#তুমি_হলেই_চলবে
#part_3…
writer : #Mahira_Megha
সূর্যের কিরন মুখে পড়তেই ঘুম থেকেই নাক মুখ কুচকে ফেলে আরুহী। হাত পা ছড়িয়ে আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে বসে বিছানার ওপর। চোখ বন্ধ রেখে মুখের কোনে মিষ্টি হাসি ফুটিয়ে তোলে। চোখ গুলো বড় বড় করে খুলে একলাফে নামে বিছানা থেকে। ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে লাফাতে লাফাতে ড্রইংরুমের দিকে পা বাড়াচ্ছে আরুহী মুখে লেগে আছে মিষ্টি হাসি।
হঠাৎ করেই আরিয়ানে সাথে ধাক্কা খেয়ে একটু পেছনে সরে গেলো আরুহী।
মাথা তুলে সামনে তাকাতেই দেখতে পেলো আরিয়ানের গম্ভীর মুখ। আরুহী চোখ দুটো গোলগোল বানিয়ে পলকহীন ভাবে চেয়ে আছে আরিয়ানের দিকে। সাদা শার্ট পরে আছে হাতে কালো কোট।
আরিয়ানের কাছে সবচেয়ে বিরক্তি কর বিষয় আরুহী।আরুহীর এই বেহায়ার মতো তাকানো। সকাল সকাল আরুহীর সাথে কথা বলে মুড স্পয়েল করার কোনো ইচ্ছাই নেয় আরিয়ানের।
আর এক মূহুর্ত না দাড়িয়ে ড্রইংরুমের দিকে পা বাড়ালো।
আরুহী এখনো ঘোরের মধ্যেই আছে। এ যেনো এক অন্য রকম অনুভূতি যা এই নির্লজ্জ মেয়েটাকে আরো নির্লজ্জ করে দিয়েছে।
আরিয়ান তো সেই কখন চলে গেছে বাট আরুহী এখনো দাড়িয়ে আছে সেম পজিশনে।
আর্শ আরুহীকে এভাবে দেখে ওর সামনে চুটকি বাজিয়ে ” কি রে কি করছিস এখানে একা একা। ”
-দাড়িয়ে আছি দেখতে পারছিস না।
-হুমমম তা তো দেখতেই পাচ্ছি। তা কি ভাবছিলি দাড়িয়ে। ওয়েট ওয়েট তোর ব্যাপার কি বলতো, কয়দিন ধরে দেখছি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়িস।
-তুই বুঝবি না। ইটস লাভ।
-লাভ হাহাহাহা তুই তো দেখি লায়লি কেও হার মানাবি। হাসি আটকিয়ে ” শোন রুহি আবেগ কে বেশি বাড়তে দিস না পরে নিজের ওপর ই রাগ হবে।” মাথা থেকে সব ঝেড়ে ফেল কোনো ভালোবাসা নেই সব তোর আবেগ, বুঝলি।
আরুহী মনে মনে বললো “আবেগ, আবেগ কি করে হয় এটা তো ভালোবাসা। লাভ যদি না ই হতো তাহলে কি আমি এত সকালে ঘুম থেকে উঠতাম? আমি সকালে ভাইয়াকে একবার দেখার জন্য উঠি। ভাইয়া যে সকালে অফিসে চলে যায়। ”
আর্শ ওর সামনে চুটকি বাজিয়ে ” কিরে আবার কই হারিয়ে গেলি। ”
আরুহী আর্শের দিকে তাকিয়ে কোনো কথা না বলে এক দৌড়ে ড্রইংরুমে চলে এলো, সোফায় বসে টিভি অন করলো।বাট চোখ শুধু আরিয়ানের দিকে টিভিতো শুধু সবার মাইন্ড ডাইভার্ট করার জন্য।
কেউ লক্ষ্য না করলেও আরিয়ান ঠিকি বুঝতে পারছে।
আরিয়ান খাওয়া বন্ধ করে একবার আরুহীর দিকে তাকালো তারপর মনে মনে বলতে লাগলো “খেতে বসে ও শান্তি নেই। এই বেহায়া মেয়েটার হাত থেকে যে কিভাবে মুক্তি পাবো কে জানে? একটা মেয়ে এতটা নির্লজ্জ কি করে হতে পারে। ”
আর্শ আরুহী রিক্সা করে কলেজ যাচ্ছে। আর্শের বাইকটা হঠাৎ খারাপ হওয়ায় গ্যারাজে রেখে এসেছে।
কলেজে প্রথম দিন আজ ওদের।
সবাই শাড়ি পরে এসেছে বাট আরুহী আর্শের সাথে ম্যাচিং করে শার্ট পরে এসেছে।
তানিয়া মুনিয়া দুই বোন আর্শকে সেই স্কুল লাইফ থেকে লাইক করে। আর করবেই না বা কেনো স্কুলের সবচেয়ে সুন্দর ছেলে হওয়ার পাশাপাশি ফাস্ট বয় ও ছিলো আর্শ। টিচার রাও আর্শকে অনেক স্নেহ করে। আর মেয়েদের কথা তো বাদ ই দিলাম।
আর্শের দিকে এগিয়ে এসে তানিয়া বললো ” আর্শ তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে “।
-থ্যাংকস।
মুনিয়াঃ চলো আর্শ একসাথে অনুষ্ঠান দেখি।
-ওই তোদের সাথে কেনো অনুষ্ঠান দেখবো আমরা। একা দেখতে কি তোদের কষ্ট হয় নাকি রে।
-দেখ আরুহী আমরা কিন্তু ভালোভাবে কথা বলছি। তুই এমন রুডলি বিহেভ কেনো করছিস।
-এখন তো শুধু রুডলি বিহেভ করছি। একটু পর যখন তোর নাকে ঘুসি মেরে নাক ফাটিয়ে দিবো তখন কি করবি?বল বল।
তোদের মতলব বুঝিনা আমি? আর্শের সাথে বন্ধুত্ব করতে চাস তাই না।
-তুই কি নাক ফাটাবি দাড়া আমরা দুজন তোর নাক ফাটাবো।
-তাই নাকি রে আয় তবে, দেখি কেমন পারিস।
আর্শ বুঝতে পেরেছে এদের এখনি আটকাতে না পারলে প্রথম দিন ই কলেজ থেকে বের করে দিবে। আরুহীর কোমর ধরে টেনে নিয়ে আসে আর্শ আরুহী এগোতে চেয়েও পারে না।
আরুহীঃ ওই আর্শ আমায় এভাবে নিয়ে আসলি কেনো। আমার শত্রু কিনা তোর বন্ধু হতে চায়। এমন মার মারবো।
– বাদ দে তো ওদের কথা।
– না আমি পারছি না।
আর্শ একটু ভেবে ” তোর সেই ক্রাশ বয়ের নাম টায় তো বললি না। ”
-ধুর শুনে কি করবি মাল টাকে আমিই শুধু ভালোবাসি। ও তো আমাকে পাত্তাই দেয় না। আমি যেন ওর জন্মের শত্রু। আমার ফিলিংসের কি কোনো দাম নেয়।
আর্শঃ আমার চোখের দিকে তাকা।
– কি বল।
-ওকে দেখলে তোর কি মনে হয় রুহি।
আরুহী চোখ বন্ধ করে বলে ” কি মনে হয় তা জানি না। বাট অদ্ভুদ একটা অনুভূতি হয়। যা আগে কখনো হয়নি। ওর মুখে না অন্যরকম মায়া আছে। মনে হয় ওর দিকে তাকিয়েই থাকি।
আর্শ একটা ঘোরের মধ্যে চলে যায় নিজের মনেই বলতে থাকে ” সত্যি কি রুহি প্রেমে পরেছে? সত্যি কি ও কাউকে মন থেকে ফিল করতে শুরু করেছে? সত্যি কি ও কারো মায়ায় পরে গেছে? যদি তাই হয় তাহলে আমার কি হবে!আমি যে রুহিকে পাগলের মতো ভালোবাসি।
আরুহী চোখ খুলে “আর্শ ডান্স হচ্ছে তো চল তারাতারি ” বলেই আর্শের হাত ধরে ছুটছে। আর্শ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে হাতের দিকে। মনে মধ্যে তোলপাড় হচ্ছে।
” তবে কি রুহি সত্যি আমায় একা ফেলে চলে যাবে?”
আরুহীঃ কিরে আর্শ কি ভাবছিস? কেমন যেনো দেখাচ্ছে তোকে।
-না কিছু না। তুই অর্ডার দে না কি খাবি বল।
আরুহী খাচ্ছে তখনি সামনে আরিয়ানকে দেখতে পায়।
হা করে তাকিয়ে আছে আরিয়ানের দিকে।
মুনিয়াঃ কিরে আরুহী কাকে দেখছিস? এই হ্যান্ডসাম ছেলেটাকে?
তানিয়াঃ দেখে আর কি লাভ ওই ছেলেতো ওকে পাত্তাই দেবে না।
মুনিয়াঃ আরে পাত্তা কি বলছিস ও তো কনফিউজ হয়ে যাবে এটা ছেলে নাকি মেয়ে এটা ভেবেই।
বলেই দুজন হাইফাই দিলো।
আর্শ কিছু বলতে গেলে ওকে থামিয়ে দিয়ে আরুহী হাসতে লাগলো।
মুখে দুষ্টু হাসি এনে ” তোরা তো মেয়ে আর খুব সুন্দর ও। তাই না?
একটু স্টাইল নিয়ে ” লাইফে প্রথম তুই ঠিক বললি আরুহী। ”
-তাহলে তোরা যা, কথা বলে দেখা ওই ছেলের সাথে।
-চ্যালেঞ্জ করছিস?
-হ্যা করছি।
তানিয়া মুনিয়া ওভার কনফিডেন্স নিয়ে আরিয়ানে সামনে দাড়ালো।
আরুহীঃ যদি ভাইয়া ওদের সাথে ভালো ভাবে কথা বলে তাহলে বুঝবো আমায় ভাইয়া সহ্য করতে পারে না। আর যদি রুডলি বিহেভ করে তাহলে বুঝবো ভাইয়ার মেয়েতে এ্যালার্জি আছে।
মুনিয়াঃ হাই,,,,,
চলবে…………..