#তোমাকে আমার প্রয়োজন ??
#মেঘ পরীক্ষা??
??পর্ব-৩০??
ফুল দিয়ে সাজানো খাটে বসে আছে নিশি,,, এখনও সে চুপ করে বসে আছে,,,,ইতিমধ্যে যে তার জীবনে একটা নতুন পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে সেই বিষয়ে তার কোনো খেয়ালই নেই।হঠাৎ রুমের দরজা আওয়াজ হওয়ায় নিশি সেদিকে তাকিয়ে দেখলো আবির রুমে প্রবেশ করেছে।আবিরকে দেখে নিশি নিজের মুখ ঘুরিয়ে নিল। আবির রুমে প্রবেশ করে নিশির দিকে একবার তাকিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।
কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে নিশির পাশে বসলো। আবিরের উপস্থিতি নিজের পাশে অনুভব করলেও নিশি কোনো কথা বলল না,,, চুপচাপ বসে থাকলো।নিশির কোনো সারাশব্দ না পেয়ে আবির নিশির কাঁধে হাত রাখল,,, কিন্তু এবারেও নিশি নিশ্চুপ।নিশির এরূপ আচরণে আবির যেন একটুও অবাক হলোও না,,,একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিশি কে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলতে লাগলো-;
-:দেখো আমি মানছি হঠাৎ করে এইভাবে বিয়েটা হওয়ায় তুমি মন থেকে মেনে নিতে পারছো না। কিন্তু দেখো এমনিতেও আমার আর তোমার বিয়ে আগে থেকেই ঠিক ছিল আর…
আবিরকে আর কিছু বলতে না দিয়ে,,,নিশি বলে উঠলো-;
-: আপনার দেরি হয়ে যাচ্ছে।
-:মানে!!!!(কিছুটা অবাক হয়ে)
আবিরের দিকে তাকিয়ে-;;
-:মানেটা খুবই পরিষ্কার।আপনি তো আমাকে ভোগ করার জন্যে ই বিয়েটা করেছেন,,,নিন আসুন আমাকে ভোগ করুন।
বলেই নিজের গা থেকে শাড়ির আঁচলটা সরিয়ে দিল।
-:নিশি!!!(চিৎকার করে)
-: চিৎকার করছেন কেন???আমি তো কোনো ভুল কিছু বলিনি।আপনি তো আমাকে ভোগ করার জন্য ই এত তাড়াতাড়ি আমার মত ছাড়াই বিয়েটা করলেন।
আবির নিশির কাছে গিয়ে শাড়ির আঁচলটা পড়িয়ে দিয়ে,,,বলল-;
-:দেখো নিশি আমার কথা….
নিশি এবার আবিরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলতে লাগলো-;
-:ব্যাস আমি অনেক দিন ধরে অনেক কথা শুনেছি আপনার।আজ আমি বলবো আর আপনি শুনবেন।কি ভেবেছেন আমাকে আপনি আপনার কেনা সম্পত্তি!!যখন লজ্জা ভয়ভয় ত্যাগ করে রাস্তা ভর্তি লোকের সামনে আমি আপনার কাছে আমার মনের কথা গুলো প্রকাশ করলাম।তখন আপনি কি করলেন??এক রাস্তা লোকের সামনে আমাকে চড় মেরে আমার নিজের যোগ্যতা দেখিয়ে দিলেন।
এর জন্য তো আমি আপনাকে কোনো প্রকার দোষারোপ করিনি।চলেই তো গিয়েছিলাম আপনাকে ছেড়ে সারা জীবনের মতো,,,,তাহলে কেনো আপনি আবার আমার জীবনে এলেন??কেনো আবার জোড় করে নিজের জীবনে সাথে
আমাকে বাধার জন্য এতটা মিরিয়া হয়ে গেলেন???আর আজ!!!বিয়েটা এমন হুট করেই করে নিলেন। একবারও কি আমার মতামত নেওয়া প্রয়োজন বোধ করেছিলেন?? একবারও কি আমার মনে কি আছে এটা বোঝার চেষ্টা করেছেন??
না আপনি তা করেননি।আপনি শুধু নিজের টাই ভেবে এসেছেন সেই প্রথম থেকেই,,,,আমি কি চাই না চাই এই নিয়ে সেই বিষয়ে ভাববার মতোন আপনার সময়ই নেই। কিন্তু শুনে রাখুন!!আমি আপনাকে ভালোবাসতাম এক সময় বিশ্বাস করুন নিজের থেকেও অনেক অনেক বেশি ভালোবাসতাম আমি আপনাকে কিন্তু এখন..এখন আমার মনে আপনার জন্য বিন্দুমাত্র ভালোবাসা নেই।যা আছে তা শুধু ঘ্রিনা।যতোই আপনি আমাকে বিয়ে করুন না কেন স্বামী হিসাবে আপনি শুধু আমার দেহ পাবেন কিন্তু মন কখনই পাবেন না।।।
আবির এতক্ষন চুপ করে নিশির কথা শুনছিল,,,আজ সে একটা কথা বলেনি নিশিকে বলবেই বা কী!!সে তো সত্যিই নিশির সাথে চরম অন্যায় করেছে। এতদিন নিশির মতের কোনো পরোয়াই করেনি।নিজের সিদ্ধান্তকে নিশির উপর চাপিয়ে দিয়েছে একপ্রকার জোর করে।নাহ আর সে এই ভুল করবে না,,,তাই সে আজ নিশি কে বলতে দিয়েছে।আবির নিশির দিকে অসহায় নজরে একবার তাকিয়ে,,বলে উঠলো-;
-:নিশি ভালোবাসি বলেই এত তাড়াতাড়ি বিয়ে করেছি,,,তোমাকে ভোগ করবে বলে নয়।শুয়ে পড়ো অনেক রাত হয়েছে।
এই বলে আবির বাইরে চলে গেল।নিশি এতক্ষন নিজের কান্না চেপে রাখলেও এবার আর পারলো না। আবির চলে যাবার সাথে সাথেই কেঁদে উঠলো হু হু করে।আবিরকে এইভাবে কথাগুলো বলতে চাইনি সে কিন্তু আর কতো সহ্য করবে!!মানুষটাকে ভালোবাসে বলেই তো এতদিন তার সবকিছুই সহ্য করেছে।কিন্তু এইভাবে হঠাৎ করে বিয়েটা কিছুতেই যেন মেনে নিতে পারছে না।তাই আজ সে রাগের বসে এই কথাগুলো বললো।সে মানুক আর না মানুক ভালো তো সে আবিরকেই বাসে।
এইসব কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই মেঝেতে বসেই ঘুমিয়ে পড়েছে।
.
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]
.
.
.
.
“”ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।””