তুমি আমার প্রিয়তমা পর্ব-১৪

0
1665

#তুমি_আমার_প্রিয়তমা
#লেখিকা_Amaya_Nafshiyat
#পর্ব_১৪

পরদিন,,
মধ্যরাতে অর্থাৎ ফজরের ওয়াক্তে ঘুম ভাঙলো সৌরভের।মূলত ফজরের নামাজ পড়ার জন্যই এই সময় ঘুম থেকে ওঠে সে।তখনও ভোর হয় নি।চোখ খুলে দেখলো প্রিয়তা তার বুকের সাথে একদম লেপ্টে ঘুমাচ্ছে।আলুথালু চুলগুলো মুখের ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।সৌরভ প্রিয়তাকে এমন অবস্থায় দেখে মুচকি হাসলো।
অবশেষে মেয়েটাকে নিজের করে পেল সে।যদিও তেমন একটা কাঠখড় পোড়াতে হয় নি তার।সৌরভ বলে মুসকান এত সহজে বোন বিয়ে দিতে রাজি হয়েছে,অন্য কেউ হলে মোটেও এত সহজে রাজী হতো না সে।

সৌরভ প্রিয়তার কপালের ও মুখের ওপর থেকে চুলগুলো সরিয়ে কানের পিছে গুঁজে দিয়ে কপালে আলতো ভাবে একটি চুমু খেলো।প্রিয়তা তো মরার মতো ঘুমাচ্ছে।কোনো হুঁশ নেই তার।সৌরভ এই আলো আঁধারের মাঝে প্রিয়তার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

কখনো ভাবে নি সে এত জলদি বিয়ে নামক পবিত্র সম্পর্কে আবদ্ধ হবে।কারণ এত এত মেয়ের মধ্যে একটাও পছন্দের মানুষ খুঁজে পায় নি সৌরভ।সে তো ভেবেছিলো তার চাহিদামতো মেয়ে খুঁজে পাওয়া সাংঘাতিক দুষ্কর হবে।অথচ দেশে আসার পরই নিজের মনের মতো একজনকে পেয়ে গেল সে।আশাই করে নি এত জলদি পেয়ে যাবে।তার প্রিয়তমাকে পেয়ে গেছে সে।আল্লাহর কাছে চাইতে চাইতে অবশেষে পেয়ে গেছে।সৌরভ আবারও চুমু খেলো প্রিয়তার কপালে।ওর গলার পাশে হাত রেখে থুতনিতে একটা চুমু খেলো।

একটুপর সৌরভ প্রিয়তাকে আস্তে ধীরে ডাকতে লাগলো।প্রিয়তার গালে আলতো ভাবে চাপড় মেরে আদুরে কন্ঠে বলতে লাগলো;

সৌরভ:-প্রিয়,ও প্রিয়।ওঠো।ফজরের আযান হয়ে গেছে।নামাজ পড়বে না?

প্রিয়তা উম উম বলে কম্বল মুড়ি দিয়ে আবারও ঘুমিয়ে পড়লাে।সৌরভ তার ঠান্ডা ডানহাতটা প্রিয়তার কামিজের ভেতর ঢুকিয়ে পেটের ওপর রাখলো।এবার প্রিয়তা ঘুম ঘুম চোখে পিটপিট করে চাইলো সৌরভের দিকে।পেটের ওপর অনেক ঠান্ডা অনুভব হওয়ায় ঘুম ভেঙে গেছে তার।সৌরভ দাঁত বের করে হাসছে।সৌরভের বা’হাতের তুলনায় ডান হাত অনেক ঠান্ডা থাকে শীতের সময়।

প্রিয়তা:-উম,হাত সরান।প্রচুর ঠান্ডা আপনার হাত।

সৌরভ:-আচ্ছা সরাবো,এখন ওঠে ওযু করে আসো যাও।দুজন নামাজ পড়বো একসাথে।

প্রিয়তা দু চোখ ভালো করে কচলে জিজ্ঞেস করলো;

প্রিয়তা:-আযান হয়ে গেছে?কখন?আমি তো শুনি নি!

সৌরভ:-এমন বেদম ঘুমে থাকলে বাসায় ডাকাত পড়লেও তো কখনো টের পাবে না।(হেসে দিয়ে)

সৌরভের বলা কথা ও হাসি দেখে প্রিয়তা লজ্জা পেল ভীষণ।আসলেই,সে ঘুমে পড়লে দিনদুনিয়ার খবর থাকে না।এতটাই ঘুম পাগলি।প্রিয়তা সৌরভের দাঁড়িতে হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো;

প্রিয়তা:-আপনি গিয়ে ওযু করে আসেন,যান।আপনি আসার পর আমি যাবো।

সৌরভ প্রিয়তার হাতের ওপর হাত রেখে বললো;

সৌরভ:-ঘুমিয়ে যাবে না তো আবার?

প্রিয়তা:-নাহ,ঘুমাবো না,নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।এখন যান।

সৌরভ শোয়া থেকে ওঠে বসলো।পায়ে পমপমের স্যান্ডেল পরে বললো;

সৌরভ:-ওকে।আমি যাই।

সৌরভ ওয়াশরুমে চলে গেল।প্রিয়তা একটু গড়াগড়ি করে শোয়া থেকে ওঠে বসলো।চুলগুলো খোঁপা বেঁধে চুপচাপ বসে রইলো কম্বলের নিচে।সৌরভের বেরোনোর অপেক্ষা করছে সে।কিছুক্ষণ পর সৌরভ বের হতেই সে গিয়ে ঢুকলো।

ওযু করে বের হলো প্রিয়তা।ততক্ষণে সৌরভের নামাজ শেষ।সে লাইট অন করে কোরআন তেলাওয়াত করছে।জায়নামাজ আগে থেকেই বিছিয়ে রেখেছে সৌরভ।প্রিয়তা তার পাশে গিয়ে নামাজে দাঁড়ালো।প্রিয়তার নামাজ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর সৌরভের তেলাওয়াত অফ করলো।কোরআন রেখে প্রিয়তাকে জিজ্ঞেস করলো;

সৌরভ:-আমি হাঁটতে চলে যাই?তুমি নাহয় ঘুমাও!

প্রিয়তা মাথা নেড়ে না জানিয়ে সৌরভের গলা জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা রেখে বললো;

প্রিয়তা:-নাহ,এখন কোথাও যেতে পারবেন না।আপনাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাবো আমি।আহ শীতের সময় বরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর মজাটাই আলাদা।

সৌরভ হেসে ফেললো প্রিয়তার কথা শুনে।সৌরভ কোলে নিয়ে নিলো প্রিয়তাকে।তার নাকের সাথে নিজের নাক ঘষে বললো;

সৌরভ:-আমার একটামাত্র বউয়ের আদেশ আমি কী অমান্য করতে পারি বলো?চলো ঘুমাবো।

প্রিয়তা সৌরভের গলা জড়িয়ে ধরে ওর দিকে হাসিমুখে তাকিয়ে আছে।প্রিয়তা ও সৌরভ দুজন দুজনকে এমনভাবে ট্রিট করছে যে মনে হচ্ছে তাদের দুজনের বিবাহিত জীবন অনেক দীর্ঘ সময়ের।অথচ বিয়ে মাত্র কাল হয়েছে তাদের।সৌরভ প্রিয়তাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে লাইট নিভিয়ে নিজেও পাশে শুয়ে পড়লো কম্বল গায়ে জড়িয়ে নিয়ে।প্রিয়তা দুহাত দিয়ে সৌরভকে জড়িয়ে ধরে তার পুরুষালি গলায় মুখ গুঁজে দিলো।সৌরভ কেঁপে ওঠে এমনতর স্পর্শে।প্রিয়তা অস্পষ্ট স্বরে ঘোর লাগা কন্ঠে বললো;

প্রিয়তা:-সেদিন চাইলে আমি আপনার ঠোঁটে চুমু খেতে পারতাম,বাট আপনার এত সুন্দর আকর্ষণীয় গলাটা আমায় যে ভীষণ টানে।আপনার এই গলায় চুমু খেতে অনেক ভালো লেগেছে আমার।যখন কথা বলেন তখন সবুজ রগগুলো গলায় স্পষ্ট ভেসে ওঠে।যখন হাসেন তখন কন্ঠনালি উঁচু হয়ে থাকে।ইচ্ছে করে একদম কামড়ে খেয়ে ফেলি।

সৌরভ প্রিয়তাকে আগলে নিয়ে আবেশে চোখ বন্ধ করে বললো;

সৌরভ:-ভীষণ অদ্ভুদ তুমি!সেদিনের বাইটের স্পটগুলো এখনো কিন্তু আমার গলায় আছে।

প্রিয়তা:-থাকবে না?আমি দিয়েছি বলে কথা!এখন থেকে প্রতিদিন এমন লাভ বাইটের চিহ্ন আপনার গলায় পাওয়া যাবে।এই গলাটাও অনলি মি করে রেখে দেবো আমি।একান্তই আমার সম্পত্তি।

সৌরভ:-শুধু গলা কেন?এই পুরো আমিটাই তো তোমার!

প্রিয়তা:-হুম,আপনি আমার।তবে কোনো মেয়ে যদি আপনার দিকে অন্য নজরে তাকায় তাহলে তার চোখ গেলে নেবো আমি।

সৌরভ:-আচ্ছাহ ঠিক আছে,এখন ঘুমাও।

প্রিয়তা:-হুমম।

প্রিয়তা সৌরভের গলায় বেশ কয়েকটা চুমু খেয়ে ঘুমিয়ে গেল।এতক্ষণ প্রিয়তার আদর অনুভব করছিলো সৌরভ।অতঃপর প্রিয়তার মতো সেও ঘুমিয়ে গেল।

🖤

সকাল দশটার দিকে ঘুম ভাঙলো প্রিয়তার।ঘুম থেকে ওঠে দেখলো সৌরভ রুমেই নেই।সে একাই ঘুমিয়ে আছে।সৌরভ আসলে সকাল ৯ টায়ই ওঠে গেছে।তবে প্রিয়তা ঘুমোচ্ছে দেখে আর জাগায় নি।বাসার কেউই প্রিয়তা ঘুম থেকে ওঠে নি বলে কিছু বলছে না।কারণ তারা তাদের বাড়ির মেয়ের অভ্যাস সম্পর্কে জ্ঞাত।তবে তাদের মুরব্বি গোছের মহিলা আত্মীয় কয়েকজন খোঁচা দিয়ে প্রিয়তার কথা জিজ্ঞেস করলেন।যদিও প্রিয়তা এসব বিষয়ে কিছু জানে না।জানলে সে নিজেই ডিটারজেন্ট পাউডার ছাড়া ধুয়ে দেবে তাদের।

প্রিয়তা ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশ হয়ে কাপড় চোপড় পাল্টে নতুন একসেট সেলোয়ার-কামিজ পড়লো।অতঃপর মাথায় কাপড় দিয়ে নবাবের মতো রুম থেকে বেরিয়ে এলো।সোজা নিচেই নেমে এলো সে।এত আত্মীয় স্বজন দেখে ওর টনক নড়লো।ও তো প্রায় ভুলেই গিয়েছিল যে কাল ওর বিয়ে হয়েছে।আসলে ছোটবেলা থেকেই তো এখানে আসতো অনেক তাই এখন আর চাইলেও অচেনাদের মতো আচরণ করতে পারছে না সে।আত্মীয়রা প্রিয়তার দিকেই তাকিয়ে আছে।যেন সে ভিনগ্রহের প্রাণী।নিজেকে এলিয়েন মনে হচ্ছে প্রিয়তার কাছে।সে একটু কাচুমাচু ভঙ্গি নিয়ে ডাইনিং রুম পেরিয়ে রান্নাঘরে গেলো।

মিসেস মিনা চা খাচ্ছিলেন।পাশেই মিসেস শিলা,মিসেস জেসমিন,মিসেস প্রমি ও এশা,ইশা, সারা দাঁড়িয়ে ছিলো।রান্নাঘরেও গিজগিজ অবস্থা।সর্বপ্রথম মিসেস মিনার দৃষ্টি প্রিয়তার ওপর পড়লো।তিনি একপ্রকার ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন;

মিসেস মিনা:-ওঠে গেছিস মা?তুই রান্নাঘরে আসতে গেলি কেন?কাউকে দিয়ে বললেই তো আমি তোদের রুমে নাস্তা পাঠিয়ে দিতাম।

প্রিয়তা:-ইয়ে বড়আন্টি,আমার আসলে মনে ছিলো না যে আমি নতুন বউ।তাই তো লাফাতে লাফাতে চলে এসেছি এখানে।

প্রিয়তার বোকা বোকা কথা শুনে হাসির রোল পড়ে গেল রান্নাঘর জুড়ে।হাসতে হাসতে চোখে পানি চলে এসেছে একেকজনের।মিসেস প্রমি মেয়ের মাথায় আলতো চাপড় মেরে বললেন;

মিসেস প্রমি:-বিয়ে হয়ে গেছে,অথচ এখনও বাচ্চামি ছাড়ে নাই।

মিসেস শিলা:-তোর বিয়ে হলেও তুই আমাদের মেয়েই রয়ে গেছিস প্রিয়ু।এখন হুট করে বউ সাজতে হবে না।মেয়ে ছিলি মেয়ে হয়েই থাকবি আজীবন।

মিসেস মিনা:-তুই ডলি বা তানিয়ার রুমে নাহয় চলে যা মা।আমি তোর নাশতা পাঠিয়ে দিচ্ছি।ওদের সাথে গিয়ে আড্ডা দে বরং।যা।

প্রিয়তা মাথা নেড়ে সায় জানিয়ে চুপচাপ চলে এলো।আশেপাশে চোখ বুলিয়েও কোথাও সৌরভকে দেখতে পেল না সে।কোথায় গেল লোকটা?

🖤

আজকে কিছুটা আয়োজন করে বাসার ছাদেই রিসিপশন পার্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে।চাইলে সৌরভ সেন্টারে বড় করে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পারতো।কিন্তু সে প্রায় বেশ অর্ধেক টাকা এতিমখানায় দান করে দিয়েছে।এতে এতিমরা অন্তত একবেলা ভালো খাবার পেটপুরে খেতে পারবে।তার এমন সিদ্ধান্তে প্রায় সব মুরব্বিরাই খুশি।মুসকান তো খুশি হয়ে নিজের কিছু টাকাও এড করেছে এতে।

সৌরভ রিসিপশনের কাজে বাইরে ব্যস্ত ছিলো বিধায় প্রিয়তা তাকে দেখতে পায় নি।প্রিয়তা ডলির রুমে গিয়ে তাদের কাছে বসতেই শুরু হলো রাতে কী হয়েছে?সৌরভ তাকে গিফট করলো?কেমন আদর করলো?হেন তেন সব প্রশ্নের ভান্ডার।প্রিয়তার মাথা ঘুরছে তাদের এসব কথা শুনে।ওরা বয়সে বড় হয়েও কী নির্লজ্জের মতো প্রিয়তার পার্সোনাল বাসর রাতের কাহিনী শুনতে চাচ্ছে!কী লজ্জা কী লজ্জা!প্রিয়তা কানে আঙ্গুল ঠেকিয়ে চুপ করে বসে আছে।একটা প্রশ্নেরও জবাব দিলো না সে।ওরা হতাশ হলো না শুনতে পেরে।

🖤

আজ সারাদিনের মধ্যে সৌরভের দেখা মিললো না।সৌরভ নিজের রিসিপশনের তদারকি নিজেই করছে।সন্ধ্যা হয়ে এসেছে প্রায়।অর্থাৎ শেষ বিকেল।প্রিয়তাকে আজ সারা সাজিয়ে শাড়ি পড়িয়ে দিলো।শাড়ির ওপর বড় একটা কটি পড়তে হয়েছে।সাথে অবশ্যই আছে হিজাব নেকাব।আর যাইহোক,সৌরভের কথা প্রিয়তার দ্বারা অমান্য করা সম্ভব হবে না।

প্রিয়তা সাজগোজ শেষে একা একা নিজের রুমে বসে আছে।বাকিরা রুম থেকে বেরিয়ে গেছে নিজেরা তৈরী হতে।এমনসময় সৌরভ রুমে প্রবেশ করলো।প্রিয়তা সৌরভকে দেখে ওঠে দাঁড়িয়ে কাছে আসলো।সৌরভ প্রিয়তার ওই কাজল রাঙা চোখ জোড়ায় আটকে আছে,অনুভূতিটা সেই প্রথম দিনের মতো।এই চোখের মায়ায়ই আটকে গেছিলো সে ওইদিন।আজও তার ব্যতিক্রম নয়।

আজ প্রিয়তা ডার্ক পার্পল কালারের কালো পাড়ের স্টোনের কারুকাজ করা দামী শাড়ি পড়েছে।এটা সৌরভ কানাডা থেকে কিনেছে।শাড়ির সাথে ম্যাচিং সব পড়েছে,তাকে দেখতে ভীষণ সুন্দর লাগছে।সৌরভের মুগ্ধ হয়ে তাকানো দেখে প্রিয়তা লজ্জা পেয়ে মুচকি হাসলো।সৌরভ প্রিয়তার গাল আলতো ভাবে টেনে দিয়ে বললো;

সৌরভ:-লজ্জা পাচ্ছো কেন?

প্রিয়তা:-আপনি এভাবে তাকাচ্ছেন কেন?

সৌরভ প্রিয়তার দুই বাহু ধরে নিজের কাছে টেনে নিয়ে জবাব দিলো;

সৌরভ:-আজকে আমার বউটাকে যে মারাত্মক সুন্দর লাগছে।তাই এভাবে তাকিয়ে আছি।

প্রিয়তা লজ্জায় লাল হয়ে গেছে পুরো।সৌরভ মুচকি হেসে প্রিয়তার দুইগালে,দুচোখের পাতায়,কপালে ও থুতনিতে চুমু খেলো।শেষে নাকের সাথে নাক ঘষে আদুরে কন্ঠে বললো;

সৌরভ:-ভালোবাসি তোমায় প্রিয়তমা।এভাবেই আমাদের দুজনের টোনাটুনির সংসারে আল্লাহর রহমত নেমে আসুক।দুজন সবসময় এভাবেই একে অপরের পরিপূরক হয়ে থেকে যাবো।ক্লান্তিহীন হয়ে একইভাবে ভালোবেসে যাবো সারাজীবন।

প্রিয়তা:-আমি নিশ্চয়ই কখনো কোনো পূন্যের কাজ করেছিলাম এজন্যই তো আল্লাহ আমাকে এত ভালো মনের একজন মানুষকে আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে পাঠিয়েছেন।এত ভালো ভাগ্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছি আমি জানতামই না।আমিও অনেক ভালোবাসি আপনাকে জামাই।

দুজন কিছু মুহূর্ত একান্তই নিজের মতো করে কাটালো।একটু পর সৌরভ ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে রিসিপশনে পড়ার জন্য ড্রেস পরে এলো।এত হ্যান্ডসাম লাগছে তাকে দেখতে যে প্রিয়তা জাস্ট হা করে তাকিয়ে আছে তার বরের দিকে।আজকে মেয়েরা মনে হয় নজর দিয়ে খেয়ে ফেলবে তার জামাইটাকে।প্রিয়তার সাথে ম্যাচ করে ডার্ক পার্পল কালারের শার্ট আর ব্ল্যাক কালারের শ্বশুর বাড়ি থেকে দেয়া কালো রঙের ব্রান্ডেড স্যুট কোট পরিধান করেছে সে।সাথে ব্যাকব্রাশ করা চুল।চোখে সানগ্লাস,হাতে ঘড়ি,পায়ে শু’জ,হাতের আঙ্গুলে শ্বশুর বাড়ি থেকে দেয়া প্লাটিনামের দামী রিং সবমিলিয়ে জাস্ট ওয়াও লাগছে তাকে দেখে।

সৌরভ প্রিয়তার হাত ধরে নিচে চলে আসে।মেহমানরা পুরো বাসায় গিজগিজ করছে।অনেক মেহমান এসেছে আজ।প্রিয়তা ও সৌরভকে একসাথে এত হাসিখুশি দেখে মুসকানের মনটা খুশিতে ভরে গেছে।এত খুশি সে কোনোদিনও হয় নি।আজ বোনের মুখের হাসি দেখে মনটা তার তৃপ্তিতে পূর্ণ হয়ে গেল।

ভালোয় ভালোয় অনুষ্ঠানটা শেষ হলো।সৌরভ নিজে তদারকি করেছে সবকিছুর।কেউ অসন্তুষ্ট হয়ে যায় নি।সবাই তাদের আতিথেয়তায় খুশি।প্রিয়তা আর সৌরভের অনেক ফটোশুট করা হয়েছে।তাদের শখ অপূর্ণ থাকে নি।অনেক গিফট এবং সালামিও পেয়েছে ওরা দুজন।সেসব তাদের রুমে রাখা হয়েছে।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে