তুমি রবে ১৩

0
2004
তুমি রবে ১৩ . . কিছু মানুষ কারো জীবনে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে সেই মানুষটার অন্তরে তার মায়া দিয়ে এত গভীরভাবে দাগ কেটে ফেলে সে, যে সেই মানুষটার পছন্দ, অভ্যাস, রুচি এমনকি আচরণেরও পরিবর্তন ঘটে যায় তার ফলে। যেন চুম্বকের ন্যায় ওই বিনা নোটিশে প্রবেশকারী ব্যক্তিটির পানে তাকে টানে। সমস্ত ব্যক্তিত্ব নিজের অজান্তেই সে খুইয়ে ফেলে তার কাছে। আর তারপর সেই মানুষটি কী হয়? আর ওই মানুষটাই বা তাকে কীভাবে নেয়? অতল ভাবনা আর চিন্তার মাঝে ডুবে রয়েছে আশফি। এই চিন্তা, এই ভাবনার মাঝ থেকে যে বেরিয়ে আসা দায় হয়ে পড়ল তার কাছে! স্বচ্ছ কাচের আয়নাটাতে নিজের প্রতিবিম্বকে আজ আশফি চেনার চেষ্টা করছে। এই কি সেই মানুষ? যে মানুষটা কিছুদিন আগেও মনের খোড়াকে বিশ্বাসী ছিল না? সে একটা মানুষের রাজ্যে আছে আর সেই রাজ্যটিতে তাদের মতো তাকেও শুধু খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে হবে, যতদিন না ওই সৃষ্টিকর্তা তার হায়াত নিঃশেষ করে। এখানে মনের তৃপ্তি, মনের বাসনা পূর্ণ, মনের দূর্বলতা বলতে আছে শুধু অর্থ। হ্যাঁ অর্থ! যে অর্থের জন্য মানুষ ভাই ভাইকে হত্যা করে, বাবা আর ছেলের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটে অর্থের হিসাবে যদি সমান হিসাব না পায়, স্ত্রী স্বামীকে ছেড়ে অন্য কারো কাছে চলে যায়। এখানে কোথাও কোনো মায়া নেই। তাইতো সে মায়া, দূর্বলতা এসব কোনো কিছুতেই বিশ্বাসী না। যা আছে সব মায়া আর দূর্বলতা নামে অর্থ। কিন্তু সে এখন খুব গভীরভাবে উপলব্ধি করছে, ওই সোফায় শুয়ে থাকা মেয়েটা তাকে ধীরে ধীরে তার দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে অনেকটা চুম্বকের মতো। যে কাছে আসলে সে নিজেকে সমর্পণও করে ফেলে নিমিষে। যাকে সামনে দেখলে সে পিছিয়ে পড়ে নিজের ব্যক্তিত্ব থেকে। দূর্বল হয়ে পড়ে সে। যেখানে সবসময় সে নিজের সঙ্গে লড়ে মনটাকে লোহার মতো শক্ত করে তুলেছে আজ সেই মনটা বেহায়ার মতো বারবারই ওই মেয়েটার মুখটা দেখার জন্য ছটফট করে। আর ভাবা সম্ভব নয়। আর একটা মুহূর্তও সে থাকতে পারবে না মেয়েটার সামনে। ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো সে। এসে দেখল মাহি জেগে গেছে। অনেকটা হন্তদন্ত হয়ে সে নিজের ওড়নাটা খুঁজছে চারপাশ। আশফি দেখতে পাচ্ছে তার ওড়নাটা আশফির স্যুটের নিচে চাপা পড়ে আছে। নিঃশব্দে সে সোফা থেকে স্যুটটা তুলে নিলো। কিন্তু একটা মুহূর্তের জন্যও মাহির পানে তাকাল না। সে জানে মেয়েটা খুবই লাজুক। স্যুটটা হাতে নিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথে গম্ভীরতার মাঝে মাহিকে সে বলল, – “আজ লেট করে আসলে সমস্যা নেই।” এ কথা বলেই আশফি বেরিয়ে গেল। সিকিউরিটিকে ডেকে সে বলে গেল মাহিকে যেন ট্যাক্সি তুলে দেয় সে। কারণ রৌদ্রে মাখা সকালটা হতে এখনো দেরি। বৃষ্টি থেমেছে ভোর চারটাতে। আর এখন বাজে সাড়ে পাঁচটা। ওড়ানাটা হাতে নিয়ে মাহি মাথায় হাত রেখে বসে রইল। সে জীবনে যা ভাবেনি আজ সে তাই করেছে। একটা মেয়ে হয়ে সে নির্লজ্জতার সর্বশেষ ধাপে চলে গিয়েছে। এর চেয়ে অধিক লজ্জার আর কী হতে পারে? মাথাটা ওড়ানাতে ঢেকে সে বেরিয়ে এলো অফিস থেকে। আনিস তার বের হওয়ার পূর্বেই ট্যাক্সি দাঁড় করিয়ে রেখেছিল। মাহি আসতেই তাকে ট্যাক্সিতে তুলে দিলো। পথ ঘাট বৃষ্টিতে ডুবে থাকলেও খুব দ্রুতই সে বাসায় পৌঁছাল। বাসার দরজায় কড়া নাড়তে মিমি ছুটে এলো দরজা খুলতে। মাহি বিনাবাক্যে ঢুকে সোজা তার রুমে চলে গেল। কাল সারারাত মিমি মাহিকে ফোন করেছে। মাহি ফোন তো রিসিভ করেইনি। এদিকে দাদু আলহাজ, আরও বাসার সদস্য কাল বারবার ফোন করে খবর নিয়েছে মিমি আর মাহির। মাহি ফোন রিসিভ করছে না কেন জানতে চাইলে তাকে মিথ্যা বলতে হয়েছে মাহি অফিস থেকে এসেই সেই যে ঘুমিয়েছে এখন অবধি উঠেনি। মিমি দ্রুত পায়ে হেঁটে মাহির রুমে গেল। দেখল মাহি বিছানার এক কোণে চুপচাপ বসে আছে। ভয়ে মিমির আত্মাটা কেঁপে উঠল। – “এই আপু তোর কী হয়েছে? তুই ঠিক আছিস তো আপু?” মিমির উতলাপূর্ণ কণ্ঠে মাহি ভাবনা থেকে বেরিয়ে এলো। মিমির দিকে তাকিয়ে দেখল সারারাত তার বোনটা তার দুশ্চিন্তায় ঘুমায়নি বলে মুখটা কেমন মলিন লাগছে। মাহি মিমির গালে হাত রেখে বলল, – “এত ভয় পাস কেন? আমি ঠিক আছি।” – “না আপু, তোর মুখ দেখে মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েছে তোর। কী হয়েছে আমাকে বল। তোর বস মানুষটা নিশ্চয় ভালো তাই না আপু?” মাহি বিষণ্ন চোখে তাকাল মিমির দিকে। তারপর বলল, – “হ্যাঁ সত্যিই ভালো রে। সে সত্যিই একজন প্রকৃত পুরুষ।” মিমি যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। বোনকে বলল, – “চা খাবি?” – “যা নিয়ে আয়।”
মিমি চট করে দু কাপ চা বানিয়ে মাহির ঘরে এলো। এসে দেখল তার বোনটা এখনো সেই আগের মতোই মুখটা অন্ধকার করে বসে আছে। মিমি এবার নিশ্চিত হলো তার বোন তার থেকে কিছু লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। চা টা মাহির হাতে তুলে দিলো। এবার সে বোনের মুখোমুখি বসে তাকে বলল, – “আমি আমার এমন কোনো লজ্জা, গোপনীয় কথা নেই যা তোর সঙ্গে শেয়ার করিনি। সব কিছুই তোকে বলি। তুই কি পারবি না আমাকে বলতে তোর কী হয়েছে?” মাহি কিছুক্ষণের জন্য নিশ্চুপ থাকল। তারপর চোখদুটো বন্ধ করে ফেলল সে। চারপাশে শীতল পরিবেশ আর তার বুকের মাঝে উষ্ণতা। নিদ্রাচ্ছন্ন চোখে সে তাকিয়ে দেখল আশফিকে। কেমন মায়াবিষ্ট চোখে মানুষটা তাকিয়ে আছে ওর দিকে। আর মাহি তার বুকের ওপর। কী সুন্দর আর কত নিষ্পাপ মানুষটার চাহনি! খুব ইচ্ছা করল ওর, তার চোখের পাপড়িগুলো ছুঁতে। তার চোখের পাপড়িগুলো আলতো স্পর্শ করে সে। বাহিরে বিদ্যুৎ চমকে ওঠার বিকট আওয়াজে মাহির বুকের ভেতরটাও চমকে উঠল। প্রচন্ড শক্ত করে সে জড়িয়ে ধরল তাকে। কিন্তু সেই মানুষটা তাকে যেন আর আঁকড়ে ধরতে চাইছে না। মাহি তার আধখোলা বুকটাতে মাথা পেতে রইল। নিঃশ্বাস ভরে সে জায়গাটুকুর ঘ্রাণ নিতে থাকল। যে ঘ্রাণে নিজেকে মাতোয়ারা করে তুলল মাহি। হৃদয়ের ভেতরের অদম্য ইচ্ছা তাকে একদম বেহায়া নারী করে তুলল তখন। গভীর আবেশে তার ওষ্ঠদুটো ছুঁয়ে দিলো মানুষটার বুকের মাঝটা। আশফির ভেতরে তখন কী অনুভূতি হচ্ছিল তা সে জানে না। তবে তার অনুভূতি ছিল পুরো ওই মানুষটাকে ঘিরেই। তার মন আজ প্রচন্ড উতলা হয়ে উঠেছে তাকে আরও কাছে পাওয়ার জন্য। তার কী হয়ে গিয়েছিল সে জানে না। ওষ্ঠ দুটো বারবার ছুঁতে থাকল আশফির বুক, গলার চারপাশ, তার চিবুক। আশফির ওষ্ঠদুটোও তাকে খুব টানল। কিন্তু যখনই সে তার এই চরম ইচ্ছাটাকে প্রাধান্য দিতে চাইল তখন সেই মানুষটাই তাকে বাধ সাধল। কিন্তু মুখে কিছু বলে নয়, তার চাহনিতে সে মাহিকে বলেছিল, – “মাহি তুমি ভুল করছো। এতটা ভুল তুমি করো না।” কিন্তু মাহির জিদ্দি মন, তার যখন কোনো জিনিসের প্রতি চাহিদা হয় তখন সেই জিনিসটা সে হাসিল না করা অবধি থেমে থাকতে পারে না। আর এখানে যে মনের চাহিদা, এই চাহিদা সে কী করে অপূর্ণ রাখবে? ছোট বাচ্চাদের মতো জিদ ধরে সে খুব কাছে টানতে চাইল আশফিকে। তবে আশফি, আজ সে সত্যিই একজন আদর্শ পুরুষের পরিচয় দিয়েছে। এর সুযোগ সে চাইলে গ্রহণ করতে পারত। কিন্তু তখন সে মাহিকে থামিয়ে তার আদুরে কণ্ঠে মাহিকে বুঝিয়ে বলেছিল, – “আমি তোমার কেউ নই মাহি। আমরা কেউই কারো নই। কোনো অধিকার নেই আমাদের একে অপরের প্রতি। বুঝতে চেষ্টা করো। তুমি তো খুব বুদ্ধিমতী না? তুমি এই ভুলটা কখনোই করবে না।” ব্যাস, এই কয়টা বাক্যই মাহিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যথেষ্ট ছিল। আশফির চোখদুটোর দিকে নিজের ভেজা চোখদুটো ফেলে তাকিয়ে রইল বহুক্ষণ। আর তারপর সে কী করেছিল, নাকি ঘুমিয়ে গিয়েছিল তা তার মনে নেই। ঘুমটা যখন ভাঙে তখন সে সোফাতে নিজেকে একলাই আবিষ্কার করেছিল। আশফি যখন বেরিয়ে আসে ওয়াশরুম থেকে, তখন তার ওই মানুষটার মুখ দেখে মনে হলো অনেকটা এলোমেলো লাগছে তাকে। মাহিকে চুপ থাকতে দেখে মিমি তার হাতটা ধরে বলল, – “চুপ থাকলি কেন আপু বল?” মিমির ডাকে মাহি তার কিছুক্ষণ পূর্বের ভাবনা থেকে বেরিয়ে এলো। চোখদুটো তার আবার ভিজে উঠেছে। আচমকা মিমিকে জড়িয়ে ধরল সে। কান্নারত কণ্ঠে তাকে বলল, – “তোর আপুটার মন পঁচে গিয়েছে রে। সে আর আগের মাহি নেই। এক বিরাট বড় পাপি সে।” মিমি মাহিকে ছাড়িয়ে তার হাতটা ধরে বলল, – “আমার সোনা আপু, আমাকে বল না কী হয়েছে? তুই দেখিস আমি তোর সমস্যার সমাধান দেবোই।” মাহি কিছুটা ধাতস্থ হয়ে মিমিকে রাতের ঘটনাটা বর্ণনা করল। যা শুনে মিমি নিজেও স্তব্ধ। তার এই বোকা, সহজ-সরল বোনটা যে এমন কিছু করতে পারে তা যে তারও ভাবনার বাহিরে ছিল। বিশ্বাস হবে কী করে? যে আজ পর্যন্ত কোনো ছেলের চোখের দিকেই তাকাতে পারে না, সে কী করে কোনো ছেলের সঙ্গে এমনটা করতে পারে? তবে এই নিস্তব্ধতার মাঝে মিমির ভাবনাতে অন্য কিছু চলতে থাকল। মাহি এবার আশফির প্রতি তার অনুভূতির ব্যাখ্যা দিতে শুরু করল। – “আমি জানি না, ওই মানুষটা আমার খুব কাছে থাকলে কী যেন একটা হয়ে যায়। আমি তার চাউনি থেকে নিজের চাউনি কোনোভাবেই যেন সরিয়ে নিতে পারি না। কেমন যেন প্রচন্ড আকর্ষণ করে তার চাহনি। কেমন যেন ঘোর লাগা চোখে সে তাকিয়ে দেখে আমাকে। তখন জানিস নিজেকে কী মনে হয়? যেন ওই চোখদুটো সবসময় আমাকেই দেখতে চায়। আমাকে গ্রাস করে নিতে চায় তার ওই চোখের চাহনি।” এবার মিমির ভাবনাগুলো পুরোপুরি পরিষ্কার হলো। ঠোঁটের কোণে সে মৃদু হাসি ফুটিয়ে মাহিকে বলল, – “আর কিছু বলতে হবে না আমার বোন। দয়া করে এবার কান্নাটা থামা। যেভাবে বাচ্চাদের মতো ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদিস তুই, তা যদি ওই মানুষটা দেখে তো এবার সে শুধু চেয়েই দেখবে না। একদম বুকে জড়িয়ে নেবে।” – “কী সব বলছিস? কতটা নির্লজ্জতার পরিচয় দিয়েছি আমি! আর এরপর আমি তাকে কীভাবে ফেস করব তা না ভেবে তুই এসব উল্টোপাল্টা কথা কী করে বলছিস?” – “উল্টোপাল্টা কথা এগুলো? তুই তাকে ভালোবেসে নিয়েছিস রে গাঁধি। আর ওই মানুষটাও তোকে ভালোবেসে ফেলেছে। নইলে সে রাতে তোর ঘুমের ঘোরের কার্যকলাপের মাধ্যমে সে কিন্তু সুযোগটা নিতে পারত। কিন্তু তা নেয়নি। বদলে কী? আদরের সুরে তোকে বুঝিয়ে আবার বুকের মাঝে নিয়েই ঘুম পারিয়ে দিয়েছিল। আর তোর ঘুম ভাঙার আগেই সে সোফা ছেড়ে উঠে গিয়েছিল। কেন বল তো? কারণ সে জানে তুই সকাল হলে নিজেকে ওভাবে দেখলে তোর থেকে বেশি লজ্জা আর কেউ পাবে না। সিরিয়াসলি আপু! মানে এতটা অনেস্ট আর পজিটিভ মাইন্ডেড ছেলে এখনো আছে দুনিয়াতে? আমি তো মানুষটাকে দেখার জন্য রীতিমতো ছটফট করছি এখন। ইশ! এই মানুষটা আমার দুলাভাই হলে কী পরিমাণ আনন্দ হবে যে আমার!” মাহি ধমকে বলল, – “তুই থামবি? উল্টোপাল্টা কথা বলার আগে কিছু ভাবিস না কী বলছিস। আজ বাদে কাল তার আর ঐন্দ্রীর এক সাথে পথ চলা শুরু হবে। আর আমার ভবীষ্যতও যে কার সঙ্গে তাও আমি জানি। এত কিছু জেনেও আমি এমন ভুল করতে পারি না মিমি।” – “অলমোস্ট ভুলটা করে ফেলেছিস আপু। আর তুই এটাকে ভুল বলছিস কেন? ভালোবাসা কি কখনো বলে কয়ে হয়? আসলে ভালোবাসা হলে মানুষগুলোর উপলব্ধি দিন দিন বৃদ্ধি পায় কিন্তু তোর কমছে কী করে আমি তো সেটাই বুঝছি না। না, আবার বুঝতেও পারছি। তুই নিজের অনুভূতি, উপলব্ধি এসব ইচ্ছা করেই বুঝতে চাইছিস না। কারণটা আর বললাম না। ওর নামটাও কেন জানি আমার উচ্চারণ করতে ইচ্ছা করে না।” পাকা এক ঘন্টা লাগল আশফির গোসল নিতে। একটা টাওয়াল কাঁধে নিয়ে আর একটা পরে সে বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলো। এসে দেখল দিশান তার বেডে বসে ফোন চাপছে। ভাই বের হতেই দিশান মাথা তুলে তাকাল তার দিকে। স্বাভাবিকভাবে তাকিয়ে নজর ফিরিয়ে নেওয়ার সময় আবার তাকাল সে। আশফি চুল মোছার মাঝে ভাইয়ের বিস্ময় নজর দেখে দাঁড়িয়ে গেল। দিশান চোখদুটো চমচমের সাইজ করে তাকিয়ে ভাইয়ের কাছে এগিয়ে এলো। তার নজর আটকে গেছে ভাইয়ের হালকা গোলাপি বর্ণের অধর পানে। আশফির প্রচন্ড অপ্রস্তুতবোধ হতে থাকল তার ভাইয়ের নজরের জন্য। মিনিটখানেক সময় ধরে দিশান আশফির নিচের ঠোঁটটাই দেখতে থাকল শুধু। আশফি এবার ধমকে উঠল, – “কী দেখছিস তখন থেকে?” দিশান বিস্ময়পূর্ণ কণ্ঠে বলল, – “ইউ কিসড!” আশফি চমকে উঠে দ্রুত আয়নার সামনে এসে দাঁড়াল। ঠোঁটটার দিকে তাকিয়ে দেখল, ঠোঁটের ওপরের ডান পাশটা লাল হয়ে আছে অতিরীক্ত। অনেকটা রক্ত জমে থাকার মতো। যেটা দেখলেই কেউ নিমিষে আন্দাজ করে ফেলবে এটা তার চুমু সংক্রান্ত ব্যাপার। দিশান ছুটে এলো ভাইয়ের দিকে। আশফি তখন ঠোঁটটা ঢেকে ঘুরে দাঁড়াল। দিশান আবার তার সামনে দাঁড়ালে আশফি তখন আবার অন্য দিকে ঘুরে দাঁড়ায়। এভাবেই আরও একবার চলল। আশফি এবার ঠোঁটটা ঢেকেই চেঁচিয়ে দিশানকে বলল, – “ডোন্ট এম্বারাস মি গাই!” – “এটা অবিশ্বাস্য ভাই। আমাকে বলো তুমি সত্যি করে। তোমার লাইফের সব কিছুই আমার জানা। তবে এটা কেন আর কী করে আমার থেকে হাইড করলে?” – “আমি কিছুই হাইড করিনি।” দিশান আশফির ঠোঁটের ওপর থেকে ওর হাতটা টেনে নামিয়ে দিলো। আশফি বিমুঢ় দৃষ্টিতে তাকাল ভাইয়ের দিকে। – “এবার বলো ভাই। না হলে খারাপ হবে খুব। আজ অবধি কোনো মেয়েকে তুমি ডিপলি টাচ্ করোনি। যারা তোমায় কিস করেছে তারা সর্বোচ্চ তোমার গাল অবধি আসতে পেরেছে। আর এখানে তুমি…! কে সে? জলদি বলো ভাইয়া।” দিশান কিছুটা চিন্তা মুখ করে বলল, – “ঐন্দ্রী তো নয়। কারণ সে কিছুক্ষণ আগেও আমাকে ফোন করে বলেছে তুমি তার ফোন রিসিভ করছো না কাল থেকে। আর সেটা বলার জন্যই এসেছি রুমে। তাহলে কে সে? হু ইজ শী ব্রো?” – “শাট আপ! বড় ভাইকে এসব ধরনের প্রশ্ন করতে লজ্জা করছে না তোমার? কেউ না, কেউই নেই আমার লাইফে। আর একটাও প্রশ্ন করবে না। নাস্তা রেডি করো যাও। আজকে থেকে অফিস জয়েন করবে তুমি।” দিশান রুম থেকে বের হওয়ার মুহূর্তে বলল, – “আমি তো জেনে ছাড়বই ভাই আমার।” আশফি দিশানের দিকে কাঁধের তোয়ালেটা ছুড়ে মারল তখন। দিশান সেটা ধরে ফেলে হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেল। সে যেতেই আশফি ঠাস করে বিছানার ওপর বসে পড়ল। মাথাটা উঁচিয়ে চোখদুটো বন্ধ করে ফেলল সে। বন্ধ চোখদুটোর মাঝে ভেসে উঠল রাতটার মুহূর্ত। মাহিকে যখন সে বুকের মধ্যে টেনে নিলো তখন মাহি তাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরল শরীরে উষ্ণতা পাওয়ার জন্য। ধীরে ধীরে তার বাঁধনে আশফিকে সে গ্রাস করে নিচ্ছিল যেন। মাহির এলোমেলো চুলগুলো আশফির মুখের ওপর ছড়িয়ে পড়তে চোখদুটো মেলে সে আবার তাকাল মাহির দিকে। চুলগুলো মুখের ওপর থেকে সরিয়ে মাহির চুলের মাঝে নাক ডুবিয়ে সেও মাহিকে তার শক্ত বাহুর বাঁধনে আষ্টেপৃষ্ঠে ধরল। মাহি ঘুম লাগা ছোট ছোট চোখে তখন মাথা উঁচু করে দৃষ্টি মেলল আশফির চোখে। আর সেই দৃষ্টির মাঝে আশফি নিমিষেই যেন দূর্বল বনে গেল। অনেকটা বেসামাল পরিস্থিতি তখন তার। আকস্মিক এক তপ্ত চুমুর মাঝে তার ওষ্ঠদ্বয় আবৃত করল মাহির ওষ্ঠদুটো। মোহবিষ্ট হয়ে দুজনে কতক্ষণ যাবৎ এই উষ্ণ ছোঁয়ার মাঝে দুজনকে ধরে রেখেছিল তা অজানা। মাহিও যেন তখন তার কাছে নিজেকে সঁপে দিতে প্রস্তুত ছিল। নিদারুণ অনুভূতিতে দুজনের হৃদপিন্ডের গতিবেগ উচ্চ হয়ে উঠছিল ধীরে ধীরে। আশফি খুব গভীরভাবেই দুজনের সেই হৃদয়ের গতিবেগের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিল। এক সময় মাহির গা থেকে তার ওড়নাটা আশফি সরিয়ে ফেলে। এক পাশ হয়ে মাহিকে জাপটে ধরে শুয়ে তার সারা গলা জুড়ে আশফির এলোমেলো চুমুগুলো মাহিকে পাগল করে দিতে থাকে। কিন্তু ভাগ্যিস, সেই মুহূর্ত তারা বেশি সময়ের জন্য এগোতে পারেনি। মাহির ফোনটা টি-টেবিলের ওপর ভাইব্রেট হচ্ছিল। ফোনের আলোটা জ্বেলে উঠতে সেদিকে নজর যায় আশফির। কিছুক্ষণ সেই ফোনটার দিকে তাকিয়ে থেকে তারপর সে ঘুমের রেশ থেকে হুঁশে আসে। মাহি তখনো তার বুকের জায়গা জুড়ে। কয়েক মুহূর্তের জন্য সে স্তব্ধ হয়ে যায় নিজেদের এই বিরাট বড় ভুল হতে দেখে। কিন্তু সে হেরে গিয়েছিল একটা জায়গায়। পারেনি সে মাহিকে ছেড়ে উঠে আসতে। সারারাতটায় সে মাহিকে বুকের মাঝে নিয়ে ওর দিকে চেয়ে পার করেছে। এর মাঝে একই ভুলটাই মাহির দ্বারা আবার ঘটতে গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে আশফি খুব কষ্টের সঙ্গে মাহিকে বাধ সেধেছে। মেয়েটার ভেজা চোখদুটো দেখে তখন আশফির বুকের ভেতরের বাঁ পাশের জায়গাটা মস্ত বড় ধাক্কা খেয়ে ওঠে। যেন মাহির চোখের পানিটুকু রক্ত বিন্দু হয়ে ঝরছিল তার হৃদয়ে। মুহূর্তগুলো মনে পড়তে একটা ভারী নিঃশ্বাস ফেলে আশফি বিছানায় উধ্বমুখী হয়ে শুয়ে পড়ল। এই ঘটনার পর আজ থেকে ওই মেয়েটা তাকে কী নজরে দেখবে? কতটা নিচু মনের পুরুষ ভাববে তাকে? ভাবনাগুলো আশফিকে পুরো পাগল করে দিচ্ছে। তবে রাতটার একটা মুহূর্ত মনে পড়তে তার ওষ্ঠে মৃদু হাসি খেলল এবার। আশফি যখন মাহিকে বাধ সেধেছিল তখন মাহি ঠোঁট ফুলিয়ে কেঁদে বলেছিল, – “ইউ হিট মি অলোয়েজ।” আশফি তখন মাহির কথার কোনো উত্তর দেয়নি। করুণ মুখ করে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে ওকে ঘুম পারিয়ে দেয়। মাহি ওর বুকে মাথা পেতে ঘুমের মধ্যে এই বলে বিলাপ করে তখন, – “আশফি মাহবুব! তুমি প্রচন্ড দুর্গন্ধযুক্ত একটা মানুষ। খাটাশ তুমি। বাঘের মতো খালি গর্জে ওঠো আমার ওপর। তোমার বুকে একটুও মায়া নেই।” মাহির প্রথম দু্টো কথা শুনে আশফি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ছিল। তারপর শেষ কথাগুলো শুনে তখন মৃদুভাবে হেসে উঠেছিল। তবে সেই সাথে বুকের বাঁ পাশটাতেও একটা ব্যাথা অনুভব করছিল সে। দিশান খাবার টেবিলে বসে ভাইকে গলা উঁচু করে ডাকল খেতে আসার জন্য। আশফি উঠে অফিসের জন্য একদম ফর্মাল গেটআপে এসে খেতে বসল। দিশান আপেল খেতে খেতে মুচকি হেসে ভাইকে জিজ্ঞেস করল, – “কেউ যদি জিজ্ঞেস করে তোমার ঠোঁটটাতে কী হয়েছে? তখন কী বলবে?” আশফি খাবার প্লেট থেকে নজর উঠিয়ে সরু চোখে তাকাল দিশানের দিকে। কিন্তু কোনো জবাব দিলো না। – “ভাইয়া আজ তো টাই পরলে না?” আশফির কাটা জবাব, – “পরব না।” – “আর আগের প্রশ্নের উত্তর?” – “ডাম্বেলের মার।” – “সে আমাকে মারো আর ধরো। আমাকে না বলা অবধি তুমি কিন্তু শান্তি পাবে না। তোমার চেহারায় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে তুমি কতটা অশান্তি আর হতাশার মাঝে আছ। আমাকে বলো, আমি সব সলিউশন দিয়ে দেবো।” আশফি এবারও নিশ্চুপ। দিশান এবার সিরিয়াস মুখ করে বলল, – “আমি সত্যি বলছি ভাইয়া। আমি বুঝতে পারছি তোমার সঙ্গে এমন কিছু হয়েছে যার জন্য তুমি খুব চিন্তা আর অশান্তির মাঝে আছ।” আশফি খাবারটা রেখে নিস্তব্ধ ভঙ্গীতে বসে রইল। তারপর বলল, – “একটা ভুল হয়ে গেছে।” – “কী ভুল?” আশফি মুখটা কাঁচুমাচু করে কিছুটা সংকোচবোধ করে বলেই ফেলল দিশানকে। দিশান হা হয়ে তাকিয়ে রইল আশফির দিকে। তারপর বলল, – “গত বছর যখন নিউ ইয়ার্ক ছিলাম আমরা তখনকার ঘটনা। রাতে আমরা সবাই নাইট ফ্লোরে ড্যান্স করতে ব্যস্ত তখন তুমি একটু ফ্রেশ হওয়ার জন্য ক্লাবের ওপরে হোটেল রুমে গিয়েছিলে। তোমার পিছু পিছু তখন ইলিয়ানোও গিয়েছিল। কী বিধ্বস্ত অবস্থা! আমি না গেলে তুমি হয়তো সেদিন ওর কাছে রেপড হতে। বাট শী ইজ ড্যাম হট। তাতেও তুমি তার কাছে ধরা দাওনি। আর কাল রাতে তুমি যেটা করেছো সেটা বিশ্বাস করা যায়? কিন্তু সে কে আর কোথায় হয়েছে এটা?” – “আমি তোমাকে যতটুকু বলেছি ততটুকুই যথেষ্ট। এর বেশি তুমি কোনো প্রশ্ন করবে না। কে, কোথায়, কীভাবে এগুলো জানতে চাইলে আমি কিছুই বলব না।” – “ওকে ওকে, কিন্তু এই ভুলটা তোমার পক্ষে হওয়া অসম্ভব। অন্তত আমি এটাই ভাবতাম। তাহলে কীভাবে হলো?” – “আই ডোন্ট নো, হাউ ডিড দিজ হ্যাপেন টু মি? প্রচন্ড উইকনেস কাজ করে যখন ওর চোখের দিকে তাকাই। আর ওর ইনোসেন্ট আদুরে মুখটা দেখলে ইচ্ছা তো করে একদম বুকে চেপে ধরে জড়িয়ে রাখি।” দিশান খুশিতে চেঁচিয়ে বলে উঠল, – “ওয়াও ব্রাদার, জাস্ট স্পিচলেস আমি! অ্যাট লাস্ট ইউ ফল ইন লাভ।” আশফি চমকে তাকাল দিশানের দিকে। দিশান আরও বলল, – “এই সুখবরটা আমার জানের দাদীবুকে কখন দেবো আমি? আমার তো আর তর সইছে না। ভাইয়া প্লিজ বলো না কে সেই শক্তিশালী রমণী যে তোমার মতো কাঠের মানুষকে প্রেমে ফেলে দিলো?” আশফি হাতের কাটা চামচ দিয়ে দিশানের হাতে আঘাত করল। দিশান ব্যাথায় ‘উহ্’ করে উঠলে আশফি তখন চোখ মুখ শক্ত করে কাটা কাটা দিলো, – “এটা কোনো লাভ শাভ না। আসলে জগতের সব থেকে আকর্ষণীয় আর দূর্বলতার স্থান হলো নারী। সেখানে তার প্রতি ভালোবাসা থাক বা না থাক, পুরুষেরা সেখানে ধরা খাবেই। আমি আমার ওপর হান্ড্রেড পার্সেন্ট কনফিডেন্স রেখেছিলাম যে আমি কখনোই এই জালে আটকাব না। কিন্তু আজ সত্যিই প্রমাণ পেলাম, মধুর পিছু থেকে মৌমাছি ছোটানো বড্ড মুশকিল। নারী আর মধু, যা থেকে পুরুষ মানুষ আর মৌমাছি জীবনেও ছুটতে পারবে না। তাছাড়া কোনো ভালোবাসা নেই এখানে।” এতটুকু বলে আশফি থামল। তারপর মুখটা ভার করে সে বলল, – “আর সে অলমোস্ট এঙ্গেজড। তাই এখানে তো এমন কোনো সুযোগই নেই।” – “হ্যাঁ….!” দিশান টেনে বলল শব্দটা। তারপর বলল, – “কথা হচ্ছে এই জায়গায়। এর জন্যই তুমি স্বীকার করতে চাইছো না। তুমি তোমার মনকে জোর করে ওই সব ভুলভাল, হাবিজাবি বুঝিয়ে রাখছো। কিন্তু তুমি যে তাকে ভালোবেসে ফেলেছো আর তাও যে পিওর লাভ তা তুমি মানতে নারাজ। আরে এঙ্গেজড তো কী হয়েছে? বিয়ে তো আর করেনি। তাছাড়া তোমাকে রিফিউজড করা কার সাধ্যি? একবার বলেই দেখো, সে ছুটে আসবে তোমার বুকে।” – “কখনোই না। আমি তো তাকে কখনো এসব বলবই না আর সেও ওইরকম কোনো কাজ করবে না। আমি তাকে খুব ভালো করে চিনেছি কিছু দিনেই।” আশফি মুখটা ন্যাপকিনে মুছে উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল, – “আর হ্যাঁ, ভালোবাসা ভালোবাসা বলে আমার কানের কাছে একদম ঘ্যানঘ্যান করবে না। এই নিয়েও আর কোনো প্রশ্ন তুলবে না।” আশফি রুমে এসে ওয়ালেট পকেটে ঢুকিয়ে নিতে নিতে মাহির উদ্দেশে বলল, – “ভালোবাসা! হুহ্। আর যাই হোক, ওই রকম গাঁধি আর ডিপেন্ডেন্ট মাইন্ডেড মেয়েকে কখনো ভালোবাসা যায় না।” আশফি আর দিশানের গাড়ি সকাল নয়টার সময় অফিসের সামনে এসে দাঁড়াল। তখন মাহিও ট্যাক্সি থেকে নামল। আশফি গাড়ি থেকে নামতে গিয়েও মাহিকে দেখে আর নামল না। দিশান ভাইকে বসে থাকতে দেখে বলল, – “নামবে না?” আশফি মাহির দিকে চেয়ে বলল, – “পরে।” – “পরে কেন?” আশফি তার দৃষ্টি আগের স্থানে রেখেই জবাব দিলো, – “ইচ্ছা হচ্ছে তাই।” দিশান কিছুটা ভ্রু কুচকাল ভাইয়ের আচরণে। সে খেয়াল করল আশফি খুব সুক্ষ্ম দৃষ্টিতে মাহিকে লক্ষ্য করছে। মাহি রাতুলের মুখোমুখি হয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য কথাতে ব্যস্ত যখন, তখন আশফির কপালে সুক্ষ্মভাঁজ পড়ল। ক্রুর চাহনিতে সে দেখতে থাকল ওদের। এর কিছুই দিশানের চোখ এড়াল না। ঠোঁটে তার মুচকি হাসি টেনে দিলো। যা বোঝার সে বুঝে গিয়েছে। তার ভাইকে সে খুব ভালোভাবেই চেনে। তার প্রিয় জিনিসের প্রতি কারো হাত পড়লে তখন তার রিয়্যাকশন কেমন হয় দিশানের তা জানা। তাই সে ভাইকে আর একটু জ্বলাতে তাকে শুনিয়ে মাহির দিকে চেয়ে বলল, – “ও গড! ওটা কি মাহি? মাত্র এ ক’দিনেই এত সুন্দর হয়ে গেল কী করে? না কি আমি অনেক দিন বাদে দেখছি বলে এমনটা লাগছে?” আশফি দিশানের দিকে চেয়ে বলল, – “দু’দিন আগেও তো তাকে দেখলে!” – “উফঃ ভাইয়া! এই মেয়েটাকে যতই দেখি ততই যেন সুন্দর লাগে। আরে ও তো দেখছি চলে যাচ্ছে।” দিশান তাড়াহুড়া করে সিটবেল্টটা খুলতে খুলতে ভাইকে বলল, – “ভাইয়া আমি এখনই নামছি। তুমি পারলে পরে এসো। আমার মাহি ডিয়ারের সঙ্গে লিফ্টে উঠতে না পারলে সারা দিনটাই নষ্ট যাবে।” দিশান দৌঁড়ে মাহির কাছে গেল। মাহি একটু চমকে তার দিকে তাকালে দিশান এক গাল হেসে ওর সঙ্গে কথা বলতে শুরু করল। আশফির যেন নিজের ভাইকেই এখন অসহ্য লাগছে। হ্যাঁ এ কথা ঠিক, মাহি প্রকৃতই একজন সুন্দরী মেয়ে। যাকে বলে ন্যাচরাল বিউটি। তাকে অপছন্দ হওয়ার মতো কোনো সুযোগ নেই। আর দিশান, তার ভাই তো সুন্দরী মেয়েদের গার্লফ্রেন্ডের তালিকায় এনে দিন দিন সেই তালিকা লম্বা করতেই আছে। এবার নিশ্চয় সে সত্যি সত্যিই মাহির পিছে পড়বে। এই ব্যাপারটা ভাবতেই কেমন যেন রাগ হচ্ছে আশফির। সেও গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত গাড়ি লক করে ছুটে গেল লিফ্টের কাছে। ……………………………… (চলবে) – Israt Jahan Sobrin

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে