#তোমাকেই_ভালোবাসি❤
#পর্বঃ_১২❤
#Writer_Safan_Aara❤
প্যান্ডেলের দুদিক থেকে ভেতরে ঢুকেছিলো অনন আর অদিতি। নিজেদের বরাবরে দাড়িয়ে ছিলো তারা। একে অপরের দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবছিলো তারা দুজন। কি করে থামাবে তাদের বিয়ে তারা! না কি এভাবে একঝটকায় আলাদা হয়ে যেতে হবে তাদের। না। এটা সম্ভব না।
♣
-“আব্বু প্লিজ! আমি এই বিয়ে করবো না।প্লিজ আব্বু!”
কাদো কাদো ফেস নিয়ে বললো অদিতি।
-“কেন মা? তোকে আগেও বুঝিয়েছি ছেলেটা খুব ভালো। সমস্যা কোথায় তাহলে?”
-“জানি না আব্বু। আমি এই বিয়ে করতে পারবো না।”
-“তোকে লাস্টবার জিজ্ঞেস করছি। তুই কি কাউকে পছন্দ করিস?”
-“আব্বু!”
-“অদিতি আমাদের সাথে চল।”
মনিকা আর পুষ্পিতা অদিতিকে নিয়ে প্যান্ডেলের এক কোণায় চলে গেলো।
♣
-“আম্মু! আব্বু! সমস্যা কি তোমাদের? আমি বলেছি তো আমি ওই কণাকে পছন্দ করি না। তবে কেন তোমরা আমাকে জোর করে ওর সাথে বিয়ে দিতে চাচ্ছো!”
-“কণার মধ্যে খারাপ কি দেখলি তুই?”
-“জানি না! বাট ওর সাথে আমি এনগেজমেন্ট করবো না। বিয়ে তো দূরেরই কথা!”
-“কিন্তু কেন? তুই কি অন্য কাউকে পছন্দ করিস?”
-“এই নিয়ে একশো বার জিজ্ঞাসা করলে তুমি!”
-“তাও তো উত্তর দিচ্ছিস না তুই!বল না! তোর পছন্দের কেউ আছে?”
♣
-“আর কতো চুপ থাকবি তুই অদি?”
-“তুই কি এখনো বুঝতে পারিস নি অননের জন্য তুই কি ফিল করিস?”
-“কি বলছিস তোরা এসব!”
-“আমার দিকে তাকা অদিতি।”
অদিতি পুষ্পিতার দিকে ঘুরে দাড়ালো।
-“ওই দেখ ওইদিকে!”
-“কি আছে ওইদিকে?”
-“তাকা আগে!”
অদিতি তাকিয়ে দেখলো অনন কণার সাথে কথা বলছে। কণা তো এমনভাবে হাসছে যেন লজ্জায় মরে যাচ্ছে সে! এই দৃশ্য দেখে অদিতি যেন জ্বলে পুড়ে গেলো! চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে তার।
-“জেলাসি!”
হঠাৎ মনিকার মুখে এমন কথা শুনে চমকে উঠলো অদিতি।
-“মানে?”
-“মানে হচ্ছে তুই অননের পাশে অন্য কাউকে সহ্য করতে পারছিস না! জেলাস ফিল করছিস তুই!”
-“একেই ভালোবাসা বলে অদি!”
অদিতিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলল পুষ্পিতা।
-“এখন বুঝতে পারছিস না অদি। পরে ঠিকই বুঝবি। যখন তুই অননকে চিরতরে হারিয়ে ফেলবি। অনন হয়ে যাবে অন্যকারোর আর তুই হয়ে যাবি অন্যকারোর!”
-“এতো ভাবিস না অদিতি।”
-“যা অদিতি। আংকেল আন্টিকে সব বলে দে।”
-“যা অদিতি!”
-“যা!”
মনিকা পুষ্পিতার এতো জোড়াজুড়িতে আর অননের পাশে অন্যকাউকে দেখে নিজেকে আর সামলে রাখতে পারলো না অদিতি।
-“ইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইই! থাম তোরা যাচ্ছি আমি!”
বলেই অদিতি ছুট লাগালো মা বাবার দিকে। আর মনি-পুষ্প খুবই খুশি হয়ে জোড়ে চিৎকার দিয়ে “হাই – ফাইভ” বলে দুজনের হাত এক করে তালি দিলো।
♣
-“মা আমি অ……..!”
-“হাই অনন, হাই আন্টি, হাই আংকেল!”
অনন তার মা বাবাকে নিজের পছন্দের মানুষের কথা বলতেই নিয়েছিলো কোত্থেকে যেন কণা এসে হাজির হয়ে গেলো। মেয়েটার এসব ইরিটেটিং কাজের জন্যই অনন ওকে সহ্য করতে পারে না।
-“হ্যা, আলহামদুলিল্লাহ ভালো!”
-“বাহ!আজ তো দেখছি রেডি সেডি হয়ে একদম সবার আগে এসে বসে আছো!এমনিতে তো অন্যান্য অনুষ্ঠানে তোমাকে খুজেই পাওয়া যায় না!”(যত্তসব! কাঁঠালের আঠা!?)
-“কি যে বলেন!”
এমন একটা ভাব নিলো কণা যেন লজ্জায় সে মরে যাচ্ছে!
♣
-“আব্বু! আম্মু!”
-“হ্যা বল অদি!”
-“আমি এই বিয়ে করতে পারবো না। কারন আমি…….!”
-“কারণ তুই কি?”
বড় করে একটা দম নিয়ে অদিতি বলল-
-“কারণ আমি অনন কে ভালোবাসি!”
♣
-“হইছে তোমার কণা? এখন কি তুমি যেতে পারো?আমার একটু ইম্পর্ট্যান্ট কথা ছিলো আব্বু আম্মুর সাথে।”
-“হ্যা। অবশ্যই! সরি। বাই ভাইয়া। বাই আন্টি। বাই আংকেল।”
-“ভাইয়া! লাইক সিরিয়াসলি?”
-” হ্যা বল কি বলছিলি!”
-“তারাতারি বল বাবা। অনুষ্ঠান শুরু করতে হবে তো।”
-“উফ মা! আমি কণাকে বিয়ে করতে চাই না মা!”
-“এ পর্যন্ত হাজার বার তুই একটা কথাই বললি! এবার বিয়ে না করার কারণটা তো বল বাবা!”
-” কারণ আমি আপনাকে বলছি আন্টি।”
অননের পেছন থেকে বলে উঠলো আকাশ।অনন আকাশের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকালো। কিন্তু সে চোখে তাকিয়ে আজ আর ভয় পাচ্ছে না আকাশ আর আশিক। তারা আজ নিজেদের বেস্ট ফ্রেন্ডের জীবনকে সুন্দরভাবে সাজানোর জন্য কি কি করা লাগবে তার পরিকল্পনা আগে থেকেই করে এসেছে।
-“আচ্ছা তুমিই বলো বাবা!”
-“কারণ ও….”
-“অদিতিকে ভালোবাসে।”
বলল আকাশ আর আশিক।
-“সত্যি বলছো তোমরা?”
-“হ্যা আন্টি!”
-“অনন! ওরা যা বলছে তা কি সত্যি?”
-“…………..”
-“অনন কিছু বলছিস না কেন?”
চেচিয়ে উঠলেন অননের বাবা।
-“হ্যা আমি অদিতিকে ভালোবাসি। আর ওকে ছাড়া আমি আর অন্য কাওকে বিয়ে করতে পারবো না।”
চলবে…………………..❤।