তুমি রঙিন প্রজাপতি পর্ব-০৭

0
876

#তুমি_রঙিন_প্রজাপতি

#writerঃsumaiya_afrin_oishi

#পর্বঃ৭

স্হির, দৃশ্যমান প্রতিচ্ছবি’র পুরুষটির অবয়া দেখে কিশোরী মেয়েটার বক্ষে যেন উথাল-পাতাল ঢেউয়ের ন্যায় স্রোত বইছে। চাঁদনী কিছুসময়ের জন্য এক দৃষ্টিতে মুগ্ধ হয়ে দেখছে ছবিখানা। পুরুষটি চেহারায় যেন অদ্ভুত এক মায়া লেপ্টে আছে। যা বারবার আটকে দিচ্ছে কিশোরী মেয়েটার চক্ষুদ্বয়। চাঁদনী বারংবার ছবিখানায় হাত বুলিয়ে দিয়ে, অতী আগ্রহ নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে সেই পুরুষটি কে। মনে হচ্ছে পুরুষটি তার যুগযুগ ধরে চেনা। এটাই বোধহয় পবিত্র বন্ধনের টান।পুরুষটি আর কেউ নয় তারই কবুল বলে গ্রহন করা অর্ধাঙ্গন। এই লোকটাকে চিনতে একটুও অসুবিধা হয়নি চাঁদনী’র। বিয়ের সময় একটুখানি দেখেছিলো সে। এরপরও এ বাসায় আসার পরে দু’দিন আগে ফারিহা মোবাইল থেকে তার ভাইয়ের ছবি দেখিয়েছিলো। কিন্তু চাঁদনী তখন লজ্জায় একপলক তাকিয়ে আর তাকাতে পারেনি। পুরুষটি’র স্পষ্ট চেহারার অবয়া মনে না থাকলেও আবছা আবছা মনে আছে তার। চাঁদনী একবার চোখ বন্ধ করে কল্পনা করছে ছবিতে থাকা পুরুষটি’র চেহারা। না ব্যর্থ সে, এখনো স্পষ্ট নয়! তার বক্ষদ্বয়ে পুরুষটির চেহারা স্পষ্ট আঁকতে পারেনি সে। কেমন যেন ধোঁয়াশা হয়ে আসছে। চাঁদনী চোখ খুলে আবার তাকালো পুরুষটি মায়াবী চোখের দিকে। কি অদ্ভুত! একটা স্হির ছবি তাকে মা’দ’ক’তা’র মতো যেন টানছে। মন চায় একদৃষ্টিতে শুধু তাকিয়ে দেখতে পুরুষটি’কে। কিন্তু তার ইগো যেন বলছে ‘

“এই পুরুষটি তোর জন্য ঘর ছেড়েছে চাঁদনী। এতোর আপন নয়, কিন্তু পরক্ষণেই মস্তিষ্ক যেন বলছে, এই পুরুষটি তোরই চাঁদনী! তাকে দেখলে পাপ হবে না। সে যেমনই হোক, সে তোর কবুল বলা হাসবেন্ড । সে মানেনি তো কি হয়েছে? একদিন মানবে! তুই তোর প্রাপ্য অধিকার আদায় করেনে। আটকিয়ে রাখ শক্ত বন্ধনে!”

অতঃপর কিশোরী মেয়েটা মস্তিষ্ক’কেই সায় দিয়ে সিদ্ধান্ত নিলো, “একটু দেখলে কি এমন পাপ হবে? দেখি না মানুষটাকে! ”

আজ আর কোনো লজ্জা কিংবা জড়তা নেই মেয়েটির মাঝে। নিরিবিলি পরিবেশে একাকী নিরবে বসে কিশোরী মেয়েটা মুগ্ধ হয়ে দেখছে তার স্বামী নামক মানুষটিকে। হঠাৎ ঘোর লাগা কণ্ঠে কিশোরী মন যেন বারংবার বলছে,

“আপনি মানুষটা এক ভ’য়ংক’র জ্ব’ল’জ্যা’ন্ত মাদ’কদ্র’ব্য ফাহাদ!
কি আশ্চর্য দেখুন না? যা খুব করে মা’দ’ক’তা’র মতো টানছে এই কিশোরী মেয়েটাকে! ছবিতে বসে আপনি এই কিশোরী মেয়েটাকে এই ভাবে ঘায়েল করছেন, না জানি সামনে থাকলে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলেন!”

নিজের ভাবনা দেখে নিজেই আনমনে লাজুক হাসলো চাঁদনী। ইশ কি লজ্জা! এসব কি ভাবছে সে? লম্বা কয়েকটি শ্বাস ছেড়ে নিজেকে সামলে নিলো মেয়েটা। অতঃপর খানিক চুপ থেক আবারও স্বজ্ঞা’নে ছবিটার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে, আফসোস করে বললো চাঁদনী,

“আচ্ছা আমাদের কি কখনো সামনাসামনি দেখে হবে না, কথা হবে না? ভাগ্যের কি পরিহাস! কাগজে কলমে আপনি আমার। অথচ আপনার মুখটা সামনাসামনি দেখার সৌভাগ্য আমার এখন অবধি হলো না। প্রথম স্পষ্ট ভাবে আপনাকে দেখে হলো, এই রঙিন ছবিখানায়। এছবিটাই আপনার দেওয়া মূল্যবান উপহার হিসেবে নিয়ে নিলাম আমি। শুনুন? খবরদার একদম রেগে যাবেন না? আমি আপনার অর্ধাঙ্গিনী, আপনার সবকিছুর উপরে একমাত্র আমার অধিকার। আর আমি আমার অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে চাই না, কবুও না!”

বলেই মুচকি হেসে ছবিখানা নিয়ে বালিশের তলায় অতী যত্ন করে গুঁজে রাখলো।
তবে কি এখান থেকেই তাদের প্রণয়ের সূচনা? না-কি, এটা একান্তই কিশোরী মেয়েটার আবেগ জানা নেই চাঁদনী’র। নিজের পা’গ’লা’মি দেখে নিজেই একরাশ বিরক্ত হলো। মন কেনো তার কথা শুনছে না! এভাবে কেনো রঙ পাল্টালো? মিনিট খানিক সময় বসে চাঁদনী আবারও নিজেকে সামলে আগ্রহ নিয়ে ডায়েরির পাতা উল্টালো। এবার গোটাগোটা অক্ষরে কিছু একটা লেখা। মেয়েটার আগ্রহ বাড়লো, ব্যস্ত হয়ে পড়তে লাগলো,

“আজ মনের আকাশে বিষ’ন্নতা নেমেছে,
প্রিয় মানুষটাও চোখের সামনে হা’রিয়ে যাচ্ছে,
যাকে ছা’ড়া আমার সময় থমকে যেতো,
শুরু হতো বুকে হাহাকার।
সেই মানুষটাও বদলে গেলো,
থাকলো না আর আমার!”

এইটুকু পড়ে থামলো চাঁদনী। চাঁদনী’র বুকটা কেমন যেন ক্রমশ ভারী হয়ে যাচ্ছে, সে অনুভব করছে তার খারাপ লাগছে, কষ্ট হচ্ছে! কিন্তু কেনো? কারণটা যেন অজানা। নিজেকে স্হির রাখার আপ্রান চেষ্টা করছে সে, কিন্তু বারংবার ব্যর্থ হচ্ছে মেয়েটা। না আর পড়া যাবে না এটা। তার অজানা কারণে কষ্ট হচ্ছে! পরক্ষণেই আবার মনটা ছটফট করে জানতে চায়, কি আছে এই ডায়রিতে? জানার জন্য মস্তিষ্কের ভিতর যেন কি’ল’বি’ল করছে পোকার দল। এ কেমন অদ্ভুত অনুভূতি! পুরো ডায়েরি পড়ে তবেই তার শান্তি মিলবে। প্রথম যেদিন দাদীর কাছে শুনেছে, তার হাসবেন্ড অন্য কাউকে ভালোবাসতো, মেয়েটা তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। সেদিন থেকে পুরো ঘটনা শুনবার জন্য মনটা ভীষণ ছ’ট’ফ’ট করতো। কিন্তু ভয়ে, সাহস করে কাউকে জিজ্ঞেস করতে পারেনি। আজ আর এই সুযোগ হাত ছাড়া করলো নাম চাঁদনী, হোক তার অজানা কষ্ট। আবারও দ্বিগুন আগ্রহ নিয়ে নতুন এক পাতা উল্টিয়ে পড়তে শুরু করলো,

“থেকে যেতে যদি নাই পারো –
তবে হাত ধরে, প্রতিশ্রুতি কেনো দাও?
জানো না প্রতিশ্রুতি না রাখলে স্বপ্ন মা’রা যায়?
তুমি কি নেবে স্বপ্ন মা’রার অপবাদ?
নাহ্ একদমই না! তুমি তো ভী’রু!
তুমি তো স্বপ্ন মে’রে দূরে পালিয়েছো নিজের সুখ খুঁজে। আর আমারে দিয়ে গেলে এক আকাশ আঁধার। আজ টাকার কাছে হেরে গেলো আমাদের ভালোবাসা। বেকারত্ব দোহাই দিয়ে চলেই যদি যাবে, তবে এই বেকার ছেলেটাকে কেনো মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়েছিলে? কেনো কেড়ে নিলে তার ভালো থাকা। কেনো আগে বুঝিয়ে দিলে না, সবাই শেষ অবধি থাকে না!
আচ্ছা! তবে কি আমি ধরে নিবো, এই শহরে টাকার কাছে ভালোবাসা কেনা-বেচা হয়? নারীরা টাকায় ভুলে? শূন্য পকেটে কেউ শেষ অবধি থাকে না?

জানি উওর দিবে না….!”

পরের পৃষ্ঠায়,

“এই যে ছেলেটা প্রিয় মানুষটাকে হারিয়ে তার শোকে ছন্নছাড়া হয়ে আজ সমাজ তার কি নাম দিয়েছে জানো ইশা, বখাটে, নেশা’খো’র, দেবদাস, আরো কত কি! কিন্তু তার খারাপ হওয়া পিছনের গল্প কেউ খুঁজে না। তুমিও বুঝলে না ছেড়ে গেলে!
জানো ইশা? বন্ধুরা যখন আমায় ঠাট্টা করে, ব্যাঙ্গ করে দেবদাস বলে ডাকে! বিশ্বাস করো তখন আমার কষ্ট হয়, ভীষণ কষ্ট।
আমি তো দেবদাস হতে চাইনি,আমি তো শুধু তোমাকেই চেয়েছিলাম।তবে তুমি আর আমার হলে কই?দেবদাসের মতো বিরহের যন্ত্রণায় ছটফট করলেও তুমি সাড়া দাও না!আমি তো দেবদাসের মতো ইগো নিয়ে বসে থাকিনি,শুধু একটিবার যদি বলতে;“চলো”,যেদিকে দুচোখ যায় তোমার হাত ধরে সেদিকে চলে যেতাম।মুখে না বলতে,অন্তত চোখের ইশারায়ও তো বলতে পারতে।

এই যে আমি যুগ যুগ ধরে তোমার বিরহে শরৎচন্দ্রের দেবদাস বনে গেলাম,যদি কখনো তোমার দুয়ারে দেবদাস-এর মতো নিথর দেহ নিয়ে পড়ে থাকি,তবে তুমিও কি পার্বতীর মতো এভাবে ছুটে আসবে?বলো না..আসবে? হাহা! জানি আসবে না। আসলেও আর তোমায় আমি চাই না আমি। আমি আর তোমায় ভালোবাসি না! ক্ষমা কোরো মোরে! তোমায় আর ভালোবাসি না, তোমায় নিয়ে স্বপ্ন সাজাই না। ঠিক যতটা ভালোবাসতাম তার থেকে বেশী ঘৃণা করি! বিশ্বাস করো, তোমায় আমি ঘৃণা করতে চাইনি, আমিতো চেয়ে ছিলাম তোমায় ভালোবাসতে। তবে তুমি ঘৃণা করতে বাধ্য করলে!”

এরপর অনেক পৃষ্ঠা সাদা। শেষ পৃষ্ঠায় বড়বড় করে লেখা,

“শুনো হে শহর! সেদিনের অপমানিত হওয়ার ছেলেটারও একটা চাকরি অবশেষে হলো! তয় সে আর আমার হইলো না!”

সবটা পড়ে চাঁদনী”র কিশোরী কোমল মনটা, ভ’য়ংক’র ব্যাথায় কাতরাচ্ছে। কখন যে নিজের অজান্তে চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো তা ঠিক জানে না সে। সে শুধু অনুভব করছে তার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। ইশ এতোটা ভালোবাসার পড়েও কেউ ছেড়ে যায়।মেয়েটা কত বোকা! মেয়েটার জন্য আফসোস হচ্ছে, ফাহাদে’র জন্য ভয়াবহ ব্যাথা হচ্ছে তার। কতটা কষ্ট সহ্য করে আছে মানুষটা ভাবতেই শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তার। আজ আর কোনো রাগ নেই , অভিমান নেই, অভিযোগ নেই , মানুষটার উপর। কেননা তার জায়গায় বসে তার এমন আচারণ স্বাভাবিক কি নয়? চাঁদনী আনমনে বলে উঠলো,

” আপনার ধারণা ভুল ফাহাদ, সবাই ছেড়ে যায় না। আমিও প্রমাণ করে দিবো সব মেয়ে এক না। আমি আপনার হয়ে আজীবন থাকতে চাই, বিনিময়ে আমি আপনাকে চাই। কি হবেন না আপনি আমার?”

এরিমধ্যে রুমে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে হকচকিয়ে উঠলো চাঁদনী। তার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে ফারিহা। নিজেকে সামলে নিয়ে চোখের অশ্রু গুলো দ্রুত মুছে ফেললো চাঁদনী , হাতের ডায়েরিটা লুকাতে গিয়েও পারলো না। তার আগেই ফারিহা দেখে নিয়েছে, ফারিহা চাঁদনী’র সামনে এসে ভিত কণ্ঠে বললো,

“একি ভাবি তুমি ভাইয়ের ডায়েরি ধরছো! যেখান থেকে এনেছো, যাও যাও দ্রুত রেখে দেও। ইশ! তোমার কপাল ভালো ভাইয়া বাড়িতে নেই। তাহলে যে তোমায় কি করতো আইডিয়া নেই তোমার। এটা কাউকে ধরতে দেয় না ভাই। আর কারো পার্সোনাল জিনিস অনুমতি ছাড়া না ছোঁয়াই উওম!”

চাঁদনী কাচুমাচু করে ফাঁকা ঢোক গিললো। ইশ ধরা পড়ে গেলো সে। তবুও আমতা আমতা করে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বললো,

“আমি এটা খুলিনি বড় আপা! কাপড় গুছাতে গিয়ে নিচে পড়ে গেলো তাই ধরেছিলাম একটু। আমি জানতাম না এটা আপনার ভাইয়ের।”

“আচ্ছা রেখে দেও।”

চাঁদনী দ্রুত আগের জায়গায় রেখে দিলো ডায়েরিটা। এতক্ষণে ফারিহা চাঁদনী কে খেয়াল করেনি। হঠাৎ শ্যামলাময়ী মেয়েটাকে শুভ্র রঙের শাড়ীতে দেখে চোখ আঁটকে গেলো ফারিহা। ফারিহা মৃদু হেসে ভাবি’কে জড়িয়ে ধরে বললো,

“মাশাআল্লাহ! শাড়ীতে তোমায় অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে ভাবী! একদম শুভ্রপরী! আমার ভাইয়ের কিন্তু সাদা রঙটা ভীষণ পছন্দের।”

বিনিময়ে চাঁদনী খানিকটা লাজুক হাসলো। ফারিহা মুহূর্তেই শুভ্র রাঙা “শুভ্রপরীর” এই মুহূর্তটাকে ক্যামেরায় বন্দি করে রাখলো স্মৃতি হিসেবে। যদিও চাঁদনীর অমত ছিলো কারণ ছবি তুলতে তার লজ্জা লাগে। তবুও একপ্রকার জোর করেই তুললো ফারিহা। এদের সাথে যোগ দিলো মাহিম। হাতে তার কতগুলো চকলেট। ভাবীর জন্যই নিয়ে এসেছে সে। চাঁদনী হাসি মুখে নিলো সেগুলো। অতঃপর তিন’জন মিলে গল্প করতে লাগলো। মিম দূর থেকে তাকিযে ভেংচি কেটে ভার্সিটিতে চলে গেলো।
.
.
এরিমধ্য সকাল দশটা বেজে গিয়েছে, ফারিহা বিদায় নিয়ে চলে গেলো নিজের ইউনিভার্সিটিতে। আজ ইম্পরট্যান্ট ক্লাস আছে তার। এবার অনার্স ফাইনাল ইয়ারে সে। কতদিন পড়েই ফাইনাল পরিক্ষা তাই পড়াশোনার একটু বেশিই চাপ। চাঁদনী এখন আবার একা। একবার দাদীর রুমে গেলো সময় কাটানোর জন্য। গিয়ে দেখলো দাদী ঘুমাচ্ছে, তাই আর ডাকলো না। আবারও রুমে আসলো হ’তা’শ হয়ে। বাসা এখন একদম নিরব। ফাতেমা খানম পাশের বাসায় গিয়েছে। আফজাল হোসেন দোকানে যায়নি আজ,বসার ঘরে বসে পএিকা পড়ছে। বাড়ির ছেলেমেয়েরা বাহিরে।

চাঁদনী’র আজ ভীষণ অ’স্হী’র লাগছে। ফ্যানটা ছেড়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। বারবার ডায়েরির লেখাগুলো মাথায় আসছে তার। না চাইতেও লোকটাকে নিয়ে ভাবে সে। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যেন চোখ দু’টো এক হয়ে ঘুমিয়ে গেলো জানে না সে।

[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ! ]

চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে