#তুই হবি শুধু আমার
#সাইরাহ্_সীরাত
#পর্ব_এগারো
অয়ন্তি এসেছে খাঁন ম্যানশনে। আমীর সাহেবকে দেখার কারনেই এসেছে মীর্জা বাড়ির সবাই। কিন্তু আরশানকে কোথাও দেখা গেল না। আমীর সাহেব কথা বলতে না পারায় আশরাফ মীর্জা নিজেই বলতে শুরু করলেন,
-অয়ন্তি বিয়েতে রাজি হয়েছে। তাই আমরা সবাই এটা চাচ্ছিলাম যে বিয়েটা আগামী মাসেই হয়ে যাক। আপনি তো সেটাই চেয়েছিলেন।
আরসালান এগিয়ে এসে বলল,
-হ্যাঁ! বাবা গতকালও আমাকে বলছিলেন এটা। বিয়েটা যদি আগামী মাসে না হয়ে এমাসের শেষে হয় তাহলে কি সমস্যা হবে আঙ্কেল? আসলে আরশানের বিয়েটা দেওয়া অনেক জরুরি।
-কেন বাবা? কোনো সমস্যা?
আরসালান থেমে থেমে বলে,
-আসলে পারিবারিক একটা সমস্যা চলছিল। আরশানের বিয়েটা তার সমাধান। ওর বিয়েতে একত্রিত হতে পারবে বাবার বন্ধুরা।
-আমার আপত্তি নেই। বিয়ে তো দিতেই হবে, সেটা আজ হোক বা কাল। আজ তো মাসের পনেরো তারিখ। শেষে বলতে ঠিক কত তারিখ বোঝাচ্ছো?
-শেষের শুক্রবার।
-আচ্ছা। কিন্তু তোমার বাবা? তিনি তো সুস্থ নন।
-সবাই আসলে সুস্থ হয়ে যাবে।চিন্তা করবেন না আপনি। আর ভাই একটা কাজে বাইরে আছে সেজন্য দেখা করতে পারলো না। কিছু মনে করবেন না।
-না, ঠিক আছে।
আরশান তিনদিন পর বাড়িতে ফিরলো। আরসালান বসার ঘরে বসে টিভি দেখছে। রজনী রান্না করছে, অভী আরসালানের পাশে বসে পড়া করছে। আরশানকে দেখে আরসালান গম্ভির কন্ঠে বলল,
-তোর রেডিওতে প্রচার করে দিস তোর বিয়ের নিউজ। বাবা আদেশ করেছেন!
-বিয়ে?
-রোজের আর ফালাকের কানে তোর বিয়ের খবরটা পৌঁছানোর দরকার। দেখা যাক পাগল দুটো কি করে। ফালাক না আসলেও রোজ নিশ্চই তোর বিয়েতে আসবে।
-আসবে না। আমি ভুল করেছি দাদাভাই। অনেক বড় ভুল।আমি বুঝিনি বেবি ফালাককে ভালোবাসে। আমার জন্য বেবির পাঁচটা বছর নষ্ট হয়েছে। ফালাক তাঁর চাঁদ আর রোজকে হারিয়েছে। সব দোষ্ আমার।
-দোষ গুণের হিসেব পরে করিস। আপাতত যা বলেছি সেটা কর। তাছাড়া ভুল তোরও ছিল না। পরিস্থিতিটাই ভুল ছিল। তোদের রাগ করা’টা ভুল ছিল। তোদের গরম মাথায় সিদ্ধান্ত নেওয়াটা ভুল ছিল। রোজ জেদের বশে সেসব বলেছে, তুই রোজের কষ্ট দেখে ওসব বলেছিলি আর ওই সাইকো রোজকে তোর সঙ্গে দেখে জেলাসির ঠেলায় ওসব করেছে। সবটা ঠিক করার একটা সুযোগ এসেছে। সুযোগটা কাজে লাগা।
-ফালাকের কানে নিউজ পৌঁছাবে কি করে?
-রোজের শো’টায় কথা বলবি। খোঁজ পেয়েছি হিরো ফারহানের পি.এ রোজের ফ্যান! শো নিশ্চই শুনবে। ও ফালাকের কানে ঠিক কথাটা লাগাবে।
-আ’ইয়্যু শ্যর?
-হান্ড্রেড পার্সেন্ট। ফারদিন আঙ্কেলের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার।উনি গ্যারান্টি দিয়ে বলেছেন। তাই এই শুক্রবার মানে আজ রাতের শো তুই করবি। আর নিজের বিয়ের এ্যানাউন্সটাও নিজে করবি।
____________
ফারহান আর সিয়াম সিলেট থেকে ঢাকায় ফিরছিল। ড্রাইভিং সীটে সিয়াম আর পাশে ফারহান। সিয়াম বার বার ফোন চেক করছে। বারো’টা বাজতেই সিয়াম গাড়ি থামিয়ে দিল। ফারহান ভাবলেশহীন হয়ে জানালার বাইরে চেয়ে আছে। গাড়ি থামতেই সে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়।
-কি প্রবলেম?
-রেডিও চলছে না কেন স্যার? আমার ফোনেও চার্জ নেই। আপনার ফোনটা একটু দেবেন? প্লিজ!
-হোয়াট!
-মাত্র দেড়ঘন্টার জন্য স্যার। যাস্ট রেডিও অন করবো। আপনি করে দেন। আমি আপনার ফোন টাচও করবো না।
-রেডিও?
-না মানে একটা শো আমি রেগুলার শুনি স্যার। একটা মেয়ে হোস্ট করে, ভালোবাসার রংমহল নাম। আর ওই রেডিও জকির নাম
-এয়ারফোন আছে? এসব ফালতু জিনিস আমি পছন্দ করিনা।
-না স্যার! কিন্তু আমি শিউর, ওর গলা শুনলে আপনার ভালো লাগবে?
-হোয়াট? (রেগে বলল )
-কিছু না স্যার। (রেডিও গুতাতে গুতাতে )রেডিও ঠিক হয়ে গেছে। এরপর আস্তে বলল, “হোয়াটের প্রতিষ্ঠাতা!”
সিয়াম রেডিও চালিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিতেই আরশানের গলা শোনা গেল। “হ্যালো ডিয়ার লিসেনার, আমি আর জে আরশান, আজ আছি আপনাদের সঙ্গে। দুঃখিত আজ আর জে রোজ শো করতে পারছেন না। তাঁর হয়ে আমি এসেছি ভালোবাসার রংমহলকে রাঙাতে। জানি পারবো না, তবুও চেষ্টা করবো। তাঁর আগে একটা গুরুত্বপূর্ণ খবর দিতে চাই, বেশ কিছুদিন ধরে আমার বিয়ে নিয়ে সবার মনে নানা প্রশ্ন ছিল। আজ সব প্রশ্নের উত্তর দিতে এসেছি আমি। আপনাদের দোয়ায় শীগ্রহই আমি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছি। ”
ফারহান আচমকা রেডিও বন্ধ করে দিল। এরপর রেগে বলল,
-আর অন করবে না।
সিয়াম দুঃখি মুখ করে বলে,
-কেন স্যার?
-আমি বলেছি তাই।
-প্লিজ স্যার একবার চালাই? রোজ মেয়েটার কি হয়েছে জানার দরকার। আই হ্যাভ অ্যা হিউজ ক্রাশ অন হার। মেয়েটার কি হলো কে জানে? দেখি কিছু বলে কিনা!
-নো।
-প্লিজ! স্যার। আপনার জন্য এত খাঁটি আমি। তবুও কি কখনও কিছু বলেছি? কোনো অনুরোধ করেছি? আজ একটা অনুরোধই তো করছি। দরকার পড়লে আমার এ মাসের স্যালারির টুয়েন্টি পার্সেন্ট কেটে রাখুন।
-নো।
-কি সমস্যা স্যার? চালাই না প্লিজ!
সিয়াম ফারহানের দুহাত চেপে ধরতেই ফারহান বিরক্ত হয়ে তাকালো। এরপর কঠিন গলায় ঝারি দিয়ে বলল,
-হাত ছাড়ো! ছাড়ো! এসব বাচ্চামির মানে কি? সামান্য একটা প্রোগ্রাম নিয়ে এত নাচানাচি কিসের?
-প্রোগ্রাম না তো, মেয়েটা!
-হোয়াট?
-কিছু না।
-ওকে। শোনো কিন্তু ভালিয়ম কম করে। আমার কানে যেন না পৌঁছায়।
সিয়াম বিরবির করে বলে,
-খাটাশ ব্যাটা।
-কি বললে?
-ন,না, ক,কিছু ন,না।
রেডিওতে এক কলার ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করেছে কে সেই ভাগ্যবতী যাকে আরশান বিয়ে করছে। আরশান হেসে বলল, ‘সে ভাগ্যবতী কিনা জানি না, তবে আমি ভাগ্যবান যে তাকে পাচ্ছি। তার নাম জেসমিন মীর্জা অয়ন্তি। ‘ ফারহান দ্রুত পাশ ফিরলো।
-সিয়াম ভলিয়ম বাড়াও তো। নামটা বোধ হয় ভুলভাল শুনলাম।
-কি শুনেছেন স্যার?
-জেসমিন টাইপ কিছু। নামটা তো সাইরাহ্ হবে।
-আমিও তো জেসমিন শুনলাম স্যার। সাইরাহ্ টাইপ কিছু তো বলেনি।
ফারহানের কপালে ভাঁজ পড়লো। রোজের বদলে কার নাম বলল আরশান? নাকি রেডিওর ফ্রিকোয়েন্সি তে প্রবলেম? ফারহানের হাত-পা-কপাল প্রচন্ড রকমেন ঘামছে। এটা কেমন মশকরা? সিয়াম ভলিয়ম বাড়াতেই ফারহান শুনলো আরশান বলছে,’ হ্যাঁ জেসমিন মানে জুঁই। আমি তাকে কুসুম ডাকি। জুঁই ফুলের পরিবর্তে কুসুম।’
-সিয়াম!
-জি স্যার।
-আর’জে আরশানের নাম্বার দ্রুত জোগাড় করে দাও আমাকে।
-কেন স্যার?
-তুমি এত প্রশ্ন কেন কর? আর একটা প্রশ্ন করলে এই রাতে, অন্ধকারে তোমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে চলে যাবো।
-নাম্বার তো আছে আমার কাছে। এই নিন।
ফারহান নাম্বার নিয়ে দ্রুত কল করলো। আরশান কল রিসিভ করলো না। ফোন তো সাইলেন্ট করে রাখা। ফারহান অনবরত কল করতে থাকলো।ওর চাঁদের সঙ্গে কি ঘটেছে কি ঘটছে জানা প্রয়োজন। চাঁদ কেমন আছে? ভালো আছে তো? ফারহান, ফারদিন সাহেবকে কল করলো। আরশানদের সঙ্গে ওনার যোগাযোগ ছিল এখনও আছে সেটা ফারহান ভালো করেই জানে। তাই সময় নষ্ট করলো না ফারহান। তিনবার রিং হতেই বাবা ফোন রিসিভ করে বিরক্তকন্ঠে বললেন,
-কি সমস্যা ফালাক? এত রাতে কল করছো কেন?
-চাঁদকে রেখে দাদাই কাকে বিয়ে করছে?
-যাকে করা উচিত, যাকে সে ভালোবাসে। তোমার এটা জেনে কি লাভ?
-ভালোবাসে মানে? সে চাঁদকে ভালোবাসে।
-হ্যাঁ, তবে বোন হিসাবে। প্রেমিকা বা বউ হিসেবে না।
-বাবা চাঁদ কোথায়?
-জানি না। তোমারও জানার দরকার নেই। হঠাৎ এতো বছর পর ওর খোঁজ নেওয়ার কি প্রয়োজন পড়লো?
-প্রয়োজন আছে বাবা,এতদিন জেনেছি দাদাই ওর সঙ্গে আছে। ও ভালো আছে।
-আজও সেটাই জানো। আর ফোন করবে না। ঘুমাচ্ছি আমি।
ফারদিন সাহেব ফোন রেখে আরসালানকে ফোন দিলেন। পরিকল্পনা তাহলে ঠিক দিকেই এগোচ্ছে।
ফারহান আবারও আরশানকে ফোন করতে শুরু করে। সিয়াম হা করে চেয়ে আছে। রাগি তেজি স্যারটা হঠাৎ বদলে গেল কি করে? রাগ দেখানোর বদলে নরম গলায় অনুরোধ করছে। হুকুম করা ভুলে গেছে নাকি? সিয়াম কি শিখিয়ে দেবে? তারপর ভাবে, না। কি দরকার ঘুমন্ত বাঘকে জাগানো? নিজেকে বাঘের খাদ্য বানানো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সিয়াম গাড়ির স্পীড কমিয়ে দিল। রাস্তাটা ভালো না, জায়গায় জায়গায় গর্ত। সিয়াম ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করল,
-আপনিও আর’জে রোজের ফ্যান নাকি স্যার? তাহলে তখন নাক সিটকালেন কেন?
-মানে? রোজের ফ্যান অনেক নাকি?
-মেল ফ্যান অনেক। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশতভাবে তাকে কেউ দেখতে পারেনি। উনি সামনে আসেননা। যদি আসতেন তাহলে
-তাহলে?
-তাহলে আমি টুপ করে ওনাকে বিয়ে করে ফেলতাম। তারপর সারাদিন ওনার মিষ্টি গলা শুনতাম। আহা!
-গুড!
-একটা আইডিয়া দেন তো স্যার, ওকে কিভাবে পাওয়া যায়। আপনার তো কদর অনেক, একটু ব্যবস্থা করে দেবেন?
-একটা পি’স্ত’ল হবে?
সিয়াম ব্রেক কষলো। পি’স্ত’ল কেন? এত রাতে পি’স্ত’ল দিয়ে কি হবে? সিয়াম থতমত খেয়ে বলে,
-পি’স্ত’ল কেন স্যার?
-তোমাকে খু’ন করবো আমি।
-আমি কি করলাম?
-ফারহানের জিনিস নিজের ভাবতে চাওয়ার মত ভুল আর অন্যায় ফারহান ক্ষমা করেনা।
-আপনার জিনিস? কোনটা স্যার? ফ্যান? না, না রেডিও? আপনার তো রেডিও নেই! তাহলে?
-আর একটা কথা বললে তোমাকে জানে মে’রে দেবো সিয়াম। আমার রাগ কিন্তু বাড়ছে বৈ কমছে না। আর তুমি জানো আমার খু’ন করতে হাত কাঁপে না।
সিয়াম এবার স্তব্ধ হয়ে গেল। এই কথাটা চিরন্তন সত্য। এই মানুষটা হাসতে হাসতে খু’ন করে। একপাশ থেকে খু’ন করে অন্যপাশে গিয়ে হাত ধুয়ে সাধুসন্ন্যাসী টাইপ রিয়াক্শন দিতে ওস্তাদ এই অভিনেতা। সিয়াম নিজেও তো সরাসরি দুইটা খু’ন দেখেছে। এনাকে বিশ্বাস নেই। দেখা গেলো সত্যিই সিয়ামকে মে’রেটেরে দিল। কিন্তু সিয়াম কি অন্যায় করেছে? কি ভুল বলেছে? ওনার জিনিসটাই’বা কি?
প্রায় দেড়শো কল করে ফেলেছে ফারহান। শো শেষ করে আরশান ফোন হাতে নিতেই দেখলো আননোন নাম্বার থেকে একশ সাতচল্লিশ মিস্ড কল। এতরাতে এভাবে কে ফোন করেছে? আরশান কল ব্যাক করল। একবার রিং হতেই ফোন রিসিভ হতেই ফারহান ক্লান্ত স্বরে বলে,
-ফোন কা’টবে না। চাঁদ কোথায়? কাকে বিয়ে করছো তুমি?
আরশান প্রথমবারেই গলা শুনে চিনে ফেলল ফারহানকে। ঔষধ এত দ্রুত কাজ করবে তা ধারনার বাইরে ছিল ওর। ও তো ভেবেছিল ফারহান রাগ নিয়েই থাকবে। ফারহান রোজকে ঘৃণা করে, আর সেটাই করে চলবে। কিন্তু পাগল ছেলে তো একটু শুনেই পাগলামি শুরু করে দিল। আগে পরে জানার প্রয়োজনবোধ করে নি নাকি? আরশান মুচকি হেসে গম্ভির গলায় বলে,
-কেন?
-আমার ধৈর্যের পরীক্ষা নেবে না তুমি। চাঁদ কোথায় সেটা বলো।
-জানি না।
-জানো না মানে? চাঁদ তোমার কাছে ভালো থাকবে বলেই তো ওকে রেখে গিয়েছিলাম আমি। তুমি ওকে ভালবাসো, ও তোমাকে ভালোবাসে তাই রেখে গেছিলাম। ও ঘৃণা করে আমাকে,তাই চলে এসেছিলাম। যেন ও সুখে থাকে। ভালো থাকে । আর তুমি বলছো ও কোথায় তা তুমি জানো না!
-না জানলে কি করে বলবো? চলে গেছে রাগ করে।
-আর তুমি যেতে দিলে?
-আমাকে আটকে রেখে গেছে। ওকে চিনিস না?কেমন ফাজিল।
-সামলাতে পারো না, তাহলে দায়িত্ব নিতে গিয়েছিলে কেন? ওর কিছু হলে আমি তোমাকে ছাড়বো না দাদাই।
-আগে তো ধরে দেখা তারপর ছাড়াছাড়ির প্রশ্ন আসবে। গতবার একটা থা’প্পড় লাগিয়েছিলাম এবার গুনে গুনে বেশ কয়েকটা লাগাবো। আমার বেবিকে কষ্ট দেওয়ার ফল বুঝবি।
-ওকে আমি কষ্ট দিয়েছি? তোমরা কিছু করোনি?
-আরে ভাই, তুই তোর সাইকিক প্রেম আর পাগলামি যে ওভাবে প্রকাশ করবি তা কি আমরা বুঝেছি? তোরা দুজনেই যে ডুবে ডুবে জল খাচ্ছিলি তা কি জানতাম?ও অস্বীকার করলো বলেই তো আমি রেগে তোকে ওসব বললাম।
-তাহলে সত্যটা এতবছর বলোনি কেন? কি ভেবেছিলে? ওকেও ইউজ করে ছেড়ে দিয়েছ? নতুন করে কাকে,,
-ভাই, তুই এত সন্দেহ করিস ক্যান? তোর চাঁদ একদম ঠিকঠাক! কোনো ধরাধরি, ছাড়াছাড়ি নেই। সেদিন ওর বাবা-মায়ের মৃত্যুর খবর দেওয়ার পর ওকে সান্ত্বনা দিতে ভালোবাসার কথা বলেছিলাম, ও নিজেও সেজন্য বলেছে। তুই কোথ থেকে কতটুকু শুনে পাগলামি চালু করে ব্যাপারটা ঘেটে দিলি।
-আর এত ফ্যান?এত ছেলে? আমার পি.এ অবধি ওকে বিয়ে করতে চায়। ওকে এসব ফালতু রেডিও ফেডিও চালু করতে বলেছে কে?
-রোজকে দেখেছিস বড় হবার পর?
-না।
-তাইলে আর করলি কি? তোর বউ তো চাঁন্দের টুকরা। ফ্যানফলোয়ার বাড়বে, এটা স্বাভাবিক। আমার কয়েক ডজন ছোট ভাই তো স্বয়ংবরের অপেক্ষা করছে। মনে হয়ে বিয়ে’টিয়ে হয়ে যেতে পারে।
-বিয়ে করাচ্ছি আমি। নিঁখোজ হয়েছে কবে? এক্সাক্টলি কোনদিন কোন সময়?
-কেন?
-ওর কান টেনে নিয়ে আসবো। মা’র এখনও পাওনা আছে। হাত-পা ভে’ঙে ঘরে বসিয়ে রাখবো ওই বেয়াদব বদমাইশটাকে।
-সোমবার, সকাল সাড়ে এগারো’টা।
-ওকে! আমরা আসছি পরশু।
-কি?
-বললাম পরশু আসছি আমরা।
-তুই জানিস ও কোথায়? ক্যামনে ভাই?
-চাঁদের পাই টু পাই হিসেব রাখা ছিল আমার। জানিনা মিলবে কিনা, বাট ট্রাই করবো। বেয়াদবটা পাল্টে গেছে অনেক।
-ইউ ঠু! ওকে, কাম ফাস্ট। আ’ম ওয়েটিং।
ফারহান ফোন রেখে সিয়ামের দিকে তাকালো। সিয়াম হা করে চেয়ে আছে। নারীবিদ্বেষী মানুষটার প্রেমিকাও আছে? হিরোইন নাকি অন্যকিছু? চাঁদ বলে ডাকা হয় তাকে? এই ব্যাটা রোম্যান্টিক নাকি অত্যাচারী? টর্চার করার কথাই তো বললো। আবার কিছু কিছু কথায় রোম্যান্টিকতার আভাস! সিয়াম ফারহানের কথাগুলো পুনরায় মনে করেই লাফ দিয়ে উঠলো।
-স্যার! রোজ আপনার চাঁদ?
-ম্যাম ডাকবে।
-ও,ওকে স,স্যার! (সিয়াম রে আজ তোর কপাল ভালো ছিল। বড় বাঁচা বেঁচেছিস!)
চলবে?