#তুমি_নামক_অক্সিজেন
#পর্ব_৬
Tahrim Muntahana
বাড়িতে এক হুলস্থল কান্ড। উৎসব উৎসব ব্যাপার। বাড়িতে এসেই সবাই খেয়ে দেয়ে কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে সবাই একসাথে হৃদানদের বাড়ি চলে গেল তিনদিনপর বিয়ে। আগের দিন গায়ে হলুদ। মধ্যে একদিন সময় কত কাজ বাকি। হৃদানের পাশের ঘরে হৃদিতা আর রিয়া থাকবে তার পাশেই রোহানী রাইসা রাহি থাকবে আনহার সাথে। সোহান আর সাগরের সাথে আধির আর সাহিল থাকবে। হৃদান তো খুব খুশি তার হৃদপরীর সাথে থাকতে পারবে। হৃদিতাও খুব খুশি ও কত প্লেন করে রেখেছে ওর হৃদরাজকে জ্বালাতে। পরদিন বাড়িটা খুব সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে। সবাই এদিক ওদিক ছুটোছুটি করছে। হৃদান চৌধুরীর বোনের বিয়ে ধুমধাম না হয়ে কি পারে। এর মধ্যে প্রেস মিডিয়া খবর পেয়ে চলে এসেছে হৃদানদের বাসায়। এত কাজের মধ্যে এই প্রেস মিডিয়ার জ্বালা মেজাজ টা বিগড়ে দিলো। তাও মেজাজ টা আবাদত ঠান্ডা করে ঠিকঠাক হয়ে গেল বসার ঘরে। সেখানে রিপোর্টার দের বসতে বলেছে। রিদিমা চৌধুরী পরশী চৌধুরী মিলে তাদের আপ্যায়ন করছে। তারাও খুব সন্তুষ্ট এরকম আপ্যায়ন পেয়ে। সচারচর বড়লোকরা এত ভালো না। হৃদান আসলো রিপোর্টার মেয়েরা জাস্ট হা হয়ে আছে। উপর থেকে হৃদিতারা সব লক্ষ্য করছে। হৃদিতির তো রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে।
আসসালামু আলাইকুম
ওয়া আলাইকুমুস সালাম স্যার কেমন আছেন
I am fine. যা প্রশ্ন করা প্লিজ একটু তাড়াতাড়ি করেন কারণ বুঝতেই পারছেন বাড়িতে বিয়ের আয়োজন চলছে কত কাজ
জি জি অবশ্যই স্যার আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ব্যস্ততার মাঝেও আমাদের সময় দেওয়ার জন্য। প্রথম প্রশ্ন হলো লন্ডনের মতো এত রিচ দেশ ছেড়ে বাংলাদেশের বিজনেস কেন করবেন
আর কত বাইরে থাকবো বলুন। পরিবার ছাড়া থাকা যায়। আর লন্ডনের বিজনেস এখনো চলছে। বাংলাদেশও ছিলো যেটা পাপা সামলিয়েছে এখন থেকে আমি দেখবো
আর কি যাবেন না লন্ডন। না মানে একে বারেই চলে এসেছেন
জি আর যাবো না। এখন থেকে পরিবেরের সাথেই থাকবো
স্যার এটাই শেষ প্রশ্ন। আপনার সকল বিজনেস নেইম হৃদতান কেন
আমার অক্সিজেন তাই
মুচকি হেসে বলল হৃদান। হৃদানের উত্তর শুনে হৃদিতার মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠে।
মানে বুঝলাম না
বুঝবেন সময় হলে
তার বিয়ে কবে করছেন
আল্লাহ চাইলে সামনেই হবে আশারাখি
স্যার মেয়ে পছন্দ করা আছে
হ্যাঁ অনেক আগে থেকেই। এই ব্যাপারে পরে জানতে পারবেন
স্যার দেশের নামকরা MH ভার্সিটিতে হৃদতান নামে একটি দল আছে। শুনেছি দল টার লিডার একজন মেয়ে আপনাদের কারো সাথে কি এই দলের লিঙ্ক আছে। দলটা অনেক ভালো ভালো কাজ করে। এতিমদের সাহায্য বখাটের শিক্ষা বিভিন্ন সেবামূলক কাজ।
রিয়েলি আমাকে দেখতে হচ্ছে ব্যাপারটা
পাশ দিয়ে রাহি আর রাইসা যাচ্ছে রান্না ঘরে তখনি একটি রিপোর্টার মেয়ে ওদের দেখে চিনে ফেলে।
এই এই এইতো হৃদতান দলের সদস্য। আপনারা এইখানে। স্যার আপনি যে বললেন আপনার সাথে কোনো লিঙ্ক নেই
রাইসা রাহি তো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে। কি হবে এখন। হৃদান তো ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। এই খবরটা ও জানে না। পিয়াসকে দিয়ে সব খবর রাখতো। ভাবছে পিয়াস কি তাহলে জানতো না।
তোরা হৃদতান দলের লোক লিডার কে তোদের -হৃদান
মা মা মানে -রাহি
আমতা আমতা করছে রাহি উপর থেকে সব দেখছে হৃদিতা। এখন না গেলে সব কেওল হয়ে যাবে তাই দৌড়ে নিচে নামল। ওকে দেখে তো রিপোর্টার রা আরো অবাক।
আরে হৃদিতা মেম আপনি এখানে -রিপোর্টার
আমার মামুনির বাড়ি আমি থাকবো না
মানে হৃদান চৌধুরী আপনার কি হয় – রিপোর্টার
কাজিন
মেম শুনলাম আপনি এইবার দৌড়ের পাশাপাশি বাস্কেটবল ও খেলবেন -রির্পোটার
আপনারা হৃদান চৌধুরীর ইন্টারভিউ নিতে এসেছেন নাকি আমার
আবব মেম সরি -রির্পোটার
সময় হলে আপনারাই জানতেই পারবেন।এখন আসুন দেখতেই পারছেন বিয়ে -হৃদিতা
রিপোর্টার রা চলে গেল। হৃদান এখনো ভ্রু কুচকে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। ওরা ওইখান থেকে তাড়াতাড়ি চলে গেল ধরা পড়ে যাবার ভয়ে।
একটুর জন্য ধরা খেয়ে যেতাম -রাহি
তোর কি মনে হয় হৃদরাজ থেমে থাকবে যেকোনো ভাবে খবর নিবেই -হৃদিতা
এখন কি হবে -রাইসা
এক কাজ কর পিয়াস ভাইয়াকে ফোন দে -হৃদিতা
আচ্ছা ওয়েট এখানে আসতে বলি -রোহানী
রোহানী পিয়াসকে ফোন দিয়ে আসতে বলল। পাঁচ মিনিটের মাথায় চলে আসলো। দূর থেকে একজন যে ওদের ফলো করছে তার খেয়াল ই করে নি। কিন্তু বেশ দূরে থাকাই কথা শুনতে পারছে না ভালো করে। তাও ঘাপটি মেরে থাকলো যদি শুনতে পারে।
কি হয়েছে রহু। এত জরুরী তলব -পিয়াস
ওই রিপোর্টার মহিলা তো সব বানচাল করে দিয়েছে। আমাদের দলের নাম টা বলে দিয়েছে হৃদান ভাইয়ার সামনে। এখন সে কি বসে থাকবে -রোহানী
ভাইয়া হৃদরাজ কোনো ভাবেই যেন এসব না জানতে পারে। বিশেষ করে আমার কথা -হৃদিতা
আরে রিলেক্স হৃদি হৃদান ভাইয়া খোঁজ নিলে তো পিয়াস ভাইয়া কেই বলবে -আধির
হ্যাঁ পিয়াস ভাইয়া সব সামলে নিবে কি তাইতো -সাহিল
আচ্ছা বনু তুই এত টেনশন করিস না মে হো না -পিয়াস
তাহলে বাঁচা গেল -রাহি
আচ্ছা এখন আমি যাই। অনেক কাজ বাকি। হৃদান এখানে আমাকে দেখলে সন্দেহ করবে -পিয়াস
পিয়াস চলে গেল। পিয়াসকে চলে যেতে দেখে উকি দেওয়া লোকটাও চলে গেল। আর ওরা আলোর ঘরে গিয়ে আড্ডা দেওয়া শুরু করল। লাঞ্চের টাইম হয়ে এলো বড়রা সবাই নিচে ডাকলো। সবাই গেল কিন্তু হৃদিতা যাচ্ছে না। কারণ পরশ এখনো আসে নি। ওর বন্ধুরা জোর করে নিয়ে গেল। সবাই খাচ্ছে কিন্তু হৃদিতা বসে আছে।
হৃদি খাচ্ছো না কেন -পিয়াস
খাবো না -হৃদিতা
কেন -হৃদান
এমনি -হৃদিতা
এমনি মানে তাড়াতাড়ি এখানে আয় হৃদপরী আমাকে রাগাস না -হৃদান
ভাইয়ু এখনো আসেনি তো -হৃদিতা
ভাইকে ছাড়া খাওয়া যাবে না -পিয়ানি
নো লাঞ্চে সবসময় আমাকে আমার ভাইয়া খাইয়ে দেই -হৃদিতা
আয় আজকে তোকে আমি খাইয়ে দিবো -হৃদান
হৃদানের কথা শুনে তো হৃদিতার চোখ বড় বড় হয়ে গেছে বলে কি। আর সবাই মুখ টিপে হাসছে পিয়ানি তো দাঁতে দাঁত চেপে সব কিছু সহ্য করছে।
না আমি ভাইয়ু আসলে ভাইয়ুর হাতেই খাবো -হৃদিতা
হৃদিপাখি হৃদান বলছে যখন খাইয়ে দিবে খেয়ে নাও। আমি রিয়ুপাখি আর নাশুকে কে খাইয়ে দিই আজকে -পরশ আসতে আসতে বলল
হৃদিতা কি যেন ভাবলো পরে পিয়ানির দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে রাজি হয়ে গেল। হৃদান ডাইনিং এ না বসে সোফায় বসে সামনে একটা টি-টেবিল। হৃদিতা গিয়ে টি-টেবিলের উপর পা তুলে বসল। তার পাশেই রিয়া নাশিন পরশ বসল। ওদের কে এইভাবে দেখে আলো বলল
বারে আমরা কেউ না বুজি শুধু ওদের কেই খাইয়ে দিচ্ছো
আয় তোরাও আয় একসাথে খাইয়ে দিবো সবাইকে -হৃদান
আলো আর আনহাও গিয়ে বসে পড়লো ওদের সাথে। পরশ হৃদান দুইজনে সবাইকে খাইয়ে দিতে লাগলো। আর সবাই ডাইনিং টেবিল থেকে দেখছে খাচ্ছে আর মিটিমিটি হাসছে। আজকে বাড়িতে সত্যিই জমজমাট। এখন হৃদিতাকে শুধু হৃদান খাইয়ে দিচ্ছে। ইশশ কি যত্ন সহকারে খাইয়ে দিচ্ছে। বিদেশে কি কি মজার ঘটনা হয়েছে এসব বলছে হৃদিতা খিলখিল করে হাসছে। তা মন্ত্র মুগ্ধের মতো কয়েকজন দেখছে। আজকের মতো খুশি হৃদিতাকে কখনো দেখি নি কেউ। সবার সাথে থাকলেও মুখের মাঝে একটা গাম্ভীর্য ভাব থাকতো। হৃদিতা পরশের হাতেও খেয়েছে। পরশের হাতে না খেলে শান্তি লাগে না। এমন সময় ঘটলো আরেক বিপত্তি। হৃদান শেষের এক লোকমা ভাত যখনি হৃদিতার মুখে দিতে নিবে তখনি কই থেকে একটি মেয়ে এসে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় টি-টেবিল থেকে। আকস্মিক ঘটনায় সবাই খাওয়া থেকে উঠে দাঁড়ায়। হৃদিতা পড়ে গিয়ে পায়ে টেবিলের কোনা বেজে ব্যাথা পেয়েছে।
এই তোর সাহস হয় কি করে আমার হৃদানের হাত খাওয়ার। ও সামনে ভালো ছেলে দেখলি আর ওমনি লাফিয়ে উঠলি। আমার হৃদানের দিকে তাকালে তোকে আমি মেরেই ফেলবো
এই বলে যখনি হৃদিতার দিকে এগোতে যাবে তখনি ওর হাত ধরে ঠাসসস করে চড় বসিয়ে দেই হৃদান। মেয়েটি হৃদানের দিকে তাকিয়ে আতকে উঠে। মুখটা পুরো হিংস্র লাগছে। আর সাহস হয় না মেয়ের। প্রত্যেকটা মানুষ রেগে আছে বর্তমানে। হৃদিতা সবার প্রাণভোমরা বলতে গেলে। পরশ নিজের রাগ আর কন্ট্রল করতে পারলো না। নিজেও ঠাসস করে আরেকটা থাপ্পড় দিয়ে বসলো। তাও রাগ কন্ট্রল হচ্ছে না। টেবিলের উপর থেকে পানির গ্লাস টা নিয়ে আছাড় মারল। বাড়ির সবাই কেঁপে উঠল। বিয়ে বাড়িটা মুহূর্তেই থমথমে হয়ে গেল। সবাই কাজ রেখে দাড়িয়ে আছে। নাশিন আনহা আগেই গিয়ে তাড়াতাড়ি হৃদিতা উঠিয়ে সোফায় বসে আছে। ও ব্যাথা পেলেও দাঁতে দাঁত চেপেও বসে আছে। কথাগুলো মনে করেই রাগ লাগছে। ওর কানে শুধু একটা কথায় বাজছে আমার হৃদান। আলো বরফ এনে দিলে নাশিন এগিয়ে এসে পায়ে বরফ দিয়ে দিচ্ছে। পরশের এখনো রাগ কন্ট্রলে আসে নি। হৃদান রেগে এক ধ্যানে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটির তো দুইটা থাপ্পড় খেয়ে মাথা ঝিমঝিম করছে তার উপর হিংস্র চোখ দেখে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। এমন সময় একটি মহিলা এসে আহাজারি শুরু করল
হৃদান তুই এই মেয়ের জন্য আমার মেয়েকে থাপ্পড় মারলি। আর এই ছেলে তোমার সাহস কি করে হয় আমার মেয়ের গায়ে হাত দেওয়ার। তোমার নামে আমি মামলা করবো
পরশের রাগটা একটু কম আসলেও মহিলার কথা শুনে ধপ করে জ্বলে উঠল। এই মেয়ে কথাটি শুনে বেশী
আপনার মেয়ে একজন মেয়ে বলে শুধু একটা থাপ্পড় খেয়েছে ছেলে হলে এখন পযর্ন্ত এইখানে দাড়িয়ে থাকতে পারতো না -পরশ
হৃদান তুই এখনো দাড়িয়ে থাকবি কিছু বলছিস না কেন -মহিলাটি
আমার এমনিতেই মেজাজ খারাপ ফুপি তাই আমার রাগটা বাড়ি ও না। আমার রাগ সম্পর্ক ধারণা পেয়েছো নিশ্চয়ই -হৃদান
এমন সময় বাড়িতে প্রবেশ করল আহনাফ চৌধুরী। হৃদানের পাপা।
কি হয়েছে এখানে _আহনাফ
চৌধুরী
দেখনা ভাইয়া তোমার ছেলে আর এই বিয়াদপ ছেলে আমার মেয়েটাকে মেরেছে -মহিলাটি
কেন মেরেছে -আহনাফ
আলো আর আনহা সব ঘটনা খুলে বলেছে আহনাফ চৌধুরীর ও রাগ হয়েছে সেটা তার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে।
মি চৌধুরী আপনার বোনকে আর তার মেয়েকে ভালো করে বলে দিন। আমার হৃদপরীর কাছে যেন না ঘেঁসে। আমার কাছে হৃদপরী সবার আগে। আমার বোনের বিয়েতে যদি কোনো প্রকার ঝামেলা হয় আমি কাউকে ছেড়ে কথা বলবো না -হৃদান
বলেই গেটগেট করে চলে গেল। সবাই বিষ্ময় নিয়ে চেয়ে আছে। শুধু কিছু মানুষ ছাড়া। বাবা কে কেউ মি চৌধুরী বলে ডাকে। আহনাফ চৌধুরীর বুকে তীরের মতো বিধলো ডাকটা। তার ভুলের জন্য ছেলেটা তাকে পাপা বলে ডাকে না। সে ধীরপায়ে ঘরের দিকে হাঁটা ধরল। রিদিমা চৌধুরী স্বামীর কষ্ট বুঝতে পেরে সে ও চলল পিছে পিছে। মহিলাটি হলো আহনাফ চৌধুরীর ছোট বোন আখি খান তার মেয়ে হিয়া খান। পরশও অনেক আগেই সেখান থেকে চলে গেছে। পরশের যাওয়া দেখে রাইসাও তার পিছে গেল। না যানি রাগের মাথায় কি করে বসে। হৃদানের বন্ধুরা যখনি হৃদানের কাছে যেতে নিবে তখনি হুট করে হৃদান এসে হৃদিতাকে কোলে নিয়ে উপরের দিকে হাঁটা ধরে। হিয়া রেগে আগুন হয়ে তাকিয়ে আছে কিন্তু পিয়ানির মুখে ফুটে উঠেছে অসহায়ত্ব। হৃদিতা অবাক হয়ে শুধু চেয়েই আছে মুখ দিয়ে কথাও বের হচ্ছে না। পরশী চৌধুরী আর হৃদয় চৌধুরীও মেয়ের পিছে পিছে হাঁটা ধরল। বাড়ির পরিবেশ এখনো থমথমে।
ফুপি তোমাকে একটা কথা বলছি আপুর বিয়েতে কোনো অশান্তি করো না চলো তোমাদের ঘর দেখিয়ে দিচ্ছি -আনহা
আর হিয়া তোমাকে বলছি হৃদিতার পিছনে লেগো না। হৃদিতা চৌধুরী এখানে প্রত্যেকটা মানুষের প্রাণভোমরা। তাই ওর সাথে খারাপ ব্যবহার করো না। ফুপি তুমি তোমার ভাইয়াকেও বলে লাভ নেই কারণ পাপার কাছেও হৃদু চোখের মনি। আর আমার ভাইয়ের রাগ জানোই কেমন। আর পরশ ভাইয়া বোনের একটু মন খারাপ সহ্য করতে পারে সেখানে ওর অসম্মান তো দূরে থাক। নাশিন ভাইয়া পরশ ভাইয়া বোনের জন্য তোমাকে মেরে মাটিতে পুতে দিতেও দ্বিধাবোধ করবে না। আমি তোমাকে ছোট থেকেই চিনি হিয়া তাই সাবধান করলাম। আর যার উপর রাগ সে মুটেও সাধাসিধে ভোলাভালা না যে তুমি ওকে অপমান অপদস্ত করবে আর ও ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদবে। তোমার অবস্থা এমন খারাপ করবে ওর সামনে যেতেই ভয় পাবি -আলো
আলো চলে গেল ওখান থেকে আনহা আখি আর হিয়া খানকে ঘরে দেখিয়ে দিতে গেল। সবার মন টা খারাপ। একটু আগে কত হাসিখুশি ছিলো এরা দুই কুটনি মহিলা আসতে না আসতেই ঝামেলা বাধিয়ে দিয়েছে। সবাই যে যার ঘরে চলে গেল। সবাই কে একটু স্পেস দেওয়া দরকার।
মম এই অপমানের প্রতিশোধ আমি নিবোই নিবো। ছাড়বো না আমি ওই হৃদিতাকে -হিয়া
তুই চিন্তা করিস না। এইবার ভাইয়াকে বলে তোদের বিয়েটা ঠিক করেই ছাড়বো -আখি খান
সত্যি। তারপর আমি এই বাড়ির মানুষ গুলোকে দেখে নিবো। আমাকে অপমান করা বুঝিয়ে দেব এই হিয়া খান কি -হিয়া
আস্তে এত অস্থির হস না -আখি খান
হৃদিতার পায়ের ব্যাথাটা এখন ভালো হয়েছে। হৃদান খুব যত্ন করে মলম লাগিয়ে দিয়েছে। পরশ নাশিন রিয়া সবাই মিলে দেখা করে গেছে। কখন ঘুমিয়ে গেছে টের ই পায়নি। যখন টের পেল তখন দেখলো কয়েক জোড়া চোখ ওর দিকে বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। থরফরিয়ে উঠে বসলো হৃদিতা
তোমরা সবাই এইখানে -হৃদিতা
ঘুম ভালো হয়েছে তো হৃদিপাখি -পরশ
ঝাক্কাস ভাইয়ু -হৃদিতা
পা ব্যাথা করছে হৃদিরানী -নাশিন
না ভাইয়া আই এম ফাইন -হৃদিতা
সত্যি তো হৃদিরানী -রিয়া
সত্যি বলছি রিয়ু -হৃদিতা
সুখ পেলে সবাই ওমন করেই ঘুমাই -সাহিল
কবে যে আমি এরকম সুখ পাবো -রোহানী
বাড়িতে বলব কি -পিয়াস
যাহ শয়তান -রোহানী
তোকে কতক্ষন ধরে ডাকছি আর তোর উঠার কোনো নাম গন্ধও নেই -রাহি
কয়টা বাজে এখন -হৃদিতা
রাত ৭ -রাইসা
কিহহ এতক্ষন ঘুমিয়েছে আমি -হৃদিতা
ঘুমাবানা? সুখ পাইলে ঘুম আসবেই -আধির
হইছে এখন চলো সবাই প্লেন করতে হবে কালকের জন্য -পিয়াস
সবাই নিচে চলে গেল। কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে প্লেন করছে কি কি করবে কাল কিভাবে। পিয়ানিও এখন নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু হৃদিতার প্রতি ক্ষোভ আছেই। মাঝখানে হিয়া এসে যোগ দিলো। হিয়া এসেই হৃদানের কাছে বসতে যাবে হৃদিতা একটা শয়তানি হাসি দিয়ে হৃদানের পাশে বসে পড়ে। হিয়া তো পারে খুন করতে। শেষমেষ অন্য জায়গায় বসল। সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তা দেখে হৃদিতা একটা মেকি হাসি দিলো। হৃদিতার বন্ধুরা ঠিকই বুঝেছে তাই ওদের মুখে দুষ্ট হাসি ফুটে উঠেছে।
আচ্ছা গায়ে হলুদে সবাই শাড়ি পড়ব নাকি লেহেঙ্গা -আনহা
পিচ্চি তোকে শাড়ি পড়তে হবে না। শাড়ি সামলাতে পারবি না শেষমেষ দেখা যাবে পড়ে গিয়ে ব্যাথা পাবি -নাশিন
আনহা চট করে নাশিনের দিকে তাকালো সে ও মুচকি হেসে তাকিয়ে আছে। আলো পর্যবেক্ষন করছে সব।
সেটা একান্তই আমার ব্যাপার। আমি শাড়িই পড়বো। এখন নিজেকে ঠিক ভাবে সামলে নিতে শিখেছি আশা করি পড়ে যাবো না -আনহা
আনহার কথা শুনে নাশিনের বুকটা হু হু করে উঠলো। ইশশ এই পিচ্চিটার ছোট্ট হৃদয়ে খুব বড দুঃখ দিয়ে ফেলেছে। পিচ্চিটা কত বড় বড় কথা বলছে। কেউ না বুঝলেও হৃদিতা আলো বুঝেছে ব্যাপারটা। হৃদিতা মুচকি হাসলো। ওর এই হাসিতে যে রহস্য আছে।
চলবে….?