তুমি বৃষ্টি হয়ে নামলে পর্ব-০২

0
2070

#তুমি_বৃষ্টি_হয়ে_নামলে
#পর্ব_২
#Writer_Nusrat_Jahan_Sara

অনু একবার পিছন ফিরে আবিরের দিকে তাকিয়ে চুল নাড়িয়ে চলে গেলো৷

রুমিঃঅনু ওই ছেলেটা তোকে ডাকলো তুই শুনলি না কেন৷
.
ধুর চেনা নাই জানা নাই কী দরকার তার সাথে কথা বলার আর আমি জানি নিশ্চয় অপমান করার জন্য ডেকেছিলো ভালো হয়েছে চলে আসছি৷
.
হুম৷আচ্ছা আমি যে তোর কাছে আমার ডায়েরি দিয়েছিলাম ডায়েরিটা দে৷
.
অনু হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো ওর হাতে শুধু বায়োলজি বই আর আরেকটা খাতা পড়ে আছে৷ ডায়েরির চিহ্নও নাই৷
.
কী রে দে৷
.
আসলে ডায়েরি আমার কাছে নাই তো৷
.
কী করেছিস আমার ডায়েরির?
.
হারিয়ে ফেলেছি মনে হয়৷
.
হারিয়ে ফেলেছিস মানে৷ তুই জানিস ডায়েরির ভিতরে কত টাকা ছিলো৷
.
কত ছিলো৷
.
এক টাকা না দুই টাকা না পাঁচ টাকা ছিলো৷
.
ওহ মাই গড তাহলে তো আমি তোর কোটি টাকা হারিয়ে ফেলেছি যত্তসব৷ চল দেখি আশে পাশেই আছে হয়তো৷

অনু আর রুমি এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে আবার শপিং মলে গেলো৷

“আমার কী মনে হয় জানিস তখন যে তোকে ছেলেটা ডাক দিয়েছিলো সেটা মেইবি ডায়েরির জন্যই ডেকেছিলো হয়তো সেখানেই পড়েছিল৷

অনু আর রুমি বর বড় কদম ফেলে এগিয়ে গিয়ে দেখল ডায়েরি ঠিক সেখানেই আছে৷

অনুঃডায়েরি তো পেয়ে গেছিস এবার চল বাসায় ফিরে যাই৷
🍁
অনু বাসায় ঢুকে দেখলো দুটি ছেলে সোফায় বসে আছে৷ অনু তাদের দেখে এক মুহুর্তে নিস্তব্ধ হয়ে গেলেও পরে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো৷

“ভাইয়া তোমরা কখন এলে?
.
আদিলঃএকটু আগে এসেছি৷
.
তোমরা আজ ফিরছো বললে না যে৷
.
আদনানঃসারপ্রাইজ৷
.
হঠাৎ কেনো ফিরলে কারনটা কী৷

আদিলঃআবির আসলো আর আমরা আসবোনা তা কী করে হয়৷

অনু মন খারাপ করে চলে গেলো৷ সে ভেবেছিলো তাই ভাইরা তাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য এসেছে৷
অনু রুমে গিয়ে দেখলো ছোঁয়া ওর খাটে বসে বসে চিপস খাচ্ছে৷

অনুঃকী তোর না পেটে ব্যাথা তাহলে চিপস খাচ্ছিস যে৷
.
ছোঁয়াঃপেটে ব্যাথা কমে গেছে৷বাই দ্যা ওয়ে তুই এতো তারাতাড়ি চলে এলি যে৷
.
ক্লাস করিনি৷
.
ওহ৷ আজ আমরা সবাই আবির ভাইয়াকে দেখতে যাবো৷
.
তাকে দেখার কী দরকার৷ এতই যখন দরকার তাহলে সে আসুক না আমরা কেন যাব ন্যাকা৷
.
এসব কী বলছিস অনু৷ দেখতে যাব এতে ন্যাকার কী আছে৷ আর হে তুইও যাচ্ছিস৷
.
জীবনেও না৷
.
তাহলে আমিও যাব না৷ তুই তো জানিস তোকে ছাড়া আমি কোথাও যাইনা৷ অনেকদিন ধরে মামার বাসায় যাইনা তাদের দেখিনা৷
.
আমি পারবনা ছোঁয়া
.
তাহলে আমিও যাব না৷
.
ছোঁয়া মন খারাপ করে ফেললো৷ অনু ছোঁয়ার কাঁধে হাত রেখে বললো সে যাবে৷ ছোঁয়া তো।অনুর যাওয়ার কথা শুনে সেই লেভেলের খুশি৷
🍁
আবিরদের বাড়িতে এসে অনুর মনে শুধু ধুকপুক ধুকপুক করছে৷ না জানি কখন আবার আবিরের সামনে পরে যায়৷

অনুঃছোঁয়া সামান্তা আর আরুহি কোথায় ওদের তো দেখছিনা৷
.
জানিনা রে৷ দেখ কোনো রুমেই বসে আছে হয়তো৷
.
অনু দেখে দেখে সিড়ির বাম রুমের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো৷

“সিঁড়ির ডান পাশের রুমে আবির ভাইয়া থাকতো৷ দেখি বাম পাশের রুমে আছে কী না৷

অনু দরজা টেলে রুমে গিয়ে দেখলো রুম একেবারে অন্ধকার৷পাশের রুমের আবছা আলোতে কিছু কিছু দেখা যাচ্ছে৷

“এই দিনের বেলা রুমটাকে কে এতো অন্ধকার করে রেখেছে৷

অনু টেবিলে কাছে গিয়ে দেখলো দুই সেট বই৷ এক সেটে আরুহির নাম লিখা আরেক সেটে সামান্তার।

“তাহলে তো এই রুমে আরুহি আর সামান্তা থাকে৷

অনু আস্তে আস্তে খাটের দিকে এগিয়ে গিয়ে দেখলো কে যেনো কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে আছে৷

“এটাতো নিশ্চিত সামান্তা৷ ওরই দিনের বেলায় ঘুমানোর অভ্যাস৷
.
অনু আর কিছু না ভেবে ব্যক্তিটির পাশে গিয়ে শুয়ে পরলো৷আস্তে আস্তে পিছন থেকে হাল্কা জড়িয়ে ধরলো৷

“সামান্তা এখনো ঘুমাবি নাকি৷ এতোদিন পর তোদের বাসায় আসলাম কোথায় একটু ভালো মন্দ গল্প করবো তা না পরে পরে ঘুমাচ্ছে৷

অনুর হাত গেলো ওর পাশে শুয়ে থাকা ব্যক্তিটির মাথায়৷

“এমা এর দেখি চুল ছোট ছোট তারমানে এটা ছেলে কিন্তু কে এটা৷

অনু লাফ দিয়ে খাট থেকে নেমে জুতা পায়ে না দিয়ে হাতে নিয়ে ভো দৌড়৷

পথেই সামান্তার সাথে দেখা৷

সামান্তাঃকী রে তুই এমন পাগল ছাগলের মতো ছুটছিস কেন৷
.
তুই এখানে তাহলে রুমে কে৷
.
রুমে তো আবির ভাইয়া৷ ভাইয়ার রুমে শ্রাবন ভাইয়া ঘুমিয়ে আছে তাই ভাইয়া আজ আমার রুমে ঘুমিয়েছে৷
.
ওহ ঠিক আছে৷ আচ্ছা রুহি কোথায়
.
ও ছোঁয়ার সাথে ছাঁদে আছে৷
.
অনু সিড়ি বেয়ে নিচে নামছে আর নিজেকে বকাঝকা করছে৷

“ও আল্লাহ গো আমি কী না আবির ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরেছি৷ ওই ক্ষ্যাত কে৷ ছিঃ ছিঃ ভাবতেই কেমন গা গুলিয়ে আসছে৷

আবিরের মাঃকী হয়েছে অনু কী বকবক করছো৷
.
কিছু না মামি৷ এমনি৷
.
আবিরের সাথে দেখা হয়েছে৷
.
না মামি৷
🍁
রাতে~~~~

ছাঁদে একা দাড়িয়ে আছে অনু৷ আর একমনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে৷ বিকেলে এসেছিলো রাত হয়ে গেছে একবারো আবিরের সাথে দেখা হয়নি৷ অনুরও কেন জানি আবিরকে দেখতে খুব মন চাইছে৷ এই প্রথম আবিরদের বাড়িতে এসে সে মন খারাপ করেছে৷ আগে যখন আসতো তখন আবির অনুকে নিয়ে ছাঁদে যেত খেলা করতো ওর জন্য ফুল এনে কানে গুজে দিতো৷ কিন্তু এখন এসব কিচ্ছু নেই৷ ছাঁদে অন্য কারও উপস্থিতি টের পেয়ে পাশে তাকিয়ে দেখলো একটা ছেলে কিছুটা দূরে পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে আছে৷ অনু ছেলেটির দিকে এগিয়ে গেলো৷

“কে আপনি?

কোনো মেয়েলি কন্ঠ শুনে আবির ফিছন ফিরে তাকালো৷

আবিরকে দেখে অনু যেমন শক খেয়েছে তেমন আবিরও৷

চলবে,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে