#তোকে_ভালোবেসে_খুব
#পার্ট_০১
#লেখিকা_সারা_মেহেক
ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ।শীত পরতে শুরু করেছে মোটামুটি ভালো ভাবেই।আয়ানদের বাসার ড্রইংরুমে প্রবেশ করার সাথে সাথেই মৌ এর কাঁপুনি শুরু হয়ে গেলো।কারন ড্রইংরুম এর দক্ষিনের জানালা দিয়ে হু হু করে ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করছে।মৌ এর ক্ষেত্রে এটা হাড় কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো বাতাস।
মৌ এর এমন কাঁপুনির দুটো কারন।এক.অন্যান্যদের তুলনায় মৌ এর শীত একটু বেশিই।যেখানে অন্যরা একটা সোয়েটার ব্যবহার করে সেখানে মৌ এর ক্ষেত্রে দুটো সোয়েটার লাগে।তাই ড্রইংরুমের জানালা দিয়ে ঠান্ডা বাতাস মৌ এর শরীরে লাগায় শীতে তার কাঁপুনি উঠে যায়।সেই সাথে আয়ানের প্রতি ভয়ের কাঁপুনি।আজকে সে আয়ান আর আয়ানের দ্বিতীয় গার্লফ্রেন্ডকে একসাথে রেস্টুরেন্ট এ দেখেছে।এই জন্য মূলত সে ভয়ে আছে।আয়ানের প্রতি তার ভয় লাগাটা ঘটে কখন তখন।সে সবসময় আয়ানকে দেখে ভয় পায়না।ঘটনাবিশেষে এটা ঘটে।
গেস্টরুম পার করেই সিঁড়ি দিয়ে সে অহনার রুমে যাবে।কিন্তু গেস্টরুমের কাছে যেতেই কেউ তার হাতটা হেচকা টান দিয়ে রুমের ভিতর নিয়ে গেলো।হুট করে হাতে এমন টান পরায় ভয়ে বুকটা দুরুদুরু করে কাঁপতে থাকে মৌ এর।
এই কাজটা কে করেছে তা ভালো করেই জানা আছে মৌ এর।সামনেই আয়ানকে রাগী চেহারায় সে দেখতে পেলো।তাই তাকে আর অবাক হতে হলো না।
সামনাসামনি দাঁড়ীয়ে আছে মৌ আর আয়ান।মৌ এর গলা শুকিয়ে আসছে এই ভেবে যে এবার যদি আয়ান নিজের দেওয়া থ্রেট টা সত্যি করে ফেলে তখন তো তার কপালে দুঃখ ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।
আয়ান এবার দাঁড়িয়ে থাকা থেকে বেডে বসে পরলো।আর মৌ আগের মতোই দাঁড়ীয়ে রইলো।আয়ান কপালে হাত ঘষতে ঘষতে শান্ত স্বরে বললো,
—“তুই কি আমাকে জ্বালানোর জন্যই পয়দা হয়েছিস মৌমাছি? ”
আয়ানের এমন শান্ত স্বরের মানে মৌ জানে সামনে কি হবে।তারপরও আজব বিষয় তার কাছে এটা লাগলো যে, এখন আর আগের মতো ভয় করছে না তার।এটা সবসময়ই হয় তার সাথে।আয়ানের থেকে দূরে থাকলে আয়ানকে খুব ভয় লাগে তার।কিন্তু সামনে আসতেই সব ভয় জানালা দিয়ে পালায়।এর আগেও এমনটা হয়েছে তার সাথে।
মৌ এর চুপ থাকা দেখে আয়ান একটা ধমক দিয়ে বললো,
—“চুপ করে আছিস কেনো??অহনার সাথে কথা বলার সময় তো মুখ দিয়ে খই ফুটে আর এখন কথা বলা যাচ্ছে না!!”
আয়ানের ধমক শুনে মৌ কেঁপে উঠলেও ভয় পেলো না তেমন।সে স্বাভাবিক গলায়ই বললো,
—“কি বলবো?”
আয়ান এবার উঠে গিয়ে বললো,
—“তুই ঐ রেস্টুরেন্ট এ গিয়েছিলি আমার উপর নজরদারি করার জন্য তাইনা?”
মৌ অবাক হয়ে বললো,
—“মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে আপনার আয়ান ভাইয়া।আমার তো খেয়েদেয়ে কাজ নেই আপনার পিছনে গোয়েন্দাগিরি করতে যাবো।”
আয়ান এবার আরো রেগে বললো,
—“সবসময় তুই আমাকে জ্বালাতেই থাকিস।কেনো বলতো?তোর সমস্যাটা কোথায়?”
মৌ একটু জোরে করে বললো,
—“আজিব তো।আপনাকে কখন জ্বালালাম আমি!সারাদিন দুই চারটা গার্লফ্রেন্ড নিয়ে সারা শহর টইটই করে ঘুরে বেড়াবেন,আর এক জায়গায় আপনাদের আমি একসাথে দেখে ফেললে এটা আমার দোষ হয়ে গেলো!!”
আয়ান আবারো ধমক দিয়ে বললো,
—“গলার আওয়াজ আস্তে হয়না??সবসময় মাইক লাগিয়ে কথা বলিস কেনো??”
মৌ এবার কোমড়ে দু হাত রেখে বাচ্চাদের মতো বললো,
—“এমন উল্টা পাল্টা দোষ দিলে গলায় হাই পাওয়ারের মাইক লাগাতেই হয়।”
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আয়ান এবার খুব বিরক্ত হয়ে গেলো।কি কথা বলতে আসলো সে, আর কথা গড়াতে গড়াতে কোথায় চলে গেলো।
আয়ান শান্ত গলায় বললো,
—“মেইন কথায় আসি।আব্বু,আম্মু, দাদি আর অহনার সামনে মুখ খুললে তোর অবস্থা খারাপ হবে বলে দিলাম”
মৌ জানে, আয়ান কি ব্যাপারে কথা বলছে। তারপরও সে না জানার ভান করে বললো,
—“কি ব্যাপারে??”
আয়ান মৌ এর দিকে খানিকটা এগিয়ে গিয়ে বললো,
—“আমার আর আমার গার্লফ্রেন্ড এর ব্যাপারে মুখ খুলবি না।আমি জানি তুই রেস্টুরেন্ট এ আমাদের একসাথে দেখেই আমার ফ্যামিলিতে এ কথা বলে দিতে চাইছিলি তাইনা?”
আয়ানের কথা শুনে মৌ এবার একটা শুকনো ঢোক গিললো।কারন আয়ান যা বলেছে তা সত্যিই।সে রেস্টুরেন্ট থেকেই ভেবে এসেছিলো যে আজকে যাই হোক সে আয়ানের ভালো সাজার মুখোশ সবার সামনে খুলবেই।কিন্তু তা আর মনে হয় হবে না।
মৌ এর চুপ করে থাকা দেখে আয়ান বললো,
—“আমি জানতাম তুই এমন কিছুই করবি।তাই আগে থেকেই বলে রাখলাম এমন কাজ ভুলেও করবি না।”
মৌ এবার সামান্য জোরে রেগে বলতে লাগলো,
—“কেনো করবো না??হাজার বার করবো।সবার সামনে সাধু সেজে বেড়ান আর আড়ালে গেলেই শয়তান হোন….আপনার সম্পর্কে আমি ভালো করেই জানি আয়ান ভাইয়া।সবাই জানে আপনি খুব ভদ্র। কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই।কিন্তু আমি তো জানি আপনার ঠিক কয়টা গার্লফ্রেন্ড আছে।যাস্ট বলি না তাই।একবার মুখ খুললে……”
মৌ কে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে আয়ান বাঁকা হেসে বললো,
—“তুই একবার মুখ খুলবি এ ব্যাপারে তো আমি কি চুপ হয়ে থাকবো।আমারও মুখ আছে।তুই যে রাফিকে লাইক করিস এ ব্যাপারটা আংকেলের কানে গেলে কি হবে সেটা তো জানিস ই।”
আয়ানের মুখে আবারো সেই থ্রেট পেয়ে চুপসে গেলো মৌ।এর আগেও আয়ান নিজেকে বাঁচানোর জন্য মৌ কে এ থ্রেট দিয়েছিলো।আর এ থ্রেটটা কাজও করে।কারন মৌ তার বাবাকে খুব ভয় পায়।আর রাফিকে পছন্দ করার ব্যাপারটা তার বাবা জানতে পারলে যে তাকে বাসা থেকেও বের হতে দিবে না সেটাও জানা আছে তার।
মৌ আয়ানকে আর কিছুু না বলে মুখটা ছোটো করে চলে গেলো।কারন সে জানে আর কোনো কথায়ই কোনো কাজ হবেনা।গেস্ট রুম থেকে বের হয়ে সে সোজা অহনার রুমে চলে গেলো।পুরো বাড়ীতে আয়ান,অহনা, মৌ আর আয়ানদের কাজের মহিলা জাহানারা খালা বাদে কেউ নেই এখন।আয়ানের বাবা নুরুল খান অফিসে আছেন। আর আয়ানের মা লতিফা বেগম আর আয়ানের দাদি মার্কেটে গিয়েছে কাজে।
মৌ রুম থেকে বের হতেই আয়ান একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
—“যাক বাবা বেঁচে গেলাম।মৌ এর পছন্দের এ চাবিটা আমার হাতে থাকলে ভবিষ্যতেও বেঁচে যাবো।”বলে একটা বাঁকা হাসি দিলো আয়ান।
এদিকে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে সেই অলুক্ষনে দিনটাকে দোষারোপ করতে লাগলো মৌ,যেদিন আয়ান জেনে গিয়েছিলো যে সে রাফিকে পছন্দ করে।সেদিনের পর থেকে ছোটো ছোটো বিষয়েই এ নিয়ে থ্রেট দেয় আয়ান।মৌ না পারছে এ ব্যাপারটা সইতে না পারছে কিছু বলতে।
মৌ অহনার রুমে গিয়ে বই খুলে গ্রুপ স্টাডি শুরু করলো।প্রায় প্রতিদিনই মৌ আর অহনা গ্রুপ স্টাডি করে।অহনার রুম বেশ বড় আর পরিবেশ শান্তশিষ্ট থাকে বলে মৌ এখানেই এসে পড়ে।
মৌ এর চোখেমুখে যে সামান্য হতাশা ছেয়ে আছে সেটা বুঝতে পারলো অহনা।সে মৌ কে বললো,
—“কি ব্যাপার মৌটুসি পাখিটা??এমন মুখ করে রেখেছিস কেনো??”
অহনার কথার জবাব দিলে মৌ কে আয়ান এর সম্পূর্ন ব্যাপারটা বলতে হবে বলে মৌ কথাটাকে পাশ কাটিয়ে বললো,
—“ওসব কিছু না। তোকে যে নোট করতে বলেছিলাম সেটা করেছিস??”
—“হুম করেছি।”বলে অহনা নোটের খাতাটা মৌ এর দিকে এগিয়ে দেয়।
মৌ আর অহনা ছোটোবেলা থেকে ফ্রেন্ড।স্কুল,কলেজ একই সাথে পড়েছে।এখন একই ভার্সিটির অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে তারা।
মৌ স্বভাবে বেশ চঞ্চল। তবে বাইরের মানুষের সামনে সে একদম চুপচাপ।আয়ানের সাথে তার আগে থেকেই মনমালিন্য। দুজনের একসাথে পরে না।কারন আয়ানের কিছু কিছু স্বভাব কাজ তার কাছে একদমই ভালো লাগে না। এই যেমন আয়ানের গার্লফ্রেন্ড এর ব্যাপারটা।সবার সামনে আয়ান দেখায় সে অতি ভদ্র ছেলে কিন্তু তার যে এ পর্যন্ত ১টা গার্লফ্রেন্ড ছিলো আর এখন তার সাথে ব্রেকআপ হয়ে আরেকটা গার্লফ্রেন্ড বানিয়েছে, এটা কেউ জানে না।আর মৌ এ ব্যাপারটাকে সবার সামনে বলতে যাওয়ার আগেই আয়ান রাফির ব্যাপারে ভয় দেখায়।এজন্য সে কিছু বলতেও পারেনা।
আয়ান খান।একজন অলস এবং আরামপ্রিয় ব্যক্তি।মাস্টার্স শেষ করেছে প্রায় ১বছর হতে চলেছে। অথচ এখনো চাকরি ব্যবসা কিছু করেনা।সে তার মা,দাদির কথায় বাবার অফিসে বসে।কিন্তু কাজের কাজ সে কিছুই করেনা।সপ্তাহে ২/৩দিন সে অফিসেই যায়না।আর যেদিন যায় দু একটা কাজ করেই চলে আসে।আয়ানের এমন খামখেয়ালিপনায় খুব নারাজ নুরুল খান।আয়ানের মা আর দাদির জন্য তিনি আয়ানকে কিছু বলতে পারেননা।
আজকে আয়ান আর তার গার্লফ্রেন্ড রেস্টুরেন্ট এ বসে গল্পে মেতে উঠেছিলো।চারদিকে তেমন খেয়াল ছিলো না আয়ানের।ঐ একই রেস্টুরেন্ট এ মৌ তার কাজিনদের সাথে আসে।মৌ বা আয়ান কেউ জানতো তাদের এভাবে দেখা হয়ে যাবে।রেস্টুরেন্ট এ খাবার বিল দিতে গিয়ে মৌ আর আয়ানের দেখা।মৌ তো আয়ানের সাথে গার্লফ্রেন্ড কে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলো।কারন ১ মাস আগেই আয়ানকে সে অন্য মেয়ের সাথে দেখেছিলো।আবার আজকে আরেকজন।
মৌ কে দেখে আয়ান প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিলো।পরে তার মনে আসলো মৌ এর একটা সিক্রেট সে জানে।ব্যস তখনই তার ভয়টা শেষ হয়ে গেলো।
আর মৌ আয়ানকে দেখে রেস্টুরেন্ট থেকেই ভেবেছিলো আজকে আয়ানের মিথ্যা ফাঁস করেই ছাড়বে।কিন্তু বাসায় এসে যা হলো তার সাথে তাতে আর কিছু বলার সাহসটুকুও থাকলো না তার।
অহনার সাথে পড়ার পর মৌ বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।বাসায় যাওয়ার পথে রাফির সাথে তার দেখা।রাফিকে দেখেই বেশ খুশি হয়ে গিয়েছিলো মৌ।রাফি আর মৌ একই ভার্সিটিতে পড়ে।রাফি সিনিয়র।মাস্টার্স করছে একই ভার্সিটি থেকে।অনার্স এ থাকাকালীনই মৌ রাফিকে পছন্দ করতে শুরু করে।কিন্তু মৌ জানে না রাফির তাকে পছন্দ করে কি না।
রাফি হাসিমুখে মৌ কে প্রশ্ন করলো,
—“এ সময়ে কোথা থেকে আসছো??”
মৌ ও হাসিমুখে জবাব দিলো,
—“অহনাদের বাসা থেকে।আমরা গ্রুপ স্টাডি করি তো তাই।”
—“ওহ।তো তোমার পড়ালেখা কেমন চলছে??”
—“আলহামদুলিল্লাহ ভালো।আপনার?”
—“আমারো ভালো চলছে।”
এটুকু কথা বলতে বলতেই মৌ বাসার কাছে চলে এলো।বাসার কাছাকাছি আসতেই মৌ রাফিকে বললো,
—“আচ্ছা আমি যাই তাহলে এখন।বাসার কাছে চলে এসেছি।”
রাফির হয়তো আরো কিছু বলার ছিলো।কিন্তু সুযোগ হয়ে উঠলো না।সে মুচকি হেসে বললো,
—“আচ্ছা ঠিক আছে।”
এরপর যে যার বাসায় চলে যায়।
বাসায় পৌঁছানোর সাথে সাথে সাড়ে ৪ বছর বয়সী মাহতাব আর জান্নাতের ছেলে জীবন এসে মৌ কে জড়িয়ে ধরলো।মৌ এর জীবন হলো তার একমাত্র ভাতিজা জীবন।দিনের বেশিরভাগ সময় সে মৌ এর সাথে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।মাঝে মাঝে বেশ বিরক্ত করে মৌ কে, তবুও মৌ তেমন বিরক্তি হয়না।
মৌ জীবনকে কোলে করে নিয়ে নিজের রুমে আসলো।জীবনকে খাটে বসিয়ে রেখে বোরকা খুলে ওয়াশরুমে গেলো শাওয়ার নিতে।এতোক্ষন জীবন নিজের খেলনা দিয়ে খেলছিলো।মৌ কে ওয়াশরুম থেকে বের হতে দেখেই জীবন আবারো মৌ এর কোলে উঠে পরলো।
এভাবে দুজনের হাসি মজায় সারা বিকাল কেটে যায়।সন্ধ্যা হতে না হতেই জীবন ঘুমিয়ে পরে।কারন ভোরবেলায় উঠে দুপুরেও সে ঘুমায়নি।
জান্নাত রান্নাঘরে কাজ করছিলো জীবনকে ঘুম পারিয়ে।মৌ রান্নাঘরে গিয়ে জান্নাতের পাশে দাঁড়ীয়ে বিস্কুট নিয়ে খেতে লাগলো।জান্নাত কাজ করতে করতে বললো,
—“মৌ…বাবা কি তোমাকে কিছু বলেছে?”
মৌ বিস্কুট খেতে খেতে বললো,
—“কি বলবে??আব্বুর সাথে দুই তিনদিন ঠিকঠাক কথায়ও হয়না আমার।আগে পড়ালেখার বিষয়ে যা একটু কথা বলতো, এ কয়দিন তাও বলেনা।”
মৌ এর কথা শুনে জান্নাত বিড়বিড় করে বললো,
—“বলবেই বা কি করে বিয়ের বাজার করতে ব্যস্ত তিনি।”
মৌ ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাস করলে,
—“ভাবি,তুমি কিছু বললে??”
জান্নাত আমতা আমতা করে বললো,
—“আরে না।কি বলবো।তুমি রুমে গিয়ে পড়তে বসো।”
—“হুম।”বলে মৌ পানি খেয়ে নিজের রুমের উদ্দেশ্যে গেলো। সে নিজের রুমে এসে পড়তে বসে যায়।পড়তে পড়তে ঝিমুনি ধরে গিয়ে হালকা ঘুমিয়ে পরেছিলো সে। হঠাৎ ফোনের মেসেজের টোনে কাঁচা ঘুমটা ভেঙে যায় তার।সে ধড়ফড়িয়ে উঠে ফোনটা হাতে নিয়ে মেসেজ দেখলো।
মেসেজে লেখা প্রতিটা অক্ষর পড়ে মৌ এর চক্ষু ছানাবড়া হয়ে গেলো।কারন মেসেজটা ছিলো আয়ানের।তাও আবার সাধারন মেসেজ না।ছোটোখাটো একটা লাভ লেটার।
আয়ান লিখেছে,
—“আই লাভ ইউ বেবি।তোমাকে খুব মিস করছি।আর হ্যাঁ,একটা কথা।তুমি মাইন্ড করো না বেবি প্লিজ।তুমি বলেছিলে না যে একরাত তোমার সাথে তোমার ফ্ল্যাটে থাকতে।সেটা আমার পক্ষে একদমই সম্ভব না।এসব বিয়ের আগে একদমই উচিত না।বিয়ের পরেই আমরা একসাথে থাকবো।আপাতত শুধু মিট করবো আমরা।আর তোমাকে ছাড়া আমি কাউকে বিয়ে করবো না।আমি আব্বুকে দু একদিনের মধ্যে আমাদের বিয়ের ব্যাপারটা জানাবো।
আচ্ছা পরে কথা হবে,বাই।এন্ড টেক লটস অফ লাভ ফ্রম মি।”
#চলবে❤