তুই হবি শুধু আমার পর্ব-০৯

0
1281

#তুই হবি শুধু আমার
#সাইরাহ্_সীরাত
#পর্ব_নয়

রোজের ঘর থেকে কাঁদতে কাঁদতে বের হয় অয়ন্তি। আরশানের জন্য কষ্ট হচ্ছে ওর। যদি সবটা সত্যি হয়? আরশান এতগুলো বছর শুধু ওকে ভালোবেসেছে। ওর কথা ভেবেছে, ওর জন্য নিজে কষ্ট পেয়েছে। এমন এক মানুষকে ছেড়ে থাকা যায়? অয়ন্তি পারবে না আরশান কিংবা আরশানের ভালোবাসাকে উপেক্ষা করতে। তবে তার আগে সত্যতা যাচাই করতে হবে। আরশানকে সে ভালোবেসেছিল? ভালোবাসা দেখিয়েছিল? যদি এমন হয় তাহলে অয়ন্তি নিজেই নিজেকে শাস্তি দেবে। কঠিন শাস্তি! একজনের জীবনের বারো বছরের সুখ শান্তি কেড়ে নেওয়ার শাস্তি। আরশান বাইরের পাইচারি করছিল। অয়ন্তি ওকে রেখে চোখ মুছতে মুছতে যেতেই আরশান ছুটে আসে। কিন্তু ততক্ষণে অয়ন্তি লিফটে ঢুকে নেমে গেছে। আরশান নেমে সামনে তাকাতেই দেখে অয়ন্তি গাড়ি ধরে চলে গেছে। ওর কুসুম কাঁদছে কেন? রোজ কি বলেছে? আরশান দ্রুত ছুটে আসে রোজের ঘরে। রোজ এখানে নেই, শো শুরু হওয়ায় সে রেডিওতে কথা বলছে। আরশান গিয়ে দরজা খুলতেই রোজ সরু চোখে তাকায়। কথা থামিয়ে গান চালিয়ে দিয়ে সে আরশানের দিকে তাকালো। এরপর শান্ত কন্ঠে বলল,
-কি সমস্যা? দরজা বন্ধ করো। সাউন্ড আসছে তো।
-ওকে কি বলেছিস? ও কাঁদছে কেন?

রোজ চায়না আরশানকে বলতে, যে রোজ অয়ন্তিকে বলেছে সে চায় অয়ন্তি আরশানের জীবনে থাকুক। আরশান মানা করেছিল, যদি শোনে রোজ সে মানা শোনেনি তাহলে কষ্ট পেতে পারে। তাই গাম্ভীর্য বজায় রেখে বলল,
-ওর কাছে গিয়ে শোনো।
-তুই বল, বেবি। কি বলেছিস ওকে? কেন কাঁদিয়েছিস কুসুমকে?
-কাউকে কৈফিয়ত দেয়না রোজ। নাও গেট লস্ট। কাজ করছি আমি।
-করতে হবে না। শো অন্যকেউ করবে। তুই আয়। আমি সবটা শুনতে চাই।
-আমি বলতে চাই না।
-কুসুমকে কাঁদিয়ে ঠিক করিসনি বেবি।
রোজের কঠিন জবাব,
-কে কাঁদবে, কে কাঁদবে না সেটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। এখানে আমার হাত নেই।
আরশানের মাথা ব্যাথা করছে। রোজ শনিবার মলম বিষয়ক যেমন কথা বলেছিল, রেগে গিয়ে তেমন কিছু বলেনি তো? রাগের সময় তো ওর মাথা ঠিক থাকেনা। কারোর মাথাই ঠিক থাকেনা।
-তুই কি নেগেটিভ কিছু বলেছিস ওকে? আমাকে নিয়ে কিছু? তুই সত্যি আমাকে ভালো-টালো!

রোজের কান জ্বালা করছে। আর শুনতে চায় না সে। যে মানুষটার জন্য ওর জীবন নষ্ট হলো তাকে সে আপন ভেবে ভালোবেসেছে এটা কি ভুল ছিল? আজ কি এটাই ওর প্রাপ্য ছিল? শেষে আরশানও রোজকে এটা মনে করাচ্ছে যে রোজ ওকে ভালোবাসে? রোজ উঠে দাঁড়ালো। রেডিও বন্ধ করে সে নিজের ব্যাগটা হাতে নিয়ে আরশানের দিকে এগিয়ে এসে বলে,

-””জানো দাদাই মানুষ খুব স্বার্থপর! আজ তুমি তোমার ভালোবাসার চোখে পানি দেখলে, কিন্তু তোমার মুখে দারুন এই কথাটা শুনে আমার হৃদয়ে যে রক্তক্ষরণ শুরু হলো তা দেখলে না। কারন কি জানো কারন সে তোমার ভালোবাসা, প্রেম, আর আমি বন্ধু! বোন বলো মুখে মুখে। যদি বোন ভাবতে তাহলে সেই মানুষটার মত এত বড় অপবাদ দিতে পারতে না। তোমরা সবাই জানো যে রোজ কখনও কাউকে ভালোবাসেনি, ভালোবাসে না। আজ বলছি, তোমরা ভুল জানো। আমার ব্যাপারে সবাই শুধু ভুল জানে। কেউ আমাকে জানে না, জানতে পারেনি। আমিও মানুষ! আমারও অনুভূতি আছে। আমিও ভালোবাসতে পারি। এটা তোমরা কখনও বোঝোনি। আমি ছোট থেকে বলে এসেছি আমি কাউকে ভালোবাসিনি, এটা ভুল। আমি কাউকে ভালোবাসি না, এটা ভুল। আমি কাউকে ভালো বাসবো না, এটাও ভুল। তোমাকে আরসালান দাদাভাই আর আঙ্কেলদের আমি অনেক ভালোবাসি। তার কারন কি জানো? আমি ভেবেছিলাম তোমরা আমাকে কিছুটা হলেও জানো, বোঝো। আমার ভাইবোন নেই, বাবা-মা নেই, তোমরা আমার ভাই। আঙ্কেল বাবা, তোমার দাদি আমারও দাদি। আমি মজা করি, মশকরা করি শুধু তোমাদের কষ্ট লাঘব করতে। এর পেছনে অন্য কোনো কারন নেই। কিন্তু তুমি আজ ভুলবশত হোক বা ইচ্ছে করে, যে কথাটা বলেছো তা আমার জন্য অপমানজক দাদাই। শতভাগ ভুলভ্রান্তিতে ডুবে থাকা এক মিথ্যা ধারণা। ভাবলে কি করে এসব? (চেঁচিয়ে বলে )

আজ শুনে ও জেনে রাখো দাদাই আমি আমার জীবনে একটিমাত্র পুরুষকে ভালোবেসেছি, ভালোবাসি আর সারাজীবন তাকেই ভালোবাসবো। তাঁর নাম ফালাক! ফারহান মাহতাব ফালাক। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড আমার প্রথম ছেলে বন্ধু, আমার ছোটবেলা ও বেড়ে ওঠার সঙ্গী। যাকে আমি চাইলেও ঘৃণা করতে পারিনা। মুখে যতই বলি আমি তাকে ঘৃণা করি, কিন্তু যাকে ভালোবাসা যায় তাকে কখনও ঘৃণা করা যায়না। তোমার জন্য, শুধুমাত্র তোমার জন্য তাকে হারিয়েছিলাম আমি। তবুও তোমাকে আমি কখনও দোষ্ দেইনি। সর্বদা তাকে দোষ দিয়েছি কারন সে আমাকে ভুল বুঝেছে, বিশ্বাস করেনি, কষ্ট দিয়েছে। অথচ তুমি? যাক যা হয়েছে, ভালোই হয়েছে। এই নাও তোমার রেডিওর কেবিনের চাবি। আমি আর কখনও এই ঘরটাতে আসবো না। কখনও না। আজ থেকে আমি তোমাদের থেকে দূরে থাকবো। অনেক দূরে যেখানে তোমরা আমাকে খুজে পাবে না। ””’

কথাগুলো বলেই রোজ ঘর থেকে বেরিয়ে বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে দিল যেন আরশান ওর খোঁজ করতে না আসে। এমন একটা ঘটনার পর এখানে থাকা চলে না। রোজের আত্মসম্মান খুইয়ে সে এখানে চাকরি করতে পারবে না। কিছুতেই না। ওদিকে আরশান চেঁচাচ্ছে। রোজকে ডাকছে, কাঁদছে। রোজ ফিরেও তাকালো না পেছনে। স্কুটার নিয়ে বেরিয়ে পড়লো অজানা গন্তব্যে। কোথায় যাবে ও? কোথায় থাকবে? কিছু জানার ইচ্ছে আপাতত ওর নেই। ও শুধু জানে, এই মুহূর্তে ওকে এই শহর ছাড়তে হবে। অয়ন্তি সত্যটা জানলে আরশানের কাছে ফিরবে। রোজের দাদাই ভালো থাকবে এটাই তো অনেক। পৃথিবির সবাই ভালো থাকুক।

____________

অয়ন্তি বাড়ি ফিরে সব সত্য জানার পর হাউমাউ করে কাঁদলো। আরশান নামক মানুষটাকে সে কত কষ্ট দিল। কিন্তু আর না, আরশানকে আর কষ্ট দেবে না অয়ন্তি। মন ভালো করার জন্য অয়ন্তি রেডিও অন করে। রোজ নিশ্চই কথা বলছে, আজ থেকে রোজ ওর অনাপির জায়গায় থাকবে। হোক সে ছোট তবুও রোজ আজ বড় বোনের মত অয়ন্তিকে সামলেছে। তাই রোজকে সে আরশানের মতই ভালোবাসবে। বোনের শূণ্যস্থান পূরণ করবে। কিন্তু রেডিও অন করতেই ফ্রিকোয়েন্সির বন্ধ থাকা অয়ন্তিকে চিন্তিত করলো। রোজ তো কখনও বন্ধ রাখে না, আর এখনও তো রোজ শো করছে। আসার সময় তো অয়ন্তি দেখে আসলো রোজকে। তাহলে হলো কি রোজের? অয়ন্তি রোজের ব্যাপারটা গুরুত্ব দিলো না। হয়তো কোনো সমস্যা হয়েছে। তাহলে এখন কি করা যায়? আরশানকে ফোন করে বলবে? সে আরশান নামক বেয়াদব মানুষটার সঙ্গে থাকতে চায়? আরশানের ভালোবাসা পেতে চায়। ইশ! বলতে লজ্জা লাগবে তো। কিন্তু বলতে তো হবেই। অয়ন্তি ফোন বের করে আরশানের নাম্বারে ডায়াল করলো।ফোনটা বেজে বেজে কেটে যায়।
-এর আবার কি হলো?

অয়ন্তি অনবরত ফোন করেই চলেছে। আরশান তখন গাড়ি নিয়ে রোজের খোঁজে বেরিয়েছিল। রাগ হতাশার বশে সে যে বিরাট বড় একটা ভুল কথা বলে ফেলেছে সেটা বুঝতে পেরে রাগে মাথা ছিড়ে যাচ্ছে ওর। অয়ন্তি ফোন করছে দেখেও ওর রাগ ঠান্ডা হচ্ছে না। বারংবার ফোন বাজতে থাকায় আরশান ফোন রিসিভ করেই জোরে ধমক দিল,
-বিরক্ত করছো কেন? দেখছো তো ফোন ধরছি না।

অয়ন্তি ধমক শুনে কেঁদে ফেলল। অয়ন্তির কান্না শুনে আরশানের রাগ বেড়ে গেল। অয়ন্তি কাঁদতে কাঁদতে বলে,
-জরুরি দরকার ছাড়া ফোন দেইনি। আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই, ভালোবাসতে চাই। সেটা বলার জন্য ফোন দিয়েছিলাম। আপনি খুব বাজে মিস্টার খাঁন। খুব বাজে।আপনার সঙ্গে আমি আর কথা বলবো না। রোজ ভুল বলেছে, আপনি আমাকে একটুও ভালোবাসেন না। বাসলে এভাবে বলতেন না।আমি রোজের কাছে নালিশ করবো। ওকে আপনি ভয় পান আমি জানি। হুহ!

অয়ন্তি ফোন কে’টে দিল। আরশান গাড়ি থামিয়েছে ততক্ষণে। অয়ন্তি কি বললো? সে আরশানকে বিয়ে করতে চায়? ভালোবাসতে চায়? রোজ তাহলে ওকে কনভেন্স করেই ফেলেছে? স্টিয়ারিং’য়ে জোরে ঘু’সি দিল আরশান। তখন আবারও কল বেজে ওঠে। আরশান রিসিভ করতেই অয়ন্তি নাক টেনে বলে,
-কথা বলতে ফোন দেইনি। রোজের নাম্বারটা দেন। ওর সঙ্গে কথা বলবো। রেডিও অন হচ্ছে না কেন?

-রোজ চলে গেছে। ওকে খুজতে বের হয়েছি। খোজ পেলে জানাবো। ওকে নিয়ে চিন্তা করো না। নিজের যত্ন নাও, কান্নাকা’টি করেছো। এখন ঘুমাও। মানসিক চাপ কমবে। রাখছি।

আরশান ফোন রেখে গাড়ি স্টার্ট দিল। কোথায় খুজবে রোজকে?কেউ নিঁখোজ হতে চাইলে তাঁর খোঁজ পাওয়া কি সহজ হবে? আমীর সাহেব বারবার ফোন দিচ্ছেন। যার অর্থ রেডিও বন্ধ হবার কারন জানতে চান তিনি। রোজের কথা জানতে চান। কি বলবে আরশান? কি আছে বলার? কিন্তু বাবার শারিরীক অবস্থা খারাপ তাই বাধ্য হয়ে ফোন রিসিভ করলো আরশান। আমীর সাহেব হুংকার দিয়ে উঠলেন,
-সমস্যা কি তোমার? ফোন ধরছো না কেন? রোজ কোথায়? শো অফ কেন? রোজ ঠিক আছে? মেয়েটা আবার অসুস্থ হয়ে গেল নাকি? জ্বর বেড়েছে অনেক? ডাক্তার ডেকেছো?
-একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বাবা। রোজ চলে গেছে। আমি ওকে খুজতে বের হয়েছি। পেয়ে যাবো শীগ্রহই।
-ওর যেন কিছু না হয় আরশান। ওর বাবাকে আমি কথা দিয়েছিলাম ওকে সাবধানে রাখবো। ওকে নিরাপদে রাখবো। তোমার জন্য আমি সে কথার খেলাফ করতে পারবো না। ওকে খুজে আনো।
-হুম।
-তুমি ওকে না সঙ্গে না আনা অবধি বাড়িতে আসবে না। তোমার মুখ দেখতে চাইনা আমি।

ফোন রাখলেন আমীর সাহেব। বুকে ব্যাথা করছে তাঁর। ছেলের জন্য রোজকে তিনি বারংবার কষ্ট পেতে দেখে ক্লান্ত তিনি। হাত দিয়ে বুক চেপে ধরে তিনি নিজের ঘরে আসলেন।দেওয়ালে টানানো বড় ছবিটার দিকে চেয়ে বললেন,
-আমাকে মাফ করে দে সাফোয়ান! তোর মেয়েটাকে আমি সামলে রাখতে পারলা…

বাকিটুকু বলতে পারলেন না উনি। মেঝেতে শব্দ করে পড়ে গেলেন। রজনী ছুটে এসে দেখলো আমীর সাহেব মেঝেতে পড়ে আছেন। তাঁর গাল কিছুটা বাঁকা হয়ে আছে। রজনী চিৎকার দিয়ে বুয়াকে ডেকে বললেন,
-ড্রাইভারকে গাড়ি বের করতে বলো। বাবা স্টোক করেছেন।

পুরো শহর খুজেও রোজকে পেল না আরশান। রজনীর ফোন পেয়ে জানলো বাবার মিনি স্টোক হয়েছে। গাল বেঁকে গেছে, কথা বলতে পারছেন না। আরশানের পুরো পৃথিবি দুলে উঠলো। পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যেতে লাগলো। তিনজনের কলিজার টুকরো ছিল রোজ। তারা তিনজন হচ্ছেন, আমীর খাঁন, ফালাকের বাবা ফারদিন মাহতাব ও রোজের বাবা সাফোয়ান আনসারী। সেই সাথে আরসালান, ফালাক ও আরশানেরও প্রিয় মানুষ ছিল ওদের ছোট রাজকন্যা সাইরাহ্ আনসারী রোজা ওরফে রোজ। গোলাপ, যা ভালোবাসার প্রতীক। কি হবে এখন? রোজকে কোথায় পাবে ওরা?

______________

ফারহান পানি পান করছিলো। হঠাৎ ভীষম লাগায় নাক মুখে পানি উঠে গেল। দৃষ্টি গেল টেবিলের ওপর থাকা বাচ্চা একটা মেয়ের ছবির দিকে। চেহারায় ফুটে ওঠে তীব্র রাগ ও বিতৃষ্ণা। ছবিটা বাবার জন্য সড়াতে পারে নি ফারহান। নাহলে কবেই ছুড়ে মা’রতো ডাস্টবিনে। কোনো প্রতারকের ছবি সে নিজের সামনে রাখতে চায় না। পকেটের মুঠোফোন বেজে উঠলো, ‘ মুগ্ধতা ‘ ফোন দিচ্ছে। ফারহান ফোন রিসিভ করতেই মুগ্ধতা বিগলিত কন্ঠে বলল,
-কোথায় তুমি? শ্যুটিং শুরু হয়ে গেল। এখনও আসছো না। মুভিটার সমাপ্তি কি চাও না? রিলিজডেট ফিক্সড করতে হবে তো। ইডিটিং বাকি, গানের লাস্ট শ্যুট বাকি জলদি আসো।

-আসছি আমি। বাড়িতে আছি।

-দ্রুত আসুন, হিরো মহাশয়। আপনার ফিমেল ফ্যানে ভরে গেছে স্পট। এদের ক্লিয়ার করতে হবে আগে।

-ফারহান নিজের সময়ানুযায়ী কাজ করে। সো নিজের কথাগুলো সামলে বলবে মুগ্ধতা। ফারহানের ওপর কথা বলা ফারহান পছন্দ করে না।

ফোন রেখে ফারহান চেঁচিয়ে সিয়াম অর্থাৎ নিজের পার্সোনাল এ্যাসিস্টেন্টকে ডাকলো। গাড়ি বের করতে বলে শিডিউল মেলাতে বলল। সিয়াম সারাদিনের সব শিডিউল গড়গড় করে বলতেই ফারহান বিরক্তচোখে বলে,
-মিটিংগুলো ক্যান্সেল করো। মিটিং এ্যাটেন্ড করার মুড নেই আমার।

-কিন্তু স্যার, অনেকগুলো টাকা। আপনার নেক্সট মুভির এ্যাগ্রিমেন্ট সাইন করার ডেট ছিল আজ।

-টাকা জলে যাক, চুলোয় যাক আই ডোন্ট কেয়ার। আর না গেলে কি হবে? এ্যাগ্রিমেন্ট বাদ দিলে দিক।

-না মানে কিছুই না। ওনারা তো ফারহান ছাড়া আর কাউকে হিরো বানাবেন না বলে ঠিক করেছেন। আপনি না গেলে ওনারাই এখানে চলে আসবে।

-ওকে।

ফারহান বাথরুমে ঢুকে যেতেই সিয়াম ছুটে গিয়ে পানি পান করলো। হিরো ক্ষেপলো কেন আবার? স্যারকে নিয়ে সিয়াম পড়েছে মহাবিপদে। মাঝে মাঝে এত রাগ হয় মানুষটা। মার্কেটে এখন সুপারস্টার ফারহান মাহতাব ফালাকের কত দাম, কত ডিমান্ড তা কি সে বুঝতে পারেনা? চাইলেই তো রাতারাতি কোটিপতি থেকে মিলিওনার, বিলিওনার হওয়া যায়। অভিনয় জগতে বর্তমানে সব থেকে সফল অভিনেতা ফারহান। কিন্তু সে সবথেকে বেশি পরিচিত নিজের রাগের জন্য। অভিনেতাদের মধ্যে তাঁর রাগ সবার উর্ধ্বে। পরিচালক দিয়ে শুরু করে হিরোইনরা অবধি পাগল হয়ে আছে এর জন্য। আর একে দেখো? সিয়ামের মনে হতে লাগে ফারহান বোধ হয় টাকার গরমে ও চাহিদার দাপটেই এমন হয়ে গেছে। সফল এবং অহংকারি অভিনেতা।

চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে