তোমাতে আসক্ত পর্ব-০৫

0
3413

#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ৫

চারদিকে অনেক অন্ধকার এই সময় কে আবার লাইটগুলো অফ করে দিলো উপরের তলায় পুরো ই ফাঁকা। নিচে মানুষ আছে। অন্ধকারের মধ্যে দাড়িয়ে আছি এক জায়গায় ভয় হচ্ছে অনেক। এখান থেকে চিৎকার দিলো ও কেউ শুনবে না। কী করবো ভেবে পাচ্ছি না। হঠাৎ আমার হাতে কারো স্পর্শ পেতে ই ভয়টা আরো বেড়ে গেলো। হাতে ধরে ই কোলে তুলে নিলো। আমি চিৎকার দিতে গেলো ও মুখে চেপে ধরে।

–এতো চেচাচ্ছেন কেনো। কেউ শুনতে পাবে না।

–আপনি এমন করে আমকে কোলে নিলেন কেনো।

— অন্ধকারে শাড়ির মধ্যে পা লেগে পড়ে যাবেন। বেশি কথা না বলে এক হাত দিয়ে শার্ট এর পকেট থেকে ফোনটা বের করেন।

–আমাকে নামান আগে।

–তাহলে অন্ধকারের মধ্যে ই নিয়ে যাবো কোনো কিছুর সাথে ধাক্কা খেলে আপনি ই প্রথম ব্যাথাটা পাবেন।

কথাটা ঠিক ই ব্যাথা পেলে আমার তো আর বাবার বাসায় যাওয়া হবে না। তাই ফোনটা নিলাম পকেট থেকে আর ফ্লাস অন করলাম।

অভ্র রুমে নিয়ে আমাকে নামিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়। আস্তে আস্তে আমার দিকে এগিয়ে আসে। আমি ও পিছাতে থাকি। একপর্যায়ে দেওয়ালের সাথে আটকে যাই।

কী ব্যাপার যাচ্ছেন না কেনো পিছনে।

বলে ই আমাকে তার দুই বাহুতে আবদ্ধ করে নিয়েছে। আমার অনেকটা কাছে চলে এসেছে আমার অন্য রকম শিহরণ সৃষ্টি হচ্ছে, তাই আমি ধাক্কা দিয়ে সরে আসতে চাইলাম কিন্তু বিন্দু পরিমান ও নাড়াতে পারিনি।

এর মধ্যে ই আমার হাতে পাশে লাইট জ্বলে উঠে। কিন্তু অভ্র দূরে যাচ্ছে না, আসতে আসতে আমার মুখের কাছে আসতে ই আমি চোখ বন্ধ করে ফেলি।

কিন্তু অনেকক্ষণ হয়ে গেছে উনার কোনো শব্দ পাচ্ছি না। একচোখ একটু খুলে দেখে রসগোল্লা মতো চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

যদি বাসায় গিয়ে বিয়ে সম্পর্কে কিছু বলেছেন তো আজকে তো শুধু নমুনা দেখালাম পরে বুঝবেন কী করি। মনে থাকে যেনো।

বলে ই দূরে গিয়ে দাড়িয়ে পড়লেন।

–আপনাকে নিয়ে যেতে বলেছে।

–আমি যাবো না।

–ওকে। এতো জোর করবো না পরে আবার যদি যেতে রাজি হয়ে যায় তাহলে সব প্লান শেষ। মনে মনে কথাগুলো
বলে ই বাহিরে চলে আসি। খুশি লাগতেছে, নিজের ইচ্ছে মতো থাকতে পাররো কয়েকদিন। কয়েকদিন কী আমি আসবো ই না আর এই বাসায়।

আমাদের বাসা থেকে আসা গাড়িগুলো চলে গিয়েছে। শুধু একটা প্রাইভেট কার আছে, গিয়ে দেখলাম মিনতি অপু দুজন পিছনে বসা আমি গিয়ে তাই ড্রাইভার আঙ্কেল এর সাথে বসলাম। আমাকে দেখে ই মিনতি জিজ্ঞেস করলো,

–মিহি তোর আসতে এতো সময় লাগলো অভ্র ভাইয়া কোথায়।

–যাবে না।

–তুই জোর করে নিয়ে আসবি না।

–আমি এতো জোর করতে পারবো না। ইচ্ছে হলে তুই জোর করে নিয়ে আস।

–মিনতি জোর করে ও লাভ হবে না, ভাইয়া যেহেতু বলেছে যাবে না, তাহলে যাবে ই না।

–এই ড্রাইভার আঙ্কেল লুঙ্গি ড্যান্স গান টা ছাড়ুন তো।

–তুই কী পাগল হয়ে গিয়েছিস মিহি।

–চুপ করে বসে থাকলে থাক নয়তো জামাই নিয়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে যা।

–বেয়াদব মেয়ে।

–তুই তোর জামাই এর দিকে মন দে। আমাকে আমার মতো থাকতে দে মিনতি।

_________________

বাহিরে দাড়িয়ে আছি, মিনতি কে আর জিজুকে বরণ করে নিচ্ছে আম্মুরা। এই নিয়ম তো জানা ছিলো না আগে। মেয়ের বাড়িতে আসলে ও কী আবার একই ভাবে বরণ করে ঘরে তুলে। যা ই হক ভালো ই লাগছে।

–কী রে মা, অভ্র কোথায়।

বাবার ডাকে ভাবনার জগৎ থেকে বের হলাম।

–আসেনি বাবা।

–সে কী কথা তুই না নিয়ে আসলি কেনো।

–আসলে আসবে না আসলে নাই বাবা ক্ষুধা পেয়েছে অনেক আমি রুমে ডুকে খাবো। বলে ই রুমে চলে আসলাম।

রুমে এসে ই দ্রুত একটা ট্রি-শার্ট আর প্লাজু পড়ে খাওয়ার রুমে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরি। কিন্তু মা আমার সাথে কথা বলে না।

–মা শুনো না।
……..
–আমার লক্ষি মা শুনো।

–মা আমি তোমার একটা ই তো ছোট মেয়ে কেনো রাগ করে আছো।
……
— মা আমার কলিজা না তুমি আমার জান প্রাণ আমার মা, মা কথা বলো, মা অ মা।

–যখন আমদের মান সম্মান নিয়ে খেলা করেছিলি তখন এগুলো মনে ছিলো না।

–মা বিশ্বাস করো আমি ইচ্ছে করে কিছু করেনি।

–হে এমনি হয়ে গেছে।

মাকে এমন রেগে থাকতে দেখে আমি কান্না করে মায়ের পা জড়িয়ে ধরি। সাথে সাথে মায়ের রাগ শেষ হয়ে যায়। আমাকে উঠিকে কপালে চুমু একে দেয়।

–মা ক্ষুধা লাগছে অনেক খেতে দাও।

–ঐ বাসা থেকে কী না খেয়ে ই চলে এসেছিস।

–না, খেয়েছি অল্প। বেশি খেলে তো বলবে এই মেয়ে বেশি খায়।

–খাওয়া নিয়ে নিয়ে লজ্জা নেই মা। আর তুই এগুলো কী পড়েছিস। বাসা বর্তী মেহমান। আর নতুন জামাইয়ের সামনে তুই এসব পড়ে যাবি।

–তো কী হয়েছে।

–যা এখন গিয়ে চেঞ্জ করে আয়, নয়তো খেতে দিবো না।

—মাআআআআ

–ন্যাকামো করে কোনো লাভ নেই।

–সকালে পড়বো নে। আর আমি এখন থেকে এগুলো ই পড়বো।

খেয়ে নিয়ে শুয়ে পড়লাম আমার রুমে, আজকে শান্তিতে ঘুমাবো। ভাবতে ভাবতে ই মিনতি রুমে ডুকলো।

–এই যে অভ্র তোর জন্য এইটা পাঠিয়েছে,মানে অপুর কাছে দিয়ে দিয়েছে।

–তো আমি কী করবো।

–কী পাঠিয়েছে দেখবে তো।

মিনতি বেডের পাশে রেখে চলে গিয়েছে। আদিক্ষেতা দেখে বাচি না, সামনে ছিলাম যখন তখন তো দিতে পারতো। মানুষকে বুঝাচ্ছে উনি কেয়ারিং হাসবেন্ড। উঠে লাইট অন করতে ই দেখলাম একটা বক্স রেপিং করা। খুলতে বসে গেলম, গিফট দেখলে না খুলে থাকা যায় নাকি….

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে