#তোমাকেই_ভালোবাসি❤
#পর্বঃ_১০❤
#Writer_Safan_Aara❤
?
সকালে অনন বাইক নিয়ে দাড়িয়ে আছে অদিতির জন্য। বড্ড মন খারাপ আজ তার। রাতে যে ঘুমও হয় নি তার। তাইতো সকাল সকাল রেডি হয়ে দাড়িয়ে আছে অদিতির জন্য। অদিতির এনগেজমেন্ট হয়ে গেলো তো আর ওকে এভাবে নিজের সাথে নিয়ে যেতে পারবে না আর। নিয়েআসতেও পারবে না। আগের মতো হয়তো ঝগড়াও হবে না ওদের। এসব ভাবতে ভাবতে সে দেখলো অদিতি লিফট থেকে বেড়িয়ে ওর দিকেই আসছে। না চাইতেও ঠোটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটিয়ে তুললো সে।
♣
আজ অদিতিরও যে মনটা খুবই খারাপ।গত রাতে যে তারও ঘুম হয় নি ঠিকমতো। তবে অননের মতো সে তার অনুভূতির একটা নাম দিতে ব্যার্থ। যার দরুন খুবই দ্বিধা-দ্বন্দে কাটাচ্ছিল তার সময় গুলো সে। লিফট থেকে বেড়িয়ে অদিতি অননকে দেখতে পেয়ে অননের কাছেই যেতে লাগলো। তবে তার মুখে আজ কোনো হাসি নেই। রোজকার মতো আজ আর ঝগড়া করতে এগোচ্ছে না সে।
♣
-“আমার জন্য দাড়িয়ে আছেন বুঝি?”
-“হ্যা মিস অদিতি। উঠে আসুন।”
ঠোটের কোণের সেই হাসিটা বজায় রেখে অদিতির প্রশ্নের উত্তর দিলো সে।অদিতি আর কোনো কথা বললো না। চুপচাপ উঠে বসে পড়লো সে। বাইক স্টার্ট দিলো অনন।অদিতির এই নিরবতা অননকে আজ ভাবাচ্ছে। অন্য দিন হলে হয়তো খুবই আনন্দ হতো ওর। কিন্তু আজ আর এই নিরবতার মাঝে আনন্দ খুজে পাচ্ছে না সে। তবে ভাবার আরেকটা বিষয় হচ্ছে অদিতি নিজের এনগেজমেন্টের আগ সময়টুকুতে এমন চুপচাপ হয়ে গেলো কেন। তার তো খুবই খুশি থাকার কথা। তাহলে কি তার পছন্দ করা ছেলের সাথে তার বিয়ে হচ্ছে না। নাকি অন্য বিষয়! কি হতে পারে! তাহলে কি ওর অমতে ওর বিয়ে হচ্ছে!আর অন্যদিকে অদিতি ভাবছে অনন আজ হাসছে। ওর কি একটুও মন খারাপ লাগছে না! ওরই বা মন খারাপ কেন হবে। ওর তো এনগেজমেন্ট। বউ পাবে। আনন্দেই থাকার কথা। কিন্তু আমি এসব কেন ভাবছি! ওর বিয়ে হলেই বা আমার কি আর না হলেই বা আমার কি! ধুর!
এসব ভাবতে ভাবতে পৌছে গেলো তারা।পুরো রাস্তা নিজেদের ভাবনায় ডুবে ছিলো বলে কোনো কথাই হয়নি তাদের। অদিতি নিজের ভাবনার জগত থেকে বের হয়ে বাইক থেকে নেমে ক্লাসের দিকে চলে গেলো। অননের দিকে একবার ফিরেও তাকালো না সে। হয়তো এটা তার অভিমান ছিলো। অনন দাড়িয়ে দাড়িয়ে অদিতির চলে যাওয়া দেখছিলো। হঠাৎ কাধে কারো হাতের স্পর্শ অনুভব করে পিছনে তাকালো সে।
-“কি রে! ওভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?”
অননের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে মারলো আকাশ।
-“কই? কি বলছিস?”
অপ্রস্তুত হয়ে বললো অনন।
-“অদিতিকে দেখছিস তাই না? এখন রোজ একসাথে যাস,আসিস!”
-“কি ভাবিস আমরা কিছু বুঝি না!”
আকাশের সাথে তাল মেলালো আশিক।
-“না রে! তেমন কিছুই না। আর সামনের সপ্তাহে ওর এনগেজমেন্ট।”
-“তাতে তোর এতো জ্বলছে কেন?”
অননের কথা শেষ না হতেই বলল অশিক।
-“আমার জ্বলছে মানে!”
ভ্রু কুচকে উত্তর দিলো অনন।তার উত্তরে ঠোট বাকালো আশিক।
-“ভালোবাসিস ওকে?”
শান্ত গলায় বললো আকাশ।
-“আরে নাহ! ভালো কেন বাসতে যাব আমি ওকে। ভালো টালো বাসি না আমি ওকে। ওই তো জাস্ট……………..!”
-“আর মিথ্যে বলিস না অনন। তোর চেহারায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তুই ওকে হারানোর কতোটা ভয়ে আছিস। ওকে ভালোবাসিস তাই না?”
-“হ্যা বাসি। অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি। এই ভালবাসা কোত্থেকে আসলো আমি জানি না। সারাক্ষণ জকরা ঝগড়া আর রাগারাগিগুলো ভালোবাসায় কবে পরিণত হয়ে গেলো বুঝলাম না। কিন্তু এটা ঠিকই বুঝছি আমি ওকে অনেক বেশি ভালোবাসি।”
-“তাহলে বলে দে ওকে তোর মনের কথা!”
উত্তরে কিছুই বললো না অনন।
♣
-“কিরে! এভাবে মুড অফ করে বসে আছিস কেন? কি হয়েছে তোর? তার কথা ভাবছিস এতো?”
অদিতির দিকে প্রশ্ন ছুড়ে মারলো পুষ্পিতা।
-“কিছু না রে।”
-“আমাদের বলবি না?” বললো মনিকা।
-“আগামী সপ্তাহে অননের এনগেজমেন্ট!”
-“তো?”
-“তো মানে? উনার বিয়ে হয়ে গেলে আমার সাথে ঝগড়া করবে কে?”
-“মানে? তুই ভাইয়ার সাথে ঝগড়া করতে পারবি না বলে মন খারাপ করে বসে আছিস? এটা কোনো কথা!”
-“এটা কথা না তো কি?”
-“ভাইয়ার এনগেজমেন্ট হচ্ছে তাই তোর মন খারাপ?”
-“হ্যা!”
-“ঝগড়া করতে পারবি না তাই?”
-“হ্যা!”
-“ভাইয়াকে ভালোবেসে ফেলেছিস?”
-“হ্যা!”
-“সত্যিইইইইইইইইইইইই!”
-” না না! ভুলে বলে ফেলছি!”
-“উহু! একদম ঠিক বলছিস! তুই ভাইয়াকে ভালোবেসে ফেলেছিস!”
-“একদমই না!”
-“এখন বুঝতে পারছিস না। পড়ে ঠিকই বুঝবি।”
-“ধুর! তোরা কি শুরু করলি। সর তো!”
বলে ওদের রেখে ক্যানটিন থেকে ক্লাসে চলে গেলো অদিতি।
♣
-“উঠে বসুন।”
ছুটির পর অনন অদিতির জন্য অপেক্ষা করছিলো। অদিতি আসতেই ওকে উঠতে বলল।
অদিতিও চুপচাপ উঠে বসলো। বাইক চলছে আপন গতিতে। কোনো কথা নেই দুজনের মাঝে। বাড়ি পৌছে অদিতি বাইক থেকে নেমে চলে যেতে নিতেও অনন থামালো ওকে।
-“মিস অদিতি।”
-“হ্যা বলুন”
-“কংগ্রাচুলেশনস!”
-“ধন্যবাদ”
বলে চলেই যাচ্ছিলো অদিতি। আবার দাঁড়িয়ে পরলো সে। ভাবলো বিয়েটা তো অননের তাই কংগ্রাচুলেশনস তো ওর অননকে দেয়ার কথা ছিলো।
-“হেই ওয়েট,মি.অনন! বিয়েটা তো আপনার। আপনি আমাকে কনগ্রাচুলেট করছেন কেন? কাজটা তো আমার ছিলো তাই না?”
-“কি বলছেন মিস অদিতি। মা তো বললো আপনার বিয়ে!”
-“হোয়াট!”
চলবে………………. ❤।