তুমি রঙিন প্রজাপতি পর্ব-০৯

0
869

#তুমি_রঙিন_প্রজাপতি🦋

#writerঃsumaiya_afrin_oishi

#পর্বঃ৯

প্রকৃতি জুড়ে এখন বসন্তে’র আমেজ। গ্রামের পরিবেশটা তুলনামূলক ভাবে ভীষণ রঙিন ঠেকছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে’কে কয়েকগুণ বাড়িয়ে রঙিন রঙে নিপুণ ভাবে সজ্জিত চারপাশ।সেই সাথে বাহিরে বসন্তের মৃদু মৃদু ঠান্ডা বাতাস বইছে, পাখিরা কিচিরমিচির করে যেন নিজেস্ব ভাষায় গাইছে গান। চাঁদনী সকলের সব কাজ গুছিয়ে বাসা’র পিছনে’র দিকটায় এসে খোলা জায়গায়, চেয়ার পেতে বসেছে। বাসায় কারেন্ট নেই এখন, গরমের জন্য তাই মূলত এখানে আসা তার। প্রাকৃতিক ঠান্ডা হাওয়ায় মন প্রাণ শীতল হয়ে গিয়েছে কিছুক্ষণের মধ্যেই। চারপাশ থেকে আসা বাতাসের তালে তালে সামনে থাকা দুষ্ট চুলগুলো আঁচড়ে পড়ছে শ্যামাময়ী মেয়েটার চোখে মুখে। সেদিকে হুঁশ নেই তার। সে এক ধ্যানে ফোন দেখছে, আর মিটমিট হাসছে। আজ চাঁদনী’র মনটা তুলনামূলক ভাবে ভীষণ ফুরফুরে, কেননা আফজাল হোসেন গতকাল তাকে একটি স্মার্ট ফোন কিনে দিয়েছে। মূলত অনলাইন থেকে পড়া এবং অবসরে সময় কাটানোর জন্য। এই প্রথম একান্তই নিজের একটি ফোন পেয়ে সবকিছুতেই ভীষণ কৌতুহল তার। গ্রামে থাকতে অন্যদের হাতে এই ফোন দেখেছে সে,কিন্তু কখনো ধরা ছোঁয়া হয়নি। বাবা যখন ফোনটা তাকে দিয়েছিলো সেই মুহূর্তটায় আনন্দে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলো সে। কিন্তু এ ফোন ব্যাবহারবিধি সম্পর্কে মোটেও অবগত নয় সে, তারপর ফারিহা তাকে দীর্ঘ সময় ধরে মোটামুটি সব কিছু শিখিয়ে দিয়েছে। নতুন নতুন ফোনের প্রতি ভীষণ আকর্ষণ কাজ করছে মেয়েটির। এজন্যই খুব ভোরে উঠেই এক হাতে সব কাজ সেরে ফেলছে। বেলা আটটার মধ্যে মোটামুটি সব কাজ শেষ হতেই ফোনটা নিয়ে বসেছে সবে মিনিট দশেক হয়েছে। এরমধ্যে পাশের বাসা থেকে এক দাদী শ্বাশুড়ি এসেছে তাদের বাসায়। চাঁদনী’কে বাহিরে বসা দেখে চমকালেন তিনি,সেই সাথে কপালে গুটি কয়টি ভাঁজ ও পড়লো। ছিঁ! ছিঁ! নতুন বউ সে কি না বেহায়ার মতো চেয়ারে বসে আছে বাহিরে। স’র্ব’না’শ! কি বেহায়া, নির্লজ্জ মেয়েমানুষ! তাদের ভাস্যমতে, নতুন বধূরা লম্বা ঘোমটা দিয়ে থাকবে সব সময়, টানা কয়েক মাস ঘরবন্দী হয়ে থাকবে। এর এ মেয়ে কি-না আসতে না আসতেই চেয়ারে বসে পা দোলাচ্ছে। নিশ্চয়ই মেয়ে অভদ্র, পারিবারিক শিক্ষার ঘাটতি রয়েছে। একরাশ কৌতূহল নিয়ে তিনিও এগিয়ে গেলেন চাঁদনী’র কাছে, কিন্তু খেয়াল করেনি চাঁদনী। পরক্ষণেই উনি পিছন থেকে নাকমুখ কুঁচকে বিলাপ সুরে বলে উঠলো,

“এ্যাই ম্যাইয়া তুমি নতুন বউ হইয়া কুন আ’ক্কে’লে বাইরে’তে আইয়া বইছো? হায়! হায়! এই ম্যায়াইয়ার মধ্যেতো দেহি কোনো লাজলজ্জা নাই।”

আকস্মিক পিছন থেকে এমন কথা শুনে হকচকিয়ে উঠলো চাঁদনী, মুহূর্তেই পিছনে ঘুরে দেখলো শক্ত পোক্ত এক মহিলা, উনার সাথে একবার আলাপ হয়েছে চাঁদনী’র। সেই সুবাদে চিনতে অসুবিধা হয়নি। চাঁদনী তার কথার বিপরীতে বরং মুচকি হাসলো। তারপর নিজেই বসা থেকে উঠে নম্র কণ্ঠে বললো,

“বসেন দাদি। আসলে বাসায় কারেন্ট নেইতো প্রচুর গরম ভিতরে, তাই একটু বাহিরে বাতাসে এসে বসলাম।”

“হ তোমার একলারই সব গরম। নতুন বউগোর আবার গরম আছেনি! আমরা যহন নতুন বউ আছালাম ছয় মাসেও উঠানে পা রাহি নাই।আর তুমি ছেঁহ্! আবার আমার মুখের উপ্রে মুখ কতাও ক’ও। বে’দ্দ’প ম্যাইয়া!”

মহিলার এমন কথায় তাজ্জব বনে গেলো চাঁদনী। সে এমন কি করছে যে তাকে এভাবে কথা শুনাচ্ছে? চাঁদনী মিনিট দুয়েক চুপ থেকে যেইনা কিছুটি বলতে যাবে তার আগেই দাদি তার হাত থেকে মোবাইলটা কেঁড়ে নিয়ে উল্টো পাল্টা করে দেখছে। থেমে গেলো চাঁদনী, বিস্মিত চোখে তাকিয়ে দেখছে বৃদ্ধা মহিলার কার্য গুলো। দাদি এতক্ষণ খেয়াল করিনি এটা, উনি কিছুক্ষণ মোবাইলটা পর্যবেক্ষণ করে কুঁচকানো চোখ মুখ আরো কুঁচকে ফেলে বললো,

“উরিম্মা এইডা কি মুবাইল (মোবাইল) !

এরিমধ্যে বাহিরে আসলো ফাতেমা খানম। উনাকে দেখে হতাশ কণ্ঠে বললো বৃদ্ধা মহিলা বলে উঠলো,

” হুনো বউ এ্যা কেমন ম্যাইয়া পোলাডার লগে বিয়া দেছো? হুনলাম পোলাডাও বাড়ি থাইকা গেলো এই ছু’ড়ি’র লাইগা। আর ম্যাইয়ার চাল চলনতো মোঠেও ভালা না। এই দেহো নতুন বউ হেয় কিনা বাইরেতে বইয়া বইয়া আরামে বেহায়ার মতো মুবাইল টি’পে। আবার আমার মুখের উপ্রে কতা কয়।”

ফাতেমা খানম কিছুটি বলতে গিয়েও বললো না। গতকাল থেকে চাঁদনী’র সাথে ভালো-মন্দ কোনো কথা বলেনি সে, হঠাৎ যেন গম্ভীর চুপচাপ হয়ে গেলেন তিনি। এ যেন ঝড় উঠার পূর্বাবাস নাকি স্বামী’র ভয় জানা নেই চাঁদনী’র। এতে অবশ্য চাঁদনী’র ভালোই হয়েছে অন্ততো আর মন্দ কথা শুনতে হয় না।
ফাতেমা খানম কেবল চাঁদনী’র দিকে ক্ষু’ব্ধ চোখে তাকালো, মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই ভ’স্ম করে দিবে। এমনিতেই এই মেয়েটাকে উনি দেখতে পারেনা, তার সংসারে উটকো ঝামেলা,অপয়া মনে করেন তিনি। তার উপরে স্বামীর এতো আধিখ্যেতা দেখে হিংসায় জ্ব’লে যাচ্ছে। তার উপরে আবার গতকাল অযথা এতোগুলো টাকা দিয়ে মোবাইল দিয়েছে এই মেয়েকে, এজন্য আর গতকাল চুপ থাকতে না পেরে আফজাল হোসেনের সাথে এক পাল্লা ঝগড়া সবার অগোচরে হয়েছে। তখনই আফজাল হোসেন নিজের স্ত্রী’কে খুব করে শাসিয়েছে ,তার উপরে চাঁদনী “আফজাল হোসেন’কে পরবর্তীতে সবকিছু বলে দিবে” বলে হু’ম’কি দিয়েছে। সব মিলিয়ে কিছুটা ভয়ে চুপসে আছেন তিনি,তবে মনে মনে চাঁদনী’কে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ দিতে ভুলেন না। ফাতেমা খানম’কে চুপ থাকতে দেখে বৃদ্ধা মহিলা পুনরায় পান চিবতে চিবতে এক দলা পি’ক ফেলে বিলাপ কণ্ঠে বললো,

“হুনো বউ? পোলার বউগো এতো আশকারা দেওন ভালা না। হুনছি হের মা’র স্বভাব চরিত্র ভালা আছিলো না, মাইডা রাইখা অন্য ব্যা’ডার লগে ভাগছে। এর ম্যাইয়া আর কতদূর ভালা ওইবো। এজন্যই তো বাবুর লগে বিয়া ওয় নাই। হেই ম্যাইয়া তোমার পুলার লগে আফজাই’ল্লা দিলো বিয়া, এতে মানইজ্জতো একবার গেছে। এরমধ্যে আবার মুবাইল দেছো বউরে। না জানি এই ছু”ড়ি আবার কোন আ’কা’ম করে। তহন কিন্তু মোডেও ইজ্জত থাকবো না কইলাম।”

চাঁদনী এতক্ষণ চুপচাপ শুনছিলো বৃদ্ধা মহিলার কথা। কিন্তু তাকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য শুনে শরীরের শিরা-উপশিরায় রাগটা তড়তড় করে বেড়ে গেলো। এদের কি আর কোনো কাজ নেই? সকাল না হতেই অন্যদের বাসায় ঘুরে কে কি করছে এসব নিয়ে পড়ে থাকে। চাঁদনী’র মন চায় কঠিন কিছু কড়া কথা শুনিয়ে দিতে বৃদ্ধা মহিলাকে। এরিমধ্যে ভিতর থেকে আসিয়া বেগমের ডাক শুনতে পেলো, দাদী তাকে ডাকছে। চাঁদনী আর দেরী না করে মহিলার হাত থেকে মোবাইলটা ছোঁ মে’রে নিজের কাছে নিয়ে নিলো। অতঃপর মহিলার দিকে একপল তাকিয়ে স্বাভাবিক কণ্ঠে বললো,

“পরের ঘরে কে কি করছে,খামোখা এসব চিন্তা আপনার না করলেও চলবে। আপনি বরং নিজের ঘরে সব ঠিকঠাক আছে কিনা সেই চিন্তা করুন। কারো ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে, নিজের ইচ্ছে মতো, যাচ্ছে তাই কিচ্ছা বলার অধিকার আপনায় কে দিলো? আমাদের ঘরের বিষয় আমরা নিজেরাই বুঝে নিবো। মনে রাখবেন, পুনরায় এসব বলতে আসলে এইটুকু সম্মান আর থাকবে না।”

কথা শেষ হতেই চাঁদনী আর এক মুহূর্তে দেরী না করে ভিতরে আসলো। বৃদ্ধ মহিলা চাঁদনী’র এহেন কথায় গ’র্জে উঠলো। তার সাথে তাল মিলালো ফাতেমা খানম।
.
.
একটু সময় আনন্দে কাটলে পরবর্তী দীর্ঘ সময়টা কেটে যায় বিষন্নতায়। মানুষের নিকট নিজেকে যতই শক্ত পোক্ত দেখায় ভিতরে ভিতরে ভীষণ কষ্টে দ’ম আঁটকে যায় মেয়েটার। আরকত যু’দ্ধ করে বাঁচবে সে? সুখের মুখ কি কস্মিনকালেও দেখবে না সে? চাঁদনী মন খারাপ করে নিজের রুমে দরজা বন্ধ করে কাঁদলো কতক্ষণ নিরবে একাকী। এরিমধ্যে দরজায় কে জানি শব্দ করছে। চাঁদনী নিজেকে সামলে নিয়ে দরজা খুলে দিলো। তার সামনে বিরক্ত হয়ে দাঁড়ানো তার চাচাতো জা রেশমী। দরজা খুলার সাথে সাথে রেশমী তাচ্ছিল্যের সুরে বললো,

“ভিতর থেকে দরজাটা আঁটকিয়ে কি এমন করো তুমি? আমার দেবর টাও তো আর নেই ঘরে, যে তোমায় বন্ধ দরজায় বসে সোহাগ করবে।”

জা’য়ের তাচ্ছিল্যমাখা কথা শুনে শরীর ঘিনঘিন করছে তার। শ্বশুর বাড়ি এত তিক্ত হয় জানা ছিলো না চাঁদনী’র। হবেই না কেনো, মেয়েদের শ্বশুর বাড়ির সুখ-শান্তি, সম্মান, এগুলো সম্পুর্ন স্বামীর উপর নির্ভরশীল। যে নারী স্বামীর নিকট অধিক মূল্যয়ণ পায়, সে নারী শ্বশুর বাড়ির সবার ততই প্রিয়। নিজ স্বামী সম্মান করলে বাকি সদস্যদের থেকে সম্মান আপনাআপনি চলে আসে। আর সেখানে সে এক হ’ত’ভা’গা! ফাহাদে’র প্রতি ভিতর থেকে, একরাশ অভিমান এসে জমলো চাঁদনীর ছোট্ট বক্ষে। লম্বা একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে মনে মনে চাঁদনী বিড়বিড় করে বললো,

” আমার সাথে এমনটা না হলে খুব কি ক্ষতি ফাহাদ? জানেন না, মেয়েরা শ্বশুর বাড়ি স্বামীকে ছাড়া অসম্পূর্ণ! আচ্ছা, আমি কি কখনো আমার প্রাপ্য সম্মানটুকু পাবো না? আপনি আসবেন না ফাহাদ? প্লিজ আসুন একটিবার! আমি যে ক্লান্ত, বড্ড হাঁপিয়ে গিয়েছি আমি! এখন যে আপনাকে আমার ভীষণ প্রয়োজন ফাহাদ। সত্যিই ভীষণ ভীষণ প্রয়োজন!”

রেশমী ভ্রু কুঁচকে কিয়াৎক্ষণ পর্যবেক্ষণ করলো চাঁদনী কে। অতঃপর সুর টেনে বললো,

“কি ভাবছো আমার দেবরের কথা বুঝি?”

স্বজ্ঞানে ফিরলো চাঁদনী, মুখ ফুটে কিছু বলার আগেই রেশমী আবারো ব্যস্ত হয়ে বললো,

“তুমি সারাদিন বসে ভাবিও। এখন আমায় দ্রুত চারটা ডিম দেও তো, পরে দিয়ে যাবোনে।”

এমন ভাবে বলছে মনে হচ্ছে সে ধার চাইছে না অর্ডার করছে চাঁদনী কে। কিছু একটা মনে করে হুট করে খানিকটা হাসলো চাঁদনী।
.
.
বেলা অনেকটা হয়ে গিয়েছে ইতোমধ্যে, চাঁদনী মন ভার করে দুপুরের জন্য রান্না আয়োজন করছে। বাকিরা যে যার কাজে ব্যস্ত। হঠাৎ বাসায় কলিং বেল। এ সময় আবার কে? নিশ্চয়ই বাবা এসেছে। চাঁদনী হাত ধুয়ে দরজা খুলে চমকে গেলো সামনের থাকা মানুষটাকে দেখে। তারই সামনে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে তার জোছনা আপা। অনেকদিন পড়ে চেনা পরিচিত মুখ দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়লো চাঁদনী। এতক্ষণে সমস্ত মন খারাপ যে উড়ে গিয়েছে শূন্যে। ইতোমধ্যে চাঁদনী মৃদু চিৎকার দিয়ে “আপা” বলে ঝাঁপিয়ে পড়লো জোছনার বুকে। জোছনাও দু-হাতে আগলে নিয়ে আহ্লাদী কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো,

“কেমন আছিস চাঁদ?”

“খুব ভালো আছি আপা। তুমি কেমন আছো?”

“আমিও এখন খুব ভালো আছি বোন। এতদিন জ্বর ছিলো তাই তোর সাথে দেখা করতে পারিনি। তোর মুখটা এমন দেখায় কেনো চাঁদ? নিশ্চয়ই ঠিক মতো খাওয়া ধাওয়া করিস না।”

“আমি ঠিক আছি আপা। তুমি চিন্তা করো না।”

পিছন থেকে আফজাল হোসেন মৃদু হেসে চাঁদনী’কে উদ্দেশ্য করে বললো,

“এখানেই দাঁড়িয়ে কথা বলবে মা। তোমার আপাকে ভিতরে নিবে না?”

এতক্ষণে বাবা’কে খেয়াল করেনি চাঁদনী, হঠাৎ তার কথায় খানিকটা লজ্জা পেয়ে জোছনাকে ছেড়ে দিয়ে বসার ঘরে নিয়ে গেলো চাঁদনী।

এরিমধ্যে এতো কথাবার্তার শব্দ শুনে রুম থেকে বেরিয়ে আসলো ফাতেমা খানম। জোছনা সালাম দিলো তাকে। জোছনা চাঁদনী বোন যা শুনে চোখ মুখ কুঁচকে মুখভার করে ফেললেন তিনি। আফজাল হোসেন ওদের পাশে তাই কিছু বলতেও পারছে না উনি। ভিতরে ভিতরে রাগে ফে’টে পড়ছে। পরক্ষণেই কিছু একটা অযুহাত দিয়ে নিজের রুমে গেলো।

#চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে