনে অভ্রের রাগ ভেঙ্গে গেলো। অভ্র ও পরম উষ্ণতায় বহুডোরে জড়িয়ে নিলো। মিহির খোলা চুলে মন মাতানো ঘ্রাণে মাতাল করে তোলছে অভ্রকে। চুলে মুখ ডুবিয়ে দিলো অভ্র।

হঠাৎ ই অভ্রের ফোন বেজে উঠলো,বিরক্তি নিয়ে ফোন রিসিভ করতে ই দাদিমার বজ্রকন্ঠ শোনতে পেলে,

–মিহি কী তোর অফিসে গিয়েছে।

অভ্র মিহির দিকে তাকিয়ে বললো,

–নাহ্ দাদিমা, আপদটা আসেনি তো।

মিহি এবার বড় বড় চোখ করে অভ্রের কাছ থেকে ফোনটা এনে কল কেটে দিয়ে জিজ্ঞেস করে,

–আমাকে আপনি আপদ বলছেন।

–আরে না তুমি তো আমার মিষ্টি বউ আপদ বলবো কেনো।

–তাহলে কী বলতে চাচ্ছেন আমি কানে কম শোনি।

–তা কখন বললাম।

–আপনি আপদ বলেছেন আমাকে আমি কিন্তু শোনেছি।

–এমন মিষ্টি বউকে কী কেউ আপদ বলে।লক্ষী বউ আমার রাগ করে না।

–রাগ করবো না একটা শর্তে…..

অসহায় ভাব নিয়ে মিহি বললো,

–কী শর্ত?

–একটা সত্যি কথা বলুন তো রাতে আপনি দাদিমার রুমে গিয়ে কী আমাকে ওষুধ খাইয়ে দিয়ে এসেছিলেন।

অভ্র মাথার চুলগুলো উপরের দিকে তুলে মুচকি হাসি দিয়ে বললো,

–হুম।

–আমার শর্ত কিন্তু এটা নাহ্

–তাহলে কী??

–রাতের বেলা ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে।

–দাদিমার নিষেধ আছে তোমার সাথে দেখা করা, কথা বলা।

–আপনি এই নিষেধ মানবেন??

–দাদিমার কথা তো মানতে ই হবে, এই সব হয়েছে তোমার জন্য। তুমি যদি ঐদিন বাসা থেকে বের না হতে তাহলে আজকে আমাদের আলাদা থাকতে হয়।

–আমি কিছু জানি না, যা বলছি তা ই করতে হবে। চলি বায়।

মিহি চলে যেতে নিলে হাত ধরে ফেলে অভ্র। হাত ধরে টেনে অভ্রে কাছে নিয় আসে। পিছন থেকে জড়িয়ে ধরতে গেলো ই শোনতে পায় স্যার এই ফাইলা একটু দেখবেন প্লিজ…

— সরি স্যার আমার নক করা টা উচিত ছিলো। বলে ই সামির চলে গেলো।

এমন অবস্থায় অভ্র, মিহিকে দেখে সামির ও খুব লজ্জা পায়।

মিহি এবার অভ্রের দিকে তাকিয়ে বুকে উপর কয়েকটা কিল দিয়ে দিলে, অভ্র মিহির কোমর জড়িয়ে ধরে দাড়িয়ে আছে, আর হাসতেছে।

–আপনি একটা নির্লজ্জ।

–তুমি তো নির্লজ্জ বউ।

–নাহ্ আমি নির্লজ্জের বউ নাহ্

–এতো নির্লজ্জ নির্লজ্জ করলে কিন্তু এখন সত্যি ই নির্লজ্জতা দেখাবো।

–বাজে লোক একটা ছাড়ুন। চলে যাবো আমি।

–যাও নয়তো দাদিমা বুঝে ফেলবে। কী কপাল আমার বউ এর সাথে দেখা করা ও নিষেধ।

–কাজ শেষ করে দ্রুত বাসায় চলে আসেন।

–আমি তো তোমাতে আসক্ত হয়ে আছি কাজ করবে না৷ তুমি যাও আমি বাসায় ফিরে আসতেছি।

____________________

বাসায় আসার সাথে সাথে মিহিকে দাদিমা প্রশ্ন করে,

–এতোক্ষণ কোথায় ছিলি।

–দাদিমা বলে ই তো গিয়েছি বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছি, অনেক দিন পর দেখা হয়েছে তো তাই কথা বলতে বলতে লেইট হয়ে গিয়েছে।

–আচ্ছা যা, ফ্রেশ হয়েনে।

মিহি খুশিতে গজগজ করতে করতে উপরে চলে গেলো, তার মানে দাদিমা কিছু বুঝেনি।
ফ্রেশ হয়ে নিচে আসতে ই মিনতি বললো,

–কী ভাবি আপনার কোন বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন।

–তোকে কেনো বলবো, ছোট জ্যা ছোট জ্যা এর মতো থাকবি। সম্মান দে।

মিনতি এবার মিহির কান টেনে দিয়ে বলে,

–তুই যে কোন বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলি তা যানা আছে।

–আমি দীপ্তিদের বাসায় গিয়েছিলাম।

–যাহ্ শেষ পর্যন্ত অভ্র ভাইয়াকে তো দীপ্তি বান্ধুবি হতে হলো।

এবার মিহি মিনতির দিকে তাকিয়ে বললো,

–আস্তে বল দাদিমা শোনে ফেলবে।

–আমাকে মিথ্যে বলেছিস কেনো, এখন দাদিমাকে বলে দেই।

–এই আপু বলিস না আর কখনো তোকে মিথ্যা বলবো না।

জীবনটা ই আমার অসহ্য লাগতেছে, সবাই শুধু ভয় ই দেখায়।

মেইন গেইট এর দিকে তাকাতে ই দেখলো অভ্র বাসার ভেতরে ডুকছে, অভ্রকে দেখেই মিহি মুচকি হাসি দিলো। সোফার উপর কয়েকটা শপিং ব্যাগ রেখে অভ্র কয়েকটা সিড়ি উপরে উঠে মিহিকে বললো, ব্যাগগুলো নিয়ে রুমে যাওয়ার জন্য।

আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ তাদের লুকিয়ে কথা বলার দৃশ্য দেখে ফেলেছে কিনা।। কিন্তু নাহ কেউ কিছু দেখেনি সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত

শপিং ব্যাগগুলো নিয়ে মিনি দাদিমার রুমে চলে গেলো, দাদিমা রুমে না থাকায় ব্যাগগুলোতে কী আছে দেখতে সুবিধা হলো

একটা শাড়ি, কতগুলো কাচের চুড়ি, গলার লকেট, কানের দুল। আরো একটা চিরকুট পেলো লিখা ছিলো,

আজকে শাড়িটা পরো আমি দেখতে চাই শাড়ির পড়া আমার তুমিটাকে। কারণ শাড়ি পড়লে তোমাকে অসম্ভব সুন্দর লাগে।

সন্ধ্যা দিকে মিনতির সাহায্যে মিহি শাড়িটা পড়ে নেয়। কিন্তু যে না দাদিমার সামনে আসলো অমনি বলা শুরু করলো,

–আমার নাতিটাকে কাছে টানার টেকনিক।

আল্লাহ এই বুড়ির হাত থেকে আমাকে বাঁচাও,আবার বলতে শুরু করলো

–হে, হে যে ঢং ধরেছিস তা দেখে তো যে কেউ ই গলে যাবে।

আমি আর কোনো কথা বললাম না, দাদিমা যা ইচ্ছা বলতে থাকুক আমি ও এক কান দিয়ে ডুকাই অন্য কান দিয়ে বের করি।

__________________

মিহি ঘুমের মধ্যে অনুভব করলো কেউ তার মুখ চেপে ধরে রেখেছে, চোখ খুলতে ই অন্ধকারের মধ্যে একটা লোক দেখতে পেলো, মিহি বুঝতে পারলো, মিহি লোকাটা কোলে।কোলে করে কোথাও নিয়ে যাচ্ছে আর লোকটার এক হাত দিয়ে মিহির মুখ চেপে ধরে আছে। মুখ চেপে ধরার কারনে চিৎকার ও করতে পারছে না,

–চুপ করো, তোমার জন্য তো এখন ই দাদিমা জেগে যেতো।

–ওহ্ আল্লাহ প্রাণ ফিরে এলো, আপনিহ্

–তা অন্য কাউকে আশা করেছিলে নাকি।

–নাহ্

অভ্রের রুমের বারান্দায় আমাকে নিয়ে অভ্র বসে। আমাকে সামনে বসিয়ে অভ্র পিছনে বসে আছে। আমাকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে,

–বিয়ের পর ও বউ এর সাথে চুড়ি করে প্রেম করতে হয়, কী ভাগ্য আমার।

–একটা কথা বলবো আপনাকে….

–হে, বলো মিহি পাখি।

–সত্যি ই কী আমাদের বিয়েটা ছয় মাসের জন্য??

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে