তোমাতে আসক্ত পর্ব-০৮

0
3096

#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ৮

আমি আস্তে আস্তে করে রুম থেকে বাহিরে বের হতে চাইলে ই অভ্র আমার হাত ধরে ফেলে,

–কোথায় যাচ্ছেন আপনি।

–ক..কোথাও না।

–আন্টির কাছে কী বলেছেন।

–আম্মু আমি কী কিছু বলেছি তোমাকে বলো।

আম্মু আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকাতে ই আমি ইশারায় বলি, “বলো না আম্মু ”

–এই মিহি তোর এসব কথা কী আমি শুনবো।
বাবা শোন মিহি বলেছে তোমার নাকি পেটে অসুখ হয়েছে

–যাক শেষ রক্ষে হলো না আর। আমি এবার আম্মুর সাথে রাগ দেখিয়ে রুমে চলে আসলাম।

–এই পাজি মেয়ে তুই চলে যাচ্ছিস কেনো, আর আমাকে মিথ্যে ই বললি কেনো।।

–আন্টি আমার কোনো সমস্যা হয়নি, আপনি আমাকে খাবারগুলো দিয়ে দিন আমি রুমে নিয়ে খেয়ে নিচ্ছি।

–তুমি দাড়াও বাবা আমি রুমে দিয়ে আসছি, মিহিকে বলো খেতে আমার সাথে রাগ করে আজকে আর খাবে না।

–মিহি অনেক দুষ্টুমি করে আন্টি।

–সবাই বলে মেয়েরা নাকি শান্ত হয়। আর এই মেয়ে আমার হাড় মাংশ সব জ্বালিয়ে খেয়েছে বাবা। ছোট বেলা থেকে ই অনেক দুষ্টুমি করে। মিহি অনেক দুষ্ট, অগোছালো আর আমার মিনতি অনেক পরিপাটি ও শান্ত স্বভাবের। আমার দুই মেয়ে হচ্ছে দুই মেরুর মানুষ।

খাবর গুলো সব গুছিয়ে টেবিলে রাখা ছিলো, ঐখান থেকে দু’টো প্লেটে খাবার সাজাতে সাজাতে কথাগুলো বললো মিহির মা। এতো খাবার,সবগুলো মিহির রুমে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। তাই অভ্র বললো প্লেটে সাজিয়ে দিতে।

মিহির মা প্লেটগুলো মিহির রুমে দিয়ে আসার পর, অভ্র রুমে ডুকলো, দেখলো মিহি আবার কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। অভ্র পাশে গিয়ে বললো,

–আন্টিকে কী বলবো, আমি কীসের জন্য ঐ টাইমে গোসল করেছিলাম।

মিহি কাঁথার ভেতর থেকে মুখ বের করে বললো,

–কী বলবেন।

–এই যে আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরে ভিজিয়ে দিয়েছিলেন।

–ছিঃ আপনি এই কথা মা কে বলতে পারবেন। নির্লজ্জতা আপনার আকাশ ছুয়েছে।

–আপনি না উঠলে তো বলবো ই। আপনি যেহেতু আমার পেটে অসুখ এর কথা বলতে পেরেছেন আমি না হয় একটু নির্লজ্জ হবো ই এটা বলে।

–উঠে কী করবো আমি খাবো না।

–আপনাকে খেতে বললো কে। আমার সামনে শুধু বসে থাকবেন।

–(আমার ক্ষুধায় অবস্থা খারাপ কোথায় একটু বলবে, উঠো আমি খাইয়ে দিচ্ছি তা না আমাকে উনার সামনে বসে থাকতে বলে) মনে মনে কথাগুলো বলে উওর দিলাম পারবো না।

–না পারলে আন্টিকে গিয়ে বলে আসি আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন ঐটাইমে তাই আমি ভিজে গিয়ে গোসল করেছি।

–সব সময় এমন করেন, উঠতেছি তো।

অভ্র আমার সামনে চেয়ার টেনে বসলো। এক প্লেট হাতে নিয়ে খাওয়া শুরু করলো।

–আপনি কী খাবেন নাকি

–নাহ্

–ওহ্ আচ্ছা, ক্ষুধা পেয়েছে আমার অনেক না খেলে ই ভালো। ঐ প্লেটের খাবার টা ও খেবো আমি।

আস্তো রাক্ষস একটা।এতো খাবার নাকি এভাবে নিজে একা খাবে। তাও তো মোটা হয় না বডি ফিটনেস তো ঠিক ই আছে, তা আবার জিরাফের মতো লম্বা আর লম্বা মানুষ নাকি খায় বেশি, কিন্তু মোটা হয়না এটা ই তো শুনেছি।

–আপনি কী কিছু বললেন।

–নাহ্ আমি আপনাকে কী বলবো বলেন।

অভ্রের খাওয়ার স্টাইল দেখে ক্ষুধা আরো বেড়ে গিয়েছে। ঐটাইমে তো না বলেছি এখন কী করবো।

উনি এক প্লেট এর খাবার শেষ করে আরে প্লেট হাতে নিলে। তার মানে আমার খাওয়া আজকে আর হবে না। উনি খাবার শেষ হলে ই আমি আম্মুর কাছে গিয়ে খেয়ে আসবো।

–একটা কথা কী জানেন মিহি।

–নাহ্ জানি না।

–এতো তেতে আছেন কেনো।

–এমনি, আপনার কী।

–আমার ই তো অনেক কিছু, আমি আসার সময় আন্টি বলেছি সব গুছিয়ে যেনো ঘুমিয়ে পড়ে। আমাদের আর কোনো কিছু প্রয়োজন হবে না।

–এবার তো আমার খাওয়া আর হবে না দেখছি এই হনুমানটার জন্য।

–একটু আগে আমার পেটে অসুখ না হলে ও কিন্তু এখন দেখছি আজকে আমার বাথরুমে ই থাকতে হবে আপনি আমার খাবারের দিকে যেভাবে চোখ দিচ্ছেন।

কথাটা বলে ই উনি আমার মুখের খাবার ধরলে,

–খাবারের সাথে রাগ করতে নেই।

আমি আর কোনো কিছু না ভেবে ই খাবার মুখে নিয়ে নেই। খাবার না খেলে আমার ই কষ্ট হবে এতো রাগ করার কিছু নেই।

–আমার নামে যে আন্টির কাছে বাজে কথা বলেছেন তার শাস্তি খাবার দিয়ে দিলাম।

উনি আমাকে খাওয়াতে খাওয়াতে কথাটা বললেন আমি কোনো উওর দিলাম না। খাওয়ানো শেষ হলে উনি প্লেটগুলো টেবিলের উপর এনে রাখে হাত ধুয়ে এসে বললেন।

–আমি গাড়িতে যাচ্ছি।

–তার দরকার হবে না। আমার সাথে বেড শেয়ার করলে প্রবলেম টা কী জানতে পারি।

–পড়ে যদি ছয় মাস পর আমাকে এসে সিনামার মতো বলেন, “আমার পেটে আপনার সন্তান”

–আপনার আমাকে এমন মনে হয়।

–জানি না তবে মানুষ চেনা বড় দায়।

–তাহলে এতো সন্দেহ নিয়ে বিয়ে করেছেন কেনো।

–সময় হলে সব জানতে পারবেন।

–আর কবে সময় হবে।

–বিয়ে হয়েছে মাত্র তিনদিন হলো। এতো তারা কীসের মিহি।

–আমার জায়গায় নিজেকে দাড় করিয়ে দেখেন কেমন লাগে।

— অতো কিছু জানি না। আপনি এইখানে শুয়ে পড়েন। আমার গাড়িতে ঘুমানোর অভাস আছে।

–আজকের রাতটা অন্তত এমন করবেন না। আমি যদি এখন অন্য রুমে ঘুমাতে যাই তাহলে আমার বাবা মা অন্য কিছু মনে করতে পারে। এই জন্য বলছি অন্য কোথাও যাওয়ার দরকার নেই। আমি চাই না আমার বাবা মার মাথায় অন্তত আমার ব্যাপারে কোনো প্রকার দুশ্চিন্তা হক।

–আমি গাড়িতে ঘুমালে বুঝবে না কেউ কিছু।

–এতো করে বলার পর ও আপনি আমার কতা শুনছেন না, কেনো। বলুন তো।

–আমি বেড শেয়ার করতে পারবো না।

–তাহলে কী ভেবে নিবো আপনার গার্লফ্রেন্ড নিষেধ করেছে

কোনো কথা না বলে অভ্র চলে যেতে চাইলে পিছন থেকে হাতটা ধরে ফেলি। অভ্র আমার হাতের দিকে তাকিয়ে….

চলবে,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে