তুই_আমার_অন্যরকম_নেশা_২ পর্ব-২১

0
2370

#তুই_আমার_অন্যরকম_নেশা_২
#সিজন-২
#পর্ব-২১(Special part)
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)

ছাদে একা কর্নিশ ঘেসে দাড়িয়ে আছে অয়রি তার পাশেই অয়রিকে পর্যবেক্ষন করে যাচ্ছে ইশান অয়রিকে দেখে যাচ্ছে যেন কতবছর দেখার তৃপ্তি পাচ্ছে সে মাঝরাতে অয়রিকে হঠাৎ ফোন করে ছাদে ডাকে ইশান এতে বেশ খানিক্টা অবাক ই হয় অয়রি অনেক প্রশ্নোয় তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো তাও বন্ধুত্বের খাতিরে সে এসেছে আসার পর থেকেই ইশান নিজের মুখে যেন তালা বন্ধ করে রেখেছে বেশ খানিক্টা নিরবতা পালন করার পর অয়রি বিরক্তি মাখা কন্ঠে বলে উঠে–

কিছু বলবে ইশান ভাইয়া?

ইশান এইবার মুখ খুল্লো সে
তার চোখ ছল ছল করছে যেন এখনি গড়িয়ে পড়বে
ইশানঃ অয়রি তুই জানিস তোকে আমি কতটা ভালোবাসি
অয়রি খানিক্টা ইস্তত করে বলল–
কালকে তোমার এনগেজমেন্ট ভুলে যেও আর আজ তুমি অন্য একটা মেয়েকে এইসব
ভালোবাসার কথা বলছো?

ইশানঃ আমি তোকে সেই ৫ বছর ধরে বুঝাতে চাইছি কেন বুঝছিস না তুই?

অয়রিঃ কারনটা তুমি জানো

ইশানঃহ্যা জানি কিন্তু তোকেও এইটা মানতে হবে কাব্য ইস নো মোর

অয়রি নিজেকে আর সাম্লাতে পারেনা
ঠাসস করে ইশানকে চর মারে
ইশানের চোখের পানি তার গাল স্পর্শ করে

অয়রিঃ আগেও বলছি এখনো বলছি
কাব্য মরেনি আমি ওকে অনুভব করি
আর জানো ভালোবাসার মানুষকে সম্মান করতে হয়
আর তুমি?
আমাকে যদি ভালোবাসতে আমার বিশ্বাসকে সম্মান করতে
আর আরেকটা মেয়ে মুন তার কি দোষ?
সে তো তোমাকে মন প্রান দিয়ে ভালোবাসে
আজ-বাদে কাল তোমার বিয়ে
সে তোমাকে ঘিরে কত সপ্ন গড়ে তুলেছে
যেমনটা আমি কাব্যকে নিয়ে করেছিলাম
আমি বুঝি একটা মেয়ের সপ্ন ভান্গলে কতটা কস্ট লাগে
তাই প্লিয ইশান ভাইয়া তুমি চলে যাও

ইশান এইবার হাটু গেড়ে অয়রির কাছে বসে
অয়রি ঃ আরে আরে কি করছো

ইশানঃ আর কি বলবো আমি আর পারছিনা সত্যি ই অরু তোর কাছে বার বার ভালোবাসার দাবি নিয়ে আসি কেননা ভালোবাসি তোকে

অয়রি কি বলবে কিচ্ছু বুঝতে পারছেনা

ইশানঃ আচ্ছা তুই কি আমাকে কখনো ফিল করিসনি

অয়রিঃ নিশ্চুপ

ইশানঃ জানি তুই শুধু কাব্যকেই ভালোবাসিস কিন্তু মনযে বড় বেহায়া
মানতেই চায়না
মনের সাথে তো আর পারা যায়না
ভালোবাসা এমনি এমনি চলে আসে

অয়রি ঃ রাত অনেক হয়েছে কালকে অনুসঠাল বাসায় চলে যাও

অয়রি চলে যায় কিন্তু তার আগে
আবার পিছে ঘুরে দেখে ইশান কান্না করছে
অয়রি গিয়ে ইশানের চোখের পানি মুছে দেয়
ইশান অবাক

অয়রিঃ জানো তো ইশান ভাইয়া বিয়ে সে তো একটা প্রবিত্র বন্ধন স্ত্রী আর স্বামীর উভয়ের এই একটি মাত্র শব্দ কবুলের মাধ্যমে একে অপরের প্রতি অজান্তেই ভালোবাসা জন্ম নিয়ে নেয় দেখো তুমিও একদিন মুনকে অনেক ভালোবাসবে

ইশানঃ হুম তাই ই(তাচ্ছিল্যের সুরে)

অয়রিঃ এখন যাও ইশান ভাইয়া

অয়রি চলে যেতে নেয় তখনি বাধ সাদে ইশান

ইশানঃ আচ্ছা এক্টিবার কি আমাকে তোমাকে একটু জড়িয়ে ধরতে দিবে

অয়রি কি বলবে কিচ্ছু বুঝতে পারছেনা

ইশানঃ শুধু এক্টিবার

অয়রি মাথা নাড়তে যাবে তার আগেই ইশান অয়রিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়

তারপর নিজেকে ছাড়িয়ে অয়রির গালে হাত রেখে বলে

ভালোবাসি ?
এই বলে ছুটে চলে যায়
অয়রি না চাইতেও ওর চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে
ইশানের কন্ঠে ছিলো
অয়রির জন্য ভালোবাসা অভিমান
ছিলো প্রবিত্র ভালোবাসা যা অয়রি বুঝে কিন্তু তার কিচ্ছু করার নেই

অয়রি ছাদ থেকে নিচে একটু দেখে নেই
ইশান নিচে দাড়িয়ে অয়রিকে এক ঝলক দেখে নেয় তার চোখ ছলছল করছে
ইশান চলে যায় আর অয়রি ইশানের যাওয়ার পথে পানে তাকিয়ে থাকে

???
রওশন এতোক্ষনে বুঝলো সে কি করছে তাই
তৃনাকে ছেড়ে দিলো

রওশনঃ আপনি এইভাবে নোক না করে কেন চলে এসেছেন মিস তৃনা?

তৃনাঃ আমি না আসলে তো৷ জান্তেই পারতাম মা আপনি মেয়েদের মতো কান্না করেন

রওশনঃ স্টুপিড

তৃনাঃ স্যার একটু নিজের প্রবলেম নিয়েই একটু বলেই দেখেন না দেখবেন নিজের মন একটু হাল্কা হবে
নিজের কস্ট টা ভিতরে রেখে দিলে
সেইটা আরো ভারবে

রওশন উঠে দাঁড়িয়ে বলল
আমার কোনো কস্ট নেই

তৃনাঃ মিথ্যা আপনার চোখ সেইটা বলছে না

রওশনঃ তুমি এখন আমার চোখের ভাষা বুঝতে পারো(তাচ্ছিল্যের সুরে)

তৃনাঃ চোখের গভিরতা বুঝতে পারলেই চোখের ভাষা বুঝা যায়
একটু বলেই দেখেন না

রওশন একটা ছবি বের করে তৃনাকে দেখায়

তৃনা দেখে একটা ১৫ বছরের মেয়ের হাসজ্জল ছবি

রওশনঃ জানো তো ছোটবেলায় মা-বাবা মারা যায়
কাকাই -মামনি আর আমার ছোট চাচাতো ভাই ছিলো আমার সব
তারপর স্কটল্যান্ড এ চলে যায়
তখন কেবল আমার বয়স ২০
এই মেয়েটা আমার ক্লাস্মেট এর ছোট বোন
ছিল
আমার ভালোবাসা

ভালোবাসা কথাটা শুন্তেই
তৃনার বুকে চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করে
রওশন অন্য কাউকে ভালোবাসে
তাও নিজেকে সামলে নিয়ে বলে

তারপর?

—তারপর একটা কার এক্সিডেন্ট এ ও মারা যায় বিশ্বাস করো সেদিন পৃথিবীতে সব থেকে বেশি অসহায় নিজেকে লেগেছিলো

অনেক ভালোবাসি
আমার জেনিকে(লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)

তৃনার চোখ ও ছলছল করে উঠে
একটা মানুষ এইভাবেও কাউকে ভালোবাসতে পারে

তৃনাঃ বাহ খুব মিস্টি নাম তো
জেনি

রওশন মলিন হাঁসি দেয়

তৃনাঃ আচ্ছা তাই আপনি এতো বোমা হয়ে থাকেন
কিন্তু আপনি যদি এইভাবে মেয়েদের মতো ন্যাকা কান্না করতে থাকেন
জেনি আপুকি খুশি হবে?
বলবে ছিহ এই মেয়েদের মতো কান্না করে ছেলেটাকে আমি ভালোবাসতাম

তৃনার কথায় মৃদু হাঁসে
তৃনাঃ এইতো এইভাবেই সবসময় হাসবেন দেখবেন আপুও অনেক খুশি হবে

রওশনঃ আমার ভালো বন্ধু হবে তৃনা?

তৃনা মুঁচকি হাঁসে

??

পুরো খান বাড়ি আজ নতুন সাজে নিজেকে সজ্জিত করেছে
বড় ছেলের এন্গেজমেন্ট বলে কথা
সারা বাড়ি সজ্জিত হয়ে রয়েছে

রিমি অয়রিকে জোড় করে গোলাপি কালারের এক্টা মিস্টি শাড়ি বের করে পড়তে বলে

অয়রির কানে বড় ঝুমকা চোখে চিকন ফ্রেমের চশমা আর হাল্ক সাজ
অয়রির এইসব একদম ভালো লাগেনা
মেঘাই জোড় করে
সাজিয়ে দিয়েছে

খান বাড়ি,,

ইশান ব্লেক সুড
ডেশিং স্টাইল
আর মুন কালো ডাইমন্ডের গাঊন ভাড়ি ম্যাকাপ
দুজনকে পাশাপাশি দাড় করিয়ে
ফোটোশুট চলছে
মুন তো অনেক হ্যাপি
কিন্তু ইশানের এইসব কিচ্ছু ভালো লাগছে

না

ঈশাঃ কিরে ভাইয়া একটু হাঁস
এইভাবে গোমড়া মুখ করে থাকিস না

ইশানের চোখ হঠাৎ গোলাপি পরির দিকে যায় হ্যা অয়রি এসেছে
ইশানের মুখে অজান্তেই হাঁসি ফুটে উঠে

ঈশাঃ এইতো পারফেক্ট লাগছে

রিক মাইকে এনাউন্সমেন্ট করে

সো গাউস এখনি রিন
একচেঞ্জ হবে আপ্নারা সবাই রেডি?
সবাই হাতি তালি দিতে থাকে

মেঘা আর ঈশা দুজনের জন্য দুটো আন্টি নিয়ে আসে

মুন তাড়াতাড়ি আন্টি পড়িয়ে দেয়
ইশানের সময় ইশান ছলছল চোখে একবার অয়রিকে৷ দেখে নেয়
অয়রির দৃস্টি নিচের দিকে
ইশান ও আন্টি পড়িয়ে দেয়
সবাই হাত তালি দিতে থাকে

অনিক মাইক্টা নিয়ে বলে

— হেই গাইস এখনো মাস্ক পার্টি আছে সো সবাই রেডি
।সবাই জোড়ে হ্যা বলে

অয়রিকে জোড় করে
মেঘা একটা মাস্ক পড়ায় আই মাস্ক
স্টেজে
একটা ব্যান্ড আসে
একজন গিটার নিজে পিছনে তাকিয়ে আছে
তার চেহারা দেখা যাচ্ছেনা
অয়রির কিরকরম একটা ফিল হতে লাগলো
সে গাইতে লাগলো

♪Thodi jagad
De de Mujhe ?
Tere pass kahin
Reh jaau meih ?( অয়রির কেন যেন কন্ঠ টা খুব চেনা লাগছে)
সে ঘুরে তাকালো কিন্তু চোখে আই মাস্ক থাকায় চেহারা টা বুঝা যাচ্ছেনা
সে আবার গাইতে শুরু করলো গিটার হাতে নিয়ে(লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)

? khamoshiya Teri
Shunu ?
Aur dur khhin na
Jaun Mein ?
Apni khushi dekhe
Main tujhe Tere dard se
Jude jaaun mein ? ( তার কন্ঠে যেন খুব তিব্র ব্যাথা অনুভব করছে অয়রি কিন্তু এমন কেন হচ্ছে সে অয়রির দিকে এগোতো এগোতে গাইতে লাগলো)

♪Mila jo tu
yahan mujhe ?(অয়রিকে দিকে ইশারা করে)

? Dilahu mein yakin
Tujhe ?
Rahon hoke tera sada
Bus iTNa chahta hun mein ?(বুকের বা পাশে ইশারা করে সবাই অবাক কেউ কিচ্ছু বুঝতে পারছেনা ছেলেটা যত এগোচ্ছে তত বেশি আপন কাউকে অনুভব করছে
সে এইবার অয়রির চোখে চোখ রেখে গাইতে লাগলো)

Thodi jagah de de ?

?mujhe tere pass kahin

♪♪Reh jaun mein (অয়রির চিরচেনা একটা স্মেইল পাচ্ছে অয়রির চোখ ছলছল করছে আর সে অয়রির চোখের গভিরতা মাপতে ব্যাস্ত গাইতে শুরু করলো)

Khamoshiya Teri ??

?shunu Aur

♪♪Dur kahin na
Jaun mein. ?

গান শেষ হয়ে গেলো
অয়রি আর সে একে অপরকে চোখে চোখ রেখে যে কত শত কথা বলে যাচ্ছে
শুধু তারাই জানে আসেপাশের কাউকে তারা খেয়াল করছেনা

অয়রিঃ কে আপনি?

সে তার মাস্ক খুলে ফেলল অয়রি কিচ্ছুক্ষনের জন্য স্তব্দ হয়ে গেলো চারদিকে বাতাস বয়ে যাচ্ছে

অয়রির অবাধ্য চুল ছেলেটির মুখের উপর আচরে পড়ছে

অয়রি অফুস্টুস্বরে বলে উঠে–
কাব্য

চলবে কি?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে