#তুমি_কে?
লেখকঃ আবির খান
পর্বঃ ০৩
রোহান পিছন থেকে তুবাকে ধরে একটানে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে। ও চোখ গুলো বড়ো বড়ো করে রোহানের সুন্দর মুখখানার দিকে তাকিয়ে আছে। রোহান আস্তে আস্তে ওর একদম কাছে চলে যায়। ওদের দুজনের মাঝে মাত্র চার আঙুলের দূরত্ব। রোহানকে এত কাছে পেয়ে তুবার হার্টবিট অনেক বেড়ে যাচ্ছে৷ ও জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। তুবা কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে যেই কিছু বলতে যাবে ওমনি রোহান ওর নরম মিষ্টি ঠোঁটে একটা আঙুল রেখে ওকে থামিয়ে দেয়৷ আর তারপরই ও তুবার মুক্তার মতো জ্বলজ্বল করা নয়ন জোড়ার দিকে তাকিয়ে বলে,
— আমি তোমাকে এখানে কখন থাকতে বলেছি? তুমি একটা মেয়ে আর আমি একটা ছেলে। আমাদের একসাথে থাকাটা কখনোই ঠিক হবে না। তাহলে কিভাবে আমি তোমাকে থাকতে দিব? এরচেয়ে তোমাকে তোমার বাসায় দিয়ে আসি। সেটাই ভালো হবে৷
তুবা খুব অস্থির হয়ে মাথা নাড়িয়ে ইশারায় না না করতে থাকে। রোহান তুবার ঠোঁটের ওপর থেকে আঙুল সরালে খুব অনুনয় স্বরে তুবা বলে উঠে,
~ আমাকে প্লিজ এখানে কদিন থাকতে দিন৷ আমি ওই বাসা থেকে কদিন দূরে থাকতে চাই। নাহলে আমি মরেই যাবো।
তুবার মুখে মরে যাবো কথাটা শোনা মাত্রই রোহান ওকে ছেড়ে এক কদম পিছনে চলে আসে। তুবা এই ফাঁকে নিজেকে সামলে নেয়। আর বলে,
~ আপনার এই বাসাটা তো অনেক বড়ো। আমাকে নাহয় আপনার সার্ভেন্টের মতোই রাখলেন। রোহান রাগী ভাবে তুবার দিকে তেড়ে এসে বলে,
— একদম চুপ। সেই কখন থেকে যা তা বলেই যাচ্ছো। আচ্ছা ঠিক আছে থাকো তুমি। তাও উলটা পালটা বলো না তো।
~ সত্যিই আমি এখানে থাকতে পারবো?
— তা ছাড়া আর কোন উপায় আছে? আচ্ছা তুবা..
~ এই এই কি বললেন?
— কি বললাম?
~ আপনি আমার নাম ধরে ডাকলেন?
— হ্যাঁ।
~ প্লিজ আবার ডাকেন তো।
— তুবা..
~ আবার।
— তুবা তুবা তুবায়ায়ায়া…
~ উফফফ! আপনার কাছে আমার নামটা শুনতে অনেক ভালো লাগছে। হিহি।
— তুমি সত্যিই একটা পাগলি। যাই হোক, তোমার পরিবারে কে কে আছে?
~ জেনে কি করবেন? থাক না ওসব।
— তুবা, সেই কাল থেকে তুমি বারবার এড়িয়ে যাচ্ছো। আমার কিন্তু এবার রাগ হচ্ছে। (রাগী ভাবে কথা গুলো বলল রোহান)
~ আচ্ছা বলছি। সবই বলছি। আমার পরিবারে আমি, আমার বড়ো একটা ভাই আর মা আছে। আমার আব্বু নেই৷ সে মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার জীবনটা নরক বানিয়ে ফেলেছে আমার মা আর ভাই। তারা আমাকে একটুও পছন্দ করে না। আমার ভাই আপনার মতো অনেক বড়ো বিজনেসম্যান। কিন্তু আমাকে সবসময় নিম্নমানের ড্রেস পড়ায়। মাঝে মাঝে খেতে দেয় না। আমার সাথে কথা বলে না৷ আমার ভাইয়া ভাবে তার সম্পত্তির দুই ভাগ আমি নিয়ে নিব তাই। আর আমার মাও চায় আমি যেন আর না বাঁচি মরে যাই। সে শুধু তার ছেলেকেই পছন্দ করে। আমাকে বোঝা ভাবে। আমার বাবার বিশাল সম্পত্তি আমার ভাই আর মা দখল করে বসে আছে। তবে আমার বাবা জানতো সে চলে গেলে আমার সাথে ওরা খুব অন্যায় করবে৷ তাই বাবা আগেই সব সম্পত্তি আমার নামে গোপনে লিখে দিয়ে গিয়েছেন। সেটা ওরা এত দিন জানতো না৷ জানলে মেরেই ফেলতো। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত আমার ভাই তা জেনে যায়৷ তাই ওখানে আর থাকতে পারছিলাম না৷ আমার ভাই খুব খারাপ। অনেক খারাপ। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়ে নিজের জীবন বাঁচাতে পালিয়ে এসেছি। সারাদিন রাস্তায় এদিক ওদিক শুধু হেঁটেছি। হাঁটতে হাঁটতে গতকাল অসুস্থই হয়ে পড়ি। বাকিটা তা আপনিই জানেন।
রোহান তুবার কথা শুনে ওর রুমের সোফায় ধপ করে বসে পড়ে দু’হাত মাথায় দিয়ে। ও কল্পনাও করতে পারছে না মানুষ এতটা খারাপ হতে পারে। তাও আবার নিজের পরিবারের! এদিকে তুবাও অনেকটা ইমোশনাল হয়ে পড়ে। রোহান মাথা তুলে তুবার চোখে অশ্রু দেখে দ্রুত ওর কাছে গিয়ে বলে,
— শোনো তোমার আর কোন ভয় নেই।আর কোন চিন্তাও নেই। তুমি যতদিন খুশি এখানে থাকো। কেউ তোমাকে কিছু বলবে না৷ আর হ্যাঁ সার্ভেন্টের মতো নয় নিজের বাসা মনে করেই থেকো।
তুবা খুব খুশি হয়ে চোখ মুছে বলে উঠে,
~ সত্যি বলছেন আপনি?
— হুম।
~ আচ্ছা একটা আবদার করি আপনাকে?
— হ্যাঁ বলো।
~ আমাকে ছবি আঁকা শিখাবেন? আপনি খুব ভালো একজন আর্টিস্ট।
রোহান মুচকি হাসি দিয়ে বলে,
— তোমার ছবি আঁকতে ভালো লাগে?
~ অনেক অনেক বেশি। (অসম্ভব মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে)
— ঠিক আছে আমি ফ্রী থাকলে অবশ্যই শিখাবো। এবার যাও ফ্রেশ হয়ে আসো। নাস্তা খাবে।
~ ঠিক আছে।
তুবা বাচ্চাদের মতো হাঁটতে হাঁটতে ফ্রেশ হতে চলে যায়। রোহানের কাছে তুবাকে খুব ভালোই লাগছে। সত্যি বলতে ও চাচ্ছিলো তুবা এখানেই থাকুক। কারণ তুবার সাথে দেখা হওয়ার পর থেকেই রোহানে মুখে আবার হাসি ফিরে এসেছে। তুবার কথা ভাবতে ভাবতে রোহান বারান্দায় চলে যায়৷ ওর বারান্দাটা অনেক বড়ো। সামনে বিশাল বড়ো খোলা জায়গা। বেশ ভালোই লাগছে ওর। গতকাল এতগুলো টাকার যে লস হলো তা যেন ও ভুলেই গিয়েছিল। হঠাৎই ওর ফোনটা বেজে উঠে,
— হ্যালো…
— স্যার আসসালামু আলাইকুম। আপনি কি রওনা দিয়েছেন?
— অলাইকুম আসসালাম। না, আজকে আমি আসবো না। তুমি একটু দেখে রেখো সব।
— স্যার প্রজেক্টটার জন্য কি এখনো মন খারাপ করে আছেন?
— কোন প্রজেক্ট?
— হায় হায় স্যার! আপনি ভুলে গিয়েছেন? গতকাল আমাদের প্রজেক্টটা যে আহসান কোম্পানি নিয়ে নিল ওইটা।
— ওহ! সত্যিই ভুলে গিয়েছিলাম। আচ্ছা শোনো, আমরা হয়তো অনেক লাভ করতে পারতাম ওই প্রজেক্টটা দিয়ে। আবার ক্ষতিও হতে পারতো। সো হয়তো আমাদের কোম্পানির ভালোর জন্যই আমরা ওই প্রজেক্টটা পাই নি। তুমি আমাদের রানিং কাজ গুলোতে জোর দেও৷
— ওকে স্যার। সত্যিই আপনি অনেক ভালো। ইনশাআল্লাহ আমরা এর চেয়েও ভালো কাজ পাবো।
— হ্যাঁ অবশ্যই৷
— ওকে স্যার আসসালামু আলাইকুম।
— অলাইকুম আসসালাম।
রোহান ফোনটা রেখে দেয়৷ ওর মনটা এখন একদম ফ্রেশ। কারণ ওর মন জুড়ে এখন শুধু তুবার চিন্তা৷ এরপর তুবা ফ্রেশ হয়ে আসলে রোহান ওকে নিয়ে নিচে নাস্তা করতে যায়। নিলু তুবাকে দেখে দ্রুত ওর কাছে চলে আসে। রোহান খাবার টেবিলে বসে। নিলু তুবার কাছে গিয়ে বলে,
~ আপুমনি এখন কেমন আছেন আপনি? জ্বর আছে?
~ না না একদম সুস্থ এখন৷
~ সুস্থ তো হতেই হবে৷ ভাইয়া নিজে সারারাত আপনার সেবা করেছেন। আমাকেও করতে দেয় নি।
তুবা লজ্জা পায়। লজ্জায় ওর পুরো মুখ লাল হয়ে যায়। রোহান সেটা বুঝতে পেরে বলে,
— আহ! নিলু এগুলো বাদ দে। তুবা বসো নাস্তা খাবে।
~ ভাইয়া এমনিই, তার প্রশংসা করলে সে শুনতে চায় না। পরে আমরা আমরা করবো নি।
~ আচ্ছা আচ্ছা। (হাসি দিয়ে)
~ এখন বসেন আমি সবাইকে নাস্তা দিচ্ছি।
তুবা রোহানের পাশের চেয়ারে গিয়ে বসে। আড় চোখে রোহানকে দেখছে ও৷ লোকটা অনেক ভালো। নাহলে ওকে কখনোই থাকতে দিত না৷ হঠাৎ রোহানও তুবাকে আড়চোখে দেখতে গিয়ে ওদের চোখাচোখি হয়ে যায়। রোহান থতমত খেয়ে গিয়ে জোরে বলে উঠে,
— কইরে নাস্তা কই। তাড়াতাড়ি নিয়ে আয়। তুবার নাকি অনেক ক্ষুধা লাগছে৷ আমাকেও নাকি খেয়ে ফেলতে পারে। হাহা।
তুবা হা করে রোহানের দিকে তাকিয়ে আছে ওর কথা শুনে৷ আর রোহান হাসতে হাসতে শেষ। তুবা ভ্রুকুচকে অভিমানী কণ্ঠে বলে,
~ এটা কি হলো?
— কই কি হলো?
~ আমি কখন বললাম আমার ক্ষুধা লেগেছে? আপনাকে খেয়ে ফেলবো?
— বলো নাই কিন্তু বলতে ত পারো। হাহা।
~ এএএ! আপনি অনেক পঁচা। আমি কিন্তু চলে যাবো।
— যাও। গেলে তোমারই ক্ষতি। আর ছবি আঁকা শেখা হবে না৷
রোহান হাসছে আর তুবা গাল ফুলিয়ে বসে আছে। রোহান আবার বলে উঠে,
— আচ্ছা আচ্ছা বাবা সরি। একটু মজা করলাম তোমার সাথে। রাগ করো না।
~ কান ধরে বলেন৷ তাহলে মাফ করে দিব। নাহলে আর কথা নাই আপনার সাথে।
— যাহ! আমি কত বড়ো। আমি কিভাবে কান ধরবো?
~ তাহলে আর কি। আপনার সাথে আর কোন কথা নাই৷ হুহ।
রোহান তো মহা মুসিবতে পড়েছে। তুবা গাল ফুলিয়ে বসে আছে অভিমান করে। কি আর করবে, ভালো লাগার মানুষকে তো আর রাগ করিয়ে রাখা যায় না৷ রোহান অসহায় ভাবে মুখ করে বলে,
— আচ্ছা এই যে ধরছি…
তুবা তাকিয়ে দেখে রোহান ওর কান ধরতে নিচ্ছে। ও খুব হাসি দিয়ে দ্রুত বলে,
~ আরে আরে কি করছেন৷ কান ধরতে হবে না। আমিও মজা করছিলাম আপনার সাথে। হিহি।
রোহান মুগ্ধ হয়ে তুবার হাসি দেখছিল। কি মিষ্টি একটা হাসি। এরমাঝে নিলু শেষমেশ নাস্তা নিয়ে আসে। তারপর ওরা দুজন খুব মজা করে খায়। নিলুকে সবসময়ের মতো ওদের সাথে খেতে বললেও ও খায় না৷ খাওয়া দাওয়া শেষ হলে নিলু রোহানকে বলে উঠে,
~ ভাইয়া আপনি কিন্তু একটা জিনিস ভুলে গেছেন৷
— কি বোন?
~ আপুর তো কোন ড্রেসই নেই। সে এই একটা ড্রেস পরেই আছে গতকাল থেকে।
— সিট! আমার মাথায় তো এটা আসেই নি। তুবা তাহলে একটু রেস্ট নেও। আমরা শপিং এ যাবো।
~ আমার জন্য আপনার অনেক কষ্ট হচ্ছে তাই না? এখন আবার এত গুলো টাকা খরচ করবেন। তবে সমস্যা নেই। আপনার যে টাকা ৫০০০০/৬০০০০ হাজার টাকা আমার পিছনে খরচ করলে আপনার গায়েই লাগবে না। তাই না?
তুবার কথা শুনে রোহান হাসবে না কাঁদবে কিছুই বুঝতে পারছে না। অবশ্য ও ভুল বলে নি। রোহান হাসতে হাসতে বলে,
— মাত্র ৫০/৬০ হাজার টাকা! তোমাকে এর চেয়েও বেশি টাকার আজকে শপিং করে দিব চলো।
~ ইয়াহুউউউ। চলেন চলেন।
এরপর সারে এগারোটার দিকে রোহান আর তুবা শপিং এ বের হয়৷ এদিকে তুবা রোহানকে দেখে পুরো হা করে তাকিয়ে আছে। এত্তো হ্যান্ডসাম লাগছে ওকে। ব্ল্যাক কালারের জিন্স আর ফুল হাতার শার্ট পরেছে ও। হাতাটা আবার রোল করা। হাতে রোলেক্সের ঘড়ি। আর চোখে কালো দামী সানগ্লাস। পুরো হিরোদের মতো লাগছে। তুবাকে এমন দেখে রোহান বলে,
— কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
~ না মানে আসলে…(খুব লজ্জা পাচ্ছে ও)
— আহ! লজ্জা পাচ্ছো কেন? বলো?
~ আপনাকে অসম্ভব হ্যান্ডসাম লাগছে৷
— হাহা৷ আমার চেয়ে তোমাকে বেশি সুন্দর লাগছে বুঝলে। এবার চলো নাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে৷
~ আচ্ছা। (খুশি হয়ে)
— পাগলি একটা।
রোহান তুবাকে নিয়ে ওর পরিচিত একটা ফ্রেন্ডের গার্লস আউটলেটে চলে যায়। ওরা ভিতরে ঢুকতেই রোহানের বন্ধু মানে রুমন এগিয়ে আসে। আর বলে,
— এসেছিস দোস্ত। আয় আয়। তোদের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। এই তাহলে আমাদের ভাবী? ওয়াও দোস্ত! ভাবী তো মারাত্মক সুন্দরী। এত সুন্দরী ভাবীকে কোথায় পেলি?
তুবা রোহানের দিকে আর রোহান তুবার দিকে স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। দুজনেই লজ্জায় শেষ। মুখ দিয়ে কথাই বের হচ্ছে না৷ তুবা লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলে। রোহান কিছু বলতে যাবে ওমনি তুবা ওর হাতটা ধরে বলে,
~ ভাইয়া একদিন বাসায় আসবেন তখন সব বলবেন উনি। এখন আমরা শপিং করি?
— হ্যাঁ হ্যাঁ অবশ্য। এই যা যা ভাবীর যা পছন্দ হয় সেটাই কিনে দিবি কিন্তু। তোদের জন্য স্পেশাল ছাড় আছে।
— আচ্ছা৷
রোহান তুবার পিছনে পিছনে ভয়ে যাচ্ছিল। তুবা ভিতরে গেলে রোহানের দিকে ঘুরে ভ্রুকুচকে রাগী ভাবে ওর দিকে তাকায় আর বলে,
~ আপনার বন্ধু তার ভাবীকে পেয়ে এত খুশি হচ্ছিল। আপনি তাকে কি বলতে যাচ্ছিলেন হ্যাঁ?
— কেন সত্যিটা।
~ আপনার কি মাথা ঠিক আছে? এটা একটা জায়গা এসব বলার? আর কেনই বা বলবেন? আমাকে ছোট করতে চান সবার কাছে?
— না মানে ও তো ভুল বুঝতে ছিল তাই না?
~ তো কি হয়েছে?
— না মানে আমি ভেবেছি তুমি রাগ করবে তাই আরকি..
~ আপনি সত্যিটা বললে রাগ করতাম। আর সে আমাকে আপনার গার্লফ্রেন্ড ভাবলেই কি আমি হয়ে গেলাম? আপনি তো আর ভাবেন না তাই না? তাহলে সমস্যা কোথায়?
— বললে ভাবতে পারি। ( খুব আস্তে করে বলল)
~ এই এই কি বললেন শুনিনি। আবার বলেন ত।
— বলেছি সরি। আর এমন হবে না৷ আজ থেকে তুমি সবার ভাবী। হাহা।
~ গুড বয়। আসুন এবার শপিং করি।
— হুম চলো।
এরপর তুবা বেশি না মাত্র দুটো ড্রেস কিনতে চেয়েছিল। ও বলে অযথা টাকা নষ্ট করবেন না আমার পিছনে। কিন্তু রোহান কোন কথা শুনে নি তুবার৷ অনেক গুলো দামী ড্রেস কিনে দেয় তুবাকে। তুবা রাগ করে মুখ ফুলিয়ে থাকে। আসলে ও মুখে বললেও সত্যি কারে চাচ্ছিলো না রোহানের এতগুলো টাকা নষ্ট করতে। শুধু দুইটা ড্রেসই কেনার ইচ্ছা ছিল ওর। তাও আবার কম দামী। কিন্তু রোহান তো সেই নাছরবান্দা। ও অনেক কিছু কিনে দেয় তুবাকে। এরপর বাসায় রওনা হয় ওরা। তুবা পুরো রাস্তা জুড়ে মুখ ফুলিয়ে থাকে৷ কেন ওর জন্য এতগুলো টাকা রোহান নষ্ট করলো! এরপর ওরা বাসায় আসলে তুবা হল রুমে চুপচাপ বসে থাকে। নিলু ইশারায় জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে। রোহান ওকে ডাক দিয়ে বলে,
— ম্যাম মাত্র দুইটা ড্রেস কিনতে চেয়েছিল তাও আবার কম দামী। তাই আমি জোর করে অনেকগুলো দামী ড্রেস কিনে দেওয়ায় রাগ করেছে। দেখ কি কিউট টাই না লাগছে ওকে। হাহা।
~ ভাইয়া, আপু মনে হয় অনেক রাগ করছে। রাগটা ভাঙানো উচিত।
— হায় হায় বলিস কি।
~ হুম।
রোহান আস্তে আস্তে তুবার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলে,
— আমার সাথে আসো। কথা আছে তোমার সাথে।
বলেই রোহান উপরে ওর রুমে চলে যায়। তুবা নিলুর দিকে তাকায়। নিলু দ্রুত ওর কাছে গিয়ে বলে,
~ যান যান৷ দেখেন কি বলে ভাইয়া।
তুবা চুপচাপ উঠে উপরে রোহানের রুমে গেলেই হঠাৎ করে…
চলবে..?