তুমি বৃষ্টি হয়ে নামলে পর্ব-০৯ এবং শেষ পর্ব

0
1918

#তুমি_বৃষ্টি_হয়ে_নামলে
#পর্ব_৯_শেষ
#Writer_Nusrat_Jahan_Sara

পরের দিন~~~~~~

অনু নিচে গিয়ে দেখলো ওর মামা মামী আর কাজিনরা সব ড্রয়িংরুমে বসে আছে৷ অনু ওদেরকে দেখে খুশি হলেও ওর মামা মামীর হঠাৎ আগমনটা বুঝতে পারছেনা৷ অনু ধীর পায়ে এগিয়ে আরুহির পাশে বসলো৷

আবির আর অনুর অনেকবার চোখাচোখি হয়েছে৷ যতবার অনু আবিরের দিকে তাকিয়েছে ততবারই দেখলো আবির ওর দিকে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে৷

মাঃবাচ্চারা তোমরা একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসো৷ আমরা কিছু দরকারি কথা বলতে চাই৷

ওরা সবাই অনুর মায়ের কথা শুনে চলে গেলো৷ অনু ওর রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করতে যেতেই আবির এসে হাত দিয়ে আটকে দিলো৷ অনু আবিরকে দেখে দুকদম পিছিয়ে গেলো৷

“আপনি!!!আপনি কেনো এসেছেন আমার রুমে?
.
তুমি সত্যি বুঝতে পারছনা।
.
কী বুঝতে পারবো।আমার কিছুই বুঝার নেই৷
.
তুমি আমাকে ভালোবাসো না৷
.
না বাসি না৷ আর হঠাৎ ভালোবাসার কথা উঠছেই বা কেনো৷
.
ভালোবাসো না ঠিক আছে৷ আমি অন্য কাউকে বিয়ে করলে সেটা টলারেট করতে পারবে তো৷
.
কেনো পারবনা৷
.
সিরিয়াসলি৷ কিন্তু আমি যে জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো৷
.
মিথ্যা কথা৷
.
তাই৷
.
আবির ওর পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে সেটা অনুর হাতে দিলো অনু কাগজটা দেখেই চমকে উঠলো৷ বুঝতে আর বাকি নাই কী লিখা আছে এই কাগজে৷

এটা আপনি কোথায় পেলেন৷
.
সামান্তার ডায়েরিতে৷
.
অনু কথাটা শুনে জিভে কামড় দিলো৷ সেদিন আবেগের বশে সামান্তার ডায়েরিতেই সব লিখে রেখে চলে আসলো৷

“আমি জানতাম এই কাগজটা কাজে লাগবে তাই সাথে করে নিয়ে এলাম৷
.
অনু কিছু বলছেনা মাথা নিচু করে রেখেছে৷
.
কী হলো৷ দেখো রাগ অভিমান করা উচিৎ ছিলো আমার৷ কিন্তু আমি সব অভিমান দূরে টেলে দিয়ে আবারও তোমার কাছে ফিরে এসেছি তুমি কী এবারো আমাকে ফিরিয়ে দিবে অনু৷
.
অনু আবিরের কথা শুনে মাথা তুলে ওর দিকে তাকিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো৷

“আর কক্ষনো আপনাকে ফিরিয়ে দিবনা৷ আমি যে খুব বড় ভুল করে ফেলেছিলাম আবির৷ আপনার ভালোবাসা যে আমার লাইফে বৃষ্টি হয় নামার মতোই
.
আবিরও অনুকে তার বুকে পেয়ে পরম যত্নে জড়িয়ে ধরলো৷
🍁
আদনান অনেক্ষন যাবৎ সামান্তার পিছন পিছন ঘুরছে কিন্তু সামান্তা আদনানকে পাত্তাই দিচ্ছেনা৷ আদনানের এবার খুব রাগ হচ্ছে।

“এনাফ সামান্তা কী মনে করছিস নিজেকে৷ এতো সময় ধরে তোর সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি কিন্তু তুই আমায় পাত্তাই দিচ্ছিস না৷ হুয়াই৷
.
কেনো পাত্তা দিব৷ পাত্তা দেওয়ার মতো তো একজন আছেই৷ আমাকে আবার কিসের দরকার৷ যে আমার পিছন পিছন আসছো৷
.
আরেকজন মানে৷ কে আরেকজন৷
.
সেটাতো আমার চাইতে তুমিই ভালো জানো৷ কেনো মনে নেই সেদিন যে বলেছিলে৷
.
আদনান এবার বুঝতে পারলো সামান্তার রাগ করার আসল কারন৷

“ও এই ব্যাপার৷ সেটাতো আমি ফান করে বলেছিলাম৷ দেখতে চাইছিলাম সামান্তা রাগ বা জেলাস ফিল করে কী না৷ এবার দেখি রাগ আর জেলাস করে আমার সাথে কথা বলাই বন্ধ করে দিয়েছে৷
.
শয়তান৷

সামান্তা আদনানের বুকে কিল ঘুষি দিচ্ছে আর আদনান খিলখিল করে হাসছে৷

“তুমি হাসছো৷
.
তো কাঁদব নাকি৷ এই কিল ঘুষি দেওয়ার জন্যই তো তুই আমার কাছে এসেছিস৷

আদনানের কথা শুনে সামান্তা পিছিয়ে গেলো৷
🍁
ছোঁয়া আর শ্রাবন ছাঁদে দাড়িয়ে আছে৷ কেউই কোনো কথা বলছেনা শুধু একজন আরেক জনের দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছে৷

“এই এভাবে তাকাচ্ছো কেন৷
.
তুই আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছিস কোনো সেটা বল৷
.
আমি তাকাইনি৷
.
স্ট্রেঞ্জ!!!! তাহলে দেখলি কী করে আমি তোর দিকে তাকিয়ে আছি৷
.
ছোঁয়া এবা কিছু বলতে পারছেনা৷ শুধু আমতা আমতা করছে৷
.
শ্রাবন ছোঁয়ার দিকে এগিয়ে ওসে ওর হাত শ্রাবনের হাতে নিলো৷

“তুই এখনো বুঝতে পারিসনা ছোঁয়া তুই কী এতটাই অবুঝ৷
.
মানে৷
.
মানে আমি তোকে ভালোবাসি ছোঁয়া৷
.
ছোঁয়ার চোখ ছলছল করছে৷ সে শ্রাবনের দিকে একবার তাকিয়ে ওর বুকে মাথা রাখলো৷
শ্রাবন মুচকি হাসছে৷ সে তার উত্তর পেয়ে গেছে৷
🍁
আদিল আর আরুহি তো বিয়ে করার জন্য একপায়ে খাড়া৷

“এট লাস্ট আমরাও বিয়ে করতে যাচ্ছি৷
.
হুম৷
.
তুই তো এটাই চাইছিলিস?
.
আর তুমি বোধহয় চাওনি৷
🍁
আদনান,আদিল,আবির,শ্রাবন ওরা সবাই ড্রয়িং রুমে বসে আছে৷ পাশে বসে আছেন ওদের মা বাবা৷
উনারা আজকেই ওদের এংগ্যাজমেন্ট করিয়ে ফেলতে চান৷ আদিলরা এক এক করে সবাই সবার হবু স্ত্রীদের আঙুলে রিং পরিয়ে দিলো৷

অনুর মা আবিরের মায়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,,

অনুর মাঃতাহলে এখন থেকে আমরা বেয়াইন তাইতো৷এখন থেকে কিন্তু তোমাদের বাড়িতে গেলে বড় বড় মাংসের পিস খাবো৷ শত হোক নিজের ছেলে আর মেয়েদের শশুড় বাড়ি বলে কথা৷
.
আবিরের বাবাঃতুই আবার ছোট ছোট পিস কবে থেকে খাচ্ছিস৷

আবিরের বাবা আর অনুর মায়ের কথা শুনে সবাই হেসে দিলো

____________সমাপ্ত___________

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে