তোমাকে_চাই(Season 2)Part:-13+14

0
1822

তোমাকে_চাই(Season 2)Part:-13+14
#আরবি_আরভী

Part_13

কথাটা বলেই উনি রিমোটটা রোদ্দুরের কাছে দিয়ে আমার কাছে এসে জোর করে হাতগুলো আটকে ধরে গালে খুব জোরে একটা চুমু খেয়ে হাসতে হাসতে রুম থেকে চলে গেলেন।।

রাত ১২ টা বেজে গেছে কিন্তু রেহানদের ফ্ল্যাটের হট্টগোল এখোন শেষ হয়নি তাই স্বস্তির নিশ্বাস নিতে সিড়ি বেয়ে নিজেদের ফ্ল্যাটে যাচ্ছি এমন সময় পেছন থেকে রেহান এসে শক্ত করে আমার হাতটা ধরে একটানে দৌড়ে এনে ছাদে এসে ছেড়ে দিলে আমি একঝাঁক বিরক্তি নিয়ে উনাকে বলেই ফেলি,,,,,,
-কি সমস্যা আপনার?
-কোনো সমস্যা নেই জান,,,
-জান বলছে ন্যাকা,,,,তাহলে আমাকে এখানে এনেছেন কেন,,
-ভীষন রাগ করে আছিস মনে হচ্ছে,,
-তাতে আপনার কি,,(অন্য দিকে তাকিয়ে একটা ভেংচি কেটে)
কথাটা শুনে উনি মুচকি হেসে আমার দুই হাত খুব শক্ত করে পেছনে জোট করে বুকটা উনার উপর এলিয়ে বলে উঠলেন,,,,
-আমার তো অনেক কিছু,,,,
-মোটেও না,,,
-সত্যি বলছি,,
-ভালবাসা একদম চারিদিকে গড়ে গড়ে পরে।। যত্তসব ন্যাকামি,,,,,,, আমাকে ছাড়েন প্লিজ,,,
-আর না ছাড়লে কি করবি,,,
আমি প্রতিনিয়ত নিজেকে ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করে শেষমেশ ধৈর্যহারা হয়ে উনার দিকে বিরক্তিকর ভাবে তাকিয়ে থেকে উনার বকবকানি শুনতে লাগলাম ।। বেশ কিছুক্ষণ পর উনি নিজ থেকেই আমাকে ছেড়ে দিয়ে জিন্সের পকেট থেকে অনেক গুলো কিটকাট বের করে সবগুলো হাতে দিলে আমি আনন্দে আত্যহারা হয়ে ওগুলো নিয়ে সেখান থেকে চলে যেওয়ার উদ্দেশ্যে পা টা বাড়াতেই উনি আমার হাতটা শক্ত করে ধরে আমাকে টেনে এক ধাক্কায় দেয়ালের সাথে মিশিয়ে খুব জোরে চেপে ধরে একটা ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে বলে উঠলেন,,,
-ওয়েট ওয়েট ম্যাডাম,,,এত্তগুলো চকলেট দিলাম একটা থ্যাংকস তো দিতে পারেন নাকি,,,
-ওকে থ্যাংকস,,,,,, (অন্যমনস্ক হয়ে মুখ বেকিয়ে )
উনি আমার দিকে ভেবাচেকা খেয়ে তাকিয়ে থেকে রাগি সুরে বললেন,,,
-আমি এই শুকনো থ্যাংকস নেয় না,,
-মানে,,,,(বিরক্তিকর ভাব নিয়ে)
উনি বাকরুদ্ধ হয়ে আমার দিকে কিছুক্ষণ রাগান্বিত চেহারায় তাকিয়ে থেকে নিজ থেকে আমাকে সরিয়ে নিয়ে ভীষণ রেগে ধমক দিয়ে বলে লাগলেন,,,
-কিচ্ছু না I am so sorry আপনাকে এইভাবে চেপে ধরেছি।।।আর কখনো আপনাকে জ্বালাবো না।। আপনে এবার আসতে পারেন,,,
আমি বিষয়টার সারবস্তু বুঝতে না পেরে করুন দৃষ্টিতে উনার কাছে আকুতি করে বলতে উঠলাম,,,
-রেহান আমি সত্যিই বুঝিনি,,,
-তোর আর বোঝাতে হবে না,,,তুই একশত বছর প্রেম করলেও কিছু বুঝবি না,,,(নাক মুখ লাল করে)
উনার এরুপ আচরণ দেখে উনার দিকে তাকিয়ে ভাবনার সাত সাগরে ডুবে গেলাম।। কি হতে পারে উনার এই রাগের কারণ।।পরে অনেক চিন্তার যোগ বিয়োগ করে কিছুই বের করতে না পেরে নিরউপায় হয়ে উনার টিশার্টটা টেনে ধরে উনাকে আমার কাছে এনে উনার গালে খুব জোরে একটা চুমু খেয়ে দিশেহারা হয়ে সিড়ি দিয়ে দ্রুত বেগে দৌড় দিলে পেছন থেকে উনি পৈশাচিক হাসি দিয়ে উঠেন,,,,,
-সকালে রেডি থাকিস তোকে নিয়ে এক জায়গায় যাবো।।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


পরেরদিন খুব সকালে ঘুম উঠে গেলাম।। খুব আনন্দ লাগছে ফাস্ট টাইম আমরা দুজন কোথাও ঘুরতে যাবো।।আর দেরি না করে আমি ঝটপট করে ফোনটা হাতে নিয়ে উনাকে কল দিয়ে হেসে বলে শুরু করলাম,,,,
– আপনে এখনও ঘুমুচ্ছেন আজকে না আমাদের কোথাও যাওয়ার কথা ছিল,,
-হুম্মম,,,(ঘুম ঘুম কন্ঠে)
-হুম্মম কি আম্মুকে কি বলবো আর আমি স্কুল ড্রেস পড়ে বসে আছি তো??,,,
-চাচীকে বলবি আজকে এক্সট্রা ক্লাস আছে তাই বাড়ি ফিরতে দেরি হবে।।
-আচ্ছা,,
-আর ব্যাগে চাচীর বোরকাসহ চাচী বের হওয়ার সময় আপাদমস্তক ডাকতে যা যা পরে এইগুলা সব নিয়ে নিচে নেমে গেইটে অপেক্ষা করবি ওকে,,,,,
-আরে আমিতো স্কুল ড্রেস পরেছি আবার বোরকা দিয়ে কি হবে,,,
-যা বলেছি আপনে ঐটাই করেন বেশি বোঝবেন না,,
কথাটা বলে উনি কনটা কেটে দিলে আমি কোনো রকমে আম্মুর রুমে ঢুকে একপ্রকার চুরি করে আম্মুর হাত মোজা পা মোজা বোরকা নেকাব সবকিছু ব্যাগে ভরে নিচে নেমে এসে এক দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করলাম।।।সবকিছু এই খরুচ ডেভিলটার জন্য হয়েছে।।ঘুরতে যাবো ভালো কথা তার মধ্যে আবার এইসব আনতে বলার কোনো মানে হয় যত্তসব বদমাইশ একটা।।।

কিছুক্ষণ পর উনি খুব স্টাইল করে চুলগুলো হাত দিয়ে বাজ করতে করতে বের হলেন।।কাধে কলেজ ব্যাগ হাতে ব্রেন্ডের ঘড়ি গায়ে লাল একটা টি-শার্টে বেশ হ্যান্ডসাম লাগছে আজ ডেভিলটাকে।।।আমাকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখে উনি বাইক নিয়ে এসে ভীষণ জোরে হর্ন বাজিয়ে আমার ভাবনার বারোটা বাজিয়ে দিলেন।।তারপর আমি যেইনা বাইকে উঠার জন্য পা টা বাড়াবো অম্নি উনি আমাকে থামিয়ে দিয়ে হেয়ালী কন্ঠে বলেতে লাগলেন,,,,
-এখান থেকে একসাথে বের হলে কলোনির মানুষ কি ভাববে,,, তুই সামনের দিকে একটু হাঁট আমি ঐখান থেকে তোকে পিক-আপ করবো ওকে,,,
আমি একঝাঁক বিরক্তি নিয়ে উনাকে একটা ভেংচি কেটে বললাম,,,,
-মানুষকে এত ভয় পেলে প্রেম করেন কেন,,,
-আচ্ছা উপরের দিকে তাকিয়ে দেখতো ঠিক তোর শ্বাশুড়ির মতো একটা মহিলা না,,,, (মুচকি হেসে)
কথাটার মানে খোঁজতে আমি উপরের দিকে তাকালে দেখি মুখটা কেমন যেন গম্ভীর করে চোখগুলো রসগোল্লা করে প্রায় বের করে চাচী (রেহানের আম্মু) আমাদের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।।উনাকে দেখে আমার প্রায় পেট খারাপ হয়ে যাওয়ার উপক্রম।। অনেক ভয় করে চাচীকে।। চাচী প্রতিটা কাজে অনেক স্ট্রিট আর ভীষণ রাগীও।।আমি উনার দিকে তাকিয়ে মিথ্যা একটা হাসি দিয়ে আর কথা না বাড়িয়ে ওখান থেকে জলদি করে কেটে পরলাম।।
কিছুদূর এগিয়ে উনি আমাকে বাইকে চাপিয়ে এক অজানা দিগন্তে ছুটে চললেন।।আমিও উনার সাথে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে উনার কাধে মাথাটা রেখে মুচকি হেসে আমাদের বিয়ের মিষ্টি একটা সপ্ন দেখতে লাগলাম।।যদিও এই সপ্নটা আমি প্রতি রাতেই দেখি।।হঠাৎ আমার সপ্নে ফাটল ধরলো যখন উনি বাইকটা থামিয়ে আমাকে টেনে বাইক থেকে নামিয়ে একটা শপে নিয়ে গেলেন।। আমি উদভ্রান্তভাবে উনার দিকে তাকিয়ে থাকলে উনি আমাকে অবাক করে দিয়ে আমার কাধের ব্যাগটা দেখিয়ে বলেন,,,
-যা আনতে বলেছি এনেছিস,,,,?
-হুম্মম,,,আচ্ছা আমরা কোথায় যাচ্ছি??
-ভার্সিটিতে আমার ফ্রেন্ডসদের সাথে তোকে দেখা করাবো সবাই তোকে দেখতে চেয়েছে তাই,,,আর তারপর দুজন ঘুরতে যাবো।।
-অওও আচ্ছা,,,
-হুমম,,,এখন ঝটপট করে বোরকা, হাতে পায়ে মোজা আর যা কিছু লাগে সব পড়েনে,,,,

আমি যেন আকাশ থেকে পরলাম।। এইসব পড়বো মানে আমি তো আরো আফসোস করছি যে সাজুগুজু না করে স্কুল ড্রেস পড়ে চলে এসেছি আর উনি বলছেন বোরকা পড়তে।।।যেগুলোর সাইজ নাকি আমার তিন ডাবল।। আমার মতো আরো তিনজন জায়গা হবে এই বোরকায় তাই হতভম্ব হয়ে উনাকে বলে উঠলাম,,,
– অসম্ভব আপনার ফ্রেন্ডসরা দেখে আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে আমি এইগুলো পড়তে পারবো না প্লিজ,,,
-ফ্রেন্ডসদের পছন্দের এত দাম আর আমার পছন্দের কোন দামী নেই তোর কাছে,,,, (নাক মুখ লাল করে রেগে)
-আমি তা বলিনি কিন্তু,,,
-একদম চুপ আমি চাই আমার বউ যেন অন্যকোন পরপুষের নজরে না আসে।। আমার ফ্রেন্ডসরা তোকে পছন্দ করলেই বা কি হবে আর না করলেই বা কি হবে আমি তোকে পছন্দ করি এটাই কি তোর জন্য যথেষ্ট নয়,,,,, বল নিসা??
আমি পুরো বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি।। উনার এই আদেশটা না মানতে পারলে যেন আমি উনার বউ হবার যোগ্যতাই হারিয়ে ফেলবো কথার এমনি ধরন উনার।। শেষমেশ আর উপায় না পেয়ে এই ট্রিপল বোরকা পড়তে একপ্রকার বাধ্য হয়েছি বলা যেতে পারে। এটা পড়লে আল্লাহ জানেন আমাকে যে দেখা যায়নি।। নাকি আমি বোরকার মাঝে হারিয়ে যাই।। যাইহোক উনার মন রক্ষার্তে আমি আমার শরীরের আপাদমস্তক ডেকে উনার সাথে পথ চলতে রাজি হয়েছি,,,,,,,,,,,,চলবে

please do Not copy✔

#তোমাকে_চাই
#আরবি_আরভী
#তোমাকে_চাই (Season 2)
#পার্ট_১৪
#আরবি_আরভী

শেষমেশ আর উপায় না পেয়ে এই ট্রিপল বোরকা পড়তে একপ্রকার বাধ্য হয়েছি বলা যেতে পারে। এটা পড়লে আল্লাহ জানেন আমাকে এই যে দেখা যায়নি।। নাকি আমি বোরকার মাঝে হারিয়ে যাই।। যাইহোক উনার মন রক্ষার্তে আমি আমার শরীরের আপাদমস্তক ডেকে উনার সাথে পথ চলতে রাজি হয়েছি।।যাওয়ার পথে বাইকটা অনেক বার থেমে গিয়েছে।। কোন প্রব্লেম হয়েছে হয়তো।।

কিছুক্ষণ পর কোনোরকমে উনি উনাদের ভার্সিটিতে এসে আমাকে গেইটের সামনে নামিয়ে দিয়ে বাইকটা গ্যারেজে রেখে আসবে বলে চলে গেলেন আর আমি সেখানে মনের আনন্দে দাড়িয়ে আছি ।।। হঠাৎ দেখি কয়েকটা ছেলে-মেয়ে আমার ট্রিপল বোরকার কারনে আমার দিকে তাকিয়ে মিটমিটিয়ে হাসছে আর তাদের নিজেদের মধ্যে বিরবিবিয়ে একে অপরকে কি যেন বলছে।। যা দেখে আমার নতুন জায়গায় আসার সংকোচবোধ লজ্জায় পরিণত হয়েছে।।ডেভিলটাকে আগেই বলেছিলাম আমি এটা পড়বো না কিন্তু কে শুনে কার কথা।। যত্তসব।। ওদিকে আমাকে নিয়ে তাদের হাশি তামাশা এতই প্রখর হয়ে উঠেছে যে সেখানে দাড়িয়ে থাকাটাও যেন আমার জন্য দু সাধ্য।। সব বড় আপুদের ও ভাইয়াদের মাঝে নিজেকে বড্ডো একা লাগছে ।। এত্তক্ষন হলো রেহানের আসারও তো কোন নাম গন্ধ দেখছি না।। উনি আমায় কোথায় রেখে চলে গেলেন।।।কথাগুলো ভাবতেই চোখ ভরে কাঁন্না আসছে আমার।। আর শয়তানগুলো যেইভাবে পারছে সেইভাবে পঁচাচ্ছে আমাকে।।।বদমাইশের দল সব।। মেয়েগুলোও বলি হাড়ি ছেলেগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে কি সুন্দর আমার অসহায়ত্বের সুযোগে আমাকে অপদস্থ করতে মেতে উঠেছে।। কোন লজ্জা নেই।।আমাদের স্কুলে হলে তো রফিক স্যারকে বলে একেকটাকে পিটিয়ে লম্বা করে ফেলতাম।।

কিছুক্ষণ পর উনি কোথা থেকে যেন তারাহুরা করে এসে ভেতরে ঢুকার জন্য যেই না আমার হাতটা ধরলেন অম্নি আমি এক জাটকায় উনার কাছ থেকে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে ধমকের সুরে লাল বর্ণের চোখগুলো বড় বড় করে বলে উঠলাম,,,,
-ছাড়েন আমাকে কোথাও যাবো না আমি আপনে প্লিজ আমাকে বাড়িতে দিয়ে আসুন,,
উনি আমার দিকে কিছুক্ষণ বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে থেকে ব্যাপারটা পর্যবেক্ষন করে হয়েতো শেষমেশ কিছু অনুমান করতে না পেরে হতভম্বের কন্ঠে বলে উঠলেন,,,,
-কি হয়েছে নিসা এমন করছিস কেনো??
-আমাকে একা রেখে এত্তক্ষন কোথায় ছিলেন আপনে,,,, (চোখের পানি মুছতে মুছতে)
উনি একবার আমার দিকে আরেকবার ছেলেগুলোর দিকে তাকিয়ে থেকে বলেতে শুরু করলেন,,,
-কেন কেউ তোকে কিছু বলেছে,,
কথাটা শুনে মনে মনে ভাবলাম আপনার যেই না জেদ কিছু বললেও আপনাকে তা বলা যাবে না।। তাই একজন বাধ্য মেয়ের মতো শান্ত সুরে বললাম,,
-না কেউ কিছু বলে নাই,,
-তাহলে প্রব্লেম কি তোর,,
-কিছু না আমি যাবো না,,
মুখের কথা মুখেই রয়ে গেছে উনি আমার ডান হাতটা খুব শক্ত করে ধরে টেনেহিছড়ে আমাকে উনাদের ক্যাম্পাসে নিয়ে গেলেন।।সেখানে গিয়ে আমি তো পুরো অবাক ২০-২৫ জন ছেলে-মেয়ের সমাবেশ।। আমাদের এক সাথে দেখে সবাই একপ্রকার হৈচৈ করে সম সুরে বলে উঠেন,,,
-হায় ভাবীইইই,,,
এত্ত বড় বড় ভার্সিটি পড়ুয়া আপুরা ভাইয়ারা আমাকে ভাবী বলছে।।।ভাবতেই কেমন জানি আনন্দ আনন্দ লাগছে আমার।। আমি লজ্জায় কি করবো বুঝতে না পেরে মুচকি হেসে
রেহানের হাতটা শক্ত করে ধরলে একজন আপু বলে বসে,,,,,,,
-কিরে রেহান ভাবী এত লজ্জা পায় কেন,,
তার পরপরই আরেকটা আপু বলে ফেলেন,,
-হায়রে এত্ত পিচ্চি ভাবীর সাথে বাসর করবি কিভাবে দোস্ত,,,
পাশ থেকে একটা ভাইয়া বলতে শুরু করেন,,,
-আরে পিচ্চির সাথে করতেই অনেক মজা হবে তাই নারে ভাই,,,
কথাগুলো বলেই ডেভিলটাসহ তার সব বন্ধুরা হাসতে শুরু করলে রাগে আমার গা টা জ্বলতে থাকে।।কিসব বলছে উরা ছি।।আমাকে মুখটা গম্ভীর করে থাকতে দেখে একটা আপু এসে তার পাশে আমাকে বসিয়ে দিয়ে আমার সম্পর্কে নানান প্রশ্ন করতে থাকেন আর ওদিকে রেহান তার কয়েকটা ফ্রেন্ডসকে সাথে নিয়ে কোথায় যেন হারিয়ে গেলেন।।

বেশ কিছুক্ষন পর উনি ক্যাম্পাসে ফিরলে উনাকে দেখে প্রায় আতকে উঠি আমি।। কেমন যেন নাক মুখ লাল হয়ে আছে এখুনি যেন কারো সাথে ঝগড়া করেছেন এমনি উদভ্রান্ত চেহারা উনার।। কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই উনি আমার হাতটা ধরে ওখান থেকে প্রায় উধাও করে দিয়ে গেইটের সামনে এনে হাযির করিয়ে দিয়ে দোকান থেকে পানি কিনতে চলে গেলেন।।

বাহিরে এসে আনন্দে লাফাতে ইচ্ছা করছে উনার সাথে এই প্রথম বার কোথাও একাকি ঘুরতে যাবো।।কিন্তু আনন্দে পানি ফেলে আবারো সেই শয়তান ছেলেগুলোর সাথে আমার দেখা।।এবার সত্যিই ভয় করছে শয়তানগুলোকে কিন্তু তাদের চেহারার অবস্থা এমন কেন।। একজনের শার্ট ছেঁড়া আরেকজনের ঠোঁট দিয়ে রক্ত পরছে।। খুবি ভয়ংকর চেহারা ছেলেগুলোর।। আমি তাদের না দেখার ভাব করে মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি।।মনে মনে ভাবছি এবার কিছু বললে ডাইরেক্ট রেহানের কাছে নালিশ করবো তারপর উনার ভার্সিটির ছেলেপেলে উনি বুঝবেন।। কিন্তু হঠাৎ তাদের থেকে একজন আমাকে অবাক করে দিয়ে বলে উঠে,,,,,
-আপনে ভাইয়ের বউ এটা বললেই হতো।। আমরা কি আপনাকে কিছু বলেছি।।শুধুশুধু এভাবে মার খাওয়ানোর কি দরকার ছিল,,,
আমি তাদের কথা শুনে থঁ মেরে তাকিয়ে আছি।। কি বলছে শয়তানগুলো।।

যাইহোক বাসে উঠে দুজন দুপাশের সিটে বসে আছি।।আমি ডান পাশের সিটে আর উনি বাম পাশের সিটে মাঝখানে অসংখ্য যাত্রী।। ডেভিলটা আমাকে সিটে বসিয়ে দিয়ে আপন মনে কানে হেডফোন লাগিয়ে চোখজোরা বন্ধ করে দিব্বি মনোযোগে গান শুনছেন।। আমার প্রতি তার কোন খেয়ালই নেই দেখছি।।।ডেভিল খরুচ একটা।। কথাগুলো নিজে নিজে কতক্ষণ বিরবির করে অন্যমনস্ক হয়ে পরলাম।।

আমার পাশে জানালার দ্বারে বসে থাকা আপুর বাচ্চাটার হয়তো বমি পাচ্ছে তাই উনি সেইকখন থেকে জানালাটা খুলার চেষ্টা করছেন কিন্তু জানালাটার স্ক্রু অনেক টাইড হওয়ায় খুলতে পারছেন না।।আমিও অনেক চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না রেহানও উনার হেডফোনে ব্যাস্ত।। আর উপায় না পেয়ে শেষপর্যন্ত বাসের হেল্পারকে ডাক দিয়ে জানালাটা খুলতে বললে সে এসে জানালা খোলার বাহানায় আমার উপরে চড়ে বসে।।আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।। ব্যাটা দেখতেও লুচ্চার মতো।। আমি চোখগুলো বের করে রেহানের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।। এতকিছু হয়ে যাচ্ছে কিন্তু উনার তো সেদিকে কোন মাথাব্যথাই নেই।। হঠাৎ আমার ভাবনাগুলোতে ছেদ পরিয়ে রেহান বাসের হেল্পারকে এক ধাক্কা দিয়ে আমার উপর দেখে সরিয়ে দিয়ে রেগে খুব জোরে ধমকের সুরে বলে উঠেন,,,
-কি করছেন কি আপনে,,,
হেল্পার হতভম্ব হয়ে রেহানের দিকে তাকিয়ে থেকে শান্ত সুরে বলে উঠে,,,
-আপায় কথাতেই জানালা খুলতাছি
-তোর আর এই জনমনে জানালা খুলা হবে না,,
কথাগুলো বলেই উনি এক টানে ঠাস করে জানালাটা খুলে রাগান্বিত চেহারায় আবার নিজের সিটে বসে পড়লেন।।নিজের সবটুকু রাগ জানালার উপর ছেড়েছেন বুঝাই যাচ্ছে।।। বেচারা জানালাটাও ভেঙে যাওয়ার উপক্রম।।

(পর্বটা দিতে অনেক সময় নিয়ে অপেক্ষা করিয়েছি বলে আমি দুখিঃত,,রমজান মাসে আমার দিকটাও বিবেচনা করার জন্য সকল পাঠক ও পাঠীকাদের বিশেষভাবে অনুরোধ করছি,,,,☺)

কিছুক্ষন পর আমার পাশে বাসে দাড়িয়ে থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় বয়স্ক এক লোক আমাকে বিভিন্নভাবে ডিস্টার্ব করেতে শুরু করে ।।বিষাক্ত এই যন্ত্রণাটা থেকে কোনো ভাবেই নিস্তার পাচ্ছি না।। সে কোন না কোন ভাবে বারেবার আমার গায়ের উপর এলে পরছে।। যদিও বোরকা পড়ে আছি তবোও তার হাবভাব খুবি অস্বস্তিকর লাগছে।। গন্তব্যে যেতে আরো এক দেড় ঘন্টা লাগবে।। এত লোকজনের ভিরে রেহানকেও দেখা যাচ্ছে না।। এদিকে বদজাত লোকটাও গা ঘেষা থামাচ্ছেন না যতো বলছি সরে দাঁড়াতে সে উল্টো আমাকেই কথা শুনাছে।। পাশে বসে থাকা আপুটা হয়তো সামান্য অনুমান করতে পেরেছেন কিন্তু তার যে কিছু করার নেই তা তার চেহারার রেখায় স্পষ্ট।। আমি কি করবো বুজতে পারছি না।। খুবি খারাপ লাগছে।। নিচের দিকে তাকিয়ে চোখের নোনা জল ফেলতে লাগলাম।। শয়তান ডেভিল তোর জন্য আমার এই অবস্থা যদি আমার খেয়ালই রাখতে না পারবি তাহলে আমাকে তোর সাথে আনলি কেন।।রাব্বিস খরুচ।।কথাগুলো বিরবিরিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে উপরের দিকে তাকিয়ে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি লোকটার জায়গায় রেহান এসে কানে হেডফোন দিয়ে আমার পাশে দাঁড়িয়ে অন্যমনস্ক হয়ে আছেন একবারো আমার দিকে তাকাছেন না আর বদমাইশ লোকটা রেহানের জায়গায় বসে আছে।।

আমি উনাকে দেখে মনের খুশিতে একটা পৈশাচিক হাসি দিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।।এখানে কেউ না থাকলে নির্গাত এখন উনাকে খুব জোরে জড়িয়ে ধরতাম।। আমার ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে পাশের আপুটা মুচকি হেসে আমাকে জিজ্ঞাসা করে বসেন,,,
-উনি কি তোমার জামাই নাকি,,
-হুম্মম,, আপনে কিভাবে বুঝলেন? (মৃদু হেসে)
-অনেক আদর করে আপনাকে,,,,,,,,
চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে