#তুমি নামক সপ্তর্ষি মন্ডলের প্রেমে💖
#মিফতা তিমু
#পর্ব-২১
কথাটা কর্ণকুহর হতেই আমার সমস্ত ভূমণ্ডল কেপে উঠলো।নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিনা যে কি শুনেছি? আদৌ ঠিক শুনেছি তো?এটা যদি সপ্ন হয়ে থাকে তাহলে এমন দুঃস্বপ্ন আমি চাই না।এটা যেন দুঃস্বপ্ন হয়েই রয়ে যায়, কখনো যেন বাস্তব না হয়।কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এটা বাস্তব।
আমার সঙ্গে সঙ্গে সিক্রেট সিক্সের সবার মাথায়ও বাজ পড়লো।ওরা আমার দিকে বিস্ফারিত দৃষ্টি প্রয়োগ করল।কিন্তু আমার ভুলটা কি যে আমাকে এই কলেজ থেকে রাস্টিকেট করা হচ্ছে।আমি তো এটাই জানিনা যে আমার অপরাধ টা কি?
‘ রাস্টিকেট করার নিশ্চই কোনো কারণ আছে স্যার।মিস আফরিন কি এমন করেছেন যে উনাকে রাস্টিকেট করা হবে। ‘ আমার ভাবনায় ছেদ ঘটিয়ে কথাগুলো বললেন ডাক্তার সাহেব।
ডিন: এখন কি কলেজ থেকে কাউকে রাস্টিকেট করার জন্য আপনাকে আমায় কৈফিয়ত দিতে হবে ডক্টর তাহরীম? আর আমি শুধু আফরিনকেই রাস্টিকেট করছি না বরং আপনাকেও কলেজ থেকে ছয়মাসের জন্য সাসপেন্ড করছি।এই ছয়মাসে আপনি এই হসপিটালের কোনো রোগী দেখা তো দূর এজ এ ডক্টর এই হসপিটালে এন্টারও করতে পারবেন না।
ডিনের এই কথাগুলো যেন ক্লাসরুমের মাঝে প্রচন্ড ঝড়ের সৃষ্টি করলো। ডিনের কথা শুনে সব স্টুডেন্ট একজন আরেকজনের মধ্যে কথা বলা শুরু করেছে আর আমার মাথায় বাজ পড়েছে।আমায় ডিফেন্ড করেছে বলে কি ডাক্তার সাহেব কে সাসপেন্ড করে দিলো? আমার জন্য কি উনাকে এখন চাকরিচ্যুত হতে হবে ?
ডিনের কথাগুলো সবার মাঝে প্রবল উচাটন সৃষ্টি করলেও ডাক্তার সাহেব একেবারেই শান্ত ভঙ্গিতে দাড়িয়ে আছেন।উনার মুখের চিন্তার রেশ মাত্র নেই।উনাকে এত ক্যাজুয়াল ভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ডিন খানিক বিরক্ত হলেন যা উনার চোখে মুখে সরাসরি প্রকাশ পেলো।উনি খানিক বিরক্তি সুরে বললেন,
ডিন: কি হলো ডক্টর তাহরীম? আপনি কিছু বলবেন না?
এবার মুখ খুললেন ডাক্তার সাহেব।ডাক্তার সাহেব বললেন,
তাহরীম: আপনি তো বলেই দিলেন যে আমি আর মিসেস আফরিন দোষী।তারপরও কি বলার থাকতে পারে?
ডিন: নিজের দোষ জানতে চাইবেন না।
তাহরীম: আমাদের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ না দেখেই তো আমাদের দোষী বানিয়ে দিলেন।কোনোকিছু না করার পরও যদি আপনি আমাদের দোষী সাব্যস্ত করেন তাহলে আমাদের দোষ জেনেও বা কি হবে?
আমি ডাক্তার সাহেবের তাল বেতাল কথা শুনে আমার মাথা ঘুরাচ্ছে।আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি উনি ডিন কে রাগাতে চাইছেন।ক্লাস শুদ্ধ সকলে বসে বসে উনাদের এই তর্কবিতর্ক দেখছে আর মিটিমিটি হাসছে।
ব্যাপারটা অনেক দূর গড়াচ্ছে দেখে এবার ফারহান বললো,
ফারহান: স্যার আপনি প্লিজ তাহরীমের কথায় রাগ করবেন না।আমার মনে হচ্ছে আমাদের কোথাও ভুল হচ্ছে।হয়তো কেউ ওদের ফাঁসাতে এরকম একটা ট্র্যাপ বানিয়েছে।
ডিন: ফারহান তোমার বন্ধুর কথা শুনে মোটেও মনে হচ্ছে না যে আমাদের কোনো ভুল হয়েছে।তোমার বন্ধু তো নিজেকে নির্দোষও দাবি করছে না তাহলে কি করে আমরা তাকে নির্দোষ ভাবতে পারি।
ফারহান: কিন্তু স্যার…
ডিন: ডক্টর তাহরীম কে নিয়ে কোনো কথা শুনতে চাই না আমি।আমি যা বলার ডক্টর তাহরীম কে বলবো।তুমি মাঝে একটাও কথা বলবে না। সো ডক্টর তাহরীম তোমার সত্যিই কিছু জানার নেই?
এতক্ষণ ডাক্তার সাহেব ডক্টর ফারহান আর ডিনের কথার মাঝে ফোন টিপছিলেন। ডিন কথাটা বলতেই উনি উনার ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে বললেন,
তাহরীম: ফেসবুকে সম্প্রতি কাল রাতে পাবলিশ হওয়া আমার আর মিসেস আফরিন এর কিছু ক্লোজ পিকচারের জন্যই তো আজ আপনারা এত এন্টারটেইনমেন্ট পেয়েছেন তাইনা?
ডাক্তার সাহেবের কথা কর্ণকুহর হতেই আমার মাথায় বাজ পড়লো।সাথে সাথে আমি ফোন বের করে ফেসবুকে লগ ইন করলাম আর আমার সামনে ভেসে উঠলো আমাদের কিছু হাস্যজ্জ্বল ছবি যা কাল তোলা হয়েছিল যখন আমি আর ডাক্তার সাহেব বাড়ীতে ফিরছিলাম আর্যাল আর আফরার বাড়ি হয়ে।আমি সাথে সাথে উঠে দাড়িয়ে এগিয়ে গেলাম ডাক্তার সাহেবের দিকে আর বললাম,
আফরীন: স্যার…
কিন্তু আমি পুরো কথা বলতে পারলাম না কারণ তার আগেই ডাক্তার সাহেব আমায় হাত দেখিয়ে থামিয়ে দিলেন আর বললেন,
তাহরীম: আপনাকে কিছু বলতে হবে না মিসেস আফরীন।আপনার চরিত্রে যখন আমার জন্য দাগ লেগেছে তখন সবটা খুলে নাহয় আমিই বলবো।
আমি আর কিছু বললাম না।এবার ডাক্তার সাহেব বললেন,
তাহরীম: তো এই ছবিটাই আপনাদের অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকানোর কারণ তাইতো?
ডাক্তার সাহেবের কথায় সবাই কিছু না বললেও তাদের দৃষ্টি দেখেই বুঝে গেলাম ডাক্তার সাহেব যা বলেছেন তাই ঠিক।এবার ডাক্তার সাহেব বাকা হাসলেন তারপর বললেন,
তাহরীম: আপনাদের একটা অনেক বড় বদ অভ্যাস আছে জানেন তো? কোনো উড়ন্ত খবর পেলেই সেটাতে বিশ্বাস করে ফেলেন আর বিশ্বাস করতে আপনাদের প্রমাণও লাগে না।কিন্তু একই ভাবে কেউ যদি বলে যে সে নির্দোষ তাহলে সেটাতে বিশ্বাস করার জন্য আপনাদের প্রমাণ চাই। দেন ফাইন দিবো আমি প্রমাণ।আপনাদের সবার মনে একটাই প্রশ্ন যে আমার আর মিসেস আফরিনের মধ্যে কি সম্পর্ক তাইতো?
আমি ডাক্তার সাহেবের কথা শুনে উনার দিকে বড় বড় চোখে তাকালাম কারণ এখন উনার কথা শুনে ভালই বুঝতে পারছি যে উনি আমাদের সম্পর্ক নিয়ে সবটা প্রকাশ করে দিবেন।কিন্তু আমি তো চাইছি না এমনটা হোক কারণ ডাক্তার সাহেব নিজের মন থেকে নয় বরং বাধ্য হয়ে এমনটা করছেন।ডাক্তার সাহেব সবার উদ্দেশ্যে বললেন,
তাহরীম: আফরীন আর আমার সম্পর্ক আপনাদের ধারণা মতে অবৈধ কিন্তু আদৌ তা সত্যি তো? একবারও জানার চেষ্টা না করেই সবটা বিশ্বাস করে নিলেন।
আফরিন আর আমার অবশ্যই সম্পর্ক আছে আর সেই সম্পর্ক সম্পূর্ণ রুপে বৈধ কারণ আমরা সম্পর্কে স্বামী স্ত্রী।সম্পূর্ণ শরীয়ত মেনে কবুল বলে বিয়ে করেছি আমরা,এমন কি আমাদের বিয়ের রেজিষ্ট্রিও হয়েছে।
ঘরে বাজ পড়লে যতটা না সকলে চমকে উঠতো তার থেকে বেশি চমকে উঠেছে ডাক্তার সাহেবের কথায়।সবাই বিস্ফারিত নয়নে ডাক্তার সাহেবের দিকে তাকিয়ে আছে। বিশেষ করে ডক্টর ফারহান, ডিন আর মির্জা আংকেলের চোখ তো কোটর ছেরে বেরিয়ে আসছে।ডক্টর ফারহান একেবারেই আশা করেন নী যে আমাদের মধ্যে বিয়ের মত একটা সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে।উনার চোখ এতটাই বড় হয়ে গেছে যে মনে হচ্ছে এখন কোটর ছেড়ে বেরিয়ে আসবে।
‘ হোয়াট! তোর আর আফরিন এর বিয়ে হয়েছে! তারমানে আফরিন এর ডাক্তার বর তুই ছিলি যার কথা ও বলেছে? ‘ বিস্ময় সুরে কথাগুলো বললেন ডক্টর ফারহান।
তাহরীম: বিশ্বাস নাহলে আমার সোসিয়াল মিডিয়া একাউন্ট এ যেতে পারিস।তাছাড়া সোসিয়াল মিডিয়ার যেই গ্রুপ থেকে আমাদের ছবিগুলো ভাইরাল হয়েছে সেখানেও যেতে পারিস।আমি আমার আর আফরিনের বিয়ের ছবি ছেড়েছি।
ডাক্তার সাহেবের কথা শুনে একেকজন মোবাইল হাতে নিল হয়তো ছবি দেখার জন্য।আর এইদিকে ডক্টর ফারহান তো ডাক্তার সাহেবের কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেছেন।উনার মুখ রীতিমত বিস্ময়ে হা হয়ে গেছে।
এবার কলেজ ডিন যেন লজ্জায় মাটিতে মিশে যাচ্ছেন।উনি ভালো করেই বুঝতে পেরেছেন যে বড্ড ভুল করে ফেলেছেন কোনো প্রমাণ না দেখে সততা যাচাই না করে কথা বলাতে।উনি আমতা আমতা করে বললেন,
ডিন: আসলে ডক্টর তাহরীম আপনাদের ছবিগুলো কে যেভাবে ছাড়া হয়েছে সেভাবে ভাবার মতো একটুও সময় পাইনি। আই এম সরি যে আপনাকে এভাবে হ্যারাস হতে হলো।আমি আমার ভুল স্বীকার করছি,আমি আমার দুর্ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চাইছি।
তাহরীম: ক্ষমা চাইলেই সবসময় ভুল শুধরে যায় না।আপনি প্রমাণ না দেখেই সবটা বিশ্বাস করে নিয়েছেন যার জন্য আজ আমার ওয়াইফ কে আর আমাকে হ্যারাস হতে হলো।আমার ওয়াইফ এক বছর আগেই কলেজ চেঞ্জ করেছে তাই আবার কলেজ চেঞ্জ করলে ব্যপারটা খারাপ দিকে যাবে।আফরীন কলেজ না ছাড়তে পারলেও আমি তো পারব ছাড়তে।ছয়মাস পর কেন আপনাকে আর কখনোই আমার মুখ দেখতে হবে না।আমি আজই রেজিকনেশন লেটার দিয়ে দিবো।
ডিন: দেখুন ডক্টর তাহরীম আমি বুঝতে পারছি আপনাকে পুরো কলেজের সামনে অপমানিত হতে হয়েছে কিন্তু আমি সত্যি তার জন্য দুঃখিত।আমি আপনাকে এসিওর করছি যে এই ভুল আর হবে না।ছবিটা কে ছেড়েছে সেটা খুঁজে বের করে তার বিরুদ্ধে প্রপার অ্যাকশন নিবো কিন্তু দয়া করে হসপিটাল ছাড়বেন না আপনি।
তাহরীম: দেখুন স্যার আমি একটা কথা বারবার বলি না তাই আপনাদের রিকোয়েস্ট আমি রাখতে পারবো না।এমনিতেই অনেক হ্যারাস হয়েছি।এতকিছুর পরও এখানে থাকলে সেটা আমার আত্মসম্মানে আঘাত করবে,আমি পারলে আফরিনকেও ট্রান্সফার করতাম কিন্তু আফরিন এর জন্য এই কলেজ থেকে ভালো কলেজ আমার মনে হচ্ছে না আর হবে তাই আমি ওর কলেজ চেঞ্জ করলাম না।তবে এতসব কিছু পরও এই কলেজে থাকা আমার জন্য অসম্মানের ব্যাপার হবে…
—
সারাদিন কলেজ শেষে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে ফ্রেশ না হয়েই ধপ করে বিছানায় শুয়ে পড়লাম।আজ অনেক ধকল গেছে শরীরের উপর দিয়ে। পাগুলো ব্যাথায় টনটন করছে।আজ এক ফ্লোর থেকে অন্য ফ্লোরে করে করেই কেটে গেছে।আজ পুরো দৌড়ের উপরে ছিলাম।অনেকক্ষন শুয়ে থাকার পর সোজা হয়ে উঠে বসলাম।
হঠাৎ কেউ মুখের সামনে ধোঁয়া উঠা কাপ ধরলো।আমি অবাক চোখে কাপ ধরা ব্যক্তির দিকে তাকালাম।মানুষটা আর কেউ নয় বরং ডাক্তার সাহেব।উকিঝুকি দিয়ে দেখলাম কাপে কফি আছে।ডাক্তার সাহেব আমায় ইসারা করলেন কাপটা ধরতে।আমি হাত এগিয়ে দিয়ে কাপটা হাতে নিতেই উনি সন্তপর্নে আমার পাশে বসলেন।
ডাক্তার সাহেব সকালে সেই ঘটনার পরেই হসপিটালে ইস্তফা দিয়ে চলে আসেন। ডিন আর বাকি ডক্টররা অনেক রিকোয়েস্ট করলেও উনি উনার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন কারণ উনি মরে গেলেও নিজের আত্মসম্মানকে কিছুতেই নিচে নামতে দিবেন না।যেহেতু আমার সকালে ক্লাসের পরও অনেক কাজ ছিল তাই উনি বাড়ি একাই ফিরে আসলেন আর তারপর তো এখন আমি এলাম।
আমি নিঃশব্দে চায়ের কাপে চুমুক দিলাম।কফি দারুন হয়েছে।ডাক্তার সাহেবের রান্নার হাতের প্রশংসা করতেই হবে।উনি রান্নার হাত প্রচন্ড ভালো।উনি আমার কাঁধে হাত রেখে বললেন,
তাহরীম: কি এত ভাবছেন মিসেস আফরিন?
উনার কথা শুনে আমি মুচকি হেসে বললাম,
আফরীন: ভাবছি যে আপনি তো আমাদের কলেজের চাকরি টা ছেরে দিলেন।এখন কি করবেন?
আমার কথায় ডাক্তার সাহেব মৃদু হেসে বলেন,
তাহরীম: কি আর করবো? কিছুদিন বউয়ের সেবা আর বউয়ের সঙ্গে রোম্যান্স করবো।তারপর নাহয় চাকরিতে ঢুকবো আবার।
আমি ডাক্তার সাহেবের কথা শুনে তার দিকে গোলগোল চোখে তাকিয়ে খানিকটা দূরে সরে গিয়ে বললাম,
আফরীন: মানে?
আমার কথা শুনে ডাক্তার সাহেব আমার দিকে খানিক এগিয়ে এলেন তারপর বললেন,
তাহরীম: মানে হলো এত বছর যখন চাকরি করেছি এখন নাহয় একটু আরাম আয়েশ করি।আমার সদ্য বিবাহিত বউয়ের সেবা করি।
আমি উনার কথা শুনে চোখ দুটো ছোট ছোটো করে একবার উনার দিকে তাকিয়ে কফি মগটা সাইড টেবিলে রেখে উঠে দাড়ালাম।একটু গোসল করতে হবে।আমি উঠতেই ডাক্তার সাহেবও উঠে দাড়ালেন তারপর আমার গায়ের থেকে কলেজের ব্যাগটা খুলে নিয়ে সেটা জায়গা মত রাখলেন।আমি আয়নার সামনে গিয়ে গলার স্কার্ফ খুলে চুলের জট ছুটাতে ছুটাতে বললাম,
আফরিন: আজ সুশি কে দেখছি না যে।
তাহরীম: ও মা আর নিহার সঙ্গে বসে বসে টিভিতে মুভি দেখে।
আমি ডাক্তার সাহেবের কথা শুনে তার দিকে অবাক দৃষ্টি প্রয়োগ করলাম আর সেটা দেখে উনি বললেন,
তাহরীম: বিশ্বাস নাহলে নিচে গিয়ে দেখতে পারো।
আফরিন: এখন আমার নিচে গিয়ে দেখার মত শক্তি একেবারেই নেই।আমি এখন গোসল করে ঘুম দিবো।
তাহরীম: তাহলে রাতের খাবার কখন খাবে?
আফরিন: পরে উঠে খেয়ে নিব বলে আমি বাথরুমে ঢুকে গেলাম।
আমার গোসল সেরে বের হতে হতে আধা ঘণ্টা লেগে গেলো।মাথায় টাওয়েল পেঁচিয়ে সদ্য ধোয়া কাপড়গুলো হাতে নিয়ে বেরিয়ে এলাম।গায়ে ওড়না জড়িয়ে বারান্দায় এলাম।বারান্দায় আসতেই চোখ গেলো ডাক্তার সাহেবের দিকে।ডাক্তার সাহেব বারান্দার কোনায় দাড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছেন।উনি আমাকে দেখেও কিছু বললেন না।আমি উনাকে পাত্তা না দিয়ে কাপড় মেলতে লাগলাম।কাপড় মেলে ডাক্তার সাহেবের দিকে এগিয়ে গেলাম।
হঠাৎ তাহরীমের মুখ থেকে কেউ সিগারেট কেড়ে নেওয়ায় তাহরীম অবাক চোখে তাকায় সেইদিকে।ওর চোখে পড়ে আফরিনের হাতে সিগারেট।এবার আফরিনের মুখের দিকে দৃষ্টি দেয় তাহরীম।আফরীন কে দেখে একটু ঘাবড়ে যায় কারণ আফরিন এর মুখ পুরো লাল হয়ে গেছে।এমনিতেই আফরিন ফর্সা আর সেই ফর্সা মুখে রক্তিম আভা লজ্জার নয় ক্রোধের।
আমি সিগারেট হাতে নিয়ে রাগে কাপতে কাপতে বললাম,
আফরিন: ডাক্তার সাহেব আজ খেয়েছেন খেয়েছেন।এরপর যদি আর খেয়েছেন দেন আই সয়ের আমিও এখন থেকে সিগারেট খাওয়া শুরু করবো।আপনি কি চান আমি সিগারেট খাই?
তাহরীম: মাথা কি আপনার ঠিক আছে মিসেস আফরিন? আপনি সিগারেট খেতে চাইছেন?
আফরিন: কেন আপনি খেতে পারলে আমি কেন খেতে পারব না।আপনি সকালে ওই সিগারেট খাওয়া মুখে আমায় কিস করতে আসছিলেন।খেয়াল আছে? ইউ নো হোয়াট আই হেট সিগারেট।আপনি যদি আর কোনোদিন খেয়েছেন তাহলে আমিও সিগারেট খাবো বলে দিলাম আর জান্নাতুল আফরিন যা বলে তাই করে সো বি কেয়ারফুল বলেই আমি সিগারেট টা নিচে ফেলে পায়ে থাকা স্লিপার দিয়ে সেটা মাড়িয়ে গুঁড়ো গুঁড়ো করে ধুপধাপ পায়ে ঘরে চলে এলাম।
~ চলবে ইনশাল্লাহ্