তোকে চাই❤পর্ব:৪১+৪২+৪৩
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part:41
।
।
ছি রোদ,,তুমি আমার ঘুমিয়ে থাকার সুযোগ নিচ্ছো??তুমি আমার ভার্জিনিটি নষ্ট করে দিলা রোদ??এখন আমার কি হবে??
।
চুপপপ,,,,ভার্জিনিটি না ছাই,,,,আপনার ভার্জিনিটি বিয়ের আগেই খতম,,সো এখন নেকামু কমিয়ে করেন,,,
।
ছি,,,রোদবালিকা এসব কি বলছো??আমি হলাম ইনোসেন্ট বয়,,,আর তুমি এমন অপবাদ দিচ্ছো???জীবনে মেয়েদের দিকে চোখ তোলে তাকালাম না,, আর তুমি আমাকে বানিয়ে দিলে চরিত্রহীন,,,,হাউ কোড ইউ রোদবালিকা,,,হাউ কোড ইউ??
।
এহহহ,,,মেয়েদের দিকে তাকায় দেখে নি,,মিথ্যুক।।রুমু আপুর বিয়েতে গেস্ট রুমে কি করছিলেন শুনি??তসবি পড়ছিলেন বুঝি??(রাগী গলায়)
।
ক,,,কবে??
।
মাথায় বাড়ি দিলেই সব মনে পড়ে যাবে,,,,দিবো বাড়ি??
।
আরে আরে,,,ওটা তো,,,কন,,কনভারসেশন ছিলো,,,এট’স কল্ড রোমান্টিক কনভারসেশন।।।লিপস টু লিপস(চোখ টিপে,,বাঁকা হাসি দিয়ে)
।
বাহ অসাধারন,,,,এতো কনভারসেশনের পরও আপনি ভার্জিন ছিলেন??(ভ্রু কুচঁকে)আর আমি টাচ করতেই সব শেষ??বাচ্চার বাবা হয়ে যাচ্ছে আর এতোদিনে আসছে ভার্জিনিটি বাঁচাতে হুহ।।।
।
ভ্রু কুঁচকাবে না তো,,,কতোদিন বলা লাগে???
।
কেন কি সমস্যা??(ভ্রু কুচঁকে)
।
উফফ আবার??ভ্রু কুচঁকালে তোমায় এত্তো কিউট লাগে ইচ্ছে করে,,কামড়ে কুমড়ে খেয়ে ফেলি।।
।
উনার কথায় আবারো ভ্রু কুচকে তাকালাম আর উনি হুহা করে ঘর কাঁপিয়ে হাসতে লাগলেন,,,
।
।
গাড়িতে বসে আছি,,,শুভ্র ভ্রু কুচঁকে তাকিয়ে আছে,,কপালে চিন্তার ভাজ,,,দৃষ্টি স্থির।।আর আমি একমনে আইসক্রিম খেয়ে চলেছি।।হঠাৎ করেই উনি বলে উঠলেন,,,
।
রোদ??অবোরশন করে ফেলো,,,
।
উনার কথায় আমি থমকে গেলাম,,,মাথাটা যেনো ফাঁকা হয়ে আসছে,,,
।
শুভ্র??(চিৎকার করে)আপনি পাগল হয়ে গেছেন??বাবা হয়ে নিজের বাচ্চাকে মেরে ফেলতে চাইছেন??
।
আই হেব নো আদার চয়েজ,,,,,তুমিই যদি না থাকো তো ওই বাচ্চাকে দিয়ে আমি কি করবো??ইউ হেব টু ডু ইট।।।সব ঠিক করে রেখেছি,,এবার তুমি গেলেই হয়ে গেলো,,লেটস গো।।
।
নো,,,শুভ্র,,আই কান্ট ডু দিস,,,আমার বেবি,,
।
চলো রোদ,,,
।
নো শুভ্র,,প্লিজ আপনার পায়ে পড়ি,,,এমনটা করবেন না,,,প্লিজ।।(পিছাতে পিছাতে)
।
কাম রোদ,,অযথা জেদ করো না,,,চলো,,,
।
নো,,, নো,,,কাছে আসবেন না,,,একদম কাছে আসবেন না,,,প্লিজজ না।।
।
উনি গাড়ি থেকে বের হয়ে আমাকে কোলে তোলে নিয়ে হসপিটালের পথে হাঁটা দিলেন,,,,আমি ছুটাছুটি করছি ক্রমাগত,,,
।
না না ননননননা,,,,,(চিৎকার করে)
।
ধরফর করে উঠে বসলাম,,,শরীর ঘেমে একাকার।।চারদিকে অন্ধকার,,আফসা আলোই মনে হচ্ছে এ যেনো এক আজব পুরী।।।চারদিকে উত পেতে আছে,,,ভয়ঙ্কর সব জীব।।।ক্রমাগত শ্বাস নিচ্ছি,, মনের মধ্যে বাচ্চা হারানোর তীব্র যন্ত্রনায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।।ঠিক এই সময় লাইট জ্বলে উঠলো,,,
।
রোদ??কি হয়েছে??ঠিক আছো তুমি??খারাপ স্বপ্ন দেখেছো নাকি শরীর খারাপ লাগছে??কি হয়েছে??
।
কা,,কাছে আসবেন না,,,দ,,দূরে যান,,, দূরে যান বলছি।।।(হাত দিয়ে ধাক্কিয়ে)
।
কি বলছো এসব??এমন করছো কেন??কি হয়েছে সোনা??বলো আমায়?
।
আ,,আমার বাবু,,,(কান্না ভেজা কন্ঠে)
।
কি হয়েছে আমার প্রিন্সেসের,,,,
।
আ,, আমি,,আ,,,মি
।
তুমি কি বলো??
।
আমি অবোরশন করবো না,,,প্লিজজ
।
কি বলছো এসব??অবোরশন করবে কেনো??এসব ফালতু কথা কেনো ভাবছো তুমি??
।
আমি করুন চোখে উনার দিকে তাকালাম,,এতোক্ষণে বুঝতে পারছি আমি স্বপ্ন দেখছিলাম,,,ভয়ানক দুঃস্বপ্ন।। এবার আমি উনার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লাম,,,শরীর ক্রমাগত কাঁপছে,,,উনিও আলতো হাতে জড়িয়ে নিলেন আমায়,,উনার হাতের স্পর্শে ফুফিয়ে উঠলাম আমি,,,,এতোক্ষণ কতো অসহায় লাগছিলো নিজেকে,,এখন মনে হচ্ছে সব পেয়ে গেছি,,সব।।
।
কি হয়েছে রোদপাখি??বলো আমায়??
।
আমি উনাকে সবটা বললাম,,উনি আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে নিলেন নিজের সাথে,,,
।
চুপ,,,চুপ করো,,শান্ত হও,,,তোমার মনে হয় আমি এমন করবো??ও আমার বেবি,,,মাই প্রিন্সেস,,নিজের বাবুকে মারবো এতোটা খারাপ নিশ্চয় আমি নই,,,বলো?
।
আমি চুপচাপ উনার কথা শুনছি।।যেনো হাজারো ভয় থেকে নিজেকে বাঁচাতে চাইছি,,,স্বপ্নের শুভ্র আর এই শুভ্রের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য,,,এই শুভ্রর বুকে আমি নিরাপদ,,,সাথে আমার বাচ্চাও,,,,
।
পাগলী,,,আমি থাকতে আমাদের বেবির কিচ্ছু হবে না,,,শী ইজ অলসো ইম্পোর্টেন্ট ফর মি,,,আমি বেবি চাইনি তার মানে এই নয় যে ওকে মেরে ফেলবো,,,ও আমার অস্তিত্ব।।জীবন দিয়ে রক্ষা করবো ওকে,,,কিচ্ছু হবে না ওর,,,,রোদবালিকা??
।
আমি চোখ মেলে তাকাতেই বলে উঠলেন,,,”ভাবছি একটা দু’নলা বন্দুক কিনবো,,,,আমার প্রিন্সেসকে যখন স্কুলে দিবো,,ছেলেরা ডিস্টার্ব তো করবেই,,,ওদের জন্য এক্সট্রা প্রোটেকশন কি বলো??
।
উনার কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে উনার দিকে তাকিয়েই হেসে দিলাম,,,উনিও একগাল হেসে আরো শক্ত করে জড়িয়ে নিলেন আমায়,,,,আহ,,কি শান্তি।।মেয়েদের জান্নাতটা হয়তো স্বামীর বুকেই আল্লাহ নিজ হাতে তৈরি করে দিয়েছেন।।।
।
#চলবে,,,
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
#তোকে চাই❤
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part:42
।
।
রান্না করতে আমার বেশ ভালো লাগে,,,ইভেন এটা আমার প্যাশনও বলা যায়,,তবে অবিয়েসলি সব সময়ের জন্য নয়,,,মাঝে মাঝে।।আর আজকে আমার এই প্যাশনটাকে বের করে আনার একটা স্কোপও পেয়ে গেলাম।।রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে আছি,,উদ্দেশ্য সবার জন্য ডিনার তৈরি করা,,বিয়ে হওয়ার পর রান্না করার সৌভাগ্য আমার হয়ে উঠে নি,,মামানি আর আরিফ চাচার জন্য কোনো কিছু টাচই করতে পারি নি।।তাদের ব্যবহার দেখে মনে হয় আমি এখনো বাচ্চাটি,,কিছু ধরতে গেলেই হাতে ব্যাথা পেয়ে যাবো।।আর কনসিভ করার পর শুভ্রর জন্য কিচেনে আসাটাই আমার জন্য দিবাস্বপ্নের মতো হয়ে উঠেছে।।তবে আজ ব্যাপারটা ভিন্ন।।বাড়িতে একটা কাজের লোকও নেই সবাই ছুটিতে আছে,,আর আপুর তো ৮ মাস চলছে,,,এই অবস্থায় ও রান্না করবে আর আমি বসেবসে খাবো তাও মেনে নেওয়া যায় না।।।কাল রাত থেকে মামানির প্যাশারটাও ফল করছে সো এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেস্ট অপশন হলাম আমি।।যেভাবেই হোক শুভ্র ফিরে আসার আগে রান্না কমপ্লিট করতে হবে,,,নয়তো কি হবে কে জানে??মামানি তো কিছুতেই রাজি হচ্ছিলো না,,উনার এককথা,,,”মা তুই রান্না ঘরে যাস না,,,আমার ছেলে দেখলে কুরুক্ষেত্র করে ফেলবে,,যে ছেলে স্টোর রুমে পর্যন্ত কার্পেট বিছিয়ে রাখছে,,বউয়ের সেফটির জন্য,,সে যদি দেখে তার বউ রান্না ঘরে,,কি হবে ভেবে দেখেছিস??তারচেয়ে আমি যেমন পারি ম্যানেজ করে নিবো।।” কিন্তু ওই আমিও তো নাছোড়বান্দা,, বাড়িতে পুত্রবধূ থাকতে অসুস্থ শাশুড়ী মা রান্না করবে,,এমনটা বাবা-মা আমায় কখনো শেখায় নি।।।তাতে পৃথিবী উল্টে গেলেও আমার মোটেও যায় আসে না,,,,সেখানে শুভ্র তো কিছুই না।।এসব যুদ্ধের পালা শেষ করে আমি রান্না ঘরে দাড়িয়ে আছি।।ভাত,,মাংস হয়ে এসেছে,,এবার শুধু সবজি আর ডাল বাকি।।আমি সবজি কাটছিলাম হঠাৎ কোথা থেকে শুভ্র এসে সামনে দাঁড়ালো,,,উনি যে ভীষন রকম রেগে আছেন তা উনার টমেটোর মতো মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে,,,,আমি তাকাতেই দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো,,,
।
তুমি এখানে কি করো রোদেলা??
।
উনার মুখে রোদেলা নামটা শুনে অবাক হলাম,,,বিয়ের প্রথমদিনেই শুধু উনি এই নামে ডেকেছিলেন,,,,তারমানে মশাইয়ের রাগের পাল্লা আজ ভীষন ভারি,,,উনার জলন্ত চোখের দিকে তাকালেই আমার কথা সব ফুঁস হয়ে যায়,,,তাই উনার দিকে না তাকিয়ে সবজি কাটায় মন দিলাম,,,
।
কি আবার করছি??রান্না করছি।।কিচেনে কাউকে ফুটবল খেলতে দেখেছেন কাউকে,,??
।
ফাজলামো বন্ধ করো রোদ,,,এসব করতে গিয়ে আবার নতুন কোনো অঘটন বাঁধাতে চাও??বাড়ির সবাই কই যে তোমায় রান্না করতে হবে।।
।
রান্না করতে গেলেই অঘটন বাঁধে আপনাকে কে বললো??রান্না করতে করতে শহীদ হয়ে গেছে এমন কাউকে কোনোদিন দেখেছেন??তাছাড়া বাড়িতে আজ কোনো সার্ভেন্ট নেই সো আমাকেই রাধঁতে হবে,,,(সবজি কাটতে কাটতে)
।
কেন?? সব কই মরেছে আর বউমনি বা মাই বা কোথায়??(ভ্রু কুচঁকে)
।
আরিফ চাচার বড় ভাই মারা গেছেন,,,নিশ্চয় জানেন??মামুও তো জানাজায় গেছেন,,,আর রাহেলার বিয়ে পড়শো,,,সো জামাই রেখে সে নিশ্চয় এখানে রান্না করতে আসবে না।।আর মাধবী তো আগে থেকেই অফ ডে তে আছে,,,
।
মা,,বউমনি??
।
আপনি পাগল??মামানির কাল রাত থেকে পেশার ফল করছে,,,উনি এই অবস্থায় রান্না করতে আসবে??আর আপুর কথা কিভাবে বলুন আপনি??ওর অবস্থা কি আপনার জানা নেই??
।
ওহ,,সরি।।তাহলে আমায় ফোন করে নিতে,,আমি হেল্প করতাম।।(মুচকি হেসে)দাও আমি সবজি কেটে দিই।।
।
নাহ,,,একদম ওস্তাদি দেখাতে আসবেন না,,,পরে বাংলা সিনেমার মতো হাত কেটে একাকার করবেন আর আমাকে নায়কা সাবানার মতো শাড়ি ছিড়ে নেকামো করতে হবে,,,আর তাতে আমি ইন্টারেস্টেড নই।।।সো দূরে থাকুন,,,
।
এভাবে বলছো কেন??(মুখ গোমরা করে)
।
কিভাবে বলছি??(ভ্রু কুঁচকে)
।
বাদ দাও,,,বাহ তুমি তো বেশ সবজি কাটতে পারো,,গ্যাচগ্যাচ কেটে চলেছো।।তুমি পুচকি হলেও গুণবতী বটে,,,রান্না পারো,,,শাড়িও পড়তে পারো,,
।
হুমম,,আই নো আমি গুণবতী,,,(ভাব নিয়ে)
।
শুভ্র দরজায় ঠেস দিয়ে হাত বাজ করে দাঁড়িয়ে ছিলো,,আমার কথা শুনে মুচকি হেসে পেছন থেকে জড়িয়ে নিলো,,,,
।
হুমম হতেই হবে,,,নয়তো যেন তেন মেয়ের জন্য কি আবরার শুভ্র পাগল হয়??
।
আপনি আমার জন্য পাগল??(বাঁকা চোখে)
।
ব্যাপারটা বিশ্রী হলেও সত্য,,আম মেড ফর ইউ,,(মুখ গোমরা করে) জানো??(আমি আড়চোখে তাকাতেই)আমি মাঝে মাঝে ভাবি,,আমি দিনদিন পাগলাটে হয়ে যাচ্ছি,,,কনট্রোল করার যথেষ্ট চেষ্টা করি বাট তোমাকে দেখলেই সবগুলিয়ে যায়,,,এসব পাগলামো অটোমেটিক আমার মধ্যে চলে আসে,,,,আই কান্ট হেল্প।। (বাচ্চাদের মতো মুখ করে)
।
আমি উনার কথায় খিলখিল করে হেসে উঠলাম,,,আর উনি আমার ঘাড়ে মাথা রেখে আমার দিকে একপলকে তাকিয়ে আছেন,,,যেনো চোখের পাতা পড়লেই বিস্ময়কর কিছু হারিয়ে যাবে,,,উনার এভাবে তাকানো দেখে হাসি থামিয়ে চোখের ইশারায় জিগ্যেস করলাম,, “কি হয়েছে?”
উনি আমার কপালের চুলগুলো ডান হাত দিয়ে সরিয়ে মুচকি হেসে বলে উঠলেন,,,
।
কিছুই হয় নি,,,জাস্ট তোমাকে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে,,
।
কি??(ভ্রু কুঁচকে)
।
একদম আমার বউ বউ দেখাচ্ছি তোমায়,,,,(গালে হাত রেখে)
।
কেন?এমনি কি বোন বোন দেখায়??
।
কথাটা বলেই আমি হুহু করে হেসে উঠলাম,,,কেনো জানি প্রচুর হাসি পাচ্ছে আজ।।।আমি হাসতে হাসতে রীতিমতো কপোকাত,,,উনি কিছুক্ষণ ভ্রু কুচঁকে তাকিয়ে থেকে আমাকে উঁচু করে ভ্যাসিনের পাশে বসিয়ে দিয়ে,,,সবজিগুলো নিতে ধুতে লাগলেন,,,আমি অবাক চোখে উনাকে দেখছি।।আমাকে তাকাতে দেখেই উনি বলে উঠলেন,,,
।
এটা আমি বেশ পারি,,,সো লেকচার দেওয়া বন্ধ করো,,,আর কি জানি বলছিলে??অন্যান্য সময় কেমন লাগে??অন্যান্য সময় তোমায় আমার রোদবালিকার মতো লাগে,,,(চোখ টিপে)
।
মানে??(কনফিউড হয়ে)
।
কিছু না বাদ দাও,,,সবজি ধোয়া শেষ,,,কি রান্না করবে তারাতারি করো তো পিচ্চি।।
।
আমাকে নামিয়ে দিয়ে উনি ফ্রিজ থেকে একগাদা ফ্রুটস বের করলেন,,,আমি ভ্রু কুচঁকে তাকিয়ে আছি,,,এগুলো দিয়ে কি করবেন উনি??
।
এসব দিয়ে কি হবে??(ভ্রু কুচঁকে)
।
এসব খাওয়া হবে??
।
আপনি এখন এসব খাবেন??(ভ্রু কুচঁকে)
।
আমি কি বলেছি আমি খাবো??(ফল কাটতে কাটতে)
।
তো??
।
আমার বউ খাবে,,,বেচারী রান্না করবে এনার্জি ওয়েস্ট হবে সো,,সে রান্না করবে আর আমি তাকে ফ্রুটস খাওয়াবো,,,গট ইট বেবি??
।
নো,,এখন আমি কিছুতেই খাবো না,,কাজের মধ্যে ডিসটার্ব করবেন না বলে দিলাম,,
।
চুপপ,,,আমার খাওয়ানোর মধ্যে ডিসটার্ব করবে না বলে দিলাম,,,নয়তো দিবো একটা কানের নিচে।।(রাগী গলায়)
।
কি আর করা??আমি তো বাধ্য,,,তাই বাধ্য হয়ে খেতে হচ্ছে,,আমি রান্না করছি আর উনি আমায় খাওয়াচ্ছেন।।।পাগলের শেষ সীমানা যাকে বলে আরকি।।
।
।
ঘড়িতে এগারোটা বা সাড়ে এগারোটা বাজে,,,তবু চোখে ঘুম ধরা দিচ্ছে না,,তাই ভাবলাম গল্পের বই পড়া যাক,,,শরৎচন্দ্রের “পরীনিতা” উপন্যাসটার পাতা উল্টাচ্ছি আর হাটছি,,,গল্পটা বেশ রোমান্টিক।।গল্পটা পড়লেই গল্পের নায়ক “শেখর দা” কে দেখতে ইচ্ছে করে।।বইয়ের পাতায় যেনো ডুবে গিয়েছি।।ঠিক এই সময় বুঝতে পারলাম,,কেউ আমার পিছে হাটছে,,,আমি ঘুরলে সেও ঘুরছে,,,আমি জোড়ে হাঁটলে সেও জোড়ে হাঁটছে,,ভয়ে আমার অন্তরাত্তা কেঁপে উঠার উপক্রম,, ভূত টূত নয় তো??দূরুদ পড়তে পড়তে পিছনে তাকাতেই মেজাজ খারাপ হলো,,,শুভ্র ফোন হাতে আমার পিছু পিছু হাটঁছে,,,
।
কি সমস্যা??আমার পিছু পিছু হাটছেন কেন??
।
যদি তুমি পড়ে যাও,,,তোমাকে তো ধরতে হবে তাই।।
।
হোয়াট??এখানে কার্পেট বিছানো আছে,,তবু আমি পড়ে যাবো??এটা কোনো কথা??
।
পড়ে তো যেতেও পারো,,,,আগে থেকে সেইব থাকা ভালো,,,(ফোন চাপতে চাপতে)
।
তাই বলে এভাবে পেছনে ঘুরবেন??বিরক্তিকর(,রাগী গলায়)
।
আর তোমাকে এতো রাতে বই পড়তে হবে??যখন দরকার ছিলো তখন তো পড়ো নাই,,তাহলে ঠিকই আমাদের ভার্সিটিতে চান্স পেয়ে যেতো,,,
।
খোঁচা দিচ্ছেন??(মুখ ফুলিয়ে)
।
নাহ,, জান,,, চলো তো ঘুমাবো,,
।
আপনি যান,,,আমি ঘুমাবো না,, (বিরক্তি নিয়ে)
।
উনি আমার কথায় পাত্তা না দিয়ে কোলে তোলে নিলেন,,,
।
বেবি,,,তুমি না ঘুমালে,,আমাকে তো ঘুমোতে দেও,,,কাল তোমায় ডক্টরের কাছে নিয়ে যাবো,,,আই নিড সাম এনার্জি,,,এখনি টেনশন হচ্ছে,,সো চুপ থেকে আমাকে এনার্জি কালেক্ট করতে হেল্প করো,,,
।
কথাটা বলেই উনি আমাকে সহ কম্বল মোড়িয়ে শুয়ে পড়লেন,,,,আর আমি হাবলার মতো উনার দিকে তাকিয়ে আছি,,,
।
#চলবে,,,
# তোকে চাই❤
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part:43
।
।
গায়েনী ডক্টর সুলতানা পারভীনের চেম্বারের সামনে একটা চেয়ারে পা দুলিয়ে বসে আছি,,,, ভ্রুটা হালকা কুঁচকানো,,যার কারণ বিরক্তি।।বিরক্তির বেশকিছু কারণ আছে,,তারমধ্যে দুটো কারনের একটি হলো শুভ্র অন্যটি একটি অপরিচিত জলহস্তি,,,আমার সামনে পেটকু একটা লোক বসে আছে।।বসে থাকতেই পারে,,,শুধু বসে কেন,,চাইলে শোয়েও থাকতে পারে তাতে আমার বিন্দুমাত্র সমস্যাও নেই,,,সমস্যা থাকার কথাও নয়,,,,,কিন্তু সমস্যাটা হলো লোকটার বিহেভিয়ার,,,মহোদয়,,তার পান খেয়ে লাল করে রাখা দাঁত বের করে সারাক্ষণ কুচসিৎভাবে হেসেই চলেছে,,,বাবা বলতো পৃথিবীর সবার হাসিই নাকি সুন্দর,,সবার হাসিতেই অন্যরকম একটা সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে,,,কিন্তু আমি আধঘন্টা যাবৎ ট্রাই করেও লোকটার হাসিতে সৌন্দর্যদায়ক কিছু খুঁজে পেলাম না।।শুধু হাসলেও মেনে নেওয়া যেতো কিন্তু লোকটি এর থেকেও বিশ্রী কিছু করছে,,,একহাত দিয়ে তার প্রেগন্যান্ট স্ত্রীর পেটে হাত বুলাচ্ছে,,অন্যহাতে নাকে আঙ্গুল ডুকিয়ে নাকের চুল ছেঁড়ার চেষ্টা করছে,,,ব্যাপারটা নিঃসন্দেহে বিরক্তিকর,,,যা দেখার সাথে সাথে অটোমেটিক আমার কপাল আর ভ্রু কুঁচকে গিয়ে,, তাদের বিরক্তি প্রকাশ করছে,,,,অন্যদিকে আমার প্রাণপ্রিয় স্বামী,,,বারবার অস্বস্থি নিয়ে নাড়াচাড়া করছে,,তাকে দেখে মনে হচ্ছে তাকে একটা উত্তপ্ত ফ্রাইং প্যানে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে যার উত্তাপে উনি এমনভাবে নাচানাচি করছেন।।।
।
কি সমস্যা??এভাবে নাচতেছেন কেন??সোজা হয়ে বসতে পারেন না??(ভ্রু কুচঁকে)
।
আমি কি বাঁকা হয়ে বসে আছি নাকি??(শার্টের ডান হাতা দিয়ে ঘাম মুছে)
।
তা নয়তো কি??আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনার লেভার পেইন উঠেছে আর আপনি যন্ত্রনায় ছটফট করছেন,,,,
।
জাস্ট শাট আপ রোদ।।অলওয়েজ ফালতু কথা,,,,চুপচাপ বসে থাকো,,নয়তো ঠাডিয়ে দিবো একটা,,,
।
আজিব,,রাগছেন কেন??(মুখ গোমরা করে)
।
তো কি করবো??তোমার কোনো ধারনা আছে,,, হাউ টেন্সড আই এম??
।
এতো টেনশনের কি আছে??ডাক্তারই তো দেখাতে আসছি অন্য কিছু তো নয়,,,
।
সেটা তুমি বুঝবে না,,,বউ তো আমার প্রেগন্যান্ট,,তোমার না,,, তোমার বউ প্রেগন্যান্ট হলে বুঝতা কেমন লাগে,,তারওপর যদি বউ নিজেই বাচ্চা থাকে তাহলে তো কথায় নেই,,৷
।
আমি আহাম্মকের মতো উনার দিকে তাকিয়ে আছি,,,এটা কি বললেন উনি?যত্তসব গাঁজাখুরি কথাবার্তা উনার মুখে,,আমার আবার বউ কেমনে হবে,,হলে জামাই হতে পারে,,,হুহ।।বসে বসে বিরক্তির চরম সীমায় পৌঁছে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনই আমার ঠিক অপোজিটে বসে থাকা কারো কথা কানে এলো,,,,ছেলে কন্ঠটা হালকা পরিচিত,,,যেনো কোথাও শুনেছি,,,পেছন ফিরে তাকিয়েই আমার চোখ ছানাবড়া,,সাহিল ভাইয়া??উনাকে সেদিনের পর থেকে আর দেখি নি।।প্রায় ৬/৭ মাস পর দেখা।।উনি পাশে বসা মেয়েটির কপালে জ্বর চেক করছেন,,,আর মেয়েটি খিলখিল করে হাসছে যেনো তার কাতুকুতু লাগছে,,,মেয়েটি নিঃসন্দেহে সুন্দরী,,,বিশেষ করে হাসিটা,,,,আমি অবাক চোখে উনাদের দিকে তাকিয়ে আছি,,,হঠাৎ সাহেল ভাইয়ার সাথে চোখাচোখি হওয়ায় উনিও অবাক হলেন তবে নিজেকে সামলে নিয়ে বলে উঠলেন,,,,
।
হেই রোদ, তুমি??
।
কেমন আছেন?(হালকা হেসে)
।
আলহামদুলিল্লাহ,,,, তো তুমি কেমন আছো??আর এখানে কিভাবে??আর শুভ্রই বা কোথায়??
।
একসাথে এতো প্রশ্ন করায় আমি হেসে দিলাম,,,তখন পাশে বসে থাকা মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে হালকা হাসি দিয়ে বললেন,,
।
তুমিই বুঝি রোদ?বাহ সত্যিই দেখতে অনেক কিউট,,,
।
এতোক্ষণে শুভ্রও পেছনে ফিরে তাকিয়েছে,,,সাহেল ভাইয়া আর মেয়েটাকে দেখে সেও বেশ অবাক হলো বলে মনে হচ্ছে,,,
।
আরে?নাবিলা,,তুই এখানে??আর এই বলদের সাথে কি করিস??(অবাক হয়ে)
।
শালা চুপ কর,,,এক তো নাবিলাকে ভাবি না ডেকে তুই তাই করছিস,,,আবার আমাকে বলদও বলছিস,,,,(পেটে ঘুষি দিয়ে)
।
ভাবি??কিসের ভাবি??(ভ্রু কুচকে)
।
আরে আমার বউকে ভাবি বলবি না তো বেবি বলবি??
।
তোর বউ???(চেঁচিয়ে)শালা তুই বিয়ে করলি কবে??
।
শুধু বিয়ে,,,মাম্মা আম সো ফাস্ট,,,,বাচ্চার বাবা হয়ে যাচ্ছি(চোখ টিপে)
।
কথাটা শুনে শুভ্র যে বেশ অবাক হয়েছে তা বেশ বুঝতে পারছি,,,সাথে আমিও অবাক।।এতো তাড়াতাড়ি??
।
বলিস কি??দাওয়াত ও তো দিলি না,,আর নাবিলা বিয়ে করার জন্য,এই আহাম্মকই ছিলো?? আর কাউকে পাস নাই??
।
কি করবো বল??আমাদের ব্রেঞ্চের সবাই বিয়ে করে নিয়েছে,,,রুহান,,, সাব্বির,,,,ইশাতা,,,শুশমিতা,,মিথিলা ইভেন তুইও।।বাকি শুধু আমি আর সাহেল।।তাই ভাবলাম,,, দুজনেই যখন সিংগ্যাল তাহলে আর এতো খুঁজাখুঁজি করে টাইম ওয়েস্ট করে কি লাভ??(মুচকি হেসে)
।
তাই বলে দাওয়াতও দিলি না??এতো তাড়া??(অসহায় মুখে)
।
তো,,,তুই আমাকে দাওয়াত দিছিলি??জানিস না,, তুই আর আমি সেইম টাইপ,,তাই আমিও হুটহাট বিয়ে করে নিয়েছি,,,ভেবেছি বাচ্চার জন্মদিনে এক্কেবারে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াবো,,,এক ঢেলে দুই পাখি,,খরচ কম হবে,,,(চোখ টিপে)
।
উনার কথায় সবাই হেসে উঠলো,,,,
।
কিন্তু তোরা এখানে কেন??গায়েনী বিভাগে??(ভ্রু কুচকে)
।
কেন বউ কি তোর একার আছে??নাকি বাপ হওয়ার অধিকার তোর একার আছে??(বাঁকা হাসি দিয়ে)
।
তারমানে রোদ??(অবাক হয়ে)
।
জি হ্যা,,,রোদ,,,
।
বাহ,,দারুন তো,,,রোদ কতদিন হলো তোমার??(গালে হাত দিয়ে মুচকি হেসে)
।
জি,,,একমাস আপু।।(লজ্জামাখা হাসি দিয়ে)
।
কিহহহ???(চিৎকার করে)
।
সাহেল ভাইয়ার হঠাৎ চিৎকারে আমরা সবাই প্রথম দফায় চমকে এবং পরবর্তীতে অবাক হয়ে উনার দিকে তাকালাম,,,
।
কি বলছো??মাত্র একমাস??এখন কি হবে??নাবিলার তো চারমাস চলে,,,(মুখ গোমরা করে)
।
সাহেল ভাইয়ার কথার আগাগোড়া কিছুই বুঝতে না পেরে সবাই একসাথে বলে উঠলাম,,,”তো?”
।
আরে তো মানে?তাহলে তোর ছেলে আমার মেয়ের থেকে ছোট হয়ে যাবে না??প্রেম কেমনে করবে??আমি বিলেন কেমনে হবো??
।
উনার কথায় আমরা একে অপরের দিকে একবার তাকিয়ে নিয়েই হুহা করে হেসে উঠলাম,,,শুভ্র তো হাসতে হাসতে গড়াগড়ি অবস্থা,,,,কোনো রকম থেমে বলে উঠলেন,,,
।
আমার মনে হয় কি সাহেল??ব্যাপারটা উল্টে যাবে,,,আমার মেয়ে হবে,,,আর তোর ছেলে,,ভাবতে পারছিস??আবার ছেঁকা(দাঁত কেলিয়ে)
।
বললেই হলো,,এমন হলে ছেলের সাথে আমি নিজে গিয়ে পুত্রবধূকে তোলে আনবো,,,এবার নো ছাড়,,,(হালকা হেসে)
।
উনাদের সাথে কথা বলতে বলতেই আমাদের ডাক পড়লো,,
।
ডাক্টরের সামনে বসে আছি,,,একবার ডক্টর তো আরেকবার শুভ্রর দিকে তাকাচ্ছি,,,আমার ধারনা ঠিক হলে যেকোনো টাইম শুভ্র সেন্স হারাবেন,,,তার কারন হলো কিছুক্ষন আগে ডক্টরের বলা কথা।।।ডক্টর সরল মনে বলে দিয়েছেন,,,আমার বয়স মাত্র ১৮ এই বয়সে আমার কনসিভ করা উচিত হয় নি,,,এই টাইমে মা হওয়াটা রিস্কি,,,আমি ফিজিক্যালি ম্যাচিয়ুর না,,,এইটুকুতেই যে শুভ্র কপোকাত তা আর বলতে??শুভ্রর হাত-পা রীতিমতো কাঁপছে,,,ডক্টরের সাথে কথা বলে চুপচাপ বেরিয়ে গেলেন,,আমার দিকে একটাবার তাকালেন না পর্যন্ত,,,আমার ভয়ে গলা শুকিয়ে আসছে,,,ভয়টা শুভ্রকে নিয়ে উনি আমাকে অবর্শোন করতে বলবেন না তো??আমার ভয়ঙ্কর স্বপ্নটা সত্যি হয়ে যাবে না তো??এসব ভাবতে ভাবতেই কাঁপাকাঁপা পায়ে গাড়িতে গিয়ে উনার পাশে বসলাম,,,উনা সিটে গা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছেন,,,উনার ঠোঁট কাপঁছে,,গলা বারবার উঠানামা করছে,,,ফরসা মুখটা একদম বিবর্ন হয়ে আছে,,,আমি কাঁপাকাঁপা হাতে উনার কাঁধে হাত রাখলাম,,কিন্তু উনার মধ্যে কোনো রিয়েকশন হলো না,,,আগের মতোই চুপচাপ বসে রইলেন,,,এবার আমার কান্না পাচ্ছে,,খুব ভয় লাগছে,,,
।
শুনুন??আপনি প,,প,,প্লিজ টেনশন করবেন না,,,দ,,দেখুন ৫০ বছর আগে ১৩/১৪ বছরের মেয়েরাও বাচ্চার জন্ম দিয়েছে এখনো দেই,,,তখন বাচ্চা জন্ম হতো সনাতনী পদ্ধতিতে আর এখন কতো নিউ টেকনিক ইউজ করা হয়,,,আপনি শুধু শুধু ভয় পাচ্ছেন,,,
।
তবুও উনি চুপ,,,চোখটা মেলেও তাকালেন না,,,যেনো শুধু শরীরটাই পড়ে আছে,,মাঝের মানুষটা নেই,,,আমি এবার ফুঁপিয়ে উঠলাম,,,
।
প,, প,,,প্লিজ এবোর্শন করতে বলবেন না,,,প্লিজ।।আই কান্ট ডু ইট।।।
।
উনি এবার চোখ মেলে তাকালেন,,আমার দিকে তাকিয়ে দুর্বল হাসি দিয়ে বলে উঠলেন,,,”আমি মানুষ রোদ,,খুনী না।।নিজেকে বাঁচাতে আমার বাচ্চাটাকে মেরে ফেলবো এতোটা নিষ্ঠুর হয়ে উঠি নি এখনো,,,তোমার কিছু হবে না রোদ,,,বেস্ট ডক্টরের আন্ডারে রাখবো তোমায়,,,আর বাকিসব ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়েছি,,,তবে হ্যা,,,তোমাকে ছাড়া একটা মিনিটও নিশ্বাস নিতে চাই না আমি,,,তুমি আর আমি একদিনেই না হয় শেষ হবো,,ভয় নেই আমার প্রিন্সেস বেঁচে থাকবে,,,
।
উনার মুখের ওই দুর্বল হাসি আমার হৃদয়টাকে খন্ড বিখন্ড করে দিচ্ছে বারবার।।আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই আজানের ধ্বনি কানে এলো,,,উনি আমাকে বসতে বলে নামাযে চলে গেলেন,,,যাওয়ার সময় একগাদা চিপস,,,চকলেট হাবিজাবি কিনে দিয়ে গেলেন।।।আমি বসে বসে উনার কথায় ভাবছি,,,যে মানুষটাকে আমি জুমার নামায ছাড়া অন্যকোনো সময় নামায পড়তে দেখি নি সে মানুষটা এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ে,,তার প্রতিটি দোয়ায় যে আমি মিশে আছি,,তা কেউ বলে না দিলেও আমি জানি।।এইতো সেদিন,,ঘড়িতে দুটো কি তিনটা বাজে,,হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়ায় চোখ মেলে দেখি উনি নামায পড়ছেন আর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদঁছেন,,,উনার কান্নার আওয়াজে নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হয়েছিলো,,,সেই সাথে মনে হয়েছিলো,,,”আমি কতোটা ভাগ্যবতী,,,” উনার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না,,ফজরের নামাযের সময় আবারোও ঘুম ভেঙে গেলো,,,,কনসিভ করার পর একটা ঝামেলা হয়েছে ঘুম প্রচন্ড বেড়েছে সাথে ঘুমটা হালকাও হয়ে এসেছে,,অল্পতেই ভেঙে যায়।।উনি এখনো নামায পড়ছেন,,,নামায শেষ করে জায়নামাজ গোছিয়ে রেখে আমার দিকে তাকাতেই চোখ বন্ধ করে নিয়েছিলাম,,,থাকুক না কিছু গোপন ভালোবাসা গোপনভাবে,,,সব ভালোবাসার প্রকাশের প্রয়োজন কি আছে? ,উনি আমার পাশে বসে,, আমার শরীরে ফু দিয়ে,,,কপালে গভীর চুমু দিয়ে নিজের সাথে জড়িয়ে নিলেন,,,এটা যে তার প্রতিদিনের কাজ ,,,তা আমি মুহূর্তেই বুঝে গিয়েছিলাম,,,,গাড়ির দরজা খোলার শব্দে ভাবনার জগৎ কাটিয়ে পাশে তাকালাম,,,উনার চোখে মুখে স্নিগ্ধতার ছাপ,,,খুব ইচ্ছে হচ্ছে উনাকে ছুঁয়ে দিতে,,,তাই তাড়াহুড়ো করে বেল্ট খুলে,,সোজা উনার কোলে বসে পড়লাম,,,উনি অবাক চোখে আমায় দেখছেন,,,দেখলে দেখুক তাতে কি??
।
কি ব্যাপার??কোলে বসলে কেন?নেমে বসো,,,(ভ্রু কুচকে)
।
না নামবো না,,,আমার এখানেই ভালো লাগছে,,,
।
কথাটা বলেই উনার বুকে মাথা রাখলাম,,,উনিও একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আলতো হাতে জড়িয়ে নিলেন আমায়,,,
।
আমি ড্রাইব করবো তো রোদ,,তুমি এভাবে থাকলে কিভাবে হবে???(মাথায় হাত বুলিয়ে)
।
আমি কি জানি??সেটা আপনার ব্যাপার তবে আমি নামছি না ব্যস,,,
।
উনি কিছু বলতে যাবেন তার আগেই ফোন বেজে উঠলো,,,ফোনটা কানে দিতেই উনার মুখটা কালো হয়ে গেলো,,অনেক বলার পর যা শুনলাম তাতে আমার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো,,,আপুকে হসপিটালে নেওয়া হয়েছে,,ওর লেভার পেইন শুরু হয়েছে,,,কিন্তু ওর ডেলিভারি ডেটের তো আরো দুই মাস বাকি।।। এতো তাড়াতাড়ি পেইন শুরু হওয়ার কারন কি??কোনো অশুভ কিছু হবে না তো?
।
#চলবে,,,