#তেমাতেই_বিমোহিত
#পর্বঃ১১
#লেখিকা আরোহি জান্নাত (ছদ্মনাম)
সত্যি টা কি বলে দেবে কিন্তু সেটা কি বিশ্বাস করবে আরোহি। বদলাবে কি নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ইহানের প্রতি।তখনই আরোহি দ্বিতিয়বারের মতে ইহানকে ধাক্কা দিল। রাগি চোখে জানতে চাইল সব।
দীর্ঘশ্বাস ফেলল ইহান।আরোহির হাত টা ছাড়িয়ে নিয়ে বলে উঠল,
“অনেক রাত হয়েছে। কালকে অফিস আছে আমার। আমি ঘুমাবো।তুমি ও গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। ”
ইহানের এমন দ্বায় সারা কথা শুনে অনেক বেশি অবাক হয়ে গেল আরোহি।তবে কিছু বলল না।মনে মনে কিছু একটা ভেবে গিয়ে শুয়ে পড়ল আয়ানের পাশে। ইহান ও সোফায় শুয়ে পড়ল। আর মনে মনে ভাবল,
“তোমায় সত্যি টা আমি বলতে চায় আরোহি।কিন্তু তুমি কি সেটা বিশ্বাস করবে।যদি দ্বিতীয় বারের মতো ভুল বোঝ আমি সেটা মানতে পারব না। আমি জানি আমি তোমার কাছে খারাপ। আজ কোনো দোষ না করে ও আমি দোষি।হ্যাঁ সেদিন রাগের মাথায় একটা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।কিন্তু নিজের ভুল বুঝতে পেরে আমি সেটা সুধরানোর চেষ্টা করেছিলাম।আয়ানের জন্য আমাদের ডিভোর্স টা আটকে ছিল। আমরা দুজনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আয়ানের জন্মের পর ডিভোর্স নিয়ে নেব। কারন অন্য কাউকে তোমার জায়গায় বসানো সম্ভব ছিল না আমার পক্ষে।তাই তে ডিভোর্স ফাইল করেছিলাম।কিন্তু ভাগ্য সেটা চাইল না।”
কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেল ইহান। আর এদিকে আরোহি মনে মনে ভেবে নিচ্ছে কালকে কি কি কাজ করবে। কি করে নিজের পরিকল্পনা সফল করবে।
অন্য দিনের মতো আজ ও আরোহি ইহানের সাথে কথা বলল না।আর না ইহান চেষ্টা করল আরোহির সাথে কথা বলার।ব্রেকফাস্ট করে ঘরে এসে ইহান দেখল আরোহি তড়িঘড়ি করে কিছু একটা লুকিয়ে ফেলল।ভ্রু কুচকালো ইহান।তবে কিছু বলল না।রেডি হতে ওয়াশ রুমে ঢুকে পড়ল।ইহানকে ওয়াশরুমে ঢুকতে দেখে বাঁকা হাসল আরোহি।সেই সাথে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।
ইহান বেরিয়ে গেছে একটু আগে।এবার আরোহির পালা।ধীরে ধীরে আরশি বেগমের ঘরে গেল আরোহি। আরশি বেগম আয়ানকে নিয়ে খেলছেন।আরোহি আরশি বেগম কে বলে উঠল,
” খালামনি, একটা কথা বলল?”
“হ্যাঁ বল মা।কিছু দরকার?”
ওপর নিচ মাথা নাড়ালো আরোহি।ইতঃস্তত করে বলে উঠল,
“আমাকে একটু বাইরে যেতে হবে খালামনি।আসলে আমার এক বান্ধুবি এর সাথে একটু দেখা করতে যাবো। মানে যদি তুমি পারমিশন দাও তবে!!”
আরোহির কথা শুনে ভ্রু কুঁচকালো আরশি বেগম। গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
” আমাকে তুই খালমনি ডাকিস আরোহি।বিয়ের পর ও আমি তোকে ডাকতে বারন করিনি।কেন জানিস? যাতে আমাদের মধ্যে বউমা শ্বাশুড়ির সম্পর্ক না হয়। আমও আগে যেমন তোর কাছে ছিলাম সে রকম থাকি কিন্তু আজ তুই আমাকে শ্বাশুড়ির জায়গায় এনে দাড় করালি।তোর বাইরে যাওয়ার দরকার তুই অব্যশই যাবি।এ বাড়িটা তো তোর ও। কিন্তু তুই আমার কাছ থেকে অনুমতি নিতে এসেছিস।”
আরশি বেগম কে আর কিছু বলতে দিল না আরোহি সোজা গিয়ে জড়িয়ে ধরল।আর বলল,
“আম সরি খালা মনি। আমি বুঝতে পারি নি। আর কখনো এমন হবে না। ”
“ক্ষমা করতে পারি একটা শর্তে।আসার সময় আমার জন্য জিলিপি আনতে হবে।”(আরশি বেগম)
আরশি বেগম এর এমন কথায় হেসে ফেলল আরোহি।তারপর গুছিয়ে আয়ানকে আরশি বেগম এর কাছে দিয়ে বেরিয়ে পড়ল নিজের গন্তব্যে।
____________________
একটা রেস্টুরেন্টে রাফসানের সামনে বসে আছে আরোহি।রাফসান নতজানু হয়ে বসে আছে আরোহির সামনে।সে যে এভাবে ফেসে যাবে তা কল্পনার বাইরে ছিল। আরোহি তাকে এভাবে ফাঁদে ফেলল ভাবতেই অবাক হচ্ছে রাফসান।রাফসান এর বিপরীতে আরোহি সন্দেহের চোখে তাকিয়ে আছে। আর মনে করছে আজকের সকালের ঘটান।
সকালে,
সকাল থেকে স্বাভাবিক ছিল আরোহি। কাউকে একটু ও বুঝতে দেয় নি কি চলছে তার মনে। সকালে তাড়াতাড়ি ব্রেকফাস্ট করে আরোহি ঘরে চলে যায়।কারণ আরোহির এই মুহুর্তে তার্গেট ইহানের ফোন।ইহানের ফোনের পাসওয়ার্ড জানত আরোহি শুধু মনে মনে একটাই দোয়া করছিল যাতে সেই পাসওয়ার্ড টা ইহান না বদলায়।আর আরোহির দোয়া কবুল ও হয়ে যায়।আরোহি ইহানের ফোনটা খুলে চেক করতে থাকে। তখনই ম্যাসেন্জারে ঢোকে আরোহি।চ্যাট লিস্টে প্রথম নাম টা দেখে একটু ও অবাক হয় না।আরোহির ধারনা ছিল রাফসান থাকবে আর হলো ও তাই। আরোহি ওদের চ্যাটগুলো পড়তে লাগল।কোনো কিছু স্পষ্ট করে লেখা না।অনেক ঘুরিয়ে পেচিয়ে চ্যাট করেছে এরা দুজন।কিন্তু অদ্ভুত বিষয় সব চ্যাটই প্রায় আয়ানকে নিয়ে।আয়ানের জন্ম থেকে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো ইহান খুব সুন্দর করে লিখে পাঠিয়েছে রাফসান কে।আরোহির সন্দেহ হয়। ভাবতে থাকে,
“রাফসানের সাথে আয়ানের কি সম্পর্ক যে লোকটা আয়ানকে নিয়ে এত মাথা ঘামাচ্ছে। আর ইহান ও সবটা সাপোর্ট করছে।”
আরোহি রাফসানকে একটা ম্যাসেজ করে তখন যে ইহান তার সাথে ১১ টায় দেখা করতে চায়। রাফসান বিনা বাক্যে রাজি হয়ে যায়।ঠিকানা ও দিয়ে দেয় আরোহি।রাফসানের সাথে কথা বলে বাড়ির ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড টা ডিলেট করে নেট কানেকশন বন্ধ করে দেয় আরোহি যাতে রাফসানে ইন্টারনেটের দ্বারা যোগাযোগ করতে না পারে।আবার কল এ গিয়ে নম্বর ও ব্লাক লিস্টে দিয়ে দেয়।সাথে ম্যাসেজ ও।সব দিক থেকেই রাফসানের সাথে ইহানের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় আরোহি।তখনই ইহান ঘরে ঢোকে।তবে তার আগেই আরোহি ফোনটা লুকিয়ে ফেলে আর স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়।
কালকে রাতে ইহানের ব্যাবহারে আরোহি বুঝে যায় ইহান কিছু লুকাচ্ছে।আর তখনই আরোহি গভীর চিন্তায় পড়ে যায়।হঠাৎ মাথায় আসে রাফসানের কথা।আর তখনই পরিকল্পনা করে নেয় রাফসানের সাথে দেখা করবে আর সেই অনুযায়ী কাজ ও করে আরোহি।
বর্তমানে,
“আমাকে এইভাবে মিথ্যা বলে কেন ডেকেছেন মিসেস. আরোহি।?”
কাঠকাঠ গলায় প্রশ্ন করে ওঠে রাফসান।
“কিছু প্রশ্নের উত্তর নিতে। ”
স্বাভাবিক কন্ঠে বলে উঠল আরোহি।
রাফসান সব কিছু জানে।আরোহি যে ইহান আর মায়ার সম্পর্কে কিছু জানে না এটা ও। এমনকি আয়ান রাফসানের ছেলে এটা ও জানে না।সব কিছু শুনে রাফসান ইহানকে বলেছিল আরোহিকে সব জানাতে কিন্তু ইহান বলেছিল এখন আর সেই সময় নেই।
রাফসান চাই আরোহি সব জানুক কিন্তু ইহান সেটার বিরোধী। এই অভিমান জিনিস টা যে বড্ড খারাপ। আরোহি যেমন অভিমান করে ইহান এর থেকে দূরে সরে গিয়েছিল। ইহানকে সত্যি টা বলার সুযোগ দেয় নি।তেমনি ইহান ও অভিমান করে আরোহি কে সত্যি টা জানাতে চায় না। কিন্তু এভাবে কত দিন?অবশেষে রাফসান সিদ্ধান্ত নিলো কিন্তু
চলবে,
#তেমাতেই_বিমোহিত
#পর্বঃ১২
#লেখিকা আরোহি জান্নাত( ছদ্মনাম)
অন্য দিনের মতো আজ ও ইহান রাত ৯ টার দিকে বাড়ি ফিরল। তবে, বাড়ি ঢুকতেই ড্রয়িং রুমে আরশি বেগম কে চিন্তিত হয়ে বসে থাকতে দেখে একটু অবাক হলো।তার থেকে বেশি অবাক হলো আয়ানকে আরশি বেগমের সাথে দেখে। সচারচার এই সময় আয়ান আরোহির কাছে থাকে।
ইহানকে দেখেই আরশি বেগম মুখটা কালো করে ফেলল।ইহান ব্যাপার টা বুঝতে না পেরে সোজা মায়ের কাছে গিয়ে বসল।ইহান বসে তার মাকে জিজ্ঞেস করল,
“কি হয়েছে মা? তুমি এখানে এভাবে বসে আছো কেন। আর মুখ টা ও এত শুকনো কেন?”
ইহানের কথা শুনে আরশি বেগম মুখ কালো রেখেই উত্তর দিলেন,
“আজ সকালে আরোহি ওর এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে গিয়েছিল। দুপুরের দিকে বাড়ি ও চলে এসেছে। কিন্তু বাড়িতে ফিরেই ঘরে গিয়ে বসে ছিল। আমি ভাবলাম বাইরে থেকে এসেছে হয়তো ক্লান্ত। কিন্তু কিছুক্ষন পরে তোর ঘরে গিয়ে দেখি মেয়েটার গায়ে ভিষন জ্বর।আমি ডক্টর কে কল করেছিলাম।ডক্টর এসে চেকাপ করে গেছে। বলল সিজেন চেন্জে এমন হয়েছে। কিন্তু মেয়েটার জ্বর কমার নাম নিচ্ছে না।আমি তোর খালামনি দের ও জানিয়েছি।ওরা এতক্ষণ ছিল।একটু আগে ফিরে গেছে। তোকে ও ফোন দিয়েছিলাম কিন্তু তুই ধরিস নি।”
মায়ের কথা শুনে তারাতাড়ি ফোন চেক করল ইহান।ফোনটা সাইলেন্ট করা। মায়ের সাথে কথা না বাড়িয়ে নিজের ঘরে চলে গেল ইহান।
নিজের ঘরে গিয়ে দেখে আলো জ্বালানো নেই ঘরের।ইহান ও বড় লাইট টা না জ্বালিয়ে টেবিল ল্যাম্প টা জ্বালিয়ে দিল।হালকা আলোয় দেখলো আরোহির মলিন মুখ টা। ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে আরোহির পাশে বসল ইহান।কপালে হাত ছোয়াতে গিয়ে ইতস্তত করল। আরোহি কি রাগ করবে ওকে স্পর্শ করলে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করল ইহান। তারপর সাত পাঁচ না ভেবে আলতো করে ছুয়ে দিল আরোহির উত্তপ্ত কপাল।হাত দিয়েই চমকে উঠল ইহান। এত তাপ।মা তো বলল ডক্টর এসেছিল। ঔষধ ও দিয়েছে তাহলে এখোনো এত জ্বর কেন মেয়েটার। ইহানের ইচ্ছে হলো না আরোহির পাশ থেকে উঠতে।তাই আরোহির পাশেই বসে রইল। এক দৃষ্টিতে দেখতে থাকল নিজের প্রয়সিকে।আরোহি অসুস্থ থাকায় আরশি বেগম আজ আয়ানকে নিজের কাছে রাখলেন। কিছুক্ষণ পর আরশি বেগম ইাহন কে খেতে ডাকতে এলেন কিন্তু ইহান গেল না।খিদে নেই বলে রাতে খেল না।আরশি বেগম ও জোর করলেন না ইহানকে। ইহান আরোহির মাথার পাশে বসে আছে।আরোহি ঘুমিয়ে কাত।জ্বর টা ও আছে এখন ও।ইহান আরোহিকে দেখছে। আর দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে গেল এক সময়।
মাঝ রাতে কারো গোঙানির শব্দে ঘুম ভেঙে গেল ইহানের। ইহানের বুঝতে অসুবিধা হলো না এটা আরোহি।তারাতাড়ি আরোহির কপালে হাত ছোঁয়ালো ইহান।
“এ কি আরোহির তো ভীষণ জ্বর।”(ইহান)
কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না ইহান। তারপর খেয়াল হলো জল পট্টির কথা।ইহান তাড়াতাড়ি একটি বাটিতে পানি এনে আরোহিকে জলপট্টি দিতে শুরু করল।
ধীরে ধীরে জ্বর কমতে শুরু করল আরোহির। একটা সময় তাপমাত্রা নরমাল হলে ইহান আর জলপট্টি দিল না।আবার ও আরোহির মাথার কাছে বসে দেখতে লাগল আরোহিকে।
______________________
সকালে হালকা আলো চোখে পড়তেই ঘুম ভেঙে গেল আরোহির। তবে শরীর টা যেন কেমন লাগছে। কাল যে ভায়ানক জ্বর এসেছিল সেটা বুঝতে পারছে আরোহি। ইহানের কথা মাথাতে আসতে আশপাশে দেখল আরোহি। তখনই দেখল ইহান আরোহির মাথার কাছে আধশোয়া হয়ে বসে আছে।আর আরোহি ইহানের কোমর জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে ছিল।ব্যাপারটা বুঝতে পেরেই ইহানের কোমর ছেড়ে দিল আরোহি। ইহানের গায়ে কালকের অফিসের শার্ট। মানে ইহান চেন্জ করেনি।বেড সাইড এর উপর জলপট্টির বাটি ও আছে।আরোহি মনে মনে ভাবল,
“ইহান কি কাল আমাকে জলপট্টি দিয়েছে? আর এভাবে সারারাত আধশোয়া হয়ে ছিল। আর আমি ও জ্বরের মধ্যে ওকে।”
ভাবতেই রাজ্যের সকল লজ্জা এসে ভীড় করল আরোহির ওপর।তবে নিজেকে বোঝালো যা হয়েছে ওটা ও ইচ্ছে করে করেনি।জ্বরের মধ্যে ভুল করে করে ফেলেছে। কিন্তু তা ও যেন লজ্জা কমছে না আরোহির।
ইহানকে চোখ পিটপিট করতে দেখে তারাতাড়ি চোখ বন্ধ করে নিল আরোহি। কারন দুটো।
এক এই মুহূর্তে আরোহি না চাইতে ও ভীষণ লজ্জা পাচ্ছে আর ইহানের দিকে তাকালে আরো লজ্জা পাবে।আর দুই আরোহি দেখতে চায় ইহান কি করে।
আরোহি কে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে ইহান আলতে করে কপালে হাত দিল আরোহির। জ্বর নেই। হঠ্যাৎই একটা নিষিদ্ধ চাওয়া এসে ভীড় করল ইহানের মনে।খুব করে উষ্ণ পরশ আঁকতে ইচ্ছে করল আরোহির কপালে।মনে মনে ভাবল,
“আচ্ছা আরোহির অনুমতি ছাড়া ও কে এভাবে ছুঁলে কি রাগ করবে।ও কি সত্যি আমাকে এতটা ঘৃণা করে?”
তারপরই খেয়াল হলো আজ ভোরের কথা আরোহি ঘুমের ঘোরে ইহানের কোমর জড়িয়ে ধরেছিল।এজ অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করছিল ইহানের মনে। কাছের মানুষ টা কাছে আসলে হয়তো প্রত্যেক প্রমিক পুরুষ এর এমনই ভালো লাগে। হুট করে নিজের ঠোঁট ছুয়ে দিল আরোহির কপালে।আর এক মুহূর্ত ও দেরি না করে ওয়াশরুমে চলে গেল ইহান। হয়তো ঘুমন্ত আরোহির হাত থেকে বাঁচার জন্য।
আর এদিকে ইহানের স্পর্শে কেঁপে ওঠে আরোহি। ইহান আরোহিকে ঘুমন্ত ভাবলে ও আরোহি তো আর ঘুমন্ত ছিল না।চোখ বন্ধ অবস্থাতে ইহানের স্পর্শ ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছে সে।আরোহি ভাবল যদি একটা দিন আগ অবদি ইহান এমন কিছু করত তাহলে হয়তে ঘৃণায় শরীর শিউরে উঠত আরোহির।বারবার মনে হতো এই ব্যাক্তি এর আগে ও অন্য এক নারীকে স্পর্শ করেছিল।তবে আজ সে ঘৃণাটা নেই কারন কাল যে রাফসান তাকে অনেক বড় সত্যের মুখোমুখি করেছে।গতকালকের কথা ভাবতে থাকল আরোহি।
গতকাল,
“দেখুন মিসেস আরোহি, আমি নিজে ও চাই আপনি ধোয়াসা থেকে বেরিয়ে আসুন। সত্য টা জানুন।ইহান আমাকে আপনাদের সম্পর্কের কথা কিছু বলে নি। তবে ইহান যে যে সত্যি গুলো আপনার কাছ থেকে লুকিয়েছে তাতে আপনাদের সম্পর্ক টা কতটা স্বাভাবিক তা আমি জানি না।হয়তো আপনি সব কিছু মেনে নিয়ে ইহানের সাথে সংসার করছেন কিন্তু আপনি যা যা জানেন তার সবটা কিন্তু ঠিক না।”( রাফসান)
রাফসানের কথায় অবাক হলো না আরোহি। ওর নিজের ও একই কথা মনে হচ্ছে। তবে সত্যি টা কি?
আরোহি রাফসানকে বলল,
“আমি সত্যি টা জানাতে চায় রাফসান ভাইয়া। প্লিজ আমাকে সবটা বলুন”
রাফসান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
“আয়ান আমার সন্তান আরোহি। আর মায়া ও আমার স্ত্রী। শরিয়ত মোতাবেক আর আইনি মোতাবেক দুই ভাবেই। তবে আফসোস সেটার প্রমান আর অবশিষ্ট নেই। ”
রাফসানের কথায় আকাশ থেকে পড়ল আরোহি। তখন রাফসান আরোহি খুলে বলল সবটা।সবটা শুনে বিষ্ময়ে হতবাক আরোহি।এত এত সত্যি আরোহির অজানা ছিল।এতদিন যা জানতো সব ভুল।তখন আরোহি রাফসানকে জিজ্ঞেস করল,
“যদি মায়া আপনার বউ ই হয় তাহলে ওদের বিয়ের পেপার আর ওদের ডিভোর্স। এগুলোর মানে কি?”
তখন রাফসান বলল,
“মায়া আমার স্ত্রী কিন্তু সেটার কোনো প্রমান নেই। মায়ার ভাই সব পেপার নষ্ট করে দিয়েছিল।যাতে মায়া ইহানের বউ এটা সহজেই প্রমান করতে পারে। আর এজন্যই ডিভোর্স এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো মায়া আর ইহান।”
আরোহি সবটা শুনল, বুঝলো এতদিন কতটা অজানায় ছিল সে।তবে ইহানের প্রতি সাথে সাথেই ভালোবাসা জন্মালো না।বরং রাগ হলে এটা ভেবে যে এতগুলো দিন সময় পেয়ে ও ইহান আরোহিকে সত্যি টা জানালো না।আরোহি রাফসানকে বলল যাতে আজকের এই কথা সে ইহান কে না জানায়।আর রাফসান ও রাজি হলো তাতে।আরোহি ভেবেছিল আজ এটার জবাব চাইবে সে ইহানের কাছ থেকে। কিন্তু তার আগেই জ্বর কাবু করে ফেলল আরোহিকে। ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো ইহান। আরোহি তখন অন্য মনস্ক হয়ে কিছু ভাবছে। ইহান আরোহির পাশে এসে দাঁড়ালো। জিজ্ঞেস করে উঠল,
” এখন শরীর কেমন লাগছে তেমার? ”
“আগের থেকে অনেক টা বেটার” সরাসরি উত্তর দিল আরোহি।
আরোহির উত্তরে অবাক হলো ইহান।আরোহি তো এত সহজে কথা বলে না তাহলে?আজ একবারেই জবাব দিয়ে দিল।আর এদিকে
চলবে,