#তোমাকে আমার প্রয়োজন ??
#মেঘ পরী??
??পর্ব-৩১??
.
?
.
তিথি ড্রেস চেঞ্জ করে সবুজ রঙের একটা পাতলা শাড়ি পরে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে,,,,তিথি চুল আঁচড়াচ্ছিল।নিলয় খাবার আনতে নিচে গিয়েছিল,,কিছুক্ষন পর রুমে এসে তিথির পিছে দাঁড়ায়।নিলয়কে দেখে তিথি কিছু বলতে যাবে তখনই নীলয় বলে উঠলো-;
-:আগে খেয়ে নেও,,পরে কথা হবে।
তিথি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল।তারপর দুজনে একসাথে ডিনার করে নিল।ডিনার শেষে তিথি নিলয়কে বলল-;
-:চলুন না একটু ছাদ থেকে ঘুরে আসি।
-:এখন এই সময়??
-: হুম। আমার না খুব ইচ্ছে নিজের প্রিয়জনের কাঁধে মাথা রেখে একসাথে চন্দ্রবিলাস করার।
-:ওও তাই।
-: হুম।
-:তা ম্যাডামের প্রিয়জনের নাম টা কী জানতে পারি??
-:আছে কেউ একজন।এই আপনি নিয়ে যাবেন কিনা বলুন তো??নইলে আমি নিজেই চলে যেতে পারবো।
এইবলে উঠে যেই যেতে যাবে ওমনি নিলয় ওকে কোলে তুলে নিয়ে বলে উঠলো-;
-:থাক আপনাকে আর কষ্ট করতে হবে না। নিজের বউয়ের সামান্য ইচ্ছাটুকু পূরণ করতে পারি আমি।
নিলয়ের কথায় তিথি মুচকি হেসে ,
– দুহাত দিয়ে নিলয়ের গলা জড়িয়ে ধরলো,,,তারপর নিলয় ওকে নিয়ে ছাদে আসে।ছাদের দোলনায় তিথি কে বসিয়ে দিয়ে নিজে তিথির কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল। তিথি নিলয়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল।দুজনে আজ একসাথে চন্দ্রবিলাস করতে ব্যাস্ত। কিছুক্ষণ পর তিথির নিলয়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো-;
-:আচ্ছা নিশির বিয়েটা এমন হুট করে না হলেই পারতো। বেচারা খুব কষ্ট পেয়েছে।
তিথির কথা শুনে নীলয় তিথির দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো-;
-: নিজের ভালোবাসার মানুষকে সারাজীবন নিজের করে নেবার জন্য সবাই চাই।আর আবির ভাইয়া ও এর ব্যতিক্রম নয়।তিনি নিশি কে খুব ভালোবাসেন।
-: কিন্তু তাই বলে এমন হুট করে বিয়ে।
-:এই যে ম্যাডাম ভাইয়া একদম ঠিক কাজ করেছেন।
-:তাই বলে এমন জোর করে।
-:ম্যাডাম নিজের ভালোবাসার মানুষকে সারাজীবন নিজের কাছে পেতে সবাই চাই। ভাইয়া ও তার ব্যতিক্রম নই।
-: তারমানে আপনি সব জানতেন,,,আগে থেকে আমাকে বলেননি কেন??যান আপনার সাথে কোন কথা নেই।(কিছুটা রেগে বলে উঠলো)
নিলয় মুচকি হেসে বলে উঠল-;
-:সবকথা বাচ্চাদের জানতে নেই।
-:কি!!!আমি বাচ্চা!! তাহলে এই বাচ্চা কে বিয়ে করলেন কেন??(কিছুটা অভিমানী সুরে বলে উঠল তিথি)
নিলয় তিথিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,,,তিথির পেটে মুখে গুঁজে বলে উঠলো-;
-:এ বিয়ে না করে যে আর উপায় নেই।এই বাচ্চাটাকে ছেড়ে যে আমি চলতে পারব না এক মূহুর্ত ও।কারণ এই বাচ্চা মেয়েটাকে যে অনেক দিন আগেই আমি আমার এই মন দিয়ে দিয়েছি।
নিলয়ের কথা শুনে তিথি অজান্তেই হেসে ফেললো। তিথি মনে এক অজানা ভাললাগা কাজ করতে লাগল,,পুনরায় সে নিলয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর নিলয় বলে উঠলো-;
-:তিথি!!
তিথি খুব অবাক হল নিজের নাম নিলয়ের মুখে শুনে সচরাচর নিলয় তাকে তিথি বলে ডাকে না যখন সে খুব রেগে থাকে কিংবা কোন সিরিয়াস বিষয় নিয়ে আলোচনা করে তখনই তাকে তিথি বলে ডাকে।নীল
নিলয় এবার তিথির দিকে তাকিয়ে বলে উঠল-;
-:তিথি!!
-:হ্যাঁ বলুন শুনছি।
-:আমি তোমার কাছ থেকে একটা সত্যি কথা লুকিয়েছি অনেকদিন ধরে লুকিয়ে আসছি তোমার কাছ থেকে।বলতে পারো কিছুটা তোমাকে হারানোর ভয় আর জড়তার মাঝে এতদিন আমি আটকা পড়েছিলাম কিন্তু আমি চাইছি আজকে তোমার কাছে এই বিষয়টা ক্লিয়ার করে নিতে কারণ আমি চাইনা আমাদের এই সম্পর্ক মিথ্যা কোনো কিছু দিয়ে শুরু হোক।
তিথি অবাক হয়ে নিলয়ের কথাগুলো শুনছিল।নিলয় কিছুটা থেমে আবার বলে উঠলো-;
-; আমি একজন বিজনেসম্যান এছাড়াও আমার একটা অন্য পরিচয় আছে।আমি একজন মাফিয়া। বিশ্বাস করো তোমাকে আমি অনেক আগেই কথাটা বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু তোমাকে হারানোর ভয় আমাকে বারবার বাধা দিয়েছে একথাটা তোমার কাছ থেকে লুকানোর জন্য কিন্তু আর আমি চাইনা তোমার কাছ থেকে লুকাতে।তিথু এই সত্যি জানার পর তুমি কি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে??(ছলছল চোখে তাকিয়ে)
তিথি এখনো কিছুটা বিস্ময় নিয়ে নিলয় এর দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু পরক্ষনেই নিলয় কে অবাক করে তিথি হেসে উঠলো তারপর নিলয়ের হাত নিজের হাতের মুঠোয় এনে বলে উঠলো-;
-: আপনি কি ভেবেছেন এই সামান্য কথার জন্য আমি আপনাকে ছেড়ে চলে যাব।কখনোই না মিস্টার।আর আমি এটা আগে থেকেই জানতাম।
নীলয় অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল-;
-: তুমি আগে থেকেই জানতে!!!কিন্তু কি করে
ভাইয়া আমাকে বলেছিল যেদিন আমি ভাইয়াকে আপনার বিষয় বলেছিলাম,,ওই দিন রাতেই ভাইয়া আপনার সম্পর্কে সব তথ্য জেনে আমাকে বলেছিল।
-:তুমি আমাকে আগে বলনি কেন??
-:আমি চেয়েছিলাম আপনার মুখ থেকে এই কথাগুলো শুনতে।
নিলয় এক ঝটকায় তিথির কোল থেকে উঠে তিথিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
-:আই লাভ ইউ পাখি তুমি জানো না আমি আজ কতটা খুশি।আই লাভ ইউ জান।
বেশ কিছুক্ষণ পর তিথি জিজ্ঞাসা করল-;
-:আজ ঘুমুবেননা।
নিলয় কিছুক্ষণ তিথির দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো-;
-: হুম চলো।
বলে তিথি কে পুনরায় কোলে তুলে নিচে নেমে গেল।
.
.
.
রাতে তিথি নিলয়ের বুকে মাথা রাখে শুয়ে আছে।রাত গভীর হচ্ছে এদিকে ঘন ঘন শ্বাস প্রশ্বাস বাড়ছে।নিলয় তিথির মুখটা কিছুটা উঁচু করে তিথির কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিয়ে,,, তিথির দিকে এক তাকিয়ে বলে উঠলো-;
-:পাখি আই লাভ ইউ।
তিথি মুচকি হেসে বলে উঠলো-;
-:আই লাভ ইউ টু মিস্টার।
-:এখনো তো বললে না তোমার প্রিয়জনের নাম কী??
তিথি নিলয়কে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলো-;
-:আপনি ছাড়া প্রিয়জন বলতে কে বা আছে আমার জীবনে।
নিলয় ও তিথি কে গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরে স্লো ভয়েসে বলে উঠলো-;
-:পাখীইইইইই!!
-:হুমমম।
-:মে আই..
তিথি নিলয়ের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ল যার অর্থ হলো হ্যা।
.
.
রাত যত গভীর হচ্ছে তত ঘন ঘন শ্বাস প্রশ্বাস বাড়ছে।কারন আজ নিলয় তার বউকে নিয়ে ভালবাসার সাগরে পাড়ি দিয়েছে।তিথির ঠোঁটজোড়া শুষে নিতে নিতে ওর শরীর থেকে শাড়ির আঁচলটা সরিয়ে দিল তারপর তিথির গলায় নিজের ঠোঁট রাখতেই তিথি কু্ঁকড়ে গিয়ে নিলয়ের বুকে মুখ লুকিয়ে ফেলল।
নিলয় আজ তার ভালোবাসার মানুষটিকে নিজের করে নেওয়ার নেশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে অনেকটা বেশি।তাইতো তিথির লজ্জাকে উপেক্ষা করে তিথির গলায় চুমু দিতে থাকে নিলয়।ওর গলা ঘাড় ভরিয়ে দিচ্ছে ভারি ভারি চুমুতে।আজ আর কোন দূরত্ব নেই।সব দূরত্ব যেন ভালবাসা দিয়ে পরিপূর্ণ করে দিচ্ছে।
তিথিকে আপন করে নেয়ায় ব্যাস্ত নিলয়।আর তিথি!!তার শ্বাসপ্রশ্বাস ঘন থেকে আরো বেশি ঘন হচ্ছে।আর সেই সাথে পরিবেশটা ও নেশাময় হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ রাতের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সূর্যের আলো পড়লো নিলয়ের বেডরুমে,,,চোখে আলো পড়াই তিথির ঘুম ভেঙে গেল,,, উঠে নিজেকে আর নিলয়কে একই চাদরের নিচে দেখতে পায়।
তিথি উঠে বসে চাদরটা ভালমতো গায়ে জড়াতেই দেখতে পেল নিলয় তার দিকে তাকিয়ে আছে। নিলয়েরর থেকে লজ্জায় চোখ সরিয়ে নেয় তিথি,,,,আজ তার ভাল লাগছে কারন সে পুরোপুরিভাবে নিলয়কে নিজের করে পেয়েছে।তবে খুব বেশি লজ্জা ও হচ্ছে।নিলয় তিথির আরও একটু কাছে এসে একটু ঝুঁকে বলল,
.
.
-:আই লাভ ইউ পাখি।
-:আই লাভ ইউ টু নিলয়।
.
তিথির কপালে চুমু দিয়ে নিলয় বলল,
.
.
-”ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নাও।”
.
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]