#তেমাতেই_বিমোহিত
#পর্বঃ২৩ (অন্তিম পর্ব)
#লেখিকা আরোহি জান্নাত( ছদ্মনাম)
“রাফসান কে ইহান?”
জিজ্ঞেস করে উঠলেন, আরশি বেগম।
আরশি বেগম এর কথায় বেশ অবাক হলো বাড়ির সবাই। ইহান বুঝতে পারছে না আরশি বেগম ঠিক কি বোঝাতে চাইছেন।তাই চুপ করে আছে। তখনই আরশি বেগম ইহানের ফোনটা ইহানের দিকে বাড়িয়ে দিল।ব্যস্ততার জন্য ইহান এর ফোন যে তার মায়ের কাছে ছিল সেটা খেয়াল ছিল না ইহান এর।তবে ফোনের ওপর লেখা ম্যাসেজটা পড়ে যা বোঝার বুঝে ফেলল ইহান। মা যে সব জেনে গেছে সেটা ও বুঝতে পারল।
অপরাধী চোখে তাকিয়ে আছে ইহান তার মায়ের দিকে।তখন ইহানের বাবা জিজ্ঞেস করল,
“কি ব্যাপার আরশি? রাফসান তো ইহানের বন্ধু। এটা আমরা সবাই জানি তাহলে তুমি হঠাৎ এমন প্রশ্ন করছ কেন?”
তাচ্ছিল্য হাসল আরশি বেগম। বলে উঠল,
“হ্যাঁ রাফসান ইহানের বন্ধু। তবে এছাড়া ও আরো একটা পরিচয় আছে। আর সেটা হলো রাফসান আয়ানের বাবা।আয়ানের ব্যায়লোজিকাল ফাদার। ”
ইদ্রিস বেগম হতভম্ব হয়ে গেলেন এ কথা শুনে। আরশি বেগম এর এ কথায় যেন সারা বাড়ি কেঁপে উঠল। আরোহি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলল।কোলে থাকা আয়ানকে আর একটু শক্ত করে মিশিয়ে নিল নিজের সাথে।যেন কোথাও হারিয়ে যাচ্ছে।
ইদ্রিস সাহেব ইহানের কাছে গিয়ে দাড়ালেন।তারপর জিজ্ঞেস করে উঠল,
“তোমার মা এ সব কি বলছে ইহান?”
কি বলবে ইহান ঠিক বুঝতে পারছে না। সব সত্যি সকলের সামনে তবে সেটা অস্পষ্ট। কিন্তু যদি সকলে স্পষ্টভাবে সবটা জানে তখন কি হবে? তারা কি আয়ানকে মেনে নেবে নাকি মায়াকে দোষী করবে।কি হবে কিছুই ভাবতে পারছে না ইহান। নিজেকে পাগল পাগল লাগছে।অবশেষে ইহান সিদ্ধান্ত নিলো নিজের পরিবার কে আর অন্ধকারে রাখবে না।সকলে যখন জেনেই গেছে তখন সকলে সব কিছু সঠিকভাবে জানিয়ে দেবে।
___________
রাফসান আর মায়ার সম্পর্কে সব কিছুই জানিয়ে দিয়েছে ইাহন।সেই সাথে সব লুকানো কথা।শুধু আরোহিকে আগে থেকেভালোবাসার কথাটা বলে নি সে।
ড্রয়িংরুম জুড়ে পিনপিন নিরবতা।ইহানের কাছ থেকে সব কিছু জানার পর ইহানের বাবা মা অবাক এত কিছু হয়ে গেছে তাদের অজান্তে। তবে, তারা মায়ার সাথে বিয়ে দেওয়ায় নিজেদের দোষ দেবে নাকি ইহান সব জেনে ও মায়াকে এভাবে আড়াল করে রেখেছিল বলে তাকে দোষ দেবে এটাই ভেবে পাচ্ছে না।
_____________
সকলে রাতের খাবার না খেয়েই যে যার ঘরে চলে গেছে। খাওয়ার মন মানসিকতা কারোই নেই। আরোহি কয়েকবার জোর করেছিল কিন্তু কাউকেই খাওয়াতে পারেনি।আয়ানকে নিয়ে বিছানায় বসে আছে আরোহি।একটু আগেই ঘুমিয়ে গেছে ছেলেটি। ইহান বেলকনিতে রেলিং ধরে দাড়িয়ে আছে। দৃষ্টি তার দূর আকাশে।তবে চারপাশ বড্ড ঝাপসা।আচ্ছা কুয়াসায় জন্য সব ঝাপসা দেখাচ্ছে নাকি ইহানের চোখের অশ্রুর জন্য। নিজেকে আজ আবার ও একা লাগছে ইহানের। আবারও নিয়তি তাকে অপরাধের কাঠগোড়ায় এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। হঠাৎ চোখে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠল ইহান। আরোহি খুব যত্ন করে ইহানের চোখের পানি মুছিয়ে দিচ্ছে। ইহান হঠাৎই আরোহি কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।কিছুক্ষণ পর আরোহি বুঝতে পারছে তার কাধ ভিজে যাচ্ছে। আরোহি নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,
“এমন বাচ্চাদের মতো কেন কাঁদছেন ইহান।খালামনি আর বড়বাবার রাগ করেছে ঠিকই কিন্তু দেখবেন কিছুদিন পরেই তাদের রাগ কমে যাবে।”
“কমবে না আরোহি।আমি যে মা আর বাবাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি। আমি অনেক বার ভেবেছিলাম মাকে সব বলব কিন্তু বলতে পারিনি।”
“প্লিজ ইহান। আমি খালামনিকে সব বুঝিয়ে বলব।আপনি এভাবে ভেঙে পড়বেন না।প্লিজ।”(আরোহি)
আরোহির কথায় কিছুটা স্বস্তি পেল ইহান। কারণ সে জানে তার মায়ের রাগ একমাত্র আরোহি ভাঙাতে পারবে।রাতটা এভাবেই কেটে গেল ইহান আরোহির। নির্ঘুম।হয়তো আরশি বেগম আর ইদ্রিস সাহেবের ও।
সকালে ইহান কিছু না খেয়েই বেরিয়ে গেছে। আরোহি শত চেষ্টা করে ও খাওয়াতে পারেনি। আরশি বেগম, ইদ্রিস সাহেব ঘর থেকেই বের হন নি।যে বাড়িটা সব সময় প্রাণবন্ত থাকত সেই বাড়িটা এতটা প্রাণহীন হয়ে গেছে সেটা দেখেই আরোহির হ্রদয় কেঁপে উঠছে।আয়ানকে লতা বেগম এর কাছে দিয়ে আরোহি নাস্তা নিয়ে আরশি বেগম আর ইদ্রিস সাহেবের এর ঘরে গেল। আরোহি ভেতরে ঢুকে দেখে আরশি বেগম খাটের ওপর বসে আছে। আর ইদ্রিস সাহেব সোফাতে।আরোহি খাবার টা টি টেবিলে রেখে তার খালামনির পাশে গিয়ে বসল।আরশি বেগম তখনও নির্বাক।আরোহি আলতো করে ডাকল,
“খালামনি?”
আরশি বেগম চুপ করে আছেন। আরোহি আবার ও ডাকল তবে কোনো সাড়া পেল না।এবার আরোহি তার খালামনির আর একটু কাছে গিয়ে বসতেই হঠাৎ আরশি বেগম আরোহিকে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে দিল।আরোহি হতভম্ব হয়ে গেল তবু ও নিজেকে সামলে খালামনিকে শান্ত করতে ব্যাস্ত হয়ে গেল।আরশি বেগম কাঁদতে লাগল আর বলে উঠল,
“আমি আমার ছেলের জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছিলাম আরোহি।আমি কি করে ওর সামনে যাবো আরোহি। বল, আমি কি করব।আমি কি জানতাম ওই মেয়ে বাধ্য হয়ে বিয়ে করেছে আর আয়ান ও আমার নাতি না।আমি তো সব কিছু হারিয়ে ফেললাম আরোহি।এখন কি করব আমি।”
আরশি বেগম এর বিলাপে আরোহির ও চোখে জল চলে এলো তবে ঠোঁটের কোনে ফুটে উঠল এক টুকরো হাসি।তারা যে ইহানকে ভুল বুঝে তার ওপর রাগ করে নেই এটাই অনেক।আরোহি বলতে লাগল,
“এমন করে কেন বলছ খালামনি। যা হয়েছে সেটা তে তোমাদের তো কোনো দোষ নেই। তবে ইহান ও কিন্তু নিরুপায় ছিল। উনি যদি তখন সবটা বলে দিতেন তাহলে কি তোমারা মায়াকে নিজেদের কাছে রাখতে বলো খালামনি।ওকে নিশ্চয় তার বাবার কাছে ফিরিয়ে দিতে।কিন্তু এতে কি হতো জানো।ওই নিষ্পাপ শিশুটা জন্মের আগেই মারা যেত।মায়ার ভাই ওকে এই পৃথিবীতে আসতে দিত না খালামনি। ”
আরোহির কথা শুনে আরশি বেগম আবার ও কেঁদে উঠলেন।ইদ্রিস সাহেব তখন আরোহি কে জিজ্ঞেস করে উঠল,
“ইহান কোথায় আরোহি?”
আরোহি নিচু স্বরে জবাব দিল,
“উনি অফিসে চলে গেছেন বড়বাবা।”
“খেয়ে গেছে?”
জিজ্ঞেস করল আরশি বেগম।
“না খালামনি।”
_______________
অফিসে এসে কাজ করছে ইহান।তবে কোনো কাজেই হচ্ছে না। চিন্তা হচ্ছে খুব। বাবা, মায়ের কালকের চেহারাটা বারবার মনে উঠছে। তখনই ফোন করল আরোহি। আরোহির ফোন পেয়েই বুকের মধ্যে ধুক করে উঠল ইহানের। বাড়িতে কিছু হয় নি তো!
কাঁপা হাতে ফোনটা রিসিভ করল ইহান।ওপাশ থেকে আরোহি একটা কথাই বলল,
“আপনি এক্ষুনি বাড়ি চলে আসুন ইহান।”
ইহান বুঝতে পারল না আরোহি কেন এই কথা বলল।তবে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরে গেল।
মাথা নিচু করে বাড়িতে ঢুকল ইহান। নানা রকম খারাপ চিন্তা ইতিমধ্যে মনের ঘরে উকি দিয়েছে।তবে বাড়ি ফিরে যে রাফসানকে দেখবে সেটা ভাবে নি সে।ড্রয়িং রুমে রাফসান আয়ানকে নিয়ে বসে আছে।সেখানে উপস্থিত আছে আরশি বেগম আর ইদ্রিস সাহেব।সাথে সাথেই ইহানের মনে ভয় বাসা বাধল।তবে কি আয়ান এ পরিবারের কেউ না এটা জেনে আরশি বেগম আয়ানকে রাফসানের কাছে দিয়ে দেবে।
কিন্তু আরোহি?সে তো আয়ানকে বড্ড ভালোবাসে।এমনকি ইহান নিজে ও আয়ানকে সন্তানই ভাবে।ধীরে ধীরে ইহান এগিয়ে গেল সোফার কাছে। রাফসান কে দেখল একবার।তারপর নিজের বাবা মায়ের দিকে তাকালো করুন চোখে। সেই চোখে যেন আকুতি যেন আয়ানকে তারা এই বাড়ি থেকে বের করে না দেয়।
রাফসান আরশি বেগম কে বলল,
“আমি তাহলে আসছি আন্টি।আর আয়ানকে ও নিজের সাথে নিয়ে যাচ্ছি। আপনারা যখন সব জেনেই গেছেন। তখন আর আয়ান এর এ বাড়িতে থাকাটা ঠিক হবে না।আর হ্যাঁ ইহান তোমাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না।তুমি আমার জন্য যেটা করেছো সেটা আমি কোনোদিন ও ভুলব না।”
কথাগুলো বলে চলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো রাফসান। তবে তার আগেই ইহান ওকে থামিয়ে দিল। কঠিন গলায় বলল,
“আমার ছেলেকে নিয়ে তুমি কোথাও যাবে না রাফসান।তুমি চাইলে মাঝে মাঝে এসে দেখা করে যেও বা নিজের কাছে ও কিছু দিন করে রাখতে পারো তবে সারাজীবনের জন্য নয়।”
ইহানের কথায় মুচকি হাসল রাফসান। তারপর বলে উঠল,
“আমি হেরে গেলাম আন্টি।এইবার বলুন আমাকে কি করতে হবে।”
রাফসানের কাছে এমন কিছু শুনে অবাক হয়ে গেছে ইহান।তখনই আরোহি নাস্তার ট্রে নিয়ে হাজির হলো।আর বলে উঠল,
“আয়ানের জন্য মামনি আনতে হবে ভাইয়া।এটাই হেরে যাওয়ার শর্ত।”
রাফসানের মুখটা সাথে সাথেই কালো হয়ে গেল। আর ইহান অবাকের পর অবাক হচ্ছে। কি হচ্ছে সেটা বুঝতে না পেরে জিজ্ঞাসু চোখে আরোহির দিকে তাকালো।তখন ইদ্রিস সাহেব আর আরশি বেগম এগিয় এসে ছেলেকে জড়িয়ে ধরল। ইহানের বুক থেকে যেন পাথর নেমে গেল বাবা মায়ের এই আলিঙ্গনে। এর একটাই অর্থ তার বাবা মা তাকে ক্ষমা করে দিয়েছে।
তখন আরোহি বলে উঠল,
“খালামনি বা বড় বাবা আপনার ওপর রাগ করে ছিল না ইহান। ওনারা তো নিজেরাই অপরাধবোধে ভুগছিলেন।তখন আমি ওনাদের কে বলি যে যেটা হয়েছে সেটা তে কারোই হাত ছিল না।আর আমি রাফসান ভাইয়াকে ফোন করে আসতে বলি।ভাইয়া আসলে কালকে ঘটে যাওয়া সব কিছু ভাইয়াকে বলি।তখন ভাইয়া বলে, সে আয়ানকে নিয়ে যেতে চায়।তবে খালামনি বাধা দেয়। আর সেই সাথে বলে, আপনি আয়ানকে কখনো নিয়ে যেতে দেবেন না।তখন রাফসান ভাইয়া বলে, যদি এমনটা হয় তাহলে খালামনি বা আমরা যা বলব ভাইয়া তাই করবে।”
ইহানের মুখে হাসি ফুটে উঠল সব শুনে। তবে রাফসান এখন ও মুখ মলিন করেই দাঁড়িয়ে আছে। ইহান রাফসানের কাঁধে হাত রাখল।তখন আরোহি বলে উঠল,
“রিনি মেয়েটা সত্যি আপনাকে ভালোবাসে ভাইয়া।ওকে একটা সুযোগ দিন।”
আরোহির মুখে এমন কথা শুনে রাফসান অবাক হয়।কারণ রিনির কথা তো আরোহির জানার কথা নয় তাহলে!তখন আরোহি আবার ও বলে ওঠে,
“ইহান আমাকে সব বলেছেন।আর”
রাফসান ভ্রু কুচকে তাকায় আরোহির দিকে। আরোহি আমতা আমতা করে বলে ওঠে,
“আর আমি রিনিকে কথা দিয়েছি আপনার সাথে ওর বিয়ে দেব।”
এবার যেন পৃথিবীর সেরা সারপ্রাইজটা রাফসান পেল।তখন ইহান বলতে শুরু করে,
“আমি গ্রামের বাড়ি যাওয়ার দিন সকালে রিনির সাথে দেখা করি।আরোহি ও ছিল সাথে। মেয়েটা তোমাকে সত্যি ভালোবাসে।প্লিজ রাফসান একটা সুযোগ দাও।”
কিছুক্ষণ নিরবতার পর রাফসান জানায় সে রাজি। তবে বিয়ের আগে সে রিনির সাথে কিছু কথা বলবে।
___________________
৩ মাস পর,
অবশেষে আরোহি আর ইহান রাফসানের বিয়টা দিয়েই দিল।আর তার ফলস্বরূপ রাফসানের ঘরে এক হাত ঘোমটা টেনে বসে আছে রিনি।সে আজ খুব খুশি। হোক না বিয়েটা শর্তের তবু ও তো সে তার ভালোবাসার মানুষটাকেই পেয়েছে। রাফসান ঘরে ঢোকার সাথে সাথে বুক কেঁপে উঠল রিনির।সে জানে এমনটা হওয়ার কারন নেই। তবে তা ও সব কিছু কি কারণ দেখিয়ে হয়।রাফসান ধীর পায়ে খাটের দিকে এগিয় আসে।তারপর বলে ওঠে,
“ফ্রেশ হও নি কেন?অস্বস্তি হচ্ছে না।”
রিনি মুচকি হেসে বলে,
“একদমই না।”
তখন রাফসান আবার ও বলে ওঠে,
“রিনি, আমি আমাদের বিয়ের আগে তোমাকে কিছু কথা বলেছিলাম। মনে আছে নিশ্চয়।”
রিনি ঠোঁটের কোনায় হাসি টা বজায় রেখেই বলে ওঠে,
“এ টু জেট মনে আছে।এই যে আপনি এখন ইহানদের সাথে ওদের বাড়িতে থাকেন। আমাকেও এখানে থাকতে হবে।সকলের সাথে মানিয়ে চলতে হবে।আয়ানকে কখনো কষ্ট দিতে পারব না।আর মোস্ট ইমপর্টেন্ট, আপনি নিজে ও জানেন না কোনো দিন আমায় মেনে নিতে পারবেন কিনা।তাতে আমার কোনো সমস্যা নেই। কেন জানেন কারণ আমার নিজের প্রতি বিশ্বাস আছে।আমি হয়তো মায়াকে কখনো ভুলিয়ে দিতে পারব না। তবে, আপনার মনের এক কোনায় ঠিক জায়গা করে নিতে পারব।এটা আমার বিশ্বাস, রাফসান। ”
রিনির কথা শুনে তৃপ্তির হাসি দিল রাফসান।রিনি ফ্রেশ হতে চলে গেলে রাফসান বিরবির করে বলতে লাগল,
“তুমি বড্ড অদ্ভুত রিনি।তবে আমি তোমার বিশ্বাসকে সম্মান করি।আর চেষ্টা করব তোমার বিশ্বাসকে সত্যি করার।শুধু আমায় একটু সময় দাও। আমি আমার মায়াবতিকে সত্যি কোনোদিন ভুলতে পারব না।তবে মনের কোনে মায়াবতির পাশে যেন তোমায় একটু জায়গা দিতে পারি সে চেষ্টা করব।”
___________________
আরোহি ফ্রেশ হয়ে বের হলো একটু আগে।রাফসানের বিয়ের কাজ সে এক হাতে সামলেছে বললে ভুল হবে না।আয়ান কে ও খালামনি নিজের কাছে রেখেছে আজ।তবে ইহানকে ঘরে না দেখে ভ্রু কুচকে ফেলল সে।ইহান বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। আরোহি ও সেখানে গিয়ে দাঁড়ালো।ইহান বুঝতে পারল তবে কোনো প্রতিক্রিয়া করল না ইহান দূর আকাশে দৃষ্টি রেখেই দাঁড়িয়ে থাকল।ঠোঁট টিপে হাসল আরোহি। তারপর ইহানের গা ঘেসে দাড়াতেই ইহান সরে এলো।আরোহি এমন বাচ্চামো তে আবার ও হাসল।তারপর আস্তে করে বলে উঠল,
“কেউ একজন আমায় লাল শাড়িতে দেখতে চেয়েছিল।আমি যে তার কথা রাখতে এত রাতে শাড়ি পরলাম সে তাকাবেনা আমার দিকে। ইহান এবার আড় চোখে তাকালো আরোহির দিকে তারপর মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে বলতে লাগল,
“আমি তাকে বিয়ের অনুষ্ঠানে শাড়ি পরতে বলেছিলাম। এমন অসময়ে নয়।”
আরোহি আবার ও বলে উঠল,
“অনেক কাজ ছিল তো!”
ইহান এক ঝটকায় আরোহিকে নিজের কাছে টেনে নিলো।তারপর বলল,
“এখন আমি আর ও গুরত্বপূর্ণ কাজ করব।”
কেটে গেল কিছু মূহুর্ত। আরোহি নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। আর ইহান ঠোঁটের কোনায় মুচকি হাসি দিয়ে দাড়িয়ে আছে।ইহান আরোহির কানের কাছে নরম সুরে বলে উঠল, আমি তোমাতেই_বিমোহিত।আরোহি কে আরো একবার অবাক করে দিয়ে কোলে তুলে নিল ইহান। আজ আবার ও প্রণয় হবে।দুজন কপোত-কপোতী তাদের নিজেদের উষ্ণতা অনুভব করবে।এভাবেই কাটুক না সারটা জীবন। সকলের জীবনে যে নতুন সূর্য উদয় হয়েছে তা জ্বলজ্বল করতে থাকুক।থাকুক না একে অন্যতে বিমোহিত।
সমাপ্ত।