তৈমাত্রিক পর্ব-০৪

0
1130

#তৈমাত্রিক
#লেখিকা; Tamanna Islam
#পর্বঃ ০৪

🤍🌸
.
.
.

তারপর কয়েকদিন এভাবেই চলে যায়। অনু ঠিক হয়ে যায়। আবার আগের মতো হাসি খুশি। তাকে সেইদিন কান্না করার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে উলটো আমাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে কথা এড়িয়ে যায়। আমিও আর বেশি একটা ঘাটাঘাটি করি না। তাই ছেড়ে দেই বেপার টা। তারপরে প্রায় কেটে যায় সাত দিন। তবে আমি এইবার ঠিক করি যে আয়ুশ আর আমার সম্পর্ক এক বছরের বেশি পেরিয়ে গেছে। তনু কে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সব কিছু জানিয়ে দিবো। আজ আমাদের বন্ধ ভার্সিটি, তাই বাসাতেই। বসে বসে এগুলো ভাবছিলাম তখনই তনু এলো, এসেই সোজা আমাকে পাশ দিয়ে জড়িয়ে ধরে। আমি কিছুটা অবাক হই পরেই হেসে দিয়ে বলে উঠি…

মেহরাম;; হলো কি তোর?

তনু;; উহু, কিছু না।

মেহরাম;; চড় না খাইতে চাইলে বইনা কইয়া ফালাও কি হইছে!

তনু;; মেহরু আমার না তোকে কিছু বলার আছে অনেক বেশি ইম্পর্ট্যান্ট।

মেহরাম;; হ্যাঁ তা তোমার মুখের নকশা দেখেই বুঝেছি, বলে ফেল হারামি।

তনু;; মেহরু…

মেহরাম;; তনু আসলে আমিও তোকে কিছু বলবো, ইন ফ্যাক্ট অনেক দিন যাবতই বলার চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না।

তনু;; কি বলিস আগে বলবি না, বল তুই কি বলবি।

মেহরাম;; আগে তুই বল, আর একটা কথাও বলবি না আগে বলতে বলেছি বল।

তনু;; মেহরু।

তনুর ভেতর একটা অস্থিরতা কাজ করছে। বারবার নিজের হাত গুলো মুচড়াচ্ছে। আমি তাকে খেয়াল করলাম। তারপর তনুর হাত গুলো ধরে বলে ওঠলাম…

মেহরাম;; তনু তুই আমাকে বলতে এতো কাচুমাচু করছিস, পাগল তুই। বল (হেসে)

তনু;; আচ্ছা শোন তাহলে তুই আমায় যা বলবি আর আমি তোকে যা বলবো তা কিন্তু একসাথে বলতে হবে বুঝলি।

মেহরাম;; মানে কি!

তনু;; হ্যাঁ

মেহরাম;; ওকে ফাইন, এবার তো বল।

তনু একগাল হেসে আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমিও ধরি তারপর হেসে দেই। আমি কিছু বলবো তার আগেই তনু বলে ওঠে…

তনু;; মেহরু, মেহরু I am in love.. অনেক ভালোবাসি ওকে।

আমি তনুর কথা শুনে ফট করে তাকে নিজের সামনে আনি।

মেহরাম;; আয় হায় তু তো ছুপা রুস্তাম নিকলি, মানে তুই প্রেমে ডুব খাচ্ছিস আর আমায় বলিস নি একটাবারও না। এই তুই হারামি বোন আমার। এবার জলদি বল কে সে। আহাহাহাহাহা দুলাভাই পেয়ে গেলাম। এই তুই কি বলবি কে সে?

তনু;; কি আর বলি তাকেই তো বলা হয় নি যে আমি তাকে কতো ভালোবাসি।

মেহরাম;; কি এখনো বলিস নি। আর কবে বলবি তুই বুড়ি হয়ে গেলে। শোন যত জলদি পারিস বলে ফেল তাকে।

তনু;; কিন্তু তুই আমাকে কি বলবি তা তো বললি না।

মেহরাম;; আরে রাখ আমার কথা, তুই যা বললি তারপর আবার আমি। এখন বল না কে?

তনু আমাকে আবার জড়িয়ে ধরি। আমি এবার জোরেই হেসে দেই তনুর এমন বাচ্চামো দেখে। আর হয়তো সেই হাসি টাই আমার শেষ প্রাণখোলা হাসি ছিলো।

মেহরাম;; তনু বল।

তনু;; মেহরু, মেহরু ওর নাম আয়ুশ আহমেদ। আমাদের ভার্সিটির সবার সিনিয়র। অনেক ভালো একটা ছেলে। জানিস একদিন ক্লাসে এসে আমাকে জিজ্ঞেস করেছে যে আমি মেহরাম আফরিনের বোন কিনা। তাকে আমি প্রায় দেখি, এমন কেউ নেই যে খারাপ বলে তার বেপারে। প্রথমে তো তাকে দেখেই ক্রাশ খেয়ে ফেলি আর ধীরে ধীরে কবে যে প্রেমে পরি তাও জানি না। আমি খুব ভালোবেসে ফেলেছি রে। এতো বেশি ভালোবাসি যে হয়তো পাগলই হয়ে যাবো।

এই কথা বলে তনু আমাকে জড়িয়ে ধরে থাকে। কিন্তু আমি এখন যা শুনলাম তা তো আমি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছি না। এটা কি সত্যি ছিলো। টপ করে পানি গড়িয়ে পরে আমার চোখ দিয়ে। বেপার টা কিছুটা এমন হয়ে গেলো যে জিনিস একটা কিন্তু তার ভাগিদার দুইটা। আমার মাথা মন সব অগোছালো হয়ে গেছে মূহুর্তেই। মানে,, মানে আমি যাকে ভালোবাসি তাকেই আমার বোন এতো টা দিন ধরে ভালোবেসে আসছে। আমি আর আমার কথা টা বলার সুযোগ বা সাহস কিছুই পেলাম না। মন ভেংে গেলো আমার, থাক আমারই কি দরকার আরেকজন সত্যি বলে কাদানোর। যদিও মিথ্যা বলে হাসানোর চাইতে সত্যি বলা কাদানো ভালো। কিন্তু কেন যেন এখন তনু কে আমার কাদাতে ইচ্ছে করছে না। আমি দ্রুত হাতের তালু দিয়ে চোখ মুছে ফেলি। তনু আমাকে ছেড়ে বসে আমার সামনে। তখনই তনু বলে ওঠে…

তনু;; জানিস মেহরু আয়ুশ কে যখন….. এইরে মেহরু কিছুর গন্ধ পেয়েছিস। মানে কি যেন একটা পুড়ছে না।

মেহরাম;; আব..হ্যাঁ হ্যাঁ। চুলোয় কিছু দিয়েছিস।

তনু;; আল্লাহ আমি শেষ, চুলোর ওপর তো দুধ বসিয়েছিলাম।

মেহরাম;; গেলো, আরে জলদি যা।

তনু এই কথা বলেই এক দৌড়ে রান্নাঘরে চলে যায়। আর আমার হাসি টা যেন লোপ পেয়ে গেলো। বিছানার ওপর ছেচড়ে ছেচড়ে পেছিয়ে গেলাম জানালার কাছে। আমি বুঝতেই পারছি না যে তনু আমাকে কি বলে গেলো। আয়ুশকে সে ভালোবাসে। অথচ তার সাথে আমার এতো দিনের সম্পর্ক। আমি কি বলবো তনুকে। আর আয়ুশকেই বা আমি এখন কি বলবো। মাথা কেমন ঘোড়াচ্ছে আমার। মনের মধ্যে বিচলতা কাজ করছে। ইতোমধ্যে চোখে কান্নার বন্যা বয়ে গেছে। হয়তো তনু এখন না থাকলে আমি চিৎকার দিয়ে উঠতাম যা এখন পারছি না। সত্যি এতো কষ্ট আমার কখনোই হয়নি। মানুষকে দেখতাম ভালোবাসার মানুষ তার থেকে দূরে চলে গেলে জীবন্ত লাশের মতো বেচে থাকতো। তখন তোয়াক্কা করতাম না বা পাত্তা দিতাম না। কিন্তু এখন বুঝছি। একদিকে আমার বোন আরেক দিকে আয়ুশ। আমার কাছে এখন মন হচ্ছে আমি সমুদ্রের মাঝখানে পরে গেছি। না যেতে পারছি এদিকে আর না যেতে পারছি ওদিকে। তখনই তনু এসে জোরে জোরে বলতে লাগলো…

তনু;; মেহরু দুধ পুড়ে গেছে।

আমি জানালার বাইরে তাকিয়ে ছিলাম তনু কথায় দ্রুত চোখ মুখ মুছে তার দিকে তাকাই।

মেহরাম;; হ্যাঁ দে দেখি আমাকে। বলেছিলাম না খেয়াল রাখবি। আচ্ছা দে আমি দেখি কি করা যায়।

তনু;; হুমম।

মেহরাম;; কি খাবি, কি রেধে দিবো।

তনু;; বাইরে যাই খেতে।

মেহরাম;; হাহাহা,, আচ্ছা ঠিকআছে। রেডি হয়ে নে।

তনু হেসে গিয়ে রেডি হতে থাকে। আমি বাড়ির সব কিছু ঠিকঠাক করে রেডি হয়ে নেই। তারপর বাইরে চলে যাই। সেইদিন এভাবেই কাটে আমাদের। রাতে ঘুমানোর জন্য বিছানাতেই যাই। পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখি তনু গভীর ঘুম। কিন্তু আমার তো চোখে ঘুমের ছিটেফোঁটাও নেই। আয়ুশের কথা মনে পরছে। আজ সে অনেক ব্যাস্ত ছিলো তাই বেশি একটা কথা বলা হয়নি। তনুর কথা গুলো যেন মাথায় ঘুড়পাক খাচ্ছে বারবার। এক পাশ ফিরে শুয়ে ছিলাম তখনই ফোন বেজে ওঠে। ফোন হাতে নিয়ে দেখি আয়ুশ। তড়িঘড়ি করে উঠে পরি। খুব সাবধানে ফোন নিয়ে বারান্দায় যাই।

মেহরাম;; হ্যালো।

আয়ুশ;; কি করছো?

মেহরাম;; না কিছু না।

আয়ুশ;; কি হয়েছে, গলার স্বর এমন লাগছে কেন?

মেহরাম;; কিছু না বললাম তো। তুমি কি করো?

আয়ুশ;; আব..আমি।

মেহরাম;; আয়ুশ ওয়েট, তুমি। আয়ুশ তুমি আবার স্মোক করছো।

আয়ুশ;; কি করে বুঝলে?

মেহরাম;; তুমি যেভাবে শ্বাস নিচ্ছো তাতে বুঝা যায়। আচ্ছা মানা নেই যতো পারো খাও।

আয়ুশ;; ভূতে ধরেছে নাকি। আজ তো বকলে না।

মেহরাম;; না এমনি।

আয়ুশ;; মেহরু।

মেহরাম;; আয়ুশ, ভালোবাসি।

আয়ুশ;; ভালোবাসি।

মেহরাম;; আমি রাখি।

আয়ুশ;; কাল আসবে?

মেহরাম;; আসলে না, কারণ কাল আর পরশু আমাদের ক্লাস নেই।

আয়ুশ;; আমি বাসার সামনে চলে আসবো কিন্ত।

মেহরাম;; হুম এসো।

আয়ুশ;; হয়েছে কি তোমার আজ বলো তো?

মেহরাম;; কিছু না, আমি ঘুমাবো। রাখি আল্লাহ হাফেয।

আয়ুশ;; গুড নাইট।

আমি আয়ুশের সাথে কথা শেষ করে এসে পরি। এসেই তনুর দিকে তাকাই। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন সে। আমি তার পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিই। হয়তো আমার মায়ের পেটের বোন থাকলেও তার ওপর আমার এতো ভালোবাসা আসতো না যতোটা তনুর ওপর আসে। আমার বোন। আমি তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে শুইয়ে পরি এক পাশ ফিরে। ফোন টা অন করে গেলারি তে গেলাম। আয়ুশের হাসিমাখা মুখ। ছবিতে সে হাসছে কিন্তু এখানে আমার চোখের কার্নিশ বেয়ে গড়িয়ে পরছে হাজারো অশ্রুবিন্দু। সে রাতে আর ঘুমাতে পারিনা। ভোরের দিকে চোখ লেগে আসে আমার। সকালে তনুর ডাকে ঘুম ভাংগে আমার। আমি তাকিয়ে দেখি ফোনে এখনো আয়ুশের ছবি বের হয়ে আছে। আমি জলদি করে তা বালিশের নিচে লুকিয়ে ফেলি।

তনু;; মেহরু ভার্সিটে তে যাবি না?

মেহরাম;; আজ & কাল ক্লাস নেই হুদাই গিয়ে কি করবো। তুই চলে যা না। আর সাবধানে যাবি আসবি।

তনু;; আচ্ছা তাহলে থাক তুই, আমি গেলাম। আর শোন টেবিলের ওপর তোর খাবার বানিয়ে রেখে দিয়েছি তুই উঠে খেয়ে নিস। আর জলদি উঠ ঠান্ডা হয়ে যাবে।

মেহরাম;; হ্যাঁ আচ্ছা।

তনু;; ওইই দেখ তো বিছানার সাইডে আমার ফোন আছে ওটা দে।

মেহরাম;; দিচ্ছি।

বিছানার সাইড থেকে তনুর ফোন টা নিলাম। সাইডে হাতের চাপ লেগে ফোন টা অন হয়ে যায় আর ওয়ালপেপারে তাকিয়ে দেখি আয়ুশের ছবি। আমার নিজের কাছেই কেমন যেন লাগলো বিষয় টা। আবার অফ করে হেসে তনুকে ফোন টা দিয়ে দিলাম। তনু হেসে আমার গালে চুমু খেয়ে চলে যায়। যতক্ষণ না তনু চলে যায় আমি তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আমি আর সেখানে বসে না থেকে উঠে ওয়াসরুমে চলে যাই। ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিই। কোন কাজেই মন বসছে না। মনের ভেতরে কেমন একটা ছটফটানি। এই টুকু সময়ে আয়ুশ ২০ বারের ওপর ফোন করে ফেলেছে আমি ধরি নি। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করেই ফোন ব্যাস্ত দেখিয়েছি। আয়ুশের সাথে কথা বলা কমিয়ে দিয়েছি। এক প্রকার ইগ্নোর করার চেষ্টা করছি। এভাবেই দুদিন চলে যায়।আগামীকাল ক্লাস আছে তাই ভার্সিটিতে যেতে হবে আমার। এর মধ্যে আয়ুশ আমার বাড়ি আসার জন্য অনেক পাগলামো করেছে কিন্তু খুব কষ্টে সামাল দিয়েছি। তনু সেইদিন বাসায় আসে তবে তার মুখটা অনেক বেরঙিন দেখাচ্ছে। আমি যানি যে কিছু তো হয়েছে নইলে এই মেয়ে কখনোই এমন করবে না। আমি উঠে গিয়ে তনুর পাশে বসি। কাধে ধাক্কা দিয়ে বলে উঠি…

মেহরাম;; হয়েছে কি?

তনু;; কিছু না।

এই বলেই তনু উঠে যায় আমি অবাক হয়ে তাকাই। ফ্রেশ হয়ে এসে তনু বই নিয়ে বসে। আমি ভাত মাখিয়ে তনুর মুখের সামনে ধরি। তনু টলমল চোখে আমার দিকে তাকায়। তনুর চোখে পানি দেখে বুকের ভেতরে ধুক করে উঠে। আমি আবার ভাত তনুর দিকে বাড়িয়ে ধরি। তনু এবার খেয়ে নেই। তাকে খাইয়ে দিয়ে শুইয়ে পরি। আমি কয়েকবার জিজ্ঞেসও করি যে কি হয়েছে তনু কাদছিস কেন। কিন্তু সে কিছুই বলে না। আমি বুঝি যে তনুর মন বেশ খারাপ তাই আর কিছু জিজ্ঞেস করি না। ঘুমিয়ে পরি। তবে মাঝরাতে কি যেন মনে করে আমার ঘুম ভেংে যায়। পাশে হাত দিয়ে দেখি জায়গা ফাকা সেখানে। এবার আমি তাকাই। পাশে তাকিয়ে দেখি তনু নেই। আমি কপাল কুচকে মাথা তুলি। এতো রাতে মেয়ে টা গেলো কোথায়। ওয়াসরুমের তো লাইট অফ। আমি উঠে পরি। তারপর ধীর পায়ে এগিয়ে যাই। তনু বলে দুবার ডাক দেই কিন্তু সারা নেই। তখনই কিছু ভাংগার জোরে শব্দ আসে। আমি এবার কিছুটা ভয় পেয়ে যাই। রুমের লাইট জ্বালিয়ে দিই। বুঝলাম যে শব্দ টা বারান্দা থেকে আসছে। দ্রুত সেখানে যাই আর গিয়েই যা দেখি তাতে আমার মাথায় বাজ ভেংগে পরে। নিজের চোখেই যেন সব ঘোলাটে লাগছে। আমি গিয়ে দেখি তনু ফ্লোরে বসে আছে হাতে তার একটা কাচের টুকরো। আর তনু তা তার হাতের শিরার কাছে ধরে রেখেছে। কাটবে কাটবে ভাব। চোখ দিয়ে তার পানি পরছে, দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে অনেক কেদেছে। আমি দৌড়ে গিয়ে তনু কে টেনে তুলি, তার হাত থেকে কাচের টুকরো টা সাবধানে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিই। তনুর এই অবস্থা দেখে আমার মাথা এতো গরম হয়ে যায়। তনুর গালে ঠাটিয়ে একটা থাপ্পর মেরে দেই। তার বাহু ধরে ঝাকিয়ে বলে উঠি…

মেহরাম;; কি করছিলি তুই তনু, কি করতে যাচ্ছিলি তুই। মাথা ঠিক আছে তোর। কি মানে কি এমন হয়েছে যে তুই নিজেকে মেরে ফেলতে চাইছিলি। আমার কথা ভাবলি না, আচ্ছা আমার কথা রাখ নিজের পরিবারের কথা ভাবলি না। এতো টা স্বার্থপর কবে থেকে হলি তুই তনু।

তনু কে রেগে কথা গুলো বলছিলাম। তখন তনু কাদতে কাদতে আমাকে জড়িয়ে ধরে শক্ত ভাবে।

তনু;; আমি জীবনে যা চেয়েছি তা কখনোই পাই নি রে মেহরু। হয়তো হারিয়ে গেছে নয়তো চলে গিয়েছে।

মেহরাম;; তনু কি হয়েছে বল আমাকে।

তনু;; আয়ুশ অন্য কাউকে ভালোবাসে রে। আজ ভার্সিটিতে গিয়েছিলাম। তখন জানতে পারি। আয়ুশ নাকি অন্য কাউকে ভালোবাসে। সত্যি খুব খারাপ লাগছে আমার। আমি ওকে না পেলে মরেই যাবো মেহরু।

তনুর কথা শুনে আমি ভয় পেয়ে যাই। কোন ভাবে তনু এটা যেনে গেলো না তো যে আয়ুশ আর আমি রিলেশনে আছি। তাই আমি বলে ওঠি..

মেহরাম;; কে বলেছে তোকে এটা, আমি যত দূর জানি আয়ুশ কাউকেই ভালোবাসে না। ভুল শুনেছিস তুই। আর শুন এটা সিওর থাক যে আয়ুশ তোরই হবে।

কথা গুলো বলার সময় আমার নিজেরই গলা ধরে আসছিলো। তবুও খুব কষ্টে তনু কে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ঘরে নিয়ে আসি। আর অনেক বকি অনেক। এমন কাজ যেন আবার না করে তাই তাকে হুমকি ধমকিও দেই। তনু কাদতে কাদতে আমার কোলেই ঘুমিয়ে পরে। যেন আমি আমার চোখের ঘুম টুকু সম্পূর্ণ তনুর চোখে ঢেলে দিলাম। আমার বোন কি পরিমান পাগল তা এখন বুঝলাম। কি করতে যাচ্ছিলো ও এখন যদি আমি সময় মতো না উঠতাম তাহলে কি হতো এটা ভাবতেই আমার গায়ে কাটা দিয়ে উঠছে। সারারাত আমার সেভাবেই বসে কেটে যায়। ভাবি যে আয়ুশকে কি বলবো আমি। কয়েকদিনে চোখের নিচের কালো দাগ টা যেন গাঢ় হয়ে গেছে। সকালে তনু উঠে দেখে আমি সেভাবেই বসে আছি।

তনু;; কিরে তুই ঘুমোস নি?

মেহরাম;; ঘুমিয়েছি তো এভাবেই।

তনু;; কিন্তু এভাবে।

মেহরাম;; হয়েছে তোর ওপর রাগ কিন্তু কমে নি আমার কাল যা করেছিস। তোকে আমার এখন ঠেংাতে ইচ্ছে করছে। আর বেশি বকবক না করে ফ্রেশ হতে যা ভার্সিটি যাবো।

তনু;; সরি আর যাচ্ছি।

তনু উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেতেই আমি জলদি আয়ুশকে ফোন দেই।

আয়ুশ;; হ্যালো মেহরু।

মেহরাম;; ভার্সিটি আসছি আমি, ক্লাস করবো না তুমি কি ভার্সিটির মাঠে অপেক্ষা করতে পারবে?

আয়ুশ;; আজীবন অপেক্ষা করতে পারবো।

আয়ুশের এমন কথায় আমি চোখ বন্ধ করে ফেলি।

মেহরাম;; সেখানে থেকো আমি আসছি।

আয়ুশ;; আচ্ছা।

তনু আর আমি খেয়ে দেয়ে একসাথে বের হয়ে পরি। তনু তার ডিপার্টমেন্টর সামনে নেমে চলে যায়। আমিও সেখানে নেমে পরি। তারপর সোজা চলে যায় ভার্সিটির মাঠে। গিয়েই দেখি আয়ুশ দাঁড়িয়ে আছে পেছন ঘুরে। আমি ধীরে ধীরে হেটে তার কাছে যাই। হয়তো সে আমার হাটার শব্দ পেয়ে বুঝতে পারে যে এটা আমি।তাই যাওয়ার আগেই সে আমার দিকে তাকায়। আয়ুশ দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমি আয়ুশের পিঠে হাত রাখতে গিয়েও আবার হাত টা কুচকে ফেলি।

আয়ুশ;; আই মিসড্ ইউ সো মাচ।

মেহরাম;; আয়ুশ তোমার সাথে কিছু কথা আছে আমার অনেক দরকারি আর সেগুলো বলতেই এখানে আসা।

আয়ুশ;; তার আগে আসো কোথাও বসি।

আয়ুশ আমার হাত ধরে নিয়ে একটা লেকের কাছে নিয়ে যায়। আর সেখানেই আমরা দুজন বসে পরি। আমি লেকের পানির দিকে শূন্য চোখে তাকিয়ে থাকি।

আয়ুশ;; মেহরু আমি…

মেহরাম;; আয়ুশ আমার পক্ষে আর এই সম্পর্ক টা টিকিয়ে রাখা সম্ভব না।

আমার কথায় আয়ুশ যেন ৪৪০ ভোল্টের শক খেলো। আয়ুশ ঝট করে উঠে দাঁড়িয়ে পরে। আমি চোখ তুলে আয়ুশের দিকে তাকাই। আয়ুশ জোরে জোরে দম ছাড়ছে। আমি বুঝতে পারলাম যে আমার কথা তা আয়ুশ ঠিক মেনে নিতে পারছে না।
আয়ুশ চিল্লিয়ে বলে ওঠে…

আয়ুশ;; মানে কি এইসবের মেহরাম?

মেহরাম;; মানে তাই যা তুমি শুনেছো। আমি আমাদের সম্পর্কের এখানেই ইতি ঘটাতে চাই।

আয়ুশ;; কিন্তু কেন, কারণ কি? কি হয়েছে হুট করেই এমন কথা?

মেহরাম;; মন ভরে গেছে আমার। চাই না তোমাকে।

আয়ুশ;; মেহরাম দেখো এমন ফাজলামো একদম ভালো লাগে না আমার। প্লিজ ডোন্ট জোক উইথ মি।

মেহরাম;; এটা কোন মজা না আয়ুশ আমি সিরিয়াস। আই ওয়ানা ব্রেকাপ। আমার মন উঠে গেছে।

আয়ুশ;; রিজন?

মেহরাম;; বলেছি তোমায়, ভালো লাগে না তোমাকে।

আয়ুশ;; মেহরাম আমি জানি তুমি ওই রকম মেয়েই না। অযথা পেচাল পাইরো না।

মেহরাম;; আমি কতো টুকু খারাপ তা কেবল আমিই জানি। তো আমার যে এই ভালো চেহারা আছে না এটাতে যেয় না।

আমি এই কথা বলে চলে আসতে নিলে আয়ুশ আমার হাত ধরে আমার গালে নিজের হাত দুট চেপে ধরে। নিজের মাথার সাথে আমার মাথা ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে।

আয়ুশ;; কেন এমন করছো মেহরাম? আমি পারবো না তোমাকে ছাড়া।

মেহরাম;; জেদ করো না আয়ুশ।

আয়ুশ;; হ্যাঁ আমি অনেক জেদি আর আমি করবো। কিন্তু তোমাকে চাই আমার।

মেহরাম;; আয়ুশ ভালোবাসি না আমি।

আয়ুশ;; মেহরাম সত্যি কারণ বলো আমায় কি হয়েছে (আমার চোখে চোখ রেখে)

মেহরাম;; আয়ুশ, আয়ুশ তনু। আয়ুশ তনু তোমাকে অনেক ভালোবাসে। কাল রাত সুসাইড পর্যন্ত করতে গিয়েছিলো তোমার জন্য এই জেনে যে তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসো। তনু অনেক ভালোবাসে তোমায়। আমার থেকে হাজার গুণে বেশি আয়ুশ। তুমি ওর সাথে হ্যাপি থাকবে। আমি পারবো না তুমি প্লিজ ওর হয়ে যাও আয়ুশ। আমি হাত জোর করছি তোমার কাছে প্লিজ। নয়তো আমার বোন মরেই যাবে।

আমি আর পারিনি নিজেকে আটকাতে কান্না করে দেই। আর আয়ুশকে সব বলে দিই। আমার কথা শেষ হতেই আমার গালে কষে এক চড় বসিয়ে দেয় আয়ুশ। আমি গালে হাত দিয়ে মাথায় নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকি আয়ুশের সামনে। আয়ুশ তার মাথায় কতোক্ষণ হাত দিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকে। পরক্ষণেই ঘুড়ে আমার দিকে তাকায়।

আয়ুশ;; তোমার বোন তনু তুমি ওর জন্য এমন করছো। পাগল তুমি মেহরান। তোমার বোন আমাকে না পেলে মরে যাবে আর আমি তোমাকে না পেলে মরে যাবো। এতো বেশি সেল্ফিস তুমি। তোমার বোনের দিক টাই ভাবলে আমার না। আরে আমার কথা ছাড়ো তুমি নিজের দিক টা ভাবলে না। আমাকে ছাড়া কি তুমি নিজে ভালো থাকবে বলতে চাইছো কখনোই না। মেহরাম আমাদের সম্পর্কের সময়সীমা কম হতে পারে কিন্তু ভালোবাসার গভীরতা কম না।

মেহরাম;; আয়ুশ এতো সবকিছুর পর আমি পারবো না। আজ হোক কাল হোক যখন তনু জানবে যে তোমার সাথে আমার সম্পর্ক আছে তখন সেই শক টা সে সেড়ে উঠতে পারবে না। কষ্ট হবে তার। তার থেকে বরং আমিই সেই কষ্ট টা নেই। প্লিজ আয়ুশ।

আয়ুশ;; ভুল করেছি আমি অনেক বড় ভুল। তোকে, তোকে নিজের জীবন দিয়ে ভালোবেসে অনেক বড় একটা ভুল করেছি আমি। ইউ আর দি বিগেস্ট মিস্টেক অফ মাই লাইফ।

মেহরাম;; আয়ুশ আমি কখনো কিছুই চাই নি তোমার কাছে প্লিজ তনুকে মেনে নাও। আয়ুশ প্লিজ।

আয়ুশ;; মিস মেহরাম আফরিন ফর ইয়র কাইন্ড ইনফরমেশন আমি আপনাকে জানিয়ে দেই যে আমার ভালোবাসা বিক্রির জন্য না। আর নাই আমি কোন দ্রব্য যে আমাকে যেখানে খুশি সেখানে আপনি বিক্রি করে দিবেন। আমি বিকাও না। আর নাই আমার ভালোবাসা।

মেহরাম;; আয়ুশ তুমি যা বলবে আমি তাই করবো প্লিজ তনু কে মেনে নাও। আয়ুশ প্লিজ। আই এম বেগিং টু ইউ।

আয়ুশ;; তোমাকে চাই আমি।

মেহরাম;; আয়ুশ (চিল্লিয়ে) কেন বুঝতে পারছো না আমার দিক টা। আমি যে কিসের মধ্যে আছি তা কেবল আমিই জানি। পারবো না আমি তোমার সাথে থাকতে।

আয়ুশ;; মেহরাম…

মেহরাম;; এই সম্পর্ক না ভাংলে আর তনু কে যদি তুমি না মেনে নাও তাহলে তুমি আমার মরা মুখ দেখবে।

হাত দিয়ে আয়ুশকে থামিয়ে দিয়ে তার দিকে চোয়াল শক্ত করে কথা টা বললাম।
আমার কথা শোনার পর আয়ুশ আর কিছু বললো না অন্য দিকে ঘুড়ে তাকিয়ে থাকে। আমি বুঝতে পারলাম যে আয়ুশের এখন বেশ রাগ উঠেছে। আমি এক কিণারে দাঁড়িয়ে থাকলাম। আমাদের মাঝে আর কোন কথা নেই, পিনপতন নীরবতা। আমি নিচ থেকে আমার ব্যাগ টা তুলে চলে আসতে নিবো। তখন ডাক পরে আয়ুশের। আমি থেমে যাই।

আয়ুশ;; মেহরাম।

মেহরাম;; __________

আমি দাঁড়িয়ে পরি। আয়ুশ আমার সামনে আসে।

আয়ুশ;; আজ থেকে আপনি দেখবেন যে আমি এই আয়ুশ কি কি করতে পারি। জেদের তো কিছুই দেখেন নি। আর রইলো কথা তনুর তো আমি এটা বলবো যে দশ বছর পর হলেও আপনি একদিন আমাকে আর তনুকে দেখে কপাল চাপড়াবেন আর আফসোস করবেন কিন্তু সেইদিন কোন সময় থাকবে আপনার কাছে। তনু কে মেনে নেবার কথা বললেন তাই না। নিবো মেনে। আরেক টা কথা আপনার জন্য যে ভালোবাসা টুকু আমার মনে পোষা ছিলো এখন তা দ্বীগুণ হয়ে ঘৃণায় পরিণত হয়েছে। আই হেট ইউ মেহরাম।

আয়ুশ এই কথা বলেই হনহন করে চলে যায়। আমি মাথা নিচু করে শুধু তার কথা গুলো শুনি। আমার কিছুই করার নেই। এতে যে যাই বলুক। আমি সেখান থেকে এসে পরি। বাইরে আসতেই তনু কে দেখি। কিছুই বুঝতে দেই না তাকে। সোজা বাসায় চলে যাই। সেদিন অনেক কান্না করি আমি। রাতের ঘুম হারাম আমার। পরেরদিন ভার্সিটিতে আসি। এসেই দেখি মাঠ ভর্তি মানুষ শুধু আমাদের ডিপার্টমেন্টর না অন্যান্য ডিপার্টমেন্টর ছাত্র-ছাত্রী রাও আছে। সবাই ভীড় করে আছে। আমি আর তনু গেলাম কিন্তু বুঝলাম না কিছুই। হঠাৎ সামনে তাকিয়ে দেখি আয়ুশ। বেশ ফুরফুরে মেজাজের লাগছে তাকে। হুট করেই দেখি আয়ুশ তনু বলে চিল্লিয়ে ওঠে। আমি মাথা তুলে তাকাই। আর তনুর দিকে তাকিয়ে দেখি তার চোখ খুশিতে ঝলমল করছে। আয়ুশ হাতে এক তোড়া ফুল এনে সবার মাঝে তনুকে হাটু ভাজ করে প্রপোজ করে। চারিদিকে সবাই চিল্লিয়ে ওঠে। আমার পাশে তনু দাঁড়িয়ে ছিলো আর আয়ুশ তাকে প্রপোজ করে। আমি তাদের দেখে কিছু টা সরে দাড়াই। উর্মি দাঁড়িয়ে আছে দেখে আমি তার কাছে যাই। তনু প্রথমে আমার দিকে তাকায় আমি বিনিময়ে মুচকি হাসি দেই। তনু সাথে সাথে এক্সেপ্ট করে নেয়। সবাই একসাথে চিল্লিয়ে ওঠে। আয়ুশ আর তনু হেসে একে ওপর কে জড়িয়ে ধরে। আমার সাধ্যি নেই সেখানে দাড়াবার তাই চলে যাই। ভেংে চুরমার হয়ে গেছি আমি। এতো টা ভেংেছি যে দাড়ানোর শক্তি নেই। কিছুক্ষণ পর তনু আমাকে খুজতে খুজতে এসে পরে। এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে। মুখ থেকে যেন তার হাসি যাচ্ছেই না। এতো খুশি সে যে এখন কেদেই দিয়েছে। আমি হেসে তনুর চোখের পানি মুছে দেই। তনু ভেবেছে যে আমি হয়তো আয়ুশকে তনুর বেপারে বলেছি। আর আয়ুশও যে তনুকে ভালোবাসে এটাও আমাকে বলেছে আর তাই আজ সে তনুকে প্রপোজ করেছে। সারা টা দিন তনু বকবক করেছে। আমি আর আয়ুশ আলাদা হয়ে যাই। তনু আর আয়ুশ এক হয়ে যাই। আয়ুশ যেন আমাকে দেখিয়েই বেড়াচ্ছিলো এক প্রকার। এভাবেই চলে থাকে সময়। একদিন বাড়ি থেকে ফোন এলো আমার ফোনে। আমি আর তনু ফোন নিয়ে বসলাম বিছানাতে। ফোনের ভলিউম লাউড স্পিকারে দিলাম। চাচি অনেক খুশি খুশি মনে বলে ওঠে যে তনুর জন্য একটা বিয়ের সম্পর্ক এসেছে। তনুর তো কাদো কাদো চেহারা এইসব দেখে। আমিও কিছুটা ঘাবড়ে যাই যে কিভাবে সম্ভব এটা। তাকিয়ে দেখি তনু কেদেই দিয়েছে কারণ সে কি করে অন্য কাউকে বিয়ে করবে যেখানে সে আয়ুশকে ভালোবাসে। আমি তনু কে শান্তনা দিয়ে বসিয়ে রাখি। আমি চাচিকে বরের নাম জিজ্ঞেস করলে চাচি বলে উঠে আয়ুশ আহমেদ। ব্যাস এই টুকুই যেন যথেষ্ট ছিলো। তনু লাফিয়ে ওঠে, তনু সাথে সাথে বলে ওঠে যে আমি রাজি আমি রাজি। আর আমি হেসেই খুন 😅। অনেক কথা বলার পর ফোন কেটে দেই। আর তখন তনুর ফোনে আয়ুশ ফোন দেয়। তনু ইচ্ছে করেই ফোনের ভলিউম বাড়িয়ে দেয়। আয়ুশ বলে ওঠে “কেমন লাগলো সারপ্রাইজ টা” তনু তো খুশিতে পাগল হয়ে যাচ্ছে। তাদের কথা বলার মাঝেই হঠাৎ আয়ুশ বলে ওঠে “তোমার বোন কোথায়, হ্যাঁ কি যেন নাম মেহ মেহ…” তনু বলে ওঠে ‘মেহরাম’। আমি তনু কে ইশারা দিয়ে বাইরে চলে যেতে বলি আয়ুশের সাথে কথা বলার জন্য। তনু চলে যায়। ব্যাস হয়ে গেলো। কয়েকদিনের মাঝেই তনু আর আমি বাড়ি চলে গেলাম। আয়ুশের ফ্যামিলি এসে আমাদের ফ্যামিলির সাথে কথা বলে গেছে। বিয়ে তাদের একদম পাকা পাকি হয়ে যায়। এর মধ্যে কখনো কখনো কারো না কারো মাধ্যমে আয়ুশ আমাকে খোচা মেরে অনেক কথা বলেছে। আমি না শোনার ভান করেই থাকি। এই তো হয়ে গেলো আস্তে আস্তে তনু আর আয়ুশের বিয়ে।

.

অতীত শেষ 🌸~~


বাইরে মুষুলধারে বৃষ্টি হচ্ছে, আমি এই সবকিছুই মনে মনে একবার মনে করে নিলাম। সবশেষে চোখ দুটো বন্ধ করি আমি। আর টুপ করে পানি পরে যায়। বাইরে তাকিয়ে দেখি কালো মেঘময় আকাশ, কিন্তু ফোন অন করে দেখি ৪;৫৫ বাজে। ভোর হয়ে গেছে। খানিক পরেই আযানের ধ্বনি কানে এলো। আমি উঠে গিয়ে ওযু করে নামায পরে নিলাম। নামায শেষে জায়নামাজ গোছাচ্ছি তখনই আমার দরজাতে কড়া নাড়ে। আমি উঠে গিয়ে দরজা খুলে দেই।




🥀চলবে~~

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে