#তুমি_কে?
লেখকঃ আবির খান
পর্বঃ ০৭
তুবা কফি হাতে বারান্দার দিকে যেতেই ও যা দেখে তা দেখার জন্য ও মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ও পুরো হা করে তাকিয়ে আছে। কারণ ও দেখে রোহান ওর সিক্স প্যাক বডিটা ফুল উদম করে ব্যায়াম করছে। তুবা এই দৃশ্য দেখে হা করে তাকিয়ে আছে। এদিকে রোহান খেয়ালই করে নি যে তুবা এসে দাঁড়িয়ে আছে। আসলে ও প্রতিদিন সকালে ব্যায়াম করে। তাই আজও বাদ দেয় নি। একটা ছোট খাটো জিম বলা যায় রোহানের বারান্দাটাকে। ও ডাম্বেলটা পাশে রেখে ঘুরতেই দেখে, তুবা হা করে তাকিয়ে আছে। এদিকে তুবা এতক্ষণ রোহানকে পিছন থেকে দেখছিল। কিন্তু এখন পুরো সামনাসামনি দেখছে। রোহানের অস্থির বডি দেখে তুবার অবস্থা প্রায় খারাপ। ও লজ্জায় মরে যাচ্ছে। রোহান দ্রুত ওর পাশে থেকে তোয়ালেটা নিয়ে গায়ে জড়িয়ে মুখ মুছতে মুছতে তুবার কাছে আসছে। তুবার হৃদস্পন্দন বেড়ে আকাশচুম্বী। রোহান ওর একদম কাছে এসে কফির মগটা নিয়ে মুচকি একটা হাসি দিয়ে বলে,
— লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে দেখা হচ্ছিলো তাই না? ভালোই দুষ্ট আছো তুমি।
রোহানের কথা শুনে তুবা লজ্জায় শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ও রোহানের বডির উপর থেকে চোখ সরাচ্ছে না৷ রোহান সেটা বুঝতে পেরে বলে,
— কি দুষ্টু মেয়ে এখনো কিভাবে তাকিয়ে আছে দেখো। এই যে মিস…কই হারালেন আপনি? আমার কথা কি শুনছেন?
এবার তুবার হুশ হয়। ও দ্রুত চোখ নামিয়ে ফেলে। রোহান হাসি দিয়ে কফির মগে একটা চুমুক দিয়ে কিছুটা খেয়ে বলে,
— আহ! একদম মনটা চাঙ্গা হয়ে গেল। দাঁড়াও আরেক চুমুক খেয়ে নি।
এদিকে তুবা আড় চোখে বারবার রোহানকে দেখছিল। রোহানও যে কফি খেতে গিয়ে কৌশলে তুবাকে ফলো করছিল, তুবা তা খেয়ালই করে নি৷ তাই রোহান বলে উঠে,
— যেভাবে দেখছিলে মনে হচ্ছে আগে কখনো এমন ফিটফাট বডি দেখো নি।
তুবা দ্রুত ইশারায় না না বলে। রোহান হাসি দিয়ে বলে,
— ছুঁয়ে দেখবে নাকি? সেই কলেজ লাইফ থেকে ব্যায়াম করে করে এই বডি বানিয়েছি। কি দেখবে?
তুবা খুব খুশি হয়ে রোহানের দিকে তাকালেও আবার লজ্জায় চোখ নামিয়ে আস্তে করে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে। রোহান জোরে হেসে দেয় তুবার কান্ড দেখে৷ আর বলে,
— তুমি আসলেই একটা পাগলি। আচ্ছা দেখো ছুঁয়ে। সমস্যা নেই৷
রোহান চুপচাপ দাঁড়িয়ে কফি খেতে থাকে। আর তুবা আস্তে আস্তে খুব লোভাতুর দৃষ্টিতে রোহানের বডির দিকে তাকিয়ে ওর দিকে এগিয়ে আসছে। একদম কাছে এসে সেই গুতাগুতি শুরু করে। রোহান আর না পেরে বলে,
— তোমার এই গুতাগুতির স্বভাব আর গেল না তাই না। বোকা সুন্দর করে হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখো। এই যে এভাবে।
রোহান তুবার হাত ধরে ওর চেস্টের উপর রাখে। এবার তুবা ওর পুরো হাত দিয়ে রোহানের সিক্স প্যাক বডিটা স্পর্শ করে করে দেখছে৷ ও মনে মনে বলছে,
~ উফফ! কি হার্ড বডি ওনার। একদম পাথরের মতো। ইসস! যদি একটু ভুড়ি থাকতো ভালোই হতো। ঢোল বাজাতাম। কিন্তু এখানে ঢোল বাজালে আমি নিজেই উল্টো হাতে ব্যথা ভাবো। হাহা।
রোহান তাকিয়ে দেখে তুবা মিটমিট করে হাসছে। অসম্ভব মায়াবী লাগছে ওকে। মন চাচ্ছে ওকে জড়িয়ে ধরুক। কিন্তু এখন না পড়ে ধরা যাবে৷ রোহানের খুব ভালোই লাগছে তুবার এই নরম হাতের স্পর্শ। ও মনে মনে ভাবছে,
— হ্যাঁ হ্যাঁ এখন শুধু স্পর্শ করো। বিয়ের পরে তোমাকে দিয়ে প্রতিদিন ম্যাসাজ করাবো। হাহা।
রোহান কফি শেষ করে বলে,
— হয়েছে হয়েছে আর না। বেশি ছুঁলে আমার সিক্স প্যাক নাই হয়ে যাবে৷
তুবা রোহানের কথা শুনে ভ্রুকুচকে ওর দিকে তাকিয়ে কফির মগটা নিয়ে নেয়। আর বলে,
~ আপনাকে ভুড়িওয়ালাই বানাবো আমি।
বলেই রোহানের পেটে একটা মোচড় দিয়ে জোরে দৌড়ে পালায় তুবা৷ রোহান ওকে ধরতে যেয়েও থেমে যায়। আর হাসতে হাসতে বলে,
— আরে পাগলিটা কফিটা অনেক মজা হয়েছে সেটা ত শুনলেই না। খালি দুষ্টামি।
তুবা ততক্ষণে চলে গিয়েছে। রোহান ওর কথা মনে করে হাসতে থাকে। তারপর ও ফ্রেশ হতে চলে যায়। রোহান ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসতেই দেখে ওর ফোনটা বেজেই চলছে। ও দ্রুত রিসিভ করলে অপর পাশ থেকে,
— আসসালামু আলাইকুম স্যার।
— অলাইকুম আসসালাম।
— স্যার আজকে একটু অফিসে আসতেই হবে৷ খুব আর্জেন্ট। কিছু ডকুমেন্টস আপনাকে দেখে সাইন করতে হবে। পাশাপাশি একটা সাইডেও যেতে হবে। আসলে আহসান কোম্পানির লোকেরা নাকি সেখানে সমস্যা করছে।
— হোয়াট! ওকে আমি আসছি। ও অনেক বারাবাড়ি করছে। ওর খবর আছে এবার। (রাগী কণ্ঠে)
— জি স্যার। রাখি তাহলে।
রোহান ফোন কেটে দিয়ে খুব রাগী ভাবে পিছনে ঘুরতেই দেখে তুবা দাঁড়িয়ে আছে ভীতু দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে। রোহানকে রাগী দেখে তুবা ভীতু কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে,
~ কি হয়েছে এত রেগে গেলেন যে? কে কল দিয়েছিল?
রোহান তুবাকে ভীতু আর চিন্তিত দেখে ওর কাছে এসে মুচকি একটা হাসি দিয়ে বলে,
— ও কিছু না৷ অফিসিয়াল কিছু ঝামেলা এসেছে। আমাকে আজ অফিসে যেতেই হবে।
~ ওহ! শুনুন, রাগের মাথায় কখনো কোন কাজ আর সিদ্ধান্ত নিবেন না। নাহলে কখনোই সেটাতে সফল হতে পারবেন না৷
রোহান খুব খুশি হয়ে যায় তুবার কথা শুনে৷ তাই ওর আরও কাছে এসে হঠাৎ করে ওর গাল দুটো ধরে খুব মায়া জড়িত কণ্ঠে বলে,
— একদম পাক্কা বউয়ের মতো কথাগুলো বললে তুমি। ঠিক আছে আমি আর রাগ করবো না। তুমি চিন্তা করো না।
তুবা রোহানের স্পর্শ আর ওকে এত কাছে পেয়ে লজ্জায় লাল হয়ে যায়। ও লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে বলে,
~ আপনি অনেক অনেক পঁচা। খালি লজ্জা দেন আমাকে। তাড়াতাড়ি নাস্তা খেতে আসুন৷ অফিসে যেতে হবে যে।
বলেই ও দ্রুত নিচে চলে যায়৷ রোহান পিছনে দাঁড়িয়ে হাসতে থাকে। এরপর ওরা একসাথে নাস্তা করে। নাস্তা শেষ হলেই রোহান তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে অফিসে চলে যায়। সেদিনের পর টানা এক সপ্তাহ কেটে যায়৷ রোহান ওর অফিসের কাজ নিয়ে এতটা ব্যস্ত হয়ে পড়ে যে তুবার সাথে ঠিক মতো কথাই হতো না৷ যেমনঃ সকাল ৭ টায় বের হতে আর আসতো রাত ১/২ টায়। তুবা রোহানের জন্য অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে যেত। আর সকালে ও উঠার আগেই রোহান নেই। আসলে রোহানের কোম্পানি আহসান কোম্পানির থেকেও অনেক ভালো এবং বড়ো একটা প্রজেক্ট পেয়েছে৷ তাই রোহান সেটা নিয়ে অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কারণ ও চায় না কোন ভাবেই আহসান কোম্পানি ওদের আগে তাদের প্রজেক্টটা শেষ করুক। তাই ও অনেক পরিশ্রম করছে। এদিকে তুবার মন ভীষণ খারাপ। ও রোহানকে অসম্ভব মিস করছে। আজ একসপ্তাহ পর তুবা রোহানকে দেখতে পায়৷ ও রোহানের জন্য হল রুমে সোফাতে বসে অপেক্ষা করছিল। নিলুকে বলেছে আজ ও দরজা খুলবে। নিলু প্রথমে না করলেও তুবার অস্থিরতা দেখে ও চুপচাপ ঘুমাতে চলে যায়। তুবার স্বভাবতই ঘুম অনেক। কিন্তু আজ ঘুমকে উপেক্ষা করেও ও অপেক্ষা করছে রোহানের জন্য। মেয়েটা রীতিমতো একবার ঘুমে পড়ে যাচ্ছে আবার লাফিয়ে উঠছে। এরকম করতে করতে রাত দুটো নাগাদ বাজে৷ তুবার অপেক্ষার প্রহর যেন শেষই হয় না৷ কিন্তু হঠাৎই বাসার বেল বেজে উঠে। ও একলাফে উঠে বাসার দরজা খুলে দেখে রোহান দাঁড়িয়ে আছে। ওকে প্রচন্ড ক্লান্ত আর দুর্বল লাগছে। এই রোহানকে যেন চেনাই যাচ্ছে না। রোহানও তুবাকে দেখে অবাক কণ্ঠে বলে উঠে,
~ একি! তুমি আজ জেগে আছো যে? নিলু কই?
তুবা রোহানের হাত ধরে টেনে বাসার ভিতরে এনে মেইন গেইট লাগিয়ে দিয়ে ওর কাছে এসে ওর দিকে কতক্ষণ তাকিয়ে হঠাৎ করে কেঁদে দেয়। রোহান পুরো বোকা হয়ে যায় ওর কান্না দেখে। তুবাকে ও কিছু বলতে যাওয়ার আগেই তুবা রোহানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে,
~ আপনি নিজের কি অবস্থা করেছেন! একবার আয়নায় দেখেছেন? আমার পঁচা মানুষটা কেমন হয়ে গিয়েছে। আপনাকে আজ কতদিন পর আমি দেখছি জানেন?
কথাগুলো বলতে বলতে তুবা রোহানকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। যেন ও হারিয়ে যাচ্ছে৷ তুবার কান্না দেখে রোহানের হুশ হয়, ও তো ওর আসল মানুষটাকে সময় দিতেই ভুলে গিয়েছে। তুবা কতটা কষ্ট পেয়েছে যে এভাবে ওকে পেয়ে কেঁদে দিয়েছে৷ রোহান তা স্পষ্ট বুঝতে পারছে। ও তুবাকে জড়িয়ে ধরে ওর মাথার পিছনে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে,
— সরি। আসলে কাজে মন দিলে আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলি। আর নিজেকে হারিয়ে ফেলায় আমার একটা বড়ো অংশকেই আমি ভুলে গিয়েছিলাম। আর এমন হবে না৷ প্লিজ তুমি কান্না থামাও।
~ আপনাকে কত মিস করেছি আপনি জানেন? একটু দেখতেও পারিনি। আর কি হাল বানিয়েছেন আপনি নিজের? (রোহানের দিকে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে)
রোহান মুচকি হাসি দিয়ে তুবার চোখ মুছে দিতে দিতে বলে,
— আমার জন্য কখনো কাউকে এতটা চিন্তিত করতে দেখি নি। তুমিই প্রথম।
তুবা এবার লজ্জা পায়। আবেগে ওর ফিলিংস গুলো সব বের হয়ে যাচ্ছিল। তুবা রোহানের কাছ থেকে একটু সরে এসে বলে,
~ আপনি অনেক ক্লান্ত। প্লিজ আগে উপরে চলুন৷ আমি আপনার জন্য জুস বানিয়ে নিয়ে আসি ঠান্ডা ঠান্ডা। আপনার ভালো লাগবে।
— আচ্ছা।
রোহান উপরে গিয়ে দ্রুত ফ্রেশ হয়ে নেয়। আর এই ফাঁকে তুবা ওর জন্য জুস বানিয়ে উপরে নিয়ে আসে। রোহান সোফাতে বসে ছিল। আসলে অনেক বেশি ক্লান্ত ও। তুবা জানে না এই একসপ্তাহে মাত্র ৫ ঘন্টা ঘুমিয়েছে রোহান। অনেক প্রেশারে ছিল ও। তুবা রোহানের হাতে জুসটা দিয়ে বলে,
~ খেয়ে নিন ভালো লাগবে৷
— আচ্ছা। তুমিও বসো।
তুবা রোহানের পাশে বসে। রোহান জুসটা খেয়ে বলে,
— আহ! অনেক রিফ্রেশ লাগছে এখন। থ্যাঙ্কিউ সো মাচ।
~ খাবার নিয়ে আসবো রাতের?
— না না আমি বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি। তুমি আর চিন্তা করো না। এবার ঘুমাও। আমিও ঘুমিয়ে পড়ি।
~ এখানে? সোফায়?
— হ্যাঁ। তো আর কোথায় ঘুমাবো?
তুবা একলাফে উঠে রোহানের কাছ থেকে জুসের মগটা নিয়ে পাশে রেখে দিয়ে রোহানের হাত ধরে ওকে বিছানায় নিয়ে আসে। রোহান অবাক হয়ে যায়। শুধু তাই না ওকে শুইয়েও দেও। রোহান তুবার কান্ড দেখে বলে,
— আরে কি করছো? আমরা একসাথে ঘুমাবো নাকি?
~ না। আজ আমি সোফায় ঘুমাবো। আর আপনি বেডে। অনেক কষ্ট করেছেন আর না৷
— আচ্ছা শোনো না একটা কথা বলি?
~ একশোটা বলেন।
— তুমিও আমার পাশে ঘুমাও৷ আমার গায়ে এতটা শক্তি নেই যে তোমার সাথে উলটা পালটা কিছু করবো। সো ভয় নেই।
~ আপনি অনেক ক্লান্ত তাই না?
— হুম। পুরো শরীর আর মাথাটা অনেক ব্যথা করছে। ঘুমালে ঠিক হয়ে যাবে। চিন্তা নেই।
~ আচ্ছা আমিও একটা রিকোয়েস্ট করলে রাখবেন?
— হুম বলো।
~ কয়েকদিন ছুটি নিন না৷ কাজ কি এখনো শেষ হয় নি? আপনি তো অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন দিন দিন।
রোহান তুবার চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে ও খুব করে ওকে চাচ্ছে। ওর জন্য চিন্তা করছে। তুবা চায় না আর একা থাকতে৷ রোহান মুচকি হাসি দিয়ে বলে,
— ঠিক আছে। যাও নিলাম ছুটি। এমনিও কাজের চাপ শেষ। বাকিটা আমার লোকেরাই দেখতে পারবে৷
~ ইয়াহু। সত্যি বলছেন?
— হ্যাঁ হ্যাঁ।
~ যান এই খুশিতে আমি আপনার মাথাটা টিপে দি।
— আরে না না কি বলছো তুমি ঘুমাও৷ তোমার অনেক ঘুম পেয়েছে জানি।
~ আমার জন্য আপনি অনেক করেছেন। আমি কি এটুকু করতে পারি না?
রোহান বুঝতে পারে ও যদি তুবাকে না করে তাহলে ও অনেক কষ্ট পাবে৷ তাই ও বলে,
— আচ্ছে ঠিক আছে দেও।
~ থ্যাঙ্কিউ। এবার চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকুন আর আমার ম্যাসাজ উপভোগ করুন৷
— ওকে ম্যাম। হাহা।
তুবা খুব যত্ন করে রোহানের মাথা ম্যাসাজ করে দিচ্ছে। রোহানের যে কি ভালো লাগছে তা বলার বাইরে। তুবার নরম হাতের স্পর্শ পেতে পেতে রোহান কখন যেন ঘুমের দেশে হারিয়ে যায়। বেচারা জানে না কাল সকালে ওর সাথে কি হতে যাচ্ছে।
পরদিন সকালে,
রোহান ঘুমের মাঝেই ফিল করে ও খুব নরম একদম তুলার মতো কোন কিছু একটাকে খুব আরাম করে জড়িয়ে ধরে আছে৷ রোহান চোখ না খুলেই হাত দিয়ে সেটার উপর বিচরণ করে বুঝার চেষ্টা করছে আসলে ও কি জড়িয়ে ধরে আছে। রোহান ভাবছে ওর কোলবালিশটা কবে থেকে এত নরম আর উষ্ণ হয়ে গেল? হঠাৎই ও ফিল করে এটা কোলবালিশ না এটা একটা জলজ্যান্ত মানুষ। রোহান ভীষণ ভয় পেয়ে আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকিয়ে যা দেখে তার জন্য ও রেডি ছিল না। ও তুবাকে জড়িয়ে আছে৷ আর তুবার মুখখানা একদম ওর সামনাসামনি। ও যদি একটু সামনে আগায় তাহলেই কাজ শেষ। ওদের মাঝের অপেক্ষিত ঘটনাটা হয়ে যাবে৷ মানে আর সেটা নাই বা বলি। রোহান যে কি করবে বুঝতে পারছে না। নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে। ও এক চোখ খুলতেই তুবার বড়ো বড়ো সুন্দর পাপড়িগুলো দেখছে৷ সাথে ওর গোলাপি ঠোঁটটা। এই একটা জিনিসই রোহানের বারোটা না তেরোটা বাজিয়ে দিচ্ছে৷ ও মনে মনে বলে,
— ইসস! কেউ যদি একটু পিছন থেকে ধাক্কা দিত তাহলে হয়তো আমার কোন দোষ থাকতো না৷ উফফ! ওর কঠিন নেশায় পড়ে যাচ্ছি। ওর কাছ থেকে আসা এই মিষ্টি ঘ্রাণটা আমাকে আরও পাগল করে দিচ্ছে। আমি কি একটু ওকে স্পর্শ করে দেখবো? ও হয়তো টেরই পাবে না৷ জাস্ট একটু।
রোহান দুচোখ মেলে তুবার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে ছিল আর দুঃখ বিলাস করছিল। কিন্তু হঠাৎই তুবার দিক থেকে একটা চাপ আসে। আর সাথে সাথে ওদের….
চলবে…?