তোমাতে আসক্ত পর্ব-১২+১৩

0
3287

#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ১২

সূর্য রক্তবর্ণ ধারন করে আছে। একটু পরে ই সন্ধ্যা নেমে আসবে কিন্তু অভ্র এখনো বাসায় আসেনি। পুরো বাসা ফাঁকা একা একা কী যে ভয় লাগতেছে। আমি কখনো একা কোথাও যাইনি, এতোক্ষণ বাহিরে বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলাম। আর কতো একা একা দাড়িয়ে থাকবো এইখানে।অভ্রকে কয়েকবার কল দিলাম কিন্তু রিসিভ করলো না। মায়ের সাথে কথা বললে আমি নিশ্চয়ই বলে দিবো বাসায় কেউ নাই একা একা ভয় পাচ্ছি আর মা টেনশন করতে শুরু করবে তাই মাকে ও কল দেইনি।

হঠাৎ চোখ পড়লো বাহিরের দারোয়ানকে উনি ও তো একা দাড়িয়ে আছে। যাই একটু কথা বলে আসি।
যেই ভাবনা সেই কাজ।আস্তে আস্তে হেটে গেলাম দারোয়ানের সামনে,

মধ্যে বয়স্ক একটা লোক, ইউনিফর্ম পড়া,আমাকে দেখে ই বাসা থেকে উঠে দাড়ায়। আমাকে দেখে উনি চমকে গিয়ে জিজ্ঞেসা করে,

–তুমি কীভাবে ভেতরে ডুকলে,কে তুমি কী চাই।

দারোয়ান মনে হয় আমাকে চিন্তে পারেনি, না চিনার ই কথাটা, যেভাবে আমাদের বিয়েটা হলো নিকট আত্নীয় ছাড়া তেমন কেউ ই জানে না। তাই নিজের পরিচয় দিলাম।

–আমি অভ্র কে তো চিনেন।

–হে অভ্র বাবা কে চিনবো না ছোটবেলা থেকে এই বাড়ির দারোয়ানে কাজ করছি।

–তাহলে আমি আপনার বউমা। অভ্রের বউ।

বউ বললে ভুল হবে এই বিয়েটা তো শুধু মাত্র কয়েকটা দিনের জন্য মনে মনে কথাগুলো বলে দারোয়ান চাচার মুখের দিকে তাকাতে ই দেখি কপালে কেমন ভাজ পড়েছে।

–কী হয়েছে চাচা?

–আমি কয়েকদিন অসুস্থ থাকার কারনে দেশের বাড়িতে গিয়েছিলা তার মধ্যে বিয়ে করে ফেললো।অভ্র বাবা তো একটা মেয়েকে অনেক ভালোবাসতো। কিন্তু তোমাকে কেনো বিয়ে করলো।

এটা বলার সাথে সাথে অভ্রের গাড়ি গেইটার সামনে এসে দাড়ালো। চাচা চেয়ে ও আর কিছু বলতে পারলো না। গেইট খুলে দিতে ই অভ্র গাড়িটা গেইটের ভেতরে ডুকে, আমাকে দেখতে পায়। সাথে সাথে গাড়ি থেকে নেমে আমার সামনে এসে রাগান্বিত গন্ঠে বলে,

–আপনি বাসা থেকে বের হয়েছেন কেনো।

–আমি যে সুন্দর তা রাস্তার মানুষকে দেখাতে। তা আপনি এতোক্ষন কোন মহাদেশে ছিলেন।

অভ্র আমার কথার উওর না দিয়ে হাত ধরে টানতে টানতে বাসার ভেতরে নিয়ে এসেছে।

–আপনি দারোয়ান চাচার সাথে কথা বলতে গেলে কেনো।

–একা একা ভালো লাগতেছিলো না আর খুব ভয় করছিলো, তাই একটু কথা বলতে গেলাম।

–আমাকে কল দিতে পারতেন।

–অনেকগুকো কল দিয়েছি, আপনি রিসিভ করেননি

অভ্র ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে বলে,

–স্যরি আসলে একটা ইম্পরট্যান্ট মিটিং ছিলো, সারাদিন খাই নাই ক্ষুধা লাগছে খাবো। খাবার রেডি করেন।

–রুমে কোনো খাবার নাই, যা ছিলো নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কাজের লোক সকালে এসে রান্না করে দিয়ে গিয়েছিলো।

অভ্র আমার সাথে কোনো কথা না বলে মেইন গেইট লক করে আমাকে রুমে একা রেখে বাহিরে চলে যায়।

আমি ভয় পাই উনি বুঝতে পারে না তাও কেনো এভাবে আমাকে একা রেখে চলে যায়।রাগ হচ্ছে খুব এতো বড় বাড়িতে আমি একা তাও আবার বাহিরের থেকে দরজা লক করে রেখেছে।
অভ্র মানুষ টা এমন কেনো পুরো ই ধরা ছোয়ার বাইরে কখনো ভালো কখনো খারাপ। মাঝে মাঝে এমন একটা ভাব করে আমি যা চাই সব দিয়ে দিবে। আবার কখনো কখনো আমকে দুচোখে সহ্য ই করে পারে না।।

“কখনো আমার হৃদয়ের আকাশে মেঘ জমে
আবার কখনো বিনা নোটিশে বৃষ্টি নামে। আর সেই বৃষ্টিতে ভিজতে ই সকল মেঘ সরে গিয়ে আবার সূর্য আলো দিতে থাকে।” অভ্রের ব্যাপার টা আমার কাছে ঠিক এমন ই মনে হচ্ছে।

দারোয়ান চাচা বললো অভ্র কাউকে ভালোবাসতো। ভালোবাসতো মানে কী এখন ভালোবাসে না। যদি এখনো ভালোবাসে তাহলে আমাকে কেনো বিয়ে করলো। কাউকে ভালোবাসে বলে ই আমাকে ছয়মাস পর ছেড়ে দিবে বলছে।
এতো কেনো কেনোর ভিড়ে মনে হচ্ছে আমি নিজের নামটা ই ভুলে যাবো। আজকে আসলে সব কেনোর উওর দিতে হবে।

–মিহি,আপনি এইখানে আসছেন, আর আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম কোথায় না কোথায় চলে গিয়েছেন।

অভ্রের কথা শুনে পিছনে তাকিয়ে ই অভ্রের সামনে গিয়ে অভ্রে শার্ট এর কলারে ধরে বললাম,

–আমাকে বিয়ে করেছেন কেনো। এখন বলবে না হয় মরে ই ফেলবো।

অভ্র আমার চোখের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। হাত দিয়ে পিছন থেকে অভ্রের সাথে জড়িয়ে নিয়েছে।
এখন মনে হচ্ছে আমি বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছি।

আস্তে আস্তে আমার মুখের দিকে আসছে, আমি ভয়ে আমার মুখ পিছনের দিকে নিচ্ছি। আমি যত পিছনে দিকে যাচ্ছি অভ্র তত আমার দিকে আসছে। আমি ভয়ে খিঁচে চোখ বন্ধ করে নিলাম

হঠাৎ করে অভ্র আমাকে ছেড়ে দেয়, আমি সজোরে বিছানায় পড়ি। আমার কোমরটা ভেঙ্গে গেলো মনে হচ্ছে।

–মনে হয় আমার বেডে আটার বস্তা পড়েছে।কালকে ই মিস্ত্রি দেখাতে হবে।

–আপনি আমাকে এভাবে ফেলে দিলেন কেনো।

–মেয়েরা রাগ করলে ভালোবাসা দিয়ে রাগ কন্ট্রোল করতে হয়, কিন্তু আপনি যা করলেন তা শাস্তি যোগ্য তাই হালকা একটু থেরাপি দিলাম।

–আপনি সত্যি ই একটা বজ্জাত লোক।

–কী বললেন, খেতে আসেন নয়তো ছাঁদ থেকে ফেলে দিবো।

–খাবো না আমি,আগে বলুন আমাকে কেনো বিয়ে করলেন। আমার জীবনটা কেনো নষ্ট করে দিলেন।

–অভ্র কারো জীবন নষ্ট করে না। আর আপনার সব প্রশ্নের উওর সময় হলে দিয়ে দিবো এখন খেতে চলুন। নয়তো সব খাবার আমি একা ই খেয়ে চলে আসবো। আর একা থাকলে আপনাকে ভুতে ও ধরতে পারে।৩১

ভুত শব্দটা শুনে ই উঠে অভ্রের পিছনে হাটতে শুরু করলাম,
গিয়ে দেখলাম টেবিলে উপরে খাবার গুছিয়ে রাখা।কথা না বলে দুজনে খেয়ে নিলাম।
রুমে ডুকার আগে বললো,

–আপনি আপনার রুমে যান, আমি আমার রুমে ঘুমাবো।

কোনো কথা না বলে আমি আমার রুমে চলে গেলাম। অভ্রের রুমের পাশে ই কিন্তু রুমে ডুকার পর ই ভয় করতে শুরু করলো, চারদিকে বিস্তার নিরবতা। সবাই বাসায় থাকলে এতো ভয় করে না আজকে অনেক ভয় করতেছে।

না, না, আমি একা ঘুমাতে পারবো না। আস্তে আস্তে অভ্রের রুমের দরজায় নক করলাম।

–সমস্যা কী।

–আজকের জন্য আমাকে আপনার রুমে থাকতে দিন কালকে আমি আম্মুকে বলবো আমাকে নিয়ে যেতে।

— কাজ হবে না, আপনি আপনার রুমে যান।

–প্লিজ বুঝার চেষ্টা করুন। আমি ভয় পাই।

কথাটা বলার সাথে সাথে অভ্র দরজা বন্ধ করে দিলো। আমি নিরবে চোখের জল ফেলছি, কী করবো আমি। আমার প্রতি কী একটু মায়া হয় না। কী করবো এখন আমি..

চলবে,

#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ১৩

এক মুঠো রোদ এসে মুখের উপর পড়তে ই আড়মোড়া ভেঙে ঘুম থেকে উঠে বসি, মুহুর্তে ই চারদিকে চোখ যেতে বুঝতে পারি এটা অভ্রের রুম। কাল রাতের কথা মনে পড়লো,

আমি ভয় পেয়ে ই রুমে ডুকে লাইট অন করে চোখ বন্ধ করে,শুয়ে শুয়ে কান্না করতে করতে একপর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়ি।তাহলে ঘুমানো পর কী অভ্র আমাকে এই রুমে নিয়ে এসেছে। কিছু কিছু অনুভূতি বলে প্রকাশ করার মতো না। কালকে রাতে যখন আমাকে একা ঘুমাতে বলেছিলো তখন খুব কষ্ট লাগেছিলো কিন্তু এখন সব কষ্ট নিমিষে ই উড়ে গিয়েছে।

অভ্রকে দেখলাম সোফায় ঘুমাচ্ছে। খুব সুন্দর লাগছিলো রোদের আলোয় ফর্সা গালে খোচা খোঁচ দাড়িগুলো আমাকে বার বার আকর্ষণ করছে। বার বার ছুয়ে দিতে ইচ্ছে করছে। আস্তে আস্তে অভ্রের পাশে গিয়ে দাড়ালাম।হালকা নিচু হয়ে, একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। মনে মনে ভাবতে লাগলাম এভাবে তাকিয়ে থাকলে তো প্রেমে পড়ে যাবো নিজে ই।

হাত দিয়ে অভ্রের মুখে স্পর্শ করতে ই আচমকা আমাকে টান দিয়ে অভ্রের নিজের উপর ফেলে দেয় পড়ে যেতে নিলে দুহাত দিয়ে আগলে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।

আমার আর অভ্রের মুখের মধ্যে দূরত্ব নেই বললে ই চলে।

–কী করছিলেন, আমাকে একা পেয়ে।

প্রত্যেকটা কথা অভ্র আমার ঠোট স্পর্শ করে বলতেছে।অভ্র কী বলছে আমার কান দিয়ে ডুকছেনা। অভ্রে এই স্পর্শে আমি অজানা অনুভূতি খুজে পাচ্ছি।অভ্র আমার দিকে না তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে ই কথাগুলো বলছে। আমি শুধু তাকিয়ে দেখছি।

–কী হলো, কোনো কথার উওর নেই কেনো।

আমি এবার ও কোনো উওর না দিয়ে অভ্রে বুকে মুখ গুজি। আমার এমন কাজে অভ্র জিজ্ঞেস করে,

–এখনো কী ভয় পাচ্ছেন নাকি।

–হুম

–উঠুন, এমন আটার বস্তা আমার উপর শুয়ে থাকলে আমার হাড় ভেঙ্গে যাবে।

–এই আপনি আমাকে আটার বস্তা বলেন কেনো। আমি মাত্র পয়তাল্লিশ কেজি।

–মাত্র কোথায় একমন আবার পাঁচ কেজি, হয় আল্লাহ রক্ষা করো আমায়। এখন আমার উপরে ই শুয়ে আছে।

এবার আমি রেগে উঠে যেতে নিলে উনি আবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,এটা দেখে আমি রাগি দৃষ্টিতে তাকাই

–এখন কে ধরে রাখছে

–নাহ, দেখলাম সত্যি ই পয়তাল্লিশে কেজি নাকি।

–এভাবে কেউ ওজন দেখে।

–রাগলে কিন্তু আপনাকে সুন্দর লাগে।

বলে ই নিজে আমকে নিয়ে শুয়া থেকে উঠে,আমাকে সোফায় বসিয়ে অভ্রের নাকের সাথে নাকটা হালকা লাগিয়ে ওয়াশরুম চলে যায়।

_________________

আমি আম্মুকে কল দিয়ে বলেছি, আজকে এসে আমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

কথাটা শুনে ই অভ্র ভ্রু কুঁচকিয়ে আমার দিকে তাকায়,

–কেনো, এইখানে আপনার কী প্রবলেম।

–ভয় করে একা একা।

–নাস্তা বানিয়েছেন।

–হে,।রুটি আর ডিম আমি এটগুলো ছাড়া আর কিছু পারি না।

— ওহ্ আচ্ছা টেবিলে খাবার রেডি করুন আমি আসছি।

বাধ্য মেয়ের মতো আমি নিচে গিয়ে টেবিলে খাবার দিলাম। জীবনের প্রথম ইউটিউব দেখে দেখে বানিয়েছি আল্লাহ জানে কী রকম হয়। খেতে খারাপ হলে তো আজকে আমাকে আবার কোন শাস্তি দিবে আল্লাহ জানে।

উপরের দিকে তাকাতে ই দেখলাম মহারাজা উপর থেকে নিচে নামছে। ড্রেসআপ তো বেশ ভালো ই করেছে, সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট হাতে হ্যান্ড ওয়াচ।

–এগুলো রুটি না দেশের মানচিত্র।

আমি অসহায় এর মতো এদিক অদিক তাকিয়ে দেখছি।

–ব্যাটারির মতো চোখ ঘুরাচ্ছেন কেনো।কোনো কাজ পারেন আপনি?

–আমি ফার্স্ট টাইম বানিয়েছি তাই এমন হয়েছে প্লিজ খেয়ে নিন।

আমার দিকে কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো,

–রেডি হয়ে নিন।

কিছুটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,

–কেনো?

–আপনার তো বাসায় একা থাকতে ভয় করে তাই আজকে অফিসে নিয়ে যাবো। আর অফিসে ই নাস্তা করে নিবো।

–আমি তো আম্মুকে আসতে বলেছি, আমাকে নেওয়ার জন্য।

–আমি আন্টিকে নিষেধ করেছি,দ্রুত রেডি হয়ে নিন না হয় বাসায় একা রেখে ই চলে যাবো।

–যাচ্ছি ওয়েট করুন।

–হুম দ্রুত করুন। আমার অফিসে কাজ আছে।

অভ্র সাদা ড্রেস পড়েছে তাই আমি কালো ড্রেস পড়েছি। এই লোকটা যা করবে আমি তার উল্টোটা করবো। বেয়াদ্দপ লোক একটা।

একটা গোলজামা, লেগিংস পড়ে নিলাম। সাথে মাথায় হিজাব। ঠোঁট হালকা করে বানানা লিপবাম, চোখে কাজল। হাতে ছেলেদের একটা ব্রেসলেট পড়লাম। ব্রেসলেট টা সকালে অভ্রের ড্রসিংটেবিল থেকে পেয়েছি। আগে কখনো এটা চোখে পড়েনি।

–এই জন্য ই মেয়েদের নিয়ে কোথাও যেতে নেই। এতোক্ষণ আমি পাঁচ বার অফিসে যেতে পারতাম।

—মেয়েদের রেডি হতে একটু টাইম লাগে, বুঝলেন।

বলে ই আমি গাড়িতে গিয়ে বসে পড়লাম। অভ্র গাড়িতে বসে আমার তাকিয়ে আছে। অভ্রের দিকে না তাকিয়ে আমি ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।
কিন্তু যতই ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি কেউ নিজের দিকে তাকিয়ে থাকলে বুঝা যায়। তাই কিছুটা বিরক্তি ভাব মুখে ফুটিয়ে বললাম,

–এভাবে তাকিয়ে থাকলে ভালো লাগে না।

–এই সং সেজেছেন কেনো।

–আপনার সমস্যা কী আর কোথায় আমি সং সাজলাম। ভালো লাগলে গাড়ি স্টার্ট দেন নয়তো আমি বাসায় চলে যাই।

রাগি একটা ভাব নিয়ে কথাগুলো বললাম, তাই অভ্র আর কিছু বলেনি। আমি ফোন নিয়ে বসে থাকলে ও আর চোখে ঠিক ই দেখতে পাচ্ছি অভ্র একটু পর পর আমার দিকে তাকাচ্ছে।

–হাসি পাচ্ছে খুব নিজের বউকে ও লুকিয়ে দেখতে হয়।

–কে নিজের বউকে লুকিয়ে দেখে?

–যে এখন আমাকে প্রশ্ন করেছে সে।

হঠাৎ গাড়ির ব্রেক করতে ই আমি নিজের কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলি আরেকটু হলে ই গাড়ির সামনের অংশের সাথে মাথায় ভারি খেতাম। অভ্র হাত দিয়ে আমার মাথায় ধরে ফেলে তাই কিছু হয়নি।

–চলে এসেছি, নামুন।

আমি গাড়ি থেকে নেমে অভ্রের পিছনে হাটতে থাকি। অফিসে ডুকার সাথে সাথে সবাই আমার দিকে আছে। সবার মনে হয়তো বা এক প্রশ্ন যে, আমি কে।
অভ্র আমাকে নিয়ে ওর কেবিনে ডুকে। দেখলাম কেবিনের সাইডে একটা টেবিল আছে, যেটাতে নাস্তা সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
অভ্র আমাকে নিয়ে নাস্তা করতে বসে যায়।

–মিহি আমার খাবার শেষ, একটা ইম্পরট্যান্ট মিটিং আছে আমি যাচ্ছি। আপনি আমার কেবিনে ই থাকেন বের হবেন না। কোনো কিছু প্রয়োজন হলে, সামিরকে বলে যাচ্ছি ওর কাছে বলবেন।

–সামির কে।

–একজন স্টাফ।

–ওহ আচ্ছা।

উনি চলে যাওয়ার পর আমি নাস্তা শেষ করে কেবিনে বসে বসে ভিন্ন জিনিস দেখছি, কেবিনটা অনেক সুন্দর করে গুছানো।

–ম্যাম আসবো।

তাকিয়ে দেখলাম একটা ছেলে, বয়স তেইশ হবে।

–জ্বি আসুন

–আমি সামির, কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে বলতে পারেন।

–জ্বি অবশ্যই।

–ম্যাম একটা কথা জিজ্ঞেস করবো।

–হে,অবশ্যই।

–স্যার আপনার কী হয়।

–এটা আপনার স্যার কে জিজ্ঞেস করবেন।

–ঠিক আছে ম্যাম।

___________

মিটিং শেষ করে কেবিনে এসেছে। আমাকে দেখে বললো,

–বিরক্ত লাগছে একা থাকতে।

–নাহ্

–স্যার আসবো।

–হ্যা, ম্যানেজার সাহেব আসুন। কতবার বললাম আমাকে স্যার ডাকবেন না।আমি আপনার ছেলের মতো।

–একটা কথা বলতে চেয়েছিলাম।

–হ্যা বলুন।

–মেয়েটাকে আমার খুব ভালো লেগেছে, যদি চান তাহলে আমার ছেলের সাথে বিয়ের পাকা কথা কিন্তু বলতে পারি। মেয়েটা কী হয় আপনার।

অভ্র আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ও অভ্রের দিকে তাকিয়ে আছি। কী বলবে অভ্র, সবাইকে পরিচয় দিবে নাকি এই সম্পর্কটা সুপ্ত ই রয়ে যাবে।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে