তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_৮

0
2090

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা
পর্ব_৮
#মেঘ_বালিকা
.
.
তাসিন চোখ মুখ শক্ত করে আমার সামনে বসে আছে আর আমি তার অপর পাশে বসে আছি…তখন তাসিন আমাকে টেনে নিয়ে এসেছিলো..সেখান থেকে টেনে এনে আর একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে একগাদা খাবার অর্ডার করে..ও আমার সাথে কোনো কথা বলছে না কিন্তু ওর ফেস দেখে বুঝা যাচ্ছে এই মুহুর্তে ও খুব রেগে আছে তাই আমিও কিছু বলছি না..কিছু বলতে গেলে দেখা গেলো উল্টো ফেসে গেলাম..কিন্তু এতো খাবার ও কেনো অর্ডার করলো!!
অবশেষে নিরবতা ভেদ করে তাসিন বলে উঠলো,,
-শুরু করো..
আমি কিছুটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,,
-কি শুরু করবো??
-খাওয়া শুরু করো..এখানে যা যা খাবার আছে সব খাবে..এবার শুরু করো..
-মা..মানে কি বলছেন আপনি??আমি একা এই সব খাবার খাবো?
-হ্যা তুমিই..এক কথা আমার বার বার বলা পছন্দ না..তাই আর কথা না বারিয়ে শুরু করো…খুব সখ না তোমার ছেলেদের সাথে রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়ার..নেও আজকে তোমার সেই ইচ্ছা টা আমি পূরন করে দিচ্ছি..আজকে এই সব খাবার খাবে তারপর এখান থেকে উঠবে..তার আগে না..(রেগে..)
ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে গেছে তারপর ও শুকনো গলায় বারবার ঢোক গিলছি আমি…
-দেখুন আমি তো…..
আর কিছু বলতে পারলাম না..তার আগেই তাসিন আমাকে এক ধমকে থামিয়ে দিলো…আর চুপচাপ খেতে বললো..ওর রাগি চেহারা দেখে আর কিছু বলতে পারলাম না..একপ্রকার বাধ্য হয়েই খাওয়া শুরু করলাম…
.
বিছানায় একবার শুচ্ছি তো একবার উঠে বসছি..কোনো ভাবেই স্থির থাকতে পারছি না..এতো খাবার একসাথে খেলে যে কারো অবস্থাই এমন হবে..মনে হচ্ছে আমি আজকে মরেই যাবো..গলা অব্দি গিলিয়েছে আজকে..পেট আমার ফেটে যাওয়ার উপক্রম..
কিন্তু আমি একটা জিনিস কিছুতেই বুঝতে পারছি না তাসিন কিভাবে জানলো আমি রিয়াদের সাথে ওই রেস্টুরেন্টে ছিলাম..ওর তো জানার কথাও না..তাহলে কিভাবে জানলো!!!উফফ আর কিছুই ভাবতে পারছি না আমি..আমার দম কেমন যেনো আপ-ডাউন করছে…হঠাৎই আমার ফোনটা বেজে উঠলো..ফারিয়া ফোন করেছে..একরাশ বিরক্ত নিয়েই ফোনটা রিসিভ করলাম..
-ওই ফোন দিছোস ক্যান?
-কিরে তুই এভাবে কথা বলতেছিস কেনো!কি হয়ছে তোর!
-তোর কোনো কথা না থাকলে ফোন রাখ..ফালতু প্যাচাল পারার টাইম নাই..
-আরে তুই রেগে যাচ্ছিস কেনো..আচ্ছা শোন ভাইয়া কী তোকে কিছু বলেছে নাকি?
-কোন ব্যাপারে কি বলবে?
-আরে আজকে আমি যখন ভার্সিটি থেকে বাসায় ফিরছিলাম তখন ভাইয়ার সাথে দেখা হয়েছিলো..সে তোকে খুজছিলো..আর তার একটু আগেই তো তুই ওই রিয়াদে সাথে ভার্সিটির পাশের রেস্টুরেন্টটায় ঢুকে গেলি কতো বার ডাকলাম শুনলিও না..ভাইয়াকে খুজতে দেখে আমিও বলে দিছি তুই ওইখানে গেছিস..ভাইয়াকে দেখে মনে হলো সে এই কথা শুনে বেশ রেগে গেছে..তারপর আর কিছু না বলেই হনহন করে চলে গেলো..তা ভাইয়া কি তোকে কিছু বলেছিলো নাকি?
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
এইবার ব্যাপারটা আমার কাছে একদম পরিষ্কার হলো..তার মানে যেই সুতা ধরে আমি এতোক্ষন টানছিলাম এই হলো সেই সুতার আল..খুব রাগ হচ্ছে আমার এতো রাগ হচ্ছে যা আমি প্রকাশ করতে পারবো না..ফারিয়াকে এই মুহুর্তে আমার সামনে পেলে কি করতাম তা আমি নিজেও জানি না…তারপর রেগে চিল্লিয়ে বলে উঠলাম,,,
-ওই শোন তুই দুইদিন আমার সামনে আসবি না..এর মধ্যে যদি তোরে আমার সামনে দেখি তাইলে তোরে আমি কি করবো!!জানি না কি করবো!!বাট খুব খারাপ কিছু করবো..আর হ্যা ফোনও দিবি না..বাই(বলে ফোনটা রেখে দিলাম)
.
এদিকে বেচারী ফারিয়া তনুর কথার আগা মাথা কিছুই বুঝলো না..কিন্তু এটা বুঝতে পেরেছে সে কিছু একটা ভুল করে ফেলেছে যার জন্যে তনু রেগে আছে তার উপর..আর তনুর কথা অনুযায়ি বোঝা গেলো সামনে পেলে তনু তাকে কাঁচা চিবিয়েও খেতে পারে..তাই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে কোনোভাবেই তনুর সামনে যাবে না..দুইদিন না পুরো এক সপ্তাহ যাবে না..
.
ফারিয়া অলওয়েজ কিছু একটা বোকামি করে আমাকে ফাসিয়ে দেয়..কিন্তু আজকের মতো ফাসা আমি জীবনেও ফাসিনি..তাই আজকে ওর উপর রাগটাও আমার বেশি হচ্ছে..ও তো তাসিনকে নতুন দেখছে না..এই কথা শুনার পর ওর রিয়েকশনটা কেমন হতে পারে এটা বুঝলো না একবারও..তোর বলার কি দরকার ছিলো..ফাজিল মাইয়া..তোর জামাইও তোরে এমনে জ্বালাবে..তখন তুই বুঝবি হুহহ…
.
শাওয়ার নিচ্ছিলাম এমন সময় তাসিন কোথা থেকে হুট করে এসে ভিতরে ঢুকে দরজাটা লক করে দিলো..ওকে এভাবে ঢুকতে দেখে আমি যেমন অবাক হয়েছি তেমনি আমাকে এই অবস্থায় দেখে তাসিনও বেশ অবাক হয়েছে..আমি যে দরজা লক করতেই ভুলে গিয়েছিলাম..আমি একবার ওর দিকে তাকাচ্ছি আরেকবার নিজের দিকে তাকাচ্ছি..তারপর আর কি দিলাম এক চিৎকার..আমাকে এভাবে চিৎকার করতে দেখে তাসিন আমার মুখ চেপে ধরে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে দিলো আর বললো,,,
-চুপ একদম চুপপ..এভাবে ষাড়ের মতো চিল্লাচ্ছো কেনো!আমি বাঘ না ভাল্লুক যে আামকে দেখে এভাবে চিৎকার করতে হবে…
-উমম উমমমমম(মুখ চেপে ধরায় কিছু বলতেও পারছি না..একদিকে যেমন লজ্জা লাগছে অন্য দিকে তেমন ভয়ও লাগছে..ছুটার জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করছি কিন্তু কিছুতেই পারছি না..আমাকে এভাবে ছটফট করতে দেখে তাসিন আবার বলে উঠলো,,
-এই এভাবে তিড়িংবিড়িং করছো কেনো..কি সমস্যা?শোনো আমি তোমাকে ছেড়ে দিচ্ছি..বাট একদম চিল্লাবা না..
আমিও মাথা নেড়ে সম্মতি দিলাম..যার অর্থ হ্যা আমি চিল্লাবো..ও না থুক্কু চিল্লাবো না ..তারপর তাসিন আমাকে ছেড়ে দিলো..ছাড়া পেয়ে নিজেকে ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টা করতে করতে বললাম,,,
-এই এইইই আপনার কি কোনো কমনসেন্স নাই..আপনি একবারও দরজা নক না করেই হুট করে কেনো ঢুকে পরলেন হ্যা??????
-সাট আপ..একদম বাজে কথা বলবে না..তুমি দরজা কেনো লক করোনি?হ্যা????আমি কি জানতাম নাকি যে তুমি ভিতরে এভাবে আধখোলা অবস্থায় দাড়িয়ে থাকবে!!!
ওর কথা শুনে আমার লজ্জায় এবার মাটি খুড়ে ভিতরে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছে…আমারই তো দোষ..কিভাবে দরজা আটকাতে ভুলে গেলাম আমি..কি একটা অস্বস্তিকর অবস্থা..
এদিকে আমার সাথে সাথে তাসিনও কাকভেজা হয়ে গেছে কিন্তু সেদিকে তার কোনো খেয়ালই নেই..সে আমার দিকে নেশাভরা দৃষ্টিতে একধ্যানে তাকিয়ে আছে..এমনিতেই লজ্জায় আমার প্রাণ পাখি যায় যায় অবস্থা তার উপর এই শয়তানটা শকুনের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে..ওরে এবার যা এখান থেকে নইলে আমি এইবার অতি লজ্জায় অকালে প্রাণ হারাবো..কিন্তু না সে একভাবে আমার দিকে তাকিয়েই আছে..আর একটু একটু করে আমার দিকে এগিয়ে আসছে…
কি জ্বালা..এমনে আগায় ক্যান..এখান থেকে বেরও হতে পারছি না..বের হলে এভাবে আমাকে কেউ দেখলে নির্ঘাট জ্ঞান হারাবে…
তাসিন একদম আমার কাছে চলে এসেছে..বিন্দু মাত্র ফাকা নেই আমার আর তাসিনের মাঝে..ও এতো কাছে আসাতে আমার সারা শরীর কেঁপে উঠলো..তারপর ও আমার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো..আর পাগলের মতো কিস করতে লাগলো..আমি ওকে বাধা দিতে পারছি না..আমি যেনো ওর ছোঁয়া পেয়ে একদম পাথর হয়ে গেছি..ও আস্তে আস্তে আমার গলা ছেড়ে এবার আমার ঠোঁটে কিস করতে লাগলো..আমাকে ওর বুকের সাথে চেপে ধরে একের পর এক কিস করেই যাচ্ছে..আজ ওকে আমার উম্মাদ মনে হচ্ছে…আজ ওর ছোঁয়া আমার খুব ভালো লাগছে তাই বাঁধাও দিতে ইচ্ছে করছে না..ওর ছোঁয়ায় আজ আমি স্পস্ট ভালোবাসা দেখতে পারছি… কিছুক্ষন এভাবেই কেটে গেলো..
তারপর ও আমাকে ছেড়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে গেলো..আর আমি এখনও থম মেরে দাঁড়িয়ে আছি…
.
.
.
চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে